সাম্প্রতিক ঘটনাবলির আলোকে আইসিএসএফ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে, কিছু মৌলবাদী প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সাধনের উদ্দেশ্যে, এবং সামাজিক সম্প্রীতিপূর্ণ বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে সোচ্চার ও তৎপর। ‘হেফাজতে ইসলাম’ নামের আড়ালে জামায়াত ইসলামী সহ এই দুষ্টচক্র সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের মহান স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ও নারী জাগরণের উন্মেষ রোধে কাজ করে যাচ্ছে। [...]

সাম্প্রতিক ঘটনাবলির আলোকে আইসিএসএফ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে, কিছু মৌলবাদী প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সাধনের উদ্দেশ্যে, এবং সামাজিক সম্প্রীতিপূর্ণ বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে সোচ্চার ও তৎপর। ‘হেফাজতে ইসলাম’ নামের আড়ালে জামায়াত ইসলামী সহ এই দুষ্টচক্র সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের মহান স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ও নারী জাগরণের উন্মেষ রোধে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আরো লক্ষ করছি যে, সরকার এসব ধর্মীয় চরমপন্থী গোষ্ঠীকে সঠিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। আমরা হেজাফতে ইসলাম সহ এই জাতীয় দলগুলোর তথাকথিত লংমার্চ এবং হরতাল কর্মসূচির নামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রতিথযশা নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও শাহবাগ গণজাগরণমঞ্চে অবস্থানরত তরুণদের উপর সুপরিকল্পিত হামলা ও আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এটি মুক্তবুদ্ধি, মুক্তচিন্তা এবং স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে নগ্ন আক্রমণ। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের একটি ক্রান্তিকালীন সময়ে যখন আপামর জনসাধারণ ১৯৭১-এ সংঘটিত যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার বিচারের জন্য ঐক্যবদ্ধ, সেই সময়ে একটি চিহ্নিত মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদতে এ-ধরনের হিংসাত্মক আক্রমণ আমাদের আরো ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত করবে। আমরা জানি, এদেশের প্রগতিশীল আন্দোলনে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে জনাব শাহরিয়ার কবির এবং অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের মতো ব্যক্তিবর্গের ভূমিকা অনন্যসাধারণ। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশরত অবস্থায় ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের উপর এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমাবেশের উপর হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের আক্রমণ প্রমাণ করে যে উগ্র মৌলবাদী শক্তির কাছ থেকে আমরা কেউই নিরাপদ নই। এই আক্রমণ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর উপর বলেই আইসিএসএফ মনে করে। দ্বিতীয়ত, পেশাগত দায়িত্বে নিয়োজিত নারী সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ আমাদের উদার, প্রগতিশীল, এবং গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে এ-ধরনের মধ্যযুগীয় নৃশংসতা অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়। সাহসী সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন সহ সকল সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা বাংলাদেশে মুক্তভাবে তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, আইসিএসএফ এই প্রত্যাশা করে। এই ঘৃণ্য আক্রমণ চলতে দেওয়া নারীমুক্তি ও একটি সুষম সমাজের বিকাশে অন্তরায়। বাংলাদেশের নারীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী চক্র এ-দেশকে একটি পশ্চাৎমুখী সমাজব্যবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আশা করব আগামী দিনগুলিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পুরুষ ও নারীর সমঅধিকারের ভিত্তিতে একটি সুষম সমাজের বিনির্মাণে বাধা প্রদানকারী কুচক্রীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা হবে। সেইসঙ্গে আমরা ঘটনার সময়ে…

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ)-এর পক্ষ থেকে আমরা গভীর দুঃখ এবং ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, একাত্তরের স্বাধীনতা-বিরোধী জামাত-শিবির চক্রটি যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে বানচাল করার একটি ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা অপরাধমূলকভাবে লঙ্ঘন করে কিছু ব্যক্তিগত কথপোকথন এবং ইমেইল হ্যাকিং করে এবং তা বিভিন্নভাবে বিকৃত করে দেশী বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে ছড়াতে শুরু করেছে। [...]

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ)-এর পক্ষ থেকে আমরা গভীর দুঃখ এবং ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, একাত্তরের স্বাধীনতা-বিরোধী জামাত-শিবির চক্রটি যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে বানচাল করার একটি ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা অপরাধমূলকভাবে লঙ্ঘন করে কিছু ব্যক্তিগত কথপোকথন এবং ইমেইল হ্যাকিং করে এবং তা বিভিন্নভাবে বিকৃত করে দেশী বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে ছড়াতে শুরু করেছে। নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে এবং বিচার প্রক্রিয়াকে স্থায়ী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে চিহ্নিত এই চক্রটি নানান রকম বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা খুবই উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে এই বিভ্রান্তি প্রগতিশীল সংগঠনগুলির ভেতরেও ধীরে ধীরে তারা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছে। পারষ্পরিক অবিশ্বাস এবং ভিত্তিহীন কাদা ছোঁড়াছুড়ির এই পরিবেশের সম্ভাব্য ফলাফল হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি - অবশ্যম্ভাবীভাবে এই ঘটনার মূল সুবিধাভোগী (beneficiary) এবং আসল অপরাধীর (অর্থাৎ স্বাধীনতাবিরোধী জামাত শিবির চক্রের) ওপর থেকে সবার মনযোগ সরে যাচ্ছে, যা তাদের এই গুরু অপরাধের দায়ভার থেকে পার পেয়ে যাওয়ার পথ উম্মোচিত করছে; হ্যাকিং ঘটনার প্রকৃত তদন্ত তার সঠিক দিকনির্দেশনা হারানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে; স্বাধীনতার পক্ষের সক্রিয় সংগঠনগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ এবং অবিশ্বাসের বীজ বপনের মাধ্যমে স্থায়ী বিভেদ সৃষ্টির পরিবেশ তৈরী হচ্ছে যা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বৃহত্তর আন্দোলনেরই ক্ষতি করতে পারে। ১৯৭১ এ সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহের বিচারের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতির নিরসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত স্বাধীন বিশেষজ্ঞ, কর্মী এবং সংগঠনসমূহের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (ICSF)। বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণ, অনুশীলন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেই এই নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠা। এই সব উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসমূহকে দালিলিক, আর্কাইভ এবং গবেষণা সহায়তা প্রদান করা ছাড়াও ট্রাইবুনালের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং দফতরসমূহের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, মতামত এবং পরামর্শ বিনিময়, এবং ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ এই নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের অংশ। শুরু থেকেই এদেশের বিচারপ্রার্থী জনগনসহ আরো যে সংগঠনগুলো ট্রাইবুনালের এই বিচার প্রক্রিয়াকে তিল তিল করে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য সহায়তা এবং সমর্থন দিয়ে এসেছেন তাদের মধ্যে আইসিএসএফ অন্যতম। এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের সময় থেকেই আইসিএসএফ বিচার প্রক্রিয়াকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছে। এ কারণে আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে কিছু বিষয় তুলে…

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-এ চলমান বিচার সম্পর্কে নিজেদেরকে সর্বাবস্থায় ওয়াকিবহাল রাখতে চাইলে এই ওয়ার্কশপগুলোর কোন বিকল্প নেই। [...]

আইসিএসএফ : পাক্ষিক অনলাইন কর্মশালা সিরিজ (২য় পর্ব)!! [স্কাইপ : ৩ নভেম্বর ২০১২, বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা থেকে] এই পর্বের নির্ধারিত আলোচ্যসূচী: ট্রাইবুনালের সাক্ষী সংক্রান্ত বিষয়গুলো, যেমন: — সাক্ষীদের নিরাপত্তা বিধান — সাক্ষীদের মান — সাক্ষীদের ভয়ভীতি, লোভ এবং হয়রানীর ঘটনাসমূহ — অত্যধিক সংখ্যক সাক্ষী পেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলো — বিদেশী বিশেষজ্ঞ সাক্ষী: আইনে তার সুযোগ আসলে ঠিক কতটুকু? (গোলাম আযম মামলার দু'জন বিদেশী বিশেষজ্ঞ সাক্ষী প্রসঙ্গে বিভ্রান্তিসমূহ) — সাঈদী মামলার সেই ১৫ জনের সাক্ষ্য — বিভিন্ন মামলাগুলোর বর্তমান অবস্থা এবং বিচারের গতি — সাম্প্রতিকতম বিভ্রান্তি এবং অপ-প্রচারমূলক তৎপরতাসমূহ — অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্ন এবং মতামতের মাধ্যমে অন্যান্য আরও যে কোনো বিষয় যুক্ত হতে পারে কিভাবে ওয়ার্কশপে নিবন্ধন করবেন? সদস্য এবং অ-সদস্য নির্বিশেষে উভয়ের জন্যই অনলাইন ও ডাউনলোডযোগ্য (গুগল ডক কোনো কারণে কাজ না করলে) নিবন্ধন ফর্মগুলোর লিংক দেয়া হলো: ১) মেম্বারদের জন্য অনলাইন ফর্মের লিংক: https://docs.google.com/spreadsheet/viewform?formkey=dHBvVW56d3pyMWFOYm9RUTNEWi1YUnc6MQ ২) নন-মেম্বারদের জন্য অনলাইন ফর্মের লিংক: https://docs.google.com/spreadsheet/viewform?formkey=dHhWV2hiRkRLUUVPM2Y1TGFpQktDQlE6MQ ৩) মেম্বারদের জন্য ডাউনলোডেবল ফর্মের লিংক: http://www.mediafire.com/?axcz8hg78n6f86l ৪) নন-মেম্বারদের জন্য ডাউনলোডেবল ফর্মের লিংক: http://www.mediafire.com/?3552uf39945afab [যারা অনলাইনে ফরম পূরণের পরিবর্তে ডাউনলোডকৃত ফর্ম পূরণ করছেন, তাদের প্রতি অনুরোধ থাকলো - পূরণকৃত ফর্ম <icsf-recruitment@googlegroups.com> ঠিকানায় ইমেইল করবার] ফর্মটি পুরণ করে ওয়ার্কশপে স্থান নিশ্চিত করার শেষ সময় আগামী ৪৮ ঘন্টা। অর্থাৎ, আগামী ২৯ অক্টোবরের মধ্যেই পূরণ করা ফর্মটি পাঠাতে হবে। সুতরাং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগ্রহীদের প্রতি লিঙ্ক থেকে ফর্মটি পূরণ করে সাবমিট করবার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ওয়ার্কশপগুলোর রূপরেখা: প্রতি দু'সপ্তাহ একবার। ওয়ার্কশপগুলো হবে স্কাইপে, যেখানে অংশগ্রহণ করতে হলে নিচের অনলাইন ফর্ম পূরণের মাধ্যমে নিবন্ধন করে নিজ নিজ স্থান আগে থেকে নিশ্চিত করতে হবে। কি বিষয়ে আলোচনা হওয়া দরকার বা হতে পারে, তা ফর্ম পূরণের সময় অংশগ্রহণে আগ্রহীরাও সুপারিশ করতে পারবেন। উল্লেখ্য যে, ICSF তার সদস্যবৃন্দের বাইরেও এই কর্মশালাগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য অ-সদস্যগণকেও আহ্বান জানাচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের সুযোগ মূলত সর্বনিম্ন ৫ জন থেকে অনূর্ধ ২০ জনের মধ্যে সীমিত রাখা হচ্ছে। তবে, পূরণকৃত ফর্মগুলোর তথ্যাদি বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই কেবল প্রতি ওয়ার্কশপের ডেলিগেট লিস্ট প্রস্তুত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় পূর্ব-প্রস্তুতিমূলক কাগজপত্র সরবরাহ করা হবে। ফর্মপূরণ ব্যতীত কেউ কোনোভাবেই ওয়ার্কশপে অংশ নিতে পারবেন না। আইসিএসএফ এর সদস্যরা যরা…

আজকে বাংলাদেশের মাটিতে ১৯৭১ এর চিহ্নিত অপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে অবধি একে আমরা গাল ভরে বলি "দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ", বলি "অসমাপ্ত কাজ"। যদি তাই সত্য হয়ে থাকে তাহলে ৪১ বছর আগেকার মতো এখনও আজাদ-রুমিরা আবারও নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসবে চারপাশের নিম্ন-মাঝারী বৃত্তগুলো ভেঙ্গে। বিশ্বাস করতে চাই, বিশ্বাস রাখতে চাই [..]

নিচের এই দৃশ্যগুলো অসম্ভব এবং অলীক ছিলো বলেই আমাদের আজকে একটা দেশ আছে। অনেক কমতি, অনেক ঘাটতি, অনেক সীমাবদ্ধতা - তারপরও তো একটা দেশ, আমাদের দেশ! অথচ আমরা জানি - বহু তালেবর মানুষের পক্ষেই সময়ের সেই সন্ধিক্ষণে - বিদেশী বৃত্তির মোহ, উঁচু পদে চাকরীর অভ্যাস, ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষ, গোলামীর মোহ, পরিবারের সদস্যদের চোখের জলের হাতছানি অনুযোগ উপেক্ষা করা সম্ভব হয়নি সেদিন। এর বিপরীতে নিচের এই মানুষগুলো, এবং তাদেরই মতো আরও লক্ষ লক্ষ মানুষ সেদিন প্রচলিত বৃত্তের গন্ডি থেকে বেরিয়ে না আসলে কি হতে পারতো, এবার আসুন একটু কল্পনা করার চেষ্টা করি: দৃশ্য এক: ---------- সকাল বেলা বঙ্গবন্ধু সু্যুট প্যান্ট জুতা পরে রেডি, বেগম মুজিব উনার টাই বেঁধে দিচ্ছেন। ভাবছেন - ছেলেমেয়েগুলো বড় হয়ে যাচ্ছে, ওদের ভাল জায়গায় পড়াশোনা, ভাল জায়গায় বিয়ে-শাদী দিতে হলে, আরেকটু ভালো স্ট্যাটাস নিয়ে থাকতে হলে - আয় রোজগারটা আরেকটু না বাড়ালেই চলছে না! বারবার নার্ভাস হয়ে ঘড়ি দেখছেন বঙ্গবন্ধু, বড় সাহেবের সাথে মিটিংটা না দেরী হয়ে যায়, ক্যারিয়ারের জন্য আজকের মিটিংটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দৃশ্য দুই: --------- তাজউদ্দিন আহমেদ মাল্টি ন্যাশনাল কোনো কোম্পানীর একজিকিউটিভ - রিভলভিং চেয়ারে বসে পুত্র কন্যাদের ভবিষ্যত নির্বিঘ্ন করার কাজে রাত দিন খাটছেন। দৃশ্য তিন: --------- আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ পাকা। বিমান বন্দরে ব্যাগ নিয়ে অপেক্ষা করছে রুমি, একটু পরেই ফ্লাইট, বিদায় জানাতে এসেছেন জাহানারা ইমাম, বলছেন - "বাবা তুই ঠিকই সিদ্ধান্ত নিয়েছিস, বাকিরা মরুক, তুই লেখাপড়া কর আর ক্যারিয়ার গোছা, সেটাই দরকারী!" সেদিন সঠিক পথ আসলে কি ছিল সেটা বুঝতে আজ আমাদের কোনো সমস্যা হয় না। আজকে বাংলাদেশের মাটিতে ১৯৭১ এর চিহ্নিত অপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে অবধি একে আমরা গাল ভরে বলি "দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ", বলি "অসমাপ্ত কাজ"। যদি তাই সত্য হয়ে থাকে তাহলে ৪১ বছর আগেকার মতো এখনও আজাদ-রুমিরা আবারও নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসবে চারপাশের নিম্ন-মাঝারী বৃত্তগুলো ভেঙ্গে। বিশ্বাস করতে চাই, বিশ্বাস রাখতে চাই।

আমাদের হাতে সময় নেই। ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করে বিচার প্রক্রিয়াকে মানবাধিকার বিরোধী বলে যে পেশাদারী চর্চায় স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নেমেছে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে নামতেই হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষের প্রতিটি মানুষকে। [...]

সময় এসেছে বাস্তবের জমিনে পা রেখে কথা বলার। মাস দুয়েক আগে মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নিউইয়র্ক প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে। সন্তানবাৎসল্যের নানা উদাহরণ দিয়ে সে তার পিতার মানবিক রূপটি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জানায় একজন ইসলামী রাজনীতিবিদ হওয়াটাই তার অপরাধ। বর্তমান সরকার বিরোধী দলের নেতাদের রাজনৈতিক নিপীড়নের জন্য যেসব মাধ্যম ব্যবহার করছে তার মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ক ট্রাইব্যুনাল অন্যতম এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারের নামে এতে যাবতীয় মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। উপস্থিত সাংবাদিকদের কেউ যদি আগ্রহী হয়ে তখন গুগলিং করেন, বাংলাদেশ ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল লিখে সার্চ দেন, নিশ্চিতভাবেই প্রথম যে ১০০টি লেখা এ বিষয়ে তার সামনে আসবে, তা এই যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে লেখা। যদি কেউ উইকিপিডিয়া সার্চ দেন, দেখবেন আলবদর নামে যে সংগঠনটির নেতা হিসেবে নিজামীর বিচার হচ্ছে সেই আলবদর সম্পর্কে লেখা আছে এরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে স্বল্প সময়ের জন্য ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয় এবং দেশের স্বাধীনতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।হ্যাঁ, উইকিপিডিয়ায় আপনি যুদ্ধাপরাধী সম্পর্কে কোনও তথ্য পাবেন না। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের শীর্ষে থাকা চৌধুরী মঈনউদ্দিনকে যুদ্ধাপরাধী লেখার দায়ে বিশাল অঙ্কের মানহানির মামলা করার হুমকি দেওয়া হয়েছিলো উইকিপিডিয়াকে। তাই তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলো তার সম্পর্কে যাবতীয় অভিযোগ। একই ঘটনা ঘটেছে ব্রিটেনের গার্ডিয়ান এবং টেলিগ্রাফ পত্রিকার ক্ষেত্রেও। আইনি হুমকির কারণে এসব যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে তারা কোনও লেখা ছাপাতে নারাজ। অন্যদিকে শুরুতে বলা যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বর্তমান সরকারকে দুর্নীতিবাজ ও অত্যাচারী বলে প্রতিষ্ঠিত করার অভিপ্রায়ে লেখা বিভিন্ন অভিযোগের বিশাল বিশাল ফাইল জমা হয়েছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্ট, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত দপ্তরে। প্রতিদিন এসব ফাইল আরও মোটা হচ্ছে। মোটের উপর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আসলে একটি রাজনৈতিক দমন প্রক্রিয়া এবং এরসঙ্গে জনগণের কোনও সম্পর্ক নাই এমন দাবি করে দাতা দেশগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। মিথ্যে প্রতিবেদন বানিয়ে, ভিডিও বানিয়ে সেগুলো পাঠানো হচ্ছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে, যেখানে আমাদের জনশক্তির একটা বড় অংশ কর্মরত আছে।হিসেবটা পরিষ্কার, নানা রকম আন্তর্জাতিক চাপের মাধ্যমে এই বিচারে বিঘ্ন ঘটানো এবং জনমত তৈরি করে এই বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে একে বিতর্কিত করা। তাই আমরা জিততে জিততে আসলে হেরে যাচ্ছি। কারণ এসবের বিরুদ্ধে আমাদের কোনও…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.