২০০৭ সালে 'শতবর্ষের নিঃসঙ্গতা' প্রকাশের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিবিসি স্প্যানিশ বিভাগের সাংবাদিক ম্যাক্স সাইৎস কথা বলেছিলেন বইটির সম্পাদক, আর্জেন্টিনার ফ্রান্সিসকো পোরুয়া'র সাথে।

গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ও ফ্রান্সিস্কো পোরুয়া ২০০৭ সালে শতবর্ষের নি:সঙ্গতা প্রকাশের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিবিসি স্প্যানিশ বিভাগের সাংবাদিক ম্যাক্স সাইৎস কথা বলেছিলেন বইটির সম্পাদক, আর্জেন্টিনার ফ্রান্সিসকো পোরুয়া'র সাথে। শতবর্ষের নি:সঙ্গতা-র প্রথম সংস্করণ বেরিয়েছিল বুয়েনোস আইরেসের সুদামেরিকানা (Sudamericana) প্রকাশনী সংস্থা থেকে। ৮,০০০ কপি খুব তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়, তারপর বইটি প্রায় ৪০টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে, বিক্রি হয়েছে চার কোটি কপি। পোরুয়া বলেন যে পান্ডুলিপির প্রথম লাইন পড়ার সাথে সাথেই প্রকাশনার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি, যদিও সে সময় ধারণা করতে পারেননি যে বইটি বিশ্বজুড়ে কি পরিমান খ্যাতি অর্জন করবে। "আমি শুধু বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার হাতে একটি অসাধারণ ব্যতিক্রমধর্মী কাজ এসেছে।" উল্লেখ্য যে ল্যাটিন আমেরিকান বুমের আরেকটি কালজয়ী উপন্যাস হুলিও কর্তাসারের রাইউয়েলা-র সম্পাদনাও করেছিলেন ফ্রান্সিসকো পোরুয়া। সুখের বিষয় যে ৯০ বছর বয়স হলেও তিনি সুস্থভাবেই বেঁচে আছেন। * 'শতবর্ষের নি:সঙ্গতা' কি করে সুদামেরিকানা প্রকাশনী সংস্থা এবং আপনার কাছে এলো? এর পেছনে ভাগ্যের কিছুটা অবদান ছিল। সেই সময়ের এক লেখক বন্ধুর কল্যাণে আমি গার্সিয়া মার্কেজের বইগুলো পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। লুইস হার্স নামে আমার বন্ধুটি ল্যাটিন আমেরিকান বুম নিয়ে একটি বই লিখছিলো। লুইসের কাছে গার্সিয়া মার্কেজের কয়েকটি বই ছিল, কিন্তু আমার একটাও পড়া ছিল না। আমি তার থেকে ধার নিয়ে তিনটি বই পড়লাম – পাতাঝড়, বড় মার অন্ত্যেষ্টিগুলো, আর কর্নেলকে কেউ চিঠি লেখে না। পড়ে মনে হলো এ এক অসামান্য প্রতিভাবান লেখকের কাজ। আমি বুঝতে পারলাম যে তার লেখা যদি কোনভাবে আর্জেন্টিনা থেকে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে পারি, তাহলে সত্যি সত্যি খুব মূল্যবান একটা কাজ হবে। আর্জেন্টিনাতে গার্সিয়া মার্কেজ তখনও সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিলেন। আমি তাকে একটি চিঠি লিখে প্রস্তাব দিলাম যে তার বইগুলো আমরা বুয়েনোস আইরেস থেকে পুন:প্রকাশ করতে চাই। উত্তরে তিনি আমাকে চিঠি মারফত জানালেন যে ইতিমধ্যে মেক্সিকোর এরা প্রকাশনী (Ediciones Era) সেগুলো প্রকাশ করছে, এবং ঠিক সেই মুহুর্তে বইগুলো পুন:প্রকাশের দায়িত্ব তিনি আমাকে দিতে পারছেন না। পরিবর্তে আরেকটি প্রস্তাব দিলেন, বললেন যে তিনি একটি উপন্যাস লিখে প্রায় শেষ করে এনেছেন, আমার যদি আগ্রহ থাকে, সেটা আমাকে দেখাতে পারেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, আমি ততক্ষনাৎ উত্তর লিখে পাঠালাম। বললাম অবশ্যই আমি আগ্রহী, আমাকে…

১৯৯৮ সাল। জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস উত্তাল। জাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জসীমুদ্দিন মানিক ওরফে রেপিস্ট মানিক আর তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিকৃষ্টতম অপরাধের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্রদের চলছে প্রতিবাদ, অবরোধ, সিট-ইন [...]

১৯৯৮ সাল। জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস উত্তাল। জাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জসীমুদ্দিন মানিক ওরফে রেপিস্ট মানিক আর তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিকৃষ্টতম অপরাধের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্রদের চলছে প্রতিবাদ, অবরোধ, সিট-ইন। সেই প্রতিবাদ কাছে থেকে দেখিনি, তার আগের বছর ঢাবির পড়াশোনার পাট চুকিয়ে মাত্র কাজে নেমেছি। তবে প্রতিদিন সকালে অফিসে এসে দেখতাম, পত্রিকার শিরোনামে কিম্ভূত কিছু নাম। রেপিস্ট গ্রুপ বনাম কিলার গ্রুপ। শিক্ষার মহোত্তম কেন্দ্র, একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও যে এমন নাম-সম্বলিত হেডলাইন কাগজে বেরুতে পারে, তা সেবার স্পষ্ট হয়েছিল। দৃক-প্রধাণ শ্রদ্ধেয় ডঃ শহীদুল হক প্রায়শঃ shahidulnews শিরোনামে তাঁর ব্লগ, তাঁর ফটোগ্রাফি, এবং অন্যান্য বিভিন্ন কর্মকান্ড সম্পর্কে ইমেইল আপডেট দিয়ে পাঠান। আজকে এমনই একটা ইমেইলে সাইদিয়া গুলরুখ নামে একজনের লেখার লিংক পেলাম। লেখা পড়তে গিয়ে বুঝলাম তিনি বর্তমানে উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে অবস্থান করছেন, পাশাপাশি জাবির প্রাক্তন ছাত্রী। তাঁর লেখার মাঝেই ভেসে উঠলো নীচের এই কয়টি লাইন, নিমেষে নিয়ে গেল এক যুগ আগে। "An email from Jashim Uddin Manik’s friend finally arrived in my mail box. It expressed shock and grief at the untimely death of a close friend. It contained routine details which follow such news. Jashim Uddin Manik died in Padova, Milano at around 10.30pm local time (which I guess, on the basis of email exchanges, would be January 5, 2010). His body lies in a morgue while his Italian friends are making arrangements to send his body back to Bangladesh. Manik’s wife took the news very badly, she’s still not herself. In the email, Manik’s friend writes how hard it is for him to stop his tears, he urges everyone (the recipients of his email) to pray for the departed soul." কথা যদি সত্যি হয়, তাহলে ছাত্রলীগের ক্যাডার রেপিস্ট মানিক মারা গেছে। মাসখানেক আগে ইতালীতে। কি কারণে মারা গেল, কিভাবে মারা গেল, সেই সম্পর্কে আর কোন ডিটেইলস নেই। আছে তার বৌ আর বন্ধুদের শোকের কথা। এতটুকু পরিষ্কার যে সুদূর পরবাসে সে ছিল গত এক যুগ ধরে, নির্ঝঞ্ঝাটে, আইনের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ১০০তম মেয়েটিকে ধর্ষণ করার পরে যেই ছেলে ক্যাম্পাসে মিষ্টি বিতরণ করেছিল, আজ সে এমন জায়গায়…

আগের লেখার বিপরীতে বেশ কিছু মন্তব্য এসেছে। গত কয়েকদিনে গুগল-চীন দ্বন্দ্বেও আরো কিছু নতুন অগ্রগতি, কথা চালাচালি হয়েছে। সে সবে যাওয়ার আগে গুগল ঠিক কি কারনে চীন বর্জনের সিদ্ধান্তে উপনীত হলো (অন্তত তাদের হিসাবে) - সেটা একটু দেখা যাক। ভদ্রলোকের নাম আই ওয়েইওয়েই। তিনি অধুনা চীনের সবচেয়ে নামকরা শিল্পীদের একজন, এবং এর পাশাপাশি প্রথম কাতারের রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী (dissident)। মাস দুয়েক আগে তার জিমেইল একাউন্ট হ্যাক করা হয়। তিনি ছাড়াও হ্যাকার-রা আরো কয়েকজনকে টার্গেট করেছিল। গুগল যখন ঘটনাটি টের পায়, সাথে সাথে তারা অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে জানা যায় যে আই ওয়েইওয়েই-এর একাউন্টের সমস্ত ইমেইল তাঁর অজান্তে ঘাঁটাঘাঁটি হয়েছে, এবং কপিও করা হয়েছে। এর পাশাপাশি তাঁর ব্যাংকেও কিছু লোক পাঠানো হয়। তারা বলেন যে আই-এর বিরুদ্ধে সরকারী তদন্ত চলছে, এবং তাই তাঁর ব্যাংক একাউন্ট বিষয়ক সমস্ত তথ্য হস্তান্তর করতে হবে। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে চীন সরকার আই-কে বলে দিয়েছে যে, হয় সে তার মানবাধিকার নিয়ে চিল্লাপাল্লা বন্ধ করবে, নয়তো তাঁকে দেশত্যাগ করতে হবে। বলা বাহুল্য যে আই ওয়েইওয়েই এই দুটোর একটাও করতে চান না। কঠিন থেকে কঠিনতর আই-এর কেসই শেষ নয়। পুরো একটা পরিপ্র্রেক্ষিত আছে এখানে। চীনের গত তিন দশকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পিঠে বেশ কিছু মহলের আশা ছিল যে তাড়াতাড়ি না হোক, ধীরে ধীরে হলেও চীন সরকার কোন না কোন সময় রাজনৈতিক ভাবে আরেকটু উদারপন্থী হবে। ভিন্নমত বা ভিন্নপথের লোকদের আরেকটু কথা বলার জায়গা করে দেবে। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক-কে ঘিরে অনেকের এই আশা আরো বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইদানীংকালে দেখা যাচ্ছে যে উদার তো নয়ই, বরং চীনা সরকার দিনকে দিন আরো কঠোর হচ্ছে, আরো শক্ত হাতে সকল রকম প্রতিবাদের গলা টিপে ধরছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা - - ডিসেম্বর মাসে লেখক এবং রাজনৈতিক কর্মী লিউ শিয়াওবো-কে ১১ বছরের জেলদন্ড দেয়া হয়। তার দোষ কি ছিল? তিনি চার্টার ৮ নামে একটি মানবাধিকার ম্যানিফেস্টোর জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ করছিলেন। চার্টার ৮-এর সার কথা খুব যুগান্তকারী কিছু ছিল না। বাকস্বাধীনতা দিতে হবে। ভোটাধিকার দিতে হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার দিতে হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা দিতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষার গ্যারান্টি দিতে হবে। সাংবিধানিক…

বিশ্ব অর্থনীতির দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তির সাথে টক্কর লেগেছে ইন্টারনেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের। গত পরশু গুগল তাদের ওয়েবসাইটে ঘোষনা দিয়ে জানিয়েছে যে চীনে তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরিবেশ ক্রমাগত বিরূপ হয়ে পড়েছে এবং এই অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই তারা চীন থেকে তল্পি-তল্পা গুটিয়ে চলে যেতে বাধ্য হবে। গুগল ও চীনের এই সংঘর্ষের কি কোন শুভ পরিণতি আছে? একটু পেছনে তাকানো যাক। ইন্টারনেট ব্যবহার করে অথচ গুগল চেনে না, এমন লোক বোধ হয় লাখে একটাও পাওয়া যাবে না। এক কথায় ইন্টারনেটের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বহুলব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিনের নাম হলো গুগল। ১৯৯৬ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পিএইচডি অধ্যয়নরত ছাত্র ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন তাদের গবেষণার মাধ্যমে নতুন এক সার্চ এলগোরিদম প্রণয়ন করেন। এর আগে আরো অনেক সার্চ ইঞ্জিনই ছিল। ৯০-এর দশকে যারা নেট ব্যবহার করতেন তাদের অনেকের মনে থাকবে Lycos, Altavista বা Infoseek-এর কথা। কিন্তু কার্যকারিতার দিক থেকে এইসব ইঞ্জিনের চেয়ে গুগল অনেক বেশী সফল প্রমাণিত হয়। ইন্টারনেটে রয়েছে শত কোটি ওয়েবসাইট। এর মধ্যে থেকে ঠিক আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটুকুই এক নিমেষের মধ্যে খুঁজে বের করে সেটাকে আপনার সামনে হাজির করা - একেবারে সহজ কাজ নয়। কিন্তু পেজ ও ব্রিন এই দুঃসাধ্য কাজটিই সাধন করেন। কি লাগবে আপনার? মিটার থেকে ফুট হিসাব করতে চাই? বলে দেবে গুগল। সম্রাট অশোকের রাজধানীর নাম যেন কি ছিল? জানে গুগল। আচ্ছা, কেক বানাতে চাই, কিছু রেসিপি দরকার। গুগলে গিয়ে খোঁজ লাগাও। ১৯৯৯ সালে এক প্রযুক্তি পত্রিকায় আমি প্রথম গুগলের নাম শুনি। লাস ভেগাসে বাৎসরিক প্রযুক্তি সম্মেলনে সদ্য পুরস্কার জিতেছে নতুন এই কম্পানী - ক্রিকেটের গুগলির সাথে নামের বেশ মিল! খবরটা পড়েই আমি গুগলে গিয়ে আমার স্কুল জীবনের এক হারিয়ে যাওয়া সহপাঠীর নাম সার্চ দেই। শুধু এতটুকুই জানতাম যে সে বিদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। ঠিকই গুগল এনে দিয়েছিল তার নাম-ধাম, বর্তমানে কোথায় আছে কি করছে, এবং যোগাযোগের ইমেইল। বলা বাহুল্য, সেদিনের পর থেকে আজ অব্দি গুগল বিনা আর কোন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করার প্রয়োজন বোধ করিনি। গেল দশ বছরে গুগল আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাইক্রোসফট-কে ছাপিয়ে গুগল বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রযুক্তি কম্পানী। কোকাকোলা-কে টপকিয়ে গুগল এখন পৃথিবীর এক…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.