লাতিন ভাষার কথা : ২৮

|| বিদ্যালয়ে লাতিন (প্রথম অংশ) || আমরা দেখেছি, রোমক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ভালো করে কথা বলতে শেখানো, যাতে করে তারা আইনজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ হতে পারে। গির্জা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করল তখন তার অন্য অগ্রাধিকার ছিল। ফলে, আশ্রমিক বিদ্যালয়গুলো ছিল রোম সাম্রাজ্যের বিদ্যালয়গুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর

 

বিদ্যালয়ে লাতিন

(প্রথম অংশ)

আমরা দেখেছি, রোমক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ভালো করে কথা বলতে শেখানো, যাতে করে তারা আইনজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ হতে পারে। গির্জা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করল তখন তার অন্য অগ্রাধিকার ছিল। ফলে, আশ্রমিক বিদ্যালয়গুলো ছিল রোম সাম্রাজ্যের বিদ্যালয়গুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন। নতুন শিক্ষাব্যবস্থা তৈরির দায়িত্ব যাঁদের ওপর ছিল তাঁদের একজন ছিলেন ক্যাসিওদোরাস। ষষ্ঠ শতকে ইতালিতে বাস করতেন তিনি, জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় উচ্চ পদস্থ সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেসময় অস্ট্রগথরা ইতালি শাসন করত এবং দক্ষিণ ইতালির একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য ক্যাসিওদোরাস অস্ত্রগথিক রাজদরবারে জীবিকার ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন। অনেক কিছুর মধ্যে সরকারী নিবন্ধকের কার্যালয়ে বা চ্যান্সেলরিতে দায়িত্বও ছিল তাঁর ওপর। দুর্বোধ্য ও লোক দেখানো জাঁকালো লাতিনে বেশ কিছু চিঠিপত্র লিখেছিলেন তিনি। ষাট বছর বয়েসে রাজদরবার থেকে বিদায় নেন তিনি, এবং পারিবারিক ভূসম্পত্তিতে তিনি যে আশ্রম প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সেখানে এসে ঠাঁই নেন। সেখানে, এক খৃষ্টীয় জীবন যাপনে ব্রতী হন, এবং বেশ কয়েক দশক ধরে লেখেন বেশ কিছু খৃষ্ট ধর্ম বিষয়ক রচনা। নব্বইয়ের-ও বেশি বছর বয়েসে মারা যান তিনি।

তো, সেসব রচনার একটি হলো শিক্ষার্থী সন্ন্যাসীদের সাহায্য করার জন্য একটা হ্যান্ডবুক। পরবর্তী বেশ কয়েক শতাব্দী ধরে শিক্ষা কোন পথে এগোবে তার একটা পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যায় এই বইটা থেকে। হ্যান্ডবুকটা দুটো অংশে বিভক্ত; প্রথম অংশের পুরোটাই ব্যয় করা হয়েছে বাইবেল কিভাবে পড়তে হবে আর খৃষ্টীয় ফাদারদের রচনাকর্ম, এই নিয়ে। বিদ্যালয়গুলো সেই ধারা বজায় রাখল। প্রধান উদ্দেশ্য ছিল একটি খৃষ্টীয় শিক্ষা প্রদান করা, আর সেই শিক্ষার প্রাণকেন্দ্রে ছিল লাতিন ভাষায় বাইবেল পাঠ করতে পারার প্রয়োজনীয়তা। মধ্যযুগের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই একটি সাধারণ পদ্ধতি ছিল ‘Book of Psalms’-এর প্রথম স্তোত্রটির মাধ্যমে বাইবেলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয়ের সূত্রপাত করা:

Beatus vir, qui non ábiit in consilio impiorum et in via peccatorum non stetit et in cáthedra derisorum non sedit.

নিচে দেয়া হলো ইংরেজি বাইবেলের অনুমোদিত ‘কিং জেমস’ সংস্করণের খুবই আক্ষরিক অনুবাদ।

Blessed is the man that walketh not in the counsel of the ungodly nor standeth in the way of sinners nor sittheth in the seat of the scornful.

অনুবাদটি যদি খাপছড়া মনে হয় তাহলে তার কারণ অংশত অন্তত এই যে, লাতিন অনুবাদটি করা হয়েছে হিব্রু থেকে, এবং অনুবাদকেরা মূল হিব্রুটাকে যতদূর সম্ভব আক্ষরিক ভাবে তুলে ধরতে চেয়েছেন, যা কিনা লাতিনের স্বাভাবিক ছন্দ ও ছাঁদের সঙ্গে মানানসই নয়।

এবার দেখুন ‘নিউ লিভিং ট্রান্সলশেন’-এর আরো আধুনিক সংস্করণ:

Oh, the joys of those who do not follow the advice of the wicked, or stand around with sinners, or join in with scoffers.

প্যাসেজটার অর্থ এখানে বুঝতে সুবিধে হয়েছে, যদিও মধ্যযুগীয় শিশুদের জন্য এটা তেমন কাজে আসত না। সবগুলো স্তোত্র শেখার পাশাপাশি তাদেরকে লাতিন-ও শিখতে হতো। প্রথম স্তোত্রটি শেখা হলে শিখতে হতো দ্বিতীয়টি, তারপর তৃতীয়টি, এইভাবে বাকিগুলো, যতক্ষণ না শেখা হতো ১৫০ নম্বর, অর্থাৎ শেষটি।

ভাষা শেখানোর পদ্ধতি হিসেবে এটাকে মোটেই অসাধারণ কিছু বলা যায় না বটে, কিন্তু সবগুলো স্তোত্র লাতিনে শিখে মুখস্ত করা যার প্রয়োজন সেই ভাবী সন্ন্যাসীর জন্য এটা ছিল যথেষ্ট কার্যকর। অত্যন্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত একটি জীবনে এই স্তোত্রগুলো ছিল সেইসব প্রার্থনা অনুষ্ঠানের আচারের অংশ যেসব অনুষ্ঠানে সন্ন্যাসীদেরকে হরহামেশাই অংশ নিতে হতো। এক সপ্তাহের মধ্যেই তারা সবগুলো স্তোত্র তো বটে, সঙ্গে আরো অনেক কিছু পড়ে ফেলতে পারতো। তার পরের সপ্তাহে পড়ে ফেলতো আরো একবার। তার পরের সপ্তাহে…।

এই শিক্ষার মূল কথা ছিল তাহলে সঠিকভাবে সঠিক ভাষায় প্রার্থনা করা। প্রাচীন বিদ্যালয়গুলো নেই হয়ে যেতে সমাজে একটি পেশার জন্য কাউকে শিক্ষিত করে তোলার বিষয়টিও নেই হয়ে গেল। এবং তারপর থেকে আশ্রমিক আর ক্যাথীড্রালভিত্তিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়াল মূলত প্রার্থনা আর ঈশ্বরের সেবা। ভাষাটির অবশ্য আরো কিছু জরুরি কাজ ছিল, কিন্তু সেটার ধর্মীয় ব্যবহারটিই ছিল মুখ্য, আর এবং তা মুখ্য হিসেবেই রয়ে গেল। কারণ, শিক্ষা ছিল মঠ আর গির্জাগুলোর হাতে, আর সেখানেই তা থেকে যায় এক হাজারেরও বেশি বছর। সারা ইউরোপ জুড়ে গির্জা কর্তৃপক্ষই ছিল শিক্ষা-দীক্ষার দায়িত্বে, সেই ফরাসি বিপ্লব পর্যন্ত; কোথাও কোথাও আরো দীর্ঘকাল পরেও। যে ঐতিহ্যটি একেবারে প্রায় আমাদের সময় পর্যন্ত শিক্ষার ভূমিকাটি নির্ধারণ করেছে সেই ঐতিহ্যের অগ্রভাগে দাঁড়িয়ে আছেন ক্যাসিওদোরাস। তবে তাঁর হ্যান্ডবুকের দ্বিতীয় একটা অংশও ছিল। এখানে বলা হয়েছে ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কহীন সাধারণ শিক্ষার কথা। সাতটি ‘liberal arts’ বা ‘artes liberáles’-এ বিভক্ত ছিল সেটা: grammática, rhetórica, dialéctica, arithmética, música geometría, astronomía, বা, ব্যাকরণ, অলংকারশাস্ত্র, ডায়ালেক্টিক্স (যা যুক্তিবিদ্যা নামেও পরিচিত), পাটিগণিত, সঙ্গীত, জ্যামিতি এবং জ্যোতির্বিদ্যা। কেবল বাইবেল পড়লেই চলত না; তার সঙ্গে আরো অনেক কিছু শিখতে হতো, এমনকি একজন ধার্মিক ব্যক্তিকেও।

এটা অবশ্য ক্যাসিওদোরাসের নিজের মাথা থেকে বেরোয়নি, বরং প্রাচীনকালের শেষাংশে অগ্রগণ্য খৃষ্টানদের মধ্যে সুদীর্ঘ নানান বিতর্কের পরিণতি এটা। অগাস্টাস ও জেরোমের মতো মানুষেরা, যাঁরা সনাতনী ধারার দীর্ঘ এবং সামগ্রিক শিক্ষা লাভ করেছিলেন, তাঁরা একটা আত্মজিজ্ঞাসার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন যে পেগান দার্শনিক ও কবিদের রচনা পড়া ও উপভোগ করা ঠিক হচ্ছে কিনা। সেগুলো সংস্কৃতিকে তুলে ধরে ঠিকই, কিন্তু সেইসঙ্গে সেগুলো তো মানুষকে ন্যায়ের শিক্ষা থেকে বিচ্যুত ক’রে পাপ বা সন্দেহের বা এমনকি সরাসরি বিধর্মিতার পথে প্রলুব্ধ করতে পারে। শেষে একটা আপোসে পৌঁছলেন তাঁরা: খৃষ্টানদেরকে অ-খৃষ্টীয় রচনা পড়তে দেয়া যেতে পারে, তবে সেটা কেবল এই জন্য যাতে করে তারা তাদের বিশ্বাস পোক্ত করার আরো ভালো উপায় পেতে পারে। প্রাচীনকালের লেখকদের রচনা না পড়াটা ভালো কথা না, যেহেতু তাঁরাই ছিলেন সেরা, কিন্তু তাঁদের যুক্তি শুনে বিপথে যাওয়াটা কোনো কাজের কাজ হতে পারে না। লক্ষ্যটা ছিল তাঁদের জ্ঞান আর তাঁদের চমৎকার লেখার শৈলী আত্মস্থ করা, এবং তা ভিন্নভাবে ব্যবহার করা, বা যেটা বলা হতো, পেগানদের হাত থকে তাদের অস্ত্র কেড়ে নেয়া।

এসব চিন্তা ভাবানার ফল দাঁড়াল এই উপলব্ধি যে শিক্ষার্থীদেরকেও নির্দোষ, ছোট ছোট লোকমায় ধ্রুপদী শিক্ষা দিতে দেয়া যেতে পারে। সাতটি লিবারেল আর্টস এমন এক যথার্থ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দান করেছিল যা পুরো মধ্যযুগব্যাপী স্থায়ী হয়েছিল। এই সাতটির মধ্যে প্রথম তিনটি ভিত্তি রচনা করেছিল, আর তাদের ব্যবহারিক মূল্য ছিল সবচাইতে বেশি। এই তিনটিকে বলা হতো ‘trívium’, যার আক্ষরিক মানে, ‘তিন পথ’; ধর্মের সঙ্গে এই তিনটি বিষয়ই কেবল পড়ানো হতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সুইডেনের শিক্ষাব্যবস্থায় সর্বনিম্ন বা একেবারে প্রাথমিক স্তরে পড়ানো হতো এই তিনটি বিষয় যা ‘Trivial School’ নামে পরিচিত, ঠিক যেমন ইংরেজিতে কিছু কিছু বিদ্যালয় ‘Grammar School’ নামে চিহ্নিত হলো, কারণ সেখানে (লাতিন) ব্যাকরণ পড়ানো হতো। ওদিকে ইংরেজিতে ‘trivial’ মানে দাঁড়ায় ‘minor, unimportant’, কারণ শব্দটা দিয়ে গোড়াতে বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের শুরুতে যা পড়ানো হতো তাই বোঝানো হতো। প্রথম বিদ্যাটা ছিল তাহলে ব্যাকরণ, যা স্পষ্টতই বোঝাতো লাতিন ব্যাকরণ। gender (genus) বা tense (tempus) বিষয়ক তাত্ত্বিক ধারণা পাওয়া যেতো ব্যাকরণ বই থেকেই। দেখা যেতো, প্রারম্ভিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় সবসময়-ই ব্যবহার করা হচ্ছে চতুর্থ শতকে দোনাতাস নামে এক লোকের লেখা একটা পুস্তিকা। কালক্রমে দোনাতাস নামটি খোদ ব্যাকরণের সমার্থক হয়ে গেছে। কোনো ইউরোপীয় ভাষার ব্যাকরণ পড়েছেন এমন কারো কাছে দোনাতাসের বইয়ে ব্যবহৃত প্রতিশব্দগুলো বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। তিনি শুরু করেছেন বাক্যের নানান অংশ বা ‘partes orationis’ দিয়ে:  nómen, pronómen, verbum, advérbum, particípium, coniúnctio, preposítio, interéction। ইংরেজিতে এদের বলে noun, pronoun, verb, adverb, participle, conjunction, presposition এবং interjection. পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে ইংরেজি ভাষা parts of speech বা পদ-এর নামগুলো আদ্যোপান্ত দোনাতাসের কাছ থেকে নিয়েছে।

ছোট্ট একটা তফাত অবশ্য আছে। আমরা যাকে বিশেষ্য (noun) আর বিশেষণ (adjective) বলি এই দুটোকেই তিনি nomen-এর অন্তর্ভুক্ত করেছেন। দ্বিতীয়টি অর্থাৎ বিশেষণ (adjective) এসেছে পরবর্তী ব্যাকরণ থেকে যেখানে ‘nomen substantivum’ (আক্ষরিক অর্থে ‘substantive noun’)  আর ‘nomen adiectivum’ (আক্ষরিক অর্থে, ‘adjacent name’)-এর মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে। ‘substantive noun’-ই ইংরেজি বিশেষায়িত শব্দ ‘substantive’-এর উৎস, আর ‘adjacent name’ কথাটা এই জন্য বলা হয় সেটার সবচাইতে বহুল ব্যবহার হলো বিশেষ্য-র পাশে বসা। কাজেই আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে সেই অর্থে এই কিছুদিন আগে পর্যন্ত যা পড়ানো হতো তার থেকে ক্যাসিওদোরাসের বিদ্যালয়ের ব্যাকরণের খুব একটা তফাত ছিল না। এর বিপরীতে অলংকারশাস্ত্র ছিল সিসেরো আর কুইন্টিলিয়ান যা শিখিয়ে গেছেন তার একটা সংক্ষিপ্তসার, এবং আধুনিক পাঠ্যক্রমের কোনো কিছুর সঙ্গেই তার সরাসরি কোনো মিল নেই। তার পরেও, প্রাচীনকালে বিষয়টির যে গুরুত্ব ছিল তার তুলনায় অনেক কম গুরুত্ব ছিল সেটার। লাতিন ভাষায় বক্তৃতা দেয়া শেখাতে ব্যবহৃত হতো না বিষয়টি, কারণ মধ্যযুগে আর জরুরি ছিল না সেটা; যদিও লেখালেখিতে এবং কখনো কখনো হিতোপদেশ (sermon) তৈরির সময় বেশ কাজের ছিল অলংকারশাস্ত্রীয় উপাদানগুলো। ডায়ালেক্টিক্স বা যুক্তিবিদ্যার আলোচ্য বিষয় ছিল দর্শনের মৌলিক ধারণাগুলো আর বাঁধা কিছু হেতুবাক্য থেকে দস্তুরমাফিক সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর ক্ষমতা। রোমক শিক্ষা ব্যবস্থায় বিষয়টির তেমন কোনো গুরুত্ব ছিল না গোড়ার দিকে, কিন্তু প্রাচীন যুগের শেষ দিকে এটির প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে। খৃষ্টানরা উপলব্ধি করে যে সুশিক্ষিত পেগানদের কাছে তাদের বিশ্বাসকে সমুন্নত রাখতে হলে দর্শনের খানিকটা জ্ঞান থাকা দরকার তাদের।

ব্যাকরণ ও অলংকারশাস্ত্র বাদ দিলে দর্শনই সাত লিবারেল আর্টস-এর মধ্যে একমাত্র বিষয় যা ক্যাসিওদোরাসের বিদ্যালয়ে পড়ানো হতো। বাকি বিদ্যাগুলো — অর্থাৎ তথাকথিত ‘quadrívium’ বা ‘চতুর্পথ’ — প্রাচীন দৃষ্টিভঙ্গী অনুযায়ী — ছিল দর্শনের আরো চার শাখায় বিভক্ত। আরো সঠিকভাবে বললে, গণিতশাস্ত্র (mathemática) ছিল দর্শনের একটি প্রধান শাখা, এবং সেটি আবার পাটীগণিত, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিদ্যা আর সঙ্গীত এই চার ভাগে বিভক্ত ছিল। প্রথম দুটো যে গণিত-এর অধীনে রয়েছে তা নিয়ে হয়ত খুব বেশি আপত্তি উঠবে না, আর জ্যোতির্বিদ্যায় তো গণিতের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছেই, যদিও আমরা জানি পর্যবেক্ষণ-ও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে গণিতের একটি শাখা হিসেবে এটিকে গণ্য করার কারণ হলো হারমোনিক্স। অনেক আগেই প্লেটো জানতেন, এই যেমন, একটি তারের দৈর্ঘ আর তারটা যে-স্বর উৎপন্ন করে সেটার পিচের মধ্যে একটা গাণিতিক সম্পর্ক আছে: একটি তারের চাইতে দ্বিগুণ দৈর্ঘের তার আগেরটির অর্ধেক তীক্ষ্ণতর স্বর তৈরি করবে। এই কারণেই, গণিতকে — যা দর্শনের একটি শাখা — প্রাচীনকালে সঙ্গীতের একেবারে ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হতো।

(ক্রমশ)

জি এইচ হাবীব

জন্ম ১০ই মার্চ ১৯৬৭। পেশা: শিক্ষকতা।

২ comments

  1. Pingback: লাতিন ভাষার কথা : ২৭ | জি এইচ হাবীব

  2. Jubayer - ১৩ এপ্রিল ২০১৫ (৯:৩৮ অপরাহ্ণ)

    hmm…. ami appnar shate akmot …

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.