স্টিফেন ডলড্রি পরিচালিত দ্য রিডার সিনেমাটি বার্নার্ড শ্লিংকের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। (সে-উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে আগের একটি পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে।) মাইকেলের যখন পনেরো বছর বয়স, তার সাথে দ্বিগুণেরও বেশি বয়সী হানার সম্পর্ক হয়। যা হানার কাছে হয়তো প্রয়োজনের বা তার চাইতে কম, কিন্তু কিশোর মাইকেলের কাছে প্রেম বলেই অনূদিত হয়। মাইকেল প্রতিদিন দুপুরে স্কুল থেকে হানার ফ্ল্যাটে আসত, হানা ফিরত তার কাজ থেকে। দু’জনে স্নান করত এরপর মিলিত হত। কিছুদিন পর আরেকটি ব্যপার যোগ হয় তাদের রুটিনে এবং ব্যপারটা দাঁড়ায় এভাবে -- বইপড়া, স্নান, মিলন। মাইকেল হানাকে পড়ে শোনায় লেসিংয়ের এমিলিয়া গালোত্তি, হোমারের ওডিসি, চেখভের 'দ্য লেডি উইথ আ লিটল ডগ', মার্ক টোয়াইনের হাকলবেরি ফিন এবং হার্জের টিনটিন কমিক্স। এমনই চলছিল। কিন্তু একদিন হানা চুপিসারে চলে যায় কোন ঠিকানা না রেখেই। মাইকেলের সঙ্গে তার দ্বিতীয়বার দেখা আদালতে।মাইকেল তখন আইনের ছাত্র, তাদের শিক্ষক মাইকেল সহ একটি ছোট দলকে নিয়ে যান আদালতে যুদ্ধপরাধের বিচার দেখতে। আদালতের শুনানিতে জানা যায় হানা শ্মিৎজ ১৯৪৪-৪৫ সালে একটি ইহুদী নারী বন্দী শিবিরের প্রহরায় নিযুক্ত ছিলেন আরও কয়েকজন মহিলার সঙ্গে। ৩০০ বন্দীকে ডেথ মার্চে নিয়ে যাবার সময় রাতে একটি গ্রামের পরিত্যক্ত গির্জায় আশ্রয় নেয়, মিত্রবাহিনীর এয়ার-রেইডের সময় বোমা বিস্ফোরিত হলে গির্জায় আগুন ধরে যায়। বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেবার ফলে দু’জন ছাড়া সকল বন্দী মারা যায়। বিচারে হানার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। মাইকেল বুঝতে পেরেছিল হানা লেখাপড়া জানে না বললে তার সাজা হবে লঘু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই বলা হয় না তার শিক্ষকের সাথে সামান্য কয়েকটা কথা ছাড়া। মাইকেল বিয়ে করে, বাবা হয়, বিয়ে-বিচ্ছেদ ঘটে তার। একদিন বাসার বই ঘাঁটতে গিয়ে ওডিসি পেয়ে যায়। কী ভেবে সে আবার রিডার বনে যায়। হানাকে গল্প টেপ করে পাঠাতে থাকে। দু’জনের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জেল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে মাইকেল রাজি হয় হানার জেলমুক্তির পর সমাজে মানিয়ে নিতে সাহায্য করতে। কিন্তু মুক্তির আগেই হানা জীবন থেকে স্বেচ্ছায় প্রস্থান করে। তার যাবতীয় সঞ্চয় মাইকেলের মাধ্যমে ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরা সেই মেয়েকে দিয়ে যায়। মাইকেল তার আজ্ঞা পালন করে এবং নিজের মেয়েকে হানার কবরের কাছে নিয়ে যায়। সিনেমা শেষ হয়…
স্টিফেন ডলড্রি পরিচালিত ‘দ্য রিডার’ সিনেমাটি বার্নার্ড শ্লিংকের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। [...]