বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের রায় নিয়ে শিরোনামহীন লেখা…..

কাদামাটি নোনাজল চাষবাস এই তিনের সমন্বয়ে জীবনযাপন করা বাঙালি যখন অস্ত্র হাতে তুলে জীবন বাজী রেখে দেশের স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন সারা বিশ্ব অবাক তাকিয়ে ছিল! নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জয়ী জাতির যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিল মাত্র চার বছরের মধ্যে তা ধুলোয় মিশে যায়। সপরিবারে জাতির জনককে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। স্তম্ভিত বিশ্বকে, পুরো বাঙালি জাতিকে আরো স্তম্ভিত করে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পুরস্কৃত হন। দেশে-বিদেশে তাদের পুরস্কৃতও করা হয়। এক জঘন্য ইনডেমনিটি আদেশ জারি করে সেই আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারের পথও রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। এর পর থেকেই এই জাতির যে শিশুটি জন্মেছে সেও বড় হয়ে জেনেছে এই আমাদের দেশ! যেখানে জাতির জনককে হত্যা করার পরও জাতি সেই খুনিদের বিচার করতে পারেনি! এটা যে এই জাতির জন্য কতটা গ্লানির আর কতটা কষ্টের তা বাইরের কেউ আমাদের মত উপলব্ধি করতে পারবেন না। সেই থেকে আমরা কেবলই অসহায় নিরূপায় প্রহর গুনে চলেছি। নিজেদের অর্জিত স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্বের সেই স্বর্নজ্জল দিনগুলো স্মরণ করেছি এবং এমনই একটি দিনের প্রতীক্ষায় থেকেছি।
রায়ে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন জেলা ও দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল। রায় ঘোষণার পর ১১ বছরেও তা কার্যকর হয়নি। নিয়মরীতি অনুসরণের পরামর্শ অথবা বিচারপতিদের বিব্রতবোধের কারণে কিছুটা বিলম্বের পরও ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিচারপতি মোঃ রুহুল আমিন এবং বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বিভক্ত রায় দেন। সে রায়ে বিচারপতি রুহুল আমিন ১০ জনের এবং বিচারপতি খায়রুল হক ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডই অনুমোদন করেছিলেন। এর নিষ্পত্তি করে ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল তৃতীয় বিচারপতি ফজলুল করিমের দেওয়া হাইকোর্টের রায়ে মোট ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন পাওয়া যায়।
তারপর আবার এই বিচার কাজ থেমে যায়। বলা ভাল- থামিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হলে আমরা আবার আশায় বুক বাঁধি- এবার নিশ্চই বঙ্গবন্ধুর খুনী কুখ্যাত সেই জাতির কলঙ্কগুলোর বিচার সম্পন্ন হবে। এত কিছুর পরও খুনিরা থেমে থাকেনি। আজকের এই রায় ঘোষণার আগে তাদের দোসররা একের পর এক নাশকতা ঘটাতে চেয়েছে, পরিস্থিতি ওলটপালট করে আবার এই রায়কে থামিয়ে দিতে চেয়েছে। ২১টি বছর ধরে এই বিচার এবং রায় নিয়ে এদেশের মানুষের উৎকণ্ঠায় কেটেছে। যে বিচার শেষ করা না হলে এই জাতির পাপমোচন হতো তা, যে বিচার শেষ করা না হলে এই জাতি সভ্য বিশ্বে মাথা তুলে বলতে পারত না যে আমরা লড়াই করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলাম, যে রায় না হলে প্রমাণ করা যেত না যে এই দেশটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, সেই ঐতিহাসিক রায় আজ ঘোষিত হলো। ২০০০ সালের ১৪ আগষ্টে খুনিদের ফাঁসীর আদেশ দিয়ে যে রায় ঘোষিত হয়েছিল আজ সেই রায়কেই বহাল রাখলেন সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতিদের বেঞ্চ।
এখন আমরা বলতে পারি- আমরা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছি। এখন আমরা বলতে পারি হে জাতির পিতা তোমায় আমরা রক্ষা করতে পারিনি, তোমার সাধের বাংলা তোমায় তোমার প্রাপ্ত আয়ু অব্দি লালনও করতে পারেনি, কিন্তু তোমাকে যারা নির্মম ভাবে হত্যা করে জাতির মাথায় এক কলঙ্কের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিল আজ আমরা তাদের বিচার করতে পেরেছি। আজ আমরা তোমার খুনের বদলা নিতে পেরেছি।

এর আগেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রনায়কদের হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের আর কোথাও এই রকম হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়নি, তাদের বাঁচানোর জন্য ইনডেমনিটি জারি করা হয়নি, খুনিদের বিচার কার্যক্রমকে বছরের পর বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়নি। এই সকল কারণে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড এবং তার বিচার কার্যক্রম এ দেশের ইতিহাসে এক অন্য মাত্রায় অলংকৃত হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশে শুরু থেকেই এই নিয়ম মানা হয় নাই। সে নিজেই আদালত হয়ে উঠছে। আদালতের বিকল্প রক্ষীবাহিনী গঠিত হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষকে ধরে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল। রক্ষীবাহিনী যাওয়ার পর সেনারা আদালতের দায়িত্ব নিয়েছে। পুলিশকেও এই দায়িত্ব দিয়েছে। সবশেষে র‌্যাব বানানো হয়েছে।তারাও নির্বিচারে মানুষ খুন করে চলেছে, কিন্তু আদালত কিছুই করে নাই।
এই প্রথম দেখলাম আদালত সরব হয়েছে, কাজ করেছে। বাংলাদেশের প্রথম সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধুকে দেশেরই সেনাবাহিনী হত্যা করার পরে যে আদালত অনুমোদন দিয়েছে, ইনডেমনিটি জারি করেছে। বিচার-আচারের জন্য আদালতে না এনে মানুষ হত্যা করার অপরাধে সেনা-পুলিশ-র‌্যাবকে কখনো যে আদালত কিছু বলেনি নি, সেই আদালত গত ১৭ নভেম্বর গৌরবজ্জল কাজ করেছে, আদালতের মতো কাজ!
১৫ তারিখ রাতে মাদারীপুরে দুই ভাইকে গুলি করে মেরে ফেলেছে র‌্যাব, আদালত র‌্যাব এর বিরুদ্ধে বিচার কাজ শুরু করছে, নিজে নিজেই। সুয়েমোটো রুল জারি করে হাইকোর্ট বিভাগ তাদের কাছে জবাব চেয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম।
এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ, ১৯ নভেম্বর, আরেকটি প্রথম ঘটনা ঘটেছে। বিচারবহির্ভূত তো বটেই, রাজনৈতিক হত্যাকান্ড প্রধানত, দেশের প্রধান রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে। নাগরিক হিসাবে আজ আমার-আপনার শুকরিয়ার আদায়ের দিন। আদালতকে আমরা শুকরিয়া জানাই। জানাই আইনজীবীদেরও।

পঁচাত্তরে আমি অনেক ছোট ছিলাম, সেই দিনের, সেই ১৫ ই আগষ্টের সকালটা আমার কাছে ঘোর অমাবস্যার রাত মনে হয়েছিল। স্তম্ভিত আমি সেই থেকে আর স্বাভাবিক রৌদ্রোজ্জ্বল দিন দেখিনা! এতটা বছর জুড়ে কেবলই মনে হয়েছে এক ঘোর অমানিশায় পথহারা আমি-আমরা শ্বাপদসংকুল জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হেঁটে চলেছি….. সেই হাঁটার যেন আর শেষ নেই! আজ, হ্যাঁ আজ মনে হচ্ছে নিকষ আঁধার পেরিয়ে আমরা হাঁটার যবনিকা টানতে পেরেছি। আমরা রৌদ্রোজ্জ্বল দিবালোকে পৌঁছেছি। আলোকময় দিন এক হ্যাঁচকা টানে সকল আঁধারকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমরা এতটা বছর চেপে রাখা অবিশ্বাস নিশ্বাস থেকে বের করে প্রাণ ভরে নতুন বাতাস টেনে নিতে পারছি। আমরা এবার একটি লম্বা ঘুমের প্রস্তুতি নিতে পারব।
(অপারগতাঃ খুব কম সময়ে লেখাটি লিখতে হয়েছে, তাই বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পোস্টে সংযোজন করা সম্ভবব হয়নি। সরাসরি সংবাদপত্রের লিংক দেওয়া হয়েছে।)
* কনডেম সেলে ৫ খুনি যে ভাবে আছে
*বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড এবং বিচারের বিবরণ……..
*২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর খু‍নিদের পালানোর পরিকল্পনা ছিল…..
*চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আপডেট।

মনজুরাউল

আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

১৬ comments

  1. মাসুদ করিম - ১৯ নভেম্বর ২০০৯ (৫:৪৩ অপরাহ্ণ)

    এই তড়িঘড়ি কাজের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা সত্যিই ‘রৌদ্রজ্জ্বল দিবালোকে পৌঁছেছি’। লম্বা ঘুম দিতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু আমি আপনি সবাই জানি, তা আর সম্ভব নয়, আমাদের সজাগই থাকতে হয় অহর্নিশি।

    • মনজুরাউল - ১৯ নভেম্বর ২০০৯ (৫:৫৭ অপরাহ্ণ)

      কিন্তু আমি আপনি সবাই জানি, তা আর সম্ভব নয়, আমাদের সজাগই থাকতে হয় অহর্নিশি।

      আমার এই অব্যক্ত কথাগুলি আপনি বলে দিলেন! ঘর পোড়া গরুদের কি স্বস্তি আছে? আকাশে সিঁদুরে মেঘেরও শেষ নেই আর আমাদের ডরানোর শেষ নেই!! আছি তো সারাক্ষণই এক আইয়েমে জাহেলিয়াতের কৃপাণের তলে ভয়ার্ত বেড়ালের মত…

      ধন্যবাদ মাসুদ করিম

  2. রায়হান রশিদ - ১৯ নভেম্বর ২০০৯ (১০:০৫ অপরাহ্ণ)

    ধন্যবাদ মনজুরাউল, সময়োপযোগী এই পোস্টের জন্য। ৩৪ বছর পর হলেও বিচারের রায় চূড়ান্ত হল। এই রায়টির খুব দরকার ছিল আমাদের। বিষয়টি প্রতিশোধের নয়; চোখের বদলে চোখ নয়। বিষয়টি ন্যায়বিচারের। অন্যায়ের স্মৃতি নিয়ে যখন কোন জাতিকে বাঁচতে হয়, তখন তা ভেতর থেকে তাকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলে। এই ক্ষয় থেকেই তৈরি হয় আমাদের ‘গা সওয়া’ নৈর্ব্যক্তিকতা, যা থেকে আরও বড় বড় সব অন্যায়ের এবং সে সব অন্যায়ের প্রতি ‘সহনশীলতার’ মানসিকতা দানা বাঁধে। বিষয়টা অপরাধবোধেরও। ঠিক সময়ে ঠিক কথাটি না বলতে পারার অপরাধবোধ, ঠিক সময়ে ঠিক অবস্থানটি না নিতে পারার আক্ষেপ। এমন অপরাধবোধ কিংবা আক্ষেপ নিয়ে ব্যক্তি মানুষই বাঁচতে পারে না; আর বাঁচলেও জীবন্মৃত নিস্পৃহতায় বাঁচে। আর পুরো জাতিকে যখন সেই সম্মিলিত অপরাধবোধ নিয়ে বাঁচতে হয়, তার ফলাফল বুঝি ভয়াবহ! সমস্ত বিকাশ, সমস্ত উত্তরণের দরজা বুঝি তখন বন্ধ হয়ে যায় মুখের ওপর। আমার বাবার প্রজন্মকে দেখেছি এই অপরাধবোধ নিয়ে বাঁচতে। ৭১ থেকে ৭৫ এর সময়কাল নিয়ে তাঁদের আক্ষেপ ছিল। কিন্তু সেই আক্ষেপকে পূঁজি করে যখন মতলববাজ শ্রেণী স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে সেই স্বাধীনতার নায়ককেই সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করলো, তখন তাদের পুরো প্রজন্মকেই সম্মুখীন হতে হয় কিছু কঠিন প্রশ্নের। আমার বাবার প্রজন্মের মানুষদেরই দেখেছি – তাদের একেকজন একেকভাবে এই সব প্রশ্নের আর সেগুলোর আরোপিত কৃত্রিম উত্তর মেনে নিয়ে সান্ত্বনা পাওয়ার চেষ্টা করে গেছেন সারা জীবন। কখনো এই হত্যাকান্ডকে জায়েজ করতে তাঁদের একাংশ ৭১ থেকে ৭৫ কে তুলে ধরেছেন অজুহাত হিসেবে, কখনো বিশ্বাস আনতে চেয়েছেন ‘অসাধারণ’ সব কল্পকাহিনীতে (যেমন: শেখ কামালই গুলি ছোঁড়া শুরু করেছিল, হত্যাকারীরা আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করতে বাধ্য হয়েছিল মাত্র!)। হত্যাকারী চক্রের মূল উদ্দেশ্য, কিংবা তারা আসলে কে, সেটা জাতির বুঝতে দেরি হয়নি। গল্পে শোনা মিষ্টি বিতরণ এবং ভক্ষণকারী (এবং সে সব ফলাও করে প্রচার করা) সেই নির্লজ্জ-নির্বোধ শ্রেণীটি ততদিনে বুঝে গেছে কিভাবে তাদের বোকা বানানো হয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ততক্ষণে তারা স্রোতে ভাসতে ভাসতে বলে ফেলেছেন অনেক কিছু, করে ফেলেছেন অনেক কিছু। যা করতে পারতেন যা করা উচিত ছিল তারও সময় পেরিয়ে গেছে ততদিনে। এমন অবস্থায় তাদের বুঝি একটাই পথ খোলা থাকে সামনে – আর তা হল: সর্বশক্তি ব্যয় করে সেই মিথ্যাগুলোকেই কল্পকাহিনীগুলোকেই প্রচার আর প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা। আমার বাবার প্রজন্মের বেশীর ভাগ মানুষই সেই গভীর গহ্বরের ঘোর লাগা জমে থাকা অন্ধকারে জীবন অতিবাহিত করেছেন। কিন্তু মনের কোনো কোণে তাদেরও হয়তো এক ধরনের গোপন আশা ছিল – ‘একদিন এর বিচার হবে’, ‘কেউ এই অন্যায়ের বিচার করুক একদিন’! সুষ্ঠু বিচার করে অন্য কেউ তাদের পরিত্রাণ (redemption) দিক! অপরাধবোধে খন্ডিত নিজেদের সত্তা তাদের সে সৎসাহস জোগায়নি যার বলে তারা নিজেরা কোন বলিষ্ঠ অবস্থান নিতে পারতেন। মানসিকভাবে পঙ্গু সেই প্রজন্মের সেই সব মানুষদের কাছে হয়তো তা আশাও করা যায় না। কিন্তু কেন যেন মনে হয়েছে এমনকি তারাও হয়তো চেয়েছে বাকীরা কিছু একটা করুক, এবং তাদের মুক্তি দিক মনের গভীরের এই বোঝা থেকে। বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়, এই বিচারের রায় তারাও আজ স্বস্তির সাথে সেলিব্রেট করছেন মনের কোনো কোণে।
    (এটা নিতান্তই ব্যক্তিগত এবং একেবারেই সাবজেক্টিভ কিছু উপলদ্ধির কথা)।

    আমাদের প্রত্যাশা: হত্যার রাজনীতি এর ফলে চিরতরে বন্ধ হবে এই ভূখন্ডে। আমাদের প্রত্যাশা: এবার একে একে শহীদ চার নেতা সহ খালেদ মোশাররফ, কর্নেল তাহের, জিয়া ও মঞ্জুর হত্যার বিচার দেখবে এই জাতি। মতলববাজ শ্রেণীর অপকর্ম আর পাপের বোঝা পুরো জাতিকে কেন বইতে হবে?

  3. সৈকত আচার্য - ২০ নভেম্বর ২০০৯ (৮:২৫ পূর্বাহ্ণ)

    কাজ থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে ভাবছিলাম, আমাদের মুক্তাঙ্গনে নিশ্চয়ই এতক্ষনে কেউ অন্ততঃ একটা পোষ্ট দিয়ে ফেলেছে। নিশ্চয়ই দারুন এবং অসাধারণ চিন্তাশীল কিছু মন্তব্যও চলে এসেছে। মনজুরাউল একটা দারুন কাজ করেছেন। এই ঐতিহাসিক একটা মূহুর্তকে নির্মাণের ক্যামেরায় চটজলদি তুলে রেখেছেন। আলোচনায় পরে অংশ নেব। তার আগে মনজুরাউল এবং আলোচনায় অংশ নেয়া অন্যদের বিপ্লবী অভিবাদন।

  4. মাসুদ করিম - ২০ নভেম্বর ২০০৯ (৪:২৯ অপরাহ্ণ)

    গতকাল প্রথম আলো ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা বিশেষ সংখ্যা’ প্রকাশ করেছিল।

  5. মাসুদ করিম - ২১ নভেম্বর ২০০৯ (১০:৫১ পূর্বাহ্ণ)

    আজকে সকালে ভারতের যে কয়েকটি বাংলা ইংরেজি পত্রিকা উল্টেপাল্টে দেখেছি, শুধু ‘দি হিন্দু’ মুজিব হত্যা মামলার রায় নিয়ে সম্পাদকীয় লিখেছে।

    A large section of the people considered the coup and the assassination as part of a sinister and determined plot to turn the nation away from the path of socialism, democracy, nationalism, and secularism. If Bengali nationalism was the guiding spirit of the liberation struggle, a form of Bangladeshi nationalism, with stress on religious identity, was being sought to be established. The most significant outcome of the Supreme Court’s verdict should therefore be a reaffirmation of the dream of 1971.

    The fabric of civil society needs to be repaired. It is time for Bangladesh to turn the tragic and traumatic page and move on. The country owes it to Mujib, who was a unifying leader. It needs the salve of reconciliation and cooperation and has to come to terms with the imperatives of development. Prime Minister Sheikh Hasina, the latest winner of the Indira Gandhi Prize for Peace, needs to keep in mind the legacy she represents and take Bangladesh forward in tune with the founding spirit.

    পুরো পড়ুন। এবং এখানে দেখুন Mujib’s killers case: A chronology of events

  6. অবিশ্রুত - ২২ নভেম্বর ২০০৯ (১:২৫ পূর্বাহ্ণ)

    শেখ কামালকে নিয়ে উইকিপিডিয়াতে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার : কেউ কি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন না?

    • রায়হান রশিদ - ২২ নভেম্বর ২০০৯ (২:২০ পূর্বাহ্ণ)

      ধন্যবাদ অবিশ্রুত। এই এন্ট্রিটি আগে চোখে পড়েনি। উইকি এডমিনদের একজনকেই কেবল চিনি; তাকে পাঠিয়েছি লিন্কটা। উইকি’র ব্যাপারটা অবশ্য আমি পুরোপুরি বুঝি না। সেখানে কি কোন ধরণের ফ্যাক্টচেকের ব্যবস্থাই নেই? এই এন্ট্রিটাতে দেখছি এন্ট্রি-লেখক কোন রেফারেন্স (এমনকি ভূয়া রেফারেন্স) দেয়ারও প্রয়োজন মনে করেনি। সেখানে কি যে কেউ যে কোন কিছু লিখে কোন রেফারেন্স উল্লেখ না করে তুলে দিলেই হয়ে যায় নাকি?

      এন্ট্রিটিতে বলা হচ্ছে এটি নাকি একটি Stub, যার উইকি-সংজ্ঞা হল:

      A stub is an article containing only a few sentences of text which is too short to provide encyclopedic coverage of a subject, but not so short as to provide no useful information, and it should be capable of expansion.

      এমন একটি গালগপ্প “useful information” হল কোন্ বিচারে? Stub সম্বন্ধে আরও বলা হচ্ছে:

      Note that if a small article has little properly sourced information, or if its subject has no inherent notability, it may be deleted or be merged into another relevant article.

      মডারেটরদের উপস্থিতিতে এমন একটি এন্ট্রি উইকিতে টিকে আছে কিভাবে সেটাই প্রশ্ন। কত দিন ধরেই বা এটা সেখানে আছে কে জানে!!
      এই গূঢ় বিষয়গুলো কারও জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন।

      • রায়হান রশিদ - ২২ নভেম্বর ২০০৯ (২:৩৬ পূর্বাহ্ণ)

        আরও একটি বিষয়:
        এই অকাজগুলো কোন গ্রুপ কি দলবদ্ধভাবে করছে কিনা তা আমাদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। প্রয়োজনে আমাদেরও নিয়ম করে উইকিতে লেখা শুরু করা দরকার পরিকল্পিতভাবে। দু’একজন যারা এই বিষয় নিয়ে উইকিতে প্রচন্ড খাটনি খেটে যাচ্ছেন তারাই সব কিছু নিজ উদ্যোগে করে দেবেন সে আশায় বসে থাকার মানে হয় না।

    • রায়হান রশিদ - ২২ নভেম্বর ২০০৯ (২:৪২ পূর্বাহ্ণ)

      আপডেট:
      এন্ট্রিটির আপত্তিকর অংশটি তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নিয়ে বাদ দিয়েছেন উইকি প্রশাসক রাগিব। অনেক ধন্যবাদ তাঁকে।

      এখন করণীয়:
      এমন আর কি কি উইকি এন্ট্রি রয়েছে চলুন সেগুলোও খুঁজে বের করি এবং ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যথাস্থানে অনুরোধ করি।

  7. মনজুরাউল - ২২ নভেম্বর ২০০৯ (৪:২০ পূর্বাহ্ণ)

    অপেক্ষায় আছি। রাগিব বাংলাদেশ সময় ভোরের দিকে সামুতে লগইন করে। তার সাথে কথা বলতে হবে। রায়হান রশীদ আপডেট দিয়েছেন যে রাগিব লিঙ্ক দেখার পর আপত্তিকর অংশটুকু মুছে দিয়েছেন। এখন কথা হচ্ছে তাদের গোচরে থাকা অবস্থায় কি করে এধরণের কন্টেন্ট উইকি তে প্রকাশ হতে পারে? রাগিবরা তো উইকি নিয়ে বেশ গর্ব করে থাকেন। এ বিষয়ে কিছু দিন আগেই তাঁর সাথে আমার বেশ কিছু আলোচনা হয়েছিল।
    অবিশ্রুতকে অশেষ ধন্যবাদ এই গুরুত্বপূর্ণ সংবাদটি জানানোর জন্য।

  8. রাগিব - ২৩ নভেম্বর ২০০৯ (১০:৪২ পূর্বাহ্ণ)

    ইংরেজি উইকিতে বাংলাদেশ সংক্রান্ত প্রায় হাজারখানেক ভুক্তি আমার হাতে তৈরী করা বিধায় সেগুলো নজর তালিকায় আছে। এর মধ্যে এই ভুক্তিটিও রয়েছে বই কি। কিন্তু আমার নজর তালিকায় সর্বমোট আড়াই হাজার নিবন্ধ রয়েছে বলে দৈনিক ২০০ টির মতো আপডেট আসে। ব্যক্তি হিসাবে ২৪ ঘণ্টা সময় উইকিতে দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়, আর ইদানিং সিংহভাগ সময় বাংলা উইকিতেই কাটাচ্ছি।

    এসব কথা বলার কারণ এটাই, আপনারা সবাই যদি ধরে থাকেন, আমি বা আর হাতে গোনা যে দুই বা এক জন বাংলাদেশী উইকিপিডিয়ান সব ভুক্তির উপরে নজর রাখতে পারবেন, তাহলে ভুল হবে। বহুদিন (প্রায় বছর ৪ হয়ে গেলো) ধরে আমি উইকিপিডিয়াতে সবাইকে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে অনুরোধ করে আসছি, কারণ তথ্য ও জ্ঞানের এই ভাণ্ডারে সঠিক তথ্য দিতে আলসেমি করলে স্বাধীনতা বিরোধীরা খুব সহজেই তার সুযোগ নেবে। তাই ব্যক্তি সীমাবদ্ধতায় সীমিত আমি বা গোটা দুইজনের উপরে পুরো উইকি দেখেশুনে রাখার দায়িত্ব দিলে সেটা সামগ্রিকভাবে সেটা অসম্ভব একটা কাজ হয়ে যাবে।

    আর সর্বশেষ কথা হলো, যে ভুক্তিটি নিয়ে এখানে লেখা হয়েছে, তা মাত্র ১ দিন আগে নভেম্বরের ২০ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের বেনামি একটি আইপি থেকে করা হয়েছে। একই তথ্য এর আগে যতবার “অসীম” ছদ্মনামে বিনা সূত্রে যোগ করা হয়েছিলো, ততোবার আমি নিজে তা সাথে সাথে সরিয়ে দিয়েছি। এটাও বলে রাখি, তথ্যটির যথাযথ ও নির্ভরযোগ্য সূত্র দিয়ে যদি আবার যোগ করা হয়, তাহলে তা অবশ্যই রাখা হবে। উইকির মূলনীতি নিরপেক্ষতা ও যাচাইযোগ্যতা।

    আশা করি আপনারা সবাই একটু সচেতন হবেন, এবং একজন/দুইজন ব্যক্তির উপরে বাংলাদেশের যাবতীয় তথ্য নজরে রাখার দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত না হয়ে থেকে নিজেরাও খেয়াল রাখবেন। এরকম আরো কোনো অসংগতি চোখে পড়লে হয় পাতার উপরের “এডিট” বাটনটিতে ক্লিক করে নিজেই ঠিক করে দিন, অথবা আমাকে বা অন্য বাংলাদেশী উইকিপিডিয়ানদের জানান।

    • মনজুরাউল - ২৫ নভেম্বর ২০০৯ (৪:০১ পূর্বাহ্ণ)

      ধন্যবাদ রাগিব। এই বিষয়টি আমাদের আরো সক্রিয় ভাবে ভাবা উচিৎ। আমার মনে হয় ওখানে আমরা সময় দিতে পারি কি ভাবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু করা যায়। উইকির গুরুত্ব বুঝে কাজটা আমাদেরই হাতে নেওয়া দরকার। এ ব্যাপারে আর সবার মতামত জানতে চাইছি। রাগিব যদি এখানে তার মেইল আইডি দেন তাহলে আরো ভাল হয়।

      • রাগিব - ৩০ নভেম্বর ২০০৯ (১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ)

        উপরে আমার নামে ক্লিক করলেই ওয়েবসাইট পাবেন, সেখানেই যোগাযোগের ব্যবস্থা বলা আছে। সবচেয়ে সহজে যোগাযোগ করতে হলে রাগিবহাসান@জিমেইল এ ইমেইল করতে পারেন।

    • মোহাম্মদ মুনিম - ২৫ নভেম্বর ২০০৯ (৭:৫২ পূর্বাহ্ণ)

      উইকিপিডিয়াতে আমি কিছুদিন আগে নিবন্ধন করেছি, এতো সহজে যে কোন লেখা এডিট করা যায় সেটা আগে জানা ছিল না। বাংলাদেশ সম্পর্কিত আর্টিকেল গুলো যে আরো আগে abuse এর শিকার হয়নি, সেটাই অদ্ভুত ব্যাপার। এই অসীম নামের ব্যক্তিটি এর আগে অনেকবার শেখ কামালের আর্টিকেলে এই ব্যাপারটি যুক্ত করার চেষ্টা করেছে। শেখ কামাল আর্টিকেলটি যে প্রথমে লিখেছিল, সেও এই ব্যাপারটিকেই হাইলাইট করেছে, প্রথম এন্ট্রিটি ছিল এরকমঃ

      Sheikh Kamal was the son of Sheikh Mujibur Rahman, the founding leader of Bangladesh. Groomed as his political successor, Sheikh Kamal was accused of organizing armed robberies with a mob of sycophants. He was killed with the rest of the Rahman family on August 15, 1975.

      একজন মুক্তিযোদ্ধার জীবনী এই দুলাইনেই শেষ। এই পর্যন্ত শেখ কামাল বিষয়ক আর্টিকেলটি প্রায় ৩০ বার এডিট করা হয়েছে, মুলত ডাকাতির ব্যাপারটি যোগ করা এবং বিয়োগ করা নিয়ে। তার ডাকাতির ব্যাপারটি নিয়ে দেশেও অনেক গালগল্প প্রচলিত আছে, গুলি নাকি পায়ে লাগেনি, গলায় লেগেছিল, তার চিকিৎসা কোথায় হয়েছিল ইত্যাদি ইত্যাদি, কখনো সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করিনি, বরং বিশ্বাসই করেছি, কারণ বিশ্বাস করলে সবকিছু খাপে খাপ মিলে যায়। মুজিব পরিবার দেশকে লুটপাট করে সর্বস্বান্ত করছিল আর ‘ইন্ডিয়া’র হাতে তুলে দিচ্ছিল, তারপর সেনাবাহিনীর কতিপয় সাহসী অফিসার রাজপুত্রের মত আমাদের উদ্ধার করেন, এই সহজবোধ্য এবং সহজপাচ্য ইতিহাস থাকতে কে প্রকৃত ইতিহাস ঘাঁটতে যায়!

  9. কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ২৩ নভেম্বর ২০০৯ (১০:৫৬ অপরাহ্ণ)

    প্রথমেই বলে নিই, শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হওয়া বাংলাদেশের বিচারব্যাবস্থার অতি দরকারি এক বিষয়। বিচারবিহীন এত হত্যাকাণ্ড দেখে দেখে আমরা ধরে নিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে, বিচার-টিচার করার পূর্ণাঙ্গ অধিকার পরজীবী রাষ্ট্রসমূহের থাকতে নেই। এটা আরও দরকার ছিল এ কারণে যে, এটি অন্তত বুঝিয়ে দেয়া, রাষ্ট্রপালিত জলপাই শাসকদেরও বিচার সম্ভব। এ বিচারকাণ্ডের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসাবে এটি অন্যতম।
    রাষ্ট্রপালিত সহিংস প্রতিটি হত্যাকাণ্ড দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ক্ষত রেখে যায়। একটা মানুষকে, তার পরিবারকে, সমাজকে ক্লেদাক্ত করে। তবু আমরা হত্যাকাণ্ড দেখতে বাধ্য হচ্ছি।
    এতে কি ধরে নেব যে, রাষ্ট্র আর বিচারবিহীন হত্যাকাণ্ড ঘটাবে না?! এর কি আদৌ সার্বভৌম কোনও সুরাহা হবে???

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.