যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চৌধুরী মুঈন উদ্দীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত আশরাফুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচার প্রক্রিয়ার সম্মুখীন করার পদ্ধতি, সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, জার্মানী, কানাডা, অষ্ট্রিয়াসহ বিশ্বের মোট দশটি দেশ থেকে আলোচক এবং মন্তব্যকারীরা অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আলোচনায় অংশ নেন। [...]

২২ জুন ২০১৩ প্রেস বিজ্ঞপ্তি =========== ২২ জুন ২০১৩ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ) এর আয়োজনে একটি ভিডিও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। “এক্সট্রাটেরিটোরিয়াল জুরিসডিকশন অফ দ্য আইসিটি: ব্রিঙ্গিং অ্যালেজড ওয়ার ক্রিমিনালস ব্যাক হোম” শিরোনামের এই সেমিনারে বক্তব্য উপস্থাপন করেন ওয়ার ক্রাইমস ফাইলস প্রামাণ্যচিত্রের প্রযোজক এবং সেন্টার ফর সেক্যুলার স্পেস এর গীতা সেহগাল, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বাউল, এবং এডভোকেট সাইফুল ইসলাম তারেক, সন্ত্রাস এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক জনাব জামাল হাসান। আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে সদস্য ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের আইনে এক্সট্রাডিশন (extradition) বিষয়ে তার গবেষণা পেশ করেন । মূলতঃ যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চৌধুরী মুঈন উদ্দীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত আশরাফুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচার প্রক্রিয়ার সম্মুখীন করার পদ্ধতি, সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, জার্মানী, কানাডা, অষ্ট্রিয়াসহ বিশ্বের মোট দশটি দেশ থেকে আলোচক এবং মন্তব্যকারীরা অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আলোচনায় অংশ নেন। সেমিনারটি পাশাপাশি অনলাইনেও সরাসরি সম্প্রচারিত হয় যাতে টুইটারসহ সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন এবং মতামত প্রদান করেন। প্রাণবন্ত এই আলোচনায় সম্ভাব্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ ও প্রক্রিয়া সমূহ কী হতে পারে, সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের গণহত্যা, মৃত্যুদণ্ড, আইন এবং মানবাধিকার প্রশ্নে অবস্থান ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজিত সেমিনারগুলোর মধ্যে এটি আইসিএসএফ এর চতুর্থ আয়োজন। আইসিএসএফ মূল পোর্টাল: http://icsforum.org মিডিয়া আর্কাইভ: http://icsforum.org/mediarchive ই-লাইব্রেরি: http://icsforum.org/library ফেসবুক: http://facebook.com/icsforum টুইটার: http://twitter.com/icsforum ইউটিউব: http://youtube.com/icsforum যোগাযোগ: info@icsforum.org

ঠিক কি ধরণের অপরাধের বিচার হচ্ছে এখন বাংলাদেশে? এই বিষয়ে বিচার সংক্রান্ত বিভিন্ন আলোচনা এবং ডিসকোর্সে যতোটা সম্ভব সঠিক টার্মগুলো ব্যবহার করাটাই হয়তো উচিত হবে আমাদের [..]

বর্তমানে বাংলাদেশে ১৯৭১ এ সংঘটিত অপরাধের যে বিচার চলছে তাকে অনেকেই "মানবতাবিরোধী অপরাধ" এর বিচার হিসেবে বর্ণনা করেন। অতীতে বিষয়টিকে "যুদ্ধাপরাধীদের বিচার" বলেও বর্ণনা করা হতো। বর্তমানে যে বিচার চলছে তাকে বোঝাতে টার্ম হিসেবে দু'টোর কোনোটিই সঠিক নয়। বাংলাদেশে এখন "মানবতাবিরোধী অপরাধ" এর বিচার হচ্ছে না, ট্রাইবুনালটিও "মানবতাবিরোধী অপরাধের ট্রাইবুনাল" না। হচ্ছে "আন্তর্জাতিক অপরাধ" এর বিচার, এবং ট্রাইবুনালের নাম "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল"। মন্ত্রীরা এবং অন্যান্যরা এই বিচারকে সেই শুরু থেকে "মানবতাবিরোধী অপরাধ" এর বিচার হিসেবে অভিহিত করে যাচ্ছেন, সেখান থেকেই আসলে বিভ্রান্তির সূচনা। যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যাসহ যে কয়েক ধরণের অপরাধের বিচার হচ্ছে, তার মধ্যে "মানবতাবিরোধী অপরাধ" হল মাত্র এক জাতীয় অপরাধ - আর বিচার্য এই সব ধরণের অপরাধকে এক কথায় বলা হয় "আন্তর্জাতিক অপরাধ"। শুধু "মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার" বা "যুদ্ধাপরাধের বিচার" বললে পুরো প্রক্রিয়াটির ব্যাপ্তিকেই ধারণ না করে একে অনেক বেশী সংকীর্ণভাবে উপস্থাপন করা হয়ে যায়। তাই বিচার সংক্রান্ত বিভিন্ন আলোচনা এবং ডিসকোর্সে যতোটা সম্ভব সঠিক টার্মগুলো ব্যবহার করাটাই হয়তো উচিত হবে আমাদের। যে সব অপরাধের বিচার চলছে সেগুলোকে এক কথায় বর্ণনা করতে হলে বলতে হবে - "আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার"। আর যে আদালতে বিচার চলছে সেটাকে বলতে হবে - "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল"। অপরাধ তো হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে, বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে, তাহলে এগুলোকে "আন্তর্জাতিক অপরাধ" বলা হচ্ছে কেন? বলা হচ্ছে, কারণ, ধরে নেয়া হয় এই জাতীয় অপরাধগুলো কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশের সীমানার মধ্যে ঘটলেও তা আসলে সংঘটিত করা হয় পুরো মানবজাতির বিরুদ্ধে। এ কারণে যখনই এই জাতীয় অপরাধ কেউ করে তখন তা পুরো বিশ্বেরই (international community) মাথাব্যাথা (concern), তখন এটা কেউ বলতে পারে না যে - 'এসব আমাদের নিজের দেশের আভ্যন্তরীন বিষয় আশয়'! "আন্তর্জাতিক" শব্দটা যুক্ত থাকার ফলে কি বিচারটাও "আন্তর্জাতিক"? কিংবা এই ট্রাইবুনাল কি তার ফলে "আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল" হয়ে গেল? দু'টো প্রশ্নের উত্তরই হল - "না"। এখানে "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল" কথাটার মধ্যে গুরুত্বারোপ করতে হবে অপরাধের ধরণবাচক "আন্তর্জাতিক অপরাধ" শব্দটির ওপর, ট্রাইব্যুনাল ভবনের ভৌগলিক অবস্থানের উপর না। অর্থাত, যে ধরণের অপরাধের বিচার হচ্ছে কেবল সেগুলোর নাম "আন্তর্জাতিক অপরাধ", আর বিচারটা কিন্তু হচ্ছে দেশীয় ট্রাইবুনালে, বাংলাদেশের সংসদে পাশ করা আইন দিয়েই। আইনটির…

মুক্তিযুদ্ধের সময় অপরাধের সাথে যুক্ত ছিল যে-সব গোষ্ঠী তাদের সবার ক্ষেত্রেই অবস্থানগত মিলটি হল - এরা সবাই ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে সবসময়ই হয় "গৃহযুদ্ধ" (civil war), না-হয় "অভ্যন্তরীণ সংঘাত" (internal conflict), নয়তো "ইন্দো-পাক যুদ্ধ" হিসেবে বর্ণনা করার চেষ্টা করে এসেছে। ঠিক কেন? ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে "সিভিল ওয়ার" বলে চালিয়ে দিতে পারলে ১৯৭১-এর "অপরাধীপক্ষ" আইনগত বা কৌশলগত কোনো সুবিধা পায় কি না, এবং পক্ষান্তরে তা ১৯৭১-এ সংঘটিত অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের অসুবিধা বয়ে আনে কিনা, সে সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এই লেখা।

ব্রিটেনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা দি সানডে টাইমস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে গত ৫ ফেব্রুয়ারি পত্রিকাটির একটি বিশেষ ক্রোড়পত্রে ফটোগ্রাফার ডন ম্যাককালিন-এর তোলা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন একটি আলোকচিত্র নিয়ে সম্প্রতি ফেসবুক এবং ব্লগসহ বেশ কিছু প্লাটফর্মে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে ((দেখুন: The Sunday Times-এর ক্রোড়পত্র Spectrum-এর ৫০ নম্বর পৃষ্ঠায় ছাপানো আলোকচিত্রটি ও তার ক্যাপশন))। ছবিটিতে কলেরা-আক্রান্ত স্ত্রীকে বহনকারী জনৈক উদ্বাস্তু শরণার্থীকে দেখা যাচ্ছে। ছবিটির ক্যাপশনে বাসস্থানচ্যুতি বা displacement-এর প্রেক্ষাপট বর্ণনায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে "civil war" বা "গৃহযুদ্ধ" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই নিয়েই বিতর্ক। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এই "গৃহযুদ্ধ তত্ত্বকে" ব্যবহার করার মতো একটি শ্রেণী রয়েছে যারা দেশে এবং বিদেশে যথেষ্ট সক্রিয়। তবে, এই ক্ষেত্রে দি সানডে টাইমস-এর ক্যাপশনটিকে আমার কাছে সচেতনতার অভাবজনিত একটি ত্রুটি বলে মনে হয়েছে, যা একটি দায়িত্বশীল পত্রিকার (যদিও অনেকেই সানডে টাইমসকে "দায়িত্বশীল"-দের কাতারে ফেলেন না) পক্ষ থেকে হওয়া উচিত ছিল না। কিন্তু এই ক্যাপশনটিকে কেন্দ্র করে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে নানা কারণেই প্রাসঙ্গিক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে যাঁরা "সিভিল ওয়ার" হিসেবে বর্ণনা করেছেন বা এখনো করেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন -- সাম্প্রতিকদের মধ্যে শর্মিলা বোস, ইয়াসমিন সাইকিয়া; একটু পুরনোদের মধ্যে হামুদুর রহমান কমিশন, ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টস (ICJ)-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়াও রয়েছে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ-পরবর্তীকালের দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়া, যারা অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে "সিভিল ওয়ার" হিসেবেই বর্ণনা করে এসেছে। লক্ষণীয় বিষয় হল, মুক্তিযুদ্ধের সময় অপরাধের সাথে যুক্ত ছিল যে-সব গোষ্ঠী (যেমন: তৎকালীন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী), কিংবা অপরাধীচক্রের সহায়তাকারী বা সহযোগী হিসেবে যারা যুক্ত ছিল (যেমন: জামায়াতে ইসলামী, শান্তি কমিটি, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ইত্যাদি), কিংবা যারা এযুগেও তাদের সমর্থক -- তাদের সবার ক্ষেত্রেই একটা বিষয়ে অবস্থানগত একটি মিল খুঁজে পাওয়া যায় - আর তা হল, এরা সবাই ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে সবসময়ই হয় "গৃহযুদ্ধ" (civil war), না-হয় "অভ্যন্তরীণ সংঘাত" (internal conflict), নয়তো "ইন্দো-পাক যুদ্ধ" হিসেবে বর্ণনা করার চেষ্টা করে এসেছে। মনে প্রশ্ন জাগে, কেন? মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে -- ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে যদি নিছক একটি "অভ্যন্তরীণ সংঘাত" হিসেবে, কিংবা বাংলাদেশের কথা পুরোপুরি বাদ দিয়ে একে "পাক-ভারত যুদ্ধ" হিসেবে চালিয়ে দেয়া যায়, তাহলে তার একটা…

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত একজন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তি অবস্থান করছেন। তিনি যে আসবেন, এ সংবাদ তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। অবশ্য তাতে কোনও অসুবিধা হয় নি তাঁর, যাঁদের কাছে তিনি এসেছিলেন এবং যাঁদের জন্যে এসেছিলেন, তাঁরা ঠিকই জানতেন তাঁর আসার খবর। [...]

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত একজন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তি অবস্থান করছেন। তিনি যে আসবেন, এ সংবাদ তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। অবশ্য তাতে কোনও অসুবিধা হয়নি তাঁর, যাঁদের কাছে তিনি এসেছিলেন এবং যাঁদের জন্যে এসেছিলেন, তাঁরা ঠিকই জানতেন তাঁর আসার খবর। ঢাকায় তিনি এসেছিলেন গত ১২ অগ্রহায়ণ (২৬ নভেম্বর) শনিবার। ১৩ অগ্রহায়ণ (২৭ নভেম্বর) রবিবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করার পর তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি মন্তব্যও করেছেন, বিচারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্যে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দফাওয়ারি যেসব প্রস্তাব তাঁদের পক্ষ থেকে করা হয়েছিল, তার অনেক কিছু গ্রহণ করা হয়নি। তবে যাওয়ার আগে তিনি যা বলে গেছেন তার সোজা মানে হলো, আমরা না কি আন্তর্জাতিক অপরাধের সংজ্ঞা কী তা ঠিকমতো বুঝি না এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে এর সংজ্ঞা ঠিক করতে হবে। তা ছাড়া বিদেশি আইনজীবীদের কেন আসতে দেয়া হচ্ছে না, তারও ব্যাখ্যা চেয়েছেন তিনি। এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিটি হলেন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন র‌্যাপ। কোনো কোনো আইনজীবী মনে করেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারকে যদি আন্তর্জাতিক মানসম্মত হতে হয়, তা হলে অবশ্যই স্টিফেন র‌্যাপের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। র‌্যাপকে এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন কে? মনে করছেন লন্ডনের আইনজীবী টোবি ক্যাডম্যান। মনে করছেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল, টোবি ক্যাডম্যানকে অভিযুক্ত পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর আইনজীবী হিসাবে নিয়ে আসার। শুধু টোবিই নন, জামায়াতে ইসলামীর এই তালিকায় ছিলেন আরও দুজন বিদেশি আইনজীবী স্টিভেন কে কিউসি ও জন ক্যামেহ। কিন্তু বাংলাদেশে আইনজীবীদের পেশাগত অনুমতি নিয়ন্ত্রণ আইনের কারণে তাঁরা কেউই আসতে পারেননি। এ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির আইনজীবীরা হইচই করছেন, মিডিয়ায় অনেক কথাই বলে বেড়াচ্ছেন; কিন্তু এঁদের কেউই বলছেন না, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশেই আইনজীবীদের পেশাগত অনুমতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে বার কাউন্সিল জাতীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমনকি টোবি ক্যাডম্যানদের দেশেও একই ধরণের বিধিনিষেধ রয়েছে। চাইলেই কোনো আইনজীবী বাংলাদেশ বা অন্য কোনও দেশ থেকে গিয়ে ইংল্যান্ডের আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়াতে পারেন না। টোবি ক্যাডম্যানরা কি বাংলাদেশের আইন ও আইনগত সংস্কৃতি জানেন? জানেন না, জানলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের কাছে সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে, একইসঙ্গে সেই চিঠি প্রচারমাধ্যমে প্রকাশ করে আদালত অবমাননা…

...দুদেশের মুখচেনা রাজনৈতিক দলগুলোর কেউই বোধকরি চাইবে না, একটি পরিবেশবাদী রাজনৈতিক আন্দোলনের এজেন্ডা নিয়ে দুদেশের মানুষ একই মঞ্চে উঠুক, একই ভাষায় কথা বলুক, ঐক্যবদ্ধভাবে দুটি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করুক।...

ভিলিংগিলি দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের তুলনা হয় না। সেই দ্বীপের অভিজাত রিসোর্ট সাংরিলাতে গত ২৬ কার্তিক (১০ নভেম্বর) সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আশার বাণী শুনছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছ থেকে। তিনি কি তখন জানতেন, তিস্তা চুক্তি স্থগিত করার পর বাংলাদেশকে আশাহত করার মতো আরো একটি ঘটনা ঘটিয়েছে ভারত? তিনি কি জানতেন না, ভারত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের জন্য বিনিয়োগ চুক্তি করে বসে আছে? যদি তিনি না জেনে থাকেন, তা হলে সেই দায় কার? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের? নাকি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের? নাকি কোনো উপদেষ্টার? এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা কখনই পাব না। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজনৈতিক জবাবদিহিতার যে ঐতিহ্য গড়ে ওঠার কথা, গড়ে তোলার কথা, আমাদের রাজনীতিকরা সে ব্যাপারে কখনই মনোযোগী হননি। কোনোদিন হবেন বলে মনেও হয় না। তাই ভারত কেন এভাবে বাংলাদেশকে কোনো কিছু না জানিয়েই হঠাৎ বিনিয়োগ চুক্তি করে বসল, সরকারের কোনো প্রতিনিধি তার ব্যাখ্যা দেবেন বলে আমাদের মনে হয় না। বরাক নদের ওপর দিয়ে টিপাইমুখ বাঁধ ও একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে দিল্লীতে যৌথ বিনিয়োগ চুক্তি হয়েছে গত ৭ কার্তিক (২২ অক্টোবর)। বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা না করে টিপাইমুখে বাঁধের ব্যাপারে ভারত কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না, এ রকম আশ্বাস পেয়ে আমাদের সরকার-প্রতিনিধিরা ২০১০ সাল থেকে বগল বাজিয়ে আসছেন। সরকারের সেই বগলসংগীত এতই শ্রুতিমধুর ছিল যে, বাঁধ প্রতিরোধের জন্য যেসব রাজনীতিক ও সুশীল ভাইয়েরা নানা কিসিমের কমিটি গড়ে তুলেছিলেন, তারাও ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। গত ৫ অগ্রহায়ণ (১৯ নভেম্বর) মিডিয়া আমাদের সবার ঘুম ভাঙিয়েছে। ঘুমভাঙা চোখে আমরা জানতে পেরেছি, তিস্তার পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে সরকার যেমন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, বরাক নদীতে দেশের স্বার্থ সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ব্যর্থতার পরিচয় রেখেছে। এই নিয়ে কি আমাদের মতো আমজনতার বেশি কিছু বলা বা লেখা উচিত হবে? শেখ হাসিনা গত ৫ অগ্রহায়ণ (১৯ নভেম্বর) রাতে তার শ্রুতিমধুর কণ্ঠে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর বদলে বিদ্যুতের ভর্তুকি বৃদ্ধি নিয়ে সমালোচনা করায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ তিনি; তাই বিদ্যুৎ বিভাগে তিনি আদেশ দিয়ে রেখেছেন, এরপর থেকে কেউ সমালোচনা করে কোনো কিছু লিখলে সঙ্গে সঙ্গে তার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিতে। ‘বাবু যত বলে পারিষদ দলে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.