ফারুকী গং অর্থাৎ এদের ভাই বেরাদারের প্রতি আমি আংশিক বিরক্ত। এদের সবার কাজের ধারা এক। একজন পরিচালকের স্বাতন্ত্র লক্ষ করা যায় না এদের নির্মাণে। এ বিষয়ে ফারুকীর বক্তব্য হলো, গুরুর ছাপ তো শিষ্যের মধ্যে থাকবেই। মানছি, কিন্তু তারপরও গুরুর শিক্ষাকে মাথায় নিয়ে নিজের বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলা, বক্তব্য দেয়া পরিচালকের ধর্ম। ফারুকীর ভাই বেরাদাররা সেটা করতে পারছেন না। [...]

দেশে থাকতে যেটা অনিয়ম ছিল প্রবাসে সেটাই অর্থাৎ টেলিভিশন দেখাটা মোটামুটি নিয়মের মধ্যে পড়েছে। কারণটা হলো ইন্টারনেট। দেশে নাটক দেখা হতো না তেমন একটা, অথচ প্রবাসে এসে বাংলাদেশী নাটক দেখা হচ্ছে অনেক। এই ঈদেও তাই প্রচুর বাংলাদেশী নাটক ডাউনলোড করে দেখতে শুরু করেছি। ফারুকী গং অর্থাৎ এদের ভাই বেরাদারের প্রতি আমি আংশিক বিরক্ত। এদের সবার কাজের ধারা এক। একজন পরিচালকের স্বাতন্ত্র লক্ষ করা যায় না এদের নির্মাণে। এ বিষয়ে ফারুকীর বক্তব্য হলো, গুরুর ছাপ তো শিষ্যের মধ্যে থাকবেই। মানছি, কিন্তু তারপরও গুরুর শিক্ষাকে মাথায় নিয়ে নিজের বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলা, বক্তব্য দেয়া পরিচালকের ধর্ম। ফারুকীর ভাই বেরাদাররা সেটা করতে পারছেন না। ইন্টারনেটে নাটক ডাউনলোড করার সময় দেখি লেখা থাকে 'ফারুকীর নাটক'। অথচ নাটকের টাইটেলে পরিচালকের নাম উঠে আশুতোষ রানা, রেদওয়ান রনি, ফাহমী, রুমেল ইত্যাদি ভাই বেরাদারের। অনেকেই বলে, আইজকা ফারুকীর একটা নাটক দেখলাম, হেভ্ভি জোশ। শুনে আমিও আগ্রহভরে নাটকটি দেখতে গিয়ে দেখি ওটা আসলে ফারুকীর নির্মাণ নয়, তারই কোনো ভাই বেরাদারের। আফসোস, ভাই বেরাদাররা গুরুর পাকেচক্রে এমনই আটকে আছে যে তাদের কাজের লেভেল পর্যন্ত গুরুর নামে হচ্ছে।এসব ভাইবেরাদাররা আসলে গুরুর মেধাকে অনুসরণ না করে অনুকরণ করছে। ফলে দেখা যায় সংলাপ শেষে একই জায়গাতেই মিউজিক বাজছে, একই স্টাইলে সিকোয়েন্স পরিবর্তন হচ্ছে, একই স্টাইলে সংলাপ আওড়াচ্ছে। ভাষারীতি ছাড়াও ফারুকী গংয়ের বিরুদ্ধে আরো একটা অভিযোগ আছে, যে তার নাটকে ঝগড়াঝাটিই প্রাধ্যন্য পায়। সব আর্টিস্টরা এমনভাবে সংলাপ আওড়ায় যেন ঝগড়া করছে। আমি ফারুকীর কিছু কিছু কাজের খুবই ভক্ত। তার মেধার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। মাঝে মাঝে সেটাতে ঝাটকা লাগে, অর্থাৎ মানতে পারি না ফারুকী কোনো খারাপ কাজ করবে। একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত তার 'প্রত্যাবর্তন' নাটকের প্রতি মুগ্ধতা আমার কোনোদিনই শেষ হবে না। পাশাপাশি ব্যাচেলর, মেড ইন বাংলাদেশ সহ আরো কিছু কিছু (নাম মনে করতে পারছি না) নির্মাণকে আমি যাচ্ছেতাই-এর পর্যায়ে ফেলে দিতে পারি। ফারুকীর লাস্ট নাটক যেটা দেখেছিলাম সেটা হলো 'স্পার্টাকাস ৭১'। এ নাটকের প্রশংসা করার ভাষা আমার নেই। নাট্যাঙ্গণের যাবতীয় পুরষ্কার এ নাটকের ফারুকীকে দিয়ে দেয়া যায়। নাটকের কাহিনীটি একটু বলে নিই, শাওন-বাঁধন নামে দুই জমজ ভাইকে নিয়ে একাত্তরের পটভূমিকায় স্পার্টাকাস ৭১ নির্মিত হয়।…

সর্বপ্রথম কে কলকাতার ঔপন্যাসিকদের উপন্যাস নিয়ে টিভি সিরিয়াল কিংবা একক নাটক বানানো শুরু করেছিল সেটা মনে করতে পারছি না। তবে আফসানা মিমি-র কৃষ্ণচূড়া প্রডাকশনের 'কাছের মানুষ' সিরিয়ালটিই হয়তো বা প্রথম হতে পারে। সূচিত্রা ভট্টাচার্যের এ উপন্যাস নিয়ে সিরিয়াল শুরু হতে যাচ্ছে এটা প্রথম শুনতে পাই আমার প্রজাপতিকাল টেলিফিল্মের শুটিংয়ের সময়।

সর্বপ্রথম কে কলকাতার ঔপন্যাসিকদের উপন্যাস নিয়ে টিভি সিরিয়াল কিংবা একক নাটক বানানো শুরু করেছিল সেটা মনে করতে পারছি না। তবে আফসানা মিমি-র কৃষ্ণচূড়া প্রডাকশনের 'কাছের মানুষ' সিরিয়ালটিই হয়তো বা প্রথম হতে পারে। সূচিত্রা ভট্টাচার্যের এ উপন্যাস নিয়ে সিরিয়াল শুরু হতে যাচ্ছে এটা প্রথম শুনতে পাই আমার প্রজাপতিকাল টেলিফিল্মের শুটিংয়ের সময়। মেকাপম্যান রবীনের কাছে কাছের মানুষের এককপি দেখতে পেয়ে জানতে পারি মিমি আপা তাকে এই বইটি পড়তে বলেছেন যেন আর্টিস্টদের মেকাপ সম্পর্কে সে আগেভাগেই একটা ধারণা করতে পারে। জানি না মিমি আপা তার অন্য কোনো সিরিয়াল নিয়ে এতোটা সিরিয়াস ছিলেন কিনা অর্থাৎ বন্ধন নাটকের সময়ও কি তিনি তার মেকাপম্যানকে স্ক্রিপ্ট পড়তে দিয়েছিলেন কিনা জানতে পারিনি। কাছের মানুষ নিয়ে আগ্রহ ছিল। কারণ সানজিদা প্রীতি তাতে অভিনয় করেছিল, সৈনিক ক্যামেরা চালিয়েছিল। প্রীতি আমার সন্ধি নাটক করার পর ড্রিম ফ্যাক্টরির স্পর্শের বাইরে করেছিল। আমি ফাজলামো করে বলতাম, হায়রে প্রীতি, আমার সঙ্গে 'সন্ধি' করে 'স্পর্শের বাইরে' চলে গেলে, এখন আবার আরেকজনের 'কাছের মানুষ' হয়ে গেলে। কাছের মানুষ টিভিতে কয়েক পর্ব দেখেছি। কলকাতা ঢংয়ের সংলাপগুলো যতোই বাংলাদেশিকরণ করার চেষ্টা হোক না কেন সেগুলো জুৎসই হয়নি। একটা উদাহরণ দিই। অফিসে সেরে গৃহকত্রী বাসায় ফিরেছে। তিনি এখন চা খাবেন। স্বামীকে বলছেন, গৃহকত্রী : এই শুনছ। আমি চায়ের পানি চড়াচ্ছি। তোমার জন্যও করব? এ সংলাপটা আমার কানে খট করে লাগল। প্রচুর পরিমাণে কলকাতার উপন্যাস পড়ার ফলে আমি বুঝতে পারি এটা নিতান্তই সাদামাটা সংলাপ, কলকাতাবাসীদের জন্য। আমি হাজার চেষ্টা করেও মনে করতে পারিনি আমার এ বয়স পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশী কাউকে 'চায়ের পানি' বেশি করে চড়াবে কিনা জিজ্ঞেস করছে। বরং এমনটাই শুনেছি যে, গৃহকর্ত্রী : আমি চা খাব। তুমি খাবে? বানাব? শুনেছি কাছের মানুষকে বাংলাদেশিকরণ করা হয়েছিল কিছু কিছু শব্দ পরিবর্তন করে। যেমন, জানালার কপাট লাগিয়ে দাও না বলে জানালা লাগিয়ে দাও; বাতিটা নিভিয়ে দাও না বলে লাইটটা অফ করে দাও। পত্রপত্রিকায় আগেই পড়েছিলাম আর এই সেদিন বিডিনিউজে এই রিপোর্টটা পড়ে আরো বেশি হতাশ হয়েছি। এখন বাংলাদেশে বেশ জোরেসোরেই চলছে কলকাতার উপন্যাস নিয়ে টিভি সিরিয়াল বানানোর হিড়িক। আমি এর তীব্র বিরোধিতা করছি। রিপোর্টে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জেগেছে যে বাংলাদেশে কি ভালো স্ক্রিপ্টের…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.