সুপারিশকৃত লিন্ক: ডিসেম্বর ২০০৯

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিংকের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিংক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে।
ধন্যবাদ।

আজকের লিন্ক

এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।

২৯ comments

  1. মাসুদ করিম - ১ ডিসেম্বর ২০০৯ (২:৪৮ অপরাহ্ণ)

    পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলাকে জাতিসংঘ দপ্তরের অন্যতম ভাষার স্বীকৃতি দিতে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে যাতে ভারত সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর পক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। আন্তর্জাতিক স্তরে এর আগেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাকে জাতিসংঘ দপ্তরের অন্যতম ভাষার স্বীকৃতি দিতে প্রস্তাব দিয়েছেন তার গত জাতিসংঘ সফরে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা তার প্রস্তাবের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ১ ডিসেম্বর ২০০৯-এর আজকালের প্রতিবেদন

    বাংলা রাষ্ট্রপুঞ্জের দপ্তরের অন্যতম ভাষার স্বীকৃতি
    বাংলা ভাষা যাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের দপ্তরের অন্যতম ভাষার স্বীকৃতি পায় সে ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাঠাবে। সব রাজনৈতিক দলকে নিয়েই ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রস্তাবে বলা হবে, কেন্দ্রও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক। সোমবার বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের আগে সব দলকে নিয়ে বৈঠকে এই প্রস্তাব আলোচনা হয়। বিধানসভার মুখ্য সচেতক সৈয়দ মহম্মদ মসীহ্ পরে সাংবাদিকদের জানান, বাংলা ভাষা যাতে আন্তর্জাতিক ভাষার স্বীকৃতি পায় তার জন্য বাংলাদেশও প্রস্তাব পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে। পশ্চিমবঙ্গও এরকম প্রস্তাব পাঠালে দাবি জোরদার হবে। সব দলকে নিয়ে আমরা প্রস্তাব পাঠাব। স্পিকার হাসিম আবদুল হালিমও কেন্দ্রর কাছে প্রস্তাব পাঠনোর কথা বলেছেন। কেন্দ্রের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রপুঞ্জে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির চেষ্টা চালাব। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিধানসভার স্পিকার হাসিম আবদুল হালিমের সঙ্গে দেখা করেন কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খোন্দকার। কথা হয় বাংলা ভাষা রাষ্ট্রপুঞ্জের দপ্তরের ভাষার স্বীকৃতির বিষয়ে। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ভাষা বাংলা। প্রায় ২৩ কোটি মানুষ কথা বলেন এই ভাষায়। আরবি, চায়নিজ, ইংরেজি, ফরাসি, রাশিয়ান এবং স্প্যানিশ — এই ৬টি ভাষা রাষ্ট্রপুঞ্জের দপ্তরের অন্যতম ভাষা হিসেবে স্বীকৃত। অথচ, বাংলা এখনও রাষ্ট্রপুঞ্জের দপ্তরের অন্যতম ভাষার স্বীকৃতি পায়নি। রাষ্ট্রপুঞ্জের গত অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা ভাষার স্বীকৃতি পেতে আবেদন জানিয়েছেন। হাসিম আবদুল হালিমকে বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রদূত অনুরোধ জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় যদি এ বিষয়ে একটি বিল উত্থাপন ও পাস করিয়ে তা রাষ্ট্রপুঞ্জে পাঠানো যায়।

    • মাসুদ করিম - ২২ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:২১ পূর্বাহ্ণ)

      বাংলা ভাষা যাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের দপ্তরের অন্যতম ভাষার স্বীকৃতি পায় সে ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়ে সর্বদলীয় প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। বিস্তারিত পড়ুন এখানে

  2. মাসুদ করিম - ২ ডিসেম্বর ২০০৯ (৩:০৫ অপরাহ্ণ)

    উলফার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ‘অরবিন্দ’ ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিস্তারিত পড়ুন এখানে

  3. মাসুদ করিম - ২ ডিসেম্বর ২০০৯ (৩:৫৭ অপরাহ্ণ)

    এবার দুবাইধ্বস। আমেরিকা ধ্বসের কারণ ছিল ‘হাউজ বিল্ডিং লোন’ আর দুবাই ধ্বসের কারণ যতদূর বোঝা যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ‘দুবাই ওয়ার্ল্ড’ সম্ভবত দেউলিয়া হতে যাচ্ছে। বিস্তারিত পড়ুন ‘স্পিগেল’-এ : প্রথম অংশ দ্বিতীয় অংশ
    কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না — দুক্ষেত্রেই ভিলেন ‘গৃহ’ এবং ‘ঋণ’ কেন?

  4. মাসুদ করিম - ৩ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:৩২ পূর্বাহ্ণ)

    ওবামা ম্যাজিকের আশা বৃথা। আমেরিকার আফগান স্ট্রেটেজিতে এখন একথা পরিষ্কার ইউরোপের কাছে।

    But in this case, the public was more disturbed than entertained. Indeed, one could see the phenomenon in a number of places in recent weeks: Obama’s magic no longer works. The allure of his words has grown weaker.

    It is not he himself who has changed, but rather the benchmark used to evaluate him. For a president, the unit of measurement is real life. A leader is seen by citizens through the prism of their lives — their job, their household budget, where they live and suffer. And, in the case of the war on terror, where they sometimes die.

    Political dreams and yearnings for the future belong elsewhere. That was where the political charmer Obama was able to successfully capture the imaginations of millions of voters. It is a place where campaigners — particularly those with a talent for oration — are fond of taking refuge. It is also where Obama set up his campaign headquarters, in an enormous tent called “Hope.”

    In his speech on America’s new Afghanistan strategy, Obama tried to speak to both places. It was two speeches in one. That is why it felt so false. Both dreamers and realists were left feeling distraught.

    The American president doesn’t need any opponents at the moment. He’s already got himself.

    বিস্তারিত পড়ুন এখানে

  5. মাসুদ করিম - ৩ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ)

    ঋণে সবার অধিকার থাকা উচিত, মুহম্মদ ইউনুস বলছেন, জার্মান পত্রিকা ‘স্পিগেল’-এর সাথে সাক্ষাৎকারে।

    There are two sides to every person: selfishness and selflessness. The selfless part is just as strong as the selfish side, we just haven’t admitted that yet. Most businesses are based on selfishness but why can’t we build a business on selflessness? To help others is a joy. We don’t want to abolish capitalism but complete it. Selfishness and selflessness belong equally there.

    পুরো সাক্ষাৎকার এখানে

  6. রায়হান রশিদ - ৬ ডিসেম্বর ২০০৯ (১০:২০ পূর্বাহ্ণ)

    মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের জিতে যাওয়া, তারপর হারতে থাকা আর হেরে যাওয়া বিষয়ে (যুদ্ধাপরাধ ফোরামের আলোচনায় মুনিমের বক্তব্য নিয়ে) সিসিবি-তে ব্লগার ফয়েজ এর আহ্বানমূলক পোস্ট

  7. মাসুদ করিম - ৬ ডিসেম্বর ২০০৯ (২:৪২ অপরাহ্ণ)

    ভারতীয় গণনাট্য সংঘের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব হীরেন ভট্টাচার্যের জীবনাবসান হয়েছে।
    বিস্তারিত পড়ুন গণশক্তিতে প্রথম অংশ এখানে শেষ অংশ এখানে।

  8. মাসুদ করিম - ৭ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:১৭ পূর্বাহ্ণ)

    জলবায়ু পরিবর্তন
    বিশ্বের ৪৫টি দেশের ৫৬টি পত্রিকা জলবাযুর পরিবর্তনের ওপর সাধারণ সম্পাদকীয় ছেপেছে। এই উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকে আছে ইংরেজি দৈনিক ‘দি ডেইলি স্টার’

    Today 56 newspapers in 45 countries take the unprecedented step of speaking with one voice through a common editorial. We do so because humanity faces a profound emergency. Unless we combine to take decisive action, climate change will ravage our planet, and with it our prosperity and security. The dangers have been becoming apparent for a generation. Now the facts have started to speak: 11 of the past 14 years have been the warmest on record, the Arctic ice-cap is melting, and last year’s inflamed oil and food prices provide a foretaste of future havoc. In scientific journals the question is no longer whether humans are to blame, but how little time we have got left to limit the damage. Yet so far the world’s response has been feeble and half-hearted.

    Few believe that Copenhagen can any longer produce a fully polished treaty; real progress towards one could only begin with the arrival of President Obama in the White House and the reversal of years of US obstructionism. Even now the world finds itself at the mercy of American domestic politics, for the President cannot fully commit to the action required until the US Congress has done so. But the politicians in Copenhagen can and must agree the essential elements of a fair and effective deal and, crucially, a firm timetable for turning it into a treaty. Next June’s UN climate meeting in Bonn should be their deadline. As one negotiator put it: “We can go into extra time but we can’t afford a replay.”

    বিস্তারিত পড়ুন এখানে। এবং এখানে দেখুন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জার্মান পত্রিকা ‘স্টেয়ার্ন’ এর স্থিরচিত্রের আয়োজন

    প্রথম আলোর খবর ‘নেমে যাচ্ছে পানির স্তর, সরে যাচ্ছে পদ্মা নদী’

    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতানুল ইসলাম বলেন, যে পদ্মার বুকে কোনো চর ছিল না, সেখানে এখন বিরাট চর জেগেছে। এটা হচ্ছে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে। আগে প্রবল স্রোতের সঙ্গে পলি বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ত। এখন আর সেটা হচ্ছে না। মাঝখানে চর ফেলে একাধিক ক্ষীণ ধারায় আঁকাবাঁকা হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
    রাজশাহী পাউবো সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীতে পানির প্রবাহ আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। গত বছর ২১ জুলাই পদ্মায় পানির প্রবাহ ছিল নয় লাখ ৯২ হাজার ৩৭৮ কিউসেক। ওই মাসেরই ২৮ তারিখে এই প্রবাহ ছিল ১১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪৬ কিউসেক। অথচ এ বছর ২০ জুলাই পানির সেই প্রবাহ কমে হয়েছে মাত্র দুই লাখ ৬৪ হাজার ১১৩ কিউসেক।
    একদিকে যেমন পদ্মা নদী সরে যাওয়ায় রাজশাহীর আবহাওয়ার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে, অন্য দিকে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় রুক্ষ্ম হয়ে যাচ্ছে এখানকার আবহাওয়া।

  9. মাসুদ করিম - ৮ ডিসেম্বর ২০০৯ (১:৩১ পূর্বাহ্ণ)

    দেশকে ইসলামহীন করতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চেষ্টা: নিজামী
    দেশ কী করে ‘ইসলামহীন’ হবে? দেশ কি কোনো ধর্মে দীক্ষা নিতে পারে বা দেশ কি কোনোভাবে ধর্মচ্যূত হতে পারে? নিজামী ‘ইসলামহীন’ হতে পারেন। একজন রাজাকার, একজন যুদ্ধাপরাধী অবশ্যই ‘ধর্মহীন’ অবশ্যই ‘ইসলামহীন’। নিজামীর মতো আরো আরো জানোয়ার রাজাকার যুদ্ধাপরাধীর বিচারে যদি ‘খোদার আরশ কাঁপে’ তবে নজরুলের বিদ্রোহী অগ্নিবীণার শপথে আমরা নির্দ্বিধায় খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া দিতে পারি

  10. মাসুদ করিম - ৯ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:০০ পূর্বাহ্ণ)

    Every Word Knows Something Of A Vicious Circle
    ‘What can’t be said can be written… I reacted to the deathly fear with a thirst for life. A hunger for words. Nothing but the whirl of words could grasp my condition. It spelled out what the mouth could not pronounce.’
    HERTA MÜLLER

    হেয়ার্টা মুলারের নোবেল বক্তৃতা : এখানে জার্মান ভাষায়, এখানে ইংরেজিতে

  11. বাঁধন - ১২ ডিসেম্বর ২০০৯ (১২:২৪ অপরাহ্ণ)

    ইন্ডিয়ান মডার্ন আর্ট ফাউন্ডেশন-এর ওয়েবসাইটে অনলাইন চিত্র প্রদর্শনী। সবাইকে দেখার আমন্ত্রণ।
    ক্লিক করুন এখানে

  12. মাসুদ করিম - ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯ (৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ)

    গতকাল ভারতের প্রখ্যাত চিত্রসাংবাদিক টি.এস.সত্যন ৮৫ বছর বয়সে মারা গেছেন। দেখুন তার কিছু ছবি : ১ম,২য়, ৩য়৪র্থ পৃষ্ঠা। পড়ুন তার সাক্ষাৎকার : ১ম, ২য়৩য় পৃষ্ঠা।

  13. মাসুদ করিম - ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:০০ পূর্বাহ্ণ)

    আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে, এই শোকের দিনে, আমার কয়েকজন প্রিয় ব্যক্তিকে স্মরণ করছি। প্রথমেই স্মরণ করছি মুনীর চৌধুরীকে, আমাদের সবার প্রিয় মুনীর ভাইকে। বয়সে আমার কয়েক বছরের বড়। তাঁকে প্রথমেই পাই আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবনে, নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, বিশেষত নাট্যানুষ্ঠানে। মুনীর ভাই ছিলেন নাটক-অন্তঃপ্রাণ। যেখানে নাটক সেখানেই তিনি। আরও একটি পরিচয় তাঁর পেয়ে গিয়েছিলাম পরিচয়ের শুরুতেই—তাঁর বক্তা পরিচয়। একটু ভাঙা, খসখসে গলায় যে এত জাদু আছে, কে জানত! মুনীর ভাই কথা বলতেন তাঁর সমগ্র সত্তা দিয়ে, শুধু মুখ দিয়ে নয়, আর যা-ই তিনি বলতেন—পরিচিত শব্দ, পরিচিত ভাষা এক নতুন দ্যোতনা নিয়ে আবিষ্ট করত। তাঁকে কিছুদিন শিক্ষক হিসেবেও পেয়েছি আমার স্নাতকোত্তর পর্বে। টেলিভিশনে তিনি নতুন বইয়ের পরিচিতিমূলক একটা অনুষ্ঠান করতেন। আর কোনোরূপ বিরূপ সমালোচনার ধারেকাছে যেতেন না। আমি একবার আমার বিস্ময় প্রকাশ করেছিলাম তাঁর এই অকাতর প্রশংসা করার ক্ষমতায়। তিনি একটু হেসে জবাব দিয়েছিলেন। নতুন বই বেরোচ্ছে। এটাই তো একটা খুশির ব্যাপার—আমি আমার খুশির কথা বলতে চাই। সমালোচনা করতে চাই না।
    ইংরেজি বিভাগের রাশিদুল হাসানকে মনে পড়ে। বরাবর জেনে এসেছি একজন নির্বিবাদ ভেতরগোঁজা স্বভাবের মানুষ—মনেপ্রাণে একজন সাহিত্যপ্রেমী। তিনি কীভাবে ঘাতকচক্রের নজর কাড়লেন, ভাবলে অবাক হই। কোনোভাবেই তিনি পাদপ্রদীপের মানুষ ছিলেন না, অথচ তাঁকেও ওদের প্রতিহিংসার বলি হতে হলো!
    সামান্য পরিচয়েও একজন মানুষ যে কত প্রিয়জনে পরিণত হতে পারেন, ইতিহাস বিভাগের গিয়াসুদ্দীন আহমেদ এর প্রমাণ। আর্টস বিল্ডিংয়ের টিচারস কমন রুমে দেখা হতো, দু-চারটি কথা হতো, একটি সুন্দর মনের পরিচয় পেতাম, এত দিন পরও মনের মধ্যে তাঁর মুখচ্ছবি স্পষ্ট দেখতে পাই। আছে নিশিদিন, আছে প্রতিক্ষণে, তাঁর এক স্মারক গ্রন্থে ব্যক্তি গিয়াসুদ্দীনের জাদুকরি ব্যক্তিত্বের কথা লিখেছেন অনেকেই—দীর্ঘ পরিচয়ের সূত্রে—কিন্তু স্বল্প পরিচয়ে তিনি যেভাবে আজও আমার স্মরণে জাগরূক রয়েছেন, তা-ই যথেষ্ট আমার জন্য।
    শহীদুল্লা কায়সার বা আনোয়ার পাশার মতো আরও কত প্রিয় মানুষের মুখ মনে পড়ে।
    একাত্তরের স্বজন-প্রিয়জন হারানোর বেদনার শেষ নেই, সান্ত্বনা নেই।

    গতকাল রোববার সকালে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রওনা দিতে গিয়ে প্রথম ধাক্কা খেলাম তরুণ গাড়িচালক শাহাবুদ্দিনের কাছে। সঙ্গে থাকা প্রথম আলোর প্রতিবেদক উদিসা ইসলাম তাঁকে বলল, ‘আপনি রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে যাবেন?’
    তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘কোথায়, আপা? বৌদ্ধমন্দিরে?’
    জিজ্ঞেস করলাম, ‘বধ্যভূমির জায়গাটি আপনি চেনেন না, যেখানে একটি স্মৃতিসৌধ করা হয়েছে?’ তাঁর সরাসরি উত্তর, ‘না, বধ্যভূমি কী, আমি জানি না। কখনো ওই এলাকায় যাইনি।’
    এরপর স্মৃতিসৌধের ফটকে দেখা হয় প্রহরী শামসুজ্জামানের সঙ্গে। কত বয়স হবে তাঁর, একুশ কি বাইশ। এক বছর ধরে চাকরি করছেন। জিজ্ঞেস করলাম, ‘এই স্মৃতিসৌধটি কেন হয়েছে, জানেন?’ একটুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, ‘আমি কিছু জানি না।’
    মুক্তিযুদ্ধ কবে হয়েছিল?
    বলতে পারব না।
    দেখা হয় নিরাপত্তা প্রহরী জমির হোসেনের সঙ্গে। ছয় বছর ধরে চাকরি করছেন। স্মৃতিসৌধের সামনে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডটি নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। হাতুড়ি দিয়ে ঠিক করছিলেন। কারণ, আগামীকাল রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী আসবেন। জিজ্ঞেস করলাম, ‘বলবেন কি, এই স্মৃতিসৌধ কেন করা হয়েছে?’ কপাল কুঁচকে বললেন, ‘যুদ্ধের সময় খানরা যাদের মারছে, তাদের হাড্ডিগুড্ডি এইখানে পইড়া ছিল, সেই জন্য এইটা বানানো হইছে।’
    স্মৃতিসৌধ পরিষ্কার করার কাজে মতিঝিল এজিবি কলোনি থেকে এসেছেন চম্পা রানী। তিনি গণপূর্ত অধিদপ্তরের উদ্যান বিভাগে (আরবরিকালচার) চাকরি করেন। তাঁর নিয়মিত কাজ সংসদ ভবনের পেছনের মাঠ পরিষ্কার রাখা। বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের জন্য তিনি আট দিন ধরে এখানে পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বধ্যভূমি বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। স্মৃতিসৌধের ব্যাপারে তাঁর কোনো ধারণাই নেই। অথচ চার বছর ধরে এখানে তাঁর আসা-যাওয়া। একই কাজে এসেছেন নান্না মিয়া ও দীপালি বেগম। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। তাঁরা শুধু জানেন, ‘বাঙালিদের মাইরা এখানে ফেলে রাখছিল।’ কারা মেরেছে, কবে মেরেছে—এসব কিছু তাঁদের জানা নেই।

    অন্য দেয়ালে রয়েছে আরও একটি ফলক। তাতে লেখা: ‘১৯৯৯ সালে মিরপুরবাসীর প্রদত্ত তথ্য অনুসারে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ‘জল্লাদখানা’ নামে পরিচিতি ওয়াসার এই পরিত্যক্ত পাম্পহাউসে খননকাজ চালায়। এখানে পাওয়া যায় ৭০টি মাথার খুলি, ৫৩৯২টি অস্থিখণ্ড এবং শহীদদের ব্যবহার্য নানা সামগ্রী। ১৯৭১ সালে জনবিরল এলাকার এই পাম্পহাউসটিকে বধ্যভূমি হিসেবে বেছে নিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা। হত্যাকাণ্ডের শিকার মানুষজনকে পানিভর্তি অন্ধ কূপে ফেলে দিয়ে ঘাতকেরা ভেবেছিল, এভাবে চিরতরে চাপা পড়বে তাদের কৃত গণহত্যার নিদর্শন। প্রায় তিন দশক পরে বধ্যভূমির কূপ থেকে উঠে এসেছে শহীদ নারী-পুরুষ-শিশুর শবদেহ, বিভিন্ন নিদর্শনের মধ্য দিয়ে বলতে চাইছে অনেক কথা। গণহত্যার শিকার মানুষের নীরব আকুতিতে ধ্বনিত হচ্ছে সত্য ও ন্যায়ের বাণী। কালের এই ঘণ্টাধ্বনি বাজছে আপনার-আমার সবার জন্য।’
    এই বধ্যভূমি চিহ্নিত করা এবং পাম্পহাউসের ওই গর্ত থেকে নানাবিধ প্রমাণ সংগ্রহ করার কাজে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে প্রায় এককভাবে সময় দিয়েছিলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি আক্কু চৌধুরী। ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এই বধ্যভূমি সম্পর্কে আমরা প্রথম জানতে পারি। সেই প্রতিবেদনের ব্যাপারে প্রথম আলোকে সহযোগিতা করেছিল ‘স্মৃতি ৭১’ সংগঠন। ‘স্মৃতি ৭১’-এর সঙ্গে আলোচনার পর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিরপুরের সব বধ্যভূমি অনুসন্ধান ও চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়। নিবিড় অনুসন্ধানের পর জাদুঘর জানতে পারে, মিরপুর এলাকায় ছোট-বড় অন্তত ১০টি বধ্যভূমি আছে। এর বাইরেও ১৯৭১ সালে এবং ’৭২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ অবধি অজস্র বাঙালিকে বিভিন্ন বাড়িতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে পাকিস্তান সরকার এই অপপ্রচার চালিয়েছিল যে একাত্তরে যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল, সেটি জেনোসাইড বা গণহত্যা নয়। আমাদের দেশে গণহত্যার যে ব্যাপকতা, তার তুলনায় খুব কম তথ্যই আমরা সংগ্রহ করতে পেরেছি। তাই বিশ্বের সব মানুষের অবগতির জন্য দেশময় ছড়ানো গণহত্যার স্মারক যে বধ্যভূমিগুলো আছে, সেগুলো সম্পর্কে তথ্য-প্রমাণসহ বিস্তারিত সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। সে প্রয়োজন এখনো আছে। সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিরপুরে দুটি বধ্যভূমি চিহ্নিত এবং সেখানকার সব নিদর্শন সংগ্রহ করে জনসমক্ষে আনার একটি পরিকল্পনা নেয়। এই বধ্যভূমিগুলোর একটি মুসলিম বাজারে, অন্যটি জল্লাদখানায়। ১৯৯৯ সালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এ কাজে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমানের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বতোভাবে সহায়তা করে। অক্লান্ত পরিশ্রম করেন লে. কর্নেল আমান, মেজর তৌহিদ, ক্যাপ্টেন কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন আনোয়ার ও অন্যান্য কর্মকর্তা।

    নয় মাস পর নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে এহেন পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের ওপর মরণাঘাত হানবে, সেটা এই পটভূমিকায় খুব বিস্ময়কর মনে হয় না। কেননা ঘৃণা ও নির্বুদ্ধিতার যে সমন্বয় তাদের মধ্যে ঘটেছিল সেটাই তাদের এই চরম বর্বর পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত করেছিল। জেনারেল নিয়াজি ও ফরমান আলী উভয়ের স্মৃতিগ্রন্থে ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকাণ্ডের কোনো উল্লেখ নেই। ডিসেম্বরের দিনগুলোর অনুপুঙ্খ বিবরণ দিলেও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তারা বেমালুম চেপে গেছেন। অন্যদিকে যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য গঠিত হামুদুর রহমান কমিশন প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গ এড়ানো যায়নি। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁরা আর ঘটনা বেমালুম অস্বীকার করতে পারেননি, চেষ্টা করেছেন রাখঢাকের ও অপরের ওপর দোষ চাপাবার। হামুদুর রহমান কমিশন প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ৯ অথবা ১০ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী এবং ১৪ ডিভিশনের প্রধান মেজর জেনারেল জামশেদ বুদ্ধিজীবী প্রসঙ্গ নিয়ে বিশেষ সভা করেছিলেন। এই সভার কথা স্বীকার করেও সবাই যাঁর যাঁর সাফাই গেয়েছেন। কমিশনের ভাষ্য অনুযায়ী ফরমান আলীর বক্তব্য ছিল এমন: সন্ধ্যার সময় তিনি ফোন পান ঢাকা বিভাগের উপসামরিক আইন প্রশাসক মেজর জেনারেল জামশেদের কাছ থেকে এবং তিনি পিলখানায় তাঁর হেডকোয়ার্টারে আসতে বলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি দেখতে পান, বিপুলসংখ্যক গাড়ি দাঁড় করানো আছে। মেজর জেনারেল জামশেদ তখন গাড়িতে উঠছিলেন এবং তিনি মেজর জেনারেল ফরমান আলীকে গাড়িতে উঠতে বলেন। তাঁরা উভয়ে মিলে ইস্টার্ন কমান্ডের হেডকোয়ার্টারে জেনারেল নিয়াজির সঙ্গে দেখা করতে যান। পথে ফরমান আলীকে জামশেদ জানান যে তাঁরা কিছু লোককে গ্রেপ্তারের কথা ভাবছেন। ফরমান আলী এর বিপক্ষে মত দেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজির দপ্তরে গিয়েও ফরমান আলী একই মত পুনরায় ব্যক্ত করেন। তখন লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি ও মেজর জেনারেল জামশেদ উভয়ে চুপ করে ছিলেন।’
    মেজর জেনারেল ফরমান আলীর এই ভাষ্য থেকে স্বীকারোক্তি মেলে বুদ্ধিজীবীদের আটক করবার জন্য গাড়ি প্রস্তুত ছিল এবং গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছিল। অনুমান করা যায়, যেসব গাড়ি প্রস্তুত ছিল তা বেসামরিক যান, আর তাই পিলখানার ভেতর এসব গাড়ি ফরমানের বিশেষভাবে নজরে পড়েছিল। গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত যখন হয়েছে, এর অর্থ একটি তালিকাও নিশ্চয় তৈরি হয়েছিল। এই তালিকা প্রসঙ্গে যে প্রশ্ন হামুদুর রহমান কমিশন করেনি, তা হলো, কেন মেজর জেনারেল ফরমান আলীর ডেস্ক ক্যালেন্ডারে বুদ্ধিজীবীদের নাম তাঁর নিজের হাতে লেখা ছিল। বোঝা যায় বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পৃক্তি ছিল রাও ফরমান আলী ও মেজর জেনারেল জামশেদের। উল্লেখ্য, রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছিল আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ডিন্যান্স জারি করে এবং বেসামরিক প্রশাসন এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। অন্যদিকে ঘাতক আল-বদর বাহিনী গঠন করা হয়েছিল রাজনৈতিক নেতৃত্ব দ্বারা এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন গভর্নর নয়, গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য তিনি নিয়োগ করেছিলেন ফ্যাসিস্টদের স্টর্ম ট্রুপার বা এসএস বাহিনীর মতো রাজনৈতিক দীক্ষাপ্রাপ্ত ইসলামী ছাত্রসংঘের পরীক্ষিত নেতাদের। আর এই কাজের লজিস্টিক সমর্থন প্রদান করেন মেজর জেনারেল জামশেদ। বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞের জন্য তাই প্রত্যক্ষভাবে দায়ী ইস্টার্ন কম্যান্ডের নেতৃবর্গ এবং তাদের এ-দেশীয় দোসর ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতৃত্ব। এসব বিষয়ে অধিকতর তথ্যানুসন্ধান এখন জরুরি হয়ে উঠেছে, কেননা গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের যে প্রক্রিয়া অচিরেই শুরু হতে যাচ্ছে, সেখানে এই হত্যাকাণ্ড বড়ভাবে উঠে আসবে এবং যথাসম্ভব তথ্য আহরণ বিশেষ জরুরি।
    পরিশেষে উল্লেখ করা যায় জেনারেল গুল হাসানের স্মৃতিকথার সমালোচনা প্রসঙ্গে ব্রিগেডিয়ার এফ বি আলীর উক্তি। তিনি বলেছেন, ‘প্রায়শ প্রশ্ন করা হয়, কীভাবে এক দল মদ্যপ, দুশ্চরিত্র, দুর্নীতিগ্রস্ত ও আহম্মক জেনারেল ক্ষমতা দখল করে কয়েক বছর ধরে দেশ শাসন করতে পেরেছিল। এর উত্তর পাওয়া যাবে ক্ষমতার অন্দরমহলে, যেখানে আরেক দল জেনারেল, যারা সুরার বদলে ক্ষমতার নেশা দ্বারা বিভোর, নৈতিক বিচারে অসত্, ওপরভাসাভাবে চালাক আদতে বুদ্ধিহীন, উচ্চাভিলাষী ও নিষ্ঠুর—তারা এই সব বেল্লিকের পিঠ চাপড়িয়ে নিজেরা ক্ষমতা ভোগ করেছে। এরা হচ্ছে পীরজাদা, আতিকুর রহমান, উমর, রহিম, ফরমান আলী প্রমুখ। তাঁদের পাঁড়মূর্খতার সঙ্গে নৈতিকতার বালাইহীনতা মিলে পূর্ব পাকিস্তানে আমাদের নিজেদের মানুষের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক যুদ্ধের সূচনা করে, পরিণামে বয়ে আনে একাত্তরের বিপর্যয়।’
    ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক পাকিস্তানি জবানিতে বাস্তবের নানা স্বীকৃতি প্রকাশ পাচ্ছে। ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতার রাজনীতি মানবতাকে কোন অতল অন্ধকারে ঠেলে দেয়, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড তার পরিপ্রকাশক। আমাদের প্রয়োজন এ সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য সংগ্রহ, দোষীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো এবং উদার, অসাম্প্রদায়িক, সহিষ্ণু সমাজ প্রতিষ্ঠার সব প্রয়াস বেগবান করা। তবেই তো নিবেদিত হবে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি।

    বিস্তারিত পড়ুন আজকের প্রথম আলোয়

  14. মাসুদ করিম - ১৬ ডিসেম্বর ২০০৯ (১০:৪০ পূর্বাহ্ণ)

    কয়েকদিন ধরে ভাবছিলাম ১৬ ডিসেম্বরকে বিজয় দিবসের ছুটি ঘোষণা না করে; ১৪, ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর এই তিনদিন মিলিয়ে জাতীয় দিবসের ছুটি ঘোষণা করা যায় কি না। এর মধ্যে ১৪ ডিসেম্বর হবে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস'(এখন এ দিন জাতীয় ছুটি নেই, শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকে, এটি ঠিক করা উচিত) আর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, কিন্তু সমস্যায় ছিলাম ১৫ ডিসেম্বর নিয়ে — সমাধান পেয়ে গেলাম বীরশ্রেষ্ঠ মতিউরের স্ত্রী মিলি রহমানের এই অভিপ্রায় থেকে : বছরের একটি দিন রাজাকারদের প্রতি ঘৃণা দিবস পালন করা হোক, কাজেই ১৫ ডিসেম্বর হতে পারে ‘রাজাকার ঘৃণা দিবস’-এর ছুটি।

  15. মাসুদ করিম - ১৬ ডিসেম্বর ২০০৯ (১১:১২ পূর্বাহ্ণ)

    চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়ের বাবা রাজা ত্রিদিব রায় নিয়ে সত্যিই আমার কিছু জানা ছিল না। আজকের ‘দি হিন্দু’তে প্রকাশিত A Chakma in Pakistan লেখাটি থেকে অনেক তথ্যই জানা গেল : তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামকে কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের হাতে অনেক বেশি নিরাপদ ভেবেছিলেন, তিনি ছিলেন ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে নির্বাচিত দুজন এমপির একজন — আরেকজন ছিলেন নুরুল আমিন : এবং এরা দুজনই স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তিনি পাকিস্তানে ভুট্টো সরকারের সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছিলেন।
    এখানে নিরুপমা সুব্রামানিয়ানের লেখাটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ উদ্ধৃতি আকারে :

    He is virtually unknown to the present generation of Pakistanis, and a fading memory for those old enough to know. But in the aftermath of 1971, when Bangladesh came into existence, Raja Tridiv Roy was quite the toast of Pakistan.

    Then the titular chief of the Chittagong Hill Tract Chakmas, Mr. Roy was just one of two East Pakistan parliamentarians — Noor-ul-Amin was the other — to reject the new country, and throw in their lot with West Pakistan.

    On the eve of the December 16 anniversary of the “Fall of Dhaka”, as the event is remembered in Pakistan, Mr. Roy told The Hindu in Islamabad that he has no regrets about that life-changing decision as his people continue to be discriminated against by Bangladesh.

    “One of the chief reasons in my decision to support the Pakistani nation rather than the rebels in 1971 was that the people of the Chittagong Hill Tracts are not Bengalis, but unfortunately, the government of East Pakistan at that time was exploiting the area and the indigenous population,” said Mr. Roy.

    Referring to a report earlier this year by the International CHT Commission, Mr. Roy said the 1997 peace treaty between the people of the region and the Bangladesh government had yet to be implemented in letter and spirit.

    “The feeling of being exploited is even more acute now,” he said, pointing to the changed demography of the region that had made the “son of the soil a minority in his own home.”

    But Mr. Roy has studiously kept away from the Chakma issue over the last 38 years, and though he did nhy, oot say wne reason could be that he wanted to avoid embarrassment for Pakistan as it negotiated relations with the new Bangladesh.

    Mr. Roy said he wanted to correct the popular impression that he ran away after the surrender of Pakistani forces on December 16. He left East Pakistan on November 11, much before the war began.

    “The government of Pakistan [then led by General Yayha Khan] called me to represent the country as a special envoy, and my role was [to build international support] to prevent the impending war,” he said.

    The fighting began on December 3, while he was still on a tour of south-east Asian countries. He recalled that he was in Bangkok on December 16, and returned to Pakistan on December 22. Zulfiqar Ali Bhutto had taken over the reins of the country by then, and asked him to join his cabinet.

    বিস্তারিত পড়ুন এখানে

  16. মোহাম্মদ মুনিম - ১৭ ডিসেম্বর ২০০৯ (১১:১৩ অপরাহ্ণ)

    চার্চিল সাহেব ১৮৯৯ সালে ভারতের ব্যাঙ্গালোরের এক ক্লাবে ১৩ রুপির বিল শোধ করেননি, এই নিয়ে বিবিসির রিপোর্ট

  17. মাসুদ করিম - ২১ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:২৭ পূর্বাহ্ণ)

    আজ স্ট্যালিনের জন্মদিন। রাশিয়ান সেন্টার ফর স্টাডি অফ পাবলিক ওপিনিয়ন এই ডিসেম্বরের গোড়াতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একটি সমীক্ষা চালায় : সমীক্ষার ফলাফল ৩৭ শতাংশের হৃদয় জুড়ে রয়েছে স্ট্যালিন, ২৬ শতাংশের রয়েছে তার প্রতি অসম্ভব শ্রদ্ধা, ২৪ শতাংশের রয়েছে তার প্রতি নেতিবাচক অনুভূতি, ১৩ শতাংশের রয়েছে তার প্রতি অশ্রদ্ধা।পড়ুন কুৎসাকে হারিয়ে ফের হৃদয় দখল করছেন স্তালিন এখানে এবং তারপর এখানে

  18. bloodycivillian - ২১ ডিসেম্বর ২০০৯ (৬:৪৮ অপরাহ্ণ)

    আনন্দবাজারি সাংবাদিকতার কিছু নমুনা দেখুন এতে আর আধুনিক সাংবাদিকতারো।

    • মাসুদ করিম - ২২ ডিসেম্বর ২০০৯ (১২:৫৯ অপরাহ্ণ)

      ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ ও ওদের সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘দেশ’ পড়া বন্ধ করে দিয়েছি দেড় বছর হতে চলল। প্রায় ৫ বছর নিয়মিত ইন্টারনেটে ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ এবং প্রায় এক যুগের ‘দেশ’ পড়ার অভ্যাসে কেন ছেদ টানলাম? সাধারণ মানুষের প্রতি এক ধরনের অশ্রদ্ধা পোষণ করে এই প্রিন্ট মিডিয়া, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিও আছে এর এক ভীষণ অবজ্ঞা, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় এদের সহানুভূতি ছিল সম্পূর্ণভাবেই ‘ইন্দিরা তোষণ’ , মোদ্দা কথা ভারতীয় বাঙালি এলিটদের প্রতিনিধিত্বকারী ‘প্রিন্ট মিডিয়া’ই হলো ‘আনন্দবাজার গ্রুপ’। অসম্ভব বাণিজ্য সফল এই গ্রুপের এখন আর বাণিজ্য ছাড়া দেবার কিছুই নেই। এক সময় বহু সংবেদনশীল সাংবাদিক সাহিত্যিক শিল্পীর বিচরণভূমি ছিল এই সংস্থা, আজ তেমন কাউকেই আর এর সাথে লগ্ন দেখা যায় না। আর বাংলা ভাষার এক ধরনের গতানুগতিক উপস্থাপন ছাড়া নতুন কোনো ভাষা ভাবনাও আজ আর ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ ও ‘দেশ’-এ দেখা যায় না। জনপ্রিয় প্রতিক্রিয়াশীলতার জোরেই শুধু এখন এর উচ্চমার্গীয় বেঁচে থাকা।

  19. মাসুদ করিম - ২২ ডিসেম্বর ২০০৯ (১:১৯ অপরাহ্ণ)

    ইরাক, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ : ধর্মীয় বাধা ও সামাজিক বিপত্তিতে মানুষের জীবন সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে আছে এই দেশগুলোতে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবরআমেরিকার বিখ্যাত থিংকট্যাংক পিউ ফোরামের রিপোর্ট: একটি চার্ট এবং পুরো রিপোর্ট

  20. মাসুদ করিম - ২২ ডিসেম্বর ২০০৯ (৬:৪১ অপরাহ্ণ)

    নেপালে মাওবাদীরা জানুয়ারির ২৪ তারিখ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ফলপ্রসূ আলোচনার সময় বেঁধে দিয়েছে, এর মধ্যে কোনো সমধান না আসলে ২৪ জানুয়ারি থেকে লাগাতার সাধারণ ধর্মঘটের মাধ্যমে পুরো দেশ অচল করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা বর্তমান সরকারকে ভারতের পাপেট সরকার বলেছে এবং প্রয়োজনে সরকারের ‘মালিক’-এর সাথে, মানে ভারতের সাথে, আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছে। এখানে পড়ুন ‘দি হিমালায়ান’ এর খবর এবং এখানে পড়ুন ভারতীয় এক বেসরকারি সংবাদ সংস্থার খবর

  21. মাসুদ করিম - ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ (৩:৩৪ অপরাহ্ণ)

    এই দশকটি কেমন গেল আমেরিকার। পিউ রিসার্চ সেন্টারের সার্ভে রিপোর্ট দেখুন : Current Decade Rates as Worst in 50 Years.

  22. মাসুদ করিম - ২৬ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:৪২ পূর্বাহ্ণ)

    কাশ্মীর বিদ্রোহের ২০ বছর হল এই ডিসেম্বরে। এখানে পড়ুন Kashmir insurgency, 20 years after.
    বাংলায় যে প্রবাদ আছে, কারো সর্বনাশ কারো পৌষ মাস, এনজিও গুলোর হিসাব নিকাশের নৈরাজ্য দেখলে সব সময় মনে হয় এর চেয়ে সত্য পৃথিবীতে আর কিছু নেই। ২০০৪ সালের সেই সুনামি তো আমাদের সবারই মনে আছে, মাদ্রাজের সাংবাদিক গোকুল ভান্নান লিখছেন, Was the tsunami that struck the Tamil Nadu coast and wreaked havoc five years ago a godsend for some NGOs?

    Without going into specifics, an NGO worker employed in a project in Tamil Nadu, Andhra Pradesh and Kerala said: “If I could sum it up in one sentence, it is this: all those who are running NGOs are waiting for another tsunami.” NGOs receive funds from donors under three categories — immediate, temporary settlement and permanent settlement. In most cases, the fraud starts from the first level itself. “All the NGOs visit the same village, click the same photographs, but sent them to different donors across the world seeking funds. Donors release funds to provide immediate succour, completely unaware that there are many others who are sending money to the same NGO for the same beneficiaries.” “I realised a month after the tsunami that victims too understood the tricks of the NGOs. In many fishing hamlets, the village ‘elders’ who decide for the entire community place specific demands before the NGOs. The sub-text: We know you are lining your pockets.

  23. মাসুদ করিম - ২৭ ডিসেম্বর ২০০৯ (১২:০৯ পূর্বাহ্ণ)

    নিরুদ্দেশের বছরগুলো কোথায় ছিলেন যিশু ? বলা হচ্ছে ভারতে ছিলেন তিনি সেই ১৭ বছর, বৌদ্ধধর্ম ও বেদের পাঠ নিচ্ছিলেন তিনি !

    In 1894, a Russian doctor, Nicolas Notovitch, published a book called the “The Unknown Life of Christ” based on his extensive journeys in Afghanistan, India and Tibet.

    During one of his journeys, he visited Leh, the capital of Ladakh and spent some time at the Buddhist monastery of Hemis when he broke his leg.

    At the monastery, he was shown two large yellowed volumes of a document in Tibetan language, “The Life of Saint Issa”. Jesus was referred to as Issa – or the son of god – by the Vedic scholars who tutored him in the sacred texts.

    Notovitch noted down 200 verses from the document at the back of his journal which he kept during his travels. The document later created a storm in the West.

    Monks at the monastery of Hemis, located 40 km outside Leh atop a hill, corroborate to the legend of Christ in India.

    “Jesus is said to have visited our land and Kashmir to study Buddhism. He was inspired by the laws and wisdom of Buddha,” a senior lama of the Hemis monastery told IANS. The head of the Drukpa Buddhist sect, Gwalyang Drukpa, who heads the Hemis monastery, also believes in the legend.

    Swami Abhedananda, a Bengali spiritual scholar and seer, had journeyed to the Himalayas to investigate the “legend of Christ visiting India”. His travelogue, a book titled “Kashmir O Tibetti”, tells of a visit to the Hemis monastery in Ladakh. It includes a Bengali translation of 224 verses of the “Issa legend” which Notovitch copied.

    বিস্তারিত পড়ুন

  24. মাসুদ করিম - ৩০ ডিসেম্বর ২০০৯ (৩:২১ অপরাহ্ণ)

    ‘সার্ক’ যদি উন্নীত হতে পারে ‘সাউথএশিয়ান ইউনিয়ন’-এ, আমার মনে হয় এ অঞ্চলের সব ধরনের মৌলবাদকে মোকাবেলা করা যাবে। আবার এও হতে পারে সব ধরনের মৌলবাদ মোকাবেলা করতে করতে আমরা ‘সাউথএশিয়ান ইউনিয়ন’-এ রূপান্তরিত হতে পারব। কিন্তু এ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের মধ্যে যে এক অবিসংবাদিত মিল আছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মতো, এখানেও ঠিক হয়ে উঠতে পারে একক ‘দক্ষিণএশিয়া’। পড়ুন এখানে ‘দ্য হিন্দু’র মতামত বিভাগের লেখা মদনজিৎ সিং-এর South Asian agenda for Jammu & Kashmir

  25. মাসুদ করিম - ৩১ ডিসেম্বর ২০০৯ (৯:১৫ পূর্বাহ্ণ)

    কিছু ছবি

  26. মাসুদ করিম - ৩১ ডিসেম্বর ২০০৯ (৫:১৫ অপরাহ্ণ)

    একটা যে বছর শেষ হয়ে যাচ্ছে, আরো বড় কথা একটা দশক, এর কোনো বোধই আমার হচ্ছে না। মনে হচ্ছে আজকের এই দিনটাই তো যাচ্ছে কাল আরেকটা নতুন দিন, শুধু ওই নতুন দিনটা নতুন বছরের নতুন দশকের। কিন্তু তারপরও বছর শেষের কোনো আবহ এবার আমাকে আপ্লুত করছে না। কেন জানি না। এমন সময় চোখ পড়ল ‘সংবাদ’-এর শেষ পাতায় ‘কমরেড মণি সিংহের মৃত্যুবার্ষিকী আজ’। ১৯৯০ সালের বছরের শেষ দিনে মৃত্যুবরণ করছিলেন তিনি। পাতা উল্টে দেখলাম ‘সংবাদ’-এর ‘মুক্ত আলোচনা’ পাতায় বিশেষ আয়োজন : জ্যোতি বসু লিখেছেন, কমরেড মণি সিংহকে স্মরণ করা জরুরি। শামছুজ্জামান সেলিম লিখেছেন, স্মৃতিতে কমরেড মণি সিংহ। বজলুর রহমানের সংকলিত রচনা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মণি সিংহ। শামসুর রাহমানের সংকলিত কবিতা, ভাস্বর পুরুষ। এরপর ইন্টারনেটে ‘প্রথম আলো’য় দেখলাম মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম লিখেছেন, চিরভাস্বর মণি সিংহ। সমকালে এম এম আকাশের লেখার শিরোনাম, ‘জনগণ কী চায় জনগণই বলুক’। শামছুজ্জামান সেলিমের লেখা থেকে একটি উদ্ধৃতি :

    সময়টা ছিল বাকশাল গঠনের ঠিক আগ মুহূর্তের। তখন ডা. সারওয়ার আলীর নয়া পল্টনের বাড়ি ছিল ‘পার্টি স্কুল’। আমি ছিলাম এই পার্টি স্কুলের সর্বশেষ ব্যাচের ছাত্র। কারণ এর কিছুদিন পরই বাকশাল গঠিত হয়। যেদিন পার্টি ক্লাস শেষ হয় সেদিন দুপুরের পর ডা. সারওয়ার আলীর নয়াপল্টনের বাড়ির পশ্চিম পাশের রুমে এক ঐতিহাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই সভার সভাপতি ও একমাত্র বক্তা ছিলেন কমরেড মণি সিংহ।…বড় ভাই (মণি সিংহ) সভার কাজ শুরু করলেন, প্রথমেই বললেন :
    ‘কমিউনিস্ট পার্টি কখনও বিলুপ্ত হতে পারে না। দেশে যে পরিস্থিতিই বিরাজ করুক কমিউনিস্ট পার্টি তার কাজ চালিয়ে যাবে। বর্তমানে অতি গোপনে, খুব সাবধানে কাজ করবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কোন দ্বন্দ্বে যাব না। বাকশালকে একটি মার্কসিস্ট, সোশ্যালিস্ট পার্টি হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করব। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক কাজ। আমরা মিসর ও মরক্কোর অভিজ্ঞতা জানি। ভুল করলে দক্ষিণপন্থিরা কমিউনিস্টদের খুন করতে শুরু করবে।’
    এরপর তিনি গোপন কমিউনিস্ট পার্টি কিভাবে কাজ করবে তার কিছু জরুরি নির্দেশ দিয়ে সভা শেষ করেন। এই সভায় তিনি কয়েকজন প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতার বিচ্যুতির বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলেন এবং অন্য কয়েকজন প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতাকে দায়িত্ব দেন তাদের সমালোচনার জন্য। যেহেতু আজও তাদের মধ্যে কয়েকজন বেঁচে আছেন এবং পার্টিতে আছেন তাই তাদের নাম উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকলাম। ইতিহাসের আর একটি সত্য ঘটনা হলো_ বাকশাল গঠিত হলেও কমিউনিস্ট পার্টি তার অস্তিত্ব নিয়ে সক্রিয় ছিল।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.