ছবিটা আজই দেখলাম। ঋতুপর্ণ বেঁচে থাকলে হয়ত এত তড়িঘড়ি করে এই চলচ্ছবিটা এখনই দেখা হত না। ছবিটা অস্বস্তির নাকি পরিবার মানেই অস্বস্তি – কোনটা ঠিক কোনটা ভুল ছবি দেখে শেষ করার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই এই দোলাচাল, এরকমই হয় – একান্নবর্তী পরিবারের এসব একই গল্প একই স্বপ্ন হতাশা এসব যে আমি চিনি না, এ হয়ত তারই ফল। দুর্গাপূজা, মানে এই উৎসবে, নিজেদের বাড়ির পূজোতে এসে এক একান্নবর্তীতার মধ্যে কতগুলো মানুষ তাদের দিনযাপন করতে শুরু করল – এবং এই দিনযাপনের মধ্য দিয়েই শেষ হল এই চলচ্ছবিটা। চরিত্রগুলো কেউই বাড়িটার চেয়ে বড় নয় – বাড়িটাকে ঘিরে থাকা নানা বেদনার চেয়ে বড় নয়। এরকম বাড়িতে এরকমই হয়, সত্যিই, এরকম বাড়ির এরকম ছবির গঠনতন্ত্রটাই আমি কোনোদিন বুঝিনি, না বুঝেও এরকম কয়েকটি ছবি আমি দেখেছি, আজ ঋতুপর্ণের ‘উৎসব’টাও দেখা হল – কিন্তু এদেরকে কি আমি চিনি? আমার আশেপাশের কেউ চেনে? অথবা বুঝতেও পারে না চিনে কিনা? উৎসবের ভারের চেয়ে ভারী কিছু নেই, সেই ভার এক মুহুর্তের জন্যও ঋতুপর্ণের কাহিনী চিত্রনাট্য ও পরিচালনা থেকে সরে যায়নি। একজন চিত্রনির্মাতার এটা মস্তগুণ। যার দেখা হয়নি তিনি ছবিটা দেখবেন, ছবিটা দেখার পর এটা সবার নিজের নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপার, তিনিও আমার মতো এরকম কোনো ছবি আর দেখবেন না – এই সিদ্ধান্তে আসেন কিনা। ‘উৎসব’ আমার কাছে ঋতুপর্ণের গুরুত্বপূর্ণ ছবি। বাড়িটাকে মানুষগুলোকে বড় সুন্দর করে ফ্রেমে বাঁধা হয়েছে। তাকিয়ে দেখবার মতো আসবাব মিলেছে ছবিটাতে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেখলে হয়ত ক্ষুব্ধ হতেন।
উৎসবের ভারের চেয়ে ভারী কিছু নেই, সেই ভার এক মুহুর্তের জন্যও ঋতুপর্ণের কাহিনী চিত্রনাট্য ও পরিচালনা থেকে সরে যায়নি। একজন চিত্রনির্মাতার এটা মস্তগুণ।[...]