যে মা’কে আমাদের নৃতত্ত্ববিদরা আর ক’দিনের মধ্যেই খুঁজে ফিরবেন শামসুর রাহমানের কবিতায় (কেননা তা বাদে এই মায়ের প্রতিকৃতি আর কোথাও রইবে না ‘উন্নয়ন আর ক্ষমতায়নের’ বাঁধভাঙা জোয়ারে), সেই মায়ের প্রচ্ছায়া কোনও কোনও গাঢ়তর দুর্বল মুহূর্তে আমাকে অশ্রুবিদ্ধ করে। জেন্ডার সমতার ইচ্ছাকৃত জটিল সমীকরণ নিয়ে বসলে শামসুর রাহমানের আঁকা এই মায়ের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে, কেউ তো অবশ্যই বলতে পারেন পুরুষতন্ত্রের পিছুটান আর মাদকতা মেশানো উল্লাস রয়েছে তাতে। কিন্তু মানুষকে লুপ্ত নাশপাতির ঘ্রাণ বরাবরই মুগ্ধ করে, রক্তিম গেলাসে তরমুজ মদের সৌগন্ধে যত সামন্ত্রতান্ত্রিকতার প্রচ্ছায়াই গবেষকরা দেখুন না কেন, শেষ পর্যন্ত নগ্ন নির্জন হাতের স্পর্শই মানুষকে গুড়িয়ে দেয় ভেতর থেকে। (more…)
এটিও অনেক পুরানো লেখা, যখন ছাত্র আমি- সেই ফাল্গুন ১৩৯৬-এ, ফেব্রুয়ারি ১৯৯০-এ, আর ছাপা হয়েছিল বৈশম্পায়ন নামের এক ছোট কাগজের প্রথম সংখ্যায় মার্চ ১৯৯০-এ। কিন্তু এখনও এটি আমার একটি প্রিয় লেখা, এখন এর অনেক দুর্বলতা বুঝতে পারার পরেও... হয়তো তার একটি অন্যতম কারণ, আমার বন্ধুদের এ লেখাটা খুব ভালো লেগেছিল আর মাহমুদুল হকেরও ভাল লেগেছিল। এরও বছর চারেক পরে মাহমুদুল হকের সঙ্গে পরিচয় হয় আমার, খোলা রাজপথে, নির্মুল কমিটির এক কর্মসূচি চলার সময় . . . অন্যান্যদের মতো, আরও স্পষ্ট করে বললে, মাহমুদুল হক কারও মতোই ‘কিছু একটা তো করছি’ ভেবে আত্মহারা হন নি। হাসান আজিজুল হকও ‘অবশেষে তাঁর ক্ষমতার বেদী থেকে সরে দাঁড়াবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন’ দেখে ১৯৭৫-এ অসীম সাহা রীতিমতো আতংকিত হয়েছিলেন (এদেশের গল্প : পূর্ণতা অপূর্ণতা/ অসীম সাহা; কণ্ঠস্বর, ঢাকা, সেপ্টেম্বর ১৯৭৫) এবং পাঠকরুচির মৃত্যু না ঘটলে অনায়াসেই অনুমান করা যায় যে গত ১৯৮৯-এ ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ পড়ে নিঃসন্দেহে অসীম সাহা অপঘাতে মারা গেছেন। প্রসঙ্গটি উত্থাপন অপরিহার্য এ কারণে যে লেখার ক্ষমতা অবশিষ্ট নেই এটি উচ্চকিত করে জানানোর জন্যে সমর সেনের পন্থা কোনও সাহিত্যিকই পছন্দ করেন নি। বরং পূর্বনির্মিত ইমেজকে পুঁজি করে তারা অভ্যাসবশে লিখে গেছেন এবং এখনও লিখছেন; আর পাঠকও এমন রুচিহীন, অনুসন্ধিৎসুহীন যে ‘রাজা, তোর কাপড় কোথায়’ বলার কৌতূহলও নেই। সে তুলনায়, মাহমুদুল হক অনেক সাহসী, সমর সেনের কাছাকাছি, অনেকদিন হলো নীরব তিনি। কেন নীরব এই প্রশ্নের উত্তরে সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘বাল্যশিক্ষা পড়ছি...’। তাঁর লেখার সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে প্রাইমারি স্কুলে। আমাদের বাড়িতে ছিল অনেক পুরানো পত্রপত্রিকা। বোধহয় ইঁচড়ে পাকা হবো এই ভয়েই আমাদের মেজো ভাই ঝুলকালি, ধুলোবালি ঝেড়েমুছে তা থেকে খুঁজে খুঁজে নির্দিষ্ট কিছু পত্রপত্রিকা বের করে দেন। উত্তরাধিকার সূত্রে আমাদের বড়ভাই আর বড়বুবুর গ্রাহকসংগ্রহ ‘শাহীন’ আর ‘সেতারা’ ওভাবেই আমাদের কাছে আসে। সবার কথা মনে নেই,- তবে মাহমুদুল হক, আল মাহমুদ এবং শহীদ সাবের যে ওতে বেশ ক’টি উল্লেখযোগ্য ও দাগ কাটার মতো গল্প লিখেছিলেন, তা ভালভাবেই মনে আছে। এর মধ্যে শহীদ সাবের নিহত হয়েছেন একাত্তরে পাকবাহিনীর হাতে, তবে শিশুকিশোরদের জন্যে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। আল মাহমুদ বুদ্ধিজীবীসুলভ ইতরামি থেকে লেখা কলামগুলো বাদ দিলে পুরোপুরি কাব্যচর্চায় নিয়োজিত হয়েছেন…
শ্রদ্ধেয় দ্বিজেন শর্মাকে নিয়ে এ লেখাটি লিখেছিলাম অনেক আগে, ১৯৯৮ সালে। কয়েকদিন হলো তাঁকে খুব মনে পড়ছে... আপনাদেরও মনে পড়ুক, এই প্রত্যাশায় লেখাটা তুলে দিচ্ছি। (more…)
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়।আমাদের সরকারের পুরানো এক উপদেষ্টা গীতিআরা সাফিয়া চৌধুরী পাটশিল্প নিয়ে "জেহাদ" করেছিলেন। হ্যাঁ, ঠিক এই কথাগুলিই বলেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, জুট নিয়ে তিনি জেহাদ শুরু করেছেন।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। আমাদের সরকারের পুরানো এক উপদেষ্টা গীতিআরা সাফিয়া চৌধুরী পাটশিল্প নিয়ে "জেহাদ" করেছিলেন। হ্যাঁ, ঠিক এই কথাগুলিই বলেছিলেন তিনি। (more…)
কৈশোরে মাচ্চু পিচ্চু শিহরিত করে আমাদের। এক অচেনা, দুর্ভেদ্য, গা ছমছম করা অরণ্যের গাছগাছালি, লতাপাতাকাটা আর হিংস্র কিংবা অহিংস্র ভীতিজাগানিয়া সব প্রাণীদের মধ্যে দিয়ে পায়ে চলার পথ বানাতে শেখায়। আর তারুণ্যে প্রেরণা দেয় যুদ্ধে যাওয়ার, শীতল নল মেলে ধরা শোষকশাসকের রক্তনেশা জাগা চোখের দিকে অনত চোখে তাকিয়ে থাকার। (more…)
