নির্বাচনী আমেজ বইছে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে; মহাসড়ক, গলি উপগলি, এমনকী ঘরের প্রতিটি রুমে পর্যন্ত। এ বিষয়টি নিঃসন্দেহে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটি ধাপ বটে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান তথা প্রতিটি ভোটার যাতে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নির্ভয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন, বর্তমান সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সব ধরনের চেষ্টাই করছেন। দৃশ্যত তা-ই মনে হচ্ছে। ক’দিন আগেই আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম সামশুল হুদা বলেছেন, এবারের নির্বাচনে নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেজন্য প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সাধুবাদ জানাই তাঁর এই অভিমতকে। কিন্তু সেই সঙ্গে নির্বাচনের মাত্র সপ্তাহ খানেক আগেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর নানা ধরনের হুমকি আর ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অপচেষ্টার সংবাদ পেয়ে আশঙ্কা আর অনিশ্চয়তাও জেঁকে বসে আমাদের মনে। প্রবাদে আছে — ‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ডরায়।’
গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেতে খেতে দৈনিক সমকাল-এর ১৫ নম্বর পৃষ্ঠায় এসে চোখ আটকে গেলো। সকালবেলায় যে-সংবাদটিতে মন খারাপ হয়ে গেলো, তার শিরোনাম : ‘চন্দনাইশে ১১ হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা’। পুরো সংবাদটি পাঠকদের জন্য এখানে তুলে দিচ্ছি। সমকাল-এর চন্দনাইশ প্রতিনিধি শহীদউদ্দিন চৌধুরীর বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে :
“চট্টগ্রামের চন্দনাইশে গত রোববার (অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে এক হিন্দু পরিবারকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। ঐ পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, সংখ্যালঘু ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্য এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়।
চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নের মাইগাতা গ্রামের হিন্দুপাড়ায় গত রোববার রাতে ১১ সদস্যের একটি সংখ্যালঘু দিনমজুর পরিবারকে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। দুর্বৃত্তরা হিন্দু পাড়ার মৃত মণীন্দ্র লাল দে’র ছেলে ননী গোপাল দে’র বাড়িতে ইনজেকশনের বড় সিরিঞ্জের মাধ্যমে পেট্রোল ছিটিয়ে ঘরের চালের এক কোনায় এবং ভেন্টিলেটর দিয়ে ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দেয়ার আগে দুর্বৃত্তরা ঘরের প্রতিটি দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে আগুনের উত্তাপ পেয়ে পরিবারের ঘুমন্ত সদস্যরা জেগে উঠে চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তালা ভেঙে ভেতর থেকে তাদের উদ্ধার করে এবং আগুন নিভিয়ে ফেলে। এ ব্যাপারে ননী গোপাল দে’র ছেলে তপন দে বাদী হয়ে চন্দনাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার ঘটনাটিকে পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করেছেন বরমা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি জানান। প্রসঙ্গত ২০০১ সালে ১ অক্টোবরের নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ননী গোপালের ভাই দফাদার পরিমল দে’র ছেলে সুমন দে’কে (১৮) দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছিল।”
আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা রোধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী সহ সরকারের সব রকমের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সজাগ ও মাঠে আছে বলে বার বার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। আশ্বস্ত করা হচ্ছে ভোটারদের। তাহলে চন্দনাইশে এ ধরনের ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে কিনা সে ব্যাপারে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেবল চন্দনাইশেই নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায়ই যে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হবে না প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে, তার নিশ্চয়তা কে দেবে?
কয়েকদিন আগেই পত্রিকাতে আরো ২টি সংবাদ দেখেছি। একটি হলো : উত্তরবঙ্গের দিনাজপুরে হিন্দু প্রার্থীকে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ‘মুসলিম লীগ’ লিফলেট বিতরণ করেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদৌ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানা যায়নি। অপর সংবাদটি হলো : ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ধলহরা গ্রামে বটতলা কালী মন্দিরের ২টি মূর্তি ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গত ১৮ ডিসেম্বর এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয় হিন্দুধর্মাবলম্বীরা পূজা বন্ধ রেখেছেন (সূত্র : ভোরের কাগজ)।
এদিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন, পারুয়া ও বেতাগি এলাকায় চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী চার দলীয় জোটের প্রার্থী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (সাকাচৌ) ক্যাডাররা স্থানীয় ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়ায় সাহাপাড়ার মিন্টু তালুকদারকে ২১ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে ব্যাপক মারধর করা হয়। এছাড়া পারুয়া গ্রামে জেলেপাড়া এবং বেতাগি এলাকার ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে আগামী ২৯ ডিসেম্বর ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্যে হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্বাভাবিকভাবেই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক, নিরাপত্তাহীনতা ছড়িয়ে দিয়ে ফায়দা লুটতে চাইছে সাম্প্রদায়িক দোষে দুষ্ট কিছু রাজনৈতিক দল। এ ধরনের ঘটনা প্রশাসন কঠোর হস্তে দমন করবেন — এটাই সবার প্রত্যাশা। কিন্তু এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আরো যে ঘটবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? আর তাই যদি হয় তাহলে সারাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে অনীহা, ভয়, আতঙ্ক থাকবে এবং তাতে করে তারা যদি প্রাণনাশের আশঙ্কায় নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে অর্থাৎ ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারেন বা তাঁদের নানা কৌশলে যেতে দেয়া না হয়, তাহলে নির্বাচন কি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হতে পারবে?
কারণ শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপরই নয়, নির্বাচনের পূর্বাপর সহিংসতা রোধ ও সব নাগরিক (ভোটার) যাতে নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ সহ শান্তিতে নির্ভয়ে নিজ নিজ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নির্বাহ করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে পারার উপরেও গণতান্ত্রিক ধারা নির্ভর করে।
গত ২২ ডিসেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভিতে একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিয়ার একটি বক্তব্য শুনে হতবাক হলাম। আরটিভি-র এক রিপোর্টার ভোলা ও বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চল ঘুরে ২০০১ সালে ঐ অঞ্চলে যে নির্মম সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস অর্থাৎ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্বাচন নিপীড়ন হয়েছে তার বর্ণনা দিয়েছেন। ঐ এলাকার ভুক্তভোগী জনগণই টিভি প্রতিবেদককে ২০০১ সালের সেই নির্যাতনের স্বাক্ষ্য দিয়েছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান মিয়া সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতি এতটাই অনুগত যে, তিনি তা সরাসরি অস্বীকার করে বললেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি!!! তিনি এও বললেন, তখন বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় ছিল না, ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু হামলাকারী, লুটপাটকারী, অগ্নিসংযোগকারী, ধর্ষণকারীরা যে বিএনপি-জামাতের লোক ছিল তা তিনি অস্বীকার করবেন কী করে? দুঃখ হয় এসব শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবীর জন্য; তাঁদের শিক্ষা আর বুদ্ধিবৃত্তি কার কাজে আসে?
২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিভীষিকা এখনও স্মরণে আছে এদেশের সচেতন নাগরিকদের। ২০০১ সালের ১৩ জুলাই তৎকালীন বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ৩ মাস এবং ২০০১-এর ১০ অক্টোবর জামাত-বিএনপি সরকার ক্ষমতা নেয়ার পরবর্তী ৪৬ মাসে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের হাজার হাজার ঘটনা যা বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পত্রিকা ও মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছিল তাও অস্বীকার করতে পারবেন মনিরুজামান মিয়াদের মতো জামাত-বিএনপি সমর্থিত বুদ্ধিজীবী ও সমর্থকরা!
২০০৫-এর ১০ অক্টোবর একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৫০০ দিন নামে ৩ খণ্ডের একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছিল। এর সবই ছিল বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ। কয়েক হাজার ঘটনার মধ্যে বাছাইকৃত কিছু ঘটনা মাত্র ঐ সংকলনে স্থান পেয়েছিল। এর প্রথম খন্ডে বাছাইকৃত ২৭৮৬টি সংবাদ সংকলিত হয়েছে, যার প্রথম পর্বে রয়েছে ১৩৯৩টি (১৫ জুলাই ২০০১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০০২ পর্যন্ত) এবং দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে ১৩৯৩টি (১ জানুয়ারি ২০০৩ থেকে ২৫ আগস্ট ২০০৫ পর্যন্ত)। এছাড়া দ্বিতীয় খণ্ডে রয়েছে ৪০৯২টি শিরোনাম, যা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছিল। ২৩২টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ছবিও রয়েছে শ্বেতপত্রে।
আগামী ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে কি আবারও একই ধরনের হত্যাযজ্ঞ, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িক নির্যাতন চালিয়ে জামাত-বিএনপি সহ তাদের সাম্প্রদায়িক জোট আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে? এ প্রশ্ন যদি কেউ তোলে সাম্প্রতিককালের ঘটনাবলি থেকে, তাহলে কি তা অতিশয়োক্তি হবে? এদেশের সাধারণ অসাম্প্রদায়িক জনগণ এই অপশক্তিকে রুখে দাঁড়াবে — এই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়েই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়তে চাই আমরা।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৫ comments
সান্ত্বনা - ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ (৯:০৬ পূর্বাহ্ণ)
সমরেশ বৈদ্যকে ধন্যবাদ তাঁর এই লেখাটির জন্য।
আজ সেই বহু প্রতীক্ষিত দিন। টিভির পর্দায় আমরা দেখছি যে সারা দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ও বিপুল উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ চলছে। (তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, ভোট গ্রহণ শুরু হবার আগে থেকেই কিছু অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার খবরও আমরা পেয়েছি।) বিডিনিউজ-এর ওয়েবসাইটে সংখ্যালঘু ভোটারদের মনে ভীতিসঞ্চারের আরো একটি খবর চোখে পড়ল; খবরটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
বলাই বাহুল্য এ খবরটি বর্তমান পোস্টলেখকের আশঙ্কা যে একেবারে অমূলক ছিল না তারই সাক্ষ্যবাহী। আর যে-কথাটি ওই খবরে বলা নেই, কিন্তু সকলেই নিশ্চয়ই জানেন, তা হলো এই : চট্টগ্রামের ওই আসনটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে দাঁড়িয়েছে কুখ্যাত সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী, যে ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধী বহু বছর ধরেই তার নিজ এলাকায় হিন্দু-বৌদ্ধ ভোটারদের মনে ত্রাস সঞ্চার করে ও তাঁদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়ার মাধ্যমে নির্বাচনে জয় লাভ করে আসছিল।
রায়হান রশিদ - ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮ (৩:৫৮ পূর্বাহ্ণ)
সমরেশ বৈদ্যকে ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ এই পোস্টটির জন্য। এখানেও খবরটি ছাপানো হয়েছে।
বাংলাদেশের মাটিতে এসব চিরতরে বন্ধ হতে হবে। নিরন্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে নতুন একটি দল (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। এই দলটি নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ, স্বাধীনতার সপক্ষের, এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষের বলে সবসময়ই প্রচার করে এসেছে। সময় সময় তাদের মূলনীতির ও কথার সাথে কাজের ব্যত্যয়ও ঘটেছে। কিন্তু এখনো দ্বিতীয় সুযোগ এবং benefit of doubt দিতে রাজি আছি আমরা জনগণ। ভোটে সারা দেশের মানুষের প্রশ্নাতীত সমর্থনে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে আজ। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম যে তাঁদের অতীতের আপোস, পদস্খলন সবই ছিল রাজনীতিতে (স্রেফ) টিকে থাকার জন্য। কিন্তু আজ থেকে সময় বদলে গেছে। আজ সংসদে দলটিকে একচ্ছত্র সংখ্যাগরিষ্টতা দেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য, সংস্কার করার জন্য, জঞ্জাল সাফ করার জন্য, ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আজ থেকে আগামী পাঁচ বছর দলটিকে আর অন্য কোন জোট, মহল বা শক্তির দিকে তাকাতে হবেনা। সদিচ্ছা থাকলেই তারা যে কোন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করতে পারবে; জনগণ তাদের সে ক্ষমতা দিয়েই সংসদে পাঠিয়েছে এবার।
ক্ষমতার সাথে দায়িত্ব হাত ধরাধরি করে আসে। এখন থেকে আমাদেরও সজাগ হুঁশিয়ার হয়ে দেখার পালা জনগণের আস্থার বিপরীতে এই গুরু দায়িত্ব দলটি কিভাবে পালন করে।
মনজুরাউল - ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ (৬:২৮ অপরাহ্ণ)
সমরেশ,
স্বাগতম মুক্তাঙ্গন ব্লগে। লেখা নিয়ে পরে কথা হবে। ভাল আছেন তো? চলুক বদ্দা………
মনজু। (নিক দেখে বিভ্রান্ত নাকি?)
প্রদীপ আইচ - ৩ এপ্রিল ২০০৯ (১০:৫১ পূর্বাহ্ণ)
সমরেশ দা ধন্যবাদ এই গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য। লেখাটি পড়ে মনে হল অনেক প্রতীক্ষিত ছিল এই লেখাটি আজকের দিনে ।
প্রদীপ আইচ - ৩ এপ্রিল ২০০৯ (১১:০৫ পূর্বাহ্ণ)
চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নের মাইগাতা গ্রামের হিন্দুপাড়ায় আমার গ্রাম ।