রুবাল কাং পর্বত শিখরেমুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এক ভীতি আমার মধ্যে সব সময় কাজ করে। কথাটার মানে অনেকে অনেক ভাবে করতে পারেন। তবে স্বাধীন দেশের এক আম জনতা হিসেবে এ বিষয়ে জানার চেষ্টা চালিয়ে গেছি অনেক সময়। মানুষের কথা শোনার চেষ্টা করেছি। সেই প্রশ্নের শিকার যেমন আমার বাবা হয়েছেন তেমনি আমার শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধব, মসজিদে নামাজ পড়ার এমন কেউ। আবার বানিয়াচং এ সাগর সমান দীঘিটার সমনে যে স্কুল তার দারোয়ান, সেও বাদ যায়নি। তবে বুদ্ধিবৃত্তিজীবী করতে পারিনি বলে কে কি করল সে দিকে না তাকিয়ে নিজেই কিছু একটা করার জন্য শেষমেষ আমার পথই বেছে নিলাম। কত উচ্চতায় আমি বাংলাদেশকে নিতে পারি [...]

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এক ভীতি আমার মধ্যে সব সময় কাজ করে। কথাটার মানে অনেকে অনেক ভাবে করতে পারেন। তবে স্বাধীন দেশের এক আম জনতা হিসেবে এ বিষয়ে জানার চেষ্টা চালিয়ে গেছি অনেক সময়। মানুষের কথা শোনার চেষ্টা করেছি। সেই প্রশ্নের শিকার যেমন আমার বাবা হয়েছেন তেমনি আমার শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধব, মসজিদে নামাজ পড়ার এমন কেউ। আবার বানিয়াচং এ সাগর সমান দীঘিটার সমনে যে স্কুল তার দারোয়ান, সেও বাদ যায়নি। তবে বুদ্ধিবৃত্তিজীবী করতে পারিনি বলে কে কি করল সে দিকে না তাকিয়ে নিজেই কিছু একটা করার জন্য শেষমেষ আমার পথই বেছে নিলাম। কত উচ্চতায় আমি বাংলাদেশকে নিতে পারি? বড়দের (!) মত না হোক আমাদের মত করে অনেক ছোট ভাবে। তবে স্বার্থহীন ভাবে। নামের খোঁজে না, কাউকে রাজাকার বানাবার জন্য না, নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবী করার মধ্যে না। জয় বাংলা, জিন্দাবাদে না। ভর্তি পরীক্ষায়-চাকরিতে বিশেষ সুবিধা পাবার আশায় না। ২০ বছর জীবনের তিন আঙ্গুল এর এক চিমটি পরিমান জ্ঞান নিয়ে একটি পথই বেছে নিলাম কত উচ্চতায় দেশের পতাকাটাকে নেয়া যায়। এটা ঠিক অলিম্পিকে গোল্ড পাবার মত না বা ক্রিকেটের মত বীরত্বের কিছু না। এটা নিছক এক পাগলামী – পর্বতারোহন এমনই কিছু। এভারেস্ট! সেই ২০০৩ এ স্বর্ন জয়ন্তীতে যখন মহাপর্বত এভারেস্ট বেসক্যাম্প এ গেলাম তখন ঢাকায় পাহাড় নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়নি। চারমাস না খেয়ে ৩৭০ মার্কিন ডলারের ২১ দিনের ট্রিপে প্রথম পতাকা টানার স্বাদ বা ভার দুই পেলাম। সে যাত্রায় ১৮৩০০ ফুটে যখন উঠি এভারেস্ট দেখার জন্য তখন আমার সাথে এক ইসরাইলি আরোহী! কি অবাক করা কাজ! সারা জীবন শুনে এলাম ইসরাইলীরা আমাদের শত্রু। আমিও তাই জানি। কিন্তু যখন হাড় কামড়ানো ঠান্ডায় যে লোকটা আমার কাছে এগিয়ে আসবে সে আমার ধর্মের না! জীবনে অনেক বড় একটা শিক্ষা পেলাম, এখনও মনে করতে পারি প্রি-মনসুনের মে মাসে রাত ৮টায় এভারেস্ট এর সামনে তাকিয়ে জোরে জোরে আমার বাংলাদেশ বাংলাদেশ চিৎকার যেমন সৃষ্টিকর্তা শুনেছিলেন তেমনি গলা মিলিয়ে ছিল আমর – আমার ইসরাইলি বন্ধু। ততদিন অবধি কেউ কখনও সে উচ্চতায় গেছে কিনা আমি জানি না, যেতেও পারেন। তবে আমার বাল্য মনে সেই বাংলাদেশ চিৎকার আটকে গেছে সারা জীবনের জন্য। তাই…

ঘটনার শুরু বেশ আগেই। ঢাকা শহরে সংখ্যালঘু কিছু মানুষের মাঝে নতুন উন্মাদনার নাম পর্বতারোহন। সম্মকভাবে ব্যাপারটাতে কারও তেমন অভিজ্ঞতা না থাকলেও উৎসাহী মানুষের উপস্থিতি নিছক কম নয়। ২০০৩ সালের একেবারের শেষের দিকে এভারেস্ট নামটাকে কেন্দ্র করে আমাদের অনেক সভা সমিতি হল। সবাইকে জানিয়ে দেয়া হল আমরা মানে বাংলাদেশীরা পাহাড়ে যাওয়া শুরু করেছি।

প্রথম পর্ব / দ্বিতীয় পর্ব / তৃতীয় পর্ব -------------------- ঘটনার শুরু বেশ আগেই। ঢাকা শহরে সংখ্যালঘু কিছু মানুষের মাঝে নতুন উন্মাদনার নাম পর্বতারোহন। সম্মকভাবে ব্যাপারটাতে কারও তেমন অভিজ্ঞতা না থাকলেও উৎসাহী মানুষের উপস্থিতি নিছক কম নয়। ২০০৩ সালের একেবারের শেষের দিকে এভারেস্ট নামটাকে কেন্দ্র করে আমাদের অনেক সভা সমিতি হল। সবাইকে জানিয়ে দেয়া হল আমরা মানে বাংলাদেশীরা পাহাড়ে যাওয়া শুরু করেছি। পাশাপাশি নেপাল কিংবা সমগোত্রীয় অঞ্চলগুলোতে আমাদের পদধূলি পড়তে থাকলো, যার নাম ট্রেকিং। দারুন উপভোগের নতুন অধ্যায়। ট্রেকিং যখন খানিকটা পোক্ত হলো কারও কারও মনে কিংবা মানসিকতায়, অভিযাত্রিক বৈভবকে আরও বাড়িয়ে তোলার জন্যই কিছু সংখ্যক মানুষ যাওয়া শুরু করলেন আরও উঁচুতে। যার নাম পর্বতারোহন। তার প্রেক্ষিতেই ভারতে পর্বতারোহন স্কুলে আমার মত অনেকেই গেছেন সময় সময়ে। এরই প্রভাবে বলিয়ান হয়ে আটকে গেলাম যে নেশায়, কখন কোথায় কোন্ পাহাড়ে যাব? এর সাথে মূখ্য কিংবা গৌন অনেক কিছুই গেল জড়িয়ে। পর্বতারোহন স্কুল এ পাঠ শেষ করে আমার মত অনেকেই আটকে গেলেন হিমালয় পর্বতমালার সর্ববৃহৎ ব্যপ্তি ভারত হিমালয়ের সৌন্দর্যে। মূলত সমগ্র হিমালয়ের বেশির ভাগ ভৌগলিক অবস্থান হলো ভারতে। আর সে কারনেই মনে হয়ে জগৎ বিখ্যাত অনেক পর্বতের অবস্থান এখানে। ২০০৩ এ মৌলিক পর্বতারোহন দীক্ষা শেষ করে যখন সবার মাঝে ব্যাপারটাকে বলা হলো, উৎসাহিত মানুষের অভাব হলো না তাল দেয়ার। কিন্তু কাজের মানুষ কই? মাঝে যাওয়া হলো বেশ, নানা পর্বতের পাদদেশে, কিংবা শৃঙ্গ খোঁজার আশায়। তবে কাংখিত অভিযানের তৃষ্ণা আটকে ছিল অনেক অনেক দিন। জল্পনা কল্পনার শুরু অনেক আগে থেকেই। তবে সময় আর সুযোগের জটিল মিশ্রনটা হলো এবার, ২০০৭ সালে। আন্তঃ উপমহাদেশীয় দেশগুলোর মধ্যে বিরাজমান শান্তিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে, বাংলাদেশের অভিযাত্রিক সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ ভারতের নদীয়া জেলার মাউন্টেনার্স এসোসিয়েশান অব কৃষ্ণনগর ” শান্তির জন্য পর্বতারোহন” মূলনীতি নিয়ে রুবাল কাং পর্বতে অভিযানে যৌথ ভাবে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিল। মাস ব্যাপি এই পর্বতারোহন শুরু হয় ১৩ মে ২০০৭ এ পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার জেলা প্রশাসন ভবনে এক অনাড়ম্বর পতাকা বিনিময় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। প্রথা অনুসারে দু'দেশের আরোহী দলের সদস্যদের আনুষ্ঠানিক পরিচিতি এবং দলনেতাদের হাতে পতাকা তুলে দেয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন কোলকাতাস্থ…

প্রিয় পাঠক, আমার লেখায় অতি মাত্রায় ভুল থাকে, মার্জনা করবেন। আমার পোস্টের পর অনেকের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়েই আমি লেখাটাকে বাড়ানোর সাহস পেয়েছি। মূলত আমি গল্প শুনতে ভালবাসি। যাঁদের মন্তব্যের আমি উত্তর দিতে পারিনি, তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। মুক্তাঙ্গন-এর যাঁরা আমার আগের লেখায় মন্তব্য করেছেন তাঁদের প্রতি রইল আমার অকৃত্রিম ভালবাসা। অবিশ্বাস্য সব মন্তব্য করেছেন অনেকে, আমি তাঁদের প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাব, যতটা পারি। (more…)

দেশ ঘুরে দেখার দল খুঁজে পেতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছিল। তবে এটাও ঠিক নয় যে তার আগে বেড়ানো হতো না। বেড়াতে যাবার জন্য চাই সমমনের মানুষের সঙ্গ, নয়তো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা আর উপভোগের থাকে না। সেকারণেই দল বেঁধে ঘোরার এক মারাত্মক বাজে অভ্যেস হয়ে গেছে আমার। (more…)

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.