|| সন্তগণ ও ধর্মদ্রোহীবৃন্দ (শেষার্ধ) || অনেক বছর পর, দ্বাদশ শতকের মধ্যভাগে গোটা খৃষ্ট সম্প্রদায়ের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ছিলেন ক্লেয়ারভয়ের বার্নার্ড নামের একজন আয়োজক এবং মরমীবাদী। তিনি-ই ছিলেন সিস্টার্সীয় সম্প্রদায়ের ব্যাপক সম্প্রসারণের পেছনের চালিকা শক্তি [ . . . ]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   সন্তগণ ও ধর্মদ্রোহীবৃন্দ (শেষার্ধ) অনেক বছর পর, দ্বাদশ শতকের মধ্যভাগে গোটা খৃষ্ট সম্প্রদায়ের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ছিলেন ক্লেয়ারভয়ের বার্নার্ড নামের একজন আয়োজক এবং মরমীবাদী। তিনি-ই ছিলেন সিস্টার্সীয় সম্প্রদায়ের ব্যাপক সম্প্রসারণের পেছনের চালিকা শক্তি; বেশ কিছু মঠ স্থাপিত হয়েছিল, এমনকি সেই দূর সুইডেনেও। এছাড়াও, তিনি ছিলেন একজন বহুপ্রজ লেখক। তাঁর রচনা সংগ্রহের সংস্করণ — যার মধ্যে রয়েছে হিতোপদেশ, ধর্মতাত্ত্বিক প্রবন্ধ, চিঠি-পত্র, এবং আরো অনেক কিছু, এবং তার প্রতিটি শব্দ লাতিন ভাষায় রচিত — নয় খণ্ডে সমাপ্ত। সবচাইতে বিখ্যাত ব্রিটিশ সন্ত টমাস বেকেট জীবনের প্রথম ভাগে তাঁর সন্তসুলভ স্বভাবচরিত্রের জন্য পরিচিত ছিলেন না মোটেই। বিদ্বান এবং অত্যন্ত প্রাণচঞ্চল এই যাজক রাজা দ্বিতীয় হেনরীর সময়ে চ্যান্সেলর পদে সমাসীন হয়েছিলেন। সে যাই হোক, তাঁর বন্ধু রাজা যখন তাঁকে ক্যান্টারবেরির আর্চ বিশপ নিযুক্ত করলেন তিনি অত্যন্ত নাটোকীয়ভাবে তাঁর জীবনযাপন পদ্ধতি বদলে ফেলেন এবং খৃষ্ট সম্প্রদায়ের স্বার্থ কি করে আরো ভালো ভাবে রক্ষা করা যায় সে-কাজে নিজেকে উৎসর্গ করলেন। এতে করে রাজা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তাঁর ওপর এবং তাদের পরবর্তী দীর্ঘ দ্বন্দ্বের পরিণতিতে টমাস বেকেট তাঁর নিজের ক্যাথিড্রালে আততায়ীদের হাতে খুন হন। শিগগিরই তাঁকে সন্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়, এবং গোটা মধ্য যুগ ধরেই অসংখ্য মানুষ তাঁর সমাধিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যেতো। এরকমই এক যাত্রার পটভূমিতেই রচিত হয়েছে চসারের ‘ক্যান্টারবেরি টেলস’। এই তিন সন্ত স্রেফ অসংখ্য সেই সব লেখকের কিছু উদাহরণ যাঁরা মধ্যযুগে খৃষ্ট সম্প্রদায় সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখালেখি করেছেন। এসবের বেশিরভাগই আসলে খুব একটা তরল লেখা নয়, বরং এসবের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ সেই সব বিদ্বজ্জনের জন্য অমূল্য উৎস যাঁরা এমন এক সময়ের ইতিহাস, নানান ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-ভাবনার পদ্ধতি সম্পর্কে উৎসাহী যে সময় আমাদের সময়ের চাইতে খুবই অন্যরকম। স্পষ্টতই, ঠিক একই কথা ধর্মীয় বিন্যাসের অপর প্রান্তের মানুষজনের বেলাতেও খাটে, সেই সব মানুষের বেলায় যাঁরা ধর্মদ্রোহী বলে নিন্দিত। ইতিহাসের অসংখ্য পর্যায়ে খৃষ্ট ধর্ম বা গির্জার সংস্কার সাধন বা তার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ার জন্য নানান আন্দোলন বিকাশ লাভ করেছে। এদের মধ্যে সব চাইতে…

|| গ্রন্থাবলী ও লিপিকরবৃন্দ (শেষার্ধ) || তারপরেও, প্রায় এক সহস্রাব্দ ধরে, প্রাচীন যুগের সংস্কৃতি প্রচার করার দায়িত্ব প্রায় নিরঙ্কুশভাবে ছিল বিভিন্ন মঠগুলোর স্ক্রিপ্টোরিয়াম বা লেখার ঘরগুলোর ওপর। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   গ্রন্থাবলী ও লিপিকরবৃন্দ (শেষার্ধ) তারপরেও, প্রায় এক সহস্রাব্দ ধরে, প্রাচীন যুগের সংস্কৃতি প্রচার করার দায়িত্ব প্রায় নিরঙ্কুশভাবে ছিল বিভিন্ন মঠগুলোর স্ক্রিপ্টোরিয়াম বা লেখার ঘরগুলোর ওপর। সেখানে যেসব পাণ্ডুলিপি তৈরি হতো সেগুলো সহজপাঠ্য ছিল না সবসময়। সমস্যাটা যে হাতের লেখারই ছিল সাধারণত তা নয়, যদিও অবশ্যই লিপিকর, কাল, এবং স্থানভেদে লিখন শৈলীর তফাত হতো প্রায়ই। হস্তরেখা পরীক্ষা করে একটি পাণ্ডুলিপি তৈরির স্থান ও কাল সম্পর্কে মূল্যবান সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিদ্যাটিকে বলা হয় ‘paleography’; লাতিন টেক্সট নিয়ে যাঁরা ঐকান্তিকভাবে কাজ করেন তাঁদের প্রত্যেকের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এমনকি যখন সেগুলো লিপিকরের নিজস্ব ধরন বা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, তখনো বেশিরভাগ হস্তরেখাশৈলী যথেষ্ট পরিষ্কার ও সুসামঞ্জস্যপূর্ণ; কাজেই কেউ একবার হরফগুলোর আকৃতি-প্রকৃতি চিনে ফেলতে পারলে কোনো নির্দিষ্ট টেক্সটের অক্ষরগুলো বুঝতে পারা কঠিন কোনো বিষয় নয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, সমস্যার এখানেই শেষ নয়। একটা বড়সড় অসুবিধার জায়গা হচ্ছে — বিশেষ করে এ-কাজে যারা নতুন তাদের জন্য — শব্দ সংক্ষেপগুলো। চর্মপট মহার্ঘ হওয়ায়, যতটুকু জায়গা পাওয়া যেতো তার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করাটা জরুরি ছিল। তাছাড়া, লিপিকরেরা প্রয়োজনাতিরিক্ত কোনো অক্ষর লেখার ব্যাপার তেমন উৎসাহী ছিলেন না, কাজেই শব্দসংক্ষেপের বেশ কিছু উপায় ছিল তাদের। তার মধ্যে সবচাইতে প্রচলিত ছিল একটা হরফের ওপর একটা রেখা টেনে দেয়া, যে রেখাটা সেই হরফের পর একটা ‘m’ বোঝাত; কাজেই ‘uerbum’ না লিখে ‘uerbū’ লিখতেন তাঁরা। এই একটা ব্যাপার হয়ত কঠিন কিছু না। কিন্তু মুশকিল হলো দুর্ভাগ্যক্রমে রেখাটা অন্য কয়েকটা জিনিস-ও বোঝাতে পারতো, যেমন, ‘r’ রয়েছে এমন কোনো সিলেবল-এর লোপ। কাজেই ‘uerbum’ -এর স্থলে আপনি 'ūbū' লিখতে পারতেন, যা অনভিজ্ঞ পাঠককে একটু মুশকিলে ফেলে দেয়। আর এটা তো কেবল শুরু; এছাড়াও ছিল আর কয়েক ডযন শব্দসংক্ষেপ, এবং সেগুলো ব্যবহারের হাজারটা উপায়। আরেকটা সমস্যা যতি বা বিরামচিহ্ন। অনেক পাণ্ডুলিপিতেই বিরামচিহ্নের কোনো বালাই নেই বললেই চলে, বা যখন তাদের দেখা মেলে তখন সেগুলো আমরা আজ যেসব ব্যবহার করি তার মতো নয়, এবং ওসব ব্যবহারের রীতিনীতিগুলো আমাদেরগুলোর চাইতে একেবারেই ভিন্ন রকম। পাঠককে…

|| বাচন ও বানান (শেষ অংশ) || ব্যঞ্জনবর্ণের ভেতর কিছু অভ্যাস চলে এসেছিল ফরাসির মাধ্যমে লাতিন শেখানোর সময়, যেমন ‘Iulius’ আর ‘Ianuarius’ শব্দ দুটোর আদ্যক্ষর ‘i’-এর উচ্চারণে আর ‘genius’ ও ‘gens’-এর ‘g’ এর উচ্চারণে [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   বাচন ও বানান (শেষ অংশ)   ব্যঞ্জনবর্ণের ভেতর কিছু অভ্যাস চলে এসেছিল ফরাসির মাধ্যমে লাতিন শেখানোর সময়, যেমন ‘Iulius’ আর ‘Ianuarius’ শব্দ দুটোর আদ্যক্ষর ‘i’-এর উচ্চারণে আর ‘genius’  ও ‘gens’-এর ‘g’ এর উচ্চারণে, সেই ধ্বনিটির সঙ্গে (যাকে টেকনিকালি এফ্রিকেট বলা হয়) যেটাকে আমরা এখোনো পাই    ‘January’ আর ‘gentle’-এ। সেই সঙ্গে ফরাসি থেকে এসেছে  [s] হিসেবে ‘c’-এর ‘মৃদু’ উচ্চারণ, ‘censeo’ আর ‘cella’ শব্দ দুটোয়। যতক্ষণ পর্যন্ত ইংরেজিতে একটি অনুরণিত (trilled) ‘r’-ধ্বনি ছিল (যে ধরনের ধ্বনি এখনো স্কটিশ ভাষায় এবং কিছু কিছু আঞ্চলিক উচ্চারণভঙ্গি বা টান —accent-এ বিদ্যমান), ততদিন একটি ব্যঞ্জনবর্ণের আগে বা কোনো শব্দের শেষে লাতিন ‘r’-এর কাছাকাছি কিছু একটা উচ্চারণ করবার ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়নি, যেমন ‘cornu’ বা ‘শিঙ’-এ, বা, ‘pater’-এ। যাই হোক, দক্ষিণী তথা প্রমিত ইংরেজি উচ্চারণে এই ধ্বনিটির বিলোপের পর ‘parcis’ (you spare) ও ‘pacis’ (of peace)-এর মতো জোড়া শব্দের মধ্যে তফাত ধরতে বা ‘cerno’ (I see) ও ‘virtus’ (virtue)-র মতো শব্দে সঠিক স্বরাঘাত সম্পন্ন স্বরবর্ণ উচ্চারণ করতে অসুবিধের মুখোমুখি হয় ইংরেজিভাষীরা। একইভাবে, শব্দের শেষে (যেমন ‘feel’ আর ‘fall’-এ), বা ব্যঞ্জনবর্ণের আগে (যেমন ‘felt’ ও ‘film’-এ) ইংরেজি ‘l’ (এল)-এর যেমন একটি ‘ডার্ক’ বৈশিষ্ট্য রয়েছে (কিছু ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের সময় জিভের পেছনদিকটা টাকরা বা তালুর দিকে উঠে আসা, যেমন ‘l’-এর বেলায়), ‘alter’ (other — অপর, অন্য) ও ‘mel’ (honey — মধু)-এর মতো শব্দের সনাতন উচ্চারণ একই রকমভাবে ভুলের দিকে এগোয়। বেশ কয়েক বছর ধরে নানান চেষ্টা চলে সংস্কার সাধনের। ষোড়শ শতকে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধ্রুপদী উচ্চারণের অভ্যাসগুলোতে ফিরে যাওয়ার পক্ষে বেশ জোরালো তদবির চলেছিল, তার পুরোধা ছিলেন মহান ওলন্দাজ ক্লাসিকাল পণ্ডিত ইরাযমাস, যিনি ১৫২৮ খৃষ্টাব্দে প্রকাশিত তাঁর সংলাপমূলক রচনা ‘De recta Latini Graecique sermonis pronuntiatione’ (‘লাতিন ও গ্রীক ভাষার সঠিক উচ্চারণ প্রসঙ্গে’) এই প্রচার চালিয়েছিলেন। অবশ্য নানান যুক্তিতে সেটির বিরোধিতা করা হয়, এবং তার মধ্যে অত্যন্ত জোরালো ছিল এটি যে তাতে করে অক্সফোর্ড ও কেম্ব্রিজে লাতিন উচ্চারণ ভিন্ন হয়ে পড়বে! প্রায় চার শতক পরে ফিরে…

|| বাচন ও বানান (প্রথম অংশ) || লাতিন যাদের মাতৃভাষা ছিল না তাদেরকে শব্দের বানান আর লেখা শেখার পাশাপাশি সেগুলো উচ্চারণ করতেও শিখতে হতো। কিন্তু সেগুলোর উচ্চারণ কেমন হওয়ার কথা সেকথা কিভাবে জানতো তারা? [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   বাচন ও বানান (প্রথম অংশ) লাতিন যাদের মাতৃভাষা ছিল না তাদেরকে শব্দের বানান আর লেখা শেখার পাশাপাশি সেগুলো উচ্চারণ করতেও শিখতে হতো। কিন্তু সেগুলোর উচ্চারণ কেমন হওয়ার কথা সেকথা কিভাবে জানতো তারা? লাতিন যেহেতু তখন আর কারোই মাতৃভাষা ছিল না ফলে অনুকরণ করা যায় এমন কেউ ছিল না। সত্যি বলতে কি, প্রাচীনকালের শেষ দিকেই এই সমস্যাটি দেখা দিয়েছিল। চতুর্থ শতকের মধ্যেই লাতিন উচ্চারণ যথেষ্ট বদলে গিয়েছিল যীশুর জন্মের সময়ের কাছাকাছি সময়ের তুলনায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ভাষা-ই বদলায়, লাতিন-ও তার ব্যতিক্রম ছিল না। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা লক্ষ করেছিলেন যে ধ্রুপদী টেক্সটগুলোতে শব্দের বানান আর সেগুলোকে তাঁরা ও তাঁদের শিক্ষার্থীরা যেভাবে উচ্চারণ করেন তার মধ্যে একটা বেশ ফারাক আছে, কাজেই দোনাতাস আর তাঁর সমসাময়িকদের মধ্যে ইতিমধ্যেই উচ্চারণের নিয়ম কানুন নিয়ে একটা বিতর্ক ছিল। সম্রাট কনস্তান্তিন যখন কনস্তান্তিনোপলকে সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিলেন তখন সমস্যাটা আরো বড় হয়ে উঠল। পূর্বাঞ্চলীয় নতুন রাজধানীতে রাজপ্রশাসন চালাবার জন্য লোক নিয়োগের জরুরি প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল, আর কাজটা চালানো হতো লাতিনে। অথচ সাম্রাজ্যের সেই অংশের মানুষজনের মাতৃভাষা ছিল গ্রীক বা অন্য কিছু, এবং তাদের লাতিন ভাষায় একটা বিশদ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন পড়ত। আর ঠিক এই কারণেই প্রিসিয়ান তাঁর ব্যাকরণ বই সম্পাদনা করেছিলেন। সেটা ছিল প্রাচীনকালের সমস্ত ব্যাকরণের মধ্যে সবচাইতে সারগর্ভ, এবং তাতে ভাষাটির উচ্চারণের ওপর অনেকখানি জায়গা খরচ করা হয়েছে। তো, মঠভিত্তিক বিদ্যালয়গুলোতে — যেগুলোর সঙ্গে সাবেক রোমক জগতের প্রায় কোনো সম্পর্ক-ই ছিল না — লাতিন একটি বিদেশী ভাষায় পরিণত হতে পরিস্থিতি আরো বেশি জটিল হয়ে পড়ল, যেমনটি ঘটেছিল আয়ারল্যান্ডে, আর পরবর্তী কালে জার্মানী ও স্ক্যান্ডিনেভিয়াতে। কোথাও কোথাও উচ্চারণ নিশ্চয়ই খুব খারাপ ছিল। সৌভাগ্যক্রমে, বেশিরভাগ লাতিন শব্দের উচ্চারণ কেমন হবে তা সেগুলোর বানান থেকে বের করা যায়। বর্ণমালাটা ঠিক এই ভাষার জন্যেই আবিষ্কৃত হয়েছিল, এবং লাতিনের বেশিরভাগ ধ্বনি প্রায় সব ইউরোপীয় ভাষাতেই পাওয়া যাবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘bona’ — good, ‘mitte’ — send, ‘lectus’ ‘bed’, এই শব্দগুলোতে অক্ষরগুলো কিভাবে উচ্চারিত হবে…

|| বিদ্যালয়ে লাতিন (প্রথম অংশ) || আমরা দেখেছি, রোমক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ভালো করে কথা বলতে শেখানো, যাতে করে তারা আইনজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ হতে পারে। গির্জা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করল তখন তার অন্য অগ্রাধিকার ছিল। ফলে, আশ্রমিক বিদ্যালয়গুলো ছিল রোম সাম্রাজ্যের বিদ্যালয়গুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   বিদ্যালয়ে লাতিন (প্রথম অংশ) আমরা দেখেছি, রোমক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ভালো করে কথা বলতে শেখানো, যাতে করে তারা আইনজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ হতে পারে। গির্জা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করল তখন তার অন্য অগ্রাধিকার ছিল। ফলে, আশ্রমিক বিদ্যালয়গুলো ছিল রোম সাম্রাজ্যের বিদ্যালয়গুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন। নতুন শিক্ষাব্যবস্থা তৈরির দায়িত্ব যাঁদের ওপর ছিল তাঁদের একজন ছিলেন ক্যাসিওদোরাস। ষষ্ঠ শতকে ইতালিতে বাস করতেন তিনি, জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় উচ্চ পদস্থ সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেসময় অস্ট্রগথরা ইতালি শাসন করত এবং দক্ষিণ ইতালির একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য ক্যাসিওদোরাস অস্ত্রগথিক রাজদরবারে জীবিকার ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন। অনেক কিছুর মধ্যে সরকারী নিবন্ধকের কার্যালয়ে বা চ্যান্সেলরিতে দায়িত্বও ছিল তাঁর ওপর। দুর্বোধ্য ও লোক দেখানো জাঁকালো লাতিনে বেশ কিছু চিঠিপত্র লিখেছিলেন তিনি। ষাট বছর বয়েসে রাজদরবার থেকে বিদায় নেন তিনি, এবং পারিবারিক ভূসম্পত্তিতে তিনি যে আশ্রম প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সেখানে এসে ঠাঁই নেন। সেখানে, এক খৃষ্টীয় জীবন যাপনে ব্রতী হন, এবং বেশ কয়েক দশক ধরে লেখেন বেশ কিছু খৃষ্ট ধর্ম বিষয়ক রচনা। নব্বইয়ের-ও বেশি বছর বয়েসে মারা যান তিনি। তো, সেসব রচনার একটি হলো শিক্ষার্থী সন্ন্যাসীদের সাহায্য করার জন্য একটা হ্যান্ডবুক। পরবর্তী বেশ কয়েক শতাব্দী ধরে শিক্ষা কোন পথে এগোবে তার একটা পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যায় এই বইটা থেকে। হ্যান্ডবুকটা দুটো অংশে বিভক্ত; প্রথম অংশের পুরোটাই ব্যয় করা হয়েছে বাইবেল কিভাবে পড়তে হবে আর খৃষ্টীয় ফাদারদের রচনাকর্ম, এই নিয়ে। বিদ্যালয়গুলো সেই ধারা বজায় রাখল। প্রধান উদ্দেশ্য ছিল একটি খৃষ্টীয় শিক্ষা প্রদান করা, আর সেই শিক্ষার প্রাণকেন্দ্রে ছিল লাতিন ভাষায় বাইবেল পাঠ করতে পারার প্রয়োজনীয়তা। মধ্যযুগের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই একটি সাধারণ পদ্ধতি ছিল ‘Book of Psalms’-এর প্রথম স্তোত্রটির মাধ্যমে বাইবেলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয়ের সূত্রপাত করা: Beatus vir, qui non ábiit in consilio impiorum et in via peccatorum non stetit et in cáthedra derisorum non sedit. নিচে দেয়া হলো ইংরেজি বাইবেলের অনুমোদিত ‘কিং জেমস’ সংস্করণের খুবই আক্ষরিক অনুবাদ। Blessed is the man…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.