মোহাম্মদ নাশিদকে তার সংগ্রাম একাই চালিয়ে যেতে হবে[...]

মোহাম্মদ নাশিদকে তার সংগ্রাম একাই চালিয়ে যেতে হবে। আমেরিকা, ভারত, চীন সব একজোট হয়েছে -- প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট যিনি ক্যু-এর পরে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তাকে তারা সমর্থন দিয়েছেন। আমেরিকা ও চীন সুপারপাওয়ার তাদের সুপারপাওয়ারি সমর্থন তারা এভাবেই দেয়। কিন্তু ভারত তো সুপারপাওয়ার নয়, ভারত কেন সবসময় পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে আশেপাশের ছোট নবীন গণতন্ত্রকে বিপদে সহায়তা করে না? কারণ ভারতের বিদেশ নীতি ভারতের স্বদেশ নীতির মতোই বিষণ্ণতায় ভোগে, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। ভারতের বিদেশ নীতির মূল কূটনীতিটা মধ্যপ্রাচ্য, মধ্যএশিয়া, পাকিস্তান ও দক্ষিণএশিয়াকে ঘিরে -- এই অঞ্চলে সংখ্যগরিষ্ঠরা মুসলমান, আর ভারতের নিজ দেশে বড় সংখ্যালঘুরা মুসলমান, তার আশেপাশের মুসলমানদের অগণতান্ত্রিক অবস্থানটাই তার কাছে বড় আবার নিজ দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোয় মুসলমানদের ভোটটাও তার কাছে বড়। এই অগ্নিমান্দ্য থেকে ভারতের বিষণ্ণতা ভারতের সিদ্ধান্তহীনতা। এজন্যই ভারত আরব বসন্তের নীরব দর্শক, এজন্যই ভারত মোহাম্মদ নাশিদের পাশে দাঁড়াতে পারে না, এজন্যই ভারত হাসিনার বন্ধুত্ব চায় কিন্তু নিজের মন নিজেই খুঁজে পায় না, এজন্যই ভারত সুকির চেয়ে বার্মিজ জেনারেলদের বেশি ভালবাসে, আজো ভালবাসে নেপালের রাজাদের, আর পাকিস্তানকে সে যমের মতো ভয় পায়। তাই মোহাম্মদ নাশিদকে, শেখ হাসিনাকে, সুকিকে তাদের নিজের সংগ্রাম নিজেদেরকেই চালাতে হবে। এরা যদি নিজেদের সংগ্রামে জয়ী হয় তাহলেই দক্ষিণএশিয়ার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, আর যদি তা না হয় তাহলে দক্ষিণএশিয়াও মধ্যএশিয়া মধ্যপ্রাচ্য ও পাকিস্তানের মতো অসহজ ইসলামি দৈন্যতায় নিমজ্জিত হবে -- এবং এই অঞ্চলের নানা ধর্মের নানা বিশ্বাসের মানুষের জীবনে অপরিসীম সন্ত্রাসের নৈরাজ্য ডেকে আনবে।

যারা বস্তুগত শক্তির সাহায্যে ক্ষমতাশালী জাতি গড়তে চায় তারা ইতিহাস জানে না ও সভ্যতাকেও বুঝতে পারেনি। নিছক শক্তির উপর নির্ভরতা বর্বরতার লক্ষণ, যারা তার উপর নির্ভর করেছিল তারা হয় ধ্বংস হয়েছে অথবা বর্বরই থেকে গিয়েছে।[...]

সোনা, অহিফেন আর যৌনসঙ্গী এই তিনের প্রতি ছিল চীনাদের আকর্ষণ – প্রবীণ চীনের সেই আকর্ষণের বস্তুতান্ত্রিকতা ও গণমানুষের উপর অনিঃশেষ শোষণের বিরুদ্ধে নবীন চীন রুখে দাঁড়িয়েছিল – তাদের সাম্যবাদী বস্তুতান্ত্রিকতার পরিকল্পনায় প্রধান বাহন ছিল শিল্পমুখী যন্ত্রশক্তি – এদুয়ের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের আদর্শবাদ বা আধ্যাত্মবাদ মোটেই সুবিধা করতে পারেনি – তাই ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথের চীন ভ্রমণ ব্যর্থ না হলেও নবীন চীনের কাছে অপমানিত হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পিকিং-এ যেখানেই বক্তৃতা দিতে গেছেন তিনি, তার বিরুদ্ধে চীনের নতুন যুগের ছোকরারা চীনা ভাষায় মুদ্রিত প্রচারপত্র বিলি করেছিল। রবীন্দ্রনাথ যাদেরকে চীনের ছোকরা বলেছিলেন তারা কারা – অবশ্যই ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থকেরা – যাদের মধ্যে তখন চল্লিশোর্ধ বিখ্যাত চীনা সাহিত্যিক লু স্যুনও ছিলেন। এই বস্তুবাদীদের কার্যকলাপে রবীন্দ্রনাথ এতই বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন যে শেষ পর্যন্ত সফর অসমাপ্ত রেখেই তিনি পিকিং ত্যাগ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিল তাদের – রবীন্দ্রনাথ প্রাচীন চীনের সভ্যতার গুণকীর্তন করেছিলেন, আধ্যাত্মবাদী ব্রহ্মধর্ম ও উপনিষদের বাণী প্রচার করেছিলেন, বৌদ্ধধর্মের সূত্রে ভারত-চীন সেতুবন্ধের কথা বলেছিলেন, চীনের প্রগতিশীল সহিংসতাকে গান্ধীর অহিংস নীতি অনুসরণের

পরামর্শ দিয়েছিলেন আর বস্তুবাদী বিপ্লবের যন্ত্রনির্ভর শিল্পের দৈত্যের বিপরীতে মানুষের মধ্যে দেবতার আকাঙ্ক্ষায় উচ্চতর স্বর্গ লাভের চূড়ান্ত মানবিক উৎকর্ষের কথা বলেছিলেন। তিনি চীনের তরুণদের উদ্দেশ্যে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছিলেন যারা বস্তুগত শক্তির সাহায্যে ক্ষমতাশালী জাতি গড়তে চায় তারা ইতিহাস জানে না ও সভ্যতাকেও বুঝতে পারেনি। নিছক শক্তির উপর নির্ভরতা বর্বরতার লক্ষণ, যারা তার উপর নির্ভর করেছিল তারা হয় ধ্বংস হয়েছে অথবা বর্বরই থেকে গিয়েছে। এরকমের উচ্চারণের বিরুদ্ধে চীনের যুবকেরা চীনা ভাষায় চিৎকার করে বলেছিল, পরাধীন দেশের দাস ফিরে যাও – আমরা দর্শন চাই না, বস্তুবাদ চাই। কেন তার বিরুদ্ধে এইসব বিরোধিতামূলক প্রচারপত্র, প্ল্যাকার্ড, চিৎকার? রবীন্দ্রনাথ জানার চেষ্টা করেছিলেন এবং জেনেও ছিলেন। কিন্তু তিনি তার উপলব্ধিতে স্থিতধী ছিলেন – আত্মিক শক্তির উচ্চতায় তিনি বিশ্বাসী ছিলেন – তিনি বারবার আধ্যাত্মিক সভ্যতা ও বিজ্ঞানের পথে পার্থিব উন্নতির সমন্বয় ঘটানোর পথেই মানুষের মুক্তির আদর্শবাদে নিমগ্ন ছিলেন। এই সীমাহীন দূরত্ব চীনের বিপ্লবী যুবশক্তির কাছে রবীন্দ্রনাথকে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ পরিচয়ে পর্যবসিত করেছিল। এ তো গেল আধ্যাত্মবাদ ও বস্তবাদে অটল বিশ্বাসের কারণে দুপক্ষের সংঘাতের জ্বলন্ত দিক। কিন্তু এটাও তো জানতে…

কী বেদনায় ব্যথিত ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন[...]

কী বেদনায় ব্যথিত ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, দ্বারকানাথ ঠাকুরের সমস্ত ব্যবসায়িক নথিপত্র কেন তিনি পুড়ে ফেলেছিলেন, এর আগে এরকম আরেকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দ্বারকানাথের পত্নী দিগম্বরী দেবী – তিনি দ্বারকানাথ ঠাকুর দ্বারা আয়োজিত সামাজিক বিবিধ ভোজসভায় মদ্যমাংসের প্রাচুর্য ও ঠাকুরের নিজের মদ্যমাংস গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় দ্বারকানাথের সাথে সাক্ষাৎসম্পর্ক ত্যাগ করেছিলেন – এরপর থেকে দ্বারকানাথ বৈঠকখানা বাড়িতেই থাকতেন এবং নিজ বাড়ির পরিবর্তে বেলগাছিয়ায় এক বাগানবাড়ি প্রতিষ্ঠা করে ভোজসভা নৃত্যগীত ইত্যাদির আয়োজন করতেন, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তো ধর্মচর্চায় লিপ্ত হয়ে বিষয়কর্ম থেকে দূরেই সরে গিয়েছিলেন, ঠাকুর পরিবারের যাবতীয় আর্থিক প্রতিপত্তির উৎস দ্বারকানাথ কী এমন করেছিলেন যে ঠাকুর পরিবার তাকে এভাবে ভুলতে চেয়েছে, এই যে ১৮৪২এ তিনি প্রথম বিলাতযাত্রা করেছিলেন এবং মহারাণি ভিক্টোরিয়ার অভ্যর্থনা ফ্রান্সের সম্রাট লুই ফিলিপের অভ্যর্থনা এডিনবরা মিউনিসিপ্যালটির মহানাগরিক উপাধি প্রাপ্তি এসবের পরে দেশে ফিরে এসে আবার ১৮৪৫এ বিলাত ফিরে গেলেন, কেন – দ্বারকানাথ ঠাকুরের স্ত্রীবিয়োগ হয়েছিল ১৮৩৯এ, স্ত্রীর মতো সন্তানেরাও তাকে দূরে ঠেলে দিয়েছিল – এসব বিষণ্ণ প্রশ্নের উত্তর আর কখনো পাওয়া সম্ভব নয় – অতলে হারিয়ে গেছেন দ্বারকানাথ ঠাকুর। সেউত্তরের হয়ত আমাদের আর প্রয়োজনও নেই, ঠাকুর পরিবারের এসব একান্ত পারিবারিক ব্যাপারগুলো জেনে আমাদের কী কাজ। কিন্তু দ্বারকানাথ ঠাকুরের যে বিরাট কীর্তি – প্রথম ভারতীয় ব্রিটিশ যৌথ মালিকানায় কারটেগোর (Carr-Tagore) কোম্পানির প্রতিষ্ঠা, সেকোম্পানির যাবতীয় নথিপত্র কেন পুড়ে ফিলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কীসে তার লেগেছিল, দ্বারকানাথ ঠাকুরের আয়ের বিরাট অংশ এসেছিল অহিফেন রপ্তানি ও অহিফেন পরিবহনের মাধ্যমে, চীনে যেত অহিফেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আনুকূল্যে, যেত চীনের সাধারণ মানুষকে অহিফেন বিষে জর্জরিত করে দিয়ে চীনকে সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় করে দিতে, সেপ্রমাণ লোপাট করে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। উচিত হয়নি, একবারেই উচিত হয়নি – ইতিহাসের এমন এক সূত্র ধ্বংস করে দেয়া উচিত হয়নি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। বিশ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় ও ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের অহিফেন ব্যবসা নিয়ে এক জার্মান লেখার ইংরেজি অনুবাদ থেকে লেখেন ‘চীনে মরণের ব্যবসায়’, লেখাটি জৈষ্ঠ ১২৮৮ (১৮৮২ সালে) ‘ভারতী’তে প্রকাশিত হয়েছিল। ভারতবর্ষীয় রাজস্বের অধিকাংশ এই অহিফেন বাণিজ্য হইতে উৎপন্ন হয়। কিন্তু অহিফেনের ন্যায় ক্ষতিবৃদ্ধিশীল বাণিজ্যের উপর ভারতবর্ষের রাজস্ব অত অধিক পরিমাণে নির্ভর করাকে সকলেই ভয়ের কারণ বলিয়া মনে করিতেছেন।…

হংকং-এ বেশ কিছুদিন কেটে গেল। কখনো ধীর লয়ে, আবার কখনো দ্রুত গতিতে। প্রায় দু সপ্তাহ। এর মধ্যে রুটিন ওয়ার্কের মধ্যে ছিল মাঝে মাঝে গ্যালারিতে গিয়ে বসা এবং দর্শনার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়া। [...]

বেইজিং-এর পথে হংকং-এ বেশ কিছুদিন কেটে গেল। কখনো ধীর লয়ে, আবার কখনো দ্রুত গতিতে। প্রায় দু সপ্তাহ। এর মধ্যে রুটিন ওয়ার্কের মধ্যে ছিল মাঝে মাঝে গ্যালারিতে গিয়ে বসা এবং দর্শনার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়া। এর মধ্যে মিশালের সাথে গিয়ে একটি অকশন পার্টিও দেখে এসেছি। আমাদের স্মৃতি বিজড়িত চুংকিং ম্যানশনে গিয়েছি একবার। অনেক পরিবর্তন চোখে পড়ল; কিছু সংস্কার করা হয়েছে। আগে দেখতাম অনেক বাঙালি ভাইয়েরা এদিক-সেদিক বসে থাকত, ভেসে আসত বাংলা কথা। এবার তাদের একজনকেও দেখলাম না। হংকং-এর ভিসা পাওয়া এখন অনেক কঠিন হয়ে গেছে, তাই অনেকেই এখন এমুখো হয় না। আমার সমসাময়িক কয়েকজন ছাত্র বেইজিং-এ পড়াশুনা শেষ করে হংকং-এ থিতু হয়েছে, তাদের সাথেও যোগাযোগ হলো। একদিন মিলিত হয়েছিলাম ডিনারে। আগে সংখ্যায় অনেক ছিল; অনেকেই চলে গেছে কানাডায়, এখন আছে মাত্র তিনজন। সাইফুল ভাই, ফরহাদ ভাই এবং পাশা। ফরহাদ ভাই স্থপতি, সাইফুল ভাই ব্যবসায়ী আর পাশা প্রোকৌশলী। সবাই ভালো করেছে। পাশা সপরিবারে চলে যাচ্ছে কানাডায়। পাশার ফেয়ারওয়েল ছিল, সেখানেই দেখা হলো পুরনো বন্ধুদের সাথে, প্রায় দেড়যুগ পরে। আমি যে আবার বেইজিং-এ ফিরে এসেছি এদের অনেকেই জানত না; সুতরাং দেখা হওয়াটা ছিল একটা সারপ্রাইজ। অনেক কথা হলো, বেইজিং-এর বিষয়ই ঘুরেফিরে আসছিল। তারুণ্য-ভরপুর সেই সময়গুলোতেই যেন বার বার ফিরে যাচ্ছিলাম। বেইজিং-এ আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে সেদিনের মতো বিদায় নিলাম। ইতিমধ্যে ট্রেনের টিকেট কেটে ফেলেছি। পরের দিনই ফিরে যাব বেইজিং-এ, যার জন্য একটু তাড়াও ছিল। মক ভাই কী যেন এক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন; সিসিসিডির কর্মীরা সবাই ব্যস্ত। তাই আমাকে বিদায় জানাতে পারবেন না বলে আগেই দেখাসাক্ষাৎ এবং বিদায়পর্ব সেরে নিয়েছি; তবে লক আর মকচাই আমাকে ট্রেন স্টেশনে পৌঁছে দেবে। যেদিন চলে আসব সেদিন সকাল সকাল মকচাই ও লক চলে এল। আমরা সকালে একসাথে নাস্তা সারলাম একটি রেস্তোরাঁয়। আবার ফিরে গেলাম রুমে। সেখানে আড্ডা এবং আমার গোছগাছ দুটোই সমান তালে চলছিল। মকচাই ও লক পরস্পরের পূর্বপরিচিত, লক মকচাইয়ের স্বামী ফু-এর বিশেষ বন্ধু ছিল। মকচাইয়ের সাথে লকের অনেকদিন পরে দেখা হলো। দেখতে দেখতে আমাদের স্টেশনে যাওয়ার সময় হয়ে গেল। বাসে যেতে হবে কিছু পথ। আমার ব্যাগ আর অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে বাসে উঠে পড়লাম, সাথে বন্ধু লক…

আমরা এশিয়ার উন্নয়নের অংশীদার হতে চাইলে, আমরা এশিয়ার পূর্ব পশ্চিমের সিংহদুয়ার হতে চাইলে, আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি গভীর সম্পর্কে জড়াতে হবে জাপানের সাথে।[...]

ভারত ও চীন সুপ্রাচীন সভ্যতা ও বর্তমানের দুই রাজনৈতিক অর্থনৈতিক শক্তি হলেও জাপান মানবাধিকার মানবিক অর্জন এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তির সূক্ষ্ম দক্ষতায় ওই দুই দেশের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। আমরা ভারত সভ্যতার মোগল ভারতের ও ভারত রাজের অংশ এবং বর্তমান ভারতের মধ্যবর্তী প্রতিবেশী আর চীন উত্তরে ও পূর্বে আমাদের এতই কাছে বাংলাদেশের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক রাষ্ট্রীয় অংশ পাকিস্তানের চেয়েও আজ নিকটবর্তী প্রতিবেশী। বাংলাদেশ শুধু ভারত চীনের মধ্যে এই বিশেষ ভূরাজনৈতিক অবস্থানেই আবদ্ধ নয়, সৌভাগ্যের কথা সামুদ্রিক পথে জাপানের সাথে বাংলাদেশের দূরত্ব প্রায় উত্তর চীনের সমান। এখন এই ‘পুবে তাকাও’ নীতির সবচেয়ে কৌশলগত প্রাসঙ্গিক ভৌগোলিক অবস্থান আমাদেরই – আরো ভাল করে বিচার করলে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের। এটা সুনিশ্চিত ‘পুবে তাকাও’ নীতির ভৌগোলিক সিংহদুয়ার হবে এই বাংলাভাষী অঞ্চল ( অনেকে ‘সেতু’ বলতে চান, না, – সেতু নয়, আমাদের ওপর দিয়ে নয়, আমদের ভেতর দিয়ে সবাইকে পূর্বে যেতে হবে)। ফলে এই অঞ্চলের জন্য প্রয়োজন হবে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। বর্তমান পৃথিবীতে অবকাঠামোর উন্নয়নে সবচেয়ে প্রাগ্রসর দেশ জাপান। আমরা এশিয়ার উন্নয়নের অংশীদার হতে চাইলে, আমরা এশিয়ার পূর্ব পশ্চিমের সিংহদুয়ার হতে চাইলে, আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি গভীর সম্পর্কে জড়াতে হবে জাপানের সাথে। আর জাপানের দিক থেকে এটা হবে এক সুবর্ণ সুযোগ, এই বিরাট অঞ্চলের অবকাঠামোয় বিনিয়োগ ও উঁচুমানের দক্ষতা ফেরি করে, তারা কাটিয়ে উঠতে পারবে তাদের দেশের ভয়ংকর মন্দার প্রভাব। তাই বাংলাদেশের বিদেশ নীতিতে জাপানের গুরুত্বকে শুধু রিকন্ডিশন গাড়ি বাণিজ্য ও অনুদানের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে একে আরো উন্নত ও বহুমুখী করে তোলাই হবে এ সরকারের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক বিনিয়োগ, অবশ্য সরকার যদি সে-লক্ষ্যে কাজ করতে চায় – না চাইলে বা না পারলে বর্তমানের এই ‘পুবে তাকাও’ নীতির সুযোগের কোনো সুফল না তুলেই শূন্য হাতে বসে থাকা ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের আর কিছুই করার থাকবে না – এবং বাংলাদেশ সরকারের এই ধরনের ব্যর্থতার ভাণ্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ বলেই, আজ আরো বেশি বাংলাদেশ সরকারের সাথে দক্ষ জাপানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতার সওয়াল করছি। ভারতের জন্য সংযোগ, চীনের জন্য গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ বরাদ্দ হলে জাপানের জন্য রয়ে গেল অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিক্ষায় জাপানের বিনিয়োগ ও দক্ষতার সবল অংশগ্রহণ। বাংলাদেশকে ‘পুবে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.