সামাজিক বিষয়ে কখনো লিখতে হবে ভাবিনি। তবে বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আমরা একটা দারুণ সংকট কালে এসে পৌঁছেছি। পৃথিবীর অনেক দেশই এরকম একটা সময় পাড়ি দেয়। তারপর আবার নতুন করে সব শুরু করে।[...]

সামাজিক বিষয়ে কখনো লিখতে হবে ভাবিনি। তবে বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আমরা একটা দারুণ সংকট কালে এসে পৌঁছেছি। পৃথিবীর অনেক দেশই এরকম একটা সময় পাড়ি দেয়। তারপর আবার নতুন করে সব শুরু করে। আমরা একে ‘বৈপ্লবিক পরিবর্তন’ বলি বা ‘সামাজিক উত্তরন’ যাই বলি না কেন, সময় পার হলে দেখা যাবে আমরা একটা নতুন পরিবেশে চলে এসেছি। সেটা খারাপও হতে পারে, আবার ভালোও হতে পারে। কিন্তু সেটা নির্ভর করছে, আমাদের চলমান প্রস্তুতির উপর। গত সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে ঘটে যাওয়া ‘আরব বসন্ত’ আমরা বিশ্লেষণ করলে দেখি, পরিবর্তনের পর সেখানে দেখা গেলো, প্রগতিশীলদের হটিয়ে ইসলামীপন্থীরা নির্বাচনে জয়লাভ করে। ফলে লাভ কি হল তা আরব বসন্তের পতাকাবাহীরা বলতে পারবেন। আমাদের দেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ তেমনি একটি সময়কাল। আমরা একটি পরিবর্তন চাইছিলাম ; ধর্ম-বর্ণ– জাতি নির্বিশেষে সাম্য, সামাজিক মর্যাদা এবং স্বাধীন সার্বভৌম ভাবে বেচে থাকার নিশ্চয়তয়ার জন্য লড়াই। আমরা ছোটবেলার পাঠ্যবইয়ে পড়লাম ‘ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন’ । একদল মানুষ নয়মাস সংগ্রাম করেছিল ‘স্বাধীনতা’ অর্জনের, স্বাধীনতা এলো। এরপর আমাদের ৪২ বছর কাটল। কিন্তু আমরা কি স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে নিয়োজিত ছিলাম বা আছি ? ঠিক মনে হয় না । কারণ তাহলে সাধারণ, একেবারে নিত্য নৈমত্তিক কিছু সভ্য, সুস্থ ও নিরাপদ মানসকিতা আমদের মধ্যে তৈরি হতো। যা একজন আধুনিক মানুষের সমাজে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। আমরা সেই সংগ্রাম করেছি বলে মনে হয় না। আমি বলছিনা এর জন্য প্রতিদিন রাজনীতি করতে হয়। রাজনীতি করাটা যে বিশাল বিপদজনক কাজ, আমার মনে হয় ১৯৭২ থেকে এখন পর্যন্ত যত রাজনীতিবিদ আছেন, ভালো বলতে পারবেন। রাজনীতি আমরা অনেকেই করিনা, কিন্তু ‘রাজনৈতিক সচেতনতা’ হারিয়ে যাওয়াটা শুভ কিছু নয়। আমরা ভাবছি - আমি সবকিছু উপেক্ষা করে, অর্থ, সম্পদ আর ক্ষমতা’র চর্চা করলাম, সন্তান-পরিবারের দিকে তাকিয়ে, কিন্তু সেই সন্তান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, উগ্র কোন আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত। আমি নিজে আদর্শগত ভাবে দারুণ অসাম্প্রদায়িক, কিন্তু আমার সামাজিক, অর্থনৈতিক চর্চার দুর্বল ফাঁক-ফোকর গলে আমার সন্তানদের মধ্যে হয়তো সাম্প্রদায়িক বীজ বুনে যাচ্ছে। আবার দেখা গেলো, আমি খুবই ধার্মিক, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। এদিকে ঘুষের টাকায় বিশাল সম্পদ গড়ে তোলার পর,…

"আজকে বাস্তবতা সবাইকে বুঝতে হবে। এক হাজার ২০০ সিনেমা হল ছিল এ দেশে। সেখান থেকে কমতে কমতে হলের সংখ্যা ৫০০-তে নেমে এসেছে। আগামী এক বছরে আরও ১০০ সিনেমা হল বন্ধ হবে।" [...]

..."এর কারণ কী? মানুষ এখন বাংলাদেশের ছবি দেখতে সিনেমা হলে আসে না। আর নায়ক মাত্র একজন। শাকিবের ছবি বছরে আসে কয়টা? তাহলে আমরা সারা বছর সিনেমা হলগুলো বাঁচাব কী করে? যাঁরা বলছেন যে অনেক লোক বেকার হয়ে যাবে, তাঁদের বলব, আপনারা ভালো ছবি বানান। আপনারা ভালো ছবি না বানালে দর্শক সিনেমা হলে যাবে না। তখন এর দায় আমরা নেব কেন?" সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, প্রদর্শক। সূত্র: প্রথম আলো ... কেউ কি একবার খোঁজ করে দেখেছেন যে কলকাতার রুগ্‌ণ চলচ্চিত্রশিল্প কীভাবে আবার ভালো জায়গায় চলে গেল? যখনই মুম্বাইয়ের ছবির মানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় গেলেন তাঁরা, মুম্বাইয়ের প্রযোজকেরাও কলকাতায় ছবি বানালেন। ওদের সিনেমা হলগুলোর পরিবেশও ভালো হয়ে গেল। এখন বাংলা ছবি সেখানে মুম্বাইয়ের ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে। আমি মনে করি, এ দেশে ভারতীয় ছবি প্রদর্শিত হলে আমাদের ছবির মানও ভালো হবে। এখানে প্রতিযোগিতা হবে এবং তখন অনেক উন্নত মানের বাংলা ছবি উপহার পাব আমরা।...আজকে অনেকেই বলছেন যে আমরা যাঁরা ভারতীয় ছবি প্রদর্শন করব, তাঁদের নাকি বাংলাদেশের ছবি দেওয়া হবে না। ঠিক আছে, মধুমিতা, অভিসার সিনেমা হলকে বাদ দিয়ে যদি তাঁরা ছবি চালাতে চান, চালাবেন। আমি তখন ইংরেজি ছবি চালাব। তারপর একসময় সরকারকে চিঠি দিয়ে সিনেমা হল বন্ধ করে দেব। ইফতেখার উদ্দীন নওশাদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মধুমিতা। সূত্র: প্রথম আলো ...আমরাই এ দেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে এত দূর নিয়ে এসেছি। এ দেশে সিনেমা হল-মালিকেরাই ছবি বানিয়েছেন এবং একটার পর একটা ছবি করে এই শিল্পের সবাইকে পরিচিত করে তুলেছেন। যখন আমরা ছবি প্রযোজনা করলাম, তখনই এ দেশের চলচ্চিত্রশিল্প একটি রুগ্‌ণ শিল্পে রূপ নিল। আমরা সরে গেলাম। কারণ, দেখলাম যে এখানে ছবি বানানোর মতো অবস্থা নেই। আমরা সিনেমা হল-মালিকেরা, যাঁরা সিনেমাকে ভালোবেসে এই সিনেমা হল রেখেছি, তাদের এ জন্য পুরস্কৃত করা উচিত। কেননা, এখন যদি কোনো ডেভেলপারকে আমরা বলি যে আমাদের জায়গাটি নিন, তাহলে এক কোটি থেকে ১৫০ কোটি টাকা পাব। আর একটি সিনেমা চালিয়ে বছরে কত টাকা পাব আমরা?... আজকে বাংলাদেশের ছবির প্রযোজকেরা লোকসান দিচ্ছেন, আর তাঁরা আমাদেরও লোকসান দিয়ে প্রেক্ষাগৃহ চালাতে বলছেন। কিন্তু এভাবে কত দিন? কে এম আর মঞ্জুর, সভাপতি, চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি সূত্র: প্রথম আলো সিনেমা…

আমাদের দেশে জাতীয় উদ্যোগে চলচ্চিত্র শিক্ষার কোন প্রাতিষ্ঠানিক কেন্দ্র নেই। কিন্তু চলচ্চিত্র শিক্ষা একেবারেই নেই বলা যাবে না। কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি সাবজেক্ট হিসেবে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের কোর্স হিসেবে চলচ্চিত্র পড়ানো হয়। আবার চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সাথে যুক্ত সংগঠনগুলোও নিয়মিত/অনিয়মিতভাবে চলচ্চিত্র নির্মানের কোর্স,ওয়ার্কশপ এবং সেমিনার-এর আয়োজন করে থাকে। তা সত্ত্বেও চলচ্চিত্রের শিক্ষার বিষয়টি আমাদের দেশে বরাবরই অনানুষ্ঠানিক এবং আবহেলিত। কোর্স বা অধ্যয়নের বিষয় হিসেবে চলচ্চিত্র কোন না কোনোভাবে অন্যান্য মাধ্যমগুলোর উপর নির্ভরশীল। যেমন টেলিভিশন মিডিয়া, গনমাধ্যাম ও সাংবাদিকতা কিংবা ভিস্যূয়াল আর্ট। চলচ্চিত্র শিক্ষা এদের উপর ভর করে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগুতে থাকে। অথচ, চলচ্চিত্র বিষয়টি নিজেই অনেক বিশাল এবং বিস্তৃত। পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র শিক্ষার কেন্দ্রের সিলেবাসগুলো দেখলেই তা বোঝা যায়। ফলে, ভর করে বা নির্ভরশীল হয়ে ফিল্ম শেখা ছাত্রছাত্রীরা শেষপর্যন্ত আর ফিল্ম নিয়ে পড়ে থাকতে পারেন না। প্রচুর লোকজন টিভি-মিডিয়াতে চাকরী করছে , কাজ করছে। কেউ বা নিজের চেষ্টায় আর নিয়ন্ত্রিত সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে কিছু সার্থকতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু খুব কম মানুষই চলচ্চিত্র পরিমণ্ডলে নিজেকে সন্নিবিষ্ট রাখতে পারেন জীবিকা নির্বাহ করার নিমিত্তে । ফলে, সত্যিকার একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা তৈরী হতে পারা খুব কঠিন। আমাদের দেশে বলার মতো যে কয়েকজন চলচ্চিত্রকার আছেন এবং যারা নতুন ডিজিটাল চলচ্চিত্রের হাতে খড়ি নিয়ে পূর্নাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মান করে দেশে-বিদেশে প্রদর্শন করছে, তাদের আসলেই ধন্যাবাদ। কারন, এই দেশের মতো চলচ্চিত্রের অবক্ষয় সম্ভবত আর কোথাও হয়নি, যেখানে গত বিশবছর (২০০৭ সালের ১/১১ প্রেক্ষাপট বাদ দিয়ে) ধরে গনতান্ত্রিক দলগুলোই সরকার পরিচালনা করে আসছেন । কোন সামরিক জুন্তা বা দুর্ভিক্ষপীড়িত প্রেক্ষাপট ছিল না, অথচ স্বাভাবিক চলচ্চিত্রের পরিবেশের সাথে সাথে চলচ্চিত্র শিক্ষার প্রতি মানুষের উৎসাহ নষ্ট হয়ে গেল । ফলে, চলচ্চিত্র একাডেমিক লোকজন ও শিক্ষকও তৈরী হলো না। বিকল্প ধারা বা মুক্ত পর্যায়ের ওয়ার্কশপগুলিতে চলচ্চিত্রের যে তত্ত্বগত ও কারিগরী শিক্ষা দেয়া হয় তাও অনেকাংশে অপরিকল্পিত। বিভিন্ন চলচ্চিত্র সংসদ, ফিল্ম সেন্টার, বা ফিল্ম স্কুলগুলোতে বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে যে চলচ্চিত্র শেখানো ও পড়ানো হয় তা পর্যাপ্ত নয়। এ ক্ষেত্রে তাদের সীমাবদ্ধতা অপরিসীম। যেসব নির্মাতা, কলা - কুশলী ক্লাস যেন তাতে নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকপাত থাকে বেশি , মূল শিক্ষার…

ইদানীংকালে বিভিন্ন মহলে ভারতীয় বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের আমদানি নিয়ে বেশ তর্কবিতর্ক শোনা যায়। পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে অনেকদিন ধরেই তেমন ধারণা ছিল না; যেমন, কী ধরনের ছবি আসছে, কারা আনছে, এক্ষেত্রে সরকারের সুস্পষ্ট নীতি মালা কী, ইত্যাদি ইত্যাদি। [...]

ইদানীংকালে বিভিন্ন মহলে ভারতীয় বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের আমদানি নিয়ে বেশ তর্কবিতর্ক শোনা যায়। পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে অনেকদিন ধরেই তেমন ধারণা ছিল না; যেমন, কী ধরনের ছবি আসছে, কারা আনছে, এক্ষেত্রে সরকারের সুস্পষ্ট নীতি মালা কী, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমানে বিষয়টি অনেক স্পষ্ট এবং সর্বসাধারণ পর্যায়ে সাড়া জাগিয়েছে। বিষয়টি অনুধাবন মাত্রই আমার ঈশপ-এর একটি গল্প মনে পড়ে গেল। স্যামোসের লোকসভায় এক অত্যাচরী শোষকের বিচারে শাস্তি প্রসঙ্গে ঈশপ ((ঈশপ -- প্রাচীন গ্রীসের কথাশিল্পী ও মেষপালক )) এই গল্পটি বলেছিলেন: এক শেয়াল নদী পার হতে গিয়ে স্রোতের টানে এক খাদে গিয়ে পড়ল। তা থেকে উঠতে অনেক চেষ্টা করেও সে পেরে উঠল না। সুযোগ পেয়ে এক ঝাঁক রক্তচোষা পোকা এসে তার গায়ে লেগে রইল এবং তার রক্ত পান করতে লাগল। এই সময় এক শজারুকে সে পথ দিয়ে যেতে দেখে শেয়াল তার সাহায্য প্রার্থনা করল। শজারু করুণার স্বরে বললে, ‘আমি তোমায় এই খাদ থেকে তুলতে পারবো না সত্যি, কিন্তু তোমার গা থেকে ঐ পোকাগুলি তুলে নিতে পারি আমি, কেমন?’ শেয়াল বললে, ‘না, না, ভাই, তা করতে যেয়ো না।' ‘কেন, না বলছ কেন?’ ‘না বলছি এই জন্যে যে এগুলি আমার রক্ত এতক্ষণ অনেক খেয়েছে, আর বেশি এরা টানতে পারবে না। এদের সরিয়ে দিলে আর এক নতুন ঝাঁক এসে আমার গায়ে লাগবে, তখন যে রক্তটুকু আমার শরীরে অবশিষ্ট আছে, তাও আর থাকবে না। চলচ্চিত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে এই বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক আলোচনায় অংশ নেয়ার সুযোগ ঘটেছে এর মধ্যে। বিভিন্ন আলাপচারিতায় এই বিষয়ে যেটুকু জানা গেল তা হলো: মধ্যবিত্ত তথা আপামর জনসাধারণকে সিনেমাহলমুখী করার জন্য বাংলাদেশের মৃতপ্রায় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে প্রতিযোগিতায় এনে সুস্থ বিনোদনমূলক চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ করাই হলো ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির উদ্দেশ্য। ব্যাপারটা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। কারণ, চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার এবং বিভিন্ন চলচ্চিত্র সংসদ কর্মী, রাজনৈতিক কর্মী ও আরো অনেকের এই বিষয়ে বিরোধিতা। প্রথম প্রথম আলোচনায় গিয়ে বক্তাদের বিভিন্ন মতামত শুনতে শুনতে ভাবছিলাম আমি এই বিষয়ক আলোচনায় অংশগ্রহণে যোগ্য ব্যক্তি কিনা। বা আরো যারা বুদ্ধিজীবী, বিদগ্ধ শুদ্ধ চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি-কর্মী কিংবা নতুন প্রজন্মের টেলিভিশন ডিজিটাল চলচ্চিত্রের নির্মাতা বা কুশলী -- আমাদের কারোরই কি এই বিষয়ে সুস্পষ্ট…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.