প্রতিবছর মে-জুন মাসে এই গাছটির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে [...]

গাছটিকে আমি চিনি ১৯৭৯/৮০ সাল থেকে। বছরের এই সময়ে, মে-জুন মাসে, গাছটিকে দেখতে এত ভাল লাগে – সেই ৩৩/৩৪ বছর আগে যেমন ভাল লাগত তেমনি – এই যে এতগুলো বছর চলে গেল সে বুড়িয়ে গেল না, মলিন হল না। কেন এমন হয় না আমাদের সাথে – কেন আমরাও বয়স যাই হোক বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এমন অমলিন তরুণ হয়ে উঠি না। প্রতিবছর মে-জুন মাসে এই গাছটির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে, আমার এত বছরের চেনা এই শিমুল গাছটির সৌন্দর্য সৌসাম্য চোখ ভরে দেখতে দেখতে – নিজের বয়সটাকে নিজের দেহটাকে নিয়ে খুব বিরক্ত হই। অথবা হতে পারত এমন প্রতিবছর মে-জুন মাসে আমি চলে যেতে পারতাম শিমুল গাছটির জায়গায় আর শিমুল গাছটি আমার জায়গায়। হতে পারেই তো, সেরকমই হয়। এমন করুণ নয়নে তাকিয়ে থাকি একজন আরেকজনের দিকে, কিছুক্ষণ পরই আমার অন্তত মনে হয় আমি শিমুল গাছটির জায়গায় চলে গেছি এবং আমি নিশ্চিত শিমুল গাছটিরও মনে হয় ও আমার জায়গায় চলে এসেছে। বৃক্ষধাম একটু সচলতার জন্য চলে আসে আমার কাছে – মনুষ্যধাম একটু সজীবতার জন্য চলে যায় গাছটির কাছে। অথবা এমনও হতে পারত গাছটি লিখতে চায় আমার মতো, কথা বলতে চায় আমার মতো – আর আমি স্নায়ু ছড়িয়ে স্থবির ওই সতেজতায় পঞ্চভূতের সখা হয়ে ছড়িয়ে থাকতে চাই ওই শিমুল গাছটির মতো। সবই হতে পারত এবং হয়ও। হতে হতেই তো এই পথ চলা। বয়স কাকে কী দেবে? অনন্ত হয়ে বেঁচেছি আজীবন – অনন্ত হয়ে বেঁচে থাকা শিমুল গাছটিকে বন্ধু ভেবেছি। বর্তমান এবং ভবিতব্যই ক্ষয়িষ্ণু, — এই ঝরে যাওয়া পাতা ও তার পচনের আশা — কিন্তু বৃক্ষই অমর : স্নায়ুপুঞ্জবৎ ডালপালায় স্মৃতি আটকে রেখে, আবার পাতাদের গজাতে শেখায় — প্রাণ প্রদায়িনী সে :

২০১৪এর জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পাকিস্তানকে প্রতিহত করুন, একমাত্র এই পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে। আর কোনো পথের দিশা এই মুহূর্তে খুঁজে বাংলাদেশের কোনো লাভ নেই। [...]

বাংলাদেশি জাতীয়াবাদের ঝাণ্ডা নিয়ে পাকিস্তান কায়েমের লক্ষ্যে বাংলাদেশের একটা বৃহৎ রাজনৈতিক অংশের পদচারণা বাংলাদেশে অক্লান্ত অকপটভাবে চলছে। এই প্রচেষ্টার ৪০ বছর পূর্ণ হবে আগামী ২০১৫ সালের ১৫ই আগস্টে। ২০১৪ সালে এই বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পাকিস্তানকেই কি আবার ক্ষমতায় দেখতে হবে আমাদের? আমরা কি সেভাবেই সবকিছু হতে দেব যেন ২০১৫ সালে তারা তাদের ৪০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান করতে পারে পুরো বাংলাদেশ দাপিয়ে? জাতীয় নির্বাচনের আর ঠিকমতো ছয় মাসও নেই -- আমাদের তো এখনই নির্বাচনের ভাষায় নির্বাচনের প্রচারণাধর্মী কথাবার্তা বলা শুরু করে দেয়া উচিত। এই কাজে আওয়ামী লীগ তো পিছিয়ে পড়েই আছে তাদের অন্তর্কোন্দল আর সাংগঠনিক শৈথিল্যের জগদ্দল পাথর বুকে নিয়ে। কিন্তু আমরা তো বসে থাকতে পারি না। অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের, সাংস্কৃতিক অ্যাকটিভিস্টদের, গণজাগরণমঞ্চের অ্যাকটিভিস্টদের এবং সারা দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক উদার প্রগতির পথের অ্যাকটিভিস্টদের তো আর এক মুহূর্ত সময়ও নেই বসে থাকার। এবং আওয়ামী লীগকেও এই লক্ষ্যেই পথে নামতে হবে যে তারা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পাকিস্তান প্রতিহত করবেই। এবং তার নিজের অস্তিত্বের জন্যই তাকে সেটা করতেই হবে। তাকে মনে রাখতে হবে তার সব অপূর্ণতা অসভ্যতা অরাজকতার পরও বাংলাদেশকে বাংলাদেশ রাখার কাজে, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উদার প্রগতির পথ রচনার কাজটা এখনো সামনে থেকে তাকেই করতে হচ্ছে এবং আরো কয়েক দশক করতে হবে। শুধু যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকানো নয় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পাকিস্তান বাংলাদেশের সমাজব্যাবস্থারই আমূল পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে যেমন ১৯৭৫এর পর থেকে তারা অনবরত তাই করেছে যা যা করে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পাকিস্তান কায়েম করা যাবে। ২০১৪এর জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পাকিস্তানকে প্রতিহত করুন, একমাত্র এই পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে। আর কোনো পথের দিশা এই মুহূর্তে খুঁজে বাংলাদেশের কোনো লাভ নেই।

পনেরো বছর আগের একটা লেখা খুঁজে পেলাম। লেখাটি এক পশলা পড়েই মনে হল কবিতার ম্যানিফেস্টো। [..]

পনেরো বছর আগের একটা লেখা খুঁজে পেলাম। লেখাটি এক পশলা পড়েই মনে হল কবিতার ম্যানিফেস্টো। পনেরো বছর আগের লেখা মানে পনেরো বছর কম বয়সের লেখা, তরুণতর লেখা, কিন্তু সেরকম মনে হল না – ম্যানিফেস্টো বলেই কি এরকম মনে হচ্ছে? নাকি এরকম মনে হওয়াতে একে ম্যানিফেস্টো মনে হচ্ছে? – বেশ দ্রষ্টা দ্রষ্টা গোছের লেখা – সাতাশ বছরের দ্রষ্টাকে ভাল লেগেছে। তার সৃষ্টিকে দেখা যায় না – কোনো ইন্দ্রিয়ের প্রত্যক্ষ উপভোগের সুযোগ নেই সেখানে। এমনি একটি শিল্পকর্মের সাথে সংযোগের উপাদানটি আবার স্থান ও কালে নির্দিষ্ট মানুষের বহুব্যবহৃত বহুজ্ঞাত কথা বলার ভাষা। মানষের জীবনে এত সহজ কোনো প্রাপ্তি নেই, সেই প্রাথমিক প্রাপ্তিকে মানুষের তীব্র না-জানা ও না-শোনায় পরিণত করাতেই কবিতার সৃষ্টি। কবিকে এমন ভাবে দেখা হল নিজের স্মৃতিই খুব টলমল করে উঠল। কবিকে মহৎ বা নগণ্য সামাজিক ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বা নির্যাতিত করে আমাদের কবিতার পরিসর সমৃদ্ধ বা অন্ধ হয়ে যায় না কিন্তু যদি কবিতার শক্তি সুষমা ও শিল্পকে আমরা আমাদের প্রাণের প্রয়োজনীয় প্রকাশ মনে করি, যদি কবিতাকে পোষাক পরার মতই একটি স্বাভাবিক ব্যাপার ধরে নিই এবং স্বাভাবিক ব্যাপারটির উৎকর্ষ শিল্প ও অভাবনীয়তার প্রতি আমাদের আকর্ষণ জন্ম নেয়, তবেই আমরা কবিতার সাথে আমাদের সম্পর্ক ও সংহতিকে আরো নির্ভার ও আরো যোগাযোগসমৃদ্ধ করতে পারব। অমরতা সমকালীনতা ও স্বল্পকালীনতাকে নাকচ করে দিয়েছে ম্যানিফেস্টো ১৯৯৮। কবিতায় অমর যেমন কিছু নেই তেমনি সমকালীন বা স্বল্পকালীন কবিতা বলেও কিছু নেই। কবিতার মুহূর্ত সৃষ্টি করতে পারে এমন কবিতাই কবিতা অথবা একটি কবিতার এমন অংশটুকুই কবিতা। এর বাইরে সুবিপুল পংক্তির সাম্রাজ্য শুধু বেঁচে থাকার বা ইতিহাস বা প্রত্নতত্ত্বের বিষয় হওয়ার যোগ্য সংগ্রহশালা। কবিতাকে নিজের অস্তিত্বের নিঃস্বনে পরিণত করতে, কবিতার অস্তিত্বের নিঃস্বনে নিজেকে রূপান্তর করতে এই যে নিরন্তর দ্বন্দ্ব এর ভেতর থেকেই সৃষ্টিশীলতার নিজস্ব প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় কবিতার তীব্র, চিরকালীন ও অক্ষয় সব মুহূর্ত। আমার নিজের সাথেই কবিতা আজ অনেক দূর পাড়ি দিয়েছে আরো অনেক দূর পাড়ি দেয়া তার পড়ে আছে। পনেরো বছর আগের এলেখাটি খুঁজে পেয়ে সেপাড়ি দেয়ার আকাঙ্ক্ষা আরো বেড়ে গেছে আরো বিনিদ্র নিষ্ঠায় সৌন্দর্যসৃষ্টির পরিশ্রমে অক্লান্ত অবয়বটাকে দৃঢ় হাতে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। পাঠককে কী অভিনিবেশেই না দেখা…

কিন্তু সমস্ত সমস্যা দেখতাম ওই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে – দেখতাম মানে আজো দেখছি এবং এই সমস্যা পিছু ছাড়ছে না – এই দিকনির্দেশনার মধ্যেই আছে রাজনৈতিক ইসলাম অথবা ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার। [...]

সোজা পথ। আত্নসমর্পণ। মানুষের জীবনের লক্ষ্য নিয়ে ইসলামের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনার পাশাপাশি আছে সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলন। ছোটোবেলা থেকেই দেখছি – সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলন নিয়ে তেমন সমস্যার কোনো কিছু নেই। এসব পালনীয় ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট করণকৌশল ও আচরণবিধি আছে এবং হুজুরদের সাথে সাধারণ মুসলমানের এসব নিয়ে তেমন কোনো তুলকালাম ব্যাপারস্যাপার নেই বললেই চলে – বরং এগুলোই সমাজে হুজুর ও সাধারণ মুসলমানদের ধর্মীয় সম্পর্কের মূলভিত্তি। কিন্তু সমস্ত সমস্যা দেখতাম ওই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে – দেখতাম মানে আজো দেখছি এবং এই সমস্যা পিছু ছাড়ছে না – এই দিকনির্দেশনার মধ্যেই আছে রাজনৈতিক ইসলাম অথবা ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার। কোনটা সোজা পথ? কিভাবে চলতে হয় এই সোজা পথ ধরে? কার জন্য কোনটা সোজা পথ? আত্মসমর্পণ কার কাছে? কার আত্মসমর্পণ? কতভাবে আত্মসমর্পণ? কত মাত্রার আত্মসমর্পণ? রাজনৈতিক ইসলাম চায় নিজের রাজনৈতিক জয় এবং তার জয়লাভের মাধ্যমই হবে এটি প্রচার করা যে একটি ইসলামি রাষ্ট্র পেলেই সোজা পথ হাসিল হবে এবং একটি ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম হলে সেই রাষ্ট্রের কাছে সবার আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সবার জীবনের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে। অর্থাৎ একটা সর্বব্যাপী অনুশাসন কায়েম হবে – সেই অনুশাসনের রক্ষণাবেক্ষণে প্রজন্মের পর প্রজন্ম রাজনৈতিক মুক্তি পাবে। কিন্তু সাধারণ মুসলমানরা কি রাজনৈতিক ইসলামের এই সোজা পথ ও আত্মসমর্পণের সূত্র মানে? রাজনৈতিক ইসলাম বাংলাদেশে এখনো শতকরা ৪ – ৭ ভাগের বেশি ভোট পায় না। কাজেই আমরা তো সহজেই বলতে পারি বাংলাদেশের মুসলামনেরা সাক্ষ্য, প্রার্থনা, দান, সংযম, বিসর্জন ও তীর্থ সম্মেলনে পরিবেষ্টিত (যদিও সেখানে উল্লেখযোগ্য হারে অনাচরণীয় মুসলমান বিদ্যমান) এবং তারা সোজা পথ ও আত্মসমর্পণের রাজনৈতিক ইসলামের সূত্র মানে না। কিন্তু না, ২৬শে মে ২০১৩ আইসিএসএফ আয়োজিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইসলাম’ শীর্ষক সেমিনারের প্রথম পর্বের আলোচক হাসান মাহমুদের একটা বাস্তব আর্তি আমরা যারা কোটি কোটি লোক ধর্মে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষ হিসাবে দুর্বল। ষড়রিপুর তাড়নায় আমরা তাড়িত, আমরা ভুল করতে পারি শুনে আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার মনে হল এই কোটি কোটি মানুষ সোজা পথ ও আত্মসমর্পণ নিয়ে তাহলে এভাবেই বিজড়িত। তাহলে এই কোটি কোটি মানুষের শতকরা ৬৫ ভাগ মনে করে…

উৎসবের ভারের চেয়ে ভারী কিছু নেই, সেই ভার এক মুহুর্তের জন্যও ঋতুপর্ণের কাহিনী চিত্রনাট্য ও পরিচালনা থেকে সরে যায়নি। একজন চিত্রনির্মাতার এটা মস্তগুণ।[...]

ছবিটা আজই দেখলাম। ঋতুপর্ণ বেঁচে থাকলে হয়ত এত তড়িঘড়ি করে এই চলচ্ছবিটা এখনই দেখা হত না। ছবিটা অস্বস্তির নাকি পরিবার মানেই অস্বস্তি – কোনটা ঠিক কোনটা ভুল ছবি দেখে শেষ করার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই এই দোলাচাল, এরকমই হয় – একান্নবর্তী পরিবারের এসব একই গল্প একই স্বপ্ন হতাশা এসব যে আমি চিনি না, এ হয়ত তারই ফল। দুর্গাপূজা, মানে এই উৎসবে, নিজেদের বাড়ির পূজোতে এসে এক একান্নবর্তীতার মধ্যে কতগুলো মানুষ তাদের দিনযাপন করতে শুরু করল – এবং এই দিনযাপনের মধ্য দিয়েই শেষ হল এই চলচ্ছবিটা। চরিত্রগুলো কেউই বাড়িটার চেয়ে বড় নয় – বাড়িটাকে ঘিরে থাকা নানা বেদনার চেয়ে বড় নয়। এরকম বাড়িতে এরকমই হয়, সত্যিই, এরকম বাড়ির এরকম ছবির গঠনতন্ত্রটাই আমি কোনোদিন বুঝিনি, না বুঝেও এরকম কয়েকটি ছবি আমি দেখেছি, আজ ঋতুপর্ণের ‘উৎসব’টাও দেখা হল – কিন্তু এদেরকে কি আমি চিনি? আমার আশেপাশের কেউ চেনে? অথবা বুঝতেও পারে না চিনে কিনা? উৎসবের ভারের চেয়ে ভারী কিছু নেই, সেই ভার এক মুহুর্তের জন্যও ঋতুপর্ণের কাহিনী চিত্রনাট্য ও পরিচালনা থেকে সরে যায়নি। একজন চিত্রনির্মাতার এটা মস্তগুণ। যার দেখা হয়নি তিনি ছবিটা দেখবেন, ছবিটা দেখার পর এটা সবার নিজের নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপার, তিনিও আমার মতো এরকম কোনো ছবি আর দেখবেন না – এই সিদ্ধান্তে আসেন কিনা। ‘উৎসব’ আমার কাছে ঋতুপর্ণের গুরুত্বপূর্ণ ছবি। বাড়িটাকে মানুষগুলোকে বড় সুন্দর করে ফ্রেমে বাঁধা হয়েছে। তাকিয়ে দেখবার মতো আসবাব মিলেছে ছবিটাতে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেখলে হয়ত ক্ষুব্ধ হতেন।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.