মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিংকের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিংক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে। ধন্যবাদ।

‘যুদ্ধাপরাধী ইস্যুর রাজনীতিকরণ’ বলতে ঠিক কী বোঝায় আসলে? গত বছর বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই এরকম একটি বিষয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সবাইকে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একটি অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনের সময় স্বাধীনতাবিরোধীরা তেমন মাথা ঘামায়নি। কিন্তু নির্বাচনের ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এটি একটি অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠেছে আর তখন থেকেই কেউ কেউ ছবক দিতে শুরু করেছেন, বিষয়টির ‘রাজনীতিকরণ’ ঠিক হবে না। লক্ষণীয় বিষয়, এ কথা যারা বলছেন, তারা প্রত্যেকেই রাজনৈতিক দলের সদস্য। আর কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী যখন একটি ইস্যু সম্পর্কে মন্তব্য করেন, নিঃসন্দেহে তাতে একটি রাজনৈতিক বার্তা থাকে এবং সেকারণে এর রাজনৈতিক একটি মাত্রাও থাকে। এরকম কথা বলার মধ্যে দিয়ে প্রকারান্তরে জনগণের সবার কাছে একটি রাজনৈতিক বার্তাই পৌঁছে দেয়া হয়। লোকে বলে, ‘জ্ঞানী বোঝে ইশারা পেলে, মুর্খ বোঝে অণ্ডকোষে লাথি পড়লে।’ জ্ঞানী কিংবা মুর্খ, আমাদের যেটাই ভাবা হোক না কেন, যুদ্ধাপরাধের শিকার একটি জনগোষ্ঠীর অংশ হিসেবে একটা বার্তাই পাই আমরা তাঁদের ওই দাবির মধ্যে থেকে। সে-বার্তাটি হলো : তাদের দলের কাউকে যেন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত না করা হয়, শাস্তি দেয়া না হয়। এ-বার্তার আরেকটি অর্থ হলো, সত্যিকার যুদ্ধাপরাধী কাউকেও যদি অভিযুক্ত করা হয় তা হলে তা ‘যুদ্ধাপরাধের রাজনীতিকরণ’ হবে, কেননা তিনি তাদের দলীয় নেতা, কেননা তিনি তাদের রাজনৈতিক মিত্র। স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীরা যুদ্ধের সময়েও কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল অথবা সরকারের আজ্ঞাবহ ছিল। যুদ্ধের পর তাদের অবস্থানগত সংকট প্রকট হয়ে ওঠে এবং নিজেদের গরজেই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা আরও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েন। এমনকি সরকারি দল আওয়ামী লীগেও এদের অনেক আশ্রয় নিয়েছেন তখন, তারও চেয়ে বেশি আশ্রয় নিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও ভাসানী ন্যাপে। কারণ বেঁচে থাকার জন্যে, নিরাপদ থাকার জন্যে একটি অবস্থান দরকার হয় তাদের সবার; আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় সেই অবস্থান রাজনৈতিক হলে। মানবতার বিরুদ্ধে যে-অপরাধ করা হয়, তা ঢাকার জন্যে এর চেয়ে বড় বর্ম আর কিইবা হতে পারে! ১৯৭৫ সালের পর এরা রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকার পায়। তখন এদের কপাল খুলে যায়। এখন, যারা বলছেন যে যুদ্ধাপরাধী ইস্যুর রাজনৈতিকীকরণ ঠিক…

তফসীর ও সাঈদী, মাইকিং শুরু হয়ে গেছে চট্টগ্রামে। সরকার যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিদেশভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে, তাহলে একজন যুদ্ধাপরাধীর প্রকাশ্য সমাবেশে তফসীরে কেন নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না ? আরো পরিধি বাড়িয়ে কেন পারে না চিহ্নিত সব যুদ্ধাপরাধীর প্রকাশ্য যে কোনো সমাবেশে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে ? সরকারের তা পারা উচিত এবং এই নিগ্রহের মধ্য দিয়ে এদের কোণঠাসা করা উচিত। আর এভাবেই ধীরে ধীরে তাদের বিচারও ত্বরান্বিত করা হোক। আর চট্টগ্রামের মানুষ আর কত নিজেদের অপমান সহ্য করবে! এবারের দুজন জামাত সাংসদ চট্টগ্রামের, আবার সাঈদীর তফসীরের ঘাঁটিই বা কেন হবে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের নাগরিক ও ধর্মপ্রাণ মানুষ কেন পারে না যুদ্ধাপরাধীর তফসীর বর্জন করতে? কোরানের তফসীরে সাঈদীর চেয়ে যোগ্য কেউ কি জন্মায়নি চট্টগ্রামে বা বাংলাদেশে? সরকারের দিক থেকে হোক নিষেধাজ্ঞার প্রতিরোধ, সাধারণ মানুষ করুক যুদ্ধাপরাধীর প্রকাশ্য তফসীর ও সমাবেশ বর্জন, এভাবেই শুধু সম্ভব যুদ্ধাপরাধীদের একঘরে করা। আর এ আমাদের সমাজের প্রাচীন ধারা, অপরাধীকে একঘরে করো। আর নতুন ধারাও জারি হয়ে যাক পাশাপশি বিশেষ ট্রাইবুনালে যুদ্ধাপরাধীর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়ে যাক।

কী করবেন বারাক ওবামা ও হিলারি ক্লিনটনরা, জুতা যখন অস্ত্র হয়ে ওঠে? জুতা যখন মিসাইলের চেয়েও তীব্র বেগে গিয়ে আঘাত হানতে চায় যতটা না জর্জ বুশের শরীরে, তারও চেয়ে বেশি পুরো যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী কাঠামোর চোয়ালে? জুতা তো ছুরি নয়, পিস্তল নয় যে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সনাক্ত করতে হবে। এ হেন জুতা আর জুতা নয়, রীতিমতো অস্ত্র হয়ে উঠেছে। এ অস্ত্র প্রয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের যে-ক্ষতি করা হলো, তা থেকে বেরিয়ে আসার দায়ভার তো ওবামা-হিলারিদেরই নিতে হবে। কেননা তারাই তো এখন উত্তরসূরি বুশ-রাইসের ইরাকনীতির। মুনতাজার আল-জায়িদকে এখন মেরেকেটে কোটি টুকরো করে ফেললেও কি সম্ভব যুক্তরাষ্ট্রের চোয়ালের দিকে উড়তে থাকা ওই জুতার পাটিকে ফিরিয়ে আনা? সম্ভব নয়। এমনকি মার্কিন মুল্লুকেরই তুখোড় বিশ্লেষক ডেভিড সোয়ানসনকে বলতে শুনছি, একজন সাংবাদিক কেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির দিকে জুতা ছুঁড়ে মারার মতো অভব্য কাজটি করতে গিয়েছিলেন তারও চেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, ওই কক্ষটিতে উপস্থিত আর যারা ছিল তারা কেন এরপরও সাহস পায়নি পা থেকে জুতা খুলবার। ডেভিড সোয়ানসন উল্টো জানতে চেয়েছেন, ‘কেন যে-মানুষটি আমাদের রাষ্ট্রপতির গায়ে জুতা ছুঁড়ে মারে, সেই মানুষটি আমাদের রাষ্ট্রপতির চেয়েও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে?’ এই প্রশ্নের জবাব খানিকটা দিতে পারেন বাঙালিরা, বাংলাদেশের মানুষেরা। কেননা অন্যায়কারীর দিকে সরাসরি জুতা ছুঁড়ে মারার রেওয়াজ এ-দেশটিতেও আছে। অনেকেরই মনে আছে, স্বৈরাচারী সামরিক জান্তা হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ জনসভা করতে গেলে সিলেটবাসী জুতা দেখিয়েছিলেন আর সিরাজগঞ্জের জনগণ শুধু জুতা দেখিয়ে বা ছুঁড়েই ক্ষান্ত হননি, w`M¤^i হয়ে প্রচণ্ড রোষে ছুটে গিয়েছিলেন সামরিক জান্তার দিকে। আরও একটি ঘটনাও অনেকের মনে আছে, জামায়াতে ইসলামীর গোলাম আযম নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বায়তুল মোকাররমে। হয়তো চিন্তা করেছিলেন, জনগণ সব ভুলে গেছে। কিন্তু না, গণরোষের শিকার হয়েছিলেন তিনি, এবং শোনা যায় তার মাথায়ও দু’চারটে জুতা-স্যান্ডেল বসিয়ে দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ মানুষ। চারপাশে যখন মিথ্যার বোঝা জমে ওঠে, একেবারে সামনাসামনি দাঁড়িয়ে যখন মিথ্যুকেরা অম্লান বদনে প্রচণ্ড আস্থার সঙ্গে মিথ্যা কথা বলতে থাকেন, তখন সুন্দর ও সত্য কদর্য হয়ে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়। কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ তাঁর ‘কিংবদন্তীর কথা বলছি’ কবিতায় লিখেছিলেন, ‘আমাদের কণ্ঠস্বর কর্কশ/ কেননা বিকৃতির প্রতি ঘৃণা মানুষকে অসুন্দর করে দেয়।’ ইরাকে সাংবাদিক মুনতাজার আল-জায়িদী যে এই অভব্য কাজটি করতে…

এই বিজয় দিবসে যখন আমাদের অনেকেরই মনে পড়ছে, গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদরা একাত্তরে কে কোথায় ছিলেন, তখন আমরা কি পারি সেই তালিকায় আরও একটি নাম জুড়তে? আমরা কি পারি খোঁজ করতে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগ ও বিবিধ বামদলের সঙ্গে মহাজোট গঠনকারী জাতীয় পার্টির নেতা এবং স্বৈরাচারী সামরিক জান্তা, জনগণের আন্দোলনে পদচ্যুত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ তখন কোথায় ছিলেন? [...]

এই বিজয় দিবসে যখন আমাদের অনেকেরই মনে পড়ছে, গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদরা একাত্তরে কে কোথায় ছিলেন, তখন আমরা কি পারি সেই তালিকায় আরও একটি নাম জুড়তে? আমরা কি পারি খোঁজ করতে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগ ও বিবিধ বামদলের সঙ্গে মহাজোট গঠনকারী জাতীয় পার্টির নেতা এবং স্বৈরাচারী সামরিক জান্তা, জনগণের আন্দোলনে পদচ্যুত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ তখন কোথায় ছিলেন? কাগজপত্র বলে, হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ তখন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে ছিলেন। কিন্তু এমন নয় যে, বাংলাদেশের আরও অনেক সামরিক কর্মকর্তাদের মতো তিনি বন্দী ছিলেন। যুদ্ধ শুরুর সময় তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন, কিন্তু যুদ্ধে যোগ না দিয়ে তিনি এপ্রিলের প্রথম দিকে পাকিস্তানে পাড়ি জমান। সেপ্টেম্বর মাসে আবারও বাংলাদেশে আসেন তিনি, অসুস্থ বাবাকে দেখতে। তাহের কিংবা খালেদের মতো পাকিস্তান থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার মনোবাসনা এরশাদের স্বপ্নেও জাগেনি। পাকিস্তান টিকিয়ে রাখার জন্যে খুবই সক্রিয় ছিলেন ওই সময়ে হুসেইন এরশাদ,- এতই সক্রিয় যে মুক্তিযুদ্ধের তুঙ্গ মুহূর্তে যখন বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কমান্ড মরণপণ লড়াই শুরু করেছে, তখন এরশাদের অধিনায়কত্বে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল পাকিস্তানের হয়ে পাল্টা আক্রমণে অংশগ্রহণ করে। পরে পাকিস্তান যখন ১৯৭২ সালে আটকে পড়া বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিকদের বিচার করার জন্যে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তখন এরশাদকে নিযুক্ত করা হয় সেটির চেয়ারম্যান হিসেবে। কতজন নিরীহ বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা শাস্তি পেয়েছেন তাঁর ট্রাইব্যুনাল থেকে? কতজনকে মগজ ধোলাই করা হয়েছে ওই সময়ে? আমাদের জানা নেই সেই তথ্য। তবে পরে বাংলাদেশ আটকে পড়া সামরিক কর্মকর্তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিলে এরশাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, কী এক অদৃশ্য কারণে এই এরশাদও আটকে পড়া সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তারপর চতুর এরশাদ বঙ্গভবনে শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে যান তখনকার প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা রিয়াউদ্দিন মিয়া ভোলাকে নিয়ে। ভোলা মিয়া তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি শেখ মুজিবের পা ধরে চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্যে আবেদন জানাতে থাকেন। আর ভোলা মিয়াও শেখ মুজিবকে বলেন, 'আমার ভাগনের চাকরিটা না থাকলে ¯^vaxbZv যুদ্ধ করে কী লাভ হলো!' অতএব ভোলা মিয়ার যাতে একটু লাভ হয় শেখ মুজিব সেই ব্যবস্থা করেন, তাঁর মহানুভবতার কারণে এই…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.