কী বেদনায় ব্যথিত ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন[...]

কী বেদনায় ব্যথিত ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, দ্বারকানাথ ঠাকুরের সমস্ত ব্যবসায়িক নথিপত্র কেন তিনি পুড়ে ফেলেছিলেন, এর আগে এরকম আরেকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দ্বারকানাথের পত্নী দিগম্বরী দেবী – তিনি দ্বারকানাথ ঠাকুর দ্বারা আয়োজিত সামাজিক বিবিধ ভোজসভায় মদ্যমাংসের প্রাচুর্য ও ঠাকুরের নিজের মদ্যমাংস গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় দ্বারকানাথের সাথে সাক্ষাৎসম্পর্ক ত্যাগ করেছিলেন – এরপর থেকে দ্বারকানাথ বৈঠকখানা বাড়িতেই থাকতেন এবং নিজ বাড়ির পরিবর্তে বেলগাছিয়ায় এক বাগানবাড়ি প্রতিষ্ঠা করে ভোজসভা নৃত্যগীত ইত্যাদির আয়োজন করতেন, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তো ধর্মচর্চায় লিপ্ত হয়ে বিষয়কর্ম থেকে দূরেই সরে গিয়েছিলেন, ঠাকুর পরিবারের যাবতীয় আর্থিক প্রতিপত্তির উৎস দ্বারকানাথ কী এমন করেছিলেন যে ঠাকুর পরিবার তাকে এভাবে ভুলতে চেয়েছে, এই যে ১৮৪২এ তিনি প্রথম বিলাতযাত্রা করেছিলেন এবং মহারাণি ভিক্টোরিয়ার অভ্যর্থনা ফ্রান্সের সম্রাট লুই ফিলিপের অভ্যর্থনা এডিনবরা মিউনিসিপ্যালটির মহানাগরিক উপাধি প্রাপ্তি এসবের পরে দেশে ফিরে এসে আবার ১৮৪৫এ বিলাত ফিরে গেলেন, কেন – দ্বারকানাথ ঠাকুরের স্ত্রীবিয়োগ হয়েছিল ১৮৩৯এ, স্ত্রীর মতো সন্তানেরাও তাকে দূরে ঠেলে দিয়েছিল – এসব বিষণ্ণ প্রশ্নের উত্তর আর কখনো পাওয়া সম্ভব নয় – অতলে হারিয়ে গেছেন

দ্বারকানাথ ঠাকুর। সেউত্তরের হয়ত আমাদের আর প্রয়োজনও নেই, ঠাকুর পরিবারের এসব একান্ত পারিবারিক ব্যাপারগুলো জেনে আমাদের কী কাজ। কিন্তু দ্বারকানাথ ঠাকুরের যে বিরাট কীর্তি – প্রথম ভারতীয় ব্রিটিশ যৌথ মালিকানায় কারটেগোর (Carr-Tagore) কোম্পানির প্রতিষ্ঠা, সেকোম্পানির যাবতীয় নথিপত্র কেন পুড়ে ফিলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কীসে তার লেগেছিল, দ্বারকানাথ ঠাকুরের আয়ের বিরাট অংশ এসেছিল অহিফেন রপ্তানি ও অহিফেন পরিবহনের মাধ্যমে, চীনে যেত অহিফেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আনুকূল্যে, যেত চীনের সাধারণ মানুষকে অহিফেন বিষে জর্জরিত করে দিয়ে চীনকে সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় করে দিতে, সেপ্রমাণ লোপাট করে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। উচিত হয়নি, একেবারেই উচিত হয়নি – ইতিহাসের এমন এক সূত্র ধ্বংস করে দেয়া উচিত হয়নি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। বিশ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় ও ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের অহিফেন ব্যবসা নিয়ে এক জার্মান লেখার ইংরেজি অনুবাদ থেকে লেখেন ‘চীনে মরণের ব্যবসায়’, লেখাটি জৈষ্ঠ ১২৮৮ (১৮৮২ সালে) ‘ভারতী’তে প্রকাশিত হয়েছিল। ভারতবর্ষীয় রাজস্বের অধিকাংশ এই অহিফেন বাণিজ্য হইতে উৎপন্ন হয়। কিন্তু অহিফেনের ন্যায় ক্ষতিবৃদ্ধিশীল বাণিজ্যের উপর ভারতবর্ষের রাজস্ব অত অধিক পরিমাণে নির্ভর করাকে সকলেই ভয়ের কারণ বলিয়া মনে করিতেছেন।…

৭০ বছরের দীনবন্ধু বিশ্বাস এসেছেন নাতনির হাত ধরে। তার হাতে ভারতের জাতীয় পতাকা। নাতনির হাতে বাংলাদেশের। ৬৫ বছরের বিধবা যশোদা দাস হাঁটছিলেন দ্রুত গতিতে। ছেলেকে কাঁধে নিয়ে সুশান্ত ভিল প্রায় দৌড়াচ্ছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার আগেই পৌঁছাতে চান তারা। অনেকে উঠে গেছেন টিনের চালে। অনেকে গাছের উপর। ৪০ বছর আগেকার বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনা তাদের কাছে এখনও তরতাজা।[...]

লিন্ক তোলা যাচ্ছে না, তাই টাইপ করেই তুলে দিতে হল – ত্রিপুরার বাংলা দৈনিক ডেইলি দেশের কথার খবর : জেগে উঠল ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি – চোত্তাখলায় ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যানের শিলান্যাস। নিজস্ব প্রতিনিধি।। আগরতলা, ১১ নভেম্বর : আবেগ, উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা, স্মৃতি রোমন্থন আর এক বুক প্রত্যাশা নিয়ে বৃহষ্পতিবার বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত চোত্তাখলায় শুরু হল নতুন পথ চলা। হাজার মানুষের বিপুল করতালিতে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর আগের স্মৃতি বুকে চোত্তাখলা জেগে উঠল নতুন উদ্যমে। ৭০ বছরের দীনবন্ধু বিশ্বাস এসেছেন নাতনির হাত ধরে। তার হাতে ভারতের জাতীয় পতাকা। নাতনির হাতে বাংলাদেশের। ৬৫ বছরের বিধবা যশোদা দাস হাঁটছিলেন দ্রুত গতিতে। ছেলেকে কাঁধে নিয়ে সুশান্ত ভিল প্রায় দৌড়াচ্ছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার আগেই পৌঁছাতে চান তারা। অনেকে উঠে গেছেন টিনের চালে। অনেকে গাছের উপর। ৪০ বছর আগেকার বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনা তাদের কাছে এখনও তরতাজা। ৭১এর পর অনেক বছর কেটে গেলেও মানুষ ভোলেননি সেই স্মৃতি। তাই তারা এলেন হাজারে হাজারে। নিজেদের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি, এসব শুনেই বড় হচ্ছে। এখানেই ছিল গণকবর, এখানেই ছিল ট্রেনিং ক্যাম্প। ঘুরে ঘুরে তাই দেখাচ্ছিলেন আত্মজদের। গনগনে রোদের উত্তাপ মাথায় নিয়ে বসেছেন অনেকে মাঠেই। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব নাসিরুদ্দিন [ইউসুফ] ইউনুস চোত্তাখলায় মাটিতে পা রেখে আবেগে আপ্লুত হলেন। বলছিলেন এই ক্যাম্পটির নেতৃত্বে ছিলেন কাজী জাফর আহমেদ। ঘন জঙ্গলে ঢাকা এই এলাকায় কয়েকবার এসেছিলাম। আমার কর্মকাণ্ড ছিল মেলাঘরের হাবুল ব্যানার্জীর বাগান আর ঢাকায়। তার স্মৃতির রোমন্থনে অনেকে পাশে এসে দাঁড়ান। এমন একটি ঐতিহাসিক স্থানকে ত্রিপুরা সরকার সংরক্ষণ করছে দেখে তাদের চোখে জল। বাংলাদেশ থেকে আসা নতুন প্রজন্মের যুবক-যুবতীরাও ত্রিপুরাবাসীর এই হৃদয় নিংড়ানো উদ্দীপনা দেখে রীতিমতো আপ্লুত। নির্ধারিত সময়ের ঘন্টা দুয়েক আগে থেকেই রাজনগর ব্লকের সীমান্তবর্তী চোত্তাখলা মাঠ দর্শকে পরিপূর্ণ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে নিয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যখন চোত্তাখলার মাটি ছোঁয় সে সময় দুদেশের পতাকা নাড়িয়ে জনগণ তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। দুদেশের মৈত্রী বন্ধনকে আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা যখন বক্তব্য রাখছিলেন সে সময় পড়ছিল মুহুর্মুহু করতালি। অনুষ্ঠান কভার করতে আসা বাংলাদেশের এক সাংবাদিকের মুখ থেকে বেরিয়েই…

আমরা এশিয়ার উন্নয়নের অংশীদার হতে চাইলে, আমরা এশিয়ার পূর্ব পশ্চিমের সিংহদুয়ার হতে চাইলে, আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি গভীর সম্পর্কে জড়াতে হবে জাপানের সাথে।[...]

ভারত ও চীন সুপ্রাচীন সভ্যতা ও বর্তমানের দুই রাজনৈতিক অর্থনৈতিক শক্তি হলেও জাপান মানবাধিকার মানবিক অর্জন এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তির সূক্ষ্ম দক্ষতায় ওই দুই দেশের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। আমরা ভারত সভ্যতার মোগল ভারতের ও ভারত রাজের অংশ এবং বর্তমান ভারতের মধ্যবর্তী প্রতিবেশী আর চীন উত্তরে ও পূর্বে আমাদের এতই কাছে বাংলাদেশের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক রাষ্ট্রীয় অংশ পাকিস্তানের চেয়েও আজ নিকটবর্তী প্রতিবেশী। বাংলাদেশ শুধু ভারত চীনের মধ্যে এই বিশেষ ভূরাজনৈতিক অবস্থানেই আবদ্ধ নয়, সৌভাগ্যের কথা সামুদ্রিক পথে জাপানের সাথে বাংলাদেশের দূরত্ব প্রায় উত্তর চীনের সমান। এখন এই ‘পুবে তাকাও’ নীতির সবচেয়ে কৌশলগত প্রাসঙ্গিক ভৌগোলিক অবস্থান আমাদেরই – আরো ভাল করে বিচার করলে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের। এটা সুনিশ্চিত ‘পুবে তাকাও’ নীতির ভৌগোলিক সিংহদুয়ার হবে এই বাংলাভাষী অঞ্চল ( অনেকে ‘সেতু’ বলতে চান, না, – সেতু নয়, আমাদের ওপর দিয়ে নয়, আমদের ভেতর দিয়ে সবাইকে পূর্বে যেতে হবে)। ফলে এই অঞ্চলের জন্য প্রয়োজন হবে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। বর্তমান পৃথিবীতে অবকাঠামোর উন্নয়নে সবচেয়ে প্রাগ্রসর দেশ জাপান। আমরা এশিয়ার উন্নয়নের অংশীদার হতে চাইলে, আমরা এশিয়ার পূর্ব পশ্চিমের সিংহদুয়ার হতে চাইলে, আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি গভীর সম্পর্কে জড়াতে হবে জাপানের সাথে। আর জাপানের দিক থেকে এটা হবে এক সুবর্ণ সুযোগ, এই বিরাট অঞ্চলের অবকাঠামোয় বিনিয়োগ ও উঁচুমানের দক্ষতা ফেরি করে, তারা কাটিয়ে উঠতে পারবে তাদের দেশের ভয়ংকর মন্দার প্রভাব। তাই বাংলাদেশের বিদেশ নীতিতে জাপানের গুরুত্বকে শুধু রিকন্ডিশন গাড়ি বাণিজ্য ও অনুদানের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে একে আরো উন্নত ও বহুমুখী করে তোলাই হবে এ সরকারের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক বিনিয়োগ, অবশ্য সরকার যদি সে-লক্ষ্যে কাজ করতে চায় – না চাইলে বা না পারলে বর্তমানের এই ‘পুবে তাকাও’ নীতির সুযোগের কোনো সুফল না তুলেই শূন্য হাতে বসে থাকা ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের আর কিছুই করার থাকবে না – এবং বাংলাদেশ সরকারের এই ধরনের ব্যর্থতার ভাণ্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ বলেই, আজ আরো বেশি বাংলাদেশ সরকারের সাথে দক্ষ জাপানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতার সওয়াল করছি। ভারতের জন্য সংযোগ, চীনের জন্য গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ বরাদ্দ হলে জাপানের জন্য রয়ে গেল অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিক্ষায় জাপানের বিনিয়োগ ও দক্ষতার সবল অংশগ্রহণ। বাংলাদেশকে ‘পুবে…

এই দিবস হতে পারে এই উপমহাদেশের ইতিহাসকে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়ার ও এই ত্রিদেশীয় সম্পর্কের নেতিবাচকতা উপশম করে এক উষ্ণ সম্পর্কের দিকে যাত্রার প্রচেষ্টায় সতত পদক্ষেপ।[...]

১৪ ও ১৫ আগস্ট পাকিস্তান ও ইন্ডিয়া তাদের ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে পালন করে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট রাতে (কারণ তখন রোজার মাস ছিল, তাই মধ্যাহ্নভোজের পরিবর্তে নৈশভোজের মাধ্যমে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল) ও মধ্যরাতে (১৫ আগস্ট জ্যোতিষের গণনায় ছিল ‘অশুভ দিন’ তাই ১৪ আগস্টের মধ্যরাতে শুভ সময় শেষ হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ইন্ডিয়ার জন্ম হয়েছিল) সত্যিকার অর্থে যা ঘটেছিল তাকে স্বাধীনতা বললে ভুল হবে – সেদিন ব্রিটিশ সরকার তার ইন্ডিয়ান উপনিবেশকে দুইটি ‘ডমিনিয়ন’ ঘোষণা করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল। এবং এই দুই ‘ডমিনিয়ন’ পাকিস্তান ও ইন্ডিয়া যখন নিজ নিজ সংবিধান রচনা সম্পন্ন করবে তখনই তারা সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষিত হবে, তার আগ পর্যন্ত তাদের পরিচয় হবে : Dominion of India and Dominion of Pakistan in the Commonwealth of Nations। সংবিধান রচনা সম্পন্ন করে ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ইন্ডিয়া সার্বভৌম রাষ্ট্র হয়ে ওঠে। আর সংবিধান রচনা সম্পন্ন করে পাকিস্তান ১৯৫৬ সালে সার্বভৌম হয়। কাজেই সাদাকথায় ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট (ও ১৫ আগস্ট) কী হয়েছিল, জানতে চাইলে আমার সবসময়ের উত্তর : দেশভাগ। আজ ইন্ডিয়া, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ যাই ভাবুক, ইতিহাসের বিচারে এটা আমাদের স্বীকার করতেই হবে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছিল এই ভূখণ্ডের সেই অঞ্চলগুলোর যেই অঞ্চলগুলো বিভেদরেখার প্রান্তীয় ভৌগলিকতার কারণে জাতিগত ভাবে দ্বিখণ্ডিত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। বাংলা, কাশ্মীর, পাঞ্জাব, সিন্ধু… উত্তর ও পূর্বের এই দুর্ভাগা অঞ্চলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের সাথে এক অসমযুদ্ধে (সেই অসমসাহসী যুদ্ধে বাংলাদেশ জয়লাভ করে প্রতিষ্ঠা করেছে স্বাধীন বাংলাদেশ, যদি জয়লাভ করতে না পারত তাহলে বাংলাদেশের ভাগ্যে কী ভয়ংকর নারকীয় রাষ্ট্রীয় নির্যাতন নেমে আসত তা বোঝার ক্ষমতা আজ আমাদের দেশের অনেকেরই নেই) হারাতে হয়েছে লক্ষ লক্ষ প্রাণ, পশ্চিমবাংলাকে আত্মস্থ করতে হয়েছে সুবিশাল শরণার্থীর দানবিক চাপ। আজো কাশ্মীর যে ভয়ংকর অমর্যাদার ও অনিশ্চয়তার আগুনে পুড়ছে তাও তো এই দেশভাগেরই কারণে। পাঞ্জাব ও সিন্ধু ইন্ডিয়া ও পাকিস্তানে দুঅংশেই গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতীক হলেও ওই অঞ্চলের সামাজিক জীবনের অন্তরআত্মায় আজো দেশভাগের রক্তক্ষরণ চলছে। আর বিচ্ছিন্ন মেঘালয়, আসাম, অরুণাচল, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা তো দেশভাগের পর থেকেই চির অসুখী জীবনযাপন করছে। ইন্ডিয়া, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ তার নিজ নিজ স্বাধীনতা দিবস পালন করুক।…

কখনো চাণক্য ছিলাম না। এ ছিল আমার নামে সবসময়ের ভুল প্রচারণা। জীবনে খুব সহজসূত্র মেনে চলেছি। দায়িত্ব নিয়েছি, দায়িত্ব পালন করেছি।[..]

আমার রাজনৈতিক জীবনটা এখন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে আমি বেশ বুঝতে পারছি – আমাকে আর কেন্দ্রের প্রয়োজন নেই – দলের হাইকমান্ডের যেটুকু প্রয়োজন – তা আমি আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পালন করতে পারব, এতই আত্মস্থ আমার কাছে আমার দল। কিন্তু ২০১৪-এর পর অবসরের কথা ভাবছিলাম, ভাবছিলাম সংসদ সদস্যপদ, মন্ত্রীত্ব এসব থেকে বিদায় নেব। অবশ্য এই কিছু দিন ধরে ভাবছি ২০১৪টাকে ২০১৬ পর্যন্ত যদি নিয়ে যাই, তাহলে ভাল হয় – ভাবছি যদি আমি কেন্দ্রকে ছেড়ে ২০১১তে নিজের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারি, তাহলে সেদায়িত্ব পালন করে ২০১৬তে একেবারে রাজনীতি থেকে অবসর নিতে পারি। মমতার রাজনৈতিক জীবনটা এখন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে এটা স্পষ্ট পশ্চিমবঙ্গে ভোটের রাজনীতি এখন তার হাতের মুঠোয়। ২০১১তে মহাস্থবির বামফ্রন্ট সরকারের পতন সে ঘটাতে পারবে – কিন্তু যা সে পারবে না – তা ওই মুখ্যমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পালন। এর মধ্যেই রেলমন্ত্রী হিসেবে ওর যে ব্যর্থতা, তাতে সামনের দিনগুলোতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীত্বের মতো জটিল ও কঠিন দায়িত্ব পালন করা ওর জন্য হবে এককথায় অসম্ভব। ঠিক সেখানেই যদি কেউ ভাবে , কে

হবে পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী? – তাহলে সবদিক বিবেচনায় তাকে এই ‘প্রণব মুখার্জি’র নামের উপর এসেই ভরসা করতে হবে, রাখতে হবে। এবং আমার ভাবনা এখন যেভাবে এগুচ্ছে তাতে করে এই ভরসা রাখা মানুষগুলো নিরাশ হবে না, আমি নিজের রাজনীতির শেষ দিনগুলো রাজ্যকে দিতে চাই। ইন্দিরার হাত ধরে সেই যে রাজ্য খেকে কেন্দ্রে চলে গিয়েছিলাম, কেন্দ্রে আমার বহুবিধ কাজের অভিজ্ঞতা ও প্রভাবের উপর ভিত্তি করে আমি এবার আমার রাজ্যের জন্য আমার প্রশাসনিক উৎকর্ষের নির্যাসটুকু দিতে চাই। আমি বাংলার জন্য ফলপ্রসূ ও সুদৃঢ় এমন এক অবস্থান নিশ্চিত করতে চাই, যেন আমার মুখ্যমন্ত্রীত্বের পাঁচ বছর বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে এক নিয়ত সম্ভাবনার পরিকল্পিত রাজ্যের নিশানা হাতে স্থিতধী করে তুলতে পারি। একথা খুবই ঠিক রাজনীতির সবদিক সামলালেও ভোটের রাজনীতির দিকে আমাকে খেয়াল রাখতে হয়নি। ভারতীয় ‘রাজ্যসভা’ আমাকে সেসুযোগ দিয়েছে, ভোটে না দাঁড়িয়েও রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো ‘রাজ্যসভা’ সদস্য হয়েই তাৎপর্যপূর্ণ অবস্থান নিয়ে কাটিয়েছি। ২০০৪ এবং ২০০৯ এই দুবারই আমি লোকসভা সদস্যপদে সরাসরি ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় অবস্থান নিয়েছিলাম, দুবারই বেশ ভালভাবেই সেই পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছি। আজ…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.