আমাদের সরকার, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারক ও রাজনীতিকদের সৌভাগ্যই বলতে হবে, তাদের কাছে শিল্পী বেগমদের বিচারের দাবি তোলার ক্ষমতা নেই, বিচার ও আইন বিভাগের কাছে তাদের কোনও প্রত্যাশা নেই, অন্যায়ের কাছে পরাস্ত হয়ে তারা শুধু কাঁদতে কাঁদতে আল্লার কাছে বিচার চাইতে জানে।

সারা রাত তিনি বাস চালিয়ে ঢাকা এসেছিলেন। খুলনা থেকে ট্রিপ নিয়ে তারা রওনা হয়েছিলেন ঢাকার দিকে রাত ১০টার দিকে। ঢাকায় এসে মালিবাগে শেষ যাত্রী নামিয়ে দেয়ার পর বাস পার্ক করেন গভর্নমেন্ট কলোনীর সামনে। রাতে আবারও বাস চালাতে হবে। তাই ঘুমানোর উদ্যোগ দেন তিনি আর তার হেলপার। ঘুমানোর আগে তিনি স্ত্রীর কাছে টেলিফোন করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমি এখন বাসে ঘুমাবো। আমাকে এখন ফোন করিও না। পরে ফোন করিও। এটা বলতে টেলিফোন করলাম।’ হয়তো অনেক কথাই তার বলার ছিল। কিন্তু তার চোখ বুজে ঘুম নামছিল। তিনি তাই স্ত্রীকে বলেছিলেন, পরে ফোন দিতে। কিন্তু তার আর প্রয়োজন হয়নি। দুপুর দু’টার দিকে খিলগাঁওয়ের গভর্নমেন্ট কলোনির সামনে পার্ক করা এই বাসটিতে আগুন লাগিয়ে দেয় হরতাল আহ্বানকারীদের দল। আর সেই আগুনে পুড়ে মারা গেছেন তিনি, বাসের চালক মাত্র ৪৮ বছরের বদর আলী বেগ। ফোন বন্ধ করে তিনি ঘুমিয়েছিলেন-আগুনের আঁচেও ঘুম ভাঙেনি, টের পাননি আগুন জ্বলছে তার চারপাশে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিভিয়ে উদ্ধার করে তার পোড়া লাশ। হরতাল যারা ডেকেছিলেন, হরতাল সফল করার জন্যে যারা মাঠে নেমেছিলেন, তাদের কেউ কি দেখেছেন সেই লাশ? কিংবা শুনেছেন কি বদর আলী বেগের স্ত্রী হাওয়া বেগমের আর্তনাদ : ‘ও আল্লা, যারগে জন্যি আমি শেষ বারের মতো আমার স্বামীর মুখখান দেখতি পাল্লাম না, যারগে জন্যি আমার ছেলেমেয়েরা তাগো বাপের মুখটা দেখতি পাল্লো না, সে হরতাল আলাগো তুমি বিচার করো’? তারা কি জানেন, বার বার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন হাওয়া বেগম? জ্ঞান হারানোর পর শোকাচ্ছন্ন স্বগতোক্তি করেই ফের মুর্চ্ছা খাচ্ছেন? হরতাল আহ্বানকারীরা শুনতে পাচ্ছেন তার আর্তনাদ, ‘এহন হরতাল আলারা কি আমার সংসার চালায়ে দেবেনে? দেবে না!’ বলে আবারও অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন হাওয়া বেগম। বদর আলী বেগের মতো আগুনে পুড়ে মরেননি, কিন্তু মৃত্যুবরণ করেছেন আরেক চালক। ধারদেনা করে মাস দুয়েক আগে একটি ট্যাক্সিক্যাব কিনেছিলেন তিনি। তাও আবার হাইজ্যাক হয়ে গিয়েছিল একবার। কখনো সে গাড়ি নিজে চালাতেন, কখনও আবার ভাড়া খাটাতেন। এইভাবে সারা মাসে আয় হতো ১০/১২ হাজার টাকা। তাই দিয়ে চলতো তার সংসার। সকালে গাড়ি নিয়ে কাজে বেরুনোর আগে শিশুসন্তানকে নিয়ে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছেন তিনি। খাওয়ার টেবিলে ছিল ভাত আর মাংস। ছেলে পরশের ভাতের…

ড. ইউনূস কি ভারতের ত্রাণকর্তা? এমন একটি প্রশ্নই মনে জাগতে পারে চলতি সংখ্যা লাইফস্টাইলস পড়লে বা এর প্রচ্ছদ দেখলে।...

ড. ইউনূস কি ভারতের ত্রাণকর্তা? এমন একটি প্রশ্নই মনে জাগতে পারে চলতি সংখ্যা লাইফস্টাইলস পড়লে বা এর প্রচ্ছদ দেখলে। লাইফস্টাইলস একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পত্রিকা। অনেকে বলেন, বিশ্বরাজনীতিতেও এ পত্রিকার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এই ম্যাগাজিনের চলতি সংখ্যার প্রচ্ছদে এসেছেন ড. ইউনূস। প্রচ্ছদেই লেখা হয়েছে, ‘ফার্স্ট হি সেইভড ইন্ডিয়া। নাও হি’জ ওয়ার্কিং অন দ্য রেস্ট অব দ্য ওয়ার্ল্ড। দ্য ফাদার অব মাইক্রোক্রেডিট, মুহাম্মদ ইউনূস।’ প্রচ্ছদে এবং ভেতরেও দেখা যাচ্ছে, ইউনূস তার ক্ষুদ্র ঋণমনস্ক পুরানো গ্রামীণ চেক-এর পোশাক ছুড়ে ফেলেছেন। পত্রিকার ভেতর সাক্ষাৎকারটির শুরুতে যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে আমরা দেখতে পাচ্ছি নেহেরু ক্যাপপরিহিত ইউনূসকে! ছবিসমেত মাত্র কয়েকটি পৃষ্ঠা ব্যবহার করা হয়েছে ইউনূসের পেছনে। কিন্তু আড়ম্বরটি চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশের প্রসঙ্গ এতে নেই বললেই চলে, বরং সামাজিক ব্যবসা, আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে ইউনূসকে তুলে ধরাই এর মূল প্রসঙ্গ। প্রমোশনাল এই সাক্ষাৎকার, যাতে বিশ্বের বিভিন্ন উল্লেখ করার মতো ব্যক্তিত্বের সঙ্গে (গ্যাবরিয়েল ইরেম, বিল ক্লিনটন, রিচার্ড গেরে, নিরো প্রমুখ) তোলা ইউনূসের বিভিন্ন ছবি রয়েছে। তবে সাক্ষাৎকারটিতে অথবা এর ভূমিকায় অথবা অন্য কোথাও কিন্তু লেখা নেই, কীভাবে তিনি প্রথমে ভারতকে রক্ষা করেছেন, অথবা ক্ষুদ্র ঋণের জনকই বা তিনি হলেন কী করে! বুঝতে পারছি না, পত্রিকাটি এরকম করেছে কেন। কানাডায় অবস্থানরত আমার এক বন্ধু পত্রিকার অফিসে টেলিফোন করেছিলেন। বলেছিলেন, ড. ইউনূস তো বাংলাদেশের নাগরিক, ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে তিনি মূলত সেখানেই কাজ করেছেন। তিনি কীভাবে ইন্ডিয়াকে রক্ষা করলেন? পত্রিকাটি তাকে এভাবে উপস্থাপন করছে কেন? উত্তরে তাকে বলা হয়েছে, ‘আপনি আপনার বক্তব্য লিখিতভাবে জানাতে পারেন।’

আমরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ; গত দু'দিন ধরেই একটি প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে : শহীদ মিনার কি ঈদের নামাজ পড়ার স্থান? [...]

আমরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ; গত দু'দিন ধরেই একটি প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে : শহীদ মিনার কি ঈদের নামাজ পড়ার স্থান? বেহাল মহাসড়কের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের অপসারণ দাবি করে 'ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবী জনতা' গত বুধবারে (২৪ আগস্ট) যে-কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তার সারমর্মের সঙ্গে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কোনো দূরত্ব নেই। যদিও এই দাবিসমূহ আরো সুনির্দিষ্ট হতে পারত; যেমন, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগের দাবিও এখানে যুক্ত হতে পারত। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, এই কর্মসূচির মাধ্যমে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সামরিক জান্তা হোসেইন মুহম্মদ এরশাদ সহিংস উপায়ে যে-কাজটি করতে পারেননি, সৈয়দ আবুল মকসুদের নেতৃত্বে 'ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবী জনতা' অহিংস উপায়ে ঠিক সেই কাজটিই করতে চলেছেন -- তাঁরা শহীদ মিনারের মতো সেক্যুলার জনদাবি আদায় ও শ্রদ্ধানিবেদনের সম্মিলনস্থানটিকে ধর্মীয় উৎসব উদ্‌যাপনের স্থানে পরিণত করতে চলেছেন। এর ভবিষ্যৎ কী তা কি আমরা একবারও ভেবে দেখেছি? আমরা আশা করব, এই কর্মসূচি পালনের স্থান পরিবর্তন করা হবে। শহীদ মিনারকে ধর্মপরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সম্মিলনের স্থান হিসেবেই দেখতে চাই, ধর্মীয় উদ্‌যাপনের স্থান হিসেবে নয়।

এখন ইউনূসকাহনের সূত্র ধরে বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলি বাংলাদেশে তাদের আকাঙ্ক্ষিত কথিত রাজনৈতিক বিকল্প গড়ে তোলার আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে, আমরা উপনীত হয়েছি কথিত রাজনৈতিক বিকল্প-অনুসন্ধান পর্বের দ্বিতীয় অধ্যায়ে।[...]

এখন ইউনূসকাহনের সূত্র ধরে বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলি বাংলাদেশে তাদের আকাঙ্ক্ষিত কথিত রাজনৈতিক বিকল্প গড়ে তোলার আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে, আমরা উপনীত হয়েছি কথিত রাজনৈতিক বিকল্প-অনুসন্ধান পর্বের দ্বিতীয় অধ্যায়ে। এই কথিত রাজনৈতিক বিকল্প-অনুসন্ধান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে সংগঠিত হয়েছিল ১১ জানুয়ারি বা ওয়ান-ইলেভেন। তখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে রাজি হননি। সামরিক বাহিনীর তৎকালীন প্রধান মইন উ আহমদের বইয়ে বর্ণিত বিবরণ অনুযায়ী (আরও অনেক সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে), ইউনূস তখন বলেছিলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে তার যে পরিকল্পনা রয়েছে তা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সীমিত শাসনামলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, তাই তিনি দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নন। ড. ইউনূসই প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ফখরুদ্দীনের নাম প্রস্তাব করেন। এর পরের ঘটনাও সবার কমবেশি জানা আছে-সামরিক বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতাপূর্ণ তত্ত্বাবধায়ক শাসনামলে ইউনূস চেষ্টা করেন রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার। আমাদের সুশীল কাণ্ডারিরা বার বার কমপক্ষে দু বছর সময় চাইতে থাকেন ‘লাইনচ্যুত ট্রেনকে লাইনে টেনে তুলতে’। কিন্তু খুব দ্রুতই ড. ইউনূস বুঝতে পারেন, এই যাত্রায় কাজ হবে না। তিনি তাই সব কিছু ভবিষ্যতের হাতে ছেড়ে দিয়ে সাময়িক বিরতি দেন। তার বিবৃতিতে তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, যারা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারা তা রক্ষা না করায় তিনি এ উদ্যোগে ক্ষান্তি দিচ্ছেন। কিন্তু ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে, প্রস্তুতির জন্যে তিনি ও সুশীলগণ আরও খানিকটা সময় চাইছিলেন। আধুনিক মহাজন ইউনূসকে নির্যাতিত ইউনূস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে জনগণের সহানুভূতি আদায় করার সুযোগ খুঁজছিলেন তারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে সে সুযোগ করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন, সহানুভূতির পাত্র হয়ে উঠেছেন। এবং এতে কোনও সন্দেহ নেই ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের প্রাণভোমরা হিসেবে প্রমাণ করার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সুশীল সমাজ যা-যা করা সম্ভব তার সবই করবে। কিন্তু ড. ইউনূস সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে এখন এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? হয়তো এটি সঠিক প্রশ্ন নয়, কেননা আসলে ড. ইউনূস নন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান। এই ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানকে যুক্তরাষ্ট্র ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এখন ব্যবহার করতে পারে দুটি উপায়ে : হয় দেশটিতে ইসলামী জঙ্গিবাদকে চাঙ্গা করে…

ফেইসবুকের কল্যাণে গত জানুয়ারির মাঝামাঝি এক কল্পিত কেচ্ছা ছড়িয়ে পড়ে নেটজগতে। সেই কল্পিত কেচ্ছার সারসংক্ষেপ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোনে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত ‘নিরপেক্ষ’ করবার জন্যে খুব করে শাসিয়েছেন। তখন হিলারী ক্লিনটনের জেরার মুখে বেরিয়ে এসেছে যে, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী বিচারের বর্তমান উদ্যোগ নেহাৎই ভারতের চাপে নেয়া হয়েছে।...

মিথ্যুকদের রান্নাবান্না ফেইসবুকের কল্যাণে গত জানুয়ারির মাঝামাঝি এক কল্পিত কেচ্ছা ছড়িয়ে পড়ে নেটজগতে। সেই কল্পিত কেচ্ছার সারসংক্ষেপ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোনে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত ‘নিরপেক্ষ’ করবার জন্যে খুব করে শাসিয়েছেন। তখন হিলারী ক্লিনটনের জেরার মুখে বেরিয়ে এসেছে যে, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী বিচারের বর্তমান উদ্যোগ নেহাৎই ভারতের চাপে নেয়া হয়েছে। এখন পরিষ্কার, পরিকল্পিতভাবেই ফেইসববুকে ওই কাহিনী ছাড়া হয়েছিল, মানুষ যাতে সত্যি মনে করে সংলাপগুলোও সেভাবে সাজানো হয়েছিল-এবং পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে সেই কাহিনীকে সংবাদ হিসেবে লুফে নিতে দেরি করেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনা। বিএনপির প্রবাসী নেতাকর্মীদের পরিচালিত ওয়েবসাইট প্রবাসীভয়েস ডট কমেও সংবাদটি প্রচার করা হয়েছে ফলাও করে। এরকম কল্পিত সাক্ষাৎকার বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলির প্রিন্ট মিডিয়াতে অহরহ ছাপা হয়, কিন্তু সেটিকে কেউ উদ্ধৃত করে না, সংবাদের উৎস হিসেবে গণ্য করে না, ফলাও করে সেটির ভিত্তিতে কেউ দেশ-বিদেশের পররাষ্ট্রনীতির বিশ্লেষণ করতে বসে না। কিন্তু এই গুজবকেচ্ছাকেই ২১ জানুয়ারি নিবন্ধের তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করলেন ঢাকার ইংরেজি সাপ্তাহিক হলিডে’র প্রতিবেদক শহীদুল ইসলাম। বাজারে লিফলেটও এলো একইদিনে। পরদিন ২২ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর দৈনিক সংগ্রাম তাদের পত্রিকার প্রথম পাতায় সংবাদ ছাপলো : হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে গেল/ যুদ্ধাপরাধ ইস্যু ভারতের এজেন্ডা। অবশ্য খানিকটা বিশ্বস্ত থাকার ভাবও দেখানো হলো-লেখা হলো, সরকারিভাবে এ ধরণের কথোপকথনের ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছে। তবে এই বাক্যগুলির মধ্যে এমন একটি হালকা ভাব রাখা হলো, পাঠকদের যাতে মনে হয়, ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তারা তো অস্বীকারই করবে। এই অপপ্রচার যে কত সংগঠিত উপায়ে করা হয়েছে, তা বোঝা যায় সাপ্তাহিক হলিডে-তে নিবন্ধটি প্রকাশের তারিখ ২১ জানুয়ারিতেই ‘বেরিয়ে পড়েছে থলের বিড়াল : প্রধানমন্ত্রী বলে ফেলেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আসল মদদদাতা কে’ শিরোনামের একটি লিফলেট উদ্ধার করার ঘটনা থেকে। যে-খবর কোনও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আসেনি, দেশের দৈনিক-সাপ্তাহিকে আসেনি, কোনও গ্রহণযোগ্য বিকল্পধারার ব্লগেও ছাপা হয়নি, যে-খবর কল্পিত সাক্ষাৎকার হিসেবে সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেইসবুকে ঘুরপাক খাচ্ছে তাকে ভিত্তি করে সাপ্তাহিক হলিডে যেদিন এশিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তনের আলামত খুঁজে পেল, সেইদিনই সে গুজব বাজারে ছড়ানোর জন্যে লিফলেট আকারে নিয়ে আসা হলো। কেননা, বিদেশি দূতাবাসগুলি আর বিশেষ কিছু ব্যক্তির কাছে বিনা পয়সায় সাপ্তাহিক হলিডে পাঠানো গেলেও সব মানুষের কাছে তো আর ওভাবে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.