সারাবিশ্বের সব মিলিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে প্রায় ৭,০০০ ভাষা ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে ইন্টারনেটে খুব কম ভাষারই সরব এবং বলিষ্ঠ অস্তিত্ব আছে। প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, টুইটারে প্রায় ৮৫% টুইট প্রকাশিত হয় আটটি ভাষা ব্যবহার করে। সে গবেষণায় অনুযায়ী অনলাইনে সাংস্কৃতিক ও বৈচিত্র্যগত দিক থেকে বিভিন্ন ভাষার ব্যবহারের এবং উপস্থিতির দিকগুলো উঠে এসেছে। বিভিন্ন ভাষাভাষীরা এখন অনলাইনে নিজেদের ভাষাকে তুলে ধরতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। বিষয়টিকে সবার মাঝে তুলে ধরতে, সচেতনতা বৃদ্ধি করতে, এবং নিজেদের কার্যক্রমগুলোকেও তুলে ধরতে তারা কাজ করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রাইজিং ভয়েস, লিভিং টাংস ইন্সটিটিউট, এনডেন্জার্ড ল্যাংগুয়েজ প্রজেক্ট, এবং ইন্ডিজেনাস টুইটস - এর সহযোগিতায় বড় আকারে “#মাতৃভাষা'য় টুইট করুন” ক্যাম্পেইনটি শুরু হয়েছে। অনলাইনে নেয়া এ উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বের ভাষাগত ও সাংস্কৃতি বৈচিত্র, বিশেষ করে আদিবাসী, সংখ্যালঘু, ঐতিহ্য এবং বিপন্ন ভাষাগুলোর কথা তুলে ধরার একটা পরিসর তৈরী হবে। পাশাপাশি ইন্টারনেটে ভাষাগুলোর অবস্থান এবং উপস্থিতির বিষয়গুলোও সবাই জানতে পারবেন। যে দেশের ইতিহাসের অংশ মহান ২১ ফ্রেব্রুয়ারী, সে দেশের মানুষ হিসেবে আমাদের কি এই উদ্যোগকে সর্বতোভাবে সাহায্য করা উচিত না? এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হওয়া খুবই সহজ। বিস্তারিত জানতে নিচের এই লিন্কটি ক্লিক করুন: http://bn.globalvoicesonline.org/2015/02/20/47454/ আমরা 'মুক্তাঙ্গন: নির্মাণ ব্লগ' থেকে এই উদ্যোগকে সমর্থন জানাচ্ছি। আপনিও যোগ দিন। এবারের ২১ ফেব্রুয়ারীতে টুইটার ভরে উঠুক বাংলাভাষাভাষীদের কলরবে। টুইটারে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সর্বত্র ব্যবহার করুন : #মাতৃভাষা বা #MotherLanguage
|| আইন ও আইনের ভাষা || মুক্তিপ্রাপ্ত দাস একিওন চেয়েছেন তাঁর পুত্র আইন পড়ুক যাতে সেটা তার জীবিকার সহায়ক হয়। তাঁর এতোটা উচ্চাশা ছিল না যে নিজের পুত্রকে একজন বাগ্মী এবং অন্যের পক্ষ নিয়ে লড়াই করা একজন মানুষ হিসেবে কল্পনা করবেন, কিন্তু তাকে আইন সম্পর্কে খানিকটা জানতেই হতো। এই দিক থেকে তিনি সম্ভবত ঠিক ছিলেন। রোমক জগতে আইন ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। [. . .]
Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর আইন ও আইনের ভাষা মুক্তিপ্রাপ্ত দাস একিওন চেয়েছেন তাঁর পুত্র আইন পড়ুক যাতে সেটা তার জীবিকার সহায়ক হয়। তাঁর এতোটা উচ্চাশা ছিল না যে নিজের পুত্রকে একজন বাগ্মী এবং অন্যের পক্ষ নিয়ে লড়াই করা একজন মানুষ হিসেবে কল্পনা করবেন, কিন্তু তাকে আইন সম্পর্কে খানিকটা জানতেই হতো। এই দিক থেকে তিনি সম্ভবত ঠিক ছিলেন। রোমক জগতে আইন ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। সিভিল সার্ভেন্টদের অনেকটা সময় কেটে যেত নানান বিষয়ে অভিমত প্রদানে, আর এই বিষয়টা নিশ্চিত করতে যে লোকে যেন আইন মেনে চলে। যারা আইন ভাঙত তাদের সঙ্গে খুব নির্দয় আচরণ করা হতো, তবে আইন আবার মানুষকে সহিংসতা ও স্বেচ্ছাচারিতা থেকে রক্ষা-ও করত। আইনের চোখে মানুষ সমান ছিল না। উল্টো, আইন একেবারে পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিত কে কার ওপর খবরদারী করবে, কতটা করবে সে-সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, দাসমালিকদের ছিল একচ্ছত্র ক্ষমতা, এমনকি নিজ দাসদের খুন করার-ও অধিকার ছিল তাঁদের। অবশ্য সেই একচ্ছত্র ক্ষমতারও কিছু সীমা ছিল: বাড়াবাড়ি রকমের নিষ্ঠুরতার কারণে যে-দাস পালিয়ে যেতেন তাঁকে বিক্রি করে দিতে বাধ্য করা সম্ভব ছিল মালিককে; কাজেই একথা বলা যেতে পারে যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইন দাসদের-ও সুরক্ষা দিত। রোমের সমাজ ছিল খুবই পিতৃতান্ত্রিক, এবং পরিবারের কর্তা বা, ‘pater familiae’ পরিবারের সব সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, কিছু কিছু ক্ষেত্র ছাড়া। যেমন, তাঁর স্ত্রীর অর্থ-কড়ির ব্যাপারে কোনো কথা বলার অধিকার ছিল না তাঁর, এবং আইনগতভাবেই স্ত্রীর টাকা-পয়সা ছিল স্বামীর টাকা-পয়সা থেকে আলাদা। মানুষের অধিকার এবং বাধ্যবাধকতাগুলোর স্বরূপ কেমন ছিল এই নিয়মগুলো তার উদাহরণ। অবশ্যই নিয়ম-কানুন আরো মেলা ছিল, কেনা-বেচার নিয়ম, বাদ-বিসংবাদ-ক্ষয়ক্ষতি আর অতি অবশ্য-ই অপরাধ ও শাস্তি বিষয়ক নিয়ম-কানুন। কার্যকর যে-কোনো সমাজে এধরনের নিয়ম-কানুন থাকতেই হয়, কিন্তু রোমকরা তাদের আগের (এবং পরের-ও বটে) যে-কোনো সমাজের চাইতে বেশি সময় বিনিয়োগ করেছিল স্বচ্ছ, পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধি-নিষেধ তৈরি আর সেগুলো যাতে কাজ করে তা নিশ্চিত করতে। সেই সঙ্গে তারা তাদের আইন-কানুন ও বিধি-নিষেধের পেছনের নীতি বা যুক্তি নিয়েও লেখালেখি করেছে অনেক, এবং বলা যেতে পারে তারাই…
কুইনাইন-আবিষ্কারের তারিখ কারও মনে আছে কি? না থাকলেও ক্ষতি নেই কোনও, আজ ছাত্রহিতৈষী শিক্ষক কাজেম আলী মাস্টারের মৃত্যুদিবসে (১২ ফেব্রুয়ারি) অন্তত তাঁকে স্মরণ করা যাক একবার।
মোমেনের জবানবন্দী, মফিজন বা কোরবাণী-র মতো সংবেদনশীল গল্পের স্রষ্টা মাহবুব-উল আলম (১৮৯৮-১৯৮১) ইতিহাসমগ্ন ছিলেন আমৃত্যু। খণ্ডে-খণ্ডে তিনি যে-চট্টগ্রামের ইতিহাস (১৯৬৭) লিপিবদ্ধ করেছেন তার সপ্তম বা শেষ খণ্ডের ভূমিকায় বলেছেন : ‘চট্টগ্রামের ইতিহাস’-এর শেষ (সপ্তম) খণ্ডে ‘আমরা কতিপয় বিশিষ্ট পরিবার, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও আন্দোলন’-এর বিবরণ লিপিবদ্ধ করিতেছি। ইহার ফলে নিজেদের ইতিহাস জানিয়া লইয়া আত্ম-সম্বিৎ লাভে চট্টগ্রামবাসীদের সাহায্য হইবে, ইহাই আমাদের আশা। অধুনাবিলুপ্ত বইটির পৃষ্ঠাসজ্জা একটু অভিনব : ধারাবাহিকভাবে পৃষ্ঠাঙ্ক না দিয়ে প্রত্যেক অধ্যায়কে অ্যালবামের মতো সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল যাতে পরবর্তীকালে নতুন-নতুন তথ্য যুক্ত করে নিতে পারেন ইতিহাসসন্ধানীরা, যদিও লেখকের সে-ইচ্ছে অপূর্ণই থেকে গেছে আজও। চট্টগ্রামের অনেক প্রসিদ্ধ পরিবারের সতথ্য বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন লেখক প্রায় নিঃসঙ্গ পরিশ্রমে; তথ্যবিশ্লেষণে হয়তো-বা সর্বত্র ইতিহাসপদ্ধতি অনুসৃত হয়নি, এমনকী বিভ্রান্তিও থাকতে পারে কোথাও-কোথাও, কিন্তু লেখকের কলম যে কাঠখোট্টা ছিল না তা স্বীকার করতেই হয়। বইটির দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের নাম ‘শেখ-এ-চাট্গাম কাযেম আলী’। কাজেম আলী হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ শিক্ষাব্রতী কাজেম আলী (১৮৫২-১৯২৬) সম্পর্কে মাহবুব-উল আলম লিখছেন : কাযেম আলী কিরূপে তাঁহার স্কুলে একটা পারিবারিক আবহাওয়া বজায় রাখিতেন সে সম্বন্ধে ঐ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ভূপেন্দ্র কুমার রক্ষিত বলেন : তিনি প্রতিদিন স্কুলে আসিতেন না। তখন ১৯১৭ সাল। একদিন হঠাৎ স্কুলে আসিলেন। সে দিন আমাদের ইংরেজী-শিক্ষক স্কুলে আসেন নাই। তিনি বলিলেন : পড়া আমিই নিব। আমরা ভয়ে তটস্থ হইয়া গেলাম। পড়া ছিল ‘আলেকজাণ্ডার য়্যাণ্ড দি রবার।’ তিনি আমাদের ইংরেজীতে প্রশ্ন করিলেন : ফিলিপ কে ছিলেন? আমি ফস্ করিয়া উত্তর দিলাম : কিং অব ইণ্ডিয়া। তিনি ধমক দিয়া আবৃত্তি করিলেন : অব্ ইণ্ডিয়া? আমি থতমত খাইয়া শুদ্ধ করিলাম : কিং অব ম্যাসেডন। তিনি খপ্ করিয়া আমার একখানি হাত ধরিয়া ফেলিলেন। অতঃপর গর্জন করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন : প্রথমে ইণ্ডিয়া বলেছিলে কেন? কিন্তু ইতিমধ্যে তিনি অনুভব করিলেন, আমার হাত বেশ গরম। তখন বলিলেন : তুমিত ম্যালেরিয়ায় ভুগ্ছ মনে হচ্ছে। অতঃপর শার্ট তুলিয়া পেটে হাত দিয়া বলিলেন : এই যে পিলে বেশ বড় হয়েছে। অতঃপর এইরূপ কথোপকথন হইল : : তুমি কার ছেলে? : আমার বাবার নাম যোগেশ চন্দ্র রক্ষিৎ। : কি করেন? : কলেক্টরীর কর্মচারী। : তুমি ছুটির আগে লাইব্রেরীতে আমার সঙ্গে…
ইকতিয়ার চৌধুরীর লেখা থেকে জানতে পেরেছিলাম, নভেরা আহমেদ বাংলায় কথা বলেন না, কথা বলেন ইংরেজিতে। কিন্তু আমি কী করব – ততক্ষণে আমি ইংরেজি ফরাসি যে একটু-আধটু পারতাম তাও ভুলে বসেছি। অগত্যা বাংলাতেই নভেরাকে সকালের শুভেচ্ছা জানালাম… কিন্তু অপর পাশের অভিমান যে সুউচ্চ, পর্বতের মতোই অনড়। [. . .]
২০১২ সালের শেষদিকের কথা। ফেসবুকে একজনের ওয়ালে একটা ফটোগ্রাফ দেখি; ছবির সঙ্গে নাম না থাকলে হয়তো খেয়াল করতাম না ওটা কার প্রতিকৃতি। এ যে আমাদের অভিমানী শিল্পী নভেরা আহমেদ! তাঁর সম্পর্কে অল্পবিস্তর জানতাম। যদিও বাংলাদেশের শিল্পজগতে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনাই আমার অজানা। আমি শিল্পকলার ছাত্র নই, তার ওপর কয়েক বছর ধরে আছি দেশের বাইরে। বিদেশে থাকি বলেই বাংলা বইপত্র নিয়ে কথা বলার সুযোগ খুঁজি। ফেসবুকে বইপড়ুয়াদের একটা বড়োসড়ো গ্রুপও ততদিনে গড়ে উঠেছে। নভেরার ফটোগ্রাফ যাঁর ওয়ালে দেখেছিলাম তাঁর সঙ্গেও আলাপ ওই বইয়েরই সূত্রে। আমার বিশেষভাবে আগ্রহ ছিল রুশ সাহিত্যের বইপত্র বিষয়ে; আর রুশ সাহিত্যের বিখ্যাত অনুবাদক ননী ভৌমিককে নিয়ে তাঁরা চট্টগ্রাম থেকে একটি লিটল ম্যাগাজিনের বিশেষ সংখ্যা করবেন বলেও জেনেছিলাম। নভেরার ছবির সূত্রে নয়, বরং রুশ সাহিত্য নিয়ে আলাপের জন্যই ওই পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে তাই বন্ধুত্ব করতে চাইছিলাম। প্রারম্ভিক এক আলাপের মাঝখানেই তিনি নিশ্চিত হতে চাইলেন যে আমি প্যারিসে থাকি কিনা, আর তারপর কিছুটা অপ্রাসঙ্গিকভাবেই উত্থাপন করলেন নভেরা আহমেদের কথা। জানতে চাইলেন, দীর্ঘদিন ফ্রান্স-প্রবাসী এই বাঙালি ভাস্কর সম্পর্কে আমার আগ্রহ আছে কিনা। আগ্রহ অবশ্যই আছে; কিন্তু তিনি যে ফ্রান্সেই আছেন, সে-কথা আমি জানতাম না। নিজের অজ্ঞতার কথা খোলাখুলিই স্বীকার করি। আমার বন্ধু তখন মুক্তাঙ্গন ব্লগের একটা পোস্টের লিংক দেন আমাকে – তাঁরই লেখা, এবং পড়তে বলেন। বিশেষভাবে অনুরোধ করেন যেন আমি নভেরা আহমেদ সম্পর্কে এবং বিশেষ করে তাঁর শিল্পকর্ম সম্পর্কে সম্ভব হলে খোঁজ নিই। আমাদের এই আলাপ হয়েছিল ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর রাতে। সে-রাতেই লেখাটি পড়তে শুরু করি। ‘নভেরা আহমেদ : মৃত ও জীবিত’ – ভাস্কর নভেরা আহমেদকে নিয়ে রেজাউল করিম সুমনের একটি অনুসন্ধানী লেখা। শিল্পীকে নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার কথা জানতে পারি। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে তাঁর কয়েকটি কাজ কীরকম অরক্ষিতভাবে পড়ে আছে তারও ছবি ছিল ওই লেখার সঙ্গে। ততক্ষণে আমার বুকের মধ্যে ধুকপুক শুরু হয়ে গেছে – সত্যিই কি নভেরা মারা গেছেন? এরপর মূল লেখার নীচে নানা জনের মন্তব্যগুলি পড়তে থাকি, ক্রমশ জট খুলতে থাকে। সুমন ভাইয়ের ব্লগপোস্ট আর তার নীচে বিভিন্ন জনের মন্তব্য থেকে শেষপর্যন্ত যা জানা গেল তা হলো – নভেরা আহমেদ এখনো জীবিত, তবে বন্ধুদের কারো…
|| দৈনন্দিন জীবনের ভাষা || আবহাওয়া নিয়ে কথা বলতে গেলে, কর নিয়ে অভিযোগ করার সময়, বা, পড়শীর বৌকে নিয়ে গালগপ্পো করার সময় লোকে লাতিনে কি বলত? আজ যে-ভাষায় কথা বলা হয় সে ভাষার ক্ষেত্রে এটা স্রেফ শুনেই বলে দেয়া যায়। কিন্তু লাতিন আমরা কেবল পড়তেই পারি, শুনতে পারি না, কাজেই রোজকার ভাষা কেমন ছিল তা বলা বেশ কঠিন। [. . .]
Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর দৈনন্দিন জীবনের ভাষা আবহাওয়া নিয়ে কথা বলতে গেলে, কর নিয়ে অভিযোগ করার সময়, বা, পড়শীর বৌকে নিয়ে গালগপ্পো করার সময় লোকে লাতিনে কি বলত? আজ যে-ভাষায় কথা বলা হয় সে ভাষার ক্ষেত্রে এটা স্রেফ শুনেই বলে দেয়া যায়। কিন্তু লাতিন আমরা কেবল পড়তেই পারি, শুনতে পারি না, কাজেই রোজকার ভাষা কেমন ছিল তা বলা বেশ কঠিন। যে সমস্ত বই-পত্তর আমাদের কাছে আছে তা থেকে অনেকটাই কুড়িয়ে-কাছিয়ে নেয়া যায় অবশ্য। কিন্তু বেশিরভাগ লেখক-ই কথ্য ঢং-এ লেখেন না, বরং ইচ্ছে করেই একটি শিল্পসম্মত উপায়ে লেখেন (তার মানে কি কথ্য ঢংটি শিল্পসম্মত নয়? – অনুবাদক), ব্যবহার করেন ব্যপক বিস্তৃত শব্দসম্ভার ও প্রায়ই, দীর্ঘ বাক্য; সেই সঙ্গে, ব্যাকরণের নিয়ম-কানুনের প্রতি সব সময়ই প্রদর্শন করেন পরম সম্মান। লোকে আজকাল এভাবে কথা বলে না, এবং অবশ্যই রোমেও তারা তা করত না। তাছাড়া, আমরা দেখেছি, বেশিরভাগ লেখকই এসেছিলেন সমাজের উঁচুতলা থেকে। এবং তাঁদের কথা বলার ধরন সম্ভবত অধিকাংশ রোমকদের কথা বলার ধরনের চাইতে ভিন্ন ছিল। আর তাই, সিসেরো বা তাঁর বন্ধুস্থানীয়দের মধ্যে কথ্য ভাষার যেসব উপাদান পাওয়া যায় তা প্রতিনিধিত্বমূলক নয়। সাধারণ মানুষ কিভাবে কথা বলতেন তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে প্লতাসের কমেডি থেকে, যার কথা আগে বলেছি আমরা। এখানে পরস্পরের সঙ্গে রাস্তায় দেখা হওয়া দুই গৃহবধূ ক্লেওস্ত্রাতা আর মিরিনা-র একটা ছোট সংলাপ তুলে দেয়া হলো : Cleostrata: Myrrhina, salve. Myrrhina: Salve, mecastor: sed quid tu's tristis, amábo? Cleostrata: Ita solent omnes quae sunt male nuptae: Domi et foris aegre quod sit, satis semper est. Nam ego ibam ad te. Myrrhina: Et pol ego istuc as te. Sed quid est, quod tuo nunc ánimo aegre'st? Nam quod tibi'st aegre, idem mihi'st dividiae. ক্লেওস্ত্রাতা: কি খবর, মিরিনা? মিরিনা: এই তো। কিন্তু তোমাকে এতো মনমরা দেখাচ্ছে কেন, গো? ক্লেওস্ত্রাতা: সবার-ই এমন হয় যদি সংসার জীবনে সুখ না থাকে; ঘরে বাইরে, কোথাও কোনো শান্তি থাকে না। আমি স্রেফ তোমার সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়েছি। মিরিনা: ভাবো দেখি! আমি-ও তো তোমার…
