নামাজ পড়লেও লিখি না পড়লেও লিখি। শুয়োর খেলেও লিখি না খেলেও লিখি। কিন্তু এর মধ্যে পুলিশটা কে?[...]

আমি স্বাধীন তাই লিখি। লিখে কিছু পাই বা না পাই লিখি, শুধু পাই পয়সার জন্য লিখি না। পাতা পেলে লিখি ব্লগ পেলেও লিখি। নামাজ পড়লেও লিখি না পড়লেও লিখি। শুয়োর খেলেও লিখি না খেলেও লিখি। কিন্তু এর মধ্যে পুলিশটা কে? পুলিশ মানে কি পরাধীনতার শৃঙ্খল? যদি পুলিশ তাই হয় তাহলে আমাকেও ঘোষণা করতে হবে আমি স্বাধীন তাই পরাধীনতার শৃঙ্খল হাতে বসে থাকা সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লিখি। বাংলাদেশের কাছে সে-স্মৃতি মোটেই তেমন পুরনো নয়, এই তো ৪০ বছর আগেই তো আমরা ঝাড়ে-বংশে পরাধীন ছিলাম। কেউ বলতে পারবে না বাংলাদেশের লেখকরা সেই পরাধীন দিনে লেখেননি, লিখেছেন এবং তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। রাষ্ট্র এখন বাংলাদেশ, এই চল্লিশ পেরনো বাংলাদেশ যদি আজ চালশের ছানিতে 'স্বাধীনতা বিরোধী'দের বিরুদ্ধে তসবিহ জপতে জপতে নিজেরাই আরো বৃহত্তর অর্থে পুলিশের মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধিতার চর্চা করতে চায় তাহলে ওই কুলাঙ্গার গুণধর এএসপি রফিকুলের কথার সূত্রে আমরা যারা স্বাধীনতার জন্য লিখি তাদের বলতেই হবে : রাষ্ট্র, আমরা তোমার বিপক্ষে, এসো আমাদের নির্যাতন কর। যেজন্য চীনকে উপহাস করি -- পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের শাসকদের সাধারণ মানুষের যম বলি -- যেজন্য প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সত্তার সাধনা করি : সেই মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলে সেই হাত সন্ত্রাসীর হাত বলেই বিবেচিত হবে। ২০০১--২০০৮-এর অস্বাভাবিক সময়ের বিরুদ্ধে যদি দাঁড়াতে চান যদি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সত্যিই লড়তে চান মত প্রকাশের স্বাধীনতায় শস্য পরিমাণ হস্তক্ষেপ করবেন না। আমার মতের সমালোচনা করুন, যদি আমার মত বিধ্বংসী ও বিস্ফোরক বা মানহানিকর হয় মামলা করুন। কিন্তু আমার চোখ বাঁধবেন না, মুচলেকার অসভ্যতা দেখাবেন না, আমাকে শারীরিক মানসিকভাবে নির্যাতন করবেন না। জাতির অভূতপূর্ব উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাতে গিয়ে 'গুলাগ' সৃষ্টি করবেন না। উচ্চশিক্ষায় সরকার বিনিয়োগ করবে, না অভিভাবক বিনিয়োগ করবে, না দেশি-বিদেশি আর্থিক সংস্থা বিনিয়োগ করবে এটা পুরোপুরি 'পলিসি'র ব্যাপার -- 'পলিসি'র ব্যাপার নিয়ে বাকতিণ্ডা খুবই স্বাভাবিক, সেই স্বাভাবিকতার একটা অপরিহার্য কর্মপদ্ধতি হল সৃষ্ট অসন্তোষের ভেতরে পৌঁছে অসন্তোষের প্রকৃতিটাকে আগে বুঝতে পারা। তা না করে অসন্তোষ ছত্রভঙ্গের পুলিশি তৎপরতা 'দানা বাঁধতে দেব না' নামক দেউলিয়াত্বের প্রকাশ ঘটায়। যা যেকোনো সরকারের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বকেই সবার আগে সামনে নিয়ে আসে। এখন সরকার…

নিকট অতীতে কারো মৃত্যু আমাকে এতটা বিষণ্ণ করেনি। মৃত্যু আমাদের সবারই স্বাভাবিক পরিণতি, কিন্তু তারেক মাসুদ মারা গেলেন তাঁর কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার বহু আগেই। [...]

নিকট অতীতে কারো মৃত্যু আমাকে এতটা বিষণ্ণ করেনি। মৃত্যু আমাদের সবারই স্বাভাবিক পরিণতি, কিন্তু তারেক মাসুদ মারা গেলেন তাঁর কাজ শেষ হওয়ার বহু আগেই। আর্ট ফিল্ম কপচানো চলচ্চিত্রকর্মীর তো অভাব নেই আমাদের, অভাব আছে কাজের লোকের। তারেক মাসুদ রক্ষণশীল মাদ্রাসায় পড়েছেন, ‘ক্লাসিক’ পড়ে বড় হননি। সেখান থেকে নিউইয়র্কে গিয়ে ফিল্ম বানিয়ে ফেললেন, ফালতু abstract ফিল্ম নয়, কাজের ফিল্ম। ৭১-এ ‘জয় বাংলা’ বলা সাধারণ মানুষের ছবি, শরণার্থী শিবিরের ছবি, লুঙ্গি পরা মুক্তিযোদ্ধার ছবি। অন্যের তোলা raw ফিল্ম edit করে মুক্তির গান, কোন মৌলিক সৃষ্টিশীল কাজ নয়, কিন্তু কাজের কাজ। আমরা যারা ৭১-এর পরে জন্ম নিয়েছি তারা দেড় ঘণ্টাতেই বুঝে ফেললাম কী অসাধারণ স্বপ্নময় ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়টা। তারেক মাসুদ মাটির ময়না তৈরি করেছেন বহু পরিশ্রমে, ছবি তৈরির পরিশ্রম তো আছেই, তার চেয়েও বেশি পরিশ্রম গবেষণাতে। ৭১-এর ঠিক আগের বাংলাদেশের ডিটেল ফুটিয়ে তোলা হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ব্যাপার। সাহিত্য-নির্ভর ছবি তো নয়, ইতিহাস-নির্ভর ছবি, এমন ছবি তৈরি সব দেশেই কঠিন, বাংলাদেশে তো আরও কঠিন। কাগজের ফুল-এর প্রেক্ষাপট আরও জটিল (৪০-এর দশকের বাংলাদেশ)। দু-চারটা ফরাসি আর রুশ ছবি দেখে আর কিছু বই পড়ে এসব ছবি তৈরি করা যায় না, দেশের প্রতি, দেশের ইতিহাসের প্রতি নাড়ির টান আর আসুরিক পরিশ্রমের ক্ষমতা থাকলেই এমন ছবি তৈরি করা যায়। আমাদের দেশ জীবননান্দের ‘রূপসী বাংলা’ নয়, আবার ‘মধ্যপন্থী মুসলিম’ দেশও নয়, আমাদের দেশ ‘জয় বাংলা’ আর ‘ইনশাআল্লাহ্’র দেশ। আমাদের ইতিহাসের নিজস্ব dynamics আছে, সেটা আমরা ছাড়া আর কেউ বুঝবে না। ৪৭-এর চাষা আর জেলের পূর্ব বাংলা মাত্র ২৪ বছরের মধ্যে আধুনিক জাতিরাষ্ট্র তৈরি করে ফেলল, কী করে এই magic সম্ভব হল? কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা এখনো বাংলাদেশ বলতে ৪০-এর দশকের ‘নাদের আলীর’ পূর্ববঙ্গই বোঝেন, পশ্চিমারাও বাংলাদেশের কিছুই বোঝেন না (বন্যা, গ্রামীণ ব্যাংক, ইসলাম ইত্যাদি মিলিয়ে একটা কিম্ভুতকিমাকার ধারণা তাঁদের আছে)। তারেক মাসুদ নিজে বাবার আদেশে পশ্চাৎপদ মাদ্রাসায় পড়েছেন, আবার মুক্তিযুদ্ধের পরে সেই বাবাই ভুল বুঝতে পেরে তাঁকে মাদ্রাসা থেকে ছাড়িয়ে এনেছেন। তাঁর নিজের জীবনই আমাদের বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক ইতিহাসের অংশ। নিজের চোখে যেভাবে তিনি বাংলাদেশকে দেখেছেন সেভাবেই ছবি তৈরি করেছেন। ৭১-এর বাংলাদেশ, ৬০-এর দশকের বাংলাদেশ, আধুনিক বাংলাদেশ, শুধু শিল্পসম্মত ছবি নয়,…

ডমেস্টিক ভায়োলেন্স বা পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে একটি পোস্ট। [...]

চোখ দিয়ে আমি প্রথম কী দেখেছি? তা মনে থাকবার কোনো কারণ নাই। আম্মার সাথে ছোট্টবেলায় ফকিরাপুলের একটা দোকানের ভোজ্যতেল কিনবার সময় তেলচিটচিটে হটপেটিস-এর উপর হলুদ আলো থেকে শুরু করে প্রিয়মানুষের মুখে ফুটিফুটি লজ্জা… সদ্যজন্মানো সন্তানের হাতগুলিতে অযথাই অপূর্ব সব ভাঁজ… আষাঢ়মাসের লটকানরঙ মেঘ… রাতের আকাশে অসীম পর্যন্ত তারার নীহার… এইসবকিছু দেখতে দেবার জন্যে আমি আমার চোখের কাছে ঋণী (পদার্থবিদ্যার বই আমাদের জানিয়েছিল, সুস্থ মানুষের দৃষ্টিসীমা নাকি অসীম)। অপাংক্তেয় জিনিস থেকে শুরু করে জীবন-ধন্য-করা জিনিস অব্দি সবই এই চোখ দিয়ে দেখা। মনের দিকে যাওয়া। বুদ্ধির ভিতরে তার বিশ্লেষণ। ধারণক্ষমতার ভিতর তার পরিস্রবণ। আমার চোখ আমার সম্পদ। আমার বাকি শরীরটাও তাই, আমার ঈশ্বরদত্ত উপহার। আমার পৃথিবীর সকল দান গ্রহণের যন্ত্র। এই মানবশরীর আমার সার্বভৌম নিজ ভূখণ্ড। কত না যত্নে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের অন্ধকার সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে এই শরীর পলে পলে তৈরি হয়েছে। এর উপর আমার অধিকার সর্বোচ্চ। সৌদি টিভি প্রেজেন্টার রানিয়া আল বা’জ-এর শরীরের উপর যেমন তাঁর অধিকার সর্বোচ্চ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রুমানা মঞ্জুরের শরীরের উপর যেমন তাঁর অধিকার সর্বোচ্চ। যে বা যারা এই অধিকার নষ্ট করেছে বা করে চলেছে বা করতে উদ্যত, তাদের জন্যে ব্যাবিলনের সম্রাট হাম্‌মুরাবি খ্রীস্টের জন্মেরও সতেরশ বছর আগে নিয়ম করে গেছেন, তুমি নিজের শস্যক্ষেতে সেচ দিতে গিয়ে অপরের শস্য নষ্ট করলে তার জন্যে দণ্ডিত হবে, তোমার নষ্টচোখের বিনিময় আরেকটি চোখ (বিনষ্টকারীর), তোমার উৎপাটিত দাঁতের বিনিময় আরেকখানা দাঁত (পীড়নকারীর)… আমি ভাল কি মন্দ, আমি সৎ কি অসৎ, আমি সহিষ্ণু কি অসহনশীল — আমার অঙ্গহানির অধিকার কারো নেই। যে আমার রাজ্যে অনধিকারবলে প্রবেশ করবে, আমার ঈশ্বরের দানকে ভাঙবে, মচকাবে, মটকাবে, দলবে, সে যেন আমার দেশে আমার পরিবারের সামনে আমার প্রতিবেশীর সামনে কোনো ওজর দেবার সাহস না পায়। শুনতে একরকম অমীমাংসিত নিরুচ্চারিত এবং উপেক্ষিত প্রার্থনার মতন শোনায় এই আশা। কেননা ছোটবেলা থেকে মেয়েশিশুরা সব দেশেই ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের কমবেশি প্রকাশ দেখে দেখে অভিজ্ঞ — নাওয়াল আল সাদায়ী-র দেশে তারা আপনজনের হাতে (মামা-চাচা-নানা-দাদা-খালু কে নয়) ধর্ষিত হয় আর বাকিজীবন ভয়ে থাকে এই পুষ্পদলনের ইতিহাস স্বামী আবিষ্কার করলে কী হবে, রানিয়া আল বা’জ-এর দেশে তারা বোনেরা মিলে রাতের আঁধারে রেডিও মন্টিকার্লোতে গান শুনে নাচে…

লেখক দুই ধরনের। একদল লেখেন নিজের জন্য। আরেকদল লেখেন পাঠকের জন্য। [..]

[ব্লগ নিয়ে কোন একটা উন্নত নাসিকার মঞ্চ থেকে শিরোনামের তীরটা নিক্ষিপ্ত হতে দেখেই এই আপাতঃ জ্ঞানী লেখাটির সূত্রপাত।] লেখক দুই ধরনের। একদল লেখেন নিজের জন্য। আরেকদল লেখেন পাঠকের জন্য। আরো শুদ্ধ করে বলতে গেলে, যখন নিজের জন্য লেখেন তখন লেখকের উন্মেষকাল। এই সময়ের লেখাগুলি একজন লেখকের শ্রেষ্ঠ লেখা। এই সময়ে লেখকের ভেতর পাঠকের চিন্তা থাকে না, বাজারের চাহিদা থাকে না, কাটতির টেনশান থাকে না, প্রকাশকের চাপ থাকে না। লেখালেখি থাকে উন্মুক্ত। ভেতর থেকে উঠে আসা দীর্ঘশ্বাস কিংবা উচ্ছ্বাসগুলোকে শব্দের গাঁথুনিতে প্রকাশ করার চমৎকার একটা প্রয়াস থাকে এই সময়টাতে। যখন অন্যের জন্য, বাজারের জন্য, পাঠকের জন্য, পত্রিকার জন্য লেখেন, তখন লেখকের পরিণতকাল হলেও তাঁর আদি আন্তরিকতা আর বোধের প্রকাশ প্রায়ই অনুপস্থিত থাকে। তাই যে কোন লেখকের পরিণত বয়সের লেখার চেয়ে কাঁচা বয়সের লেখার মধ্যে রসের যোগান বেশী। কাঁচা হাতের লেখাও পাঠসুন্দর থাকে। হুমায়ুন আহমেদের 'নন্দিত নরকে' কিংবা 'শঙ্খনীল কারাগার' একটা উদাহরণ হতে পারে। আজকাল অনেকেই লেখে। প্রযুক্তির সুলভতার কারণে লেখালেখির পরিমাণ অনেক বেশী যার মধ্যে ব্লগ অন্যতম একটি মাধ্যম। ব্লগ লেখে কারা? বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে ব্লগ জিনিসটাই অপরিচিত। কেবল ইন্টারনেট ও পত্রিকার সাথে যুক্ত মানুষেরর একাংশই ব্লগ সম্পর্কে জ্ঞাত। যাদের প্রায় সবাই অতি তরুণ। গত দুবছরে অন্ততঃ ২০টা নতুন কমিউনিটি ব্লগ এসেছে। মতাদর্শের ভিত্তিতে ব্লগগুলি একেকটা পাড়ায় বিভক্ত। আবার প্রত্যেক ব্লগেরই কিছু না কিছু আবাসিক লেখক থাকেন যাঁরা ওই ব্লগেই লেখেন। এটা একটা নেশাও বটে। লেখালেখি ছাড়াও আড্ডা দেবার জনপ্রিয় একটা আয়না একেকটি ব্লগ কমিউনিটি। বাংলা ব্লগের বয়স তিন বছরের সামান্য উপরে। প্রতিষ্ঠিত লেখকদের কাছে ব্লগ এখনো তেমন গুরত্ব না পেলেও এই ব্লগ থেকেই এমন কিছু লেখক উঠে এসেছেন যাঁদের রচনাশৈলী রীতিমত ঈর্ষণীয়। নাম বলে বিব্রত করবো না, কিন্তু কয়েকটা প্রধান ব্লগ মিলে অন্ততঃ বিশজন ব্লগারের লেখার মানকে আমি জীবিত যে কোন প্রতিষ্ঠিত লেখকের সাথে তুল্য বলে মনে করি। কিন্তু বয়সে তরুণ বলেই এখনো তাঁদের কাজের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। তাঁদের অনেকের কোন বইই বের হয়নি। তাঁদের প্রত্যেকের লেখার তাড়না স্বতঃপ্রণোদিত। এই তারুণ্যটাই তাঁদের মূল শক্তি। তাঁদের হাতে আলোর মশাল তুলে দিয়েছে বলে কমিউনিটি ব্লগগুলোর কাছে জাতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।…

চিনি ৬৫, চাল ৫৪, সয়াবিন তেল ১০৫ টাকা... রাতে বাসায় ফিরে গৃহকর্ত্রীর ঘোষণা শুনে চুপ করে বসে রইলাম [..]

চিনি ৬৫, চাল ৫৪, সয়াবিন তেল ১০৫ টাকা... রাতে বাসায় ফিরে গৃহকর্ত্রীর ঘোষণা শুনে চুপ করে বসে রইলাম। অনেকদিন মুদি দোকানের বাজারপাতির খোঁজ করি না। কাজীর দেউড়ী বাজারের একটা দোকান থেকে জিনিসপত্র পাঠিয়ে দেয় ফোন করলে। যখন যা লাগে ফোনে বলে দেয়া হয়, ওরা বাসায় পৌঁছে দেয়। একটা আরামদায়ক হোম সার্ভিস। দামাদামির তেমন অবকাশ নেই, দাম একটু বেশী দিতে হলেও মেনে নেই, কারণ সময়ের টানাটানি বেশী আমার। এই ব্যবস্থায় বাজারে জিনিসপত্রের দাম কিরকম ওঠানামা করছে আমার জানা থাকে না। আমি সংসারে মাসের বাজেট দিয়েই খালাস। কিন্তু কাল রাতে দামগুলো শোনার পর থেকে আমার কেমন যেন হাঁসফাঁস লাগছে। গলার টাইতে গিট্টু পড়লে যেমন অস্বস্তি, ঠিক তেমন। এই মাসের বাজেটে টান পড়বে নিশ্চিত। আবার ভাবি আমার মতো মোটামুটি সচ্ছল মানুষের যদি এই গিট্টু লাগে, যারা প্রান্তিক আয়ের মানুষ কিংবা তারও বহু নীচে যাদের বসবাস, তাদের কি অবস্থা? তাদের হাঁসফাঁসের শব্দ কি আমাদের কানে আসে না? পেটের দায় বড় দায়। পেটের দায়ে বাজারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। অথচ এই বাজার নিয়ে কোথাও তেমন উচ্চবাচ্য দেখি না। যতটা দেখি পেটের সাথে সম্পর্কহীন ইস্যু নিয়ে। দেশে বিদ্যুতের সংকট কাটছে না, গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে, অপরাধ বেড়ে গেছে, শেয়ারবাজারে কঠিন ধস, যে-কোন সময় আসবে ভূমিকম্পের ধস, একের পর এক নানান শঙ্কায় দেশটা কাবু। অথচ যাদের এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কথা তাদের বদলে ঘামছে কোথাকার আবুল হোসেনের মাথা। তাদের মাথা ঘামে না, কারণ তাদের বাজারে যেতে হয় না, বাজার তাদের কাছে চলে আসে। বাড়ী ফেরার পর তাদের বউরা দোকানের লিস্টি নিয়ে আসে না। মানিব্যাগের টাকা বারবার গুনে দেখতে হয় না আর কদিন চলবে এই কটা নোট দিয়ে। গায়ে ফু দিয়ে রাজনীতির ময়দানে মাগনা লেকচার তাড়িয়ে বেড়ায় ধনবান নেতারা। অথচ এই ব্যাটারাই ক্ষমতায় যাবার জন্য মানুষকে হাজারো মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেয় নির্বাচনের সময়। মানুষ কি সেসব ভুলে যায়? গোল্ডফিশ মেমোরির জাতিটা এই সব দুষ্ট রাজনৈতিক দলকে পাঁচ বছরে একবার 'শিক্ষা' দিয়েই গণতান্ত্রিকভাবে তৃপ্ত। তারপর 'জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস' বাণী শুনে বাড়ী ফিরে দ্বিগুণ দামের বেগুন আর তিনগুণ দামের পেঁয়াজের ভর্তা খেয়ে ভাতঘুম যায় দুপুরবেলা। বাহ শান্তি। এবার বোকার মতো দুটো…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.