এটা একটা উজ্জ্বল শক্তি যা সঞ্জীব দত্তকে তার কালের শিল্পীদের অভিযাত্রায় এক প্রবল প্রাসঙ্গিকতা দেবে।[...]

রঙ তল অতিঅঙ্কন এসবের মধ্যেই আমি তুমি সে ইহারা কথা বলে। কথা বলা ও না বলার মধ্যে যেপার্থক্য সেটার মানসিক স্বাভাবিকত্ব এবং বস্তুর বিমূর্তায়ন যেপ্রত্যয়ে আবদ্ধ হয় – তার চরিত্র বা চরিত্রগুচ্ছ যখন একটি তল থেকে অপর একটি তলকে সম্পর্কের ভিত্তিতে পারস্পরিক অস্তিত্বে ও বস্তুত্বে সৃষ্টি করে, সেখানে পার্থব্য প্রতিশ্রুত হয়। সঞ্জীব দত্তের চিত্রকর্মের এই প্রত্যয় আমাকে গত কয়েক বছর নিয়োজিত রেখেছে। আমি তার শিল্পের ও কাজের ঘরের নিয়মিত দর্শক হিসেবে প্রায় সাত বছর অবিরাম যুক্ত থেকেছি। তিনটি একক প্রদর্শনী এই সময়কালে প্রণীত হয়েছে এবং সঞ্জীব দত্তের শিল্পকর্ম এক মুখরতার মৌতাত স্পর্শ করেছে। শিল্পী স্বয়ং ও শিল্পীর দর্শকেরা গল্পের খোঁজে যে যার মতো শিল্পবস্তুগুলো গুলিয়ে ফেলেছেন – তাদের গুলিয়ে ফেলা শিল্পবস্তুগুলো যখন তাদের চোখে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে শুরু করেছে, তখন শিল্পবস্তুগুলো দেয়ালহীন সংগ্রহশালায় উৎপাদন করেছে – সঞ্জীব দত্তের অবিনির্মাণ। সঞ্জীব দত্ত ঘন ঘন ইনার রিয়েলিটির কথা বলেন, আমি শুনি এবং বুঝতে চেষ্টা করি আমাদের ভোক্তা বাস্তবতা ভোগ্যপণ্যের সাথে কীধরনের মানসিক স্বাভাবিকত্ব ও বিমূর্ত আবেগের প্রত্যয় নিয়ে বাঁচে। একটি পণ্য ও তার নিয়ত গতিশীল লক্ষ্যকে প্রতিনিয়ত বুঝে নেয়ার স্বজ্ঞা সঞ্জীব দত্তের চিত্রতলকে বস্তু দর্শক শিল্পী সমাজ রাষ্ট্র বিশ্বের ব্যাপ্তিতে অবিনির্মাণ সূত্রে গেঁথে রাখে। http://www.flickr.com/photos/muktangon/sets/72157631350039670/show/ শিল্পীর পরিভাষা ও দর্শকের পরিভাষা দুটোই আমি তুমি সে ইহারার চিত্রকর্মের মতো অবিনির্মাণবাদী। সমাজ বাস্তবতার কলার খোসা এবার ফুটপাতেই পড়ে থাকুক বা ডাস্টবিনের সাথে ঘুঁটেকুড়ানো মানুষ বা কুকুর যত বিলগ্নই হোক – অ্যাপার্টমেন্টের স্তব্ধতা আকাশের চেয়েও আলোকিত বা আকর্ষণীয় বা নিঃসঙ্গ ক্রিয়াকলাপেই দাঁড়িয়ে থাকে। প্রশাসন যত না কাজের তার চেয়ে বেশি ধরে ধরে তোয়াজের। সন্ত্রাসবাদ যত না মাঠ পর্যায়ের তার চেয়ে বেশি সুবিন্যস্ত ছকে লক্ষ্যভেদের পরিকল্পিত নিষ্ঠুরতার নির্দেশ পালনের। অর্থনীতি যত না উন্নয়নমুখী তার চেয়ে বেশি ফাঁদমুখী। সময়ের এই স্বয়ংক্রিয়তার অর্থভেদ নয় – নানা অর্থের প্রভেদ ও প্রয়োজন – এর পেছনে ঘুরে ঘুরে কাজ করে যাচ্ছে সঞ্জীব দত্তের অবিনির্মাণ। এটা একটা উজ্জ্বল শক্তি যা সঞ্জীব দত্তকে তার কালের শিল্পীদের অভিযাত্রায় এক প্রবল প্রাসঙ্গিকতা দেবে। শিল্পজগতের উত্তর প্রশংসাই হোক বা বিদ্রুপ – দেয়ালহীন সংগ্রহশালায় সঞ্জীব দত্তের শিল্পকর্ম থাকবে। তার চিত্রকর্মের সৃষ্টি ও পার্থব্য শিল্পদর্শকের কাছে পাঠাবে অবিনির্মাণ ভূমিকা।…

সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। [...]

১. সাংসদ হুইপদের খাদ্যবিলাস এবং জয়নুলের দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা অথবা ভ্যান গগের ‘দ্য পটেটো ইটার্স’। সাংসদ হুইপদের দুর্নীতি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক তোলপাড়। জনৈক প্রাক্তন হুইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে – তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে সংসদের ক্যান্টিন থেকে বিস্তর তেল ঘি হজম করেছেন! তিনি যে খুব ভোজন-রসিক তা তার তালিকা দেখেই অনুমান করা যায় – ঘি, পোলাওয়ের চাল, ডানো গুঁড়ো দুধ, তাজা লিপটন চায়ের পাতা, দাদখানি চাল ইত্যাদি। হুইপ সাহেবের বাসায় যে বিস্তর পোলাও-মাংসের আয়োজন হয় সে-ব্যাপারেও নিশ্চয় কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। সাম্প্রতিক বিশ্ব খাদ্য সংস্থার জরিপে দেখা গেছে : পৃথিবীতে একশো কোটি লোক অভুক্ত থাকে। কী পরিমাণ লোক ভালো-মন্দ খাবার খেয়ে থাকে তার একটা তালিকা তৈরি করা গেলে তাতে আমাদের মতো গরিব দেশের বড়লোকরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। এত পোলাও-মাংস হজম করার পরিণতি কী, তা আপনারা সবাই জানেন – শেষ গন্তব্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল। যেটা হুইপ সাহেবের ক্ষেত্রে ঘটেছে। সরকারি টাকায় প্রচুর ঘি-পোলাও খেয়ে হার্টের ব্লক, আবার তা সারানোর জন্য সরকারি অর্থেই মাউন্ট এলিজাবেথে ভর্তি। সত্যিকার প্রহসনই বটে। আমাদের দেশের গরীব মানুষের খাদ্যতালিকা কী? তাদের কপালে কি জোটে পোলাও-মাংস? গ্রামে বসবাসরত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তো নুন আনতে পান্তা ফুরায়। শুধুমাত্র কাঁচামরিচ আর লবণ দিয়ে থালার পর থালা ভাত হজম করতে হয় তাদের। মাছ-মাংসের কোনো বালাই নেই, তাই প্রোটিনের ঘাটতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে গরীবের পোলাও-মাংস খাওয়ার বিষয়টি একবার নিজের চোখে দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। কাওরান বাজারের পেছন দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বস্তির সামনে দেখেছিলাম, বিভিন্ন বিয়েবাড়ি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া উচ্ছিষ্ট পোলাও-মাংস রাস্তার পাশে ভাগ দিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। আর কেউ কেউ কিনে নিয়ে দিব্যি পরমানন্দে খাচ্ছে সেই খরখরে পচা খাবার! এত বৈষম্যপীড়িত দেশ পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা কে জানে। মাঝে-মাঝে বিদেশীরা আমাদের দেশের দারিদ্র্য নিয়ে আমাকে নানা প্রশ্ন করে; আমি তাদের বলি, আমাদের বড়লোকদের তো দেখোনি, দেখলে নিশ্চয় অবাক হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারাতে এক চক্কর ঘুরিয়ে আনলে তোমাদের বিশ্বাসই হতে চাইবে না বাংলাদেশের গরিবিয়ানা হাল। আমাদের মন্ত্রী মিনিস্টার সাংসদ আর আমলাদের যে ঠাট-বাট তা দেখে হয়তো মূর্ছা যাওয়ার দশা হবে তোমাদের। যে-ধরনের গাড়িতে তারা চড়ে, তা হয়তো জন্ম দেবে আরেকটি রেকর্ডের – পৃথিবীর…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.