এই বইটা আমি পাঠ করি অসম্ভব দ্বিধা নিয়ে। তবে লেখকের দেখার দৃষ্টিভঙ্গিটা খুবই তেরছা। অবশ্যই যথেষ্ট প্রমাণপত্র তিনি বইটাতে তুলে ধরেছেন। ভারতবর্ষের স্বাধীনতার সমকালীন নেতৃবৃন্দকে তিনি চুলচেরা বিচার করে ছেড়েছেন। বইটির মোটকথা হচ্ছে বৃটিশদের সাথে বিড়লাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। আর বিড়লা ছিল গান্ধীর মানসপুত্র। বৃটিশ এবং বিড়লারা গান্ধীকে আধ্যাত্মিক নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে যা যা করা দরকার সবই করত। এর জন্য তাদের ছিল বিশাল বাজেট। গান্ধী অহিংস থাকতেন তখন যখন ইংরেজদের ওপর আক্রমণ করার প্রয়োজন হতো আর যখন ভারতীয়দের ওপর আক্রমণ হত তখন তিনি অহিংস থাকতেন না। কংগ্রেসের ভিতর থেকে মুসলিম লীগ বলে যে শুয়াপোকাটি বের হল তার মূলে আছে গান্ধীর স্বেচ্ছাচারিতা। তিনি কারও মন্তব্য সহ্য করতেন না। বাংলা বিভাজনেও বিড়লাদের ভূমিকা ছিল খুব বেশী । বৃটিশরা উভয় বাংলাকে একটি রাষ্ট্র হিসাবে ভাগ করে দেয়ার পক্ষপাতী ছিল। কিন্তু বিড়লাদের বেশীর ভাগ ব্যবসা বাণিজ্য ছিল পশ্চিম বাংলায়, তাই গান্ধীকে দিয়ে বিড়লা পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের অংশ করে নেন আর পূর্ববাংলাকে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করে দিয়ে ভারতকে দাঙ্গা অধ্যুষিত উপমহাদেশে পরিণত করেন। এরকম আরো বহু তথ্যে বইটি ভাস্বর। বইটি পড়ে আমি রীতিমত রোমাঞ্চিত হয়েছি। দেশভাগ বিষয়টা অসম্ভব স্পর্শকাতর একটা বিষয়, এবং এখনো অব্দি অমীমাংসিত; তাই আলোচনার অবকাশ এখনো যথেষ্ট।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
২ comments
রায়হান রশিদ - ১ আগস্ট ২০০৯ (১০:২৬ অপরাহ্ণ)
ধন্যবাদ বইটির সাথে আমাদের পরিচিত করার জন্য। পড়া নেই, তাই নিচের দুটো বিষয় আরেকটু বিস্তারিত জানার জন্য আপনার শরণ নিতে হচ্ছে।
বইটিতে কোন ঐতিহাসিক তথ্যসূত্র দেয়া হয়েছে? যেহেতু বইটি একটি গবেষণা নির্ভর কাজ, তাই ধরে নিচ্ছি সে সব যথারীতি দেয়া হয়েছে। একটু জানাবেন দয়া করে?
বিষয়টা ঠিক স্পষ্ট হল না। বিড়লাদের বেশীর ভাগ ব্যবসা যদি পশ্চিম বঙ্গেই থেকে থাকে তাহলে সব ব্যবসাসহ পূর্ব বঙ্গের সাথে গাঁটছড়া বাঁধতে বাধা ছিল কোথায়?
আর পূর্ববাংলাকে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে দেয়ার কারণে ভাষা-সাংস্কৃতিক-জাতিগত ভিন্নতার কারণে মুসলিমদের জন্য প্রতিষ্ঠিত নতুন পাকিস্তান রাষ্ট্রটিতে জাতিগত (কিংবা ধর্মীয়) দাঙ্গার সম্ভাবনার ব্যাপারটা না হয় বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু তাতে গোটা ভারতবর্ষ কিভাবে দাঙ্গা অধ্যুষিত জনপদে পরিণত হয় সেই যোগাযোগটা ঠিক ধরতে পারছি না।
বিভিন্ন লেখায় প্রায়ই দেখি – ধর্মীয় বিভেদের পুরো দায়টা সবসময়ই ঔপনিবেশিক শাসনামল এবং পরবর্তীতে দেশ ভাগের প্রাক্কালে উচ্চাভিলাষী কিছু ভারতীয় রাজনৈতিক নেতার ঘাড়ে চাপানো হয়। এসব পড়ে মনে হতেই পারে যে গত হাজার বছরে ভারতবর্ষের ইতিহাস সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য এবং সম্প্রীতির ইতিহাস। ব্যাপারটা কি আসলেই তেমন ছিল? নাকি ভারতবর্ষের প্রতিটি ধর্মের উম্মেষ, বিস্তার আর প্রতিষ্ঠার ইতিহাসই আসলে রক্তাক্ত রাজনীতির? ধর্মের বিস্তারকে যদি রাজনৈতিক আধিপত্যের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখি, রক্তপাত কি সে প্রক্রিয়ার একটি অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হওয়ার কথা না?
Dablu - ২২ আগস্ট ২০০৯ (১১:০৪ পূর্বাহ্ণ)
আিম বই েলখেকর সােথ একমত না ।
ইিত,
ডাবলূ