টাকা গাছে ধরে না কিন্তু ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়।
গাছে ধরে [...]
গাছে ধরে [...]
টাকা গাছে ধরে না কিন্তু ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়।
"মুনিম ভাই, আপনেরে ২৮০০ 'টাকার' কার্ড দিসে সিটি ব্যাঙ্ক, কই খাওয়াইবেন কন" আমার রুমমেট চেঁচিয়ে ঊঠল [..]
"মুনিম ভাই, আপনেরে ২৮০০ 'টাকার' কার্ড দিসে সিটি ব্যাঙ্ক, কই খাওয়াইবেন কন" আমার রুমমেট চেঁচিয়ে ঊঠল। আমেরিকায় আমার প্রথম ক্রেডিট কার্ড, ২৮০০ ডলার, এই ২৮০০ ডলারে আমি একশো ফানুস কিনে কিছু ফানুস উড়ানোর আজন্ম সলজ্জ সাধ পূরণ করতে পারি, নতুন জুতো কিনতে পারি, বেড়াতে যেতে পারি, শুধু মাসের শেষে মিনিমাম পেমেন্ট করলেই হবে। আমি শ তিনেক ডলার প্রথম মাসেই লোণ করলাম, মিনিমাম পেমেন্ট মোটে বিশ ডলার। কয়েক মাস বাদে আমার লোণ হাজার দুয়েক, মিনিমাম পেমেন্ট এমন কিছু নয়, ৫০ ডলার। আরও কয়েকটা কার্ড বাগিয়ে আমার ক্রেডিট লিমিট দাঁড়ালো ১৫ হাজারে, দুবছর বাদে দেশে গিয়ে বিয়েও করে এলাম, মূলত ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেই। এর বছর খানেক পরে আমার স্ত্রী যখন এদেশে এলেন, তখন মিনিমাম পেমেন্ট আর 'মিনিমাম' নেই, সেটা মাসে ৭০০ ডলারের কাছাকাছি। আমার মোট ঋণ তখন বিশ হাজার ডলারের উপরে। এই ঋণের চাপে নব বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে জোছনা এবং বৃষ্টি বিষয়ক নানা হূমায়নীয় ঢং করার যে স্বপ্ন ছিল, তাও বাস্তবায়িত হয়নি। আমার স্ত্রীকে মঁপাসার 'দ্য ডায়মন্ড নেকলেসের' কেরানীর স্ত্রীর মত কাজে নামতে হয় এবং কয়েকবছর কাজ করার পর আমাদের ঋণ শোধ হয়। আমি ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিগুলো থেকে থেকে যা লোণ নিয়েছি তার পরিমাণ সব মিলিয়ে ১২-১৪ হাজারের বেশী নয়। তবে সব মিলিয়ে শোধ করেছি ৩০ হাজার ডলারেরও বেশী। ব্যক্তিগত গল্প বলে বিরক্তি উৎপাদনের জন্য দুঃখিত। তবে এই গল্প ঠিক ব্যক্তিগত নয়, আমেরিকাতে বসবাসকারী প্রায় সবারই একই গল্প। আমেরিকান বড় বড় ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিগুলো অতি লাভজনক ব্যবসা করে চলেছে দশকের পর দশক। সিটি গ্রুপের কার্ড নিয়ে আমি যে শুধ ফানুস উড়িয়েছি তাই নয়, টিউশন ফি দিয়েছি, পাঠ্যবই কিনেছি, মানে সেই কার্ড আমাকে পড়াশুনা শেষ করে আমেরিকায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্যও করেছে, শুধু আমাকেই নয়, লক্ষ লক্ষ মার্কিন ছাত্রকে করেছে। কিন্তু তাই আমরা কেউই বলছি না যে সিটি গ্রুপের CEO বিক্রম পণ্ডিতের নোবেল পাওয়া উচিত। বিক্রম বাবু নোবেল তো দুরের কথা, অতিরিক্ত বোনাস নেবার কারণে ওবামার বিরক্তির কারণ হয়েছিলেন। বাংলাদেশেও গ্রামীণ ব্যাঙ্ক নামে একটি ব্যাঙ্ক আছে, গত কয়েক দশক ধরে মার্কিন ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিগুলোর মত লাভজনক ব্যবসা করছে। ঋণ দেওয়া হয়েছে দরিদ্রদের, তাদের…
এই বাজার তোমাকেও ঋণপ্রদানে ইতস্তত করেনি[...]
হে ভিক্ষুক এই বাজার তোমাকেও ঋণপ্রদানে ইতস্তত করেনি, আজ বাজারকে সমুন্নত রাখার স্বার্থে তুমিও ঝুলি উজাড় করে বাজারকে ঋণপ্রদানে বাধ্য তো থাকবে।
দর্শন, মহাকাব্য, জ্যামিতি ও থিয়েটারেরও আগে ছিল ক্রীড়ার সৌসাম্য।[...]
দর্শন, মহাকাব্য, জ্যামিতি ও থিয়েটারেরও আগে ছিল ক্রীড়ার সৌসাম্য। আমিও প্রবলভাবে ক্রীড়ার প্রতি শারীরিক গতি কৌশলের প্রতিযোগিতার প্রতি তীব্র মানসিক স্ফূর্তির প্রতি অনুপ্রেরণা বোধ করি। অপ্রতিরোধ্য কিন্তু স্বল্পায়ু গ্রিক সভ্যতার চেয়ে সুন্দর আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। আর অলিম্পিক সেই সভ্যতার এক অনন্য সংগঠন। আমি তার তন্নিষ্ট দর্শক। গণতন্ত্র শিল্পবিপ্লব বিশ্বযুদ্ধ সমাজতান্ত্রিকবিপ্লব ঠাণ্ডাযুদ্ধ বিশ্বায়ন অপ্রতিরোধ্য উৎপাদনের অলিম্পিক এবার দুর্যোগ অর্থনীতির অলিম্পিকের যুগে প্রবেশ করল, সেযুগের শুরু হল শিল্পবিপ্লবের চিমনিসঙ্কুল লন্ডন থেকে। সামনের অলিম্পিকগুলোর আয়োজনে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা গুরুত্ব পাবে, এই বিশাল অর্থযজ্ঞ দুর্যোগ অর্থনীতি কতটুকু সইতে পারবে, তাই ভাবতে হবে সবার আগে। এমনকি এই লন্ডন অলিম্পিক শেষ হলে ইংল্যান্ডকেও করতে হবে প্রচুর ঝুঁকির হিসাব কিতাব। কিন্তু আমরা কি উপভোগ করব না শারীরিক গতি কৌশলের প্রতিযোগিতার প্রতি তীব্র মানসিক স্ফূর্তি? অবশ্যই করব, নানাভাবে করব, আগামী কয়েকদিন আটকে থাকব স্পোর্টসের দার্শনিক মহাকাব্যিক জ্যামিতিক থিয়েট্রিক্যাল উদ্ভাসনের জগতে।
এই বিদঘুটে শিরোনাম কার জন্য দাগা হয়েছে সবাই নিঃসন্দেহে বুঝতে পেরেছেন[...]
এই বিদঘুটে শিরোনাম কার জন্য দাগা হয়েছে সবাই নিঃসন্দেহে বুঝতে পেরেছেন, হ্যাঁ, পদ্মা সেতুর মতো আর কে আছে যার জন্য এমন বিদঘুটে শিরোনাম দাগা যায়? এবার, আমি কেন এরকম বিদঘুটে শিরোনাম দাগলাম? আমি না জানি সংস্কৃত না জানি অর্থনীতি কিন্তু সবসময় অর্থনীতির ধ্রুপদী সংস্কার নিয়ে কথা বলি। তাহলে, আমি ছাড়া আর কে আছে যার মন থেকে এমন বিদঘুটে শিরোনাম বের হবে? কিন্তু এই বিদঘুটে শিরোনামের উদ্দেশ্য কী? এই আরেক আকাশকুসুম কল্পনা – ভাবছি এই বিদঘুটে শিরোনামের মন্ত্রপুত হয়ে সরকার পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প নিয়ে আরো সাবধানতা অবলম্বন করবে। ভয় পাবেন না, বিচি অনেক বেশি হয়ে গেলেও, কাঁকরোলটা ছোটই হবে। পদ্মা সেতু এমন কোনো প্রকল্প নয়, যে তা এখনই এই মুহূর্তে যেকোনো উপায়ে করে ফেলতে হবে। পদ্মা সেতু এক সুবিশাল প্রকল্প, এই প্রকল্প সম্পন্ন করতে কোনো একটি কারণে বা কোনো বিবিধ কারণে যদি প্রকল্প ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, তাহলে মুদ্রাস্ফীতির ধারায় থাকা বর্তমান অর্থনীতির মুদ্রাস্ফীতির সূচক কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তার খেয়াল আছে আমাদের? যদি খেয়াল থাকে তাহলে রোগনির্ণয় তো হয়ে গেল, এবার চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেই হয়। চিকিৎসা কী? একটাই। যেখান থেকে যেভাবে টাকা আসুক, সেটা আসতে হবে, আর সরকারকে সম্ভব সবগুলো উপায় পর্যালোচনা করে কোন ফাইনান্সিয়াল প্রস্তাবটি প্রকল্পের গুণগত মান নিশ্চিত করবে ও প্রকল্পের ঋণপ্রবাহের সুদকে সর্বনিম্নে বেঁধে রাখবে এবং শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্পের প্রান্তিক ভোক্তাদের সবচেয়ে কম সেবামূল্যে সেতুটির সেবা ব্যবহার করার সুযোগ দেবে – এই ভাবনাগুলো সর্বাধিক বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া। চারিদিক দিক থেকে শুধু শোনা যাবে, পারে নাই – পারবে না। কিন্তু সরকারকে ভাবতে হবে এই প্রকল্প যেন মুদ্রাস্ফীতির বাঁধ ভেঙ্গে না দেয়। এবং এই ভাবনার সফলতায় যখন পদ্মা সেতু হবে তখন ‘পারে নাই – পারবে না’দের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে।