আর একদিন পরেই একমাস পূর্তি হবে, কিন্তু অভিজিৎ রায় হত্যা তদন্তের কোনও অগ্রগতি নেই। তিন মাস হতে চললো, অবরোধ-হরতালের সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিরীহ মানুষদের পেট্রোল বোমা মেরে হত্যা করা হচ্ছে, সে হত্যাযজ্ঞ বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। বিচারবহির্ভূত হত্যা চলছে অনেক আগে থেকেই — কিন্তু গত কয়েক মাসে তা নতুন এক ব্যাখা অর্জন করেছে; কেননা অনেকেই এখন এ সব ঘটনাগুলোকে নিরীহ মানুষ হত্যার সমান সমীকরণে দাঁড় করিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যার বিষয়টিকে হালকা করার খেলায় মেতে উঠেছেন। সুশীলদের গলা মাহমুদুর রহমান মান্না গ্রেফতার হওয়ার পর কয়েকদিন বেশ বসে গিয়েছিল, কিন্তু বিএনপি'র আত্মগোপনে থেকে ভিডিও বার্তা ও বিবৃতি দিয়ে হরতাল প্রদানকারী নেতা সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর তারা হালে পানি পেয়েছেন। [. . .]

আর একদিন পরেই একমাস পূর্তি হবে, কিন্তু অভিজিৎ রায় হত্যা তদন্তের কোনও অগ্রগতি নেই। তিন মাস হতে চললো, অবরোধ-হরতালের সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিরীহ মানুষদের পেট্রোল বোমা মেরে হত্যা করা হচ্ছে, সে হত্যাযজ্ঞ বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। বিচারবহির্ভূত হত্যা চলছে অনেক আগে থেকেই — কিন্তু গত কয়েক মাসে তা নতুন এক ব্যাখা অর্জন করেছে; কেননা অনেকেই এখন এ সব ঘটনাগুলোকে নিরীহ মানুষ হত্যার সমান সমীকরণে দাঁড় করিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যার বিষয়টিকে হালকা করার খেলায় মেতে উঠেছেন। সুশীলদের গলা মাহমুদুর রহমান মান্না গ্রেফতার হওয়ার পর কয়েকদিন বেশ বসে গিয়েছিল, কিন্তু বিএনপি’র আত্মগোপনে থেকে ভিডিও-বার্তা ও বিবৃতি দিয়ে হরতাল প্রদানকারী নেতা সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর তারা হালে পানি পেয়েছেন। এই ডামাডোলে ঘুরে ফিরে একটি কথাই উঠে আসছে তাদের প্রতি নম্র টকশোজীবীদের পক্ষ থেকে — সংলাপ, সংলাপ চাই। সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। কথা হলো, সংলাপ কি হচ্ছে না? দেখা যাচ্ছে, সংলাপ প্রতিদিনই হচ্ছে। স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে প্রতিদিন টক-শো নামের যে বস্তুটি হয়, তা তো সংলাপেরই নামান্তর। প্রতিদিন সংলাপ হচ্ছে, প্রতিদিন সে সংলাপের ফলাফলও দেখা যাচ্ছে — কোনো অগ্রগতি নেই। শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়াকে যদি সর্বোচ্চ সংলাপকারী ভাবি, এঁরা তা হলে তাদেরই প্রাথমিক কিংবা কিংবা মধ্য পর্যায়ের সংলাপকারী; তাঁরাই যেখানে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছেন না, ওনারা সংলাপে বসবেন কোথা থেকে? তাঁরা তো আর দিনের পর দিন সংলাপ করবেন না। যাঁরা আসলে সংলাপের কথা (পক্ষে হোক আর বিপক্ষে হোক) বলছেন, তাঁরা আসলে প্রতারণা করছেন; কেননা সংলাপের কথা বলে তাঁরা কালক্ষেপণ করছেন, সাধারণ মানুষদের যারা হত্যা করে চলেছে তাদের আয়ু বাড়াচ্ছেন। পেট্রোলবোমায় নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধের কোনও সম্ভাবনা নেই, কিন্তু সরকার ও নির্বাচন কমিশন আকাশেবাতাসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের হাওয়া ছড়াচ্ছে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা চিন্তা করছেন, এইভাবে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে। বিএনপির কথিত আন্দোলন ধামাচাপা পড়বে, অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশনগুলোর নির্বাচনে একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা যাবে। কিন্তু হিতে বিপরীত হতে চলেছে, কেননা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়ার চিন্তাভাবনা করছে এবং তা তাদের কথিত আন্দোলন বন্ধ না করেই। কেননা কাগজেকলমে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনগুলো নির্দলীয় ব্যানারেই হয়ে থাকে এবং তাই দলীয় কথিত আন্দোলনের কর্মসূচি বন্ধ না…

১৭ সেপ্টেম্বর সকালে কাদের মোল্লার রায় শুনতে শুনতে মনে হয়েছিল, এর চেয়ে বড় সংবাদ আর কী-ইবা হতে পারে; কিন্তু দিনের শেষে এসে দেখলাম, তার চেয়েও বড় সংবাদ হলো, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা গণপরিষদ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এ দেশের নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে দেয়া গণসংবর্ধনা ও সেখানে প্রদত্ত বক্তৃতাসমূহ।...

১৭ সেপ্টেম্বর সকালে কাদের মোল্লার রায় শুনতে শুনতে মনে হয়েছিল, এর চেয়ে বড় সংবাদ আর কী-ইবা হতে পারে; কিন্তু দিনের শেষে এসে দেখলাম, তার চেয়েও বড় সংবাদ হলো, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা গণপরিষদ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এ দেশের নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে দেয়া গণসংবর্ধনা ও সেখানে প্রদত্ত বক্তৃতাসমূহ। মুক্তিযোদ্ধা গণপরিষদ নামের এ সংগঠনটি এমন একটি সংগঠন, ড. ইউনূসের চারপাশে সমবেত মুক্তিযোদ্ধারা এমন সব মুক্তিযোদ্ধা, সকালে কাদের মোল্লার ফাসির সংবাদ শোনার পরও যাদের চোখেমুখে কোনও উচ্ছ্বাস জমে না, যারা একবারও শ্লোগান দিয়ে যুদ্ধাপরাধী বিচারের প্রত্যয় ঘোষণা করে না এবং যাদের আয়োজিত গণসংবর্ধনার অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে ‘প্রধানমন্ত্রীর মানসিক সুস্থতার জন্যে ডক্টর ও ডাক্তার সাহেবদের দোয়া মাহফিল’! গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছিল এমন একটি দিন, যেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজিত কোনও অনুষ্ঠানে বা কোনও আলোচনা সভায় ঘুরেফিরে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে একজন যুদ্ধাপরাধীর আন্তর্জাতিক অপরাধের চূড়ান্ত বিচারে সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার এবং সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়া স্বস্তির কথা উচ্চারিত হওয়ার কথা। কিন্তু ড. ইউনূস থেকে শুরু করে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রতিটি বক্তা ও প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাই সে কথা ভুলে বসে ছিলেন। যেদিনটিতে ওই গণসংবর্ধনা দেয়া হয়েছে সেদিনটি আরও একটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ-১৯৬২ সালের ওই দিনটিতে গণবিরোধী শরীফ খানের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছাত্ররা রক্ত দিয়েছিল। কাদের মোল্লার মতো যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি পাওয়ার বিষয়টি যাদের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে, শিক্ষা দিবসের কথাও যে তারা ভুলে থাকবেন, সেটিই স্বাভাবিক। অতীত যাদের কাছে টিস্যু পেপারের মতো বর্জ্য পদার্থ, তাদের দিয়ে বাণিজ্য ভালো জমতে পারে, কিন্তু মানুষের, রাষ্ট্র ও সমাজের অগ্রগতি হতে পারে না। তা হলে কী আলোচনা হয়েছে এ অনুষ্ঠানে? সে প্রসঙ্গে যাওয়ার একবার দেখে নেয়া যাক, কারা এ অনুষ্ঠানে ছিলেন বা বক্তৃতা রেখেছেন। এ অনুষ্ঠানে ছিলেন ১. ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২. ড. কামাল হোসেন ৩. ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৪. ড. আসিফ নজরুল ৫. শমসের মবিন চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা গণপরিষদের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা আইন উদ্দিন (অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল) বীর প্রতীক, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, সংগঠনের মহাসচিব সাদেক খান প্রমুখ। এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আর যেতে…

রক্ষা হলেও হতে পারে একমাত্র এই উপায়ে। [...]

রক্ষা হলেও হতে পারে একমাত্র এই উপায়ে। প্রাকবুথ সমীক্ষা বুথফেরত সমীক্ষা এসব ভাল, এসব যথেষ্ট মনোযোগের সাথে পড়া আমার অনেক দিনের অভ্যাস, এবং এটা পশ্চিমে বিজ্ঞান হয়ে উঠেছে আজকাল, পরিসংখ্যানের এই বিশেষ তথ্যবিশ্লিষ্ট হাতে পাওয়া জ্ঞান কখনো কখনো অতিমাত্রায় অমোঘ হতেও দেখা গেছে সেখানে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো শেষ মুহুর্তের বেনিফিটঅফডাউটের আনুকূল্যটাই অর্জিত সিদ্ধান্তের মোক্ষম দাগটা উপহার দেয় সঙ্গতভাবেই। কাজেই একরৈখিক উদ্দীপক সিটিকর্পোরেশন ইয়াবা এবং প্রনিধাণযোগ্য পোলভল্ট প্রত্যয় দুটোই সত্য এবং এর উপর ভিত্তি করেই নির্বাচনী শক্তিগুলো এগুবে কিন্তু সুনিশ্চিত করে কেউ বলতে পারবে না ইয়াবার দ্রব্যগুণে সাফল্য আসবে বা প্রত্যয়ের মুখ লক্ষ্যে পৌঁছে শেষ হাসি হাসবে। এই বলতে না পারাকে যে যত বেশি গুরুত্বের সাথে নেবে, এই অনিশ্চয়তার শক্তিকে যে যত বেশি স্নায়ুতে ধারণ করতে পারবে, সংখ্যাতত্ত্বের পাশাপাশি যে মনস্তত্ত্বকে ও নিজের কাজের নিষ্ঠা ও কূটকৌশলকে অনিশ্চিত পথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রাখতে পারবে চূড়ান্ত মুহূর্তের সমীকরণ তার দিকেই হেলে থাকবে। যে যত বেশি দূরবর্তীতে আঘাত হানতে পারবে, মহাবিশৃঙ্খলাকে যে যত বেশি ম্যাট্রিক্সে ধরতে পারবে, নিউইয়র্কে প্রজাপতির পাখা ঝাপটানোতে কোপাকাবানার সমুদ্রসৈকতে বাতাসের গতি যে বাড়তে পারে, কাশীধামে কাক মরেছে কামরূপেতে হাহাকার যে সত্যিই হয়, মস্কোতে বৃষ্টি হলে ঢাকাতে ছাতা খোলার যে আসলেই প্রয়োজন আছে – এসব আন্তসম্পর্কের যে যত বেশি ঘনিষ্ঠ হতে পারবে সে তত এগিয়ে থাকবে। কারণ কেন্দ্রে বসেও ঊর্ণনাভ প্রান্তিকের টানাপোড়েন টের পায় নাভির সক্ষমতায় – ওই প্রান্তিকের হিসাব যার যত সূক্ষ্ণ হবে, ব্যাটের কোনাকাঞ্চির জ্ঞান যার যত বেশি, দৌড়ে পৌঁছে যাওয়ার জীবনীশক্তি ও স্পৃহা যার যত বেশি অনিশ্চিতের ফলে তার তত হাত।

জোসে ফার্নান্দেজকে আমাদের পক্ষে এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়-সংক্রান্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি তিনি। গত মে মাসের শেষদিকে বাংলাদেশ সফর করতে এসে এই ফার্নান্দেজ আমাদের জানিয়েছিলেন, দু দেশের মানে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।...

জোসে ফার্নান্দেজকে আমাদের পক্ষে এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়-সংক্রান্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি তিনি। গত মে মাসের শেষদিকে বাংলাদেশ সফর করতে এসে এই ফার্নান্দেজ আমাদের জানিয়েছিলেন, দু দেশের মানে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। তবে তার ওই কথা বোধহয় অনেকের মনে তত দাগ কাটেনি। কেননা প্রায় একই সময় বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরম্যান -সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছিলেন। রাজনীতিবিষয়ক আর বাণিজ্যবিষয়ক দু জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির প্রায় একই সময়ের সফরের মাত্র দু পক্ষের মাথায় গত ১৭ জুন বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে টিকফার খসড়া চুক্তি অনুমোদন মিললেও এ দেশের গার্মেন্টস শিল্প জিএসপি সুবিধা বঞ্চিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, ফার্নান্দেজ শুধু ইঙ্গিত নয়, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎই নির্ধারণ করে গিয়েছেন। এখন কেঁদেকেট সাতকুল ভাসালেও বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয় সেই ভাগ্যরেখা থেকে বেরিয়ে আসা। এক অর্থে,গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বি-পক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্কের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। গত এক দশকের হিসেবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হওয়ার ঘটনা তো আছেই-পাশাপাশি রয়েছে গত দু বছরেই এ বাণিজ্য ১১ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার রেকর্ড। এরকম প্রেক্ষাপট থাকার পরও ফার্নান্দেজ গত ২৬ মে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাত ফোরামের বাণিজ্য ও বিনিয়োগবিষয়ক অধিবেশনের বক্তব্যে সম্পর্কজনিত জটিলতার কথা তুলেছিলেন। একই অধিবেশনে ঢাকা চেম্বারের পরিচালক মহিউদ্দিন মোনেম বলেছিলেন, ‘টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর করা হলেই জিএসপি সুবিধা থাকবে-এরকম হলে চলবে না।’ নিশ্চয়ই মহিউদ্দিন মোনেমের বক্তব্যটি কথার কথা ছিল না। অনেকে মনে করেন, টিকফার সঙ্গে জিএসপি ইস্যুর কোনও সম্পর্ক নেই, ঠিক তেমনি সম্পর্ক নেই জিএসপির স্থগিতাদেশের সঙ্গে ওয়াশিংটন টাইমসে খালেদা জিয়ার অভিমত-নিবন্ধ লেখার। জিএসপি ইস্যুটি নিতান্তই শ্রম অধিকার ও কর্মপরিবেশের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং সে নিরিখেই গত সপ্তাহে বাংলাদেশে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে বলে মনে করেন তারা। বিষয়টি এরকম সহজ, সরল হলে ভালোই হতো। ‘বিশ্বে থাক সহজ সুখে, সরল আনন্দে’ রবীন্দ্রনাথ আমাদের এরকম পরামর্শই দিয়ে গেছেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই ‘সহজ কথা যায় না লেখা সহজে’র মতোই সহজে কি সহজ থাকা সম্ভব? সহজে কি সব কিছু সহজ ভাবা সম্ভব? আপাতদৃষ্টিতে এরকমই মনে…

উদার জাতীয়তাবাদী, উদার ধর্মবিশ্বাসী, উদার উন্নয়নকর্মী, উদার গণমাধ্যমকর্মী, উদার বাম, উদার সাংস্কৃতিককর্মী – রক্ষণশীল ও গড্ডল মধ্যপন্থীদের মধ্যের উদারতান্ত্রিকদের পেলে তো আরো ভাল, না পেলে তাদের ছাড়াই একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ এখন খুবই জরুরি। [...]

এবং খুব দ্রুত, এমাসে দলের নাম গঠনতন্ত্র নিয়ে কাজ গুছিয়ে মে মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হোক। বাংলাদেশের উদারতান্ত্রিকতার একটা রাজনৈতিক পরিচয়ের শক্তিসঞ্চয় খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। উদার জাতীয়তাবাদী, উদার ধর্মবিশ্বাসী, উদার উন্নয়নকর্মী, উদার গণমাধ্যমকর্মী, উদার বাম, উদার সাংস্কৃতিককর্মী – রক্ষণশীল ও গড্ডল মধ্যপন্থীদের মধ্যের উদারতান্ত্রিকদের পেলে তো আরো ভাল, না পেলে তাদের ছাড়াই একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ এখন খুবই জরুরি। গণজাগরণ শুধু ‘মটিভেশন’ ‘প্রেসার গ্রুপ’ এসব কাজ করে বেশি দূর যেতে পারবে না এটা ঠিক নয় – যেতে ঠিকই পারবে। কিন্তু এটা কি আরো ভাল নয় নিজেদের কাজের মূল্যায়ন নিজেরা করার রাজনৈতিক শক্তি অর্জনের চেষ্টা করা? কারণ রাজনৈতিক শক্তি অর্জনের সত্যিকারের চেষ্টা একটা এমন প্রক্রিয়া যা বহুবর্ষব্যাপী মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে স্বতঃজাগ্রত রাখতে সবচেয়ে সাবলীল সংগ্রামী সংঘবদ্ধতা। এবং এর কোনো বিকল্প নেই। অনেক দূর হাঁটার মানসিক শক্তির সম্মিলন হলে গণজাগরণকে প্রজন্মের দাবিকে নিজেদের রক্ষাকবচ ধরে নিয়ে রাজনৈতিক শক্তির পথে বেরিয়ে পড়াটাই হবে আজকের স্বরাজ। আশু লক্ষ্য হবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৫ থেকে ১০ ভাগ ভোট নিজেদের করায়ত্ত করার কঠিন রাজনৈতিক সংকল্পে নিজেদের শ্রেষ্ঠ সময়ের সাধ্যের সমস্ত পরিশ্রম নিংড়ে দেয়া। এবং সেটা সংকল্পবদ্ধ হলে করা সম্ভব। প্রাণ দেয়ার প্রয়োজন নেই সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দিলে সংঘবদ্ধতায় কঠিন থাকলে এরকম একটি রাজনৈতিক দল আমরা পেতেই পারি, যার হাতের শক্তি সঞ্চয়ে উদারতান্ত্রিকতার মুক্তিসংগ্রামের বাঙালির আন্তঃধর্মের সকল-জনজাতির বাংলাদেশ নির্ভয়ে মুক্তপথের পথিক হতে পারবে।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.