এখন ইউনূসকাহনের সূত্র ধরে বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলি বাংলাদেশে তাদের আকাঙ্ক্ষিত কথিত রাজনৈতিক বিকল্প গড়ে তোলার আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে, আমরা উপনীত হয়েছি কথিত রাজনৈতিক বিকল্প-অনুসন্ধান পর্বের দ্বিতীয় অধ্যায়ে। এই কথিত রাজনৈতিক বিকল্প-অনুসন্ধান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে সংগঠিত হয়েছিল ১১ জানুয়ারি বা ওয়ান-ইলেভেন। তখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে রাজি হননি। সামরিক বাহিনীর তৎকালীন প্রধান মইন উ আহমদের বইয়ে বর্ণিত বিবরণ অনুযায়ী (আরও অনেক সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে), ইউনূস তখন বলেছিলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে তার যে পরিকল্পনা রয়েছে তা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সীমিত শাসনামলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, তাই তিনি দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নন। ড. ইউনূসই প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ফখরুদ্দীনের নাম প্রস্তাব করেন। এর পরের ঘটনাও সবার কমবেশি জানা আছে-সামরিক বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতাপূর্ণ তত্ত্বাবধায়ক শাসনামলে ইউনূস চেষ্টা করেন রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার। আমাদের সুশীল কাণ্ডারিরা বার বার কমপক্ষে দু বছর সময় চাইতে থাকেন ‘লাইনচ্যুত ট্রেনকে লাইনে টেনে তুলতে’। কিন্তু খুব দ্রুতই ড. ইউনূস বুঝতে পারেন, এই যাত্রায় কাজ হবে না। তিনি তাই সব কিছু ভবিষ্যতের হাতে ছেড়ে দিয়ে সাময়িক বিরতি দেন। তার বিবৃতিতে তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, যারা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারা তা রক্ষা না করায় তিনি এ উদ্যোগে ক্ষান্তি দিচ্ছেন। কিন্তু ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে, প্রস্তুতির জন্যে তিনি ও সুশীলগণ আরও খানিকটা সময় চাইছিলেন। আধুনিক মহাজন ইউনূসকে নির্যাতিত ইউনূস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে জনগণের সহানুভূতি আদায় করার সুযোগ খুঁজছিলেন তারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে সে সুযোগ করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন, সহানুভূতির পাত্র হয়ে উঠেছেন।
এবং এতে কোনও সন্দেহ নেই ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের প্রাণভোমরা হিসেবে প্রমাণ করার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সুশীল সমাজ যা-যা করা সম্ভব তার সবই করবে।
কিন্তু ড. ইউনূস সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে এখন এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? হয়তো এটি সঠিক প্রশ্ন নয়, কেননা আসলে ড. ইউনূস নন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান। এই ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানকে যুক্তরাষ্ট্র ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এখন ব্যবহার করতে পারে দুটি উপায়ে : হয় দেশটিতে ইসলামী জঙ্গিবাদকে চাঙ্গা করে তুলে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে দিয়ে; নয়তো নতুন একটি বিকল্প রাজনৈতিক চরিত্র ও দল দাঁড় করিয়ে। এই দুটি পথই খুব কঠিন সাম্রাজ্যবাদীদের জন্যে। কেননা জঙ্গিবাদ যুক্তরাষ্ট্রকেও ছোবল মারতে পারে, অন্যদিকে বাংলাদেশে ধর্মজ রাজনীতিবিরোধী স্রোতও অনেক শক্তিশালী। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী দক্ষিণ এশিয় মিত্র ভারতও এ পন্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী নয়। আবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বার্থের জালে জনগণের একটি বড় অংশকে এমনভাবে জড়িয়ে রেখেছে যে, রাজনৈতিক একটি বিকল্প রাজনৈতিক চরিত্র ও দল দাঁড় করানোর কাজটি মূলত বিপ্লবাত্মক কাজ। তারপরও বহুদিন আগে থেকেই সাম্রাজ্যবাদীরা বাংলাদেশে তাদের একজন প্রতীকী ব্যক্তিত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছিল। শেখ মুজিবুর রহমান তাদের সেই প্রতীক ছিলেন না, বামপন্থীদের কারও সেরকম প্রতীক হয়ে ওঠার তো প্রশ্নই ওঠে না-শেষ পর্যন্ত তারা তাদের প্রতীকী ব্যক্তিত্ব হিসেবে খুঁজে পেয়েছে ড. ইউনূসকে। অন্তত খানিকটা কথা ঠিকই বলেছেন অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন-‘এই মুহূর্তে পাশ্চাত্যকে মুহাম্মদ ইউনূসের যতটা প্রয়োজন, তারচেয়ে পাশ্চাত্যের বেশি প্রয়োজন ইউনূসকে।’ বাংলাদেশের সুশীলআবিষ্ট মধ্যবিত্ত শ্রেণী মুখিয়ে উঠেছে তাঁকে শাসক হিসেবে পেতে। আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যবহার এই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নর্তন-কুর্দনে ঢোলের বারি হয়ে দেখা দিয়েছে, তারা সুশীল দৈনিকগুলিকে কেন্দ্র করে নিজেদের নর্তন-কুর্দন দেখিয়ে চলেছে দেশবাসীকে।
অতএব এই ইউনূসকাহনকে গুরুত্বহীন ভাবার কোনও কারণ নেই। পৃথিবীতে এমন ঘটনা খুব কমই ঘটে যখন বাঘ ও ছাগলকে একঘাটে পানি খেতে দেখা যায়, যখন সাপ ও বেজিকে একই গুহায় চোখ বুজে ঘুম দিতে দেখা যায়, যখন মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও খালেদা জিয়া-ফরহাদ মজহার-শফিক রেহমানদের একই বিষয়ে একই ভঙ্গিতে উদ্বিগ্ন হতে দেখা যায়। এখন, পৃথিবীতে সেরকম একটি ঘটনা ঘটছে-খালেদা জিয়া, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ফরহাদ মজহার আর শফিক রেহমানরা সমভঙ্গিতে, সমপরিমাণে উদ্বিগ্ন – কেননা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।|
খালেদা জিয়া এখন বলছেন, এ সরকার সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মান দিতে জানে না। তার সরকার ক্ষমতায় এসে তাদের উপযুক্ত সম্মান দেবে। তাকে আমরা বলতে শুনছি, ড. ইউনূস অবৈধ হলে এই সরকারও অবৈধ। বলা হচ্ছে, বিচার বিভাগ এই সরকারের হাতের মোয়া।
আর ড. ইউনূসকে নিয়ে খোদ সরকারের দেউলিয়াত্বও কম নয়। এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তাঁর দুই হাতে তেল মেখে নাকে পিয়াজ দিয়ে কাঁদতে বসেছেন, নোবেল পুরস্কার তো শেখ হাসিনা আর সন্তু লারমার পাওয়ার কথা ছিল! সরকারের যেখানে উচিত ড. ইউনূসের বিভিন্ন দুর্নীতি-অনিয়মগুলি উন্মোচন করা, সেখানে তারা এই ধরণের বালসুলভ কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে প্রতি পদে পদে প্রমাণ করছেন, বিশ্বের বিভিন্ন ভার্সিটি থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পেতে পেতে শেখ হাসিনা এখন নোবেল পাওয়ার জন্যে হন্যে হয়ে উঠেছেন।
অথচ এই নোবেল শান্তি পুরস্কারের অন্তর্নিহিত রাজনীতি কে না বোঝে? ড. ইউনূসের আইনজীবী রোকনউদ্দিন কয়েকদিন আগে বলেছেন, নোবেল পুরস্কার কি গাধারা পায়? এর উত্তর অবশ্য রোকনউদ্দিনেরও জানা আছে-গাধারা পাবে কেন? এই পুরস্কার পান সর্বোৎকৃষ্ঠ ঘৃণ্য ব্যক্তিরা। কে না বোঝে, কেন এই পুরস্কার পান হেনরি কিসিঞ্জার, কেন পান আইজাক রবিন আর শিমেন পেরেজ, কেনই বা পান কোনও কিছুই না করে বারাক ওবামা! ড. ইউনূস তো সে পুরস্কার পেতেই পারেন।
‘মুই কি হনু রে’ বলে একটি কথা প্রচলিত আছে বাংলাদেশেই, আরও একটি কথা আছে-‘ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা’। এই দেশে এখন একজন ‘মুই কি হনু রে’ দেখা দিয়েছেন, তিনি ড. ইউনূস, যার নোবলেপ্রাপ্তির দিনটিকে বাংলাদশের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির সঙ্গে তুলনা করার ধৃষ্টতা দেখতে হচ্ছে আমাদের নির্বাক চোখে; আরও দেখা দিয়েছে কিছু ‘ছাগলরে তিন নম্বর বাচ্চা’ যারা দুগ্ধ না পেলেও দুগ্ধের সুগন্ধে ও দুগ্ধের প্রত্যাশায় উদ্বাহু নৃত্য জুড়তে পারেন। তাই আমাদের শুনতে হচ্ছে, ড. ইউনূসই নাকি সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের সবচেয়ে ইতিবাচক ব্র্যান্ডিং!
মুহম্মদ জাফর ইকবাল এ ব্যাপারে আরেক কাঠি সরেস; তিনি তাঁর ইউনূসসঙ্গীতের শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছেন, ‘যাঁরা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, গ্রামীণ ব্যাংক, বাংলাদেশ সরকার এবং দেশের আইনকানুন নিয়ে নির্মোহ, বস্তুনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ আলোচনা পড়তে চান, তাদের এ লেখাটি পড়ার প্রয়োজন নেই।’ এরকম একজন মানুষের কাছ থেকে ছাত্রছাত্রীরা একটা শিক্ষাই পেতে পারে, তা হলো কোনও কারণ ছাড়াই কারও প্রতি মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ার শিক্ষা। লেখাটি তাই তার সংবিধি সতর্কীকরণের পরও মনযোগ দিয়ে পড়ে দেখেছি। তাতে দেখা গেল, ইউনূসের প্রতি তাঁর এত মোহের কারণ, ‘আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে বিদেশের মাটিতে কী নিষ্ঠুরভাবে তাচ্ছিল্য এবং অসম্মানের সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়… মুহাম্মদ ইউনূস একা সেটিকে কত বড় একটি মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন।’ লিখেছেন তিনি, ‘সত্তর ও আশির দশকে বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে পরিচিত হতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। এই সরকার বিশ্বাস করুক আর নাই করুক এই দশকে পৃথিবীতে বাংলাদেশ পরিচিত হয় প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে দিয়ে।’
এই বাক্যগুলি সত্যিই হতবাক হওয়ার মতো। মুহম্মদ জাফর ইকবাল হয়তো জানেন না, এখনও বাংলাদেশকে বিদেশের মাটিতে নিষ্ঠুরভাবে তাচ্ছিল্যই করা হয়। কেননা বিদেশীরা জানে, এ দেশের জনগণ না চাইলেও রাজনীতিকদের একটি অংশ দেশকে জঙ্গি বানানোর জন্যে সদা তৎপর; বিদেশীরা জানে, এ দেশে এমন এক শ্রেণির বিশাল গার্মেন্টস ব্যবসায়ী রয়েছে, যারা বিদেশে কাপড় ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মুনাফা অর্জন করলেও নারী শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি দিতে নারাজ, ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগলে পুড়ে মরা ছাড়া কোনও পথ খোলা নেই এই নারী শ্রমিকদের; এই বিদেশীরা এটাও ভালো করে জানে, ১০০ টাকার ঋণ নিলে একজন নারীকে ৪৫ টাকা সুদ দিতে হয় গ্রামীণ ব্যাংককে এবং সেই ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ন্যুনতম সহানুভূতিও নেই কোনও বিদেশীর। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালরা তো কেবল গুটিকয় একাডেমিক ও স্বার্থবাদী বিদেশীর সঙ্গে মেশেন-পাঠক ও অ্যাকটিভিস্ট বিদেশীদের সঙ্গে মিশলে এই ভ্রান্ত ধারণা তার মনে হয়তো জন্ম নিতো না। বাংলাদেশের মানুষদের নানা কিসিমের বিদেশীরা তাচ্ছিল্যের পাশাপাশি তবুও শ্রদ্ধা করে, কারণ, এত কিছুর পরও এ দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখতে জানে, তাই দারিদ্র দূর করার জন্যে বিমানের চাকায় করে বিদেশে যাওয়ার ঝুঁকি নেয় এবং মৃত্যুবরণ করে, বিদেশে অবৈধভাবে বসবাস করেও প্রতি মাসে দেশের স্বজনের কাছে টাকা পাঠায়। ঠিকই লিখেছেন জাফর ইকবাল, বাংলাদেশকে একসময় বিদেশীরা শেখ মুজিবের নামে চিনতো আর এখন চেনে ইউনূসের নামে; তবে তফাৎ হলো, তখন বাংলাদেশের নাম শুনলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাঁতের পাটি শক্ত হয়ে উঠতো (মুজিব হত্যার পর সেই দাতেঁর পাটি নরম হতে শুরু করে), আর এখন বাংলাদেশের নাম শুনলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কিছু শক্ত হয়ে ওঠে। শেখ মুজিবের নামে পরিচিত বাংলাদেশ বিদেশীদের কাছে ছিল মুক্তিকামী অদম্য স্বপ্নচারী মানুষদের আবাসভূমি; আর ইউনূসের নামে পরিচিত বাংলাদেশ বিদেশীদের কাছে এমন একটি দেশ যে-দেশটির অধিবাসীরা অচিরেই নিজেদের গ্রামে বসে চা খেতে খেতে ড. ইউনূসদের তত্ত্বাবধানে ওয়ালমার্টের পাহারাদারি করবে, যে দেশের প্রবালদ্বীপ ও সমুদ্রবন্দরটিকে অচিরেই সাম্রাজ্যবাদীদের ইচ্ছে অনুযায়ী সাজানো হবে, যে দেশের তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদকে সামাজিক ব্যবসায়ের মাধ্যমে আহরণ করা হবে। বিদেশীরা তো আর আমাদের দেশের কথিত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত নয়-তারা ভালো করেই জানে, নোবেল শান্তি পুরস্কার কেন দেয়া হয়, কাদের দেয়া হয়। তারা তাই এটুকুও বোঝে, বাংলাদেশে এখন এমন একজন ব্যক্তিত্ব পাওয়া গেছে, যাকে দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সাম্রাজ্যবাদের ঘানি টানানো যাবে। বাংলাদেশকে এখন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নিরাপদ মনে করে, সপক্ষের মনে করে, তাদের কর্মের উপযোগী মনে করে-শেখ মুজিব যে-কাজটি করতে পারেননি, ইউনূস সেটি করেছেন, একাই করেছেন এবং মর্যাদাজনকই বটে! মর্যাদা বলতে মুহম্মদ জাফর ইকবাল আসলে কী বোঝেন, তা আমরা এখন একটু-একটু বুঝতে পারছি। আর তাঁকে তো দরিদ্র নারীদের মতো প্রতি সপ্তাহে ঋণ শোধ করতে হয় না। একদা বাঘের গলায় কাটা ফুটিয়াছিল, মুর্খ বক সেই কাটা তুলিয়াছিল, সে যে বাঁচিয়া আছে, ইহাই তো বড় পুরস্কার। বাংলাদেশের গ্রামের স্বামী-শ্বশুর-দেবরের কিল-গুড়ি-লাথি খাওয়া মহিলাদের যে গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ দেয়, এটিই তো বড় ঘটনা-১০০ টাকায় ৪৫ টাকা সুদ দিতে হয়, এটি কোনও ব্যাপার না কি? তিনি কখনোই বুঝতে পারবেন না, একশ টাকায় ৪৫ টাকা সুদ দিতে মাসের কয়দিন যায়। তিনি তাই খুবই ক্ষুব্ধ ইউনূসকে শেখ হাসিনা গরীবের রক্তচোষা বলায়। অথচ আশি-নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু করে বাংলাদেশে অনেকেই গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম পর্যবক্ষেণ করে যে-মূল্যায়ন করে আসছনে, তার সারমর্ম হলো ড. ইউনূস একজন আধুনিক সুদখোর মহাজন। দুঃখ লাগে, বদরুদ্দীন উমররা প্রাপ্য মর্যাদা পেলেন না। কতবার বদরুদ্দীন উমর এই কথা বললেন, কেউ গায়েই মাখল না-অথচ হাসিনা একবার না দুইবার বলতেই ‘হা রে রে রে’ করে তেড়ে এলো মুহম্মদ জাফর ইকবাল থেকে শুরু করে ফরহাদ মজহার।
বলাই বাহুল্য, নতুন এক রাজনৈতিক মেরুকরণের আভাসই দেখা যাচ্ছে এই ইউনূসকাহনের মধ্যে দিয়ে। যে-কীর্তির লেজ ধরে ড. ইউনূস প্রতীক হয়ে উঠেছেন সেই মাইক্রোক্রেডিট-এর ব্যবসা বাংলাদেশে আরও অনেকেই করেন, ইউনূসের আগে থেকেই করেন, যেমন ব্র্যাকের ফজলে হাসান আবেদও করেন, কিন্তু ফজলে হাসান আবেদ ড. ইউনূসের চেয়েও গভীর জলের মাছ, তিনি তাই মাইক্রোক্রেডিট নিয়ে ইউনূসের মতো লাফালাফি করেননি (হয়তো তিনিই অদূর ভবিষ্যতে হবেন ব্যর্থ ইউনূসের সফল উত্তরাধিকার); কিন্তু ইউনূস করেছেন। ইউনূসের মধ্যে যে-দানব বসবাস করে, সেই দানব পল্লবিত হয়েছে গ্রামীণ শব্দযুক্ত আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের ভিত্তির মধ্যে দিয়ে। ইউনূস এমন ব্যবস্থা করেছেন, যার ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের একটিরও নাকি প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে! এরকম একজন মানুষ ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেননা তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পক্ষে দাঁড়িয়ে আছে! আমাদের বলা হচ্ছে, মার্কনি যুক্তরাষ্ট্র চায় না ইউনূসকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হোক। বার বার মনে করিয়ে দেয়া হচ্ছে, তিনি নারীদের ক্ষমতায়ন করেছেন। কিন্তু আমাদের বলতেই দেয়া হচ্ছে না যে, নারী নেতৃত্বকে হারাম বলার পরও যেমন এ দেশের মৌলবাদীরা খালেদা জিয়ার বৃহৎ ছাতার নিচে দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক তেমনি নারীর ক্ষমতায়নের মতো সমিতি করার কথা বলার পরেও ড. ইউনূসরা মূলত অদৃশ্য শক্তির নতুন আজ্ঞাবহ-তাদের কাছে যুদ্ধাপরাধ কোনও ইস্যু নয়, মৌলবাদ কোনও ইস্যু নয়, ক্রসফায়ারে মৃত্যু কোনও ইস্যু নয়। তারা চান কর্পোরটেদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে জিদান দই, জুতা আর বিশুদ্ধ পানির ব্যবসা করতে (ধন্যবাদ আর্সেনিক সমস্যাকে), হাইব্রডি ধানের মোড়ক উন্মোচন করতে, তারা চান রফিকদের স্বপ্ন চুরি করে পরবিশেবান্ধব অটোভ্যান প্রচলনের কৃতিত্ব ও ব্যবসা গ্রামীণ ফান্ডের মতো প্রতিষ্ঠানের বগলের নিচে রাখতে।
তারপরও মুহম্মদ জাফর ইকবালদের এই মুহাম্মদ ইউনূস এখন ঐশ্বরিক ধর্মের সেই দোয়া ইউনূস, যা পড়তে পড়তে এগিয়ে গেলে বাংলাদেশকে ভয় পেতে হবে না, কোনও বিপদে পড়তে হবে না, হাঙর-কুমীরের খপ্পরে পড়তে হবে না। গ্রামীণ ব্যাংক যে ৪৫ শতাংশ হারে সুদ নিচ্ছে, জোবরা গ্রামের সুফিয়া যে ঋণের ঘোরে মারা গেছে, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও সুশীলগণের তা চোখে পড়ছে না, এমনকি সরকারও এগুলি আমলে নিচ্ছে না। আর একে অপরের সমালোচনা করলেও করলেও কৃপা পাওয়ার আশায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে কি আওয়ামী লীগ, কি বিএনপি। দীপুমনিদের সংবাদ সম্মেলন করে বলতে হচ্ছে, ‘এ ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না।’ অন্যদিকে, ড. ইউনূস বাঙালকে হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন, দেখাচ্ছেন হিলারী ক্লিনটনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কত সুমধুর (রাণী সোফিয়ার সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক নাকি সুমধুর, কিন্তু সেই রাণী সোফিয়া এবার অনেক তদবিরের পরও গ্রামীণ সফরে বাংলাদেশে আসতে রাজি হননি, ড. ইউনূসের দলীয় দৈনিকগুলি কিন্তু এ নিয়ে কোনও রিপোর্ট করেনি), ইউনূসের প্রেস উইং সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে এই প্রচারের পেছনে-ড. ইউনূস রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। বলা হচ্ছে, এই কারণে না কি হিলারী তার সফর বাতিল করেছেন, ওবামারও দেখা মিলবে না। অথচ এসব সফর বা সাক্ষাত সবই ছিল প্রাথমিক পর্বে, তা কখনোই চূড়ান্ত হয়নি, এসব ঘটনার অনেক আগে থেকেই ওই সফর ও সাক্ষাৎ ছিল অনিশ্চিত। এইসব কথা প্রচার করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ইউনূসদলীয় দৈনিকসমূহ। ড. ইউনূস তার ব্যক্তিসম্পর্ককে ব্যবহার করছেন রাষ্ট্র ও সরকারের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের সমাধান খুঁজে পেতে। তাঁর এই ব্যক্তিসম্পর্কের মাশুল বাংলাদেশকে কীভাবে দিতে হবে তা নিয়ে এদের কারও মাথাব্যথা নেই!
আর যে খালেদা জিয়া কিছুদিন আগেও ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের সন্ধান করেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সেই কুশীলবদের আঁতাত খুঁজে পেয়েছেন, তিনি এখন ঘটনাক্রমে এমন এক অবস্থানে যে মনে হচ্ছে এইসব সুশীল কুশীলবদের সঙ্গে তার রাজনৈতিক সখ্য আবারও জমে উঠেছে।
এই সুযোগে বামপন্থীরাও মুখ খুলছেন-শেখ হাসিনার সরকারকে একহাত দেখে নেয়ার এ সুযোগ তারা হাতছাড়া করতে নারাজ। আমরা যতদূর জানতাম, বামপন্থীরা বুর্জোয়াদের বিভিন্ন দ্বন্দ্বগুলিকে কাজে লাগায় তাদের মুখোশ উন্মোচনের কাজে। সে-হিসেবে, বুর্জোয়াদের বিভিন্ন অংশের মধ্যেকার এই দ্বন্দ্বপর্বটি ড. ইউনূস ও তাঁর ক্ষুদ্র ঋণ, সামাজিক ব্যবসা ইত্যাদি সব কিছুর মুখোশ উন্মোচনের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কিন্তু তারা তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন চর্বিত চর্বনে, আওয়ামী লীগ সরকার কেন এরকম একটি কাজ করতে গেল, সেটি বিশ্লেষণ করে ‘এসবে আমাদের কান দেয়ার কোনও দরকার নেই, কেননা আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই এ কাজ করছে’-এরকম একটি উপসংহার টানাই তাদের মূল লক্ষ্য।
অনেক আগে আমরা এক সাহাবুদ্দিনের সন্ধান পেয়েছিলাম, সেই সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমরা এত আহ্লাদিত হয়েছিলাম শুধুমাত্র তাঁর চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার জন্যেই দেশের সংবিধান পরিবর্তন করে বসেছিলাম। কেউই তাকে বলতে রাজি হইনি, দেশের এমন এক ক্রান্তিকালে আপনাকে দেশের এ দেশের জনগণ এমন একটি পদে আসীন হওয়ার গৌরব দিচ্ছে, এরপরও কেন আপনি নিজের চাকরিজীবনকে সমাপ্ত করাকেই জীবনের মুখ্য ব্রত মনে করছেন? এখন আমরা এক ইউনূসের সন্ধান পেয়েছি, তাঁকে নিয়ে আমরা এতই আহ্লাদিত যে হিলারী ক্লিনটনদের চড়থাপ্পর খেয়ে হলেও তাঁর নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তিকে মহিমান্বিত করতে চাই, তাকেঁ গ্রামীণ ব্যাংকের মহাপরিচালক বানিয়ে রাখতে চাই, যে-সব দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তার সবই ঢেকে রাখতে চাই।
অথচ এই আমরাই নাকি চাই, বিদেশে এ দেশের মাথা উঁচু হোক!
অবিশ্রুত
সেইসব দিন স্মরণে,- যখন কলামিস্টরা ছদ্মনামে লিখতেন; এমন নয় যে তাদের সাহসের অভাব ছিল, তারপরও তারা নামটিকে অনুক্ত রাখতেন। হতে পারে তাৎক্ষণিক ঝড়-ঝাপটার হাত থেকে বাঁচতেই তারা এরকম করতেন। আবার এ-ও হতে পারে, সাহসকেও বিনয়-ভুষণে সজ্জিত করেছিলেন তারা। আমারও খুব ইচ্ছে দেখার, নামহীন গোত্রহীন হলে মানুষ তাকে কী চোখে দেখে... কাঙালের কথা বাসী হলে কাঙালকে কি মানুষ আদৌ মনে করে!
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৫৯ comments
মাসুদ করিম - ১১ মার্চ ২০১১ (১২:১৮ পূর্বাহ্ণ)
ইউনূস প্রসঙ্গে যখন ক্ষুদ্রঋণ আসে বুঝতে চেষ্টা করি, যখন গ্রামীণ ব্যাংক আসে বুঝতে চেষ্টা করি, যখন দুর্নীতি আসে বুঝতে চেষ্টা করি, যখন রাজনীতি আসে বুঝতে চেষ্টা করি, যখন নোবেল তাও আবার শান্তিতে আসে তাও বুঝতে চেষ্টা করি, এমনকি যেসামাজিক ব্যবসাকে আমার কাঠালের আমসত্ত মনে হয় তাও বুঝতে চেষ্টা করি — কিন্তু ইউনূস প্রসঙ্গে যখন পাসপোর্টের কথা আসে তখন আর আমি কিছু বুঝতে পারি না — আরে আমার পাসপোর্টটা কি ইউনূসের দেশের পাসপোর্ট? না আমার পাসপোর্ট ও ইউনূসের পাসপোর্ট একই দেশের পাসপোর্ট? এই অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রশ্ন যাদের মনে আসে না তাদেরকে আমি আমার সহনাগরিক ভাবতে লজ্জিত বোধ করি।
সাগুফতা শারমীন তানিয়া - ১১ মার্চ ২০১১ (৪:৩৩ অপরাহ্ণ)
চমৎকার লেখা। মাসুদ করিমের সাথে সহমত।
Shawkat Khan - ১১ মার্চ ২০১১ (৭:৩১ পূর্বাহ্ণ)
I think this write-up is ill motivated, most likely written by a paid propagandist to create confusion. This unfortunate situation around Dr. Yunus has been solely created by Hasina & goon. If this help bring her government down in any way and help create a new political power led by world renowned and respected personalities, instead of being ruled by the totally unsophisticated, uneducated, mentally unstable, and vicious ladies, would not that be a blessing for the nation? I think most everybody supporting the current government’s handling of the issue is either missing the point or has some expected /direct personal benefit of some sort. I too have some unanswered questions about Dr. Yunus’ various operations. But the current fiasco is extremely detrimental to the nation. Could not he be used try to bring positive changes for the nation and in international stage, instead of making it a personal vendetta to strip him down. I am sorry, I do not have any respect for these political gang …Hasina or Khaleda. They are the problem of the country. …and not, Dr. Yunus or the west (conspiracy theory).
মাসুদ করিম - ১১ মার্চ ২০১১ (১:০১ অপরাহ্ণ)
পোস্ট লেখক সম্বন্ধে আপনার এই ধারণা ভাল লাগল। আপনি যেরকম আমাদের দেশে ‘স্যাটেলাইট গভর্নেন্স’
আশা করছেন তাতে পোস্ট লেখককে প্রোপাগ্যান্ডিস্ট এবং তদুপরি পেইড তো আপনি ভাববেনই। এরকম না ভাবলেই বরং আশ্চর্য হতাম ও খারাপ লাগত।
মোহাম্মদ মুনিম - ১২ মার্চ ২০১১ (৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ)
@Shawkat Khan
এই পোস্টের লেখক paid propagandist কিনা জানি না, তবে লেখাটিতে যা বলার তা গুছিয়েই বলা হয়েছে, আমি তো confusing কিছু দেখলাম না। অনুন্নত বিশ্বে কোন ধরণের সরকার বসলে west এর সুবিধা হবে, সে আলোচনা west এর রেডিও টিভিতে খোলাখুলি ভাবেই হয়। এতে কোন conspiracy theory নেই। ৫০ আর ৬০ এর দশকে ব্রিটেন আর আমেরিকা দেশে দেশে ক্যু ঘটিয়েছে, এসব তো একেবারে official history. ‘টেরোরিস্ট’ গাদ্দাফির অস্ত্রাগারে কোন কোন দেশের অস্ত্র আছে আর গাদ্দাফীর ২০০৩ সালের ‘তওবার’ পরপরই টনি ব্লেয়ারের লিবিয়াতে ছুটে যাওয়ার দৃশ্য এখন তো BBCতে প্রতিদিনই দেখানো হচ্ছে। মিশরে মোবারকের পতনের পরপরই ক্যামেরন সাহেবের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মিশর সফরও যে আরব বিশ্বে গণতন্ত্রের উত্থান উদযাপনের জন্য নয়, সেটা খানিকটা বুদ্ধি খাটালেই বোঝা যায়।
বাংলাদেশ থেকে হাসিনা খালেদা বিদায় নিয়ে খলিফা উমরের মত কোন সুশাসক আসবেন, যানজট, দুর্নীতি, ছাত্র রাজনীতি থাকবে না, সকলেই বিশুদ্ধ পানি পান করে কল সেন্টারে কাজ করবে, সফটওয়ার বানিয়ে আমেরিকায় রপ্তানি করবে, স্বল্প শিক্ষিতরা ভিডিওতে ওয়ালমার্ট পাহারা দিবে, এই জাতীয় দিবাস্বপ্ন আপনি দেখতেই পারেন, তবে সেই দিবাস্বপ্ন কখনোই সত্য হবে না। আমাদের সর্বশেষ খলিফা মইন ইউ আহমেদ আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন, শ্রদ্ধেয় ‘স্যার’ মোহাম্মদ জাফর ইকবাল ৭১ এর পর এমন সুবর্ণ সুযোগ বাংলাদেশে আসেনি, এ জাতীয় আশাবাদও ব্যক্ত করেছিলেন। দেখা গেল খলিফা চালের দাম বেড়ে গেলে কি করতে হবে বুঝে উঠতে পারছেন না, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের গালে সিপাহীর চড় বসানোর মত ‘তুচ্ছ’ ঘটনাও সামলাতে পারছেন না। সুশীল সমাজও ম্যাক্রো আর মাইক্রো ইকোনোমির অংবং বুঝলেও চালের দাম বাড়লে হাসিনা খালেদা কোন যাদু দিয়ে পরিস্থিতি সামলান তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারেননি। খলিফা পাবলিককে ভাতের পরিবর্তে আলু খাওয়া শেখালেন (ভাত না জুটলে মিষ্টি আলু দিয়ে পেট ভরানোর বিদ্যা পাবলিকের বহু আগে থেকেই জানা আছে)। খলিফা মইনের বুদ্ধি পূর্ববর্তী খলিফাদের চেয়ে খানিকটা বেশী হওয়াতে হাসিনা খালেদার হাতে দেশ ফেরত দিয়ে সসম্মানে সরে পড়েন।
অক্সফোর্ড আর হার্ভাডের ডিগ্রীধারী বাঘা বাঘা সিভিল আর মিলিটারি এলিট দিয়ে মিশরও গত ত্রিশ বছর ধরে শাসিত হয়েছে, চওড়া রাস্তা হয়েছে, সাবওয়ে হয়েছে, মার্কিন ধাঁচের বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, সবকিছুই তাসের ঘরের মত দুদিনেই ভেঙ্গে পড়েছে। আশেপাশের তাসের ঘরগুলোও ভাঙবে ভাঙবে করছে। সেসব দেশে হাসিনা খালেদা থাকলে এটা হতো না, সাবওয়ে হয়তো থাকতো না, দুর্নীতি থাকতো, নোংরা রাস্তাঘাট থাকতো, ফালু আর মহিউদ্দিনের মাস্তানদের নিয়ে লোকের অভিযোগ থাকতো, কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্ব হীনতা থাকতো না। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছাড়া কোন দেশ টিকে থাকে না, টিকে থাকে দেশ নামের জেলখানা। সেই জেলখানা থেকে জাওয়াহিরি আর মোহাম্মদ আতা ছাড়া আর কিছুই উৎপাদন হয় না।
অবিশ্রুত - ১২ মার্চ ২০১১ (৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ)
মন্তব্যের শুরুতেই যেখানে paid propagandist-এর সন্ধান পেয়েছেন, সেখানে বোঝাই যাচ্ছে, আপনি যা-তা মানুষ না। টাকা খেয়ে লিখেছে-এ কথাটি বলা খুবই সহজ, হয়তো অনেকে লিখেও থাকেন, কিন্তু সেরকমভাবে কাকে দিয়ে লেখানো হবে, কোথায় লেখানো হবে, সেসবেরও হিশেবনিকেশ থাকে-কিন্তু আপনি উদার মানুষ, সেরকম হিশেবনিকেশ করতে রাজি নন। আপনি চুনোপুটিরও হিশেব রাখেন-আপনাকে আমার লম্বা সালাম জানাই।
বাংলাদেশে, জাতীয় সংসদে দেয়া তথ্যমন্ত্রীর হিসেব অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি প্রচারসংখ্যা প্রথম আলোর, তারপর যুগান্তরের। এগুলির কোনওটিতেই গত কয়েক সপ্তাহে ড. ইউনূসের বিপক্ষে কোনও লেখা আমার চোখে পড়েনি। এমনকি অন্যান্য পত্রিকাগুলির মধ্যেও একমাত্র আমাদের সময় ছাড়া অন্য কোনও পত্রিকায় ইউনূসের বিরুদ্ধে তেমন কোনও কোনও লেখা দেখিনি।
আপনার কথার মানে দাঁড়াচ্ছে,বড় বড় প্রচারসর্বস্ব প্রচারমাধ্যমগুলিতে নিঃস্বার্থভাবে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা নিজ উদ্যোগে লিখে যাচ্ছেন। আর মুক্তাঙ্গনের মতো একটি ব্লগে, যে-ব্লগে মানুষজন নাকি টোকা দিয়েও দেখে না, সেই ব্লগে কোথাকার কোন অবিশ্রুতকে টাকাপয়সা দেয়া হচ্ছে ড. ইউনূসকে নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্ট লিখবার জন্যে! টাকাপয়সা যারা ছড়াচ্ছে তাদের জন্যে সত্যিই আপনি করুণা করতে পারেন।
একটি হিসেবই মেলাতে পারছি না-এরকম একটি প্রচারহীন ব্লগে আপনার পা পড়লো কেন!
শুনেছি, ইউনূসের প্রেস উইং এখন সবখানেই চোখ রাখছে; আপনি তাদের দলে সেটা বলব না, কেননা আপনি নিজেই লিখেছেন, আপনারও এমন কিছু প্রশ্ন আছে ইউনূসকে নিয়ে, যার উত্তর এখনও পাননি। আপনার প্রতি অনুরোধ রইলো, আপনি বরং দয়া করে সেই প্রশ্নগুলি এখানে উত্থাপন করুন। আমি এবং অন্যান্যরাও দেখি, প্রশ্নগুলো কোন ধরণের, সেগুলির উত্তর মেলার সম্ভাবনা আদৌ আছে কি না।
আরেকটি কথা না লিখে পারছি না, বিশ্বখ্যাত আর শ্রদ্ধাভাজন মানুষ হলেই যে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবেন, এরকম ধারণায় অন্তত আমার আস্থা নেই। তাই যদি হতো, তা হলে ভারতীয়রা অমর্ত্য সেনকে প্রধানমন্ত্রী বানাতো, মারিও ভার্গাস য়োসা নির্বাচনে হারতেন না, পাবলো নেরুদাকে চিলির নির্বাচনে দাঁড়াতে হতো, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হতেন ডেভিড বেকহ্যাম এবং পৃথিবীতে অনেক ডাক্তার, শিক্ষকই নির্বিবাদে নিজের পেশায় স্থির থাকতে পারতেন না। পৃথিবীর সফল রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে কয়জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, বলতে পারেন? যারা পেয়েছেন, তারা রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার পরে পেয়েছেন, আগে পাননি (তার মানে এই নয় যে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরে কেউ সফল রাষ্ট্রনায়ক হতে পারবেন না। কিন্তু হওয়ার মতো উপাদান আছে কি না, তা জনগণ অবশ্যই নেড়েচেড়ে দেখে নেবে)।
হাসিনা-খালেদা নিয়ে মানুষের তিক্ততা বোঝা খুবই সহজ, তাদের আমরা কয়েক দশক ধরে দেখছি। কিন্তু তারা রাজনীতি বোঝেন না, এরকম মনে করাও মহাবোকামী। তাই যদি হতো, তা হলে পেছনে পশ্চিমা বাহিনী আর সামরিক বাহিনী থেকে শুরু করে সুশীল বাহিনী থাকার পরও ওয়ান-ইলেভেনের কারিগরদের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি বলে বিদায় নিতে হতো না।
যাই হোক, আপনার সৎ-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ। আপনি সর্বত্র বিরাজ করুন, যেখানে ড. ইউনূসকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে সেখানেই নিঃস্বার্থভাবে ঝাপিয়ে পড়ুন, কামনা করি। আপনারাই তো আমাদের ইউনূসযুগের দিশা, ইউনূসযুগের কাণ্ডারী। বড় ভরসা পাই আপনাদের বাণী শুনলে।
অবিশ্রুত - ১২ মার্চ ২০১১ (৬:০৫ পূর্বাহ্ণ)
এই মুহূর্তে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন সফল রাষ্ট্রনায়কের নাম মনে আসছে, তিনি চার্চিল। তবে তিনি শান্তিতে নন, পুরস্কার পেয়েছিলেন সাহিত্যে আর রাজনীতিক হিসেবে খ্যাতিমান হয়েছিলেন নোবেল পাওয়ার অনেক আগেই।
ইউনূস-প্রসঙ্গে খানিক আগে আনু মুহাম্মদের একটি লেখা পড়লাম। তার কয়েকটি লাইন প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় এখানে তুলে দিচ্ছি :
এবং ইউনূসপন্থীরা ঠিক এ পথেই এগুচ্ছেন-তারা নানাভাবে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখাচ্ছেন, সরকারের সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে শেখ হাসিনার নোবেল না-পাওয়ার অতৃপ্তি!
মাসুদ করিম - ১২ মার্চ ২০১১ (৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ)
আরেক জনের নাম মনে পড়ল আমার জার্মানির চ্যান্সেলর উইলি ব্রান্ডট, ১৯৭১ সালে তিনি পেয়েছিলেন শান্তিতে নোবেল। জার্মানির পূর্বের দেশ গুলোর সাথে বিশেষত পূর্ব জার্মানি ও পোল্যান্ডের সাথে তিনি তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির সম্পর্কোন্নয়নের জন্য তার গৃহীত Neue Ostopolitik বা নতুন পূবরাজনীতির জন্য এই শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ব্রান্ডট জার্মানির বিশাল রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব তাকে জানার খুবই প্রাথমিক কাজটি করা যেতে পারে ইউকিপিডিয়ায় Willy Brandt পাতাটি পড়ে।
অবিশ্রুত - ১২ মার্চ ২০১১ (৬:১৪ পূর্বাহ্ণ)
আনু মুহাম্মদের লেখায় এক পাঠকের প্রতিক্রিয়া থেকে জানা গেল, ড.ইউনূসের দধিপার্টনার বৃত্তান্ত। পাঠক সৈয়দ আলী এ প্রসঙ্গে কয়েকটি লিংকও দিয়েছেন।
বাংলাদেশের মানুষের সেই সাধ্যি কি আছে যে, দধি খেয়ে খারাপ লাগলে মামলা করবে, জরিমানা আদায় করবে? তা-ও এই ইউনূস-দধি, যা দেশের মানুষের জন্যে ভারী স্বাস্থ্যকর, সুলভ ও উপাদেয়, যা ফরহাদ মজহার থেকে শুরু করে মুহম্মদ জাফর ইকবালেরও ভালো লাগে? বাংলাদেশের মতো এমন দেশ আর কোথায় পাওয়া যাবে, যেখানে জরিমানা না দিয়ে নির্বিবাদে কর্পোরেট দধি ব্যবসা করা যাবে?
রায়হান রশিদ - ১৩ মার্চ ২০১১ (১২:৩৭ অপরাহ্ণ)
@ প্রীতিভাজনেষু শওকত খান (Shawkat Khan) #২,
নাম দেখে আপনাকে বঙ্গসন্তান বলেই ধরে নিচ্ছি। সুতরাং, ভবিষ্যতে বাংলায় মন্তব্য লিখতে আশা করি আপনার আপত্তি হবে না তেমন একটা। এই পোস্টের বিষয়বস্তু বা আপনার মন্তব্য নিয়ে আশা করি আরো আলোচনার পরিসর তৈরী হবে, তবে এই সব অপরিণত শব্দ প্রয়োগ (যেমন: “paid propagandist”) থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করবো আপনাকে। আলোচনা করতে চাইলে আলোচনা করুন, যুক্তি থাকলে সেটা প্রয়োগ করুন, কিন্তু এসব ভিত্তিহীন ছেঁড়াছিঁড়ি থেকে আমাদের মতো পাঠককে রেহাই দিলে সত্যিই কৃতার্থ হই। ‘পেইড প্রপাগান্ডিস্ট’ বিষয়টি যখন উত্থাপনই করলেন তখন প্রসঙ্গত আরেকটি পোস্টের কথা এসেই পড়ছে। কতটুকু সত্যাসত্য জানি না, তবে সম্প্রতি ই-বাংলাদেশ এ প্রকাশিত “Friends of Grameen” is just a paid lobbying group! শিরোনামের পোস্টে দেখতে পাচ্ছি দাবী করা হয়েছে (স্ক্রিনশটসহ অবশ্য):
কিছুই বুঝতে পারছি না। ‘পেইড প্রোপাগান্ডা’-র বিষয়টি আপনি যেহেতু তুললেন, আশা করি আমাদেরও একটু বুঝিয়ে বলতে পারবেন।
ইমতিয়ার - ১২ মার্চ ২০১১ (৬:৩৬ অপরাহ্ণ)
গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে এত কাণ্ড শুরু হওয়ার অনেক আগে ফরাসি টেলিভিশন ফ্রান্স টুয়েন্টিফোর ডট কম-এর সংবাদে প্রচারিত হয়েছিল একটি প্রামাণ্যচিত্র দ্য ক্র্যাশিং বার্ডেন অব মাইক্রোক্রেডিট, যেটি নিয়ে আমাদের সময়-এ ১২ মার্চ প্রকাশিত হয়েছে একটি সংবাদপ্রতিবেদন।
এই সংবাদপ্রতিবেদন-এ উঠে এসেছে একটি বিষয় : কারও কাছে জবাবদিহিতা করতে মোটেই রাজি নয় গ্রামীণ ব্যাংকের কেউ। নূরজাহান বেগম নিরাপত্তাকর্মী ডেকে বের করে দিয়েছিলেন রিপোর্টারকে।
ফরাসি টেলিভিশনে প্রচারিত এ সংক্রান্ত সংবাদপ্রতিবেদনটি দেখা যাবে এখান থেকে।
আরমান রশিদ - ১৪ মার্চ ২০১১ (১২:৩১ পূর্বাহ্ণ)
লিঙ্কটির জন্য ধন্যবাদ। এরকম আরো কিছু ডকুমেন্টারি দেখার সুযোগ হয়েছে। তবে এই ডকুমেন্টারির একটা বিষয় লক্ষ্য করেছেন? গ্রামবাসির সাক্ষাতকার গুলিতে ব্যাকগ্রাউন্ডে বলা বাংলার সাথে ইংরেজি অনুবাদ ঠিক মেলে না। একটু খেয়াল করে শুনে জানাবেন কি মনে হয়।
আরমান রশিদ - ১৪ মার্চ ২০১১ (১২:০৫ পূর্বাহ্ণ)
@অবিশ্রুত
অনেক দিন ধরেই মুক্তাঙ্গনে আপনার লেখা পড়ি। এক রকম ভক্তই বলতে পারেন। আমার মত নিতান্ত সাধারণ মনুষ যারা, কারো ভক্তে পরিনত হতে তাদের বেশি বেগ পেতে হয় না। তাই বলতে সঙ্কোচ নেই যে একই সাথে আমি ড জাফর ইকবাল আর ড ইউনুস এরো ভক্ত। আপনার কাছ থেকে এ প্রসঙ্গে একটা বিশ্লেষন ধর্মী লিখা আশা করেছিলাম, সে অর্থে এই লিখাটা কিছুটা হতাশ করলো। নিচে এই হতাশার কয়েকটি কারণ তুলে ধরলাম।
১
মানি যে নোবেল শান্তি পুরস্কার এর পেছনে সাম্রায্যবাদীদের গোপণ অভিপ্রায় থাকতেই পারে। তবে আপনার লেখায় এ প্রসঙ্গে যে সুরটা প্রাধান্য পেল তা হল এই পুরস্কার পাবার অর্থই হল এর পেছনে সাম্রায্যবাদীদের কোন উদ্দেস্য আছে তাই পুরস্কৃত ব্যাক্তিটিকে এবং তার অবদানকে ছোট করার একটা প্রবনতাও মনে হয় টের পেলাম। আমার ভুল হলে অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে খটকা টা লাগলো একারণে যে আপনি হেনরি কিসিঞ্জার এর কথা উল্লেখ করলেন কিন্তু নেলসন মেন্ডেলা বা মার্টিন লুথার কিং এর কথা এড়িয়ে গেলেন। পেরেজ-রবিন এর কথা উল্লেখ করলেও তাদের সাথে যে যুক্ত ভাবে ইয়াসির আরাফাতকেও সে বছর পুরস্কার টা দেয়া হয়েছিল শান্তি চুক্তি সই করার জন্য সে কথা উল্লেখ করলেন না। তবে কি এই লিঙ্কে যাদের নাম উল্লেখিত আছে সবাই সাম্রায্যবাদের চর? সামগ্রিক মানবতার পেছনে তাদের কারোই কোন অবদান নেই? যে এটর্নি জেনারেলকে এত কটাক্ষ করলেন আপনার নিজের লেখার সুরটাও কিছুটা তার মতই হয়ে গেল যে।
২
এবার আসি মাইক্রো ক্রেডিট প্রসঙ্গে। আজ কাল বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এর পক্ষে বিপক্ষে নানা লিখা পড়ছি। তবে বাংলাদেশে যে ২ কোটি লোক এই ঋণের আওতায় এসেছে তাদের কয়জন এ থেকে উপকৃত হয়েছে আর কয়জন দেউলিয়া হয়েছে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন তথ্য নির্ভর গবেষণাপত্র পেলাম না। আপনার কাছে থাকলে দয়া করে জানাবেন। সূদের হার নিয়েও দেখি মহা বিতর্ক চলছে চারিদিকে। কেউ বলে ১৫ তো কেউ বলে ৪৫, সামান্য যেটুকু অংক বুঝি তাতে চক্রবৃদ্ধি হারেও ১৫ কিভাবে ৪৫ শে ঠেকে সে হিসেবটা ঠিক বোধগম্য নয়। একটু বুঝিয়ে বললে আশা করি ব্যাপারটা পরিস্কার হবে।
৩
আপনি উল্লেখ করেছেন সুফিয়া বেগমের নিদারুন পরিনতির কথা তবে তথ্য সূত্রের উল্লেখ করেননি। নরওয়েজিয়ান টেলিভিশনে ‘কট ইন মাইক্রো-ক্রেডিট’ নামে যে ডকুমেন্টারি প্রচারিত হয়েছে হয়তো তা থেকেই ব্যাপারটা জেনেছেন। এ প্রসঙ্গে আরেকটি লিংক পেলাম যেখানে ঘটনাটি পুরোপুরি বানোয়াট বলে দাবী করা হয়েছে। তবে এই ডকুমেন্টারিতেও কিছুটা খটকা লাগলো এ কারণে যে ড ইউনুস কেন সুফিয়া বেগমের ছদ্দনাম ব্যাবহার করলেন সে বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। মুক্তাঙ্গনের চট্টগ্রাম পাঠক-লেখকদের কাছে এ ব্যাপারে আরো অনুসন্ধানের অনুরোধ রইলো।
৪
আপনি ড ইউনুসের দূর্ণিতির উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে গ্রামীন এর ব্যাখ্যা পড়েছি, তবে সে ব্যাখ্যা যে মিথ্যা সেরকম কোন তথ্যনির্ভর লিখা পাইনি। সেরকম কোন মামলাও এখন পর্যন্ত কোন আদালতে উঠেনি। বরং দেখেছি কোথাকার কোন মহামান্য নেতা তার নামে মানহানির মামলা করেছেন কারন তিনি বলেছেন বাংলাদেশের রাজনীতিকরা টাকার জন্য রাজনিতি করেন। যে কথার জন্য তাকে দেশের আনাচে কানাচে ছুটতে হয়েছে জামিনের আশায়, তা শুধু তার কথা নয় বরং দেশের অগনীত মানুষের পর্যবেক্ষন। তাই বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে এর চেয়ে গুরুতর অপরাধ থাকা সত্যেও বর্তমাণ সরকার তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যদি বলেন পশ্চিমা বিশ্বের চাপে সেরকম পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছেনা তবে সাম্প্রতিক ঘটনার মুল্যায়নে সে যুক্তিও ঠিক টেকে না। রিট মামলা দু’টি খারিজ হবার যুক্তি কি সে প্রসঙ্গে একটি আইনি ব্যাখ্যা পেলেও হয়তো অনেক কিছু পরিস্কার হত।
৫
আপনি অভিযোগ করলেন ড ইউনুসের কাছে যুদ্ধাপরাধ, মৌলবাদ বা ক্রস ফায়ার কোন ইশু নয় তবে এ প্রসঙ্গে কোন তথ্যসূত্র বা তার কোন বক্তব্যের লিঙ্ক পেলে ভাল হত। তিনি নিজেকে সকল রোগের মহৌষধ হিসেবে কোথাও দাবী করেছেন বলেও আমার জানা নেই। বরং তিনি দাবী করেন সারাজীবন দেশের দারিদ্র দুরিকরণে কাজ করেছেন। দারিদ্র বা নারীর ক্ষমতায়নই বা এত তুচ্ছ বিষয় হয় কি করে?
নোবেল বিজয়ের পর তার আশ-পাশে যত বুদ্ধিজিবি দেখেছি আজ তারা একশ হাত দূরে থাকুন নীতি পালন করছেন পাছে নেত্রীর কুনজরে পড়েন। আবার সেই একই কারনে অনেকে বেরিয়েছেন ইউনুস শিকারে। এক মন্তব্যে পড়লাম ড জাফর ইকবাল কিভাবে ওয়ান ইলেভেন এর হোতাদের তোষামদ করেছেন সে কাহিনী কিন্তু তিনি ভুলে গেলেন এই জাফর ইকবালই একমাত্র ব্যাক্তি যে কি না সেই সময় দেশের ভিতরে থেকেও জোর গলায় মিলিটারি নৃসংসতার প্রতিবাদ করেছিলেন। দেশের মানুষকে জানিয়েছিলেন চলেশ রিছিলের কথা। এখন তাকেও এক কাতারে খালেদা আর মৌলবাদিদের সাথে গোনা হচ্ছে কারণ তিনি তার বিবেচনায় শ্রদ্ধাভাজন এক ব্যাক্তির পাশে এসে দাড়িয়েছেন। আমরা কাল যাদের মাথায় তুলে নেচেছি আজ দুঃসময়ে তাদেরকেই ঢিল ছুড়তে এক বিন্দু কুন্ঠাবোধ করি না। হয়তো এটা শুধু খেলার মাঠের চিত্র নয় বরং আমাদের জাতীয় চরিত্র।
সম্প্রতি দেশে কয়েক বছর কাটিয়ে আসার সুযোগ হয়েছিল। সে সময়ে দেশের আনাচে কানাচে ড ইউনুসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে সোচ্চার দেখেছি মৌলবাদীদের। ভয় হয় এই ইউনুস / গ্রামীন নিধনে মৌলবাদিদের হাতই হয়তো আরো শক্তিশালী করা হবে।
অবিশ্রুত - ১৫ মার্চ ২০১১ (১২:৪০ পূর্বাহ্ণ)
আরমান রশিদ
আমার লেখাটি আপনাকে আশাহত করায় এবং আপনার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি হওয়ায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত। মনে হচ্ছে, আমার প্রতিক্রিয়াতেও আপনি আশাহত হবেন। কেননা যেসব বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলছি তা ঠিক পদার্থ বিজ্ঞান অথবা রসায়ন বিজ্ঞানের মতো বিষয় নয় যে একেবারে কাটায় কাটায় হিসেব করে প্রমাণ করা যাবে।
প্রথমেই বলে নেয়া ভালো, যে ইউনূসকে নিয়ে দু’চার কথা বলেছি, তিনি ব্যক্তি ইউনূস নন, তিনি একটি ব্যবস্থা ও মতের ধারক ও ফসল। খুব সংক্ষেপে বলতে গেলে, তিনি মনে করেন দারিদ্র বিমোচন সম্ভবপর হতে পারে ক্ষুদ্র ঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে। আমরা হয়তো ক্ষুদ্র ঋণ ও সামাজিক ব্যবসা নিয়েই কথা বলতে পারতাম, সেটাই শোভনীয় হতো, কিন্তু ড. ইউনূসের কথা বার বার আসছে; কেননা, মাইক্রোক্রেডিটের সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটেছে তারই হাত দিয়ে। তিনি একটি প্রতীক হয়ে উঠেছেন। এবং এ-ও সত্য, নোবেলপ্রাপ্তির আগে থেকেই তিনি আলোচিত ব্যক্তি/ব্যক্তিত্ব এবং নোবেল না পেলেও তাকে নিয়ে আমাদের আলোচনা করতে হতো।
আমার কথায় যদি নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত সবাইকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুর প্রাধান্য পেয়ে থাকে, সে জন্যে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে আপনি আমার চেয়ে ভালো করে জানেন, নোবেল শান্তি পুরস্কারের রাজনীতিকরণের বিষয়টি গত কয়েক দশক ধরেই সারা বিশ্বে আলোচিত। যাদের নিয়ে সত্যিই কোনও প্রশ্ন নেই, তাদের উল্লেখ আমি প্রয়োজন মনে করিনি এ কারণে যে, সাম্প্রতিক বিশ্বরাজনীতির আলোকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের অপব্যবহারের প্রসঙ্গ আনাই এ ক্ষেত্রে মুখ্য বিবেচ্য বিষয় ছিল। পেরেজ-রবিনের সঙ্গে ইয়াসির আরাফাত শান্তি পুরস্কার পান ঠিকই, কিন্তু তার ফলে আরাফাতের গৌরব বৃদ্ধি পায় না কি অবনমিত হয়, সে সিদ্ধান্ত ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে; হেনরি কিসিঞ্জার এ পুরস্কার পাওয়ার ফলে তিনি মার্টিন লুথার কিং কিংবা নেলসন মেন্ডেলার পর্যায়ে পৌঁছেছেন কি না, সে ধারণাও ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। যে-সব মানুষগুলি পৃথিবীর মানব বিপর্যয়ের জন্যে সবচেয়ে বেশি-বেশি দায়ী, তারা তাদের বৈধতা এখন আদায় করছে নোবেল শান্তি পুরস্কার আদায়ের মাধ্যমে-আমার কাছে তাই মনে হয়েছে (এর অর্থ এই নয় যে, এর বাইরের আর কেউ ফাঁকফোকড় গলে বেরিয়ে আসছেন না)।
সুফিয়া বেগমের নিদারুণ পরিণতির কথা আমি একাধিক স্থানে পড়েছি। আপনি নিশ্চয়ই জানেন, বাংলা সংবাদপত্রগুলির আর্কাইভ খুব উন্নত নয়। অনেক সময় পুরানো সংবাদ, লেখা ও প্রতিবেদন আর্কাইভে আর খুজেঁ পাওয়া যায় না, অনুসন্ধান দিলেও সন্ধান মেলে না। তবে সুফিয়া বেগমকে নিয়ে প্রতিবেদনটি ২০০৯ সালের মে মাসের কোনও এক সময় সাপ্তাহিক ২০০০-এ প্রকাশিত হয়েছিল, শিরোনাম ছিল ‘সুফিয়ার কবর চাঁদার টাকায়, ইউনূসের হাতে নোবেল’ এই জাতীয়।
একইভাবে, বিভিন্ন মানবাধিকার (ক্রসফায়ার)কিংবা যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতেও ড.ইউনূসের উদ্ধৃতির কোনও লিংক আমি এই মুহূর্তে দিতে পারছি না। প্রসঙ্গত বলি, এ প্রসঙ্গে আমার বাক্যগুলির মূল সুর এরকম : এগুলি তার কাছে জরুরি ইস্যু বলে মনে হয় না। তার কারণ তিনি এসব প্রসঙ্গ এলেই এড়িয়ে চলেন, বিরক্ত হন, অথবা এমন মন্তব্য করেন যা হাস্যকর বলে মনে হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে সংবাদপত্রে পড়েছি, সাংবাদিকরা যখন যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে তার মন্তব্য চেয়েছিলেন তখন তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। এ নিয়ে প্রাসঙ্গিক লিংকটিও খুজেঁ পাচ্ছি না। তবে আমার স্মৃতি যে এসব ব্যাপারে বিশ্বাসঘাতকতা করছে না, সেরকম বোধহয় দাবি করা যায়। কেননা আনু মুহাম্মদের লেখায় দেখতে পাচ্ছি, তিনি লিখেছেন :
এসব প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট খবর বা কোনও প্রতিবেদনের লিংক পেলে অবশ্যই তা পরবর্তী কোনও এক সময় এখানে যুক্ত করা হবে।
যতদূর জানি, গ্রামীণ, সেই সূত্রে ইউনূস সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল অডিট রিপোর্টই এখন পর্যন্ত অপ্রকাশিত এবং অন্ধকারে। তাই সাধারণভাবে ড. ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে সংবাদপত্রে যে-সব খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে যে-সব দুর্নীতি-অনিয়মের কথা বলা হচ্ছে, অন্য কাউকে তা স্পর্শ করেছে কি না জানি না, তবে আমাকে স্পর্শ করেছে। এরকম অভিযোগ অনেককে আহত করতে পারে, তারা বলতেই পারেন, দুর্নীতির সম্পদ কোথায় রাখা হয়েছে দেখান। আমাদের সামনে দুর্নীতি-অনিয়ম গোপনের এত উদাহরণ আছে যে, এরকম চ্যালেঞ্জে আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। ড. ইউনূসের জীবনযাপনের প্যাটার্ন, পোশাকআশাকের ভিত্তিতে যদি আমরা দুর্নীতি-অনিয়ম খুঁজতে যাই, তা হলে তা হাস্যকরই হবে। তিনি যে কাঠামো গড়ে তুলেছেন সেই কাঠামোর মধ্যে নিহিত দুর্নীতি-অনিয়মই প্রতীকার্থে তাঁর দুর্নীতি-অনিয়ম। এবং এসব দুর্নীতি-অনিয়মকে চিহ্নিত করা খুব সোজা নয়। কিন্তু অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব একটি মারাত্মক জিনিস, তা প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দেয়। ইউনূসকে নিয়ে সরকারপক্ষ ও সুশীলপক্ষের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে তা এই বাক্স প্রায় খুলে ফেলেছে। বাক্সের মধ্যে থেকে শক্তি দই বেরিয়ে এসেছে (এ নিয়ে মামলাও হয়েছে), সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলির অনিয়ম নিয়ে কথা উঠেছে, পুরানো মন্ত্রী নাসিম এখন বলে বেড়াচ্ছেন কোনও টেন্ডার ছাড়াই গ্রামীণ ফোন কাজ পেয়েছিল এবং এসবই সব কিছুর শুরু বলা চলে।
সুদের হার কিভাবে ৪৫ শতাংশ হয়, সে ব্যাপারে আপাতত আপনাকে কোনও বিস্তারিত ও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা আমিও দিতে পারছি না। বিষয়টি উদ্ধার করে অচিরেই এখানে জানানোর আশা রাখি।
আমি দুঃখিত, আপনার দুজন প্রিয় মানুষের প্রসঙ্গ এ লেখায় এমনভাবে এসেছে, যা আপনাকে আহত করেছে বলে। কিন্তু আমি নিরুপায়। আপনি ঠিকই বলেছেন, চলেশ রিছিলকে নিয়ে মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখাটি অনন্য। তাঁর লেখা কয়েকটি লাইন দিয়েই আপাতত ক্ষান্তি দিতে চাই :একজন বিখ্যাত মানুষ দিয়ে কী হয়- কিছুই হয় না। কিন্তু, একশজন খাঁটি মানুষ একটি দেশ বদলে দিতে পারে।
মোহাম্মদ মুনিম - ১৫ মার্চ ২০১১ (২:১৪ পূর্বাহ্ণ)
মোহাম্মদ জাফর ইকবাল চলেশ রিছিল ছাড়াও দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার বিষয়ে একটি অত্যন্ত শক্তিশালী লেখা লিখেছিলেন (‘মূর্তি ভাঙ্গার খবর শুনে বুঝতে পারলাম দুর্গাপূজা এসে গেছে’) সাম্প্রতিক সময়ে দিগন্ত টিভিতে সাক্ষাৎকার দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ভিডিওটিও বেশ আলোড়ন তুলেছে। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলবাদ বিষয়ে তাঁর সাহসী ভূমিকাও অস্বীকার করছি না। ১-১১ এর হোতাদের তিনি তোষামোদ করেছেন, এটা আমি বলতে চাইনি, তিনি ১-১১ এ যা হয়েছে তাতে আশান্বিত হয়েছিলেন, এটাই আমি বলতে চেয়েছি। ১-১১ এ যা হয়েছে তা মিলিটারি ক্যু এর চেয়েও ভয়ঙ্কর ব্যাপার। সে সময়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির মধ্যে একটা সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু ব্রিটিশ আর মার্কিন রাষ্ট্রদূতেরা সেটাকে গৃহযুদ্ধের চেহারা দিয়ে দিনরাত অহেতুক ছুটাছুটি শুরু করেন, মইন ইউ আহমেদ তাঁদের সবুজ সঙ্কেত পেয়েই বেনামে ক্ষমতা দখল করেন। ক্ষমতা নিয়ে আগের স্বৈরশাসকদের মতই তিনি রাজনৈতিক জঞ্জাল সাফ করা শুরু করেন। পাবলিক এ জাতীয় কাজকর্মে সব সময়েই প্রথমে হাততালি দেয় এবং কিছুদিনের মধ্যেই নিজেদের ভুল বুঝতে পারে। মোহাম্মদ জাফর ইকবাল নিজেও এই হাততালিতে যোগ দেন। তরুণ সম্প্রদায়ের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবালের এই হাততালি শুধু তাঁর নিজের হাততালি নয়, এক ধরনের endorsement. তিনি তোষামোদ করেননি বটে, তবে কতিপয় সিভিল আর মিলিটারী এলিটের ফাঁকতালে ক্ষমতা দখলের সাথে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের তুলনা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর নিজের পিতা প্রাণ হারিয়েছেন, তিনি নিজেও পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন, এত কিছুর পরেও সেনাশাসনের মধ্যে তিনি কি নতুন আলো দেখেছিলেন সেটা তিনিই ভাল বলতে পারবেন।
মাসুদ করিম - ১৫ মার্চ ২০১১ (১০:০৯ পূর্বাহ্ণ)
কারা এই মৌলবাদী? গ্রামের মোল্লা মুয়াজ্জিন মাওলানা শ্রেণী? যাদের প্রধান কাজ আমপারা ও মিলাদ পড়ানো এবং তাবিজ তুমার পানিপড়া বিক্রি করা, নাকি আরেক ধরনের মোল্লা মুয়াজ্জিন মাওলানা শ্রেণী যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত হয়ে গ্রামে কাজ করেন। প্রথম অংশ ধর্মান্ধ ও মৌলবাদী হলেও এদের কোনো রাজনৈতিক ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা এবং কোনো জঙ্গি মনোভাব ও তৎপরতা নেই। এরা ইউনূসকে অপছন্দ করলেও করতে পারে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ওই দ্বিতীয় অংশ ইউনূসের বিরু্দ্ধে উপরে উপরে সোচ্চার দেখালেও ভিতরে ভিতরে তাকে সমর্থনই করে — কারণ তারা চায় এই ইউনূস সূত্র ধরে যদি আওয়ামী লীগের তথা শেখ হাসিনার ক্ষমতা টলিয়ে দেয়া যায় তাহলে তাদের এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে যাবে। অবিশ্রুত যেটা বলছিলেন আমাদের দেশে মিডিয়ার আর্কাইভ সিস্টেম ভাল নয়, সেকথাটা জঙ্গি মৌলবাদ প্রসঙ্গে আবার বলতে হচ্ছে — ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসার পর রেহমান সোবহানের মতো ইউনূসও প্রবন্ধ ফেঁদেছিলেন ওই নির্বাচনে বিএনপি-জামাতের ভূমিধ্বস বিজয়ের গাণিতিক ব্যাখ্যা ও এর পেছনে কী কী নিয়ামক কাজ করেছে সেসব নিয়ে। কিন্তু এরপর যখন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-জামাতের ছত্রছায়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের মহিলাদের উপর সংঘবদ্ধ সহিংস মৌলবাদী আক্রমণ হয়েছিল তখন একবারের জন্যও ইউনূসকে প্রতিবাদ তো দূরে থাক একটা বিবৃতি পর্যন্ত দিতে দেখা যায়নি। এসব কথা আজ আর লিন্ক দিয়ে বলা সম্ভব নয়।
আর ইউনূস নিধন আর গ্রামীণ নিধনকে সমার্থক ভাবার এখনো কিছু হয়নি। ইউনূস যুক্ত না থাকলে গ্রামীণ ব্যাংক চলবে না তাত্ত্বিকভাবে এর কোনো ভিত্তি নেই। গ্রামীণ ব্যাংকের ফান্ড এখন আর বিদেশ থেকে আসে না, ব্যাংকের জামানত প্রক্রিয়া থেকেই এর ঋণদান প্রক্রিয়া চলে, ফলে যোগ্য যে কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিয়েই এই প্রতিষ্ঠান চালানো সম্ভব। বরঞ্চ নোবেল প্রাপ্তির বিড়ম্বনা হিসেবে যে ইউনূসকে বছরের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকতে হচ্ছিল এবং সামাজিক ব্যবসা নিয়ে তার বেশি মনোযোগের কারণে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অনুপস্থিত একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চেয়ে আরো ভাল চলার কথা। এখন কথা হচ্ছে এই সহজ বিষয়টি কার দোষে ঘোলা হল ইউনূসের না হাসিনার? এই প্রশ্নের উত্তর যাদের কাছ থেকে আমরা পেতে পারতাম তাদের কেউই এখন কথা বলছেন না, আমরা এও জানি না তারা কখনো এবিষয়ে কথা বলবেন কিনা।
অবিশ্রুত - ১৫ মার্চ ২০১১ (৫:০২ অপরাহ্ণ)
বাংলা ভাষায় মিডিয়া আর্কাইভের দুর্বলতার কথা মনে রেখে সময় থাকতেই এখানে একটি বিষয় তুলে রাখছি। গত ছয় মার্চ, ২০১১-তে যুগান্তরের একটি লেখায় বদরুদ্দীন উমর গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অপসারণসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ব্যাপারে লিখেছেন :
বদরুদ্দীন উমরের লেখাটির শিরোনাম : ড. মুহাম্মদ ইউনূস কাদের লোক। উদ্ধৃতির বাক্যসমূহে গুরুত্বারোপ আমার করা।
নীড় সন্ধানী - ১৫ মার্চ ২০১১ (৫:২৩ অপরাহ্ণ)
১. নোবেল প্রাপ্তির পরে যারা গ্রামীণ ব্যাংক আর ড.ইউনুসের বিরোধিতায় নেমেছেন, তাদের গ্রামীণ বিরোধীতার বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। স্পষ্টতই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক এবং ব্যক্তি বিদ্বেষ। তাদের সাথে আলোচনা বা বিতর্ক অর্থহীন। আনু মুহম্মদের মতো যারা গোড়া থেকেই গ্রামীনের বিরোধীতায় ছিলেন/আছেন, সেটা ব্যক্তি বিদ্বেষ নয়, সেটা নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে।
২. ক্ষুদ্র ঋনের সুদ বেশী। এই সুদের হার নির্ধারনে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ করার অধিকার আছে। গ্রামীনের বর্তমান সুদের হার ২০%, যেটা পিকেএসএফ প্রস্তাবিত সুদের হার ২৭% এর নীচে। ১০০ টাকায় ৪৫ টাকা সুদের হার জাতীয় কিছু চোখে পড়েনি। দয়া করে সুত্রটা উল্লেখ করবেন কি? ‘সুদখোর মহাজন’ জাতীয় বাক্যগুলি যারা ব্যবহার করেন তারা গোটা বিশ্বের ব্যাংক ব্যবস্থাকে অস্বীকার করেন কিংবা ব্যাংকিং জিনিসটাই বোঝেন না তারা। রাষ্ট্রের প্রধানতম ব্যক্তির মুখে এরকম সস্তা বাগধারা শিক্ষার দৈন্যতাকেই প্রকাশ করে।
৩. নোবেল শান্তি একটি রাজনৈতিক পুরস্কার। বিভিন্ন সময়ে এই পুরষ্কারের জন্য নির্বাচিত ব্যক্তিদের মধ্যে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বও আছে। মাদার তেরেসা যেমন আছে তেমনি আইজাক শ্যারন আছে। তাই নোবেল পেলেই কেউ দেবতা হয়ে গেল কিংবা কেউ শয়তানের চর হয়ে গেল, এই ধারনাটাও হাস্যকর।
৪. ইউনুসকে যারা দেবতা মনে করেন কিংবা যারা শয়তানের চর মনে করেন, দুই দলই বিভ্রান্তির জালে আটকা আছেন, আলোচনার কোন অবকাশ রাখেননি দুই পক্ষই। সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন আগেই। যারা সংশয়বাদী তাদের সাথে বরং আলোচনা করা যেতে পারে।
৫. ইউনুসের পক্ষে বলার জন্য জাফর ইকবালকে যদি তীব্র আক্রমনের সম্মুখীন করা করা যায়, তাহলে হাসিনা খালেদার মতো অযোগ্য নেতার প্রশংসায় মুখর উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে কি করা উচিত?
৬. গ্রামীণ বা ড.ইউনুসের কারণে আমার পাসপোর্টের বিন্দুমাত্র দাম বাড়েনি। কিন্তু একজন ভিনদেশী মানুষ যখন ড.ইউনুসের নামটা সম্মানের সাথে উচ্চারণ করে, সেটায় আমার আত্মপ্রসাদ হলে সমস্যা কোথায়। লোকটার সব কাজ হয়তো প্রশ্নাতীত নয়, কিন্তু লোকটা বিশ্বে নিজের একটা ইমেজ তৈরী করেছে কোন রাজনৈতিক সংগঠন ছাড়াই। এটা একটা যোগ্যতা, এটাকে অস্বীকার করে আমি কিসের বড়াই করি?
৭. গ্রামীণের কারনে বাংলাদেশ লাভবান হলো না ক্ষতিগ্রস্থ হলো, গ্রামীনের হাজার কোটি টাকার মালিকানা অবশেষে কার কাছে যাবে, ইউনুসের ব্যক্তিগত হিসেবে গ্রামীনের কতো টাকা অবৈধভাবে ঢুকেছে, সেসব নিয়ে একটা তদন্ত হতে পারে, গবেষণা হতে পারে, কিন্তু সেরকম কিছু না করে কেবল ইউনস খেদাও কর্মসূচীতে সরকার দেশকে কি দিল? ক্ষুদ্রঋনের ব্যবসা কি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হবে? হাজার হাজার এনজিও এই ব্যবসায় জড়িত, তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা হবে না?
৮. সরকার কি রোগের বিরুদ্ধে লড়ছে না রোগীর?
৯. গ্রামীণ ব্যাংককে দাতব্য প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা?
মাসুদ করিম - ১৫ মার্চ ২০১১ (৬:৪২ অপরাহ্ণ)
এই সুদের হারের লিন্ক দিতে পারেন? যদিও লিন্কই সব নয় বাস্তবে কত নেয়া হচ্ছে তা সরেজমিনে তদন্ত দাবি করে। গ্রামীণের ওয়েবসাইটে সুদের যেহার আছে তা আপনার উল্লেখিত সুদের হারের চেয়ে অনেক কম : ১১% ফ্ল্যাট আর ডিক্লাইনিং ধরলে ২২%।
কিন্তু সেই ঘোষণাতেও সমস্যা আছে একবার বলা হচ্ছে ১১% আবার উদাহরণ দিতে গিয়ে বলা হচ্ছে ১০%।
লিন্ক এখানে।
আর পিকেএসএফ-এর যেসুদের হার বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে পাচ্ছি তার সাথে আবার আপনার তথ্যটা মিলছে না।
লিন্ক এখানে। যেপাতা থেকে আমি উদ্ধৃতি দিয়েছি সেখানে যেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইটে গিয়ে Financial System-এ ক্লিক করুন তারপর সেখানে Micro Finance Institutions (MFIs)-এ ক্লিক করুন।
সুদের হারের ক্ষেত্রে একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আমানতকারীকে কত দেয়া হচ্ছে এবং ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে কত নেয়া হচ্ছে। সেহিসাবটা লক্ষ্য করলে দেখা যায় আমানতকারীকে গড়ে ৫% সুদ দেয়া হচ্ছে যেখানে ঋণগ্রহীতা থেকে নেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবেই ১০-২০%, তার মানে এখানে একটা ভাল মার্জিন আছে যদিও ক্ষুদ্রঋণ ও জামানতবিহীন ঋণের ক্ষেত্রে এটাকে আমরা স্বাভাবিক ধরে নিচ্ছি কারণ এক্ষেত্রে পরিচালন ব্যয় ব্যাংকের অনেক বেশি। কিন্তু বাজারে আমরা সচরাচর যা শুনি ২০ থেকে ২৫% ফ্ল্যাট রেটে ও তার উপরে সুদ নেয়া হয়, তাহলে তো এটা পীরের ‘রক্ত চুষে’ নেয়া ছাড়া আর কিছু নয় এবং আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত কিভাবে আমরা এই সরেজমিন ফলাফলটা পেতে পারি।
নীড় সন্ধানী - ১৫ মার্চ ২০১১ (১১:০৮ অপরাহ্ণ)
১.গ্রামীনের সুদের হার আপনার কমেন্টের মধ্যেই দেয়া আছে
There are four interest rates for loans from Grameen Bank : 20% for income generating loans, 8% for housing loans, 5% for student loans, and 0% (interest-free) loans for Struggling Members (beggars).
আমরা যখন সুদের হারের কথা বলি তখন income generating loans এর সুদের কথাই বলি। ফ্ল্যাট রেটে যেটা ১০%।
অন্যদিকে পিকেএসএফ ঋনের সুদের ব্যাপারে নীচের লিংকে গিয়ে পড়ে আসতে পারেন। যেটা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইটে পেয়েছেন ১২.৫% ওটা হলো ফ্ল্যাট রেট, ডিক্লাইনিং রেটে যেটা ২৭% পর্যন্ত সীমা নির্ধারন করা হয়েছে। যেটা অন্যান্য সাধারন এনজিও ৩০% এর উপরে নিত। সরকার আইন করে ২৭% সীমায় বেধে দিয়েছে। গ্রামীণ কি সেই সীমা লংঘন করেছে?
http://ittefaq.com.bd/content/2010/11/11/news0049.htm
মাসুদ করিম - ১৬ মার্চ ২০১১ (১২:১০ পূর্বাহ্ণ)
এই লিন্কটি যেমন কাজে লাগল তেমনি ওই গ্রামীণের সাইটের সুদ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আমি একটা ভুল করেছি সেটাও চোখে পড়ল। ১১% ফ্ল্যাট বলা হয়েছে সরকারের নির্ধারিত এবং ১০% ফ্ল্যাট নেয় গ্রামীণ ব্যাংক।
হ্যাঁ, এই সুদ নির্ধারণটা তো আমরা দেখছি কিন্তু সরেজমিন তদন্তের কোনো রিপোর্ট কোথাও পাচ্ছি না — সেটা খুঁজতে হবে। আর প্রত্যেক সপ্তাহে যে টাকা নির্ধারণ করে দেয়া আছে সেটা কোনো সপ্তাহে দিতে না পারলে কী হয় সেটা আমরা জানি না, কারণ এসব কিছু তো ওয়েবসাইটে থাকবে না, তাই মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কী পাওয়া যাচ্ছে তারই আজ পর্যন্ত কোনো নির্ভরযোগ্য পাঠ আমি পাইনি। আর মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি কিন্তু কাজ শুরু করেছে ২০০৬ থেকে তার আগে সুদের হার নির্ধারিত ছিল না, তাই ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার নিয়ে আরো অনুসন্ধান প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে যত খোলামেলা আলোচনা ও অনুসন্ধান চলবে ততই ক্ষুদ্রঋণের প্রকৃত সুদের হার আরো ভালভাবে আমরা বুঝতে পারব।
মোহাম্মদ মুনিম - ১৬ মার্চ ২০১১ (৩:৪৩ পূর্বাহ্ণ)
শতকরা ২০ ভাগ হারে ১ বছরে পরিশোধযোগ্য ১০০০ টাকার সুদ ১০০ টাকাই হয়। সুদের হিসাব মার্কিন ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি বা ব্যাঙ্কগুলো যেভাবে করে গ্রামীণ ব্যাঙ্কেরও সেভাবেই করার কথা।
বছরে শতকরা ২০ ভাগ সুদকে (Annual Percentage Rate, APR) ৩৬৫ দিয়ে ভাগ করে Daily Periodic Rate হিসাবে প্রতিদিন সুদ আরোপ করা হয়।
শতকরা ২০ ভাগ হারে ১০০০ টাকার লোণে ১০০ টাকা সুদ তেমন বেশী মনে না হলেও কেউ যদি খানিকটা বেশি টাকা ঋণ নেন, তখনই সুদের ব্যাপারটা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ যদি ৩০০০ টাকা ঋণ নিয়ে মাসে ১০০ টাকা করে শোধ করেন, তবে তিনি প্রথম মাসে ৪৯ টাকা সুদ দিবেন। এভাবে তিনি ৪২ মাসে গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে ৪২০০ টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করবেন (১২০০ টাকা সুদ)। প্রতি মাসে গড় সুদের পরিমাণ হবে ২৮ টাকা।
অবিশ্রুত - ১৬ মার্চ ২০১১ (৫:৫১ অপরাহ্ণ)
@নীড়সন্ধানী,
শুভেচ্ছা আপনাকে।
১. নোবেলপ্রাপ্তির পরে ইউনূস ও গ্রামীণবিরোধিতার কথা বলে কি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের দিকে ইঙ্গিত করছেন? এই বিরোধিতার সূত্রপাত আসলে কি নোবেলপ্রাপ্তির পরেই শুরু হয়েছে? আমার কাছে কোনও তথ্য নেই। আমিও এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলেও এটি স্বীকার করতেই হবে, এরকম সমালোচনার সূত্র ধরেই এখন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সচকিত হয়ে ড. ইউনূস ও ক্ষুদ্র ঋণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপত্রের দিক থেকে ড. ইউনূস কিংবা হাসিনা-খালেদারা তেমন দূরত্বে অবস্থান করেন না, অন্যদিকে আনু মুহম্মদরা অবস্থান করেন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। কিন্তু বদরুদ্দীন উমর, আনু মুহম্মদ কিংবা অন্যান্য বামরা গত আড়াই যুগ ধরে চেষ্টা করেও ক্ষুদ্র ঋণের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে যেখানে সাধারণ মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে পারেননি, সেখানে হাসিনার কয়েক মন্তব্যেই অনেকের জানার ক্ষুধা বেড়ে গেছে।
২. ৪৫ শতাংশ সুদের কথা পড়েছিলাম কোনও এক প্রাসঙ্গিক বইয়ে। সেটি অনলাইনে নেই। তবে খুজে পেলাম, বইটির প্রকাশক সম্প্রতি অনলাইন এক বার্তা সংস্থায় একটি লেখা লিখেছেন। সেটিতেও একটি বাক্য আছে :
কোনও বিবরণ না থাকলেও, লিংকটির উল্লেখ করছি। প্রসঙ্গত বলি, এসব বিষয়ে তথ্য এত অপ্রতুল যে, অনির্ভরযোগ্য মনে হলেও যে-কোনও তথ্যকেই বিবেচনায় নেয়া উচিত।
৩. এই রাজনৈতিক পুরস্কারটি ড. ইউনূসকে প্রদানের ক্ষেত্রে কি কোনও রাজনীতি কাজ করেছে? এ নিয়ে একেকজনের একেক মত থাকতে পারে। একেক রাষ্ট্রে, রাষ্ট্রের জনগণের কাছে নোবেল পুরস্কারের গুরুত্বও একেকরকম। যেমন, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতেও রাষ্ট্র-পরিচিতি ও সম্মানের ক্ষেত্রে, রাষ্ট্রের গতিপথ নির্ধারণের ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কারের কোনও ভূমিকা আছে বলে মনে হয় না; কিন্তু আমাদের অনেকেই আমাদের রাষ্ট্রের ও জনগণের পরিচিতি ও সম্মান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কারকে একটি সূচক হিসেবে বিবেচনা করছেন। তবে আমাদের এ কথাটিও মনে রাখা দরকার, যারা গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূসকে পুরস্কারটি দিয়েছেন, তারা একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ঋণের ধারণাটিকেও উৎসাহিত করছেন, ক্ষুদ্র ঋণকে তৃতীয় বিশ্বের পুঁজি সঞ্চয়নের গুরুত্বপূর্ণ পন্থা মনে করছেন (তাদের ভাষায় দারিদ্র দূরীকরণের গুরুত্বপূর্ণ পন্থা)।
৪. তা হলে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্যে চিরকালই সংশয়বাদী হয়ে থাকতে হবে যে! কোনও উপসংহারে পৌঁছলেই বিপদ!
৫. মুহম্মদ জাফর ইকবালের কাছে বেশির ভাগ মধ্যবিত্তের প্রত্যাশাই অনেক বেশি, যাদের ঘিরে প্রত্যাশা থাকে তাঁদের অহেতুক কোনও ক্ষেত্রে ওকালতি করতে দেখলে অনেকেই সমালোচনামুখর হতে পারেন। আমাদের বোধহয় সমালোচনার মেরিট কতটুকু সেদিকে নজর দেয়াই ভালো। আর অযোগ্য হাসিনা-খালেদার প্রশংসাকারীদের কী করা উচিত? আপাতত ক্যাস্টোর সেই বিখ্যাত ভাষণের (ইতিহাস আমাকে মুক্তি দেবে) একটি উক্তি মনে পড়ছে, যে-দেশের প্রেসিডেন্ট একটা চোর, সে-দেশের সব ভালো মানুষের জেলে থাকার কথা। আমার-আপনার জেলে থাকার কথা, কিন্তু আমাদের সে ভাগ্যও নেই। চোরে চোরে গালমন্দ করে, মারামারি করে, আমাদের সময় কাটে সেইসবের তত্ত্বতালাশ করে!
৬. একেক মানুষের একেকভাবে একটি দেশকে চেনার সুযোগ হয়। বোধহয় ২০০০ সালেই দৈনিক ভোরের কাগজে জিনসূত্র আবিষ্কারের সংবাদে আবিষ্কারকদের দলে দুজন বাংলাদেশি বৈজ্ঞানিকও আছেন জেনে উদ্বেলিত হয়েছিলাম। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালক ওসমান চৌধুরী ও আসাদুজ্জামানের খবর পড়েও আনন্দিত হয়েছিলাম। এখন যেমন পুলকিত চট্টগ্রামের ড. শুভ রায়কে নিয়ে। মাঝেমধ্যে যে-বিদেশি ডাক্তারের কাছে যাই, তার দিকে আরও ভালো করে চোখ তুলে কথা বলতে পারি। তিনি ড. ইউনূসকে দিয়ে নন, তিনি বাংলাদেশকে চিনেছেন আমার মতো তুচ্ছ রোগী আর শুভ রায়ের মতো সংগঠনবিহীন এক ডাক্তারকে দিয়ে। কিন্তু ড. ইউনূসকে এক দশক আগে থেকে নোবেল পুরস্কার দেয়া হোক, নোবেল পুরস্কার দেয়া হোক বলে যেভাবে দাবিদাওয়া জানানো হচ্ছিল তাতে একদিকে যেমন বিরক্ত হয়েছি, অন্যদিকে তেমনি আগ্রহী হয়েছি, কেন তার ভক্তরা এত উচ্চকিত বুঝবার জন্যে। তিনি রাজনৈতিক সংগঠন ছাড়াই ইমেজ তৈরি করেছেন, কিন্তু সংগঠন ছাড়া করতে পারেননি। আর গৌরব ও আত্মপ্রসাদেও বোধকরি পার্থক্য আছে। এগুলি নিয়ে কথা বলাটা অস্বীকারের মতো শোনালে, বড়াইয়ের মতো শোনালে আমি দুঃখিত।
৭. এসব নিয়ে তদন্ত হয়নি, এটা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাপারে কোনও রিপোর্ট প্রকাশ করেনি, তার মানে এই নয় যে তদন্ত হয়নি। এরকমও হতে পারে, বাংলাদেশ ব্যাংকও ড. ইউনূসের একটি সম্মানজনক প্রস্থানের পথ তৈরি করতে চাইছিল, কিন্তু সম্মানজনক প্রস্থানের জন্যে ইউনূস যে প্রেসক্রিপশন দিয়েছিলেন তা ছিল প্রকারান্তরে তাকেই গ্রামীণের অদৃশ্য কর্ণধার করে রাখার দাওয়াই। আমি যতদূর জানি, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর আতিউর রহমানই প্রথম ১৯৯২ সালে দৈনিক ভোরের কাগজ ও ডেইলি স্টারে যথাক্রমে বাংলা ও ইংরেজিতে দীর্ঘ কলাম লিখেছিলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নোবেল পুরস্কার দেয়া উচিত। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়েই এ নিয়ে চিঠিপত্র কলামে চিঠি দেখা গেছে, হয়তো আরও লেখালেখিও হয়েছে। এ হেন আতিউর রহমান কিংবা সামরিক শাসনামলে গ্রামীণ ব্যাংককে অনুমোদনদানকারী ড. মুহিত কেবল সরকারপক্ষের চাপে মুহাম্মদ ইউনূসকে অপসারণ করার সিদ্ধান্তে চাপের মুখে রাজি হয়ে গেছেন, সেরকম নাও হতে পারে।
৮. সরকার রোগ কিংবা রোগী কারও বিরুদ্ধেই লড়ছেন না, রোগীকে (জনগণকে) কোন রোগ আক্রান্ত করে রাখবে তা নিয়ে দুটি রোগের মধ্যে ধাওয়াধাওয়ি হচ্ছে।
৯. প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছিলেন, ১৯৯৮ সালে নাকি মুমূর্ষ গ্রামীণ ব্যাংককে বাঁচানোর জন্যে ৪০০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছিল। খবরটি ছাপা হয়েছিল ৫ ডিসেম্বর ২০১০-এর প্রথম আলোয়। প্রথম আলোর আর্কাইভ এই মুহূর্তে বন্ধ আছে বলে কোনও লিংক দেয়া যাচ্ছে না। বাক্যগুলি ছিল এরকম :
তাই যদি হয়ে থাকে, তা হলে গ্রামীণ ব্যাংক তো অনেক আগে থেকেই দাতব্য প্রতিষ্ঠান! নতুন করে আর দাতব্য প্রতিষ্ঠান হওয়ার কী আছে?
নীড় সন্ধানী - ১৫ মার্চ ২০১১ (১১:২৬ অপরাহ্ণ)
এই অংশটা পড়ে হাসি চাপতে হলো। নিজের দেশকে মূল্যবান মনে করা দেশপ্রেমের লক্ষণ, কিন্তু অতিমূল্যায়ন হয়ে যাচ্ছে কিনা সেটাও খেয়াল করা উচিত। বাংলাদেশকে পাবার জন্য বিশ্বশক্তি হন্যে হয়ে উঠেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য আমেরিকা উন্মাদ হয়ে আছে, এরকম কথা গ্রাম্য আড্ডায় শুনতাম। অন্ততঃ আপনার কাছ থেকে আশা করিনি। আপনার সাথে আমার নানা বিষয়ে অমত হলেও আপনার লেখার প্রতি আমার একটা শ্রদ্ধাবোধ বরাবর থাকে। নোবেল পুরষ্কারের সাথে তেলগ্যাসের ব্যাবসাকে যেভাবে মেলালেন পৃথিবীটা যদি সত্যি সত্যি এত সহজ হতো?
বিশ্বাস করুন, বাংলাদেশের দাম সাম্রাজ্যবাদী দেশের কাছে এখনো অনেক অনেক কম। নিজেদেরকে বিক্রি করার মতো অবস্থায় নিতে পারলেও সন্তুষ্ট হতাম। ৪০ বছরের ইতিহাসে শেখ মুজিব বাদে আমাদের প্রত্যেকটা রাষ্ট্রপ্রধান একেকটা লজ্জা। কি যোগ্যতায় কি আচরণে। প্রটোকল বাক্য বাদে এমনকি শুদ্ধ করে তিনটা বাক্যও নিজ থেকে বলতে পারে না এরা। যেটা ইউনুসের মতো মানুষ পেরেছে, ভালোভাবেই পেরেছে। জাফর ইকবালের মতো মানুষকেও তাই মুগ্ধ হতে হয়। এগিয়ে যেতে হলে আমাদেরকে আসলেই গর্ত থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
মোহাম্মদ মুনিম - ১৬ মার্চ ২০১১ (২:৪২ পূর্বাহ্ণ)
ডঃ ইউনুসের ‘সম্মান’ রক্ষার্থে হিলারি ক্লিনটন, জন কেরী, মার্কিন রাষ্ট্রদূত সকলেরই এত আগ্রহ দেখে আমার নিজেরও ব্যাপারটা ভাল ঠেকছে না। আমি নিকট অতীতে কোন নোবেল বিজয়ীর মানসম্মান নিয়ে এতগুলো পশ্চিমা ব্যক্তিত্বের এত আগ্রহ দেখিনি। নোবেল বিজয়ী আল গোরকে carbon billionaire বলে প্রতিনিয়ত কটাক্ষ করা হচ্ছে, তাঁর বহুল আলোচিত চলচ্চিত্র নিয়ে যুক্তরাজ্যে মামলা হয়েছে, তাঁর নিজের বাড়ির বিলাস বাহুল্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, হিলারি ক্লিনটনের গোর সাহেবের মান সম্মান নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা আছে বলে তো মনে হয়না।
মাসুদ করিম - ১৬ মার্চ ২০১১ (৯:০৫ পূর্বাহ্ণ)
একজন ছাড়া বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রপ্রধানরা সবসময়েই ভাল বাংলা বলেছেন, এক্ষেত্রে কলঙ্ক একেবারেই জিয়াউর রহমান, তিনি ছিল না বলতে পারতেন না বলতেন চ্ছিল না। আর একজন ছাড়া বাংলাদেশের সরকার প্রধানরা সবাই ভাল বাংলা বলেছেন, খালেদা জিয়ার উচ্চারণ ত্রুটি নেই কিন্তু মাঝে মাঝে এমন শব্দ ব্যবহার করেন — এই তো গতকালই সংসদে বললেন, এই যে লোকটা নোবেল পেল তাকে আপনারা সম্মান দিতে পারলেন না।
৪০ বছরকে এক লহমায় উড়িয়ে দিতে হলে অবশ্য এভাবেই কথা বলতে হয়।
আর ইউনূস বাংলা বলেন ঠিকই কিন্তু সেটা খুবই ‘কালো অক্ষর’ বাংলা, এভাবে যারা কথা বলে তাদের বাংলাকে আমরা স্কুলে তাই বলতাম — প্রাণহীণ বইয়ের কালো ছাপার অক্ষরের বাংলা, ইউনূসের কথা বেশি তো আমরা শুনেছি ২০০৬-২০০৮ পর্যন্ত, সেই স্মৃতি পুরোপুরি তো ঝাপসা হয়ে যায়নি, আর ঝাপসা হয়ে গেলেও ক্ষতি নেই ইউনূসের ভাই জাহাঙ্গীর তো নিয়মিতই টিভিতে হাজির হন তার বাংলার সাথে ইউনূসের বাংলার প্রচণ্ড মিল, শুধু জাহাঙ্গীরের কণ্ঠস্বরে জোরের চেয়ে সুর একটু বেশি।
নীড় সন্ধানী - ১৬ মার্চ ২০১১ (১২:০৪ অপরাহ্ণ)
শুদ্ধ বাক্য কেবল উচ্চারনের বিশুদ্ধতা নয়। অর্থবহ বাক্যকেও আমি শুদ্ধতার অন্তর্ভুক্ত করেছি। জিয়া,এরশাদ,খালেদা,হাসিনা প্রত্যেকেরই একই সমস্যা। গৎবাধা বাক্য ছাড়া এদেরকে শ্রুতিমধুর বিশ্বাসযোগ্য বাক্য বলতে শুনিনি আমি। কি জাতীয় ফোরামে কি আন্তর্জাতিক ফোরামে। জিয়ার কথা তেমন মনে নেই। এরশাদ, খালেদা, হাসিনার এদেরকে তিনটা বাক্য বলতে দিলে তার মধ্যে অন্তত একটা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নাজিল হবে। রাজনীতির তৈলবৃত্তি মগজে মননে এত বেশী ঢুকে গেছে বিশ্বকাপের উদ্বোধনীর মতো আসরেও মন্ত্রীদের রাজনৈতিক ভাষন দিতে হয়। বিচারপতি হাবীবুর রহমান বা ফখরুদ্দিনের উচ্চারন সেদিক থেকে অনেক স্মার্ট বলতে হবে। ইউনুসের বাংলা ভালো না হলেও তিনি যেটা বলতে চান, সেটা বোঝাতে পারেন।
মাসুদ করিম - ১৬ মার্চ ২০১১ (১২:৩৪ অপরাহ্ণ)
হাসিনা খালেদা এরশাদের সাথে ইউনূসের তুলনা করতে হচ্ছে, ভালই লাগছে।
মোহাম্মদ মুনিম - ১৬ মার্চ ২০১১ (৯:৫৪ অপরাহ্ণ)
হাসিনা খালেদা যে রাজনৈতিক আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলেন সেটা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণও অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ছিল। মার্কিন রাজনীতিতেও রাস্তাঘাটের বক্তৃতা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ভাষায় করা হয়। ‘অতীতকে ভুলে গিয়ে আসুন সবাই মিলে দেশ গড়ে তুলি’ এই জাতীয় ‘ভাল’ কথা জামাতিরা বলে। হাসিনা খালেদা সুন্দর ভাষায় কথা বলতে না পারলেও এঁরাই আশির দশকে এরশাদের লাঠির বাড়ি খেয়ে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছিলেন। এমনকি ‘মাইনাস টু’র আমলেও বিদেশে নির্বাসনে না গিয়ে কারাদণ্ড বরন করেছিলেন। খালেদা জিয়া সৌদি আরবে আর হাসিনা আমেরিকাতে চলে গেলে আমরা এখনও মইন ইউ আহমেদের অধীনে থাকতাম।
চোস্ত ইংরেজি দিয়ে ফখরুদ্দিন নিউইয়র্কে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আর মইন ইউ আহমেদ হার্ভার্ডে ‘লেকচার’ দিয়েছেন। ডঃ ইউনুসের ভাষণও (অডিও ভিসুয়াল সুবিধা থাকলে আমেনা বেগমের কানে মোবাইলের ছবিসহ) মার্কিনীরা ২০-২৫ ডলার দিয়ে টিকেট কিনে মুগ্ধ হয়ে শোনে। এসব সুন্দর কথা দিয়ে হাততালিই পাওয়া যায়, দেশ চালানো যায় না।
অবিশ্রুত - ২০ মার্চ ২০১১ (১২:৫২ পূর্বাহ্ণ)
@ নীড়সন্ধানী
প্লিজ হাসি চেপে রাখবেন না। হাসলে শরীর ভালো থাকে। বিশ্বায়নের এই যুগে সাম্রাজ্যবাদ শব্দটা বেশ কানে লাগে, অচলও মনে হয়। তারপরও তাদের উপস্থিতিকে আমরা কিছুতেই ভুলতে পারি না, ব্যর্থতা এখানেই। হ্যাঁ, আপনি যেভাবে উন্মাদনার কথা বলেছেন, তাতে আমারও মনে হচ্ছে অতি-মূল্যায়নই বটে। তবে এই যুগে সাম্রাজ্যবাদীরাও অত বোকামী করে না, তাদের জন্যে জাতিসংঘ আছে (অতএব তারা চড়াও হতে পারে বৈধভাবে), তাদের জন্যে বহুজাতিক কোম্পানি আছে (অতএব তাদের কর্পোরেট বাহিনী নামতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে), তাদের জন্যে স্বাধীন সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক অথবা বহুপাক্ষিক বিভিন্ন চুক্তিও অপেক্ষা করে (অতএব তাদের সব কিছুই হয় জনগণের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত)। আমিও বোধহয় কোনও গ্রাম্য আড্ডাতেই শুনেছিলাম, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরপরই একজন নোবেল বিজয়ী চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ ঘোষণা করছে, তার সমিতির মহিলারা কেমন করে বন্দর পরিচালনা করবেন তা নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন।
বাংলাদেশের দাম খুবই কম, তারপরও এখানে হায়েনার আনাগোণা এখনও কমে না কেন, সেটাই বুঝতে পারি না। আর আপনি-আমি মুজিব বাদে প্রত্যেকটা রাষ্ট্রনায়ক একেকটা লজ্জা মনে করে মাথা নিচু করে রাখতে পারি, কিন্তু সবাই বোধহয় সেরকম মনে করে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উড্রো উইলসন রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র পলিসি স্কলার, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে একসময় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত উইলিয়াম মাইলাম নাকি তার বইয়ে লিখেছেন :
দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ অনেক আগেই রক্ষা পেয়েছে; শেখ মুজিব নিহত হয়েছেন, সেটি নিয়ে মাইলামের উদ্বেগ নেই, উদ্বেগ হলো যদি জিয়া তখন মারা যেতেন! জিয়া যে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছেন, জানি না- ইউনূসগণ হয়তো গর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই বাংলাদেশকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে; তাই বাংলাদেশে নিযুক্ত আরেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত এখন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, ইউনূসের সঙ্গে সম্মানজনক মীমাংসা করতে!
অবিশ্রুত - ১৬ মার্চ ২০১১ (৬:১৪ অপরাহ্ণ)
এ ঘটনাকে দুর্নীতি-অনিয়ম হিসেবে ভাবতে আমাদের সুশীলমন আপত্তিই জানাবে। তারপরও ঘটনাটি জেনে রাখা যাক :
কিন্তু এ ঘটনার তথ্যচিত্র প্রচলিত মিডিয়ায় তুলে ধরা সম্ভব নয় এবং সে কারণে ব্যাপক জনগণের সামনে সঠিক তথ্য জানানোরও উপায় নেই। কেননা এ এক বিশাল চক্র, মিডিয়া বাঁচিয়ে রেখেছে তাদের, তারা বাঁচিয়ে রেখেছে মিডিয়াকে।
নিশ্চয়ই এ ঘটনা ড. ইউনূসের অগোচরে ঘটেছে। তিনি জানলে এরকম করতে দিতেন না।
গৌতমের পুরো লেখাটি পড়া যাবে এ লিংক-এ গেলে।
শুভ্র - ২১ মার্চ ২০১১ (৫:২৯ পূর্বাহ্ণ)
অবশেষে আসল ঘটনা তুলে ধরেছেন লেখক। অনেক ধন্যবাদ!
মোহাম্মদ মুনিম - ২৩ মার্চ ২০১১ (৩:৩৮ পূর্বাহ্ণ)
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র সচিব বলেই দিয়েছেন ডঃ ইউনুসের সম্মান রক্ষা করা না হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কে প্রভাব পড়তে পারে। দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার আছে, ডঃ ইউনুসের আদালতে যাওয়ার পূর্ণ অধিকার আছে এবং তিনি সেই অধিকার প্রয়োগও করছেন। সেখানে মার্কিন সরকারের নাক গলাতে হবে কেন সেটাই প্রশ্ন। সুশীল সমাজের বড় মুরুব্বি রেহমান সোবহান, আইনের শাসন চেয়ে চেয়ে গলা ফাটিয়ে ফেলেন, তিনিও সরকারকে উপদেশ দিলেন ডঃ ইউনুসের সাথে ‘রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা’ দেখিয়ে আপোষ করতে। প্রথম আলোতে ছাপানো লেখাতে রেহমান সোবহান গ্রামীণ ব্যাঙ্কের যে উজ্জ্বল চিত্র দিলেন, একজন অর্থনীতিবিদ হিসাবে তিনি নিশ্চয় জানেন সেগুলো অনেকাংশেই সত্য নয়। গ্রামীণ ব্যাঙ্ক এই তিন দশকে সরকারী ভর্তুকি, সফট লোণ, সরকারী গ্যারান্টিতে বন্ড বিক্রি সবই করেছে। এত কিছু পরেও সরকার গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে কিছু বলতে পারবে না, ছুঁতে পারবে না, এটা কোন ধরনের আইনের শাসন, সেটা রেহমান সোবহানই ভাল বলতে পারবেন।
অবিশ্রুত - ২৩ মার্চ ২০১১ (৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ)
এতে কোনও রাখঢাক রাখা হয়নি, যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও ব্লেকের চলতি বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্য একটাই-ড. ইউনূসের ব্যাপারে সরকারকে ভদ্রভাবে শাসিয়ে দেয়া, হিলারী ক্লিনটনের বাংলাদেশ সফরের অনুকুল পরিবেশ তৈরি করা।
খুব ভালো কথা, ধরা যাক, ইউনূসের ব্যাপারে রেহমান সোবহানদের ভাষায় রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা রাখতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তার মানে তা হলে এই সেই সরকারকে ওস্তাদকে ডেকে এনে শাসানী দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে?
দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের আমরা বিক্রি হওয়ার মতো পর্যায়ে নিজেদের নিয়ে যেতে ব্যর্থ হলেও অন্তত একজন সেই পর্যায়ে উন্নীত হতে পেরেছেন। তাই তাঁকে রক্ষা করার জন্যে এখন তৎপর প্রভূরা।
রবার্ট ও ব্লেক জানিয়ে দিয়েছেন,
এখানেই শেষ নয়,
কী এই আমেরিকান প্রেসিডেনশিয়াল মেডাল ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডাল? উইকিপিডিয়ায় বলা হচ্ছে :
বলা হচ্ছে :
এরপর আর কি-ইবা বলার থাকতে পারে?
এখন শেখ হাসিনার জন্যে দুঃখই হচ্ছে। তিনি সত্যিই বুঝতে পারেননি, কার লেজে পা দিয়েছেন।
দুঃখ, ইউনূসের জন্যেও। আমেরিকা যার বন্ধু, তিনি যে দেশের জাতীয় স্বার্থ তার নিরাপত্তায় অবদান রাখার জন্যে পুরস্কৃত, যে দেশের সংজ্ঞায়িত বিশ্বশান্তি, সংস্কৃতি ও জনস্বার্থ রক্ষায় অবদান রেখেছেন, তাঁর আর শত্রুর দরকার আছে কি?
দুঃখ, আমাদের জন্যেও বটে। কেন? জ্ঞানী বোঝে ইশারাতে, মুর্খ বোঝে ***-এ লাথি পড়লে। লাথি পড়ুক, বুঝতে পারব তুমি কোন ভাঙনের পথে এলে…
মাসুদ করিম - ২৪ মার্চ ২০১১ (১১:১৪ অপরাহ্ণ)
ভারতীয়দের সাথে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে হিলারির কাছে বিদেশ সচিবের কাজের চেয়ে এই পদকে ব্যবহার করে বন্ধুর রাখিবন্ধনের জোর দেখানোর মওকাটাই বড় হয়ে উঠেছে। তাই শুধু মারিয়ার্টি নয় ব্লেককেও কাজে লাগালেন তিনি। ইউনূসের মুখে হাসি না ফুটলে ইউনূসের বন্ধু মার্কিন বিদেশ সচিবের ইউনূসের দেশে সফরে আসার পরিবেশ তৈরি হবে না — এই যদি হয় একজন আমেরিকান বিদেশ সচিবের পাঠানো গুরুত্বপূর্ণ দূতের মনোভাব — তাহলে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আর কথা বলে লাভ নেই।
কয়েকমাস আগে এক জার্মান কার্টুনিস্টের ‘উইকিলিকস’ নিয়ে একটা কার্টুন খুব ভাল লেগেছিল — তাই সেটি ‘টুইটপিক’এ সেভ করে রেখেছিলাম — হিলারির এই কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে কার্টুনটির লিন্ক এখানে রাখাটা প্রয়োজনীয়।
মাসুদ করিম - ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ (৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২৭ মার্চ ২০১১ (৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ)
এখন ইউনূসই বলছেন গ্রামীণ ব্যাংকে বাংলাদেশ সরকারের অংশীদারিত্ব ২৫%, তাহলে কি গ্রামীণ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আপডেট হয়নি, ব্যাংকের ওয়েবসাইট অনুযায়ী আমরা তো জানি ১০%, দেখুন এখানে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেয়া সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের ২৫% শেয়ারের কথা বলেছেন। একটা এত বড় এত বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে কার কত শেয়ার সেটাই যদি নিশ্চিতভাবে জানা না যায়, তাহলে আর কী আলোচনা আমরা করব?
সরব দর্শক - ২৭ মার্চ ২০১১ (১:২৪ অপরাহ্ণ)
গ্রামীণ ব্যাংক-এর ওয়েবসাইটে উপরের এই তথ্যের নীচে ড. ইউনূসের বিখ্যাত দেঁতো হাসি আর তার ঠিক নীচেই, পৃষ্ঠার একেবারে শেষসীমায়, লেখা আছে :
মাসুদ করিম - ৪ এপ্রিল ২০১১ (৯:১৯ অপরাহ্ণ)
জগদীশ ভগবতীর মতো নামী ‘বিশ্বায়ন’ বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ ইউনূস, ক্ষুদ্রঋণ, হাসিনা, ম্যাক্রো অর্থনীতি ও বাংলাদেশ নিয়ে এত সংক্ষিপ্ত একটি ‘মতামত’ না দিয়ে আরো বিশদ একটা লেখা লিখলে আমরা উপকৃত হতাম। শুধু ইলা ভাটের নাম ‘ক্ষুদ্রঋণ’এর প্রবর্তক হিসেবে ঘোষণা করে ইউনূসের এত দিনের গ্রামীণ ব্যাংকের ফলিত প্রচেষ্টাকে খাটো করা যাবে না। তারপর তার একথার ঠিক অর্থ আমি বুঝতে পারিনি
বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশির ভাগ সময়ে ছিল সামরিক শাসক ও সইফুর রহমানের হাতে, বাংলাদেশে একমাত্র হাসিনার গত সরকারের পাঁচ বছরে অর্থনীতি ছিল অর্থনীতিবিদ কিবরিয়ার হাতে, এখন আছে একবারেই আমলা বিবৃতিপ্রিয় একজন মুহিতের হাতে। এরা কেউই কি growth-killing socialist অর্থনীতিবিদ?
তবে ভগবতী একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, ম্যাক্রো অর্থনীতির সংস্কার ছাড়া শুধু ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে গ্রামীণ মানুষ বা দরিদ্র মানুষের অবস্থা উন্নতি করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। হাসিনা সরকারের কাছে ম্যাক্রো অর্থনীতির সংস্কার একটা বড় চ্যালেঞ্জ, শুধু নিজের একজন অর্থনীতিবিদ অর্থ উপদেষ্টা দিয়ে সেকাজ হবার নয়। বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়কে অর্থনীতিবিদদের দ্বারা গঠিত একটা উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে পরিচালনা করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
এখানে পড়ুন : Grameen vs Bangladesh।লেখাটির বাংলা সংস্করণ : গ্রামীণ বনাম বাংলাদেশ।
মোহাম্মদ মুনিম - ৬ এপ্রিল ২০১১ (৬:০৩ পূর্বাহ্ণ)
জগদীশ ভগবতী লেখাটি হোম ওয়ার্ক না করেই লিখে ফেলেছেন মনে হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আর যেই দুর্বলতা থাকুক, সোশ্যালিস্ট দুর্বলতা নেই, সেই এরশাদের আমল থেকেই বাংলাদেশের অর্থনীতি উদারিকরনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এরশাদের আমলে চট্টগ্রামের ইপিজেডের জন্য কোরিয়ানদের পানির দামে জমি দেওয়া হয়েছিল। নেই নেই করেও বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এখন প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার, জনসংখ্যার অনুপাত বিবেচনা করলে সেটা ভারতের (২০০ বিলিয়ন ডলার) তুলনায় খুব খারাপ নয়। জিডিপির হিসাবেও বাংলাদেশ ভারতের তুলনায় (১০৫ বিলিয়ন এবং ১৪০০ বিলিয়ন ডলার) খুব খারাপ করছে না।
ম্যাক্রো ইকোনোমির সংস্কারের কথা অনেকবারই শুনেছি, যা বুঝলাম তা হল ভর্তুকি বন্ধ করা। ভারতের কৃষিখাত smart করতে গিয়ে প্রতিবছর হাজারে হাজারে কৃষক আত্মহত্যা করছে। তাতে অবশ্য জগদীশ ভগবতীদের কিছুই যায় আসে না। ভারতীয় বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা আর প্রবৃদ্ধি বাড়লেই তাঁরা খুশী।
মাসুদ করিম - ৫ এপ্রিল ২০১১ (২:১৪ অপরাহ্ণ)
আপডেট : ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের আদেশ আপিল বিভাগে বহাল।
মাসুদ করিম - ৬ এপ্রিল ২০১১ (৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ)
আপডেট : লিভ টু আপিল খারিজের নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন ড. ইউনূসের।
মাসুদ করিম - ৬ এপ্রিল ২০১১ (১২:১৮ অপরাহ্ণ)
আপডেট : ড. ইউনূসের আবেদনের শুনানি অবকাশের পর।
মাসুদ করিম - ২২ এপ্রিল ২০১১ (১১:০৭ অপরাহ্ণ)
উইকিলিকসে ইউনূস বিষয়ক ক্যাবলটি প্রকাশিত হয়েছে ‘দি হিন্দু’তে, ক্যাবল ৯৬৪২১ পাঠানো হয়েছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ আমেরিকার কলকাতা কনসুলেট থেকে, ‘নাগরিক শক্তি’ নামক রাজনৈতিক দল গঠনের কয়েকদিন পরেই ইউনূসের কলকাতা সফরে আমেরিকার কনসাল জেনারেল Henry Jardine পাঠিয়েছেন এই ক্যাবল।
এই ক্যাবল নিয়ে ‘দি হিন্দু’র A. SRIVATHSAN এর সংবাদ প্রতিবেদন : Muhammad Yunus knew seeking to enter politics in Bangladesh would receive ‘bruising response’।
এই বিষয়ে বাংলা নিউজ ২৪ ডট কম-এর প্রতিবেদন : ঝুঁকি ও বিপদ জেনেই রাজনীতিতে আগ্রহী হন ড. ইউনূস: উইকিলিকস।
মাসুদ করিম - ২৫ এপ্রিল ২০১১ (২:০৬ অপরাহ্ণ)
গ্রামীণ ব্যাংক ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম তদন্তে গঠিত কমিটি আজ অর্থমন্ত্রীর কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন : গ্রামীণ ব্যাংক ও সোশ্যাল বিজনেসকে নীতিমালার মধ্যে আনার সুপারিশ।
মাসুদ করিম - ৫ মে ২০১১ (১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ)
সুপ্রিম কোর্টের রায়ও ইউনূসের বিপক্ষে গেছে।
খবরের লিন্ক এখানে।
মাসুদ করিম - ১২ মে ২০১১ (১১:০৪ অপরাহ্ণ)
১. গ্রামীণ ব্যাংক: রিভিউ কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করলো সরকার
খবরের লিন্ক এখানে।
২. পদ ছাড়লেন ইউনূস
খবরের লিন্ক এখানে।
মাসুদ করিম - ২৪ অক্টোবর ২০১১ (৬:১৪ অপরাহ্ণ)
ইউনূস এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যাম্পেইন করছেন। আমার ব্লগে সুশান্ত লিখছেন
তথ্য উপাত্ত ও প্রাসঙ্গিক লিন্কের জন্য বিস্তারিত পড়ুন : বাংলাদেশে যাতে financial assistance না আসে সেজন্য ড. মুহাম্মদ ইউনুস কেম্পেইন করছেন।
মাসুদ করিম - ৩ জুন ২০১২ (৬:৫৫ অপরাহ্ণ)
৯ মার্চ ১৯১১ তে প্রশ্ন তুলেছিলাম
আর গত ১৫ মে ২০১২তে খবর : গ্রামীণ ব্যাংক ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা করতে একটি কমিশন গঠন করেছে সরকার।
মাসুদ করিম - ৩ জুন ২০১২ (৭:০৮ অপরাহ্ণ)
আর এই পর্যালোপনা নিয়ে মুহম্মদ ইউনূসের আশঙ্কা ও গ্রামীণ ব্যাংক বাঁচাতে তার আহবান।
লিন্ক এখানে।
মাসুদ করিম - ২৪ জানুয়ারি ২০১৩ (২:১৭ অপরাহ্ণ)
‘গ্রামীণ ব্যাংকের ৩০ হাজার কোটি টাকার হদিস নেই’ — এখবর যদি সত্যি হয়, তাহলে বলতেই হবে অনেক আগেই আমরা ঠিক গর্তেই আলো ফেলেছিলাম। এখন সেখান থেকে সাপ বের হচ্ছে।
মাসুদ করিম - ৩ জুন ২০১২ (৭:১৯ অপরাহ্ণ)
হ্যাঁ, এবার পরিস্কার বুঝতে পারছি সরকারের শেয়ার কিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকে ৩%। কিন্তু ২৪ মার্চ ২০১১তে প্রকাশিত ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাথে সাক্ষাৎকারে ইউনূস কেন বলেছিলেন
মাসুদ করিম - ২ আগস্ট ২০১২ (৪:০৮ অপরাহ্ণ)
গ্রামীণ ব্যাংকে এমডি নিয়োগের বিধিতে সংশোধন এনে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ আনছে সরকার।
মাসুদ করিম - ২ আগস্ট ২০১২ (৭:০০ অপরাহ্ণ)
অত্যন্ত দ্রুততার সাথে ইউনূসের প্রতিক্রিয়া।
মাসুদ করিম - ৩ জুলাই ২০১৩ (১২:১০ অপরাহ্ণ)
বারবার বলা হচ্ছে মুহিত মিথ্যা বলছেন, মুহম্মদ ইউনূস গ্রামীণফোন থেকে ডিভিডেন্ড নেননি, ঠিক আছে নেননি — গ্রামীণফোনে ৩৪.২% শেয়ার আছে গ্রামীণ টেলিকমের তো সেই গ্রামীণ টেলিকম তো গ্রামীণফোন থেকে ডিভিডেন্ড নিয়েছে, এখন মুহম্মদ ইউনূস ও ইউনূস সেন্টার যদি আমাদেরকে সত্যটা জানাতে চান তাহলে গ্রামীণ টেলিকমে আসা গ্রামীণফোনের ডিভিডেন্ডের অর্থ কিভাবে বন্টন ও বিনিয়োগ হয়েছে তা বলেলেই তো হয়ে যায়।
আর গ্রামীণফোনের ওয়েসাইটেও গ্রামীণ টেলিকমের পরিচয় লিখতে পরিবর্তন আনা হয়েছে, আগে বলা হত
এখন বলা হচ্ছে
ঠিক আছে, পরিবর্তনই মেনে নিলাম, কিন্তু তারপরও তো বলা হচ্ছে যে গ্রামীণ টেলিকম মুহম্মদ ইউনূসের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের গ্রামীণফোন থেকে প্রাপ্ত ডিভিডেন্ডের হিসাব তো তার কাছ থেকে চাওয়া যেতেই পারে? নাকি তাও চাওয়া যাবে না — নোবেলের অসম্মান হবে।
Pingback: ইউনূসমিতি ২ | প্রাত্যহিক পাঠ
মাসুদ করিম - ৮ আগস্ট ২০১৩ (৯:০৭ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ২২ জুলাই ২০১৪ (১:০১ অপরাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ৪ জুন ২০১৭ (১:১৮ অপরাহ্ণ)