ট্রেন এসে থামল কাউলুনের হোংহাম স্টেশনে। প্রাচ্যের এক আধুনিক শহরের প্রাণকেন্দ্রে। ইমিগ্রেশনের ঝামেলা মিটিয়ে বাইরে এসে দেখা পেলাম শ্বেতশুভ্র কেশের মক ভাইয়ের। [...]

প্রিয় শহরে সতেরো বছর পরে ট্রেন এসে থামল কাউলুনের হোংহাম স্টেশনে। প্রাচ্যের এক আধুনিক শহরের প্রাণকেন্দ্রে। ইমিগ্রেশনের ঝামেলা মিটিয়ে বাইরে এসে দেখা পেলাম শ্বেতশুভ্র কেশের মক ভাইয়ের। আমাকে রিসিভ করার জন্য অপেক্ষা করছেন। এই সুযোগে মক ভাইয়ের পরিচয়টা দেয়া যাক। পুরো নাম মক চিউ ইউ, আমার অগ্রজ নাট্যজন মামুনুর রশীদের বিশেষ বন্ধু, বঙ্গপ্রেমিক। সেই ১৯৯১ সাল থেকে বাংলাদেশে আসা যাওয়া, বাংলাদেশের সাথে নাটক বিষয়ক বিস্তর আদান-প্রদান করেছেন। নিজের নাটকের দল আছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে ঘুরে এসেছেন। আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখেন, আর ম্যান্ডারিন চাইনিজ বলতে পারি বলে তাঁর কাছ থেকে পাই আলাদা একটা কদর। এই মক ভাইয়ের উদ্যোগেই এবার প্রদর্শনীর আয়োজন এবং সুদূর বেইজিং থেকে হংকং অভিমুখে চলে আসা। মক ভাইয়ের সাথে শেষ দেখা হয়েছিল কয়েক বছর আগে যখন তিনি বাংলাদেশে গিয়েছিলেন মামুন ভাইয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে একটি ছবির চিত্রায়ণ উপলক্ষে। তখন পুরো টিমকে আমার বাসায় দাওয়াত করে খাইয়েছিলাম। মক ভাই এতদিন পরে আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরলেন। শুভ্র কেশের মক ভাই সেই আগের মতোই আছেন। সমস্ত চুল সাদা হয়ে গেছে অনেক আগে থেকেই। বয়স ষাটের কোঠায়, তবে চুল সব সাদা হয়ে গেছে। রেশম-সাদা ধবধবে চুল মক ভাইকে আলাদা এক ব্যক্তিত্ব এনে দিয়েছে। মালপত্র নিয়ে তাঁর সাথে ট্যাক্সিতে উঠে যাত্রা করলাম তাঁদের সিসিসিডি অফিস অভিমুখে। সিসিসিডি অফিসটি মূলত একটি জনকল্যাণমূলক সংগঠন, কমিউনিটি সাংস্কৃতিক উন্নয়নে কাজ করেন। মক ভাইদের এই সংগঠনটিই আমার ছাপচিত্র প্রদর্শনীর স্পন্সর। ট্যাক্সিতে যেতে যেতে দেখছিলাম হংকং শহরটিকে নতুন করে। সেই আগের মতোই আছে, শুধু সময়ের ছায়া পড়েছে। আমার মধ্যে একটি অনুভূতি কাজ করে — যদি আমার পরিচিত কোনো জায়গায় অনেকদিন পরে আবার যাওয়া হয় তবে ছায়াগুলি অনেক বেশি গাঢ় মনে হয়, মনে হয় এখানে সময় জমা হয়ে আছে। রাস্তায় যেতে যেতে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, কী অদ্ভুত সুন্দরভাবে এই শহরটিকে এরা গড়ে তুলেছে! অল্প জায়গা, অথচ কী চমৎকার ভাবে ম্যানেজ করেছে! হংকং শহরটি বোধহয় স্পেস ম্যানেজমেন্টে পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। আমার কাছে মাঝে মাঝে একে ম্যাচবক্স সিটি মনে হয়। শহরের ভিতর অজগরের মতো এঁকেবেঁকে কত রাস্তা যে চলে গেছে তার ইয়ত্তা নেই, কত যে উড়াল সেতু আর একতলা দোতলা…

মানুষের মনোজগতে এত বেশি চলক আর এত রহস্য রয়েছে যে একটিমাত্র চাবি দিয়ে তার সবকটার তালা খোলা অসম্ভব[..]

হেনরি মিলার: দানব না দেবতা? অনেকেই আমাকে দানবের সঙ্গে তুলনা করেছেন, আবার কেউ কেউ বলেছেন দেবতা। সত্যি বলতে কি আমি কোনদিনই দেবতা হবার স্বপ্ন দেখি নি, কারণ সন্ত টমাস আকিনাস কিংবা সন্ত ফ্রান্সিসের মত ইতিহাসের বিখ্যাত দেবতাদের সঙ্গে কেউই পাল্লা দেবার ক্ষমতা রাখেন না। আমাকে আপনারা হয়ত একজন ছোটখাটো দুষ্টু সন্ত বলতে পারেন, কেননা আমার মধ্যে খানিকটা শয়তানের অস্তিত্বও রয়েছে। সম্প্রতি আমি নিষ্কলুষতা আর কৌমার্যের মধ্যেকার পার্থক্য নিয়ে ভাবছিলাম। কৌমার্য ব্যাপারটি স্বেচ্ছা-আরোপিত, অন্যদিকে নিষ্কলুষতা এক ধরনের মানসিক অবস্থা আপনি যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। আপনি চেষ্টা করে নিষ্কলুষ হতে পারেন না, হয় আপনি স্বভাবগতভাবেই নিষ্কলুষ নয় আপনি তা নন। কৌমার্য সম্ভবত সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ গুণ কেননা এর সঙ্গে সচেতন প্রয়াস, শৃঙ্খলা আর কঠিন পরিশ্রম জড়িত। আমি জীবনভর একজন নিষ্কলুষ মানুষ। আমি আমার কোন কৃতকর্মের জন্যই অপরাধ বোধ করি না ! আমি বলছি না এটা আমার বিশেষ কোন গুণ, আমি স্রেফ জন্মগতভাবেই এমন। সে-রকম কোন সুযোগ দেয়া হলেও আমি সন্তজাতীয় কোন মানুষ হতে চাইবো না, কেননা আমি মনে করি, যে-মানুষ ধার্মিকতা ও দেবত্ব প্রচার না করে তার ভেতরের দানবদেরও কথা বলতে দেয় সে-মানুষ অনেক বেশি জীবন্ত ও আকর্ষণীয় । মনোবিশ্লেষণ আমি নিজে মনোবিশ্লেষণে বিশ্বাস করি না, কিন্তু আজকাল লোকে একে সর্বরোগহর বলে মনে করে। আমরা এখন মনোবিশ্লেষণের যুগে বাস করি, তাই জীবন আর সহজ-সাদামাটা নেই। আমরা বেশি বেশি ভাবছি আজ; বেচারা মস্তিষ্ক আমাদের আজ অতিপরিশ্রমে ক্লান্ত। আমাদের মন নামে বস্তুটি আজ যা করছে তা তার কাজ নয়, তার কাজ আমাদের তাৎক্ষণিক সমস্যাগুলোর সমাধান করা, আমাদের শরীরের সেবা করা। আজ যে আমাদের অনেকেই বিভ্রান্ত, বিপর্যস্ত এবং মানসিকভাবে অসুস্থ তার কারণ আমরা মস্তিষ্কের অপব্যবহার করছি। আমি মনে করি না কিছু বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া মনোবিশ্লেষণের আদৌ কোন দরকার আছে। মনোবিশ্লেষকদের ব্যপারে সাধারণভাবে আমার এক ধরণের গাত্রদাহ রয়েছে। প্রথমত তারা মানুষকে ঠকায়, তাদের পকেট খালি করে এবং বিনা কারণে তাদের বছরের পর বছর চিকিৎসাধীন রাখে। মনোবিশ্লেষকদের মধ্যে আত্মহত্যা ও উন্মাদগ্রস্ততার হার অনেক বেশি; অথচ আমরা কিনা তাদের আলোকিত ঈশ্বররূপে ভজনা করি! এটা কি স্রেফ পাগলামি নয় যে, আপনি আপনার জীবন এমন একজনের হাতে সঁপে দিচ্ছেন যিনি হয়তবা…

পুরুষ ও প্রণয় প্রণয়ের ব্যাপারে পুরুষেরা শিশুর চেয়েও অধম। বিশেষ করে মার্কিন পুরুষেরা; মহার্ঘ অহং পরিত্যাগে তাদের বড়ই মনোকষ্ট। ভালোবাসার সঙ্গে একধরনের আত্মত্যাগ ও দুর্বলতার সম্পর্ক রয়েছে; রয়েছে ক্ষমতা, আত্মতা ও অহং-বিলুপ্তির বোধ। পুরুষ জানে না নারীর মধ্যে কী রত্ন লুকানো, সে বোঝে না যে তাকে সত্যিকারভাবে ভালোবাসা ও তার কাছে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়েই সে জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষালাভ করতে পারে। পুরুষের কাছে প্রেমে পড়াটাই সবচেয়ে বড় বলে মনে হয়, যদিও এটা স্রেফ সূচনা মাত্র, সে-নারীর সঙ্গে তাকে সারাটা জীবন যে যাপন করতে হবে সেটাই প্রধান। একটা সম্পর্ককে কীভাবে টিকিয়ে রাখতে হয় সেটা পুরুষের চেয়ে নারী অনেক ভালো জানে। বলতে গেলে সেই-ই সম্পর্কের চাকায় তেল ঢালার কাজটা করে। সেই-ই সবকিছুকে মসৃণভাবে সচল রাখে। সে পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি বাস্তববাদী। আমি বলবো যে শিল্পীরাই নারী ও ভালোবাসার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর। আমরা শিল্পীরা তাকে রোমান্টিকতার চোখে দেখি, তার মধ্যে দেবীত্ব আরোপ করি, আমরা তার সবকিছুর বন্দনা করি, এমনকি তার অন্ধকার দিকগুলোরও; তার খেয়ালিপনা, তার দেমাগ ও দ্বৈততা কোনকিছুই আমাদের নজর এড়ায় না। এবং সম্ভবত আমরা আমাদের এই অতিরিক্ত স্পর্শকাতরতার জন্য কষ্টও পাই অনেক বেশি। নারী আমাদের উত্তেজনা, ধ্যানজ্ঞান ও আচ্ছন্নতার একটা সার্বক্ষণিক উৎস হিসাবে বিরাজমান থাকে। আমি সত্যি সত্যি বিশ্বাস করি যে আমরা পুরুষেরা হচ্ছি কুকুরছানার মত যে কেবল আদর পেতে, পিঠচাপড়ানি খেতে আর ভরসা পেতে ভালোবাসে। আমরা স্রেফ ক্রীতদাস, নারীরাই আমাদের প্রকৃত প্রভু, তারা আমাদের সঙ্গে যা মন চায় তাই-ই করতে পারে। নারীর প্রশংসায় আমি সবসময় ভেবেছি, পুরুষ নয়, নারীরাই শক্তিশালী ও উন্নততর প্রজাতি। তার ধৈর্যক্ষমতা অনেক বেশি, সে অধিকতর যন্ত্রণা, বঞ্চনা, পীড়ন ইত্যাদি সহ্য করতে পারে। তবে তার শারীরিক দমই কেবল তাকে উন্নত করে নি। তার আয়ত্তে রয়েছে প্রবল বুদ্ধিমত্তা, যাকে পুরুষের মানদণ্ডে মাপা যাবে না। এর সঙ্গে বুদ্ধিবৃত্তিক অন্বেষা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির কোন সম্পর্ক নেই। তার বুদ্ধিমত্তা প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ যা স্বভাবজাত ও স্বজ্ঞাসম্ভূত। প্রকৃতির প্রয়োজন ও ছন্দের সঙ্গে সে এক সুরে বাঁধা। পুরুষ যেখানে তার পরিপার্শ্বের পৃথিবীকে নিজের প্রয়োজন ও পছন্দের আদলে আকার দিতে চায়, নারী সেখানে তার প্রয়াজনের সঙ্গে সে যে পৃথিবীতে বাস করে তার প্রয়োজনকে…

উচ্চাকাঙ্ক্ষা আপনাকে গিলে খায়, একেবারে জ্যান্ত খেয়ে ফেলে। অল্পস্বল্প উচ্চাকাঙ্ক্ষায় অবশ্য অনেকদূর যাওয়া যায়।[...]

উচ্চাকাঙ্ক্ষা উচ্চাকাঙ্ক্ষা আপনাকে গিলে খায়, একেবারে জ্যান্ত খেয়ে ফেলে। অল্পস্বল্প উচ্চাকাঙ্ক্ষায় অবশ্য অনেকদূর যাওয়া যায়। জীবনের লড়াইয়ে শুধু একটি বিষয়ে গোঁ ধরে রাখলে চলে না, চলার পথে এতে নানাভাবে ছাড় দিতে হয়। অসাধ্য সাধন করা আমাদের কাজ নয়, যেটা আমরা সবচেয়ে ভালো পারি সেটুকু করে গেলেই হলো। আমি উচ্চাকাঙ্ক্ষার দানব ও সাফল্যের সংগ্রাম দ্বারা তাড়িত ছিলাম। ঘোরতর নাস্তিক হওয়া স্বত্বেও আমি হাঁটু গেড়ে বসে করজোড়ে প্রার্থনা করতাম "হে ঈশ্বর আমাকে লেখক বানিয়ে দাও, যেনতেন কোন লেখক নয়, একজন বড় লেখক।" আমি লিখতে শুরু করার আগে থেকেই আমার সাহিত্যিক সক্ষমতা সম্পর্কে নিঃসন্দেহ ছিলাম। অন্তত আমার নিজের বিবেচনায় আমি তখনই বিখ্যাত সব লেখকদের সমকক্ষ ছিলাম। যখন কেউ জিজ্ঞাসা করতেন আমি কী লিখেছি তখন আমি কল্পনা থেকে একগাদা বানানো গল্পের শিরোনাম বলে যেতাম এবং সেগুলো জনপ্রিয় সব পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে বলে দাবি করতাম। আমি জন্মাবধিই ছিলাম বানিয়ে বলায় ওস্তাদ। এতসব কিছুর ভিতর দিয়েই আমি বিনয়ে ছাই ও ধুলোর সমান হতে পারার মূল্য শিখেছিলাম। সবারই সেই অভিজ্ঞতা হওয়া উচিৎ। নিজেকে কেউ একজন বলে স্বীকৃতি দেবার আগে আপনাকে জানতে হবে যে আপনি কেউ নন। প্রজাপতির জন্ম জীববিদ্যার জগতে একটি অন্যতম রহস্যময় ও বিস্ময়ের বিষয়। 'ছাই থেকে ফিনিক্স পাখির জন্ম' কিংবা 'অশুভ থেকে শুভ-র উদয়' জাতীয় আপ্তবাক্যের প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হতে পারে তা। শুরুতে প্রজাপতি থাকে খুবই দীনহীন অবস্থায়। সেই গুটিপোকা প্রতি মুহূর্তে পাখা মেলে উড়াল দেবার স্বপ্নে বিভোর থাকে না। সে একটা কার্যকর ও উপকারী পোকার জীবন যাপন করে। এবং তাকে পোকা হিসাবেই মৃত্যুবরণ করতে হয়, পরীরূপে জন্ম নেওয়ার জন্য। গুটিপোকার সুতোবোনা নিজেই একটি অবিশ্বাস্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সেটি প্রজাপতির উদ্ভব ও প্রথম উড্ডয়নের মতই সমান বিস্ময়জাগানিয়া। ভক্তবৃন্দ ভক্তেরা চুলের খুসকির মত, অনেকটা গোঁদের ওপর বিষফোঁড়া গোছের। অবশ্য ভক্তদের মধ্য থেকে আমি দুয়েকজন ভাল বন্ধুও পেয়েছি, যদিও তাদের সংখ্যা আঙুলে গোণা যায়। তারা একসময় পঙ্গপালের মত ভিড় করে আসত। আমি যখন বিগ সুর-এ থাকতাম তখন প্রায় প্রতিদিনই সকালে উঠে দেখতাম কেউ না কেউ গাছের ডালে কিংবা বেড়ার ওপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে আমাকে দেখার আশায়। তাদের মধ্যে কখনো কখনো পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে আসা বদ্ধ উন্মাদ যেমন থাকত,…

পিগমীরা জগতের অন্যতম সংস্কৃতিবান মানুষ। তাঁরা এক চমৎকার জীবন যাপন করেন, যে জীবন পবিত্রতার।

পিগমী পিগমীরা জগতের অন্যতম সংস্কৃতিবান মানুষ। তাঁরা এক চমৎকার জীবন যাপন করেন, যে জীবন পবিত্রতার। তাঁরা কর্মব্যস্ত ও উৎপাদনশীল মানুষই শুধু নন, সুখী ও স্বাস্থ্যবান মানুষও বটে। তাঁরা আমাদের মত আলসার, ক্যান্সার ও হৃদরোগে জর্জরিত নন। তাঁরা মানসিক অসুস্থতা ও মনোরোগের অভিযোগও করেন না। তাঁরা অস্তিত্ব রক্ষার কলা ও কৌশল আয়ত্তকরণে পরিপূর্ণভাবে নিয়োজিত। আধুনিক অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি, জ্ঞানবিজ্ঞান ও কারিগরিবিদ্যা ছাড়াই তাঁরা দিব্যি প্রকৃতির সঙ্গে, নিজের ও ইশ্বরের সঙ্গে পরিপূর্ণ একাত্মতার জীবন যাপন করেন। তাঁরা জানেন যে আধুনিক মানুষের আবিষ্কারসমূহ তাঁদের সমাজে প্রযুক্ত হলে তাঁরা নিজেদের জন্য যে নিখুঁত ভারসাম্য অর্জন করেছেন তা ব্যাহত হবে, তাই তাঁরা বাইরের সাহায্য নিতে অস্বীকার করেন, যা আমার বিবেচনায় দারুণ একটা ব্যাপার। কালো আফ্রিকীদের জন্যও তাঁদের কোন শ্রদ্ধা নেই কেননা তারা শাদা মানুষদের দাসত্ব মেনে নিয়েছে। পিগমীরা সম্পূর্ণ স্বনির্ভর জাতি যা নিয়ে নিঃসন্দেহে আমরা গর্ব করতে পারি। আমাদের মত বামনাকার আমেরিকানদের যদি তাঁদের অবস্থায় বাস করতে হত তাহলে আমরা একদিনেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতাম। আমরা চীৎকার চ্যাঁচামেচি করে সাহায্যর জন্য কান্নাকাটি করতাম। তারপরও আমরা গর্ব করে বলি আমরা কত সভ্য, স্বাধীন, স্বনির্ভর ও অগ্রসর জাতি! আপনারা যদি আদিম মানুষদের জীবন নিয়ে অধ্যয়ন করেন তাহলে দেখবেন আমাদের কারিগরী অর্জন ও অগ্রসরতার কারণে কতটা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছি। যাদেরকে সে বর্বর বলে তাদের কাছ থেকে অনেক শেখার রয়েছে তথাকথিত আধুনিক মানুষদের। আমরা পৃথিবীর চল্লিশ শতাংশেরও বেশি সম্পদ ধ্বংস করে ফেলেছি এবং এর কোন শেষও দেখা যাচ্ছে না। এইভাবে একদিন যখন সব সম্পদ নিঃশেষিত হয়ে যাবে তখন আমাদেরকে এই আদিম মানুষদের কাছে গিয়েই নিতে হবে প্রাণধারণের শিক্ষা। ঘাসের শেষ ডগাটি পর্যন্ত খেয়ে শেষ করে ফেলার আগে আমাদের এই পিগমীদের জীবনকে অধ্যয়ন করা উচিৎ। আমাদের বেঁচে থাকার চাবিকাঠি এই মানুষগুলোর হাতেই, যাঁরা তিল থেকে তালের জন্ম দিতে জানেন এবং জানেন কী করে স্বল্পতম সম্পদ নিয়েও পরিপূর্ণ সুখী হতে পারা যায়। জাপানীরা জাপানী নারীদের কথা আমি বহুবার বলেছি। আমি ফিরে ফিরে তাদের প্রশংসা করেছি। কিন্তু আমাকে বলতেই হবে যে জাপানী পুরুষেরা হচ্ছে নিকৃষ্টতম। জাপানী পুরুষদের ওপর আমার কোন বিশ্বাস নেই। তারা খুবই অশ্লীল ও চাষাড়ে হতে পারে, অথচ মুখে তাদের চিরকালীন…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.