প্রতি বছরের মতো ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বরও বিশ্বজুড়ে উদ্‌যাপিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস হিসেবে। ১৯৮১ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সারা বিশ্বে ৩৬ মিলিয়ন মানুষ ঘাতক-ব্যাধি এইডস-এ মারা গেছে; প্রায় ৩৫.৩ মিলিয়ন মানুষ বর্তমানে এইচআইভি আক্রান্ত। অ্যান্টিরেট্রোভাল ট্রিটমেন্ট আবিষ্কৃত হলেও এইডস-এ প্রতি বছর ২ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, যার মধ্যে ২৭০,০০০ হচ্ছে শিশু। [. . .]

প্রতি বছরের মতো ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বরও বিশ্বজুড়ে উদ্‌যাপিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস হিসেবে। ১৯৮১ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সারা বিশ্বে ৩৬ মিলিয়ন মানুষ ঘাতক-ব্যাধি এইডস-এ মারা গেছে; প্রায় ৩৫.৩ মিলিয়ন মানুষ বর্তমানে এইচআইভি আক্রান্ত। অ্যান্টিরেট্রোভাল ট্রিটমেন্ট আবিষ্কৃত হলেও এইডস-এ প্রতি বছর ২ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, যার মধ্যে ২৭০,০০০ হচ্ছে শিশু। ১৯৮১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইঞ্জেকশন দিয়ে কয়েকজন নেশাসক্ত হাসপাতালে আসেন দুর্লভ ধরণের নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে। এই নিউমোনিয়া তাদেরই হয়, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে যায়। এর কিছু পরে সচরাচর হয় না এমন ত্বকের রোগ কাপোসিস সারকোমা নিয়ে আসেন অনেক সমকামী। মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ বিভাগ সচকিত হয় ব্যাপক সংখ্যক মানুষের এই দু’টো রোগের প্রাদুর্ভাবে। প্রথমদিকে এই বিভাগ এই অদ্ভুত অসুখের নাম দিয়েছিল ফোরএইচ (হাইতিয়ান, হোমোসেক্সুয়াল, হেমোফিলিক এবং হেরোইন ইউজারস)। প্রথমদিকে একে সমকামীদের অসুখ ভাবা হত, কিন্তু পরে দেখা গেল জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন এতে। ১৯৮২ সালের জুলাই মাসে ফোরএইচ নাম বদলে অসুখটির নাম হয় — অ্যাকোয়ার্ড ইমিউন ডেফিশিয়েন্সি সিনড্রোম অর্থাৎ প্রয়োজনীয় রোগ প্রতিরোধের অভাব। যে ভাইরাসটি এই অভাবের জন্য দায়ী তাকে বলে হিভ বা এইচআইভি, হিউম্যান ইমিউনোডেফিশিয়েন্সি ভাইরাস। ইউএনএইডসের ২০১০ সালের হিসাব মতে ২০১০ পর্যন্ত ৩৪ মিলিয়ন মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে। বলা হচ্ছে দু’টি বিশ্বযুদ্ধে যত মানুষ মারা গেছে এইডস তার চাইতে বেশি মানুষকে মেরেছে। এইডস শুধু যে অসুখ হিসেবে মানুষের মৃত্যুর কারণ হয় তাই নয়, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বৈষম্যের কারণেও মানুষের মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে এইডসকে সমকামীদের এবং অমিত যৌনাচারের সাথে সম্পর্কিত অসুখ হিসেবে চিহ্নিত করায় বৈষম্য সমস্যাটি প্রকট হয়। দেখা গেছে এইডস জনিত কারণে যে নির্যাতন ইত্যাদি হয়, সেই আতঙ্কে অনেকে এইডস পরীক্ষা করানো থেকেও বিরত থাকে। এইডসের কলঙ্ক কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় : ● যে কোনো ভয়ানক ছোঁয়াচে অসুখের ভয়। ● এইচআইভি/এইডসকে কোনো সামাজিক জীবনাচরণ বা দলের সাথে সম্পৃক্ত করে দেখা। ● যারা এইচআইভি/ এইডস বা এইআইভি পজিটিভদের সাথে সম্পৃক্ত তাদের সামাজিকভাবে হেয় করা। ইউএনএইডসের হিসাব মতে ২০১১ সালে সারাবিশ্বে এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩৪.২ মিলিয়ন। এর মধ্যে অর্ধেক নারী। দেখা যায় যে, পুরুষের দ্বারা বা রক্ত সঞ্চালন ইত্যাদির মাধ্যমে আক্রান্ত হলেও…

স্টিফেন ডলড্রি পরিচালিত ‘দ্য রিডার’ সিনেমাটি বার্নার্ড শ্লিংকের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। [...]

স্টিফেন ডলড্রি পরিচালিত দ্য রিডার  সিনেমাটি  বার্নার্ড শ্লিংকের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। (সে-উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে আগের একটি পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে।) মাইকেলের যখন পনেরো বছর বয়স, তার সাথে দ্বিগুণেরও বেশি বয়সী হানার সম্পর্ক হয়। যা হানার কাছে হয়তো প্রয়োজনের বা তার চাইতে কম, কিন্তু কিশোর মাইকেলের কাছে প্রেম বলেই অনূদিত হয়। মাইকেল প্রতিদিন দুপুরে স্কুল থেকে হানার ফ্ল্যাটে আসত, হানা ফিরত তার কাজ থেকে। দু’জনে স্নান করত এরপর মিলিত হত। কিছুদিন পর আরেকটি ব্যপার যোগ হয় তাদের রুটিনে এবং ব্যপারটা দাঁড়ায় এভাবে -- বইপড়া, স্নান, মিলন। মাইকেল হানাকে পড়ে শোনায় লেসিংয়ের এমিলিয়া গালোত্তি, হোমারের ওডিসি, চেখভের 'দ্য লেডি উইথ আ লিটল ডগ', মার্ক টোয়াইনের হাকলবেরি ফিন এবং হার্জের টিনটিন কমিক্স। এমনই চলছিল। কিন্তু একদিন হানা চুপিসারে চলে যায় কোন ঠিকানা না রেখেই। মাইকেলের সঙ্গে তার দ্বিতীয়বার দেখা আদালতে।মাইকেল তখন আইনের ছাত্র, তাদের শিক্ষক মাইকেল সহ একটি ছোট দলকে নিয়ে যান আদালতে যুদ্ধপরাধের বিচার দেখতে। আদালতের শুনানিতে জানা যায় হানা শ্মিৎজ ১৯৪৪-৪৫ সালে একটি ইহুদী নারী বন্দী শিবিরের প্রহরায় নিযুক্ত ছিলেন আরও কয়েকজন মহিলার সঙ্গে। ৩০০ বন্দীকে ডেথ মার্চে নিয়ে যাবার সময় রাতে একটি গ্রামের পরিত্যক্ত গির্জায় আশ্রয় নেয়, মিত্রবাহিনীর এয়ার-রেইডের সময় বোমা বিস্ফোরিত হলে গির্জায় আগুন ধরে যায়। বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেবার ফলে দু’জন ছাড়া সকল বন্দী মারা যায়। বিচারে হানার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। মাইকেল বুঝতে পেরেছিল হানা লেখাপড়া জানে না বললে তার সাজা হবে লঘু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই বলা হয় না তার শিক্ষকের সাথে সামান্য কয়েকটা কথা ছাড়া। মাইকেল বিয়ে করে, বাবা হয়, বিয়ে-বিচ্ছেদ ঘটে তার। একদিন বাসার বই ঘাঁটতে গিয়ে ওডিসি পেয়ে যায়। কী ভেবে সে আবার রিডার বনে যায়। হানাকে গল্প টেপ করে পাঠাতে থাকে। দু’জনের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জেল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে মাইকেল রাজি হয় হানার জেলমুক্তির পর সমাজে মানিয়ে নিতে সাহায্য করতে। কিন্তু মুক্তির আগেই হানা জীবন থেকে স্বেচ্ছায় প্রস্থান করে। তার যাবতীয় সঞ্চয় মাইকেলের মাধ্যমে ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরা সেই মেয়েকে দিয়ে যায়। মাইকেল তার আজ্ঞা পালন করে এবং নিজের মেয়েকে হানার কবরের কাছে নিয়ে যায়। সিনেমা শেষ হয়…

জার্মান লেখক বার্নার্ড শ্লিংকের উপন্যাস 'দ্য রিডার' নিয়ে পাঠ-প্রতিক্রিয়া। [...]

বার্নার্ড শ্লিংকের উপন্যাস দ্য রিডার  প্রথমবার বেশ তাড়াহুড়ো করে পড়েছিলাম। সিনেমাটা দেখার আগেই শেষ করে ফেলা চাই। তাই কোনো কিছু খেয়াল না করে একটানে পড়ে গিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে আবার পড়লাম, পড়ে নিজেই অবাক হয়ে গেলাম। উপন্যাসে চরিত্র তিনটি -- হানা শ্মিৎজ, মাইকেল বার্গ এবং ঘটনাপ্রবাহ। তিন পর্বের দ্য রিডার-এর গল্পের প্রথম পর্ব শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার বছর পনেরো পর পশ্চিম জার্মানিতে। পনেরো বছরের মাইকেল বার্গ স্কুল থেকে ফিরবার পথে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ট্রাম কন্ডাক্টর জনৈকা মহিলার সাহায্যে সে বাড়ি ফেরে। এর পরের অনেকগুলো দিন তাকে বিছানায় কাটাতে হয় হেপাটাইটিস রোগে। মা’কে মাইকেল বলেছিল একজন ভদ্রমহিলার সাহায্যের কথা। সুস্থ হয়ে মহিলাকে ফুল দিয়ে ধন্যবাদ জানানোতেই শেষ হয় না, বরং একটি অদ্ভুত সম্পর্ক গড়ে উঠতে শুরু করে দু’জনের মধ্যে। স্কুল থেকে মাইকেল ক্লাস কেটে হানার ফ্ল্যাটে আসত, হানাকে বই পড়ে শোনাত, হানা তাকে স্নান করিয়ে দিত, এরপর দু’জনে মিলিত হত। এ সম্পর্কের কোনো লক্ষ্য নেই, নেই কোনো ‘হোয়াট নেক্সট’। যদিও মাইকেল কয়েকবার চিন্তা করে তাদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে। নতুন ক্লাসে উঠবার পর মাইকেলের হানার সাথে যোগাযোগ কমে আসে। একদিন হানাকে সে দেখতে পায় স্যুইমিং পুলের কাছে, যেখানে মাইকেল বন্ধুদের সঙ্গে মজা করে। পরদিন থেকে হানা যেন মিলিয়ে যায়। দ্বিতীয় পর্বে বছর সাতেক পর মাইকেল আইনের ছাত্র, একটি মামলা দেখবার সূত্রে হানার সঙ্গে তার দেখা হয়। বলা ভালো হানাকে সে দেখে। যুদ্ধাপরাধে হানা এবং আরও কয়েকজন অভিযুক্ত। মামলা চলাকালে মাইকেল আবিষ্কার করে হানার জীবনের সবচাইতে গোপনীয় তথ্য -- হানা লেখাপড়া জানে না! কথাটি গোপন করতে হানা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত মেনে নেয়। তৃতীয় পর্বে মাইকেল হানার জন্য জেলে বই পড়ে পাঠাতে থাকে টেপ করে। অন্যদিকে হানা পড়তে লিখতে শেখে। মাইকেলকে চিঠিও লেখে। যেহেতু হানার কেউ নেই, জেল কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করে জেলমুক্ত জীবনে মাইকেল যেন হানাকে সাহায্য করে। মাইকেল রাজি হয়, কিন্তু জেলমুক্তির আগের দিন আত্মহনন করে হানা তার আর মাইকেলের মাঝে চিরবিচ্ছেদ আনে। গল্পের কোনো ডালপালা নেই, চরিত্রও অল্প কয়েকটি। গল্পের পুরোটাই মাইকেলের একক সংলাপের মতো। পড়তে পড়তে অনেকগুলো প্রশ্ন আপনা থেকেই মাথায় আসে। কেন হানা মাইকেলকে বেছে নিয়েছিল? মাইকেল দুর্বল ,তাই?…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.