সবাই ভুল করে সাতটি বলে[...]

পৃথিবীতে আটটি মহাদেশ, সবাই ভুল করে সাতটি বলে : ইতিহাস, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, অ্যান্টার্কটিকা।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে (আমি যদ্দুর জানি) আসামীদের সবাই রাজনৈতিকভাবে মৃত ছিলেন। নাৎসীরা থেকে শুরু করে বর্তমানে বিচারাধীন রোদোভান কারাচদিচ [....]

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে (আমি যদ্দুর জানি) আসামীদের সবাই রাজনৈতিকভাবে মৃত ছিলেন। নাৎসীরা থেকে শুরু করে বর্তমানে বিচারাধীন রোদোভান কারাচদিচ, এরা সকলেই বিচারাধীন সময়ে রাজনৈতিক ভাবে দুর্বল বা মৃত ছিলেন। অল্প কিছু শুভানুধ্যায়ী ছাড়া এদের পক্ষে কেউ ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আসামীরাও রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সম্ভবত এই প্রথমবারের মত কোন সক্রিয় রাজনৈতিক দলের নেতারা (প্রকৃতপক্ষে সব শীর্ষ নেতারাই) যুদ্ধাপরাধের মত গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে আদালতে যাচ্ছেন। সে হিসাবে এটা সরকারের একটা সাহসী পদক্ষেপ। জামাতের জনসমর্থন সেভাবে কোন কালেও ছিল না, একাত্তরপূর্ব বাংলাদেশেও না, আজকের বাংলাদেশও না। কিন্তু একদল সক্রিয় কর্মীর সুবাদে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারা চিরকাল pivotal অবস্থানে থেকেছে। ১৯৯৩ সালে শেখ হাসিনা নিজামীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ‘তাদের ডানে রাজাকার, বামে স্বৈরাচার, সামনে অন্ধকার” এই কাব্যিক উক্তিটি করলেন। খালেদা জিয়া সেই রাজাকারকেই ২০০১ সালে মন্ত্রী করলেন। সেই সময়ে বিএনপির এক মন্ত্রী ‘আমরা জামাতকে স্মৃতিসৌধে নিতে পেরেছি’ এই জাতীয় একটা হাস্যকর উক্তি করেছিলেন বলে মনে পড়ে। এই দুঃখজনক ব্যাপারগুলোর মাঝেও একটা আশার ব্যাপার হচ্ছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি দু'দলই রাজাকার ফ্যাক্টরটি ব্যবহার করেছে। জামাত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়ে গেলেই তারা রাজাকার ফ্যাক্টরটি ব্যবহার করেছে। এমনকি সামরিক বাহিনীর অফিসাররাও রাজাকার ফ্যাক্টরটি ব্যবহার করেছেন। বিএনপি '৯১ এ রাজাকার আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত করেছিল। '৯৬ এ জেনারেল নাসিমের পদ্যচ্যুতির ক্ষুদ্র নাটিকাটি যখন ঘটে, তখন তাঁর পক্ষের অফিসারদের রেকর্ডকৃত কথোপকথনে রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে ‘রাজাকার বিশ্বাস’ নামে অভিহিত করা হয়েছে শোনা যায়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে ‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলিয়া কিছুই নাই’ এই জাতীয় কিছু আপ্তবাক্য ব্যবহার করে সকল রাজনৈতিক দলই জামাতকে ব্যবহার করেছে (এবং ব্যবহৃত হয়েছে), আবার বাংলাদেশের মানুষের মনে জামাতীদের ব্যাপারে যে তীব্র ঘৃণা আছে সে আবেগটিরও ব্যবহার করেছে। 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়ে গেলে জামাত শেষ, জামাত শেষ মানে বিএনপি শেষ, আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র শাসন, ফিরে আসবে '৭২-'৭৫-এর দুঃশাসন' এই জাতীয় কিছু অতি সরলীকৃত রাজনৈতিক বিশ্লেষণ আছে। '৭২-'৭৫-এর আমল ভালো না খারাপ এটা নিয়ে শুধু অর্থহীন বিতর্কই করা চলে, সেই আমল কখনোই ফিরে আসবে না, ইতিহাস কখনোই পিছনের দিকে যায় না। ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধুর নামে আকাশ বাতাস নদী ও সাগরের…

আজ ২৭ মার্চ ৯২২ এর এই দিনে মনসুর আল-হাল্লাজ (৮৫৭/৫৮—৯২২ খ্রিষ্টাব্দ) ওরফে আনাল হক্ককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। যিনি আনা আল-হক্ক নামেই সর্বাধিক পরিচিত [..]

আজ ২৭ মার্চ ৯২২ এর এই দিনে মনসুর আল-হাল্লাজ (৮৫৭/৫৮—৯২২ খ্রিষ্টাব্দ) ওরফে আনাল হক্ককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। যিনি আনা আল-হক্ক নামেই সর্বাধিক পরিচিত, তিনি জন্মগ্রহণ করেন পারস্যের আল বাইজা নগরীর তূর এলাকায়। আল বাইজা তখন আরব-শাসনের এক নগরী। তিনি আরবেরই ওয়াসিত স্কুলে মাত্র বারো বছর বয়সে কোরানের হাফেজ হয়ে যান। এবং কথিত আছে, তিনি তা করেন মরমি উপলব্ধি থেকেই। পরবর্তী কালে তিনি তোস্তারের শাহল বিন আবদুল্লা এবং তারও পরে বসরার সূফীর খিরকা গ্রহণ করেন উমর বিন উসমান মক্কীর কাছে। তিনি সূফীত্বের যাবতীয় আচারনিষ্ঠার সাথে সন্নিহিত থাকেন দীর্ঘ বিশ বছর। বিয়ে করেন সূফীসাধক ইয়াকুব আল-আক্তা কারনাবাইয়ের কন্যা উম্মুল হুসাইনকে। বিবাহসূত্রেই বিপ্লবী শিয়াদের সাথে তার সংযোগ ঘটে। তখন আলিদ (জাঈদী) ছিলেন তাদের নেতা। তবে একথা বলা যায় যে তিনি সুন্নী মতাদর্শের প্রতিই অনুগত ছিলেন। একসময় তিনি বাগদাদে যান বিখ্যাত সূফী জুনায়েদের কাছে। তিনি নিঃসঙ্গতার সাধনালব্ধ হন এবং তারও পরে মক্কায় যান হজ্ব করতে। সেখানে তিনি পরমাত্তায় লীন হবার কঠোর সাধনা শুরু করেন। তিনি যখন জুনায়েদের দরজায় গভীর রাতে ঘা মারেন, তখন জুনায়েদ কর্তৃক ‘কে’ বলার জবাব হিসাবে তিনি বলেন, ‘আনা আল-হক্ক’। ঈশ্বরত্ব নির্মাণবিষয়ক পরম জ্ঞানের বিষয়ে জুনায়েদের সাথে তার তর্ক-বিতর্ক হয়। ফলশ্র“তিতে তিনি খিরকা ছেড়ে পারস্য ও খোরাসানে যান। অনেক সুন্নী মুসলমান আর খ্রিষ্টান ধর্মানুসারী তার কাছে শিষ্যত্ব বরণ করেন। খোরাসানে তিনি শিয়া আর মুতাযালীদের কবলে পড়েন; এমনকি তাকে জাদুকর বলেও অভিহিত করা হয়। এ ঘটনারও পর তিনি দ্বিতীয়বার হজ্বব্রত পালন করেন চারশ’ অনুসারীসহ। সেখানে তিনি প্রচলিত ধর্ম-অনুরাগীদের তোপের মুখে পড়েন। প্রথমে তুর্কেস্তান এবং পরে ভারত চলে আসেন। তখন বৌদ্ধ, মানী ও সনাতন হিন্দু ধর্মের অনেকেই তাঁর সংস্পর্শে আসেন। ৯০২ সালে তৃতীয় অর্থাৎ শেষবারের মতো হজ্ব পালন করেন তিনি। আরাফাতের ময়দানে তিনি দোয়া করেন এই বলে, আল্লা যেন তাকে অনস্তিত্বে পর্যবসিত করেন। তিনি মানুষের জন্য রক্তাক্ত হতে চান। সাধারণ মানুষের ভিতর তাঁর ঐকান্তিকতা ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। উঁচু শ্রেণীর মানুষজন তার উপর ক্ষেপে যেতে থাকেন। জাহিরী আইনজীবী হাল্লাজের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ-অভিযোগ আনেন এবং তার মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেন। তাঁর অপরাধ তিনি প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বিপরীতে মুক্তঅস্তিত্বের সাধনা করেছেন। নিজের ক্বলবে ঈশ্বরত্ব প্রাপ্ত হচ্ছেন। প্রচলিত…

গোলাম মুরশিদ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গঠনকাঠামোকে ধরেছেন[...]

এর একটি গঠনকাঠামো আছে, গোলাম মুরশিদ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গঠনকাঠামোকে ধরেছেন, প্রায় আড়াইশ পৃষ্টার বইটি এক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করবে বলেই আমার মনে হয়। চারটি ভাগে তিনি বইটিকে ভাগ করেছেন। প্রথম ভাগের পরিচ্ছেদগুলো : বাংলা ও বাঙালির কথা, মুসলিম জাগরণের সূচনা, বাংলা ভাষা নিয়ে মুসলমানদের বিতর্ক, বঙ্গভঙ্গ, মুসলমানদের ক্ষমতায়ন। দ্বিতীয় ভাগে আছে : দেশবিভাগ:অসম মিলন, ‘মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’, রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’, রাজনীতিতে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব, ‘আমরা সবাই বাঙালি’, পঞ্চাশ-ষাটের রাজনীতি। তৃতীয় ভাগে : স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা, ঝটিকা আক্রমণ ও গণহত্যা, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধের সূচনা, ভারতের আশ্রয়ে মুক্তিযুদ্ধ, সংগঠিত যুদ্ধ, যুদ্ধের আড়ালে আরেক যুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের মাশুল। চতুর্থ ভাগে রেখেছেন : স্বাধীন বাংলাদেশ:স্বপ্ন ও বাস্তবতা, নক্ষত্রের পতন, মুজিব-পরবর্তী অরাজকতা, ‘প্রথম বাংলাদেশ, শেষ বাংলাদেশ’, উপসংহার। ১৮৮০ সাল থেকে ১৯৮১ মোটামুটি এই সময়কালের একটি ‘মুক্তিযুদ্ধ’কে প্রধান করে তিনি ধরতে চেষ্টা করেছেন। ১৮৮০ সালেই অখণ্ড বাংলাদেশে মুসলমানদের সংখ্যা হিন্দুদের ছাড়িয়ে যায়। ১৯৮১ সালের ৩০ মে এক সামরিক অভ্যূত্থানে জিয়া মারা যান। একশ বছরের এই ব্যাপ্তি নির্দিষ্ট হল এই বইটিতে – ভবিষ্যতে আরো গভীর ইতিহাস অধ্যয়নের বিষয় হয়ে, যদি এই সময়কাল নিয়ে বড় পরিসরে ব্যাপ্ত ইতিহাস লেখা হয়, আমার মনে হয় বাঙালি জাতি তার এক অসাধারণ ইতিহাস গ্রন্থ হাতে পাবে – যেইতিহাস শুধু ইতিহাস নয়, হয়ে উঠবে বাঙালির ইতিহাসের বিবৃত দলিল। আজকের গোলাম মুরশিদের এই বই ‘মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর’, যাকে দ্বিতীয় শিরোনামে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বলা হয়েছে ‘একটি নির্দলীয় ইতিহাস’, তা খুবই কাজে লাগবে, যখন লেখা হবে সেই বিবৃত দলিল : যাতে মুক্তিযুদ্ধের এই শতাব্দীব্যাপী অনুসন্ধানকে বাঙালি জাতির মুক্তবোধের বিবৃতি হিসেবেই লেখা হবে। এই পোস্টটি লিখেছি পাঠকদের এই বইটি*পড়বার জন্য অবহিত করতে। এবং যারা পড়বেন অথবা এর মধ্যেই পড়ে ফেলেছেন তাদের অনুরোধ করব পাঠের অভিজ্ঞতা মন্তব্য আকারে জানাতে। *মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর।।গোলাম মুরশিদ।।প্রথমা প্রকাশন।।প্রথম প্রকাশ:মাঘ ১৪১৬, জানুয়ারি ২০১০।।মূল্য:৩২০ টাকা।।

আধুনিক জগত থেকে ক্লেশকর এক যাত্রার শেষে, আলেহো কার্পেন্তিয়েরের লোস পাসোস পারদিদোস_ দ্য লস্ট স্টেপস_(১৯৫৩) উপন্যাসের নায়ক সান্তা মনিকা ডে লা ভেনাদোস এ পৌঁছে। আদেলান্তাদো সেখানে জঙ্গল কেটে কয়েকটি কুড়েঘরের একটি শহর পত্তন করেছে। নামহীন সেই নায়ক মনে করে, কিংবা মনে করতে ভালবাসে যে, এটাই সেই উপত্যকা যেখানে সময় থিতু হয়েছে, সময় আর এগয় না যেখানে। কারণ, জায়গাটি ইতিহাসের খাতের বাইরে। তার ধারণা এখানেই সে নিজেকে ফিরে পাবে। তার ইচ্ছা হয় অডেসিকে ভিত্তি করে এক সাংগীতিক সৃষ্টি করে। তাই নগরপত্তনিদারের কাছে কিছু কাগজ চায়। কিন্তু আদেলান্তাদোর কাছে যা আছে তা তো নতুন শহরের আইন লিখতেই লেগে যাবে। তবুও আরও একটি নোটবই তাকে দেয়া হয়। দ্রুতই তা ভরে যায়। বিরক্ত আদেলান্তো তাকে শেষ নোটখাতাটি দেয়। তখন চরিত্রটি বাধ্য হয় গুটিগুটি অক্ষরে লিখতে, প্রতিটি শূন্যস্থান কাজে লাগাতে, এমনকি নিজের জন্য একধরনের সাঁটলিপিও সে আবিষ্কার করে। কিন্তু তাতেও না কুলালে সে কেবলই লেখে আর মোছে। কেননা তার সামনে যাওয়ার কোনো স্পেস নাই। তাই লেখা, মোছা আর পুনর্লিখন প্রক্রিয়ায় তার পাণ্ডুলিপি আর্কাইভের রাখা ও ফেলার (The economy of Loss and Gain) কসরতে ঢুকে যায়। রবার্টো গঞ্জালেস এচেভারিয়া তাঁর মিথ এন্ড আর্কাইভ অভিসন্দর্ভে দেখান যে, কার্পেন্তিয়েরের হাতেই হালের লাতিন আমেরিকার উপন্যাসের আদল কীভাবে দাঁড়িয়ে যায়। পরে, আমরা দেখব যে, মার্কেজ, ফুয়েন্তেস, য়োসার উপন্যাসে এরকমই কিছু অসাধিত পাণ্ডুলিপি ফিরে ফিরে আসছে। তা-ই যেন হয়ে ওঠে লাতিন আমেরিকার উপন্যাসের আদি টেক্সট। পাশাপাশি, আদি পাণ্ডুলিপির সমান্তরালে পাচ্ছি একটা যাত্রার বিবরণ: নদীর বন, পাহাড়ের ওপর দিয়ে। এবং আখ্যানগুলো যেন অসম্পূর্ণ। যেন পরের কেউ এসে তাকে এগিয়ে নেবে। এই মর্ত্যরে রাজত্বে, পেদ্রো পারামো, শতবর্ষের নিঃসঙ্গতা যেন একই আখ্যানের লিখন, লেপন ও পুনর্লিখনের সাঁটলিপি। একেকটি নতুন শুরু, ভিন্ন ভিন্ন দেশ ও কালের মধ্যে। এশেভারিয়ার ভাষায় লোস পাসোস পারডিদোস হলো সেই মহাআখ্যানের মহাফেজখানা। এ প্রক্রিয়ায় যা ঘটছে, এশেভারিয়া বলছেন, If Carpentier’s novel is the founding archival fiction, Garcia Marquez’ is the architypical one. পাওয়া ও হারানো, আত্ম-আবিষ্কারের সফর, নতুন আরম্ভের মিথ আর সেই আদি অভিজ্ঞতানিচয় মিলে গঠন করে লাতিন আমেরিকার উপন্যাসের মণিমুকুর বা পড়ৎব। কার্লোস ফুয়েন্তেসের টেরা নোস্ত্রা (১৯৭৬), কার্পেন্তিয়েরের এল রেইনো…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.