ঠিক একশো বছর আগে, ১৯০৯ সালের ২৭ আগস্ট, আটষট্টি বছর বয়সে কলকাতায় গিরীন্দ্রকুমার দত্তের জীবনাবসান হয়। সাহিত্য, ব্যঙ্গচিত্র, শিল্পশিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। মৃত্যুশতবর্ষে তাঁকে স্মরণ করা হলো এই লেখায়। [...]

ঠিক একশো বছর আগে, ১৯০৯ সালের ২৭ আগস্ট, আটষট্টি বছর বয়সে কলকাতায় গিরীন্দ্রকুমার দত্তের জীবনাবসান হয়। সাহিত্য ও চিত্রকলা – উভয় ক্ষেত্রেই তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। তিনি ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সমসাময়িক ঔপন্যাসিক। শ্রীগজপতি রায় ছদ্মনামে তাঁর লেখা ‘ঐতিহাসিক নবন্যাস : অঙ্গখণ্ড : মাধবমোহিনী’-র সমালোচনা প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্কিমচন্দ্র সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার ফাল্গুন ১২৭৯ সংখ্যায় এবং অমৃতবাজার পত্রিকায় ১৮৭৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখে। তাঁর লেখা আরো দুটি উপন্যাসের নাম জানা যায় : ‘চন্দ্ররোহিণী’ (১৮৭৫) এবং ‘হীরালাল’ (১৮৭৭)। রাজেন্দ্রলাল মিত্র সম্পাদিত সচিত্র মাসিকপত্র ‘রহস্য সন্দর্ভ’ এবং প্রাণনাথ দত্ত সম্পাদিত রঙ্গ-ব্যঙ্গমূলক সচিত্র মাসিকপত্র ‘বসন্তক’-এ গিরীন্দ্রকুমার নিয়মিত লিখতেন। প্রাণনাথ (১৮৪০-১৮৮৮) আর গিরীন্দ্রকুমার দুজনই ছিলেন কলকাতার হাটখোলার দত্তবাড়ির ছেলে; প্রাণনাথ গিরীন্দ্রকুমারের জেঠতুতো অগ্রজ। গিরীন্দ্রকুমার রাজেন্দ্র দত্তর তৃতীয় পুত্র, তাঁর জন্ম হয় ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দ অর্থাৎ ১২৪৭ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসে। ‘বসন্তক’ (১৮৭৪-১৮৭৬) পত্রিকার প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১৮৭৪ সালের জানুয়ারি মাসে। সে-সময়ে দুই তুতো ভাইয়ের বয়স ৩৩/৩৪। দুজনের আঁকা ব্যঙ্গচিত্রের লিথোগ্রাফ ছাপা হতো পত্রিকাটিতে। ‘বাংলা বইয়ের ছবি’ প্রবন্ধে কমল সরকার লিখেছেন, “‘বসন্তক’ সম্পাদক প্রাণনাথও ছিলেন শিল্পী। কিন্তু গিরীন্দ্রকুমারের চিত্রাঙ্কন প্রতিভা ছিল অনন্যসাধারণ।” দেবীপদ ভট্টাচার্যের ‘বাংলা সাময়িকপত্র’ প্রবন্ধ থেকে জানা যাচ্ছে, ডাকমাশুল সমেত ‘বসন্তক’-এর বাৎসরিক চাঁদা ছিল তিন টাকা ছয় আনা। ‘এই পত্র সম্বন্ধীয় পত্রাদি’ পাঠাবার ঠিকানা ছিল ‘চিৎপুর রাস্তার ৩৩৬ নং ভবন’; পত্রিকাটি মুদ্রিত হতো গরাণহাটা ৩৩৬ সুচারু যন্ত্রে। ‘সংবাদ প্রভাকর’, ‘সংবাদ ভাস্কর’ প্রভৃতির মতো ‘বসন্তক’ শিরে একটি সংস্কৃত শ্লোক বহন করত : নব পরিণয়যোগাৎ স্ত্রীষুহাস্যাভিযুক্তং মদবিলসিত নেত্রং চারুচন্দ্রার্দ্ধমৌলিং বিগলিত ফণিবন্ধং মুক্তবেশম্ শিবেশং প্রণমতি দিনহীনঃ কালকূটাভ কণ্ঠং।। ‘প্লানচেট’ যন্ত্রকে শিখণ্ডী করে ‘বসন্তক’ তখনকার বাঙালী রাজনৈতিক নেতাদের, রাজপুরুষদের (অ্যাশলি ইডেন, রিচার্ড টেম্পল, স্টুয়ার্ট হগ প্রভৃতি) নিয়ে রঙ্গকৌতুক করত, ‘প্লানচেটে’র আসল উদ্দেশ্য তার মতে ‘প্ল্যান টু চীট’। ‘মানভঞ্জন’, ‘হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী’, নিরেট গাধা’ প্রভৃতি কার্টুন খুবই উপভোগ্য। তখনকার দিনের প্রাচীন গ্রন্থ প্রকাশ সম্পর্কেও কৌতুককর কটাক্ষ আছে। ‘প্লানচেটে’ বাল্মীকির পর কৃত্তিবাস-কাশীদাস এলেন, বললেন : “আমাদের সকল দোষ নহে, যা দেখ তাহা আমাদের হাত-পা ভাঙ্গা কন্ধাকার মাত্র। কতকগুলো উপাধিধারী প্রকাশকেই আমাদের এ দশা করেছে – যদিও কপিতলার আক্রমণে হাড়গোড় রক্ষা পেয়েছিল, বটতলার কুষ্মাণ্ডগুলো তাও শেষ করেছে।...” ‘বসন্তক’-এ সমকালীন রাজনৈতিক প্রসঙ্গের গান ও…

গত বছর অরুণ সোমের কাছ থেকে দূরভাষে জেনেছিলাম, তিনি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত, কেননা তাঁর ছোটভাই বেশ কিছুদিন ধরে তখন রোগশয্যায়। ততদিনে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে দুরারোগ্য কর্কটরোগ। পরে একবার খবর নিয়ে জেনেছি, চিকিৎসা চলছে, কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এরপর গড়িয়ে গেছে অনেকটা সময়। ক’দিন আগে দূরভাষে কুশল জানতে চাইলে অরুণ সোম মাসুদ করিমকে জানান, তল্‌স্তোয়ের ‘যুদ্ধ ও শান্তি’-র অনুবাদের পাণ্ডুলিপি অনেকদিন ধরেই পড়ে আছে সাহিত্য অকাদেমিতে, দস্তইয়েভ্‌স্কি-র ‘কারামাজোভ্ ভাইয়েরা’-র অনুবাদও অনেকটা এগিয়েছে, আর তাঁর ছোটভাই মারা গেছেন জুলাইয়ের ১১ তারিখে। [...]

গত বছর অরুণ সোমের কাছ থেকে দূরভাষে জেনেছিলাম, তিনি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত, কেননা তাঁর ছোটভাই বেশ কিছুদিন ধরে তখন রোগশয্যায়। ততদিনে শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে দুরারোগ্য কর্কটরোগ। পরে একবার খবর নিয়ে জেনেছি, চিকিৎসা চলছে, কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এরপর গড়িয়ে গেছে অনেকটা সময়। ক’দিন আগে দূরভাষে কুশল জানতে চাইলে অরুণ সোম মাসুদ করিমকে জানান, তল্‌স্তোয়ের ‘যুদ্ধ ও শান্তি’-র অনুবাদের পাণ্ডুলিপি অনেকদিন ধরেই পড়ে আছে সাহিত্য অকাদেমিতে, দস্তইয়েভ্‌স্কি-র ‘কারামাজোভ্ ভাইয়েরা’-র অনুবাদও অনেকটা এগিয়েছে, আর তাঁর ছোটভাই মারা গেছেন জুলাইয়ের ১১ তারিখে। ২ ভদ্রলোককে প্রথম দেখি ২০০৬-এর ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে। অরুণ সোম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, ‘আমার ছোট ভাই’। শ্মশ্রুময় মুখ; সৌম্যদর্শন মাঝারি গড়নের একজন মানুষ। অল্পদিন আগে কলেজের অধ্যাপনা থেকে অবসর নিয়েছেন। অগ্রজের গড়িয়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি ফিরে যাবেন পার্ক সার্কাসে; আমি যাব আশুতোষ চৌধুরী এভিনিউর সিমা আর্ট গ্যালারিতে। সন্ধ্যা গড়িয়ে গেছে, যোগেন চৌধুরীর প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়ে গেছে ততক্ষণে। আমাকে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য ট্যাক্সি (ক্যাব) নিতে চাইলেন প্রথমে। অনেকটা পথ হেঁটেও পাওয়া গেল না। অগত্যা চেপে বসতে হলো বাসে। পুরো পথ জুড়েই কথা চলল। নিজের কথা কিছুই বললেন না, কিন্তু প্রশ্ন করে করে জেনে নিতে লাগলেন আমাদের খবর, বাংলাদেশের খবর। তাঁর শৈশবের প্রথম কয়েক বছর কি ঢাকায় কেটেছে? কেমন ছিল সেইসব দিন? এসব প্রশ্ন করা হয়নি সেদিন। যদিও দ্বিজেন শর্মার কাছ থেকে আগেই জেনেছিলাম, অরুণ সোমের আদিবাড়ি পূর্ববঙ্গে, তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে। পঞ্চাশের দাঙ্গার পর তাঁর বাবা সপরিবারে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। বাস থেকে নেমে খানিকটা পথ হাঁটতে হয়। যতদূর মনে পড়ে রাস্তার পাশেই ছিল বড়ো একটা শাদা মন্দির, আর তার অল্প পরেই সিমা আর্ট গ্যালারি। আমার বর্ষীয়ান সঙ্গীকে জানাই, কয়েক দিন আগেই একবার এসেছি, চিনতে অসুবিধে হবে না। আমার আপত্তি সত্ত্বেও সিমা যে-দালানে সেই সানি টাওয়ারের নীচতলা অবধি আমাকে পৌঁছে দিয়ে তবেই বিদায় নিলেন ভদ্রলোক। ৩ ‘তোত্তোচান’-এর সূত্রে বিদেশি সাহিত্যের অনুবাদ নিয়ে কথা হচ্ছিল বইটির অনুবাদক মৌসুমী ভৌমিকের সঙ্গে, শেষ প্রচ্ছদে যাঁর পরিচয় দেয়া হয়েছে একালের ‘বিশিষ্ট পপশিল্পী’ হিসেবে। কথায় কথায় উঠে পড়ল মস্কোর প্রগতি ও ‘রাদুগা’ প্রকাশনের মনকাড়া অনুবাদ বইগুলোর কথা, সেই সূত্রে…

আমাদের এই সময়টাকে সবদিক দিয়ে সর্বার্থে জড়িয়ে আছেন তিনি। তাঁরই কথায়, ‘শিকড় দিয়ে আঁকড়ে’ আছেন। তাই কবি শঙ্খ ঘোষ-এর কোনও বিশেষ পরিচয় হয় না। তাঁর অস্তিত্বই তাঁর পরিচয়। বাংল কবিতায় প্রায় ষাট বছর ধরে তিনি তৈরি করে নিয়েছেন এমন এক পথ, যে-পথে স্বল্প যাত্রী, যে-পথে সামান্য আলো জ্বলে। সমালোচনায় নিয়ে এসেছেন সর্বজনবোধ্য এক জ্ঞানচর্চার দিশা, সংক্রামকভাবে বারবার সাড়া দিয়েছেন সংকট সময়ে। এই কবির সঙ্গে কথা বলেছেন সুমন্ত মুখোপাধ্যায়। লেখার কথা, জীবনের কথা, ঘরের আর বাইরের কথা। [...]

[বইয়ের দেশ (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০০৯) থেকে সংকলিত] সকলেই একটা আশ্রয়ের কথা ভাবছে আমাদের এই সময়টাকে সবদিক দিয়ে সর্বার্থে জড়িয়ে আছেন তিনি। তাঁরই কথায়, ‘শিকড় দিয়ে আঁকড়ে’ আছেন। তাই কবি শঙ্খ ঘোষ-এর কোনও বিশেষ পরিচয় হয় না। তাঁর অস্তিত্বই তাঁর পরিচয়। বাংল কবিতায় প্রায় ষাট বছর ধরে তিনি তৈরি করে নিয়েছেন এমন এক পথ, যে-পথে স্বল্প যাত্রী, যে-পথে সামান্য আলো জ্বলে। সমালোচনায় নিয়ে এসেছেন সর্বজনবোধ্য এক জ্ঞানচর্চার দিশা, সংক্রামকভাবে বারবার সাড়া দিয়েছেন সংকট সময়ে। এই কবির সঙ্গে কথা বলেছেন সুমন্ত মুখোপাধ্যায়। লেখার কথা, জীবনের কথা, ঘরের আর বাইরের কথা। . . . সুমন্ত : বেশির ভাগ কবি বা লেখকেরই তো লেখা শুরুর সময়ে আটপ্রহরের লেখকবন্ধুরা এসে যায়, একসঙ্গে তারা লেখে, তর্ক করে, লেখা ছাপতে দেয়, তারপর একদিন যে যার পথে চলতে থাকে। আপনার ক্ষেত্রেও কি তেমন হয়েছিল? শঙ্খ : তেমন কোনো লেখকবন্ধুর দল? না, শুরু করবার দিনগুলিতে একেবারেই হয়নি সেটা। এ-ব্যাপারে একটু লুকিয়ে-থাকা স্বভাবই ছিল আমার। ভরসা করে কাউকে দেখাব লেখা, আবার তা নিয়ে তর্কও করব, এতটা উদ্যম ছিল না, সাহসও ছিল না। প্র : তাহলে, একেবারে শুরুতে কাদের কাছ থেকে উৎসাহ পেতেন? কাউকে-না-কাউকে তো দেখিয়েছেন? উ : স্কুলজীবনে বা কলেজজীবনের একেবারে গোড়ায় খুব ঘনিষ্ঠ দু’-একজন বন্ধু – নিজেরা যারা লিখত না – তেমন কাউকে পড়িয়েছি কখনও। তারা যে কেবল উৎসাহ দিত তা নয়, তারও চেয়ে বেশি, বাড়তি একটু বাহবাই দিত। এমনকী ছাপাবার জন্যও পীড়াপীড়ি করত। প্র : গোড়ার দিকে তিনটে কবিতার খাতা পুড়িয়ে দিয়েছিলেন কেন তবে? এইরকম একটা কথা পড়েছি কোথাও। উ : হ্যাঁ, বলেছি কিছুদিন আগে। হস্টেলের এক বন্ধুর সঙ্গে একটু মান-অভিমানের ঘটনা ছিল সেটা। ও পড়েছিল কবিতা, কিন্তু সেটা আবার রটিয়েও দিয়েছিল। সবাইকে ও জানিয়ে দিল কেন? এই অভিমান থেকে কাণ্ডটা। ছেলেমানুষিই হয়েছিল। অবশ্য ছেলেমানুষই তো ছিলাম তখন। ষোলো বছর বয়সের ঘটনা ওটা। প্র : কোন হস্টেল? রামকৃষ্ণ মিশনের? উ : রামকৃষ্ণ মিশনের। এখন বেলঘরিয়াতে প্রকাণ্ড জায়গা জুড়ে যে রামকৃষ্ণ মিশন স্টুডেন্টস হোম, খুবই ছোট চেহারায় সেটা তখন – মানে দেশভাগের সময়টায় – ছিল মানিকতলার হরিনাথ দে রোডে। সেখানে কাটিয়েছি দু’বছর। বেশ নতুন রকমের অভিজ্ঞতা ছিল সেটা। প্র :…

বিগত সাত-আট দশকে বিষ্ণু দে-র কবিতা নিয়ে কম বির্তক হয়নি। পাঠকের মুগ্ধতা ও ঔদাসীন্য – দুই-ই জুটেছে এই কবির ভাগ্যে। যাঁর কবিতা ব্যক্তি, সমাজ, শিল্প-সাহিত্য-রাজনীতির সম্বন্ধসূত্রে জড়ানো, তাঁর পাঠক কি কেবল বিচ্ছিন্ন কিছু কবিতা ভালো-লাগার (বা না-লাগার) অনুভব নিয়ে সন্তুষ্ট (বা অসন্তুষ্ট) থাকবেন, না কি ছুঁতে চাইবেন তাঁর অব্যাহত সমগ্রতাকেও? সেটাই নিশ্চয়ই প্রত্যাশিত। কিন্তু একালের পাঠকের কাছে কতটা প্রাসঙ্গিক বিষ্ণু দে-র কবিতা? জন্মশতবর্ষে পৌঁছনোর পর, এসব প্রশ্ন নতুন করে ওঠাই স্বাভাবিক। এরই মধ্যে উঠেছেও। বিষ্ণু দে-র কবিতার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে তেমনি একটি প্রবন্ধ, অরুণ সেনের ‘কঠিন ব্রতের গৌরব’, আমাদের জন্য আলোচনার পরিসর তৈরি করে দিতে পারে। [...]

বিগত সাত-আট দশকে বিষ্ণু দে-র কবিতা নিয়ে কম বির্তক হয়নি। পাঠকের মুগ্ধতা ও ঔদাসীন্য – দুই-ই জুটেছে এই কবির ভাগ্যে। যাঁর কবিতা ব্যক্তি, সমাজ, শিল্প-সাহিত্য-রাজনীতির সম্বন্ধসূত্রে জড়ানো, তাঁর পাঠক কি কেবল বিচ্ছিন্ন কিছু কবিতা ভালো-লাগার (বা না-লাগার) অনুভব নিয়ে সন্তুষ্ট (বা অসন্তুষ্ট) থাকবেন, না কি ছুঁতে চাইবেন তাঁর অব্যাহত সমগ্রতাকেও? সেটাই নিশ্চয়ই প্রত্যাশিত। কিন্তু একালের পাঠকের কাছে কতটা প্রাসঙ্গিক বিষ্ণু দে-র কবিতা? জন্মশতবর্ষে পৌঁছনোর পর, এসব প্রশ্ন নতুন করে ওঠাই স্বাভাবিক। এরই মধ্যে উঠেছেও। বিষ্ণু দে-র কবিতার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে তেমনি একটি প্রবন্ধ, অরুণ সেনের ‘কঠিন ব্রতের গৌরব’, আমাদের জন্য আলোচনার পরিসর তৈরি করে দিতে পারে। লেখাটি এ বছরের জানুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রকাশিত বিষ্ণু দে : স্বভাবে প্রতিবাদে নামের বইয়ের অন্তর্গত। বিষ্ণু দে-কে নিয়ে একই লেখকের ইতিপূর্বে প্রকাশিত বইগুলো হলো : এই মৈত্রী এই মনান্তর ; বিষ্ণু দে-র রচনাপঞ্জি ; বিষ্ণু দে, এ ব্রতযাত্রায় ; যামিনী রায় বিষ্ণু দে: বিনিময় ; বিষ্ণু দে-র কথা ; বিষ্ণু দে-র নন্দনবিশ্ব এবং ইংরেজিতে ও বাংলায় জীবনী বিষ্ণু দে । প্রথমোক্ত বইটি উল্লিখিত কয়েকটি গ্রন্থের নতুন বিন্যাস, অবশ্যই নতুন সংযোজন সহ। বিষ্ণু দে-র শততম জন্মদিনে (নাতি)দীর্ঘ এই লেখাটি পড়ার ও আলোচনায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ রইল সকলের প্রতি। . . . ‘কঠিন ব্রতের গৌরব’ অরুণ সেন তিরিশের কবিদের প্রত্যেকেই যখন একে-একে একশো বছরে পৌঁছোচ্ছেন, তখন, প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই, এই প্রশ্ন সংগতভাবেই ওঠে : যে-কবির প্রতি আমরা একদা আগ্রহী ছিলাম, সেই কবি আজও কতটা পঠিত? সব কবিরই নিজস্ব পাঠক ছিলেন সমকালে, পরে দীক্ষিত স্থায়ী পাঠকসমাজও গড়ে উঠেছে তাঁদের এক-একজনকে ঘিরে – কিন্তু অনেকসময় পার করে সেই কবি সম্পর্কে নতুন পাঠকের উৎসাহ কি টিকে আছে এখনও? নতুন পাঠকের নতুন আবিষ্কার কি ঘটছে? মনে কি হচ্ছে, আজও সেই কবি জীবিত এবং প্রাসঙ্গিক? অবশ্য তফাত একটা হয়েই যায়, সময়-বদলের সঙ্গে-সঙ্গে। পাঠ্যসূচির প্রশ্রয় না থাকলে মাইকেল কতখানি পড়া হত? গান বাদ দিলে রবীন্দ্রনাথই-বা কতটা? বিদেশেও কি তা-ই নয়? সমকালের পরে পাঠক তো ক্রমশ সংকুচিত হয়েই যায় – এমনকি যাদের ক্লাসিক বলি, তাদের ক্ষেত্রেও কি তা সত্যি নয়? তা ছাড়া আধুনিক কবিতার পাঠক তো প্রথম থেকেই সংকুচিত। পরে সমকালের উত্তাপ কমে গেলে তার…

আমি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র নই। গত ২৪ জুন ২০০৯ তারিখে অনুষ্ঠিত ইসলাম শিক্ষার টিউটোরিয়াল পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি আমার নজরে পড়ার কথা ছিল না; তারপরও তার প্রথম পৃষ্ঠাটি এসে পৌঁছয় আমার হাতে, দিন কয়েক পর! [...]

আমি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র নই। গত ২৪ জুন ২০০৯ তারিখে অনুষ্ঠিত ইসলাম শিক্ষার টিউটোরিয়াল পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি আমার নজরে পড়ার কথা ছিল না; তারপরও তার প্রথম পৃষ্ঠাটি এসে পৌঁছয় আমার হাতে, দিন কয়েক পর! . . . চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ টিউটোরিয়াল পরীক্ষা দশম শ্রেণী ইসলাম শিক্ষা সময় : ৪০ মিনিট                    পূর্ণমান : ২৫ ১। নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং তৎসংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : নাফিজ এবং সুমন সিদ্ধান্ত নিল যে ১লা বৈশাখে তারা ধুতি পরবে ও কপালে তিলক পরবে। হৃদি ও শবনম পরিকল্পনা করল যে, তারা লাল পারের [পাড়ের] শাড়ীর সাথে কপালে মানানসই টিপ পরবে। তারা সারাদিন ডিসি হিলে সময় কাটাবে। তাদের প্রত্যেকের পিতা মাতা মুসলিম এবং তারাও নিজেকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেয়। ক) চার বন্ধুর কাজের পরিচয় দাও।                                                                ১ খ) মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের এই ধরনের কাজ করার মূল কারণ কী?             ২ গ) মুসলমানগণ কিভাবে এই ধরণের কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারে? ৩ ঘ) কুফরের পরিণতি বর্ণনা কর।                                                                   ৪ ২। নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং তৎসংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : আল কুরআন অনন্ত জ্ঞানের উৎস। মানবজীবনের যাবতীয় সমস্যা ও জিজ্ঞাসার সমাধান কুরআন মাজীদে বর্ণিত আছে। মানুষের ইহকালীন, আধ্যাত্মিক ও কর্মজীবনের যা কিছু প্রয়োজস [প্রয়োজন] তার সবই পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। ক) আসমানী কিতাবের পরিচয় দাও।                                                        ১ খ) সহীফা কী? সহীফার সংখ্যা কত?                                                      ২ গ) মানব জাতীর [জাতির] নৈতিক চরিত্র গঠনে পবিত্র কুরআন মাজীদ কি [কী] শিক্ষা দেয়?     ৩ ঘ) আল-কুরআনের গুরুত্ব, মহাত্ব্য [মাহাত্ম্য] ও শ্রেষ্ঠত্ব মূল্যায়ন কর।                            ৪ [এই দুটি প্রশ্নের মান সাকুল্যে ২০; ৫ নম্বরের ৩য় আরেকটি প্রশ্ন নিশ্চয়ই পরের পৃষ্ঠার ছিল, যা আমি পাইনি।] এই প্রশ্নপত্রের ধরণ…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.