নানান কারনে মন মেজাজ খারাপ হয়ে আছে। মন খারাপ হলে বই পড়ি, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সন্মুখ যুদ্ধের ই্তিহাস পড়ি। হেদায়েত হোসেন মোরশেদের ঢাকায় গেরিলা অপারেশন বইটা খুলে বসলাম। পড়লাম, পুরনো দিনের মত আবার সারা শরীর টগবগ করে উঠল। কি সব দিন যে ছিল! মনে হল পুরো চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি ক্র্যাক প্ল্যাটুনের নায়কদের। বাংলাদেশের বিশুদ্ধতম প্রজন্মের মানুষদের কথা পড়তে পড়তে আমার মন খারাপ কোথায় যে উড়ে গেল টেরই পেলাম না। ক্র্যাক প্লাটুনের ছয় সদস্য বদি, পুলু, সামাদ, স্বপন, আলম, জুয়েল আগস্টে ঢাকার ফার্মগেটের ট্রাফিক আইল্যান্ডের উপর বসানো পাকি চেকপোস্টে অভিযান করে। আট তারিখ সামাদের নিউস্কাটনের বাসায় ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্যদের বৈঠক হয়। প্ল্যান করা হয় কিভাবে অপারেশনটা করা হবে। প্ল্যান ছিল এট্যাক করা হবে রাত আট টায়। এক মিনিটের মাঝে অপারেশন শেষ করতে হবে। গেরিলাদের গাড়ি হলিক্রস কলেজের গলির মুখে রেখে ফার্মগেটের আইল্যান্ডের পিছনে উত্তর দিকের ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে শুরু করে দক্ষিনে মেহেরবান রেস্টুরেন্টের পর্যন্ত পজিশন নেবে গেরিলারা। দুপুরবেলা আর সন্ধ্যায় দু’বার করে রেকি করে চেকপোস্টে পাকি আর্মি, মিলিটারী পুলিশ আর রাজাকারদের পজিশন দেখা হল। রাত আট টার দিকে হলিক্রস গলির মুখে সবুজ রঙের একটা টয়োটা করোনা এসে দাঁড়াল। গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত প্ল্যানমত পজিশন নিয়ে নিল গেরিলারা। অস্ত্র বলতে সবার কাছে স্টেনগানসহ সামাদের কাছে রিভালবার, আলমের হাতে চাইনিজ এলএমজি, জুয়েলের কাছে ফসফরাস গ্রেনেড, পুলুর কাছে গ্রেনেড-৩৬। গেরিলারা পজিশন নেয়ার পরে ফায়ার বলে কমান্ড দিল বদি। ব্রাশ ফায়ার শুরু হল। মাত্র এক মিনিট। মাটিতে লুটিয়ে পড়ল দশটা শুয়োর। এরপর স্বপনের কমান্ডে গাড়িতে উঠে পড়ে দ্রুত সটকে যায় গেরিলারা। পিছনে পড়ে ছিল দশটা শুয়োরের মৃতদেহ। আহা কি যে সব দিন ছিল...!
ক্র্যাক প্লাটুনের ছয় সদস্য বদি, পুলু, সামাদ, স্বপন, আলম, জুয়েল আগস্টে ঢাকার ফার্মগেটের ট্রাফিক আইল্যান্ডের উপর বসানো পাকি চেকপোস্টে অভিযান করে। [...]