সব মুছে গেলেও ইতিহাসের একটি খাতায় জাহাজটির নাম রয়ে গেছে। নামটি তুলে রেখেছিলেন চট্টগ্রামের ইতিহাস গবেষক আবদুল হক চৌধুরী তার ‘বন্দর শহর চট্টগ্রাম’ গ্রন্থে। সেও অনেক দিন আগের কথা। [...]

জাহাজটিকে এ শহরের সবাই ভুলে গেছে। ভুলে যাওয়াই স্বাভাবিক। সে তো আজকের কথা নয়। এরই মধ্যে পার হয়ে গেছে দুটো আস্ত শতাব্দী। কত ওলটপালট হয়ে গেছে পৃথিবীর সমাজ-ভূগোল-ইতিহাসে। চট্টগ্রামে নির্মিত এমন আরো কত শত জাহাজ সাগর-মহাসাগর দিয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে, তার হিসাব কেউ রাখেনি। এ জাহাজও তেমনি তলিয়ে গেছে স্মৃতির অতলে। এমনকি যারা জাহাজটি নির্মাণ করেছিলেন, সেই কারিগররাও বিস্মৃত। যে নির্জন বনভূমি বৃক্ষ দান করেছিল জাহাজটি নির্মাণের জন্য, সেটিও হয়তো এতদিনে রূপান্তর হয়েছে জনবহুল নগরে। সব মুছে গেলেও ইতিহাসের একটি খাতায় জাহাজটির নাম রয়ে গেছে। নামটি তুলে রেখেছিলেন চট্টগ্রামের ইতিহাস গবেষক আবদুল হক চৌধুরী তার ‘বন্দর শহর চট্টগ্রাম’ গ্রন্থে। সেও অনেক দিন আগের কথা। কয়েক দিন আগে ইতিহাস পাঠে নিমগ্ন এক পাঠকের চোখ আটকে গেল তার বইয়ের ৫২ পৃষ্ঠার একটি অংশে। প্রাচীন একটি জাহাজের নাম ও সামান্য দুটো তথ্য আছে সেখানে। তথ্যটি হলো, ১৮১৮ সালে জার্মান সরকার চট্টগ্রাম থেকে একটি জাহাজ নির্মাণ করিয়ে নিয়েছিল। জাহাজটির নাম ডয়েচলান্ড। জার্মানির কোনো এক জাদুঘরে এখনো জাহাজটি বর্তমান। এই ‘বর্তমান’ থাকার তথ্যটিই

পাঠকের দৃষ্টি কাড়ে। কোন বিশেষ গুরুত্বের কারণে জাহাজটি এতকাল সংরক্ষণ করা হয়েছিল? পাঠক জানে, জাহাজ নির্মাণে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য হাজার বছরের। কিন্তু সে জাহাজগুলো কেমন ছিল, ধরন-ধারণ কিছুই জানা নেই। এ শহরের কোথাও তার কোনো নিদর্শনও নেই। অন্য কোথাও আছে বলে শোনা যায়নি। কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে সবকিছুই। ইতিহাস পুস্তকের কিছু নীরস বিবরণ ছাড়া এর অস্তিত্ব কোথাও মেলে না। তাই এ জাহাজের বর্তমান থাকার খবরটি পাঠকের কৌতূহলকে উসকে দিল প্রবলভাবে। তথ্যটি যাচাই করা দরকার। সত্যি সত্যি যদি ওই জাহাজ জার্মানির কোনো জাদুঘরে থেকে থাকে, তাহলে এর হদিস বের করা অসম্ভব হবে না। কিন্তু কেবল একটা নামকে সম্বল করে কতদূর যাওয়া যাবে? কোন সে জাদুঘর, কোথায় তার ঠিকানা? জার্মানি তো ছোটখাটো কোনো দেশ নয়। এতদূর থেকে তার হদিস বের করা কতটুকু সম্ভব? তবু একটা জেদ চেপে যায়। অনুসন্ধান শুরু হয়। দিনের পর দিন অনুসন্ধান চালানোর পর একটু একটু আলোর আভাস দেখা দিতে থাকে এবং দুটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। প্রথম তথ্যটি হলো, জাহাজটির জন্ম হয়েছিল অন্য একটি নাম নিয়ে। সুতরাং সেই নাম…

গতকাল বিকেলে আমি এক অন্ধ পদক্ষেপ নিলাম, যেহেতু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, আমি সরাসরি nobelprize.org এ সার্চ দিয়ে বসলাম [...]

পুরনো বইপ্রস্থ বইপ্রস্থ ২৫ আগস্ট ২০০৯ বইপ্রস্থ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বইপ্রস্থ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ বইপ্রস্থ ২৬ জুন ২০১২ বইপ্রস্থ ২৩ এপ্রিল ২০১৩ বইপ্রস্থ ১৮ নভেম্বর ২০১৩ বইপ্রস্থ ১১ মে ২০১৪ বইপ্রস্থ ৫ নভেম্বর ২০১৫ বইপ্রস্থ ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ বইপ্রস্থ ১২ মার্চ ২০১৬ বইপ্রস্থ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ বইপ্রস্থ ৩০ মার্চ ২০১৭ রজনী রঞ্জন সেন সম্বন্ধে আরো জানতে চাই রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের সেই অনুবাদ পড়তে চাই GLIMPSES OF BENGAL LIFE ।। Being Short Stories from the Bengali of Rabindranath Tagore ।। By Rajani Ranjan Sen ।। Minto Press, Chittagong ।। G. A. Natesan & Co., Publishers, Madras ।। 1913 ।। The book is acquired by Nobelbibliotek, Swedish Academy, Sweden।। কয়েক মাস আগে worldcat.org এ ঝোঁকের বশেই 'rabindranath tagore, chittagong' লিখে সার্চ দিই, তার ফলে যেতালিকা এলো সেখানে Publisher: Chittagong : Minto Press, 1913 এবং Author: Rajani Ranjan Sen আর Print book : English এই তথ্যগুলো আমাকে প্রলুব্ধ করে, আমি তখন শুধু এটা বুঝতে পারছিলাম রবীন্দ্রনাথের কোনো লেখার সম্বন্ধে ইংরেজিতে হয়ত কিছু লিখে থাকবেন রজনী রঞ্জন সেন এবং তা ছাপা হয়েছে ১৯১৩ সালে চট্টগ্রামের মিন্টো প্রেস থেকে। পরে আমি গুগল সার্চে এদিক সেদিক খুঁজতে খুঁজতে রজনী রঞ্জন সেন চট্টগ্রাম কলেজের আইন বিভাগের শিক্ষক ছিলেন এবং তিনি রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের ইংরেজি অনুবাদ করেছেন জানতে পারি। আমি নিজে চট্টগ্রাম কলেজের ড্রপআউট, আমাদের সময় চট্টগ্রাম কলেজে কোনো আইন বিভাগ ছিল না এবং আমাদের আগে পরেও কোনো আইন বিভাগের কথা কখনো শুনিনি, চট্টগ্রাম কলেজের সাথে আমার বিভিন্ন পরিচয়ের সূত্রে আমি তখন জানতে চেষ্টা করি চট্টগ্রাম কলেজে ১৯১৩ সালে আইন বিভাগ ছিল কিনা, পুরোপুরি নিশ্চিত না হলেও মোটামুটি নিশ্চিত ভাবে আমি জানতে পারি চট্টগ্রাম কলেজে কখনো আইন বিভাগ ছিল না, কিন্তু আমি সন্তুষ্ট হতে পারি না, আমার মনে হচ্ছিল ১০০+ বছর আগে আইন শিক্ষার জনপ্রিয়তার যুগে চট্টগ্রাম কলেজের মতো কলেজে আইন বিভাগ থাকাটাই স্বাভাবিক। সুহৃদ নীড় সন্ধানীর সাথে আমি চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিষয়ে প্রায়ই আলাপ করে থাকি এবং এবিষয়ে আলাপের এক পর্যায়ে তিনিও চট্টগ্রাম কলেজে আইন বিভাগ নিয়ে সন্দেহ পোষণ করলেও এবিষয়ে খোঁজখবর নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, এই আলাপের কয়েক দিন পরেই…

অরুণদা-র কাছ থেকে আমরা পালিয়ে বেড়াতাম। দূর থেকে তাঁকে দেখলেই অন্য ফুটপাত ধরে হাঁটতাম উদাস ভঙ্গিতে। কখনও-বা মুখ নামিয়ে কেটে পড়ার তালে থাকতাম। পিছন থেকে হঠাৎ কানে আসত চিরচেনা অথচ পিলেচমকানো ডাক, ‘এই যে সন্দেশ, একটা কথা শোনো তো ভাই!’ [...]

অরুণদা-র কাছ থেকে আমরা পালিয়ে বেড়াতাম। দূর থেকে তাঁকে দেখলেই অন্য ফুটপাত ধরে হাঁটতাম উদাস ভঙ্গিতে। কখনও-বা মুখ নামিয়ে কেটে পড়ার তালে থাকতাম। পিছন থেকে হঠাৎ কানে আসত চিরচেনা অথচ পিলেচমকানো ডাক, ‘এই যে সন্দেশ, একটা কথা শোনো তো ভাই!’ অদ্ভুত সব নামে সম্বোধন করতেন আমাদের, এমনকী চা-দোকানের ছেলেটিকেও। মুখ-ভার-করা রিকশাওয়ালাকে ‘দেখি তো, তোমার জিহ্বাটা দেখি’ বলে সম্মোহিত করে দিতে পারতেন মুহূর্তেই। দারুণ গাইতে পারতেন, হাসতে পারতেন হো-হো করে। কিন্তু তাঁর এমন বাজখাঁই গলার গান আর হেসে ওঠাকে বড় বেখাপ্পা লাগত এই কর্মব্যস্ত শহরে, ভদ্রলোকের ভিড়ে। গান আর অট্টহাসি তো কেবল নাটকেই মানায়! বউ আর দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। ছেলেমেয়েদের কথা যখন বলতেন, তখন তিনি ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের রহমত। শুনে মনে হতো ওরা এখনও শিশুটি রয়ে গেছে। এক বৈশাখে মেয়েকে দেখতে গেছেন ছাত্রীনিবাসে। ফটকের কাছে বিশাল আমগাছ। অরুণদা দারোয়ানকে উল্টোদিকে ঘুরে দাঁড়াতে বললেন। দারোয়ান ভাবলেন বাপবেটির গোপন কথা আছে হয়তো। অরুণদা তখন মেয়েকে বললেন, ‘আচ্ছা মামণি, আমি যদি এই গাছ থেকে একটা আম চুরি করি, তাহলে দারোয়ান শাহেব কিছু মনে করবেন?’ মেয়ে মুখে হাত দিয়ে না কি বলেছিল, ‘খবরদার বাবা, আমার বান্ধবীদের সামনে অমন কথাবার্তা বোলো না। আমার মানসম্মান থাকবে না আর!’ আমাদের এই ‘মানসম্মান’ নিয়ে তিনি কৌতুক করতেন সবসময়। জোরাজুরি করতেন চা খাওয়ার জন্য, না খেতে চাইলে বলতেন, ‘চায়ের একটা মানসম্মান আছে না! না খেলে ও তো ভীষণ রাগ করবে!’ আরেক বৈশাখের খাঁ-খাঁ রোদ্দুরে তিনি আমার হাত ধরে নিয়ে চললেন অড়হরডালের খোঁজে, যেন পৃথিবীর কোথাও এই ডাল পাওয়া যায় না আর, তাই টেরিবাজার পেরিয়ে বখশিরহাট পেরিয়ে তিনি হাঁটতে লাগলেন দূরের কোনও এক ‘মুকুন্দরামের হাট’-এর দিকে। ধলঘাটের কথা, যৌথপরিবারের ভাইবোনকাকাপিসিদের মধুর সব স্মৃতিকথা শোনাতে ভালোবাসতেন। বাঙালিজাতির বদমাইশির কথা বলতে গিয়ে খেপে উঠতেন, তখন অবধারিতভাবে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ কথাটা এসে পড়ত তাঁর ক্ষুব্ধ কম্পমান ঠোঁটে। আবার এই তো সেদিন, আন্দরকিল্লার মোড়ে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলছিলেন বিদ্যাসাগর আর মধুসূদনের কথা। নীরদচন্দ্র চৌধুরীর অসামান্য স্মৃতিশক্তির প্রসঙ্গ তুলতেই দেখলাম কী এক শান্ত গোধূলির আলো ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর তাম্বুলরসাচ্ছন্ন মুখে। বলছিলেন, ‘বড় ভালো লাগছে তাঁদের কথা বলতে আর শুনতে।’ একদিন, খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, সত্যি-সত্যি…

আমরা চট্টগ্রাম শহরে এমন একটি স্থাপনা নির্মাণ করতে চাই যেখানে সংবৎসর সুচিন্তিত পরিকল্পনা মাফিক, পেশাদারিত্ব ও উচ্চমান বজায় রেখে নিয়মিত ভিত্তিতে নানাবিধ শৈল্পিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হবে। সেখানে বছরের প্রতিটি দিন কোনো-না-কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। শহরের শিল্পানুরাগী নাগরিকবৃন্দ এবং বেড়াতে বা কাজ করতে আসা পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়, দেশি, বিদেশি শিল্পীদের আনাগোনায় আর তাঁদের শৈল্পিক তৎপরতায় সেখানে বছরজুড়ে বিরাজ করবে এক আনন্দঘন শিল্পমুখর পরিবেশ।

চট্টগ্রাম শহরের সংস্কৃতিচর্চার ঐতিহ্য খুব প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। তবে একটা কথা স্বীকার করতেই হবে যে এর মধ্যে যথাযথ পরিকল্পনা, পেশাদারিত্ব, ধারাবাহিকতা, সর্বোপরি মান-নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি কখনো। পাশাপাশি এটাও প্রবলভাবে সত্য যে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার চর্চার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের একত্রে মিলবার, ভাব বিনিময় করবার, সাদা বাংলায় স্রেফ ‌‘আড্ডা’ দেবার অনুকূল কোনো স্বাস্থ্যকর, রুচিশীল পরিসরও এই শহরে গড়ে ওঠেনি তেমন। বিচ্ছিন্নভাবে কেউ শিল্পকলা একাডেমির মাঠে, কেউ চেরাগির মোড়ে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে, কেউ বিশদ বাঙলা-য় কেউ-বা বাতিঘরে  যার যার মত গল্পগাছা করে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান। কিন্তু এভাবে তো আর সৃজনশীল মানুষদের পরস্পরের কাছাকাছি আসা, চেনা-জানা, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও গঠনমূলক আলাপ-সংলাপের খুব দরকারি সংস্কৃতিটি গড়ে উঠতে পারে না। ফলে বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমের চর্চাকারী ও তার ভোক্তাদের মধ্যে দূরত্ব ও বিচ্ছিন্নতা ক্রমে আরো পরিব্যাপ্ত হয়, আর তার ফাঁক গলে অনুপ্রবেশ করে অহংকার ও অজ্ঞানতা, নিরাশা ও নির্বেদ, হতাশা ও হীনমন্যতার মত নেতিবাচক  বিষয়গুলো যাতে প্রকারান্তরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিল্প ও শিল্পী। তার প্রভাব পড়ে আমাদের বৃহত্তর সমাজে ও সংস্কৃতিতে। আমরা এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এই শহরে এমন একটি স্থাপনা নির্মাণ করতে চাই যেখানে সংবৎসর সুচিন্তিত পরিকল্পনা মাফিক, পেশাদারিত্ব ও উচ্চমান বজায় রেখে নিয়মিত ভিত্তিতে নানাবিধ শৈল্পিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হবে। সেখানে বছরের প্রতিটি দিন কোনো-না-কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের — হোক সেটা কোনো চিত্র, আলোকচিত্র কিংবা চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নয়তো কোনো গানের আসর কী নৃত্যানুষ্ঠান, শ্রুতিনাটক কী মূকাভিনয়, সাহিত্যপাঠ কী শিল্প-বক্তৃতা — আয়োজন থাকবে। শহরের শিল্পানুরাগী নাগরিকবৃন্দ এবং বেড়াতে বা কাজ করতে আসা পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়, দেশি, বিদেশি শিল্পীদের আনাগোনায় আর তাঁদের শৈল্পিক তৎপরতায় সেখানে বছরজুড়ে বিরাজ করবে এক আনন্দঘন শিল্পমুখর পরিবেশ। পাশাপাশি দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে সন্ধ্যায় সেখানে শিল্পী ও শিল্পরসিকেরা আসবেন শিল্পের সান্নিধ্যে দু’দণ্ড জিরিয়ে নিতে, অন্তরঙ্গ চা-খানায় বসে বন্ধুসান্নিধ্যে গলা ভিজিয়ে নিতে হরেক রকম দেশীয় শরবতে। তাঁরা প্রাণভরা আড্ডায় মেতে উঠবেন শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, রাজনীতি, প্রেম, পরিণয় ইত্যাকার জগতের তাবৎ বিষয়ে। এরই মাঝে এক ফাঁকে  লাগোয়া বইঘর থেকে তারা সংগ্রহ করে নিতে পারবেন সম্প্রতি প্রকাশিত কোনো আলোচিত গ্রন্থ, দুষ্প্রাপ্য সংগীত কিংবা ভুবনবিখ্যাত কোনো চলচ্চিত্র। শৌখিন কলারসিকেরাও পারবেন কেন্দ্রের নিজস্ব উপহার-বিপণি থেকে খুব সহজেই…

এবং এটাকে এরকম কোনোভাবেই ভাববেন না জামাতকে আড়াল করার জন্য এসব বলা হচ্ছে, আমার মতে বাংলাদেশে জামাত ইসুটা নিয়ে একটাই কথা হবে একাত্তরের আন্তর্জাতিক অপরাধের কারণে দলটি নিষিদ্ধ হতেই হবে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য যখন হবে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা তখন শুধু এটুকুতেই কাজ হবে না। ইসলামি মাওবাদকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। [...]

বিএনপির চেয়ারম্যান ইসলামি মাওবাদের চেয়ারম্যান। [ বাংলাদেশকে কোনোভাবেই ‘ইসলামি’ তকমায় দ্বীন = রাষ্ট্র করে তোলা যাবে না। ইসলামি মাওবাদের সেটাই লক্ষ্য। ] আমার খুব মনে হয় যারা ‘জামাত ছাড়া বিএনপি’কে সমাধান ভাবছেন তারা ভুল করছেন, জামাত ছাড়া বিএনপির জন্য অসম্ভব আমি এদিক থেকে কথাটা বলছি না, আমি বলছি এদিক থেকে যে সেই অসম্ভবকে বিএনপি সম্ভব করেই ফেলল তা ধরে নিয়েই, আমি এটাও ধরে নিচ্ছি শুধু নিবন্ধন বাতিল নয় জামাতের রাজনীতিই নিষিদ্ধ করে দেয়া হল, কিন্তু বিএনপি ইসলামি মাওবাদের পৃষ্টপোষকতা ছাড়ল না, তাহলে তো সন্ত্রাসবাদ গেল না, বরং ইসলামি মাওবাদ বিএনপির নেটওয়ার্ক ধরে তলে তলে বিকট ব্যাপ্তিতে ছড়িয়ে গেল, কাজেই সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে গেলে যা এখনি করতে হবে — বিএনপির চেয়ারম্যানকে ইসলামি মাওবাদের চেয়ারম্যান হতে কোনোভাবেই আর দেয়া যাবে না, বালুর ট্রাক জলকামান তুলে জাল দিয়ে চেয়ারম্যানকেই মাছের মতো তুলে নিতে হবে। এবং এটাকে এরকম কোনোভাবেই ভাববেন না জামাতকে আড়াল করার জন্য এসব বলা হচ্ছে, আমার মতে বাংলাদেশে জামাত ইসুটা নিয়ে একটাই কথা হবে একাত্তরের আন্তর্জাতিক অপরাধের কারণে দলটি নিষিদ্ধ হতেই হবে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য যখন হবে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা তখন শুধু এটুকুতেই কাজ হবে না। ইসলামি মাওবাদকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। এবং সেকাজ করার সময় হাতে আছে তিন বছর, ২০১৬এর শেষে বর্তমান প্রক্ষেপ অনুযায়ী হিলারি ক্লিনটন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেই একাজ সম্পন্ন করতেই হবে। হিলারি ক্লিনটন হবেন আমেরিকার রকস্টার প্রেসিডেন্ট, এবং তিনি অনেক সিদ্ধান্তগ্রহণ তুড়ির দ্রুততায় নিজের দিকে আনার দক্ষতা দেখাবেন উন্মাদের মতো, তারপাশে আরো দুটো প্রক্ষেপ ভেবে নিন — একজন মমতা ও আরেকজন সুকি, একজন ২৫ ভাগ মুসলিম ভোটের জন্য আল্লামামুফতিইমামদের কব্জায় পুরোপুরি তখন হবেন পর্যবসিত আরেকজন রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে হবেন চূড়ান্ত নাস্তানাবুদ, এদুজনকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে নিজের মন্ত্রে চালিত করতে চাইবেন হিলারি — একবার ভাবুন তখনও যদি একই দুর্বলতা থেকে যায় আমাদের সাতক্ষীরা রামুতে, বুঝতে পারছেন কত দাপটে তখন খেলবেন হিলারি? কাজেই প্রাণপ্রিয় দেশের জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করুন — বিএনপির হাতের মোয়া ইসলামি মাওবাদ এখনই বিনষ্ট করুন — আর দেরি না করে সংকল্পবদ্ধ হয়ে হিলারি আসিবার পূর্বে সন্ত্রাসবাদ মারিয়া ফেলুন।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.