হুমায়ুন আহমেদের ‘দেয়াল’ উপন্যাস বিষয়ে ফেসবুকে এবং বিভিন্ন ব্লগে বেশ কয়েকটি লেখা এসেছে। যে দুটি অধ্যায় প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে তা নিশ্চয় অনেকেরই পড়া হয়ে গেছে [..]

হুমায়ুন আহমেদের ‘দেয়াল’ উপন্যাস বিষয়ে ফেসবুকে এবং বিভিন্ন ব্লগে বেশ কয়েকটি লেখা এসেছে। যে দুটি অধ্যায় প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে তা নিশ্চয় অনেকেরই পড়া হয়ে গেছে, এই অধ্যায় দুটো পড়ে সে সময় সম্পর্কে যা ধারনা পাওয়া যায় তা মোটামুটি এমন:
• কর্নেল ফারুক মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন এবং বীরত্বের সাথেই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, এ ছাড়াও তিনি একজন শখের ফটোগ্রাফার এবং রোমান্টিক ব্যক্তি ছিলেন (বৃষ্টি দেখলেই তাঁর ভিজতে ইচ্ছে হত) (ব্লগার হাসান মোরশেদ বলছেন মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার মোটে তিন দিন আগে ফারুক ‘মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন’।)
• ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্টদের বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে অবাধ প্রবেশাধিকার ছিল এবং তারা প্রায়ই পান বিড়ি বিক্রেতা বা অন্যান্য ছদ্মবেশে তার সাথে দেখা করতে আসতেন এবং তাঁকে ইন্টেলিজেন্স ব্রিফিং দিতেন (তার মানে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি বঙ্গবন্ধুর কোন আস্থা ছিল না)
• বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা ‘র’এর এজেন্ট বলেছেন (তার মানে জিয়াউর রহমানের ষড়যন্ত্রে অংশগ্রহণের তথ্য ভুলও হতে পারে)।
• খন্দকার মোশতাক নিরীহ এবং নার্ভাস টাইপের মানুষ ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে তিনি অংশ নেননি (খন্দকার মোশতাক আমার ছোট খালুর চাচা, ৯৬ সালে মোশতাকের লাশ গ্রামের বাড়ী নেওয়ার পথে পাবলিক লাশের নানা অসম্মান করে বলে পত্রিকায় দেখেছিলাম, খালুকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করাতে তিনি বলেন ঘটনা সত্য এবং মোশতাকের এই অসম্মান প্রাপ্য ছিল)।
• রক্ষীবাহিনীর নির্যাতনে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ ছিল এবং বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে তাঁর গ্রামের বাড়ী লুট করে জনগণ মনের ঝাল মেটায় (এটা লিখতে হুমায়ুন আহমেদের বুক ফেটে গেছে, কিন্তু কোন উপায় নেই, তিনি ইতিহাস বিকৃত করতে পারেন না।)
• বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র শেখ রাসেলকে অন্যদের হত্যার সাথে সাথে ব্রাশ ফায়ারে মারা হয় (তাকে মারা হয় সবার শেষে মাথায় গুলি করে, সেই গুলিতে তার মগজসহ এক চোখ ছিটকে বেরিয়ে আসে, রাসেলকে মারার আগে বলা হয় “তোমাকে মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি”।)
• বঙ্গবন্ধু রাস্তাঘাটে মুচি, ধোপা, নাপিত এই জাতীয় লোকজনের সাথে কোলাকুলি করে ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়েছিলেন (বঙ্গবন্ধু চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য আন্দোলন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কৃত হয়েছেন, অসংখ্যবার জেলে গিয়েছেন, জেলে অনশন করেছেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা মোকাবেলা করেছেন, ৬-দফার আন্দোলন করেছেন। এভাবেই একজন ‘বঙ্গবন্ধু’ তৈরি হন, রাস্তাঘাটে নানা জাতের পাবলিকের সাথে কোলাকুলি করে নয়। এই জাতীয় কোলাকুলি নিম্নশ্রেণীর রাজনৈতিক স্টান্টবাজী, ‘পল্লীবন্ধু’ এরশাদ যেমন করতেন, গুচ্ছগ্রামের কোন এক বৃদ্ধার বাড়ি গিয়ে একবার বলেছিলেন, “মা, আমি তোমার ছেলে এসেছি, ভাত দাও”।)

বঙ্গবন্ধুর জীবনের স্বাধীন বাংলাদেশ অধ্যায় নিয়ে অনেক গল্পই চালু আছে। সে গল্পগুলোও ‘দেয়াল’ উপন্যাসের বাকি অংশে অবধারিত ভাবে স্থান পাবে। সেগুলোর একটা তালিকা করা যাকঃ

• বঙ্গবন্ধু পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের ‘তোরা সব বাঙ্গালী হয়ে যা’ বলেন, এতে রেগে মেগে উপজাতীয়রা হাতে অস্ত্র তুলে নেয় (কাপ্তাই বাঁধ এবং জিয়াউর রহমানের আমলে বাঙ্গালী settlement এর ব্যাপারটা উল্লেখ না করাই ভাল।)
• বাংলার চে গুয়েভারা ‘টাইগার বাম’ সিরাজ শিকদারের মহাকাব্যিক মৃত্যু নিয়ে একটি অধ্যায় থাকবে, বঙ্গবন্ধুর সিরাজ শিকদারকে ‘লাথি মারার’ সময়ে কি বলেছিলেন আর সিরাজ শিকদার কি উত্তর দিয়েছিলেন এই বিষয়ক রেফারেন্সের জন্য হুমায়ুন আহমেদ ‘গ্ল্যাডিয়েটর’ চলচ্চিত্রের সংলাপের আশ্রয় নিতে পারেন। ব্যাপারটাকে আরও পোক্ত করার জন্য সুনীল গাঙ্গুলীর চে বিষয়ক কবিতাটি ছেপে দিতে পারেন। (সুনীল গাঙ্গুলীর অনুমতির প্রয়োজন নেই, তবে ‘ফাদার অব অল বাম’ আব্দুল হকের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টোকে ‘my prime minister’ সম্বোধন করে সামরিক সাহায্যের অনুরোধের ব্যাপারটা না আনাই ভাল।)
• ওরিয়ানা ফালাচী ম্যাডামের সমাজতন্ত্র বিষয়ক vivaতে বঙ্গবন্ধুর গোল্লা পাওয়া নিয়ে একটি বড় অধ্যায় অবশ্যই থাকবে। এ ব্যাপারে বর্ষীয়ান সাংবাদিক শফিক রেহমান বিপুল রেফারেন্স দিয়ে সাহায্য করতে পারেন। ফালাচী ম্যাডামের viva তে A+ পেয়ে পাস করা জুলফিকার ভুট্টোর কথাও থাকতে পারে।
• রক্ষী বাহিনীর নারীধর্ষণ সহ অন্যান্য অপরাধ সংক্রান্ত রেফারেন্সের জন্য তিনি ঢাকা ডাইজেস্ট পত্রিকার পুরনো সংখ্যাগুলো ব্যাবহার করতে পারেন।
• হুমায়ুন আহমেদের নানার মত (যিনি নাকি মাথা থেকে পা পর্যন্ত নিখুঁত ভদ্রলোক ছিলেন) কিছু রাজাকারের চরিত্র এই উপন্যাসে থাকবে। এমন একটি চরিত্রের সাথে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা রাখতে পারেন, যেখানে বঙ্গবন্ধু রাজাকারের ব্রিটিশ আমলে বর্ণ হিন্দুদের কাছে নির্যাতিত হওয়ার কাহিনী শুনে কেঁদে ফেলেন এবং রাজাকারকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। এই সাক্ষাৎকারের পরে বঙ্গবন্ধু রাজাকারদের ‘ক্ষমা’ করে দেন।
• ‘তিথির লাল রুমাল’ জাতীয় উপন্যাসগুলোতে যেমন father daughter ডায়ালগ থাকে, বঙ্গবন্ধুর সাথে তরুণী শেখ হাসিনার ডায়ালগ থাকতে পারে, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকে ক্রমশ জন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ব্যাপারে ‘কঠিন কিছু কথা শোনাবেন’।

ইতিমধ্যেই মাননীয় আদালত হুমায়ুন আহমেদকে ভালভাবে পড়াশোনা করে উপন্যাসটি শেষ করতে অনুরোধ করেছেন। একটু আগেই দেখলাম ডঃ আনোয়ার হোসেন ‘মোহন যাদুকর’ হুমায়ুন আহমেদের থলির যাদুর জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে বলেছেন। হুমায়ুন আহমেদের বহুল প্রশংসিত উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগারের’ একটি ছোট্ট অংশের প্রতি মাননীয় আদালত এবং ডঃ আনোয়ার হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। উপন্যাসের ‘রুনুর ডায়রির’ একটি অংশ

৫-৬-৭১
মন্টুটা তলে তলে এত। আমাকে বলছে তিন তিনটা ডিসিতে সিনেমা দেখাবে। যদি না দেখায় তাহলে সব ফাঁস করে দেব। তখন বুঝবে। মন্টুর একটা কবিতা ছাপা হয়েছে। কবিতাটি সে শুধু আমাকেই দেখিয়েছে। খুব অশ্লীল কিনা, তাই কাউকে দেখাতে সাহস হয়নি।

অনুগ্রহ করে রুনুর ডায়রির তারিখটি লক্ষ্য করুন, ৭১ সালের জুন মাসের পাঁচ তারিখ, পাক বাহিনী ইতিমধ্যে লাখ দশেক লোক মেরে ফেলেছে, লাখ খানেক নারী ইতিমধ্যে ধর্ষিত হয়েছে, সোনার বাংলা ছারখার হয়ে গেছে, আর উপন্যাসের রুনু সেই দেশের ঢাকা শহরে হৈ হৈ করে সিনেমা দেখতে যাচ্ছে, তার বিশ বছর বয়সী বড় ভাই কবিতা লিখছে ‘শুধু ভালবাসি’ আর ‘কিছু কিংশুক’, সেই কবিতা ছাপা হচ্ছে। কবি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে সে গভীর রাতে বাড়ি ফিরছে। বাবা ওভারসীয়ার কাকুর ছেলের বউয়ের সাথে গল্প করছেন। ছোট খালা মেয়ে কিটকিকে নিয়ে আসছেন, পারিবারিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। একই সময়ে একই শহরে ঘটে যাওয়া ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম গণহত্যার লেশমাত্র এই ‘ক্লাসিক’ উপন্যাসে নেই।

ইতিহাসের বিকৃতি আর মানবতার অপমান এক ব্যাপার নয়। সম্রাট আওরঙ্গজেব বিষয়ক ইতিহাস ভিত্তিক উপন্যাসে তাঁর জীবিকার উৎসকে ‘টুপি সেলাই’ এর বদলে ‘জুতা সেলাই’ লিখলে সেটা ইতিহাস বিকৃতি হয়, কিন্তু ৭১ সালের জুন মাসে ঢাকা শহরে চব্বিশ বছরের দামড়া ছেলে খালাতো বোনের ফর্সা হাত ধরে ‘আশ্চর্য যন্ত্রণায়’ ছটফট করছে এটা লিখলে ইতিহাস বিকৃতির চেয়ে অনেক বড় কিছু হয়, তাতে মানবতার অপমান হয়। আজ যদি ইউরোপে কোন উপন্যাস প্রকাশ হয় ১৯৪২ সালে বার্লিন শহরের এক ইহুদি মধ্যবিত্ত পরিবারের নিস্তরঙ্গ জীবন নিয়ে, সেই উপন্যাসের লেখক ও প্রকাশককে ইউরোপীয় আদালত তাদের শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি তোয়াক্কা না করেই ‘holocaust denial’ এর অভিযোগে অভিযুক্ত করবে।

৭৩ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাস নিয়ে তরুণ হুমায়ুন লাজুক মুখে গিয়েছে বালিকা ছাত্রী গুলতেকিনের কাছে। ছাত্রী উপন্যাসে বানান ভুল ধরে ফেললো, হুমায়ুন লজ্জায় লাল হয়ে গেল। কি করে যেন এই লাজুক ছেলেটির সাথে সেই বছরই গুলতেকিনের বিয়ে হয়ে গেল। বালিকা বধূর সাথে বৃষ্টিতে ভেজা এবং অন্যান্য ঢং করতে করতে লাজুক ছেলেটি North Dakota State University তে বৃত্তি পেয়ে গেল। বৃত্তি পেয়ে সে আমেরিকায় গিয়ে polymar chemistry তে পিএইচডি করতে লাগলো। ৭২-৭৫ সালে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি ঘটছে না ঘটছে এই নিয়ে তার কোন মাথাব্যথা ছিল না। দীর্ঘ ৩৫ বছর বাদে তরুণ হুমায়ুন এখন ‘কিংবদন্তি লেখক’, এতদিন বাদে তাঁর সেই ‘অগ্নিময়’ সময় নিয়ে লেখার খায়েশ হল কেন কে জানে? কিছু কিছু দুর্মুখ অবশ্য বলছেন শেখ হাসিনার দেওয়া দশ হাজার ডলার মানবিক সাহায্য নাকি নতুন বইয়ের সাইনিং মানি সেটা তিনি ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি।

যাই হোক, ‘দেয়ালে’ যেমন লেখা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে ‘কিছু সময়ের জন্য বাংলাদেশের আত্মা দেশ ছেড়ে গেল’। না, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে বাংলাদেশের আত্মা যায় নি। শেষ বিচারে বঙ্গবন্ধু একজন ব্যক্তি মাত্র, ব্যক্তির মৃত্যু অবধারিত, বন্দুকের গুলিতে, না হলে অসুখে, না হলে দুর্ঘটনায়। গান্ধী মরেছেন, আব্রাহাম লিঙ্কন মরেছেন, লেনিন মরেছেন, হো চি মিন ভিয়েতনাম মার্কিন দখল দারিত্ব মুক্ত হওয়ার আগেই মরেছেন। মরে গিয়ে তারা অনেক বড় হয়ে গিয়েছেন, বিরাট সাদা মেঘের চেয়েও বড়, সেই মেঘের ছায়ায় তাদের দেশগুলো এগিয়ে গেছে। কিন্তু মৃত বঙ্গবন্ধু মেঘের মত বড় হতে পারেননি, তাঁকে ক্ষুদ্র করে ফেলা হয়েছে, ৬-দফার বঙ্গবন্ধু, ‘দাবায়া রাখতে পারবা না’র বঙ্গবন্ধু হয়ে গেছেন ‘আমার কম্বল কই’ এর হাস্যকর বঙ্গবন্ধু (যার কাছে ঠাট্টা করে পান-বিড়ি ওয়ালার ছদ্মবেশ নিয়ে ভিন দেশের গোয়েন্দারা এসে দেখা করে যায়)। তাঁর যুবক পুত্রদের নারী লিপ্সা আর ব্যাঙ্ক ডাকাতির গালগল্প চন্দ্র সূর্যের মত প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে।

গলায় ফাঁস পড়িয়ে বাংলাদেশের আত্মা ধীরে ধীরে বের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট। হাসতে হাসতে শিশু রাসেলের মগজ আর চোখ বের করে দিয়ে ঘাতকেরা বুঝিয়ে দিয়েছে আগামীর বাংলাদেশে কি হতে চলেছে। ১৫ই আগস্ট ট্রাজেডির শেষ নয়, ট্রাজেডির শুরু মাত্র। সেই ট্রাজেডির ৩৭ বছর চলছে। বাংলাদেশের আত্মা এখনো আছে, তবে সে আত্মা দুষিত। এতটাই দুষিত যে নারী এবং শিশু হত্যাকারী একজন ঘাতককে উপন্যাসের নামে রোমান্টিক বীর মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে ফেললেও সুশীল সমাজের কেউ টুঁ শব্দটি করেন না। তবে একই সুশীল সমাজ দীর্ঘদিন রাজপথে থাকা রাজনীতিবিদদের বেকুব এবং ডঃ ইউনুসের নখের যোগ্য নয় বলে গালিগালাজ করতে এক মুহূর্ত দেরি করেন না। সুশীল সমাজের মুরুব্বী ব্যারিস্টার রফিক উল হক, সবক দিয়ে বেড়ান দু নেত্রীর মানসিকতা না পালটালে দেশের কিস্যু হবে না। (কলহপ্রিয় নিচু মানসিকতার দু নেত্রী আশির দশকে দীর্ঘ আট বছর পুলিশের লাঠির বাড়ি খেয়ে বিশ্ব বেহায়াকে তাড়িয়েছেন, রফিক উল হক সেই বিশ্ব বেহায়ার এটর্নি জেনারেল ছিলেন)।

এই পোস্টের শিরোনাম কি দেব? “Tear down this wall”? মার্কিন রাষ্ট্রপতি রিগ্যানের সোভিয়েত নেতা গরবাচেভকে বার্লিন দেয়াল ভেঙ্গে দেওয়ার আহবান জানিয়ে বলা স্মরণীয় চারটি শব্দ। ক্ষমতাশালী গরভাচেভ দেওয়াল ভাঙ্গেন নি, ভেঙ্গেছে পূর্ব জার্মান তরুণেরা। বুল ডোজার দিয়ে নয়, হাতুড়ি দিয়ে। ফেসবুকে ‘দেয়াল’ সম্পর্কিত আলোচনায় যারা ইতিহাস বিকৃতির প্রতিবাদ করছে তারা ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট যে দেয়াল গড়ে তোলা শুরু হয়েছিল তা ভেঙ্গে ফেলা শুরু করেছে। দেয়ালের পেছনে আছে ৭৫ পূর্ববর্তী বাংলাদেশ, আছে উজ্জ্বল ৭১, ৬৯, ৫২। সে দেয়ালের সামনে আছে ৩৭ বছর অন্ধকারে থাকা বাংলাদেশ। রফিক উল হকরা সেই দেয়াল বড়ই পছন্দ করেন, অন্ধকারে তিনি আশির আর নব্বইয়ের দশকে কি করেছেন তা দেখা যায় না। সেই দেয়াল ভেঙ্গে গেলে সবই দেখা যাবে। দেয়াল যারা ভাঙ্গছে এদের বেশিরভাগেরই জন্ম ৭৫ এর পরে, কেউই ইতিহাসবিদ নয়। যে যেভাবে পারছে রেফারেন্স দিয়ে দেয়ালে ছোট ছোট ফুটো করে ফেলছে। সেই ফুটো দিয়ে আলো আসছে আর ৭৫ পরবর্তী অনেক কুতুবকেই আর ততটা কুতুব মনে হচ্ছে না। দেয়াল পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়লে ৭১, ৬৯ আর ৫২র আলোতেই বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাবে। সে বাংলাদেশে রফিক উল হকরাও থাকবেন, তবে বটতলার উকিল হিসাবে, সুশীল কুতুব হিসাবে নয়।

মোহাম্মদ মুনিম

পেশায় প্রকৌশলী, মাঝে মাঝে নির্মাণ ব্লগে বা ফেসবুকে লেখার অভ্যাস আছে, কেউ পড়েটড়ে না, তারপরও লিখতে ভাল লাগে।

২০ comments

  1. মাসুদ করিম - ১৮ মে ২০১২ (২:০৩ অপরাহ্ণ)

    কিছু লোক আছে যাদের সম্বন্ধে সামান্যতম উল্লেখেও আমি সম্মত নই। আর বড় জোর কিছু বলতে বাধ্য হলে গালাগালিই করি, এই বিকট প্রতিভাবান বাংলাদেশের শীর্ষ লেখককে নিয়ে এর আগে এই ব্লগেরই একটি পোস্টে “বাংলাদেশের মানুষ এখন খুব ভাল আছে” যেমন্তব্য করেছিলাম সেটা এখানেও জারি থাকতে পারে।

    জিহ্বার আগায় তাড়িত হচ্ছে অকথ্য সব গালাগাল। অক্ষরও প্রলুব্ধ হচ্ছে সেসব ধারণ করতে। কিন্তু দুটোকেই সামলাতে সামলাতে লিখছি। এই হুমায়ুন আহমেদই, যখন ঘাদানির আন্দোলন তুঙ্গে, তখন ‘তুই রাজাকার’ এই কথাটি নাটকে বলে বলে, হালকা করে তুলছিলেন তখনকার সেই আন্দোলনের মূল সুরটিকে। আমাদের মিডিয়া ব্যবসায়ীরা, দুজনের নাম আমি এখানে নিতে চাই, আলী যাকের ও আসাদুজ্জামান নূর, বাহবা দিয়েছেন, ভেবেছেন জনসচেতনতার চূড়ান্ত হচ্ছে। লজ্জা আমাদেরও, আমাদের সংস্কৃতি কর্মীরা খুব সহজেই নিজেদেরকে সঁপে দিচ্ছেন এইসব মহালেখকের যাদুকাঠির নিচে। কোটি টাকার লেখক, লুটেরা ব্যবসায়ী, ক্ষমতার অবসেশনে ভোগা সেনা কর্মকর্তারা, রাজনীতির দখলী স্বার্থ আদায়কারী ব্যবসায়ী ও আমলারা, বাংলাদেশের সব রাজাকার আর যুদ্ধাপরাধীরা, আর সবার উপরে আজকের মিডিয়াগুন্ডারা–এরা সবাই একই, বাজারে জিনিসের দামেই তো এদের লাভ, এরা সবাই তো বাজারেই থাকেন, বাজারের সব জিনিস যা আমরা কিনি এসবই তো ওদের বাজারজাত করা পণ্য। বেশী দামে বিক্রি হচ্ছে ওদের পণ্য, তাই ওরা এতো খুশি। যাদের কথা বললাম তারা অনেকেই এখন নানা কাজে ব্যস্ত, তাই তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার জন্য আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছেন কোটিপতি অসভ্য লেখকটি।

  2. সাগুফতা শারমীন - ১৮ মে ২০১২ (২:১৬ অপরাহ্ণ)

    ৭১ সালের জুন মাসে ঢাকা শহরে চব্বিশ বছরের দামড়া ছেলে খালাতো বোনের ফর্সা হাত ধরে ‘আশ্চর্য যন্ত্রণায়’ ছটফট করছে এটা লিখলে ইতিহাস বিকৃতির চেয়ে অনেক বড় কিছু হয়, তাতে মানবতার অপমান হয়। আজ যদি ইউরোপে কোন উপন্যাস প্রকাশ হয় ১৯৪২ সালে বার্লিন শহরের এক ইহুদি মধ্যবিত্ত পরিবারের নিস্তরঙ্গ জীবন নিয়ে, সেই উপন্যাসের লেখক ও প্রকাশককে ইউরোপীয় আদালত তাদের শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি তোয়াক্কা না করেই ‘holocaust denial’ এর অভিযোগে অভিযুক্ত করবে

    সহমত সর্বাংশে।

    গান্ধী মরেছেন, আব্রাহাম লিঙ্কন মরেছেন, লেনিন মরেছেন, হো চি মিন ভিয়েতনাম মার্কিন দখল দারিত্ব মুক্ত হওয়ার আগেই মরেছেন। মরে গিয়ে তারা অনেক বড় হয়ে গিয়েছেন, বিরাট সাদা মেঘের চেয়েও বড়, সেই মেঘের ছায়ায় তাদের দেশগুলো এগিয়ে গেছে। কিন্তু মৃত বঙ্গবন্ধু মেঘের মত বড় হতে পারেননি, তাঁকে ক্ষুদ্র করে ফেলা হয়েছে, ৬-দফার বঙ্গবন্ধু, ‘দাবায়া রাখতে পারবা না’র বঙ্গবন্ধু হয়ে গেছেন ‘আমার কম্বল কই’ এর হাস্যকর বঙ্গবন্ধু (যার কাছে ঠাট্টা করে পান-বিড়ি ওয়ালার ছদ্মবেশ নিয়ে ভিন দেশের গোয়েন্দারা এসে দেখা করে যায়)। তাঁর যুবক পুত্রদের নারী লিপ্সা আর ব্যাঙ্ক ডাকাতির গালগল্প চন্দ্র সূর্যের মত প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে।

    পড়তে পড়তে কান্না পেল, অভাগা দেশে সবচেয়ে অভাগা সেইসব মানুষ যাঁরা সে দেশকে ভালবেসে কিছু একটা বদলাতে চান।

  3. রাগিব হাসান - ১৮ মে ২০১২ (৩:৩০ অপরাহ্ণ)

    @মোহাম্মদ মুনিম, আপনার লেখার প্রথমাংশে একমত, কিন্তু মাঝের ও শেষের দিকে গুরুতর তথ্যগত ত্রুটি আছে। নন্দিত নরকের রচনাকাল খোঁজ করে দেখলাম ১৯৭০। (এটা মুখপত্র নামের সাময়িকীতে ছাপা হয়েছিলো ৭২ এর শুরুতে, আর বই আকারে ৭২ এর শেষের দিকে। প্রফেসর আহমদ শরীফের ভূমিকার তারিখ ৭২ এর জুন মাসে।) (আগেও নানা জায়গায় হুমাহূনের স্মৃতিকথা বা তার ভাইদের লেখায় যা পড়েছি, তাতে বইটা হুমাহূনের ছাত্রাবস্থায় ৭০ সালে লেখার কথাই মনে পড়ে)।

    ৭০ সালে লেখা উপন্যাসে হুমায়ূন এক বছর পরে ৭১ এর তারিখ দিতেই পারেন, সেই তারিখে উপন্যাসের চরিত্ররা সিনেমাও দেখতে যেতে পারে। এই পয়েন্টে আপনার বক্তব্য ও বিশ্লেষণ আসলে একেবারেই মনগড়া ও ভ্রান্ত। উপরের মন্তব্যে দেখা যাচ্ছে, অনেকে এই “প্রমাণ”কে মানবতার অপমানের পুরানো অভ্যাস হিসাবেও গ্রহণ করে ফেলেছেন।

    হুমায়ূন দেয়াল উপন্যাসে ইতিহাস বিকৃতি করেছেন বাজেভাবে, কিন্তু সেটার সমালোচনা করতে গিয়ে বানিয়ে বানিয়ে তার ইতিহাস বিকৃতির প্রমাণ হাজির করা, কিংবা “মানবতার অপমান হয়” বলে লেখার মাধ্যমে কিন্তু আপনিই অসত্য ও ভ্রান্ত একটি লেখা লিখেছেন। আপনার পোস্টের প্রথমাংশে পুরাপুরি একমত, নন্দিত নরকের অংশে একেবারেই একমত নই।

    • হিমু - ১৮ মে ২০১২ (৪:৩৭ অপরাহ্ণ)

      ৭০ সালে লেখা উপন্যাসে হুমায়ূন এক বছর পরে ৭১ এর তারিখ দিতেই পারেন

      নিশ্চয়ই, কিন্তু বই ছাপা হওয়ার আগে প্রুফ দেখার সময় সেই তারিখ ব্যবহারের ঔচিত্য নিয়ে পুনর্বার ভাবতে পারেন।

    • মোহাম্মদ মুনিম - ১৮ মে ২০১২ (৫:৪৫ অপরাহ্ণ)

      @রাগিব, ‘নন্দিত নরক’ কোথায়? আমি তো কোট করেছি ‘শঙ্খনীল কারাগার’ থেকে (প্রথম প্রকাশ বৈশাখ, ১৩৮০, মানে ১৯৭৩)।

      • রাগিব হাসান - ১৮ মে ২০১২ (৯:২৭ অপরাহ্ণ)

        ঠিক আছে, নন্দিত নরকের বদলে শঙ্খনীল কারাগার দেখা যাক। শঙ্খনীল কারাগার আর নন্দিত নরকে একই সময়ে লেখা। অর্থাত ১৯৭১ এর আগে। আপনি শঙ্খনীল কারাগারের ১ম সংস্করণের ভূমিকা পড়ে দেখুন। সেখানে লেখা আছে যে, নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার এবং মনসুবিজন এক্ই সময়ে লেখা। সেটা ১৯৭১ এর আগেই।

        প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে এবং প্রকাশের আগে বইগুলোর তারিখ পাল্টানো দরকার ছিলো কি? সেটা অন্য প্রসঙ্গ।

        • মোহাম্মদ মুনিম - ১৯ মে ২০১২ (২:০৮ পূর্বাহ্ণ)

          ভাই রাগিব, বুয়েটে আর চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে তুমি আমার জুনিয়র ছিলে, তাই তুমি করে বলছি। শঙ্খনীল কারাগার আর নন্দিত নরক নিয়ে অযথা কোস্তাকুস্তিতে আমার কোন আগ্রহ নেই, আমার মনে হয় তোমারও থাকা উচিত নয়। আমি বলছিনা রুনুর ডায়রির তারিখের কারণে হুমায়ুন আহমেদের জেলে যাওয়া উচিত। এই উপন্যাসটি আমি অন্তত পাঁচবার পড়েছি, তারিখের ব্যাপারটা খেয়ালই করিনি। তারিখের ব্যাপারটা চোখে পড়ে মাস খানেক আগে, প্রথমে ভেবেছিলাম ছাপার ভুল। তারপর মনে হল পাঁচ ছটা তারিখের সব কটা ছাপার ভুল হতে পারে না। এরপরে ব্যাপারটা ভুলেই গিয়েছিলাম। ‘দেয়ালের’ প্রিভিও পড়ে আবার মনে পড়ে গেল। ব্যাপারটা নিছক sensibility র, একটি মার্কিন হালকা উপন্যাসেও কি ২০০১ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর নায়ক নায়িকা হাডসন নদীর ধারে হাওয়া খাচ্ছে এই জাতীয় কোন অধ্যায় থাকবে? ধরা যাক হুমায়ুন আহমেদ শঙ্খনীল কারাগারের গল্প সংস্করণ লিখেছেন ৭০ সালে, সেখানে নিশ্চয় রুনুর ডায়রির তারিখ ৭১ এর থাকবে না (তিনি তো আর বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী লিখেননি), থাকলে থাকবে ৬৮ বা ৬৯ এর। সে গল্প উপন্যাস আকারে বেরুল ৭৩ এ, রুনুর ডায়রির তারিখ ৬৮ বা ৬৯ থেকে ৭১ হতে হবে কেন? আর তারিখ যদি আপডেট করতেই হয় সেটা ৭১ই থেমে থাকবে কেন? শঙ্খনীল কারাগারের তো গত ৪০ বছরে নানা ফরম্যাটে অনেকগুলো এডিশন বেরিয়েছে, তারিখ তো ৭১ এই থেমে আছে। কেন আছে? এই প্রশ্নের উত্তর তো তোমার দেওয়ার কথা নয়, দেওয়ার কথা হুমায়ুন আহমেদের। তাঁর সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই, তোমার থাকলে তুমি জিজ্ঞেস করতে পারো। এমন নয় যে ডায়রির তারিখ নিয়ে রাতে আমার ঘুম আসছে না, কিন্তু খটকা তো লাগছে, তোমারও কি লাগছে না?
          তারিখটা কি ৭২ এর জুন হলে ব্যাপারটা যথার্থ হতো? সম্ভবত না, সে সময়ে রাস্তাঘাটে লাগাম ছাড়া মুক্তিবাহিনী ঘুরে বেড়াচ্ছে, নির্ঘাত রুনুকে তুলে নিয়ে যেত। ৭৩ এ? প্রশ্নই উঠে না, শেখ মনির বাহিনী আছে না? ৭৪ এ? রক্ষীবাহিনী। ৭৫ এ? কি পাগলের মত কথা বলছি, ততদিনে বাকশাল হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে ৭১ই ভাল। আবু লাহাবের মত গায়ের রঙের সুদর্শন ক্যাপ্টেনরা তখন রাস্তার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্টে দাঁড়িয়ে আছে, রুনুর আর ভয় কি, নির্ভয়েই সে সিনেমায় যেতে পারতো।

    • রায়হান রশিদ - ১৮ মে ২০১২ (৬:২০ অপরাহ্ণ)

      ধন্যবাদ মুনিম বিষয়টা স্পষ্ট করার জন্য, সকাল থেকেই ‘শঙ্খ নীল কারাগার’ এর কপি খুঁজছিলাম চেক করার জন্য। তবে ‘রুনু’ চরিত্রটি ‘নন্দিত নরকে’-ও আছে, সেখান থেকেই হয়তো কনফিউশান।

  4. মোহাম্মদ মুনিম - ১৮ মে ২০১২ (৬:১৯ অপরাহ্ণ)

    ‘শঙ্খনীল কারাগারের’ লিঙ্ক

  5. রায়হান রশিদ - ১৮ মে ২০১২ (৬:১৯ অপরাহ্ণ)

    হুমায়ুন আহমেদের ২০০৮ সালের একটা সাক্ষাৎকার নিয়ে মুক্তাঙ্গনের আলোচনা এখানে। মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, এবং প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ স্যারকে নিয়ে এই ভদ্রলোকের মন্তব্যগুলো পড়ে স্তব্ধ হয়ে বসে আছি। ভুলেই গিয়েছিলাম মুক্তাঙ্গনে আলোচিত এই সাক্ষাৎকারটির কথা। অতীতে “শঙ্খ নীল কারাগার” কিংবা “জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প” উপন্যাসে তিনি যা করেছেন, এবং বর্তমানে “দেয়াল” উপন্যাসে যা করছেন, তা আসলে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করলে ভুল করা হবে। এই ভদ্রলোক একটি নির্দিষ্ট চিন্তা পদ্ধতি থেকেই যাবতীয় শয়তানীগুলো করছেন বলে মনে হচ্ছে।

    • রাগিব হাসান - ১৮ মে ২০১২ (৯:৫৭ অপরাহ্ণ)

      আমার ধারণা হুমায়ূনের মানসিকতায় একটা বড় পরিবর্তন গত বছর দশেকে এসেছে। কারণ আশি বা নব্বই এর দশকের হুমায়ূনের সাথে এখনকার হুমায়ূনের অনেক কথা বা লেখা মিলেনা। জাহানারা ইমামকে নিয়ে আগে উনি অনেক ভালো কথা লিখেছেন। তবে হুমায়ুন আজাদ উনার পুরানো নেমেসিস! কেউ কাউকে দেখতে পারতেন না, তাই সম্ভবত হুমায়ূন এরকম একটা বাজে মন্তব্য করে মনের সুখ তুলেছেন। ব্যক্তি হিসাবে এটা তার একটা ব্যাপক সংকীর্ণতা।

  6. কুলদা রায় - ১৮ মে ২০১২ (৮:৫৩ অপরাহ্ণ)

    মোহাম্মদ মুনিমের এই লেখাটা ভালো লাগলো।
    রাগিব হাসান ভালো পাঠক। তাঁর এই খুঁটি নাটি খুজে বেড়ানোটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
    হুমায়ূন লেখাটা একশ বছর আগে বা পরে বা যে কোনো সময়েই লিখুন না কেন, তাতে কিছু যায় আসে না। শুধু দেখতে হবে তিনি যে সময়টিতে ঘটনার বিবরণী দিচ্ছেন, ঠিক সময়টিতে হঠাৎ করে তারিখ দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করলেন কেন? দিলেন এই জন্য যে, তিনি ঘটনাটির সময়কালকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে চান। তিনি চান যে, শুধু আখ্যানটা পড়লেই হবে না। আখ্যানে উল্লেখিত সময়টাকেও বিবেচনায় আনতে হবে। সময় একটা ইতিহাসকে ধারণ করে। অর্থাৎ সময় বললেই ইতিহাসকেই নির্দেশ করে। ফলে হুমায়ূন তার লেখায় জুন/১৯৭১ মাসের পাঁচ তারিখে রুনুর ডাইরীটার উদ্ধৃতি দিচ্ছেন–সে সময়ে ইতিহাসে কি হয়েছিল, সেটা মনে আনতেই হবে। হুমায়ূন আহমেদ জ্যোৎস্না ও জননী গল্প উপন্যাসের ভুমিকায় লিখেছেন—
    মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু হয় আমার বয়স তখন তেইশ। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।…গল্প-উপন্যাসে আদর্শ ভালো ছাত্রের কিছু চিত্র আঁকা হয়। আমি ছিলাম সে রকম একজন। ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের অতি উত্তেজনাময় সময়ে অতি উত্তজনামুক্ত এক তরুণ যুবক।…বাইরে যখন ভয়াবহ আন্দোলন চলছে, আমি তখন দরোজা বন্ধ করে গান শুনছি—কেন পান্থ এ চঞ্চলতা?

    বিষয়টি কি হচ্ছে? বিষয়টি খুব সোজা। তিনি ভাই তাঁর মতো করে আছেন। আন্দোলনটা তার মধ্যে নেই। পাঠক কি মেসেজ পাচ্ছেন? উনসত্তরের আন্দোলনটা গায়ে মাখার মতো ঘটনাই ছিল না। ফালতু। অথচ ইতিহাস বলে, এই সময়কালটা বাঙালির অস্থি-মজ্জা-রক্ত, মাংশ, প্রাণবস্তু সমেত জেগে উঠেছিল।

    রাগিব, এটাকে পাশ কাটানো কি যায়?

  7. রফিকুল আনোয়ার রাসেল - ১৯ মে ২০১২ (২:১১ পূর্বাহ্ণ)

    OMG !!! এখনকার তরুনদের মতো বিস্ময় প্রকাশ করতে হল। এই লোক তো ভয়াবহ কাণ্ড বাধিয়ে দিল। নাইন-টেন এ পড়ার সময় খুব পড়েছি হুমায়ুন আহমেদ। ভালো লাগতো। মনে হতো পৃথিবীর সেরা লেখা পড়ছি। একদিন তাই ভুলে ‘ লা মিসেরেবল’ পড়তে গিয়ে কাঁদলাম, আর বুঝলাম এতো দিন কি বাজে কিছুই না পড়েছি। তারপর সাহিত্য পড়ার রাস্তাটা ভিন্ন।বন্ধুরাও এক সময় উনার বই-কে ‘ ট্রাভেল পিস’ বা জার্নি আইটেম হিসেবে দেখত। কিন্তু আমি আর পড়ি নাই। হুমায়ুন সাহেব-কে দেখতাম, তার ব্যাক্তিগত সেলিব্রিটি জীবন, সিনেমা, নাটক টিভি-তে হতো, কিন্তু উৎসাহ পাইনি। কিছুদিন আগে তার অসুস্থতার কথা জেনে আর দশজনের মতোই খারাপ লাগলো। কিন্তু, এখন মনে হল, তিনি মারা যাওয়ার আগে, এইটা কি করলেন!
    আমি মনে করি, আমাদের জাতীয় এবং ঐতিহাসিক বিষয় গুলো নিয়ে আমাদের আগের প্রজন্ম একটা বিশাল নষ্টামি করেছেন এবং এখনো করে যাচ্ছেন। সরকারগুলোকে আমি বিশ্বাস করি না, কিন্তু সাধারন জনগোষ্ঠী বাদ দিয়ে সামাজিক স্তরের বিভিন্ন অংশগুলো ( বুদ্ধিজীবী, সংবাদপত্র, মিডিয়া ইত্যাদি ) নিয়ত চেহারা পালটিয়েছেন। তাঁরা সুকৌশলে ঐতিহাসিক সেই পর্যায়গুলোকে তাদের মতো কাজে লাগিয়ে ব্যবহার করে সুবিধা ভোগ করেছেন বা করতে চেয়েছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ব্যক্তিদের একজন এই হুমায়ুন সাহেব। একজন শিল্পী বা সাহিত্যিক এর শ্রেষ্ঠত্ব তার মরাল বা প্রিন্সিপাল – যা তার ভেতর কখনো দেখা যায়নি। তিনি সব সময় সুবিধা নিয়েছেন এবং নিয়ে তিনি বিখ্যাত হয়েছেন। তাঁকে যারা বাহবা দেন, আমি জানি না কেন দেন। তবে তারাও সেই সুবিধার দুষ্টুচক্র থেকে মুক্ত নন। তার সুবিধা নেয়ার সবচেয়ে দারুন ক্ষেত্রগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, মৌলবাদ আর অনেক কিছু। তিনি আনন্দ থেকে লিখুন, বা পাঠককে আনন্দ দিতে লিখুন, বা টাকার জন্য লিখুন – যাই হোক না কেন ; তিনি সারাজীবন আমাদের ভুল মানসিকতার, ভুল আবেগের, ভুল জীবনের, ভুল ইতিহাসের সাহিত্য উপহার দিয়েছেন। তার লেখায়, যা উঠে এসেছে তা আমাদের মুক্তিযোদ্ধা’র জীবন হোক বা রাজাকারের জীবন – দুটোই ভুল। ‘১৯৭১’ বা ‘শ্যামল ছায়া’ দ্রষ্টব্য। আমার কাছে মনে হয় তিনি মুক্তিযুদ্ধকে এক প্রকার কল্পনা করেছেন, আবেগের মশলায় দৃশ্যত করেছেন অথবা কারো কাছে শুনেছেন। কিন্তু দেখার প্রমান তিনি দিতে পারেন নি, বা উপলব্ধির বিষয়টি তিনি ধরতে পারেননি। আমরা
    এমন এই সাহিত্যিক এর মাধ্যমে অনবরত প্রতারিত হয়েছি। কিন্তু তাঁকে নিয়ে বা তার লেখা নিয়ে গভীর কোন নিরীক্ষাধর্মী লেখা কেউলিখেছেন কিনা জানি না । তাঁকে সবাই বেশি উপরে তুলে ফেলেছে যে, নামাতে গেলে কারো পক্ষে বিশাল সাহসের প্রয়োজন ছিল। জীবন, ইতিহাস নিয়ে তার এই আনন্দ পাওয়ার কাজটি হলিউড এর ফিল্ম কেও হার মানিয়েছে। তার সাহিত্য নিয়ে যে পরিমান সমালোচনা ও তুলধুনো হওয়া দরকার ছিল, তা হয়নি। শুনেছি তিনি একটু প্রতিশোধপরায়ন টাইপের লোক ছিলেন এই ধরনের সমালচকদের ক্ষেত্রে। বস্তুত তিনি মিডিয়া এবং প্রকাশনা জগতে কঠিন প্রভাব রাখতেন, ফলে তাঁকে ঘাঁটানো কেউ সাহস করত না।
    আসলে নিঃশেষ হওয়ার আগে মানুষের আসলে চেহারাটি প্রকাশ পায়। যে কোন ভাবে। এই যেমন মহান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস কদিন আগেই, তার কলমের কালি ফুরিয়ে যাবার আগেই পশ্চিমা বিশ্বের হটকারিতায় আর চুপ থাকতে না পেরে কবিতা লিখে সত্যকে তুলে ধরেন। পৃথিবীকে আবার বুঝিয়ে দেন, একজন সত্যিকারের সাহিত্যিক এর কাজ হল পৃথিবীর যেকোনো অন্যায়-বিপথগামী সময়ে মনের কথা সর্বাত্মক ভাবে প্রকাশ করে প্রতিবাদ করা। তেমনি হয়তো উলটোভাবে আমাদের হুমায়ুন আহমেদ সাহেবও শেষ সময়ে নিজের সুবিধাভরা জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে চরম সব বিষয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে তরুন পাঠককে দ্বিধাগ্রস্ত করে নিজের সত্যিকারের সুবিধাবাদী চরিত্রটি এতদিন পর আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। তবে আমার মনে হয়, এখন আমাদের সময় এসেছে, এই সব লোকের কাছ থেকে ইতিহাস শেখার, জানার, বোঝার চেষ্টা না করে নিজেদের প্রয়োজনে সবকিছু নতুন করে গুছিয়ে জানার।

  8. মাইজুদ্দিন মিয়া - ২০ মে ২০১২ (৩:১৭ অপরাহ্ণ)

    আমরা অভাগা বাঙ্গালী। অহন আমাগো সব কিছুতেই ভেজাল। বড় বড় মিষ্টির কোম্পানি টিস্যু পেপার মিক্স কইরা ছানার মিষ্টি বানায়। আমরাও হাসিমুখে সেই মিষ্টি ৩৮০ টাকা কেজি দরে বাসায় নিয়া আপনজনরে খাওয়াই। কিন্তু ২৫বছড় আগে ভোলা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুইঙ্গারহাটের মিষ্টির স্বাদ আইজও ভুলি নাই, কারন ওইগুলা ছিল ১০০% নির্ভেজাল।। যাই হোক কিসের মইদ্ধে কি আনলাম………!! আসল কথা হইল গিয়া আমার ৩৬ বছরের জীবনে কমপক্ষে ৭২ রকমের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ছি। সব মিলাইয়া তখনকার পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও রাজাকার বাহিনীর শয়তানি ও নির্মমতা এবং স্বাধীনতার যুদ্ধে আমাগো নেতা ও সামরিক বাহিনীর সম্মন্ধে নিজস্ব কিছু ধারনা তৈরি হইছে। তারপরও হুমায়ুন আহমেদের মত লেখকদের ঝকঝকে আধুনিক কাগজের প্রচ্ছদের বই ওইরকম ৩৮০ টাকা দরে কিনা বাসায় নিয়া পরমু ঠিকই কিন্তু ২৫/৩০ বছর আগে আমার মা ও বাবার মুখে তাগো ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা আর মতামত কোনদিন ভুলুমনা। আমি জানি ওইগুলা ছিল ১০০% সত্যি ও নির্ভেজাল।

  9. নীড় সন্ধানী - ২২ মে ২০১২ (৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ)

    হুমায়ূন আহমেদ একজন বিচিত্র মানুষ। বিভিন্ন কারণে তিনি বিভিন্ন সময়ে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন। মনে হয়েছে তিনি সেটা পছন্দ করেন। প্রথম আলো দেশের গুরুত্বপূর্ন সময়ে তার কাছ থেকে বিশেষ সম্পাদকীয় লিখিয়ে নেয় জাতির বিবেক(!) হিসেবে।

    কিন্তু জীবনের শেষভাগে এসে তিনি একটি গুরুতর অভিযোগের সম্মুখীন হলেন যা তার এতদিনের অর্জিত খ্যাতিকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে দিয়েছে।

    এই ভুলটি কেন তিনি করতে গেলেন? জেনে শুনেই কি করেছেন? পনেরোই আগষ্ট নিয়ে একটু ভুলের জন্যও তার ক্ষমা হবে না এই সরকারের আমলে তিনি ভালো করেই জানেন, তবু কেন ওরকম একটা কাহিনী তিনি লিখতে গেলেন?

    দেয়ালের দুই পর্ব পড়ে কেন যেন মনে হয়েছে এই লেখাগুলো হুমায়ূন আহমেদের কোন উপর অলা লিখেছেন যিনি ইতিহাসের ওই মর্মান্তিক বিষয় নিয়েও রসিকতা করার ক্ষমতা রাখেন। হুমায়ূন আহমেদ আর কাউকে দিয়ে বইপত্র লেখাতে শুরু করেননি তো? ফারুক মুশতাকদের যারা পছন্দ করেন তাদের সাথে হুমায়ূন আহমেদের কোন বিরোধ নেই বলেই মনে হয়েছে। তাই এই সন্দেহ কি অমূলক হবে?

    • মোহাম্মদ মুনিম - ৬ জুন ২০১২ (৭:১২ পূর্বাহ্ণ)

      পনেরোই আগস্ট নিয়ে একটু ভুলের জন্যও তার ক্ষমা হবে না এই সরকারের আমলে তিনি ভালো করেই জানেন, তবু কেন ওরকম একটা কাহিনী তিনি লিখতে গেলেন?

      ‘দেয়াল’ উপন্যাসে হুমায়ুন আহমেদ যা লিখেছেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগের কোন নেতার বক্তব্য এখন পর্যন্ত জানার সুযোগ হয়নি। আওয়ামী লীগ ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিল ‘অতীতের ভুল ভ্রান্তির’ জন্য ক্ষমা চেয়ে। এই অতীতের ভুলভ্রান্তি ৭২-৭৫ এর কথিত দুঃশাসন ছাড়া আর কিছুই নয়। বঙ্গবন্ধুকে ‘অন্তরঙ্গ, কিছুটা আমোদপ্রিয়’ (মঞ্জুরুল হকের ভাষায়) ট্রাজেডির নায়ক হিসাবে হুমায়ুন আহমেদ এই উপন্যাসে দেখিয়েছেন। এতেই আওয়ামী লীগ খুশি। হুমায়ুন আহমেদের ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা আছে, তাঁকে হয়রানী করলে আওয়ামী লীগেরই ভোট হারানোর আশঙ্কা আছে। আমেরিকাতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর মত আর্থিক সামর্থ্য হুমায়ুন আহমেদের নিশ্চয় আছে (যদিও তিনি নুইয়র্ক থেকে প্রথম আলোতে পাঠানো লেখাগুলোতে নিজেকে আর্থিক চিন্তায় দিশেহারা একজন মধ্যবিত্ত হিসাবে দেখিয়েছেন)। তারপরও তাঁকে ১০ হাজার ডলার দিয়ে তেলা মাথায় তেল দেওয়ার ব্যাপারটি শেখ হাসিনা করেছেন ভোটের রাজনীতির কারণেই।

      আমার ধারনা রাজনৈতিক উপন্যাস লিখতে যে ন্যুনতম রাজনৈতিক সচেতনতা লাগে, তা হুমায়ুন আহমদের নেই। পশ্চিমবঙ্গের লেখকরা (সুনীল গাঙ্গুলি বা সমরেশ মজুমদার) নকশাল আন্দোলন বা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের পটভূমিকে কেন্দ্র করে উপন্যাস লিখেছেন, তারা নকশাল আন্দোলনের সময়ে অত্যন্ত সচেতন ভাবে তখনকার ঘটনাবলী লক্ষ্য করেছেন, এসব বিষয়ে প্রচুর পড়াশোনাও করেছেন। হুমায়ুন আহমেদ এসবের ধারেকাছেও যান নি। তিনি ম্যাসকারানহাসের বই (যেটা প্রকৃতপক্ষে একজন সাংবাদিকের narrative ছাড়া কিছুই নয়) বই খানিকটা নাড়াচাড়া করে সেই সময়ের সামগ্রিক কিছু চিত্র নিয়েছেন আর সেই সময়কার ঐতিহাসিক চরিত্রগুলোকে নিজের মত করে তুলে ধরেছেন। সেই একই বৃষ্টিতে ভেজা, সে একই ঝিম ধরে থাকা, সে একই খন্দকার মোশতাকের মোরগ পোলাও। বঙ্গবন্ধুর চরিত্র larger than life। মানুষকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে রাস্তাঘাটে নাপিতের সাথে কোলাকুলি করে আর যাই করা যাক, একটি অত্যন্ত পশ্চাৎপদ জনপদকে ২৪ বছরের মধ্যে স্বাধীন দেশে রূপান্তর করা যায় না। ৭১ এর আগের দীর্ঘ ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধু মুসলিম লীগের একেবারের নীচের সারির নেতা থেকে বঙ্গবন্ধু হয়েছেন। এমন পোড় খাওয়া ব্যক্তি ‘দ্যাশের মানুষ আমারে ভালবাসে’ বা ‘আমার কম্বল কই’ এই জাতীয় ছ্যাবলামি করে দেশের নেতৃত্ব দেন না।

  10. মাসুদ করিম - ৩ জুন ২০১২ (১:০৪ পূর্বাহ্ণ)

    @মোহাম্মদ মুনিম
    এটা এখানে হয়ত প্রাসঙ্গিক হবে না। কিন্তু মোশতাকের কথা বলেই বলছি। ৩২ বছর আগের মফস্বলের এক পত্রিকায় মোশতাককে নিয়ে একটা লেখা পেয়েছিলাম। সেলেখা থেকেই আমি জানতে পারি প্রকাশ্য জনসভায় ২১ আগস্টের গ্র্রেনেড হামলাই প্রথম নয় — প্রকাশ্য জনসভায় প্রথম গ্রেনেড হামলা করেছিলেন জিয়া মোশতাকের জনসভায়। এলেখা থেকে আরো জানতে পারি ১৯৭২ সালের ভোটে নিশ্চিত পরাজয়কে হেলিকপ্টারে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে জয় বানিয়েছিলেন মোশতাক। মফস্বলের এই ম্যগাজিনধর্মী পত্রিকার কথা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য জানি না। কিন্তু আপনার মোশতাকের সাথে যেএকটা যোগসূত্রের কথা বলেছেন সেদিক থেকে যদি এখানে উল্লেখিত ঘটনাগুলোর সত্যতা যাচাই করা যেত ভাল হত। মফস্বল ম্যাগাজিনের লেখাটি পড়ুন প্রথমে এখানে ও পরে এখানে

    • মোহাম্মদ মুনিম - ৩ জুন ২০১২ (৫:০০ পূর্বাহ্ণ)

      ২০০০ সালে ছোট খালার মৃত্যুর পর থেকে ছোট খালুর সাথে আমাদের সম্পর্ক প্রায় বিচ্ছিন্ন। মোশতাকের সাথে খালুর আত্মীয়তা একটা অস্বস্তিকর ব্যাপার ছিল বলে আমাদের পরিবারের কেউই তাঁর সাথে মোশতাকের ব্যাপারে আলাপ করতেন না। মোশতাকের লাশ নিয়ে টানাটানির ব্যাপারটা সেসময় পত্র পত্রিকায় আলোচিত হয়েছে বলে আমি ব্যাপারটা ছোট খালুকে জিজ্ঞেস করি। তিনি মলিন মুখে বলেন যে মোশতাক যা করেছেন তাতে এই অসম্মান তাঁর প্রাপ্য ছিল।
      মুশতাকের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনা এখনও মনে আছে (আশির দশকেও বিভিন্ন পত্রিকায় এই বোমা হামলার উল্লেখ ছিল)। ৭২ এ ভোট ডাকাতির ব্যাপারটা জানা ছিল না। মোশতাকের রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যায় সত্তরের দশকেই। জিয়া কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলে মোশতাককে জেলে দিয়ে ঝামেলা শেষ করে ফেলেন।

  11. রায়হান রশিদ - ২৩ জুলাই ২০১২ (৯:৪০ পূর্বাহ্ণ)

    হুমায়ুন আহমেদ চলে গেছেন। শোক, বিতর্ক, মূল্যায়ন ইত্যাদি নিয়ে সরগরম এখন সর্বত্র। এই পোস্টের একটা সিকোয়েলের মনে হয় সময় হয়ে গেল মুনিম।

  12. মোহাম্মদ মুনিম - ২৮ জুলাই ২০১২ (১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ)

    হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে পশ্চিম বঙ্গের কবি সৌম্য দাশগুপ্তের রিভিউ

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.