বাংলার মুসলিম রাজনীতি ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৫ এর প্রতিরোধ কাটিয়ে অনেকদিন থেকেই ইসলামী রাজনীতির লক্ষ্যেই এগিয়ে চলছে। এই ইসলামী রাজনীতিকে কি আমরা প্রতিরোধ করতে পারব? আপাতত তো এর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু যদি প্রতিরোধ জেগেই ওঠে ধীরে ধীরে, তবে কি আবার যুদ্ধ? যদি তাই হয় তাহলে সে যুদ্ধ কত দূরে? আর যদি যুদ্ধের প্রয়োজন না হয়, তাহলে শুধু প্রতিরোধেই ইসলামী রাজনীতির লক্ষ্যচ্যুতি ঘটবে? নাকি কোনো প্রতিরোধই গড়ে উঠবে না? চলবে শুধু এগিয়ে যাওয়া, ইসলামী রাজনীতির? ভোট এক্ষেত্রে কিছু করতে পারে? আসন্ন ভোটের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি। তাকিয়ে আছি সামনের পাঁচটি বছরের দিকে, ওই পাঁচ বছরে ওপরের মৌলিক প্রশ্নটির উত্তর আমরা পেয়ে যাব আশা করি। বাংলার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হোক। ভোটের প্রাক্কালে সবার কাছে রইল এই আহ্বান। জয় বাংলা।

দু’হাজার আট-এর ডিসেম্বর মাসটি বাঙালির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে জিতে কারা ক্ষমতায় যাবেন তা নিয়ে সর্বত্র জল্পনা। ইতোমধ্যে ১৭ ডিসেম্বর থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নিচ্ছে সরকার। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট, আর বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি। সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের এই দলটি অনেক দরকষাকষি শেষে ৪৯টি আসন নিয়ে মহাজোটে থাকতে পেরেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সাবেক স্বৈরাচারী শাসক এরশাদের জাতীয় পার্টির ঐক্য আদৌ হওয়া উচিত ছিল কি না তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন। কারণ এই এরশাদ শাহীর অবৈধ ক্ষমতায় থাকার নয় বছরে দেশে গণতন্ত্রকে হত্যার ব্যাপক তৎপরতা লক্ষণীয় ছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের জন্য আদালতে মামলা হয়েছিল এরশাদের বিরুদ্ধে। সেলিম, দেলওয়ার, ডা. মিলন, বসুনিয়া, নূর হোসেন প্রমুখ শহীদদের বুক ঝাঝরা করা হয়েছিল এই স্বৈরশাসকের মসনদ বাঁচাবার জন্যই। ব্যাপক রক্তপাতের মাধ্যমে সৃষ্ট নব্বইয়ের গণ-আন্দোলন এরশাদের পতনের সূত্রপাত করে। তিনি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান। জাতির জীবন থেকে এই যে একটি দশক অবৈধভাবে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন জেনারেল এরশাদ এর কোনো কৈফিয়ত তিনি কি রাষ্ট্রের জনগণকে দিয়েছেন? না, দেননি। বরং আজ তিনি আরেকটি প্রধান দলের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে রাষ্ট্রের নিয়ামক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর আছেন। এ দুর্ভাগ্যটি গোটা রাষ্ট্রের মানুষের। অন্যদিকে বিএনপি এমন একটি দলের সঙ্গে মোর্চা করে নির্বাচন করছে, যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গোটা জাতির স্বপ্নের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। গণহত্যা, ধর্ষণ, নারীর সম্ভ্রমহানি, লুটপাট, বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ কোন হীন কাজটি রাজাকার আলবদররা করেনি? সেই বদর বাহিনীর প্রধান কর্ণধারদের মন্ত্রীত্ব দিয়ে বিএনপি তাদের মসনদ পাকাপোক্ত করার কাজটি সম্পন্ন করেছিল বিনাদ্বিধায়। ২০০৮-এর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেই রাজাকার চক্রের সঙ্গেই ঐক্য করে মেনিফেস্টো দিচ্ছে বিএনপি। বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ মনে করেন আওয়ামী লীগ জাপার সঙ্গে ঐক্য না করেও নির্বাচনে ভালো ফলাফল পেতে পারতো। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে সংশয়বাদী বলেই মনে হয়েছে। অনেকেই মনে করেন বর্তমান প্রেক্ষাপটে এরশাদের জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করে দেশে বড়জোর দশটি আসন পেতে পারে। বিষয়টি শেখ হাসিনা তার বিভিন্ন জরিপ-সমীক্ষায় জানতে-বুঝতে পেরেছেন বলেই আমি বিশ্বাস করি। তারপরও পতিত স্বৈরাচারের সঙ্গে মহাজোট…

একটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের পথ সুগম হোক এটাই সাধারণ মানুষের কামনা। কিন্তু বড় দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে চার দল। বিশেষ করে বিএনপি। তাদের অনেক দাবি। ক্রমেই দাবি কমতে শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশন তাদের কথায় ফিরে গিয়েছিল। তারা বলেছিল, ১৮ ডিসেম্বরই নির্বাচন হবে। তখন ‘আক্কেল গুড়ুম’ হলো খোন্দকার দেলোয়ারের। আবার তার কণ্ঠের সুর নরম হয়ে এলো। আবার তারা বৈঠক করলেন। কিছু দাবি কমালেন। এখন ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে। ২২ জানুয়ারি হবে উপজেলা নির্বাচন। তারপরও দাবি তারা করেই যাচ্ছেন আরপিও ৯১(ই) ধারা বাতিল করতে হবে। জরুরি অবস্খা তুলে নেয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা তারা চান। এটা বিএনপির রাজনীতিকরা খুব ভাল করেই জানেন, জরুরি অবস্খা তুলে নিলেও অলিখিত জরুরি অবস্খা থেকেই যাবে। নির্বাচন উপলক্ষে বহুজাতিক বাহিনী মাঠে থাকবে সর্বোচ্চ পাওয়ার নিয়ে। কারণ দেশে অবাধ নির্বাচন করতে তারা বদ্ধপরিকর। সেটা সাধারণ মানুষও চায়। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমছে নতুন খেলা। দল বদলের পাখিরা নতুন তরণী ভাসাচ্ছে। শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, তার দলের কিছু নেতাকেও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে কেউ কেউ। সুযোগ সানীরা দলবদল করে। জনগণ তাদের চিনে খুব ভাল করেই। এরা জনগণের কাছে চিহ্নিত। কিন্তু যারা কখনও এলাকায় যায়নি, যারা নিজ অঞ্চলের মানুষের সুখে-দু:খে কখনই পাশে দাঁড়ায়নি­ এরা মনোনয়ন পাচ্ছে কিভাবে? বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এর আগেও বিদেশে ‘আবাসন’ গ্রহণকারীরা এমপি হয়েছেন। বিদেশের পাসপোর্টও নাকি কারও কারও কাছে ছিল। এবারও তেমন ব্যক্তিরা নমিনেশন পাচ্ছেন। আবার তদবির করছেন। যারা বিদেশের ইমিগ্রেশনের কাছে ডান হাত তুলে শপথ করে বিদেশের বশ্যতা স্বীকার করে নাগরিকত্ব নিয়েছেন, তারা দেশে গিয়ে এমপি হওয়ার দাবি রাখেন কি? দলইবা এদের মনোনয়ন দেয় কিভাবে? মৌসুমি পাখি সেজে দরদি সাজতে চাইছে তারা। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে তথ্যানুসান করলে আরও অনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে। জানা যাবে তাদের অতীত কর্মকাণ্ডও। ‘তারুণ্যের নেতৃত্ব’ তৈরির নামে কোন অশুভ শক্তিকে প্রমোট করার চেষ্টা করা হচ্ছে কি না তা ভেবে দেখতে হবে। এটা দেশবাসীর অজানা নয়, বড় দুটি দল থেকে যারা মনোনয়ন পাবেন তারা দুই নেত্রীর কাছ থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পরই ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন। কিন্তু দুই নেত্রী কি সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধভাবে প্রার্থী মনোনয়ন করবেন কিংবা করতে পারবেন? এমনটি…

পরীক্ষামূলক পোস্ট১

স্বাগতম।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.