[পোস্টের শিরোনাম ঈষৎ বদলে নেয়া হল]
পরিকল্পিতভাবে দ্রব্যমূল্যস্ফীতি – বিডিআর নিয়ন্ত্রিত ‘অপারেশন ডালভাত’ – উঁচু পর্যায়ে অফিসারদের সেখান থেকে আখের গোছানোর অভিযোগ – সেই সাথে সাধারণ বিডিআর সদস্যদের বেতন-ভাতা ইত্যাদি নিয়ে দীর্ঘকালীন বঞ্চনাপ্রসূত ক্ষোভ – পিলখানা ক্যাম্পে গোলাগুলি – ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন - সেনাবাহিনী বিডিআর মুখোমুখি – জিম্মি ঊর্ধ্বতন অফিসাররা – হতাহতের সংখ্যা অনিশ্চিত - সমঝোতা আলোচনা – দাবি-দাওয়া বিবেচনার এবং তা পর্যায়ক্রমে পূরণের আশ্বাস – অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান – সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা – অস্ত্র সমর্পণ – আটকে পড়া নারী ও শিশুদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে – পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা পিলখানায় প্রবেশ করে দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছেন - মৃতদেহের তন্ন তন্ন অনুসন্ধান চলছে . . .
জরুরী: উপরের ঘটনাক্রমের আপডেট ছাড়া এই পোস্টটি মূলতঃ লেখা হয়েছে ঘটনার প্রথম প্রহরে। জরুরী তথ্য-সীমাবদ্ধতা ছিল এটি লেখার সময়। তাই পাঠকের প্রতি বিনীত অনুরোধ থাকবে সেটি আমলে নেয়ার জন্য।
ঘটনার সাম্প্রতিকতা বিবেচনায় এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যাচ্ছে না। সবাই মিলে এসব প্রশ্নের পাশাপাশি আরও নতুন সব প্রশ্ন তুলে আনার এবং সে সবের উত্তর খোঁজায় মনোনিবেশের সময় এখন।
[কোনো সুনির্দিষ্ট ক্রম অনুসরণ করা হয়নি এখানে]
– ব্যারাক এলাকায় যেসব নারী, শিশু এবং বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়েছেন, তাঁদের অবস্থা কী? – আহত এবং অসুস্থরা কি পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন?
– ঘটনার অন্তরালে অন্য কোনো ঘটনা নেই তো? – পরিকল্পিত না স্বতঃস্ফূর্ত? - ঠিক আজই এখনই কেন এই বিদ্রোহ? - তিন বছর বা ছয় মাস আগে নয় কেন? – এটি অন্য কোনো ঘটনা থেকে জনতার মনোযোগ সরানোর প্রয়াস নয় তো (দেশ যখন যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা ভাবছে)?
– ‘৭৫-এ এমনই এক সিপাহি বিপ্লব অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাধারণ সিপাহিদের বঞ্চনাকে সামনে তুলে ধরে, যা পরবর্তীকালে জেনারেল জিয়ার উত্থান, কর্নেল তাহের এবং মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছিল; তেমন কিছুরই পুনরাবৃত্তি হবে না তো?
– যেসব বিডিআর সদস্যকে ঘটনার জন্য ঢালাও সাধারণভাবে ক্ষমা করেছে সরকার, সেটি (সাধারণ ক্ষমা) ভবিষ্যতে ঠিকভাবে মানা হবে তো? নাকি ঘটনা কিছুটা স্তিমিত হয়ে এলেই তারা সম্মুখীন হবেন প্রতিশোধমূলক হয়রানি এবং নির্যাতনের? – সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ছাড়া অন্য কি কি বিকল্প পথ খোলা ছিল পরিস্থিতির দ্রুত নিরসন এবং জানমাল রক্ষার স্বার্থে? – সাধারণ ক্ষমার এই ঘোষণা কি দীর্ঘমেয়াদি অর্থে কোনো নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো? – ‘সাধারণ ক্ষমা’র ঘোষণা কি শুরু থেকেই শর্ত সাপেক্ষ (যেমন: নিঃশর্ত ক্ষমা কেবল তখনই করা হবে যদি বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সকল জিম্মিকে মুক্তি দিয়ে আত্মসমর্পন করা হয়) করা উচিত ছিল?
– ইতোমধ্যেই কয়েকজন সামরিক অফিসারের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে; সে পরিপ্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা সাধারণ ক্ষমার এই সিদ্ধান্তকে কীভাবে দেখছেন? – সরকারের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অনেকেই সুবিচার প্রাপ্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। এর ফলে নতুন ক্ষোভের জন্ম হওয়ার আশংকা (কারণ, নিহত, লাঞ্ছিত অনেকেরই বন্ধু ও পরিবারবর্গ রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীতে) রয়েছে। কিভাবে সেই ক্ষোভকে স্বার্থান্বেষী মহল ব্যবহার করতে পারে অদূর ভবিষ্যতে? – ‘৭৫ এ কতিপয় জুনিয়র অফিসার (যেমন: ডালিম) এর বিচার না পাওয়া প্রসূত ক্ষোভকে পূঁজি করেছিল উচ্চাভিলাষী এবং স্বার্থান্বেষী এক মহল। সে ঘটনার জের ধরে পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের জীবন দিতে হয়েছিল; ঘটনার ধারাবাহিকতায় আরও পরে জীবন দিতে হয়েছিল জাতীয় চার নেতাকে। সে ধরণের কোন ঘটনার পনরাবৃত্তিরই পট কি প্রস্তুত হচ্ছে ধীরে ধীরে?
– সরকার ঠিক কীভাবে এই ঘটনার মোকাবিলা করছে? – সব সময় শুধু আওয়ামী লীগ সরকারে থাকা অবস্থায়ই কেন এ ধরণের সিপাহী বিদ্রোহ/অস্থিরতার ঘটনা ঘটে থাকে? – বিরোধী দল (বিএনপি জামাত) সমর্থিত মিডিয়া এ ঘটনায় কাদেরকে এবং তার চেয়েও জরুরি ঠিক কী ভাষায় সমর্থন দিচ্ছে?
– গত আওয়ামী সরকারের সময় বিডিআর সদস্যদের একাংশ অনুমতির বাইরে গিয়ে হঠাৎ করে দানা বাধিয়ে তুলেছিল ভারতের সাথে সীমান্ত সংঘাত, যার পরিণতিতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল এবং দেশের ভেতরও রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছিল – সে-ঘটনার নায়কদের কি চিহ্নিত করা গিয়েছিল? কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে?
– বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানদের ভূমিকা বিষয়ে এই বিদ্রোহ নতুন কি সত্য উম্মোচন করে? – সেনা বাহিনী, RAB-এর একাংশ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সরাসরি মদদ ছাড়া কি অভিযোগকৃত এই “অপারেশন ডালভাত” দুর্নীতি আদৌ সম্ভব? – সেসবের তদন্ত কবে হবে? - সকালবেলা হঠাৎ করে বিডিআর ক্যাম্প থেকে সাধারণ পথচারীদের ওপর বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণ করেছে ঠিক কারা? – বিডিআর সদস্যদের বঞ্চনা নিরসনের যে আশ্বাস সরকার দিয়েছে, তা কি আসলে মানা হবে? – বিডিআর সদস্যরা সশস্ত্র বাহিনীতে বিদ্যমান যে বৈষম্যের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আজ সোচ্চার হলেন, তা কি প্রচলিত ব্যবস্থায় আদৌ পরিবর্তন করা সম্ভব? পরিবর্তনের যে-কোনো চেষ্টাকে সশস্ত্র বাহিনীর কায়েমি অংশ কীভাবে গ্রহণ করবেন বলে মনে হয়? – এতদিনকার বৈষম্য ও নির্যাতনের এই সংস্কৃতিকে সশস্ত্র বাহিনীর যে-অংশটি টিকিয়ে রেখেছিল এবং এর ফল ভোগ করছিল, তাদের বিরুদ্ধে ঠিক কী ব্যবস্থা নেয়া হবে? আদৌ হবে কি? আমরা কি কিছু জানতে পারবো?
– স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই বিডিআর প্রতিনিধিদের সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের এক বৈঠকে বিডিআর সদস্যরা আজ যেসব অভিযোগ তুলে ধরেছেন তারই অনেকগুলো তুলে ধরেছিলেন; সে পরিপ্রেক্ষিতে বিডিআর-এর নিজস্ব শাসন ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক একদল সেনা কর্মকর্তাকে (যাদের একজন মঈন উ আহমেদ) বিডিআর-এর জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল – সেই পর্যায়ক্রমিক উদ্যোগের পরবর্তীকালে কী হয়েছে? – বিডিআর ছাড়াও আনসার, পুলিশ, এবং সাধারণ সেনা সদস্যদের মধ্যেও এরকম একই ধরণের বঞ্চনার অভিযোগ রয়েছে কিনা? – যদি থেকে থাকে, তাহলে সেসব অভিযোগ বিদ্যমান “চেইন অব কমান্ডের” বাইরে থেকে রাজনৈতিক সরকারের কাছে তুলে ধরার কোন্র প্রক্রিয়া রয়েছে কি? – না থেকে থাকলে তা কীভাবে তৈরি করা যেতে পারে?
– আজ বিডিআর সদস্যদের বিদ্রোহ, কাল কাদের? – বিভিন্ন অভিযোগ এবং ক্ষোভ অগ্রিমভাবে মোকাবিলায় রাজনৈতিক সরকারের পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত? – পরিস্থিতি স্তিমিত হয়ে এলে সংশ্লিষ্ট পূর্বাপর সমস্ত ঘটনার এবং অভিযোগসমূহের (দুর্নীতি, বঞ্চনা, হত্যাকান্ড, নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের ওপর নিপীড়ন) তদন্তের জন্য বহুদলীয় সংসদীয় তদন্ত হওয়া কতটা জরুরি বলে ভাবছি আমরা? –
– হতাহত, নিখোঁজ, নির্যাতিত এবং লাঞ্ছিতদের পূর্ণ তালিকা তৈরী শেষ হবে কখন? সেটি জনগণের সামনে পেশ করা হবে কখন? আদৌ হবে কি?
রায়হান রশিদ
জন্ম চট্টগ্রাম শহরে। পড়াশোনা চট্টগ্রাম, নটিংহ্যাম, এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমান আবাস যুক্তরাজ্য। ১৯৭১ সালে সংঘটিত অপরাধসমূহের বিচার প্রক্রিয়াকে সহায়তা প্রদান, এবং ১৯৭১ এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের দাবীতে সক্রিয় নেটওয়ার্ক 'ইনটারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম' (ICSF) এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
২৬ comments
অবিশ্রুত - ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (১০:৫৬ অপরাহ্ণ)
সবশেষ খবর অনুযায়ী, বিডিআর সদস্যরা অস্ত্র সমর্পন করতে শুরু করেছে।
কিন্তু এখানেই কি এ ঘটনা শেষ হয়ে যাবে?
এই ঘটনা সামরিক বাহিনী ও বিডিআর-এর মধ্যে যে নীরব দ্বন্দ্ব ছিল তাকে আরও সুস্পষ্ট করল। কেউ কেউ একে ক্লাস স্ট্রাগলও ভাবছেন! তবে সাধারণ জওয়ানদের অসন্তোষকে পুঁজি করলেও বিডিআর-এর উচ্চপদগুলিতে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রেষণে নিযুক্ত করাটাও এই বিদ্রোহ-পরিকল্পনার মূল কারণ হতে পারে; অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করাও মূল কারণ হতে পারে,- যাতে সাধারণ বিডিআর সদস্যদের অসন্তোষকে পুঁজি করা হয়েছে।
অবশ্য এটি একটি যুক্তিসঙ্গত দাবি, কেননা বিডিআর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন আর সামরিক বাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের। তাই পেশাদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হলে এ ধরণের প্রেষণ বন্ধ করা দরকার। বিডিআর-এ সামরিক বাহিনী থেকে প্রেষণে পাঠানোর ব্যাপারে মুখ্য উৎসাহ কারা দেখান, কেন দেখান? এটি আমাদের জানা দরকার।
আমাদের ভয় অন্যখানে, এই সাধারণ ক্ষমার পর কি হবে? এর মধ্যেই এক ব্লগে একজন অনেকটা এরকম প্রশ্ন ছুড়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের কথা বলেন, সামরিক কর্মকর্তা হত্যায় সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার তিনি কে?
এর উল্টো দিক থেকে বলা যায়, তা হলে কি জিয়াউর রহমানের কায়দায় ধরে ধরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে শৃঙ্ক্ষলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে?
যতটুকু জানতে পারছি, দরবার হলের এই সভায় প্রধানমন্ত্রীরও থাকার কথা ছিল (ইত্তেফাক, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)। প্রতি বছর দরবার হলের এ সভায় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকেন। কিন্তু এ বছর তিনদিনব্যাপী রাইফেলস সপ্তাহের উদ্বোধন করলেও পরদিন সকালের ওই বৈঠকে কেন ছিলেন না? সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা কি বুঝতে পেরেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিডিআর সদস্যরা তাদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ তুলে ধরবেন এবং সেটিকে তারা ঠেকাতে চেয়েছিলেন?
প্রথম আলো থেকে যা জানা যাচ্ছে : বিডিআর সদস্যদের যখন মহাপরিচালক জানান, তোমরা সামরিক বাহিনীর সদস্য নও এবং তাই তোমাদের পয়েন্ট উত্থাপন করা হবে না, তখন অসন্তোষ দেখা দেয়। পরে মহাপরিচালক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আদেশ দেন, ওদের কোয়ার্টার গার্ডে ঢুকাও।
কোয়ার্টার গার্ডে কাউকে ঢোকানোর অর্থ তার জীবন নিশ্চিত শেষ। তাই যাদের কোয়ার্টার গার্ডে ঢোকানোর আদেশ দেয়া হয়েছিল, তাদের বিদ্রোহ করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।
anon - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৩:০৬ পূর্বাহ্ণ)
এই রাত অনেক দীর্ঘ হতে যাচ্ছে। কিছু অসমর্থিত খবর:
১) সুশান্ত (আমারব্লগ)
২. ক্যাডেট কলেজ ব্লগ
ক.
খ.
গ.
ঘ.
ঙ.
৩. নীড় সন্ধানী (আমারব্লগ)
সৈকত আচার্য - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (১১:২১ পূর্বাহ্ণ)
আমার মনে হয় সরকারের পক্ষ থেকে মহাজোটের সাথে এবং জোটের বাইরে প্রগতিশীল অন্যন্য শক্তি ও সংস্থার সাথে এখনই বসে বিষয়টিকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে কিছু তড়িৎ পদক্ষেপ নেয়া দরকার। কারন এখন অনেকগুলো বিষয় অষ্পষ্ট ও ধোঁয়াটে। এই সুযোগে গুজব তৈরী হয়। গুজব তৈরী হলে বিডিআরে যারা একতরফা সামরিকায়ন চায় তাদের সুবিধা হয়। তারা ঘোলা পানিতে শিকারটা করে নিতে পারে। কয়েকটা পত্রিকা ইতিমধ্যে সেই উস্কানির পথে পা বাড়িয়েছে। ফলে কিছু বিষয় এই মুহুর্তে জরুরী, যেমনঃ
১। কি হচ্ছে ওখানে এবং সরকারের অবস্থান কি এ বিষয়ে সকাল-বিকাল প্রেসকে অবহিত করা। যাতে করে সাধারন মানুষ বিষয়টির আপডেট জানতে পারে এবং বিষয়টি নিয়ে ইনফর্মড থাকতে পারে, যা এই মূহূর্তে খুব জরুরী। এতে গুজবের আশংকা থাকে না।
২। সরকারের পক্ষ থেকে কারা কারা কথা বলবেন প্রেসের সামনে তা নির্দ্দিষ্ট করে দেয়া।
৩। একটি শক্তিশালী সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে এই মূহুর্তেই তদন্ত কাজ এগিয়ে নেয়া। প্রয়োজনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি বর্গের মতামত নেয়া।
৪। গোয়েন্দা সংস্থার এখানে ব্যর্থতা কি কি ছিল এবং তাদের কর্তব্য কাজে কি কি গাফলতি ছিল তা প্রকাশ করা।
৫। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের কৌশল গ্রহন করা।
৬। বিডিআর প্রতিষ্টানটিকে স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নিয়ে দাঁড়াতে সহায়তা করা এবং সামরিক কর্তৃত্বের বিপরীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কার্যকর কর্তৃত্ব প্রতিষ্টা করার রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহন করা।
অবিশ্রুত - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ)
আজিমপুর সরকারী কলোনী থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনীর ট্যাংক পিলখানার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর বাসায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এবং প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণে অস্ত্র সমর্পণ না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
এসবই তাৎপর্যপূর্ণ খবর।
ভয়াবহ রক্তপাত দেখার জন্যে অপেক্ষা কী যে ভয়াবহ!
রেজাউল করিম সুমন - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৪:২৬ অপরাহ্ণ)
প্রকাশ্যে ভয়াবহ রক্তপাত দেখার আশঙ্কার বোধ হয় অবসান হলো শেষমেশ।
এই মুহূর্তটির জন্যই অপেক্ষা করছিলাম আমরা সবাই।
কিন্তু এখানেই সবকিছুর শেষ নয় …
রায়হান রশিদ - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (১:৩৩ অপরাহ্ণ)
বিডিনিউজ-সিএনএন-আইবিএন এর সাম্প্রতিক খবর: জামায়াতে ইসলামীর জড়িত থাকার সম্ভাবনা
এখানে ভিডিও দেখুন।
রেজাউল করিম সুমন - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৩:২৭ অপরাহ্ণ)
তেহরান বাংলা রেডিও-র খবর:
বিডিআর বিদ্রোহের পক্ষে-বিপক্ষে দুটি গ্রুপ কাজ করেছে : বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান
[…] সাবেক সেনাপ্রধান লেঃ জেনারেল হারুন অর রশিদ বলেন, বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলছে তা আমি অস্বীকার করি না। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বিডিআরের সাধারণ জওয়ানরা কি করে সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাদের ওপর আক্রমন করার সাহস পেলো ? তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস দেয়ার পরও বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা কেন অস্ত্র জমা দিতে দেরি করলো তা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহীদের এই ঘটনার পেছনে দেশের পক্ষে ও বিপক্ষের দুটি গ্রুপ কাজ করেছে বলে আমি মনে করি। তিনি আরো বলেন, এই ঘটনার পিছনে কারো ইন্ধন ছিলো । […]
বিস্তারিত দেখুন এখানে।
অবিশ্রুত - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (১:০৯ পূর্বাহ্ণ)
সেনাবাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা, মেজর জেনারেল (অব.) আজিজুর রহমান (বীর উত্তম), যিনি ২৫ আগস্ট ১৯৯৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ পর্যন্ত বিডিআর-এর মহাপরিচালক ছিলেন, তিনিও বিডিআর-দের অসন্তোষের যৌক্তিকতা স্বীকার করেছেন। বিস্তারিত জানার জন্যে প্রথম আলোয় তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখুন।
এ লেখায় প্রাসঙ্গিক একটি তথ্য রয়েছে, বিডিআর-এর সদস্যদের মধ্যে থেকে লে. কর্নেল পদের সমপর্যায় পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে। যারা বিদ্রোহ সংগঠিত করেছেন, তারা এ ব্যাপারটিকেই উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেছেন এবং বলা যায়, একটি পর্যায় পর্যন্ত সফলও হয়েছেন।
আরেক সাবেক সামরিক কর্মকর্তা এবং বিডিআর-এর সাবেক মহাপরিচালক ফজলুর রহমানও বিডিআর-এর অসন্তোষের কথা বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই স্বীকার করেছেন। চ্যানেল আইকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারের লিখিত সংবাদটি পাওয়া যাবে এখানে।
কিন্তু এই অসন্তোষকে কীভাবে কোন উপায়ে কোন লক্ষ্যে এবং কারা সংগঠিত করেছে, তা জানা খুবই জরুরি। কেবল তা হলেই সম্ভব এ বিদ্রোহের মূল লক্ষ্য জানা। ইতিমধ্যেই সিএনএন-আইবিএন সূত্র থেকে বিডি নিউজ একটি সংবাদ দিয়েছেন এবং তা সত্যি হোক বা না হোক, মানুষের অসন্তোষকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের একটি দিক এ থেকে উপলব্ধি করা সম্ভব।
আজকের নয়া দিগন্তে দেখছি, একজন সাধারণ বিডিআর জওয়ান সুবেদার শহীদের ওপর সব দোষ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে!
এইভাবে বোধ করি বিদ্রোহের প্রকৃত সংগঠকদেরও আড়াল করা হচ্ছে। কেননা সুবেদার শহীদ কিংবা অন্য কোনও সুবেদারের সাংগঠনিক ভিত কোথায় তা জানা দরকার। বিডিআর সদস্যদের লে. কর্নেল পদ পর্যন্ত পদোন্নতি ঘটতে পারে, এরকম কেউ কি এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না? জানতে ইচ্ছে করছে।
যতদূর জানি, বাংলাদেশের গোয়েন্দা নেটওয়ার্ককে আমরা যত দুর্বল ভাবি তত দুর্বল নয়। গোয়েন্দা সংস্থা এ ঘটনার পূর্বাভাস দেয়নি,- এর অর্থ আসলে এই যে, তারা তথ্য গোপন করেছেন। কেন গোপন করেছেন, কোন মহল বা কোন দলের স্বার্থে করেছেন তা খতিয়ে দেখা দরকার।
আমার ব্লগ-এ দেখতে পাচ্ছি, ব্লগার ইমরোজের ব্লগের সূত্র ধরে চোর একটি ব্লগ লিখেছেন।
কিন্তু ইমরোজের মূল ব্লগটি সূত্র ধরে আর খুঁজে পাচ্ছি না। তবে ইমরোজের ব্লগের পুরোটাই চোর কপি করে তুলে দিয়েছেন। তাতে লেখা হয়েছে
অর্থাৎ তিনি সাবধানবাণী উচ্চারণ করে গেছেন। তার মানে কি, আর্মি অফিসাররাও এর পূর্বাভাস পেয়েছিল? দরবার হলে যাওয়ার আগেই? উল্লেখ্য, ইমরোজের এই মামা নিহত হননি, তাকে নাকি বিডিআর বাহিনীর নিরাপত্তা রক্ষীরাই রক্ষা করেছে এবং সেই মামার ভাষ্য অনুযায়ী, মেজর জেনারেল শাকিলই প্রথম পিস্তল বের করে গুলি করেছেন। যে আর্মি অফিসাররা রক্ষা পেয়েছেন, তাদের বক্তব্যও খতিয়ে দেখা উচিত। কেননা এই ভাষ্যের সঙ্গে টিভিতে জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার পাওয়া মেজর জায়েদীর ভাষ্যের কোনও মিল নেই। আবার ভোরের কাগজ-এ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ডিজি দৌড়ে তার বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয়ার পর তাকে স্ত্রীসহ হত্যা করা হয়েছে। একজন সামরিক অফিসার জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ডিজির মৃত্যু সম্পর্কে কোনও কিছু বলতে রাজি হননি (সংবাদপত্রটির নাম এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না, পরে জুড়ে দেব)। এসব বক্তব্যগুলিকে সূত্রবদ্ধ করলেও বিদ্রোহের একটি রেখাচিত্র ফুটে উঠবে মনে হয়।
বিদ্রোহের মূল লক্ষ্য ছিল, আমার ঘটনাপ্রবাহে যা মনে হয়, অসংখ্য সামরিক কর্মকর্তা হত্যার মধ্যে দিয়ে সেনাবাহিনীকে উত্তেজিত করা, বিডিআর-এর মতোই দ্বিধাবিভক্ত করা এবং একটি রক্তক্ষয়ী সংঘাতের সূচনা করা, যাতে নির্বাচিত সরকারের কাঠামোকে সঙ্গতকারণেই নড়বড় ও স্থবির হয়ে পড়ে।
তাই সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে, আওয়ামী লীগ সরকার আসলে বিডিআর বিদ্রোহ দমন করেনি, প্রকৃত অর্থে একটি সামরিক অভ্যুত্থানকেই দমন করেছে।
রেজাউল করিম সুমন - ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৮:১৬ অপরাহ্ণ)
@অবিশ্রুত
আপনি লিখেছেন :
সামহয়্যারইন ব্লগে ইমরোজের লেখাটি পরশু রাতে আমি পড়েছিলাম। সেটা বেমালুম গায়েব হয়ে যাবার তো কথা না! সেই পোস্ট খুঁজতে গিয়ে এখন আবিষ্কার করা গেল, লেখক স্বয়ং ইতিমধ্যে লেখাটি মুছে দিয়েছেন এবং ‘এই আনন্দের কোন শেষ নেই বিডিআর বিদ্রোহ, আমার জবাবদিহি ও ক্ষমা প্রার্থনা!’ নামে একটি নতুন পোস্ট দিয়েছেন। এর সূচনাংশ এরকম :
আগের পোস্টটিতে মামার নিরাপত্তার স্বার্থে ভাগনে তাঁর পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। নতুন পোস্টের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। তবে এবারে মামার বরাত দিয়ে একটি নতুন বয়ান পেশ করা হয়েছে। [বিস্তারিত দেখুন এখানে]
মুছে-দেয়া লেখাটির নীচে নানাজনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় লেখক লঘুচালে উত্তর দিয়েছিলেন। এবারে অবশ্য তিনি মৌনব্রত অবলম্বন করেছেন!
সালমান - ২ মার্চ ২০০৯ (৫:১৩ পূর্বাহ্ণ)
বিডিনিউজ ২৪ ডটকম থেকে :
সেনা হত্যায় উস্কানি দিয়েছেন সাকা চৌধুরী: ভারতীয় সংবাদমাধ্যম
ঢাকা, মার্চ ১ (বিডিনিউজ ২৪ ডটকম) – ২৫ ফেব্রুয়ারির বিডিআর বিদ্রোহের সময় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যায় বিএনপি সাংসদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী উস্কানি দিয়েছেন।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ও নিউজ চ্যানেলগুলো শনি ও রোববার তাদের পরিবেশিত খবরে এ দাবি করেছে। এর আগেও ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে এ ধরনের দাবি করা হয়েছিল।
ভারতের সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, এ বিদ্রোহ ঘটানোর জন্য কিছু বিডিআর সদস্যকে এক কোটি টাকা আগাম দেওয়া হয়েছে।
অন্যতম শীর্ষ সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তার রোববারের সংখ্যার প্রধান খবর করেছে বিডিআর বিদ্রোহকে। আর খবরটির শিরোনাম ছিল ‘সেনা বাহিনীকে উস্কানি দিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র প্রকাশ করলো ঢাকার বিদ্রোহীরা’।
পত্রিকাটি লিখেছে, বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর প্রায় একশ’ কর্মকর্তা ও কর্মীকে হত্যার পর আত্মসমর্পণকারী বিডিআর সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উদ্বেগজনক তথ্য পাওয়া গেছে।
পত্রিকাটি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সন্দেহের আঙুল তুলছে বিএনপির সাংসদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দিকে।
যেসব বিডিআর সদস্যকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাদের মধ্যে ছিলেন সুবেদার মেজর জাফর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, “ঢাকা থেকে পাওয়া তথ্যে বলা হচ্ছে যে, বিডিআর বিদ্রোহের তিনদিন আগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর কিছু সংখ্যক বিডিআর সদস্যকে প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকা দেওয়া হয়।”
খবরে আরো বলা হয়, “এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশের সেনা বাহিনী কঠিন পাল্টা জবাব দেবে, এই প্রত্যাশা থেকে বিডিআর সদস্যদের সুপ্ত ক্ষোভ উস্কে দেওয়া হয়।”
ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াও খবরটি প্রচার করে প্রথম পৃষ্ঠায়। এতে বলা হয়, “দৃশ্যত কাণ্ডজ্ঞানহীন এই হত্যাকাণ্ডের একটি বৃহত্তর চিত্র ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজন বিডিআর সদস্য জাহাজ ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নাম উচ্চারণ করেছেন। পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়।”
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ নেতাদের একজন। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা ও যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত এ নেতা বিগত বিএনপি সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এমন একজন কর্মকর্তা জানান, বিদ্রোহ ঘটানোর জন্য এরই মধ্যে এক কোটি টাকা হাত বদল হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, “বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ২০০৪ সালের দশ ট্রাক অস্ত্র পাচারের ঘটনার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।”
দৃশ্যত এই অস্ত্র ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) জঙ্গিদের কাছে পাঠানো হচ্ছিল বলে উল্লেখ করে পত্রিকাটিতে বলা হয়, যে জাহাজে অস্ত্র বহন করা হয়েছে তার মালিকও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী। এতে বলা হয়, কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে সাকা চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
এর আগে বৃহস্পতিবার ইংরেজি ভাষার শীর্ষস্থানীয় নিউজ নেটওয়ার্ক সিএনএন-আইবিএন ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছিল, বিডিআর-এর রক্তাক্ত বিদ্রোহে সাকা চৌধুরীর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।
শনিবার চ্যানেলটির সরাসরি প্রচারিত এক রিপোর্টে বলা হয়, ঢাকায় গ্রেপ্তার কয়েকজন বিডিআর সদস্যও সাকা চৌধুরীর নাম বলেছেন।
টাইমস নাউ নামের আরেকটি ভারতীয় ইংরেজি নিউজ চ্যানেলও সাকা চৌধুরীর কথিত ভূমিকা শিরোনাম দিয়ে এ ব্যাপারে খবর প্রচার করেছে।
কয়েকটি আঞ্চলিকসহ ভারতের আরো কয়েকটি সংবাদপত্র ঢাকার এই হত্যাকাণ্ডে সাকা চৌধুরীর কথিত মদত দেওয়া নিয়ে সংবাদ প্রচার করেছে।
বিডিনিউজ ২৪ ডটকম/টিআর/এসকে/২৩৫৫ঘ.
ডোবার ব্যাং - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (২:৪৪ অপরাহ্ণ)
ঔপনিবেশিক ধাচের প্রভু-ভৃত্য আন্তসম্পর্কের সশস্ত্র (বা প্যারা মিলিটারী) বাহিনীর প্রয়োজনহীনতা এবং এর ক্ষতিকর ও গণবিরোধী দিকগুলোর বিরুদ্ধে কর্নেল তাহেরের ধারাবাহিক চিন্তা ও সক্রিয়তাগুলো যে এখনো প্রাসঙ্গিক তাই প্রমাণ করে গেলো প্রায় ঈশ্বরের সমান ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচারীতা ভোগ করতে থাকা উচ্চপদস্থ সামরিক অফিসারদের বিরুদ্ধে সাধারণ জওয়ানদের (যাদের প্রায় সবাই দেশের দরিদ্র কৃষক-শ্রমিক-খেটে খাওয়া মানুষদের সন্তান) এই দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া (অসঙ্গঠিত ও অসম) অকুতোভয় প্রতিরোধ…
সিপাহী-জনতা ভাই ভাই…
কর্নেল তাহের লাল সালাম…
সালমান - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৬:১১ অপরাহ্ণ)
ডোবার ব্যাং মহোদয় রায়হান রশিদের পোস্টে উত্থাপিত জ্বলন্ত প্রশ্নগুলো লক্ষ করেন নাই বলেই মনে হচ্ছে। মন্তব্যগুলোও কি তিনি ঠিকমতো পড়েছেন? এরকম আলটপ্কা গরম স্লোগান দেয়ার মধ্যে সস্তা বিপ্লবিয়ানা আছে, বিবেচনাবোধের পরিচয় নাই।
রায়হান রশিদ - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৪:১৫ অপরাহ্ণ)
@ ডোবার ব্যাং
ব্লগে লক্ষ করেছি বেশ কয়েকজন এই ঘটনাকে শ্রেণী সংগ্রামের সাথে তুলনা করছেন। একে তাদের “যুদ্ধজাহাজ পটেম্কিন্” বানানোরও চেষ্টা চলছে কোথাও কোথাও। হাত তুলে ‘শ্রেণী সংগ্রাম, শ্রেণী সংগ্রাম’ বলে নেচে ওঠার আগে আরেকটু অপেক্ষা করলে ভাল হতো মনে হয়। সিএনএন-বিডিনিউজ-এর উপরের খবরে যদি কিছু সত্য থেকে থাকে কিংবা অন্য কোনো সাপ বেরিয়ে আসে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে, তখন? তো আমাদের জামাত-শিবিরকে শ্রেণী সংগ্রামের ভ্যানগার্ড এবং সাকা-নিজামীকে এ সময়ের লেনিন বলেই মেনে নিতে হবে বৈকি অগত্যা!
নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার জন্য অকুতোভয় হতে হয় বৈকি। নারী, শিশু এবং বৃদ্ধদের আটকে রেখে সন্ত্রস্ত করার বীরত্ব তো কম কিছু নয়। আপনি কী শুনেছেন জানি না, তবে আমি যতদূর শুনেছি, এ ধরণের অনুষ্ঠানে কোনো অফিসার কিংবা সৈনিকই অস্ত্র হাতে অংশগ্রহণ করেন না, কেবলমাত্র নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্তরা ছাড়া। সুতরাং, জনৈক মেজর জেনারেল-এর উস্কানিমূলকভাবে হঠাৎ এক সৈনিককে গুলি করার ব্যাপারটি আমার কাছে এখনো ঠিক বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন কি ছিলেন না, সে প্রশ্ন বা অভিযোগ একপাক্ষিক এবং অন্য প্রসঙ্গ। অভিযোগটি নিঃসন্দেহে গুরুতর; কিন্তু এও তো ঠিক যে, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন না আর। পুরো সত্য উদ্ঘাটিত না হওয়া পর্যন্ত মনে হয় একটু অপেক্ষা করাই ভাল। এখন পর্যন্ত দরবার হলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ১৬৮ জন সামরিক অফিসারের মধ্যে ১৩৭ জনেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি, এমনকি তাঁদের মৃতদেহেরও। সুতরাং, একটু ধৈর্য ধরার অনুরোধ করবো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা, সংগ্রামী, সৎ, অকুতোভয় কর্নেল তাহেরকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তাঁর ব্যাপারে কিছু প্রশ্নও আছে আমার মনে, সে-প্রসঙ্গ পরে কোনো আলোচনায় উত্থাপন করার ইচ্ছে আছে। ‘৭৫-এর সেই দিনগুলোতে আসলে কী ঘটেছিল, কার কী ভূমিকা ছিল, সে বিষয়ে আমার কাছে অনেক কিছুই এখনো বেশ অস্পষ্ট। এমনকি লিপস্যুলজ-এর মতো নিবেদিতপ্রাণ ভক্তরাও কর্নেল তাহের-এর কিছু ভূমিকা সম্পর্কে সদুত্তর দিতে পারেননি, অন্তত আমি খুঁজে পাইনি। কিন্তু, তিনিই কি সেই ব্যক্তি নন যাঁর অনুসারীদের সাথে যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ শহীদ হয়েছেন, এবং যাঁর নিরাপত্তা ছায়ায় জেনারেল জিয়াউর রহমান সসম্মানে মুক্ত হয়েছেন দেশের ইতিহাসের গতিপথ চিরতরে বিগড়ে দিতে? এ নিয়ে ইতিহাস-নির্ভর কিছু তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সময়টির সঠিক মূল্যায়নের সময় এসেছে আজ। তাতে হয়তো আমরা গতকালকের বিডিআর বিদ্রোহের ব্যাপারেও নতুন অন্তর্দৃষ্টি লাভ করতে পারবো। আবেগতাড়িত হয়ে সব কিছুর মধ্যে শ্রেণী সংগ্রামের সর্ষে ফুল দেখতে রাজি নই। আর, ‘হুটহাট করে’ কেউ তা দেখানোর চেষ্টা করলে তাদের ব্যাপারে কিছুটা সন্দিগ্ধ সতর্কতা অবলম্বনও প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে এখন। অনেক ঠকে এবং ঠেকে নিতান্ত বাধ্য হয়ে এভাবে ভাবতে শিখছি আমরা।
মুক্তাঙ্গন - ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৭:৪০ অপরাহ্ণ)
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় এখানকার প্রতিটি মতামত ও তথ্যকে মডারেট এবং সম্পাদনা করা হবে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই ইস্যুতে আলোচনায় সংযম ও সুবিবেচনা একান্তই প্রয়োজন।
ধন্যবাদ।
অবিশ্রুত - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (১:৩০ পূর্বাহ্ণ)
দ্রুততার কারণে রায়হান রশিদের হয়তো একটু ভুল হয়েছে, কেননা তিন নভেম্বরের পর চার নেতা হত্যার ঘটনার ডামাডোলের মধ্যে দিয়ে সাতই নভেম্বরের ঘটনা ঘটেছিল; সিপাহী বিপ্লবের কারণে চার নেতা হত্যার ঘটনা ঘটেনি।
রায়হান রশিদ - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (২:১৩ পূর্বাহ্ণ)
ভুলটি ধরিয়ে দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ঘটনার ক্রম এলোমেলো হয়ে গেছে। মূল পোস্টে এবং মন্তব্যে ঠিক করে নিচ্ছি, আলোচনা প্রাসঙ্গিক রাখার লক্ষ্যে।
অবিশ্রুত - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৭:০৫ অপরাহ্ণ)
দু:খিত, আমি ঠিক ভুল ধরার উদ্দেশ্য থেকে কথাগুলি লিখিনি, অনেকে বিভ্রান্ত হতে পারেন, তাই তাড়াতাড়ি একটি সংশোধনী নোট দিয়েছি। এই মুহূর্তে লেখাটায় চোখ বুলাতে গিয়ে আবারও দেখছি,
আসলে কি তাই? আমি যা দেখছি, আওয়ামী লীগ খুব কম সময় ক্ষমতায় থেকেছে। বেশির ভাগ অভ্যুত্থান বলি, বিদ্রোহী বলি হয়েছে অন্য সময়। আওয়ামী লীগের প্রথম শাসনামলে অভ্যুত্থানের একটি ইঙ্গিত পাই আমরা কর্নেল তাহেরের ১৯৭৩ সালের পদত্যাগপত্রে। তিনি তাতে লিখেছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাতের (শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎখাতের) একটি চক্রান্তের কথা তিনি জানানোর পরও চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, যা তাকে আহত করেছে। এই চক্রান্তকারী কারা ছিল, তা আমরা আজও জানি না।
এ বাদে আরেকটি ঘটনা ঘটে বিডিআর-এ, মুজিব বাহিনীর সদস্যদের আত্তীকৃত করার প্রতিবাদে এবং এর মীমাংসা হিসাবেই গঠিত হয় রক্ষী বাহিনী। (ভাবতে অবাক লাগে, এই রক্ষী বাহিনীর অফিসারদের অনেককে জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীতে আত্তীভূত করেছিলেন। অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশাসনই এ পদক্ষেপটি নিতে পারত রক্ষীবাহিনী গঠন করার পরিবর্তে।) আর তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টে, যার ফল আমাদের সবারই জানা।
আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) এরকম কোনও বিদ্রোহ কিংবা অসন্তোষের কথা আমার জানা নেই।
আসলে প্রতিরক্ষা ও আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনীর এরকম রক্তাক্ত আখ্যানগুলি ক্ষমতার অন্তর্দ্বন্দ্বের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং সেকারণে যেসব সরকার আমলে এসব বাহিনী রাজনৈতিক ক্ষমতার কাছাকাছি ছিল, সেসব আমলেই এসব ঘটনা বেশি ঘটেছে। যেমন, জিয়া ও এরশাদের সময়। কিন্তু রাজনৈতিক দলীয় সরকার এলেও তার জের যে টানতে হয়, যার প্রতিফলন এ ঘটনায় দেখা যাচ্ছে।
তার মানে এই নয়, সাধারণ সিপাই ও জওয়ানদের ক্ষোভ মিথ্যা, অসন্তোষ মিথ্যা। এই অসন্তোষ একবার আনসার বিদ্রোহ ঘটিয়েছিল, একবার সিপাহীদের পথে নামিয়েছিল, পুলিশদের মধ্যেও রয়েছে এ অসন্তোষ এবং বিডিআরদের অসন্তোষও দেখলাম আমরা।
প্রতিটি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনেই এ ধরনের অসন্তোষ ও ক্ষোভ বড় ভূমিকা রাখে, কিন্তু সেই ভূমিকার ফলটি নির্ভর করে কারা বা কোন চরিত্রের সংগঠন সেই অসন্তোষ ও ক্ষোভকে সংগঠিত ও সংঘটিত করছে তার ওপরে।
শ্রেণী বা শ্রেণীসমূহ শ্রেণীসংগ্রাম করতেই পারে, শ্রেণীসংগ্রাম একটি চলমান বহমান প্রক্রিয়া, তা আমাদের চোখে পড়ুক বা না পড়ুক। কিন্তু শ্রেণী বিপ্লব ভিন্ন জিনিস এবং তা অত সহজ নয়। শ্রেণী বিপ্লব প্রতি মুহূর্তে তো ঘটেই না, বোধকরি প্রতি যুগেও ঘটে না।
ডোবার ব্যাং - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (২:০১ অপরাহ্ণ)
আমি দুঃখিত। আমার কথাটার (সম্ভবত অতি সংক্ষেপে বলার ফলে অন্যভাবে বুঝে নেয়ার বাস্তবতা তৈরি হয়েছে) ব্যাখ্যা এরকম না…আমি বলিনি যে এটা শ্রেণী সংগ্রাম…আমার আঙ্গুলটা পুরো অন্যদিকে…আমি বলেছি ঔপনিবেশিক ধাচের প্রভু-ভৃত্য আন্তসম্পর্কের সশস্ত্র (বা প্যারা মিলিটারী) বাহিনীর প্রয়োজনহীনতা এবং এর ক্ষতিকর ও গণবিরোধী দিকগুলো প্রসঙ্গে…
সচরাচর তাহেরকে ৭ নভেম্বর বিষয়ক ঘটনাপঞ্জী দিয়ে দেখা হয়…মূলত তাহের জরুরি হলেন তার সেনাবাহিনী বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গি ও তা সফল প্রয়োগের উদাহরণ সৃষ্টির কারণে…
সশস্ত্র গণযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া একটা স্বাধীন দেশে সেনাবাহিনীর কাঠামো কিম্বা তাদের কর্মপদ্ধতি কেমন হবে? তাহের যখন কুমিল্লা সেনানিবাসে ছিলেন তখন তিনি গণসম্পৃক্ততা ও উতপাদনমুখীনতার কিছু কিছু চর্চা শুরু করেন…মূলত সেই কারণেই এক পর্যায়ে তাহেরকে সেনাবাহিনী থেকে বিদায় নিতে হয়…
আর বাঙ্গলাদেশ সেনাবাহিনি সেই পুরনো পথে হাটতে শুরু করে…যেখানে প্রথমেই শেখানো হয় আমরা উন্নত / অনন্য; আর পুরো বাকী দেশটায় কেবল ব্লাডি সিভিলিয়ান…
ঔপনিবেশিক ধাচের প্রভু-ভৃত্য আন্তসম্পর্কের সশস্ত্র (বা প্যারা মিলিটারী) বাহিনীর কাঠামোতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের অনিবার্যতাই আবার প্রমাণ করে গেলো সাম্প্রতিক এই ঘটনা…
অন্যথায় সেদন বেশি দূরে না যখন এদেশে পাকিস্তান কি বার্মা কি অন্য অনেক দেশের মত আর্মিও একটা রাজনৈতিক দল হয়ে উঠবে…
(সত্যি বলতে, হয়ত এর প্রক্রিয়া শুরুই হয়ে গেছে, কিছু একটা ঘটলে আজকাল অনেকেই এভাবে ভাবেন যে ঘটনাটায় আওয়ামী লীগ কি পেলো? বিএনপি কি পেলো? আর্মি কি পেলো?)
রায়হান রশিদ - ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (২:৪২ অপরাহ্ণ)
আপনি ঠিকই বলেছেন। প্রচেষ্টাটি নিঃসন্দেহে মহৎ ছিল। এর কতটুকু বাস্তবে প্রয়োগযোগ্য তা নিয়ে মতভিন্নতা থাকতেই পারে। সামরিক সংগঠন বিশেষজ্ঞরা আরও ভাল বলতে পারবেন এসব বিষয়ে। কর্নেল তাহের তাঁর সাংগঠনিক মেধা এবং নেতৃত্বের গুণে আন্দোলনটিকে একটি পর্যায় পর্যন্ত রাজনৈতিক পটের একেবারে সামনের কাতারে আনতেও পেরেছিলেন, সন্দেহ নেই। তবে তাঁর চিন্তার প্রয়োগকে শেষ বিচারে কতটুকু সফল বলা যায়? এ নিয়ে আমার কিছু দ্বিধা আছে। কারণ, তাই যদি হবে, তাহলে কর্নেল তাহেরের কাছে কোন্ বিচারে এই চিন্তার অংশীদার জেনারেল জিয়ার মত একজন মানুষ হন? তিনি নিজেও তো প্রাণ দিলেন, আর চিরতরে বদলে গেল বাংলাদেশের ইতিহাসের গতিপথ। আমার অন্তঃর্দ্বন্দ্বটা এখানেই।
সালমান - ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৮:১১ পূর্বাহ্ণ)
@ ডোবার ব্যাং
সেনাবাহিনীর শ্রেষ্ঠম্মন্যতা নিয়ে আলাদা আলোচনা হতে পারে। কথিত ‘বিডিআর বিদ্রোহ’-র প্রথম কয়েক ঘণ্টায় বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যদের প্রতি অনেকেই যে সহানুভূতি পোষণ করেছেন, তার একটা বড়ো কারণ নিশ্চয়ই এই — সেনাবাহিনীর শ্রেষ্ঠম্মন্যতাকে দেশের বেশিরভাগ মানুষ অনুমোদন করেন না। ‘অপারেশন ডাল-ভাত’-এর দুর্নীতি নিয়েও নিশ্চয়ই তদন্ত হওয়া দরকার। কিন্তু বিডিআর সদর দপ্তরের ভিতরে নির্মম হত্যাযজ্ঞ, গণকবর রচনা ও যথেচ্ছ লুটপাটকে “দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া (অসঙ্গঠিত ও অসম) অকুতোভয় প্রতিরোধ” বলা যায় কীভাবে? দাবি আদায়ের অন্য কোনো বিকল্প রাস্তা কি খোলা ছিল না? এ ঘটনায় “সিপাহী-জনতা ভাই ভাই” স্লোগান প্রাসঙ্গিক হয় কীভাবে?!!! আমার বিস্ময়ের ঘোর কিছুতেই কাটছে না। সেই মন্তব্যে আপনি লিখেছিলেন :
প্রায় সব মহল থেকেই এখন মনে করা হচ্ছে যে, কথিত এই ‘বিডিআর বিদ্রোহ’ পূর্বপরিকল্পিত ও সুসংগঠিত ছিল। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে দুটি খবর:
আমাদের উচিত খোলামন নিয়ে, নানা কোণ থেকে আলো ফেলে সাম্প্রতিক ঘটনার যথাযথ বিশ্লেষণ করা। কর্নেল তাহের কেন জরুরি (বা জরুরি নন), সে আলোচনা পরে করলেও বোধহয় ক্ষতি হবে না।
নীড় সন্ধানী - ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ)
সবকিছুতে শ্রেনীসংগ্রাম তত্ত্বের লেবেল এটে দেয়ার প্রবনতার সাথে জামাতের ইসলাম বানিজ্যের কোন পার্থক্য পাই না আমি। এটা আমাদের দেশের তাত্ত্বিক বামদের বড় একটা দুর্বলতা এবং দৃষ্টিভঙ্গীর সংকীর্নতা। মানবিক ব্যাপারে কোন লেবেল না লাগিয়ে বললে বক্তব্য বুঝতে সহজ হয়। কমেন্টের শুরুতে এরকম বিরুদ্ধ কথা বলতে হল বলে দুঃখিত।
আজ আমরা যে ঘটনার মুখোমুখি, তা কী কোন মহাঝড়ের পূর্বাভাষ নাকি নিজেই ঝড় ছিল, তা ভবিষ্যতই বিচার করবে। সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক বা দুর্নীতিবাজ যাই হোক, তারা দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ। তাদেরকে যারা আঘাত করার সাহস করেছে, তাদের কী সাধারন বিপ্লবী মনে হয়? যেসব শ্লোগান আমরা শুনেছি মুখবাধা সৈনিকদের কাছ থেকে টিভি পর্দায়, তাদের ক্ষোভের পরিমানের সাথে কী হত্যাকান্ডের আকারের কোন সামন্ঞ্জস্যতা আছে? অর্থাৎ ভেতরে যে এতবড় হত্যাকান্ড ঘটে গেছে তা হয়তো সেই বিক্ষোভকারী সৈনিকও জানতো না।
প্রথমদিন বিদ্রোহ মনে হলেও এখন এটাকে আমি বিদ্রোহ বলতে রাজী নই। এটা একটা নির্মম গনহত্যা। এটা কোন শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ নয়। এটা তালিকাবদ্ধ সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। যার সাথে খানিকটা মিল পাই ১৪ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবি হত্যার। তখনকার রাজাকারদের আমরা চিনি। কিন্তু এবারের রাজাকার-আলবদর কারা? কাদের স্বার্থবানিজ্য রক্ষায় ব্যবহৃত হয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তিশালী প্রতিষ্টানটি?
আমার ভাবনার বিস্তারিত এখানে বলেছি।
[পোস্টটির মূল অংশ কপি করে দেয়া হল আলোচনার সুবিধার্থে – ব্লগ প্রশাসক]
অলকেশ - ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ (২:২৫ অপরাহ্ণ)
নীড় সন্ধানীর এই মন্তব্যটা ভীষন তাৎপর্যপূর্ন মনে হলোঃ
কারন, সাহসিকতা থাকলেই এত বড় মাপের ঘটনা ঘটনা ঘটিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। এর সাথে যুক্ত আছে নিঃখুত পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়ন করার আর্থিক ক্ষমতা এবং রাজনৈতিক ও সামরিক এক্সপার্টিজ। পুরো ঘটনাটা ঘটিয়ে, বাইরের রাজনৈতিক চাপ সামলে এবং পালানোর কৌশল হিসেবে অস্ত্রসমর্পনের জন্য সময়ক্ষেপণ করে ঘটনার মূল নায়করা যেভাবে সটকে পড়লো তাতে এই সন্দেহগুলো ঊঁকি দেয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জিয়া হত্যাকান্ডে সামরিক অফিসারদের হামলার যে ধরনগুলো আমরা দেখতে পাই, তা ছিল;
১। একটি সেনা গ্রুপের পরিকল্পিত সামরিক অভিযান, যা প্রচন্ড সামরিক আক্রমনের মধ্য দিয়ে টার্গেট ধ্বংস করে দিয়ে নিজেদের সামরিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্টার মাধ্যমে তাদের কর্মকান্ডকে সামরিক বাহিনীর কাছে ও জনগণের কাছে জাস্টিফাই বা গ্রহনযোগ্য করার চেষ্টা করা।
২। এক্ষেত্রে হত্যাকান্ডগুলোর মোটিভ ছিল সেনাবাহিনীর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল। এবং এটা পরে সদম্ভে প্রচার করেছিল তারা যে, তারা ঠিক কাজটিই করেছিল জাতির স্বার্থে।
৩। একটা বড় রকমের রাষ্ট্রীয় হত্যাকান্ড ঘটানোর জন্য যে সমর কৌশলগত প্রস্ততি থাকা দরকার তার সব কিছুই তাদের আয়ত্তে ছিল।
বর্তমান ঘটনার প্রকৃতি ও ধরন আগের ঘটনাগুলোর সাথে বেশ কিছু জায়গায় মিলে যায়, কিন্ত কিছু কিছু বিষয় এই ঘটনাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে, যেমনঃ
১। ঘটনার পৈশাচিকতা ও বিভৎসতা।
২। এলোপাথারী ব্রাস ফায়ার এখানে হয়নি, হয়েছে টার্গেট বেইজড পরিকল্পিত ব্রাস ফায়ার।
৩। হামলার টার্গেট নির্ধারণ ও অব্যর্থ লক্ষ্যভেদ করা দেখে মনে হয়েছে, ঠিক কাদের উপর এবং কিভাবে এই হামলাটা চালাতে হবে, তার জন্য ইতিমধ্যেই একটা রিহার্সেল তারা করে নিয়েছে। এটা সুদক্ষ, পেশাদার ও ঠাণ্ডা মাথায় ঘটানো একটী গ্রুপের কাজ। যাদের পেশাদারিত্ব রয়েছে।
৪। হামলার প্রস্ততি, কৌশল এবং সাহসিকতার ধরনটা দেখে মনে হয়েছে, তারা নিশ্চিত ছিল, তারা গোটা প্রশাসনকে এবং সাধারন জনগণকে অন্ততঃ কিছু সময়ের জন্য বোকা বানাতে পারবে।
৫। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি সামরিক বাহিনীর ভিতরে একটা চুড়ান্ত ঘৃণা তৈরী করার প্রয়াস হতে পারে এটি।
৬। আমাদের বিডিআরকে একটি ভালনারেবল এবং অসংগঠিত ফোর্স হিসেবে প্রমাণ করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে চোরাগুপ্তা পথে ক্ষমতার সন্ধান করা।
একটা বিষয় মেলে না, তা হলো হামলার পৈশাচিকতা এবং বিভৎসতার মাত্রা। কারন বিডিআরদের ক্ষোভের অনুপাতে ঘটনার ভয়াবহতা কোনভাবেই মেলানো যায় না, এবং এটা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন দেখি না। আর একটা বিষয় বুঝতে পারছি না যে, এত বড় ইন্টেলিজেন্স ফেইলিওর কিভাবে সম্ভব হল?
Pingback: রায়হান রশিদ | মুক্তাঙ্গন
Pingback: মুক্তাঙ্গন | পিলখানা গণহত্যা: চিন্তাঝড় ৩ — গুজবের ময়না তদন্ত | রায়হান রশিদ
নিরাভরণ - ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (৫:২২ পূর্বাহ্ণ)
আমার মতে এই পোস্টের মূল প্রশ্ন এটাই। এটার সাথে আরেকটা প্রশ্ন যোগ করতে চাই। যেটা কিছুদিন আগে কিছুটা ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে মনে এসেছিল।
তখন সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ‘মাইনাস টু’ বাস্তবায়নের জন্য নানা ধরনের তৎপরতা চলছে মুলত সামরিক তত্ত্বাবধানে। বেশকিছু ডাকসাইটে নেতাদের স্বিকারোক্তি প্রকাশিত হচ্ছিল পত্রিকায়, ইউটিউবে। স্বভাবতই সহজ আড্ডালাপে এধরনের কঠিন স্বিকারোক্তি (সত্য মিথ্যে যাই হোক) বেরিয়ে আসেনি। মানে কিছু শারিরীক মানসিন নির্যাতনের ছবিও কল্পনা করা কঠিন ছিলোনা। একজন সাধারন নাগরিক হিসাবে একটা আশঙ্কা জাগছিল মনে, যদি মাইনাস টু কাজ না করে তাহলে যারা এই ইন্টারোগেশান ইত্যাদির সাথে জড়িত তাদের পরিনতি কি হবে? তখন সামরিক বাহিনীও হয়ত বুঝে গিয়েছিল মাইনাসটু সফল না হবার ঝুকি কতটা। ফলে তাদের আচরন অনেকটা মরিয়া ছিল বলেই অনুমান করা যাচ্ছিল (এভাবেই পর্যবেক্ষন করছিলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজগুলো)। যদি প্রধান রাজনৈতিক দলের একটি ক্ষমতায় আসে এবং অন্যটি বহাল তবিয়তে বিরোধী দলে যায় তারা কি কেবল এই অফিসারদের বা বৃহত্তর অর্থে সেনাবাহিনীর উদ্ধত আচরনের উত্তর দিতে চাইবে না? যদি উত্তর দিতে চায় তবে সেই উত্তরের ধরনটা কেমন হবে? কয়েকজন অফিসারকে ছাটাই করা অবশ্যই এই ঔদ্ধত্যের যথেষ্ট জবাব নয়, যদি রাজনৈতিক নেতাদের ইগোর ব্যপারটাকে বিবেচনা করি।
আমার ধারনা প্রধান রাজনৈতিক দলদুটোর একটি ক্ষমতায় আসার পর আমার মত আরো অনেকেই হয়ত এইরকম আশংকা পোষন করেছেন। তারপর কিছুদিন পরেই ঘটল বিডিয়ার বিদ্রোহ। আমি জানিনা আমার উপরের প্রশ্নের উত্তর বিডিয়ার বিদ্রোহের ঘটনা কিনা। কিন্তু মন থেকে এই ভাবনাটি সরাতে পারিনি।
পারিনি উপরে বর্ণিত পরিস্থিতির সাথে আরো কয়েকটা ফ্যক্টর যোগ করেঃ
১) পিলখানার ঘটনাটি যত বড় এটাতে কোন অদৃশ্য বা দূরবর্তি শক্তির পক্ষে সবার অগোচরে এমনটা ঘটান অসম্ভব।
২) এই ঘটনার কয়েকমাস পর কয়েকজন অল্পবয়সি সামরিক অফিসার আইন নিজের হাতে তুলে নেবার চেষ্টা করে এবং বিচারের মুখোমুখি হয়। এটাকে একটা ষড়যন্ত্র হিসাবে না পাঠ করে আমি পাঠ করেছি কয়েকজন তরুন অফিসারের হতাশাতাড়িত মরিয়া আচরন হিসাবে।
সেইসময় কালে যেই সামরিক বাহিনীর সমর্থিত সরকারয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট আরেকটা নাম ছিল মোহাম্মদ ইউনুস। এখন অনেকেই বুঝতে পারছেননা ইউনুসের প্রতি রাজনৈতিক জিঘাংসার কারনকি?
ক্ষমা করবেন উত্তরগুলো একটু বেশি সহজ হয়ে দেখা দিচ্ছে মনে। অন্য যতরকমের ষড়যন্ত্রতত্ত্ব আছে সেগুলো বিশ্বাস করতে পারলে ভালই লাগত। কিন্তু উপরে যেই ভাবনাগুলোর কথা লিখলাম এগুলো অত্যন্ত পীড়াদায়ক। কেউ যদি পারেন আমাকে সাহায্য করুন এই ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসতে তাহলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। আমি নিজেও এই ধারনাটিকে অবিশ্বাস করতে চাই। কিন্তু পারছিনা।
নিরাভরণ - ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (৫:৩০ পূর্বাহ্ণ)
এই মন্তব্যটি করার পর চোখ পড়ল নীড়সন্ধানীর মন্তব্যের নিচে উদ্ধৃত ব্যখ্যার ওপর। এটাও ভয়ংকর ভাবে মিলে যাচ্ছে আশংকার সাথে। প্রধান অংশটা নিচে কপি করলাম।