চোর নির্বাচন [...]

টুইট করতে করতে অনেক সময় এমন কিছু গুচ্ছ টুইট হয়ে যায় যেগুলোকে পোস্টের রূপ সহজে দেয়া যায়। সেকাজটাই এখানে করা হল। আগে এরকম প্রচুর টুইট কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। এখন থেকে ভাবছি, এরকম টুইটগুলোকে ‘টুইট থেকে পোস্টে’ সিরিজে সংগ্রহ করে রাখব। এই পোস্টে সংকলিত টুইটগুলো ক্রমান্বয়ে : এক, দুই, তিন। এখন শুধু একথা মুখ ফুটে বলার বাকি আছে, আমাদের চুরিতে জনগণের সমর্থন আছে -- কারণ জনগণের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়েছি। আর বিরোধীদের একথা মুখ ফুটে বলার বাকি আছে, ওরা আর কত চুরি করবে এবার আমাদেরকে চুরি করার সুযোগ দিন। আর ভোটারদের একথা মুখ ফুটে বলার আছে, আমরা চোর নির্বাচন করি। নির্বাচিত চোর হতে চাইলে আমাদের দুয়ারে আপনাদের আসতেই হবে।

corruption এর বাংলাটাই আমরা ভুল করেছি।[...]

টুইট করতে করতে অনেক সময় এমন কিছু গুচ্ছ টুইট হয়ে যায় যেগুলোকে পোস্টের রূপ সহজে দেয়া যায়। সেকাজটাই এখানে করা হল। আগে এরকম প্রচুর টুইট কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। এখন থেকে ভাবছি, এরকম টুইটগুলোকে ‘টুইট থেকে পোস্টে’ সিরিজে সংগ্রহ করে রাখব। এই পোস্টে সংকলিত টুইটগুলো ক্রমান্বয়ে : এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট। corruption এর বাংলাটাই আমরা ভুল করেছি। দুর্নীতি সুনীতির বিপরীত bad policy, good policyর বাংলা। bad policyর বিচার ও তদন্ত উন্নত বিশ্বেও হয় না,এটা হয়ত হবে পরবর্তী বিশ্বে। অথবা নাম বিভ্রাটে বাংলাদেশের 'দুনীতি দমন কমিশন' সেটা শুরু করার কথা ভাবতে পারে। ঘুষ, অর্থ আত্মসাৎ, টেন্ডারবাজি,অবৈধভাবে বড় বড় সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেয়া এগুলো অসততা, নির্বাহী দূষণ -- সংষ্কৃতে আরো যথার্থ শব্দ আছে, ভ্রষ্টাচার। হিন্দি ভাষায় সংস্কৃত এই শব্দটিই corruption বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। আমরা Anti-Corruption Commissionএর বাংলা করতে পারি 'অসততা দমন কমিশন'। অসৎ কর্মকর্তা, অসৎ ব্যবসায়ী খুব শুনি আমরা, কাজেই এতে কমিশনের অর্থ আরো পরিস্কার হবে। 'দুনীতি দমন কমিশন'কে আমরা রেখে দেব আমরা যখন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আরো বেশি খারাপ নীতি ভাল নীতি নিয়ে ক্রিটিক্যাল হব, ঢালাও নীতিনির্ধারণ করব না - তখন যখন সবকিছুর পরেও কেউ যদি দুর্নীতির (bad policy) প্রয়োগ করে বসবে তার বিচার করতে। এবং সেবিচার করা অনেক কঠিন কাজ হবে, কারণ দুর্নীতি অনুধাবন যেমন কঠিন দুর্নীতি অসততার চেয়ে অনেক ব্যাপকতা নিয়ে জনগণের ক্ষতি করে, সেক্ষতি নিরুপণ করা কঠিনতম কাজ হবে।

সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। [...]

১. সাংসদ হুইপদের খাদ্যবিলাস এবং জয়নুলের দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা অথবা ভ্যান গগের ‘দ্য পটেটো ইটার্স’। সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। সাম্প্রতিক বিশ্ব খাদ্য সংস্থার জরিপে দেখা গেছে : পৃথিবীতে একশো কোটি লোক অভুক্ত থাকে। কী পরিমাণ লোক ভালো-মন্দ খাবার খেয়ে থাকে তার একটা তালিকা তৈরি করা গেলে তাতে আমাদের মতো গরিব দেশের বড়লোকরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। এত পোলাও-মাংস হজম করার পরিণতি কী, তা আপনারা সবাই জানেন – শেষ গন্তব্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল। যেটা হুইপ সাহেবের ক্ষেত্রে ঘটেছে। সরকারি টাকায় প্রচুর ঘি-পোলাও খেয়ে হার্টের ব্লক, আবার তা সারানোর জন্য সরকারি অর্থেই মাউন্ট এলিজাবেথে ভর্তি। সত্যিকার প্রহসনই বটে। আমাদের দেশের গরীব মানুষের খাদ্যতালিকা কী? তাদের কপালে কি জোটে পোলাও-মাংস? গ্রামে বসবাসরত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তো নুন আনতে পান্তা ফুরায়। শুধুমাত্র কাঁচামরিচ আর লবণ দিয়ে থালার পর থালা ভাত হজম করতে হয় তাদের। মাছ-মাংসের কোনো বালাই নেই, তাই প্রোটিনের ঘাটতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে গরীবের পোলাও-মাংস খাওয়ার বিষয়টি একবার নিজের চোখে দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। কাওরান বাজারের পেছন দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বস্তির সামনে দেখেছিলাম, বিভিন্ন বিয়েবাড়ি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া উচ্ছিষ্ট পোলাও-মাংস রাস্তার পাশে ভাগ দিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। আর কেউ কেউ কিনে নিয়ে দিব্যি পরমানন্দে খাচ্ছে সেই খরখরে পচা খাবার! এত বৈষম্যপীড়িত দেশ পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা কে জানে। মাঝে-মাঝে বিদেশীরা আমাদের দেশের দারিদ্র্য নিয়ে আমাকে নানা প্রশ্ন করে; আমি তাদের বলি, আমাদের বড়লোকদের তো দেখোনি, দেখলে নিশ্চয় অবাক হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারাতে এক চক্কর ঘুরিয়ে আনলে তোমাদের বিশ্বাসই হতে চাইবে না বাংলাদেশের গরিবিয়ানা হাল। আমাদের মন্ত্রী মিনিস্টার সাংসদ আর আমলাদের যে ঠাট-বাট তা দেখে হয়তো মূর্ছা যাওয়ার দশা হবে তোমাদের। যে-ধরনের গাড়িতে তারা চড়ে, তা হয়তো জন্ম দেবে আরেকটি রেকর্ডের – পৃথিবীর…

‘ধান সাধারণত ৭০ দিন পানিতে ভিজাইয়া রাখা হয়।’ অনেক আগে এসএসসির এক পরীক্ষার্থী এই অবিশ্বাস্য ধানের রচনা লিখেছিল। কেবল এই রচনার অবিশ্বাস্যতার গুণে নয়, এসএসসি পরীক্ষার্থীর নির্বুদ্ধিচর্চার সংবাদ হিসেবে রচনাটি পরীক্ষক শিক্ষকের মারফতে প্রকাশ পেয়েছিল সংবাদপত্রে। এবার আরেকটি বাক্য শুনুন। ‘যুগে যুগে কিছু মহামানবের আবির্ভাব হয়। বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উদ্দিন তেমনি এক মহামানব, আব্রাহাম লিংকনের মতো একজন মহামানব। (আমাদের সময়, ১৮ বৈশাখ ১৪১৬/ ১ মে ২০০৯)।' এই অবিশ্বাস্য বাক্যটি বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের কণ্ঠ দিয়ে। তিনি অবশ্য এসএসসি পরীক্ষার্থী নন, ডক্টরেট ডিগ্রি পর্যন্ত অর্জন করেছেন। তাই তাঁর মুখনিঃসৃত এ বাক্যকে নিবুর্দ্ধিচর্চার উদাহরণ বলি কী করে? বরং বলা যেতে পারে, এটি তৈলমর্দনচর্চার একটি অন্যতম উদাহরণ। সেনাপ্রধান তখন তাঁর সামনেই বসেছিলেন, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভূমিকম্পকালীন অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য সংগৃহীত যন্ত্রপাতি হস্তান্তর উপলক্ষে চট্টগ্রামের আর্মি এম্বারসেশন ইউনিটে একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তারা। প্রশংসা করার এমন সুযোগ কি হাতছাড়া করা যায়? অতএব তিনি প্রশংসা করেছেন মুক্তস্বরে। তবে পত্রিকার পাতায় যে কথাটা ছাপা হতে পারে, তা বোধহয় তাঁর মাথায় ছিল না। তাই এখন পত্রিকায় তাঁকে প্রতিবাদপত্র পাঠাতে হচ্ছে, যাতে তিনি লিখছেন, ‘আমি এরকম কোনও কথা বলিনি’ (আমাদের সময়, ২০ বৈশাখ ১৪১৬)। রাজ্জাক সাহেবকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তাঁর এই কথার মধ্যে দিয়ে সবার জন্যে নতুন এক দুর্যোগই নিয়ে এসেছেন। দিনবদলের জন্যে যাদের বাংলাদেশের জনগণ নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে মাত্র চার মাস আগে ক্ষমতায় বসিয়েছে, তাদের কথার ওজন যদি এরকম হয়, তা হলে জনগণের জন্যে আরও বড় দুর্যোগ অপেক্ষা করছে। অনেকে অবশ্য এখনও আশাবাদী, তারা এখনও বলছেন, সরকার তো কেবল ১০০ দিন পার করলো, আরও একটু সময় ধৈর্য ধরতে হবে...। তা কথাটাকে মিথ্যা বলি কী করে? সত্যিই তো, মাত্র ১০০ দিন অথবা মাস চারেক আগে সরকার ক্ষমতায় এসেছেন; আর আমাদের এই রাষ্ট্রে কত যে ধুলাবালি জমেছে সেটা তো মাত্র একটা উদাহরণ থেকেই বোঝা যায়,- মাত্র ৩৮ বছরে দেশটির সংবিধানে এক ডজনের বেশি সংশোধনী এসেছে, গণতন্ত্র দিতে এতই তত্পর ছিলেন আমাদের বিভিন্ন সরকার! এইসব ‘গণতান্ত্রিক সংশোধনী’র সূত্র যে-ভার জমেছে তা সরানো…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.