“বৈঠক শেষে কমিটির প্রধান তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘চিনি নিয়ে বিদ্যমান সংকটের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বিএনপি সরকার দায়ী। নিজের দেশে ঘাটতি থাকার পরও তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশবন্ধুকে চিনি রফতানির আদেশ দিয়েছে। এর কারণ খতিয়ে দেখতে হবে।’
শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি চিনি রপ্তানীর অনুমোদন দেয়ায় দায়ী করলেন আগের সরকার গুলোকে।
গতবছর চিনির খুচরা মুল্য ছিল কেজি প্রতি ২৬ টাকা। মিল গেটে মুল্য (ex-factory price) ছিল তার চেয়ে বেশী। যে কারণে সরবরাহকারীরা মিল থেকে চিনি তুলছিল না। চিনিকলগুলো শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছিলনা। অবস্থা এমনই হয়েছিল যে সরবরাহকারী এবং মিল কতৃর্পক্ষের সমঝোতায় সরবরাহকারীরা শ্রমিকদের বেতন দি্য়েছিল কিছু কিছু ক্ষেত্রে।
এরকম অবস্থায় যদি কোন সরকার চিনি রপ্তানীর সুযোগ করে দেয় বা রপ্তানীর সুযোগ বহাল রাখে তা হ’লে তো তা একটা ভাল উদ্যোগই।
পরিবর্তিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সে নীতি বদলানো তো কোন ব্যাপার নয়। বিশেষ করে মাসখানেকেরও আগে থেকে যেখানে সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে যে বিশ্বের চিনি মজুদের পরিমান এবার অনেক কম।
অকারণে অন্যের ওপর দোষ না চাপিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা নেয়াটাই প্রজ্ঞার পরিচয়।
বিবৃতিটা মনে করিয়ে দেয় ‘৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোর ‘৭৪ এর দূর্ভিক্ষের জন্য তৎকালীন সরকারকে দোষারোপ করার প্রবনতাকে।
প্রাসঙ্গিক অন্যত্র:
– সমকাল
– প্রথম আলো
– ডেইলী স্টার
ত্রিশোনকু
After completion of studies, joined government services, retired in 1994, presently actively engaged in business. Blogging for a couple of years in English, started Bangla blog since January last. Interested in current affairs, geopolitics & issues involving national interests. Hobbies : Comparative religion, reading, music, human right viz a viz national security and exotic cooking.
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৮ comments
মনজুরাউল - ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৪:৩৮ পূর্বাহ্ণ)
মুক্তাঙ্গনে আপনাকে স্বাগতম।
তোফায়েল এর কথাটি কিন্তু মিথ্যা নয়!গত দুই সরকারই ভুলটা করেছে। তারা একের পর এক চিনির কাঁচামাল থেকে চিনি তৈরির রিফাইনারি স্থাপন করতে দিয়েছে, কিন্তু কৃষিজ কাঁচামালের যে কারখানাগুলো পথে বসতে চলেছে তাদের কথা আমলে আনেনি। ঠিক সেই আমলে আনার কাজটিই তোফায়েল আগের টার্মে করেছিল বলে তার কাছে ব্যাপারটি বৈসাদৃষ্য ঠেকেছে। সে সময় কিউবা থেকে চিনি আমদানি করলে ২১ টাকা দরে বাজারে দেওয়া যেত। তাতে করে দেশী কলগুলো বন্ধ হয়ে যেত, কারণ তাদের উৎপাদন খরচই ২৩/২৪ টাকা ছিল!
এবার যেখানে বিশ্ববাজারে চিনির আক্রা সেখানে বিশেষ একটি কোম্পানীকে রপ্তানির অনুমতি অবশ্যই অদূরদর্শীতা এবং দুর্নীতি।
তারচেয়েও বড় কথা এতকিছুর পরেও দেশে চিনির কোন ঘাটতি নেই। রোজার মাসে অতিরিক্ত ব্যবহারের সুযোগে ঈমানদার মুসলমানেরা (সিন্ডিকেট) দু’পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। এটা তারা বেশ ঈমানী জোশের সাথেই করেন। এ মাসে যে পণ্যের কোন বাড়তি ব্যবহার নেই তারও দাম বাড়ে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজার-ফাজারের কোন তত্ত্বই ধোপে টেকে না।
যদিও এই বিষয়টি এত অল্প আলোচনায় পরিষ্কার হবে না।
ত্রিশোনকু - ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:৩৩ অপরাহ্ণ)
স্বাগত জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা।
আপনার কথা পুরোপুরি আমলে নিয়েই (মাঝে মাঝে A এমনিতে টিপলেও আ হচ্ছে আবার Shift টিপে করলেও আ হচ্ছে। মনে হচ্ছে কোন bug ঢুকেছে)বলছি,অবস্থা ভিন্নতায় ভিন্ন পদক্ষেপ না নিয়ে আগের সরকারকে দোষারোপ করাটা রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংগ হয়ে গ্যাছে। আর গত সরকারের রপ্তানীর অনুমোদন দেয়া/অনুমোদন বহাল রাখার পেছনের কারন আমি মনে করি চিনির বাজার দর অস্বাভাবিক কমে যাওয়া। কাঠামোগত/নীতিগত পরিবর্তন তাঁরা অবশ্যই আনতে পারতেন কৃষিজ কাঁচামালের কারখানাগুলোকে বাঁচাতে, কিন্তু তার ফল লাভ সময় সাপেক্ষ হওয়ায় ঠিক সে সময়টায় চিনি রপ্তানী করা বন্ধ করা কোন দুর দৃষ্টির পরিচায়ক হত না বলে আমি মনে করি। তাছাড়া তোফায়েল চিনি রপ্তানির বিরুদ্ধেই বলেছেন বেশী।
রায়হান রশিদ - ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৫:১৯ পূর্বাহ্ণ)
@ ত্রিশোনকু,
মুক্তাঙ্গনে স্বাগতম, এবং পোস্টটির জন্য ধন্যবাদ। এই বিষয়টা নিয়ে আগে কখনোই ভাবিনি আসলে পত্রিকায় খবর পড়ার আগ পর্যন্ত। আর মনজুরাউল ভাই যা লিখেছেন তা ভাববার মতো। তবে আমিও তাঁর সাথে একমত – “বিষয়টি এত অল্প আলোচনায় পরিষ্কার হবে না।”
অন্যরা কি ভাবছেন তা জানার আগ্রহ বোধ করছি।
ত্রিশোনকু - ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (১১:৩৯ অপরাহ্ণ)
রায়হান রশিদ,
স্বাগত জানানোর জন্য কৃতজ্ঞতা
“বিষয়টি এত অল্প আলোচনায় পরিষ্কার হবে না।”
আপনার ও মন্জুরের সাথে একমত।
আসলে আমি চিন্তাটা ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করি। অন্য দশজনের সুচিন্তিত মতামতের ওপর আলোচনা জমে ওঠে আর বিষয়টিও পূর্ণতা পায় ধীরে ধীরে।
মোহাম্মদ মুনিম - ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:৪৯ পূর্বাহ্ণ)
তোফায়েল অভিযোগটি করেছেন দেশবন্ধুকে ৬ হাজার টন চিনি রপ্তানীর অনুমোদন নিয়ে। এই পরিমান চিনি দিয়ে একটি ছোট জাহাজও ভরে না। ইউরোপের কোন আমদানীকারকেরই এতো ছোট শিপমেন্ট অর্ডার করার কথা না। গত বছর বিশ্ববাজারে চিনির দর ছিল ২৮ টাকা প্রতি কেজি। দেশে খোলাবাজারে দাম এর কাছাকাছিই ছিল। প্রতি কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা লাভ করার জন্য কেউ এতো হাঙ্গামা করে ইউরোপে চিনি রপ্তানি করে না। তোফায়েলের খোলা বাজারে সেই চিনি বিক্রি আর বাকিটা মজুদ করার অভিযোগটি সত্য বলেই মনে হচ্ছে।
ত্রিশোনকু - ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৯:৫১ অপরাহ্ণ)
আমার লেখাটুকু মনযোগ দিয়ে পড়া, সুচিন্তিত মতামত দেয়া এবং তার ফলশ্রুতিতে আমাকে মগজ ঝড়ে ফেলবার জন্যে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।
___________________________________________
বাংলাদেশে বার্ষিক চিনি উৎপাদন ৭০ থেকে ৭৫ লক্ষ টন(7.0-7.5 Million Ton)। সেখানে ৬ হাজার টন অবশ্যই নস্যি। এ ব্যাপারে আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত।
৬ হাজার টনের চেয়ে বেশী চিনি মনে হয় পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলে।পরিবহন ও সংরক্ষনে তার চেয়েও অনেক বেশী চিনি নষ্ট হয়। তাই এত সামান্য পরিমান চিনি যদি রপ্তানী করার অনুমতি দেয়া হয়েও থাকে তাহলে তার বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়ার কথা নয় বাজারে। এ পরিমান চিনি যদি মজুদ করে বেশী দামে বিক্রিও করা হয় তা হ’লেও বাজারে দামের তারতম্য হবার কথা নয়। সরকার যদি ঘুর্নায়মান মাসিক রপ্তানী বরাদ্দও ৬ হাজার টন দেশবন্ধুকে দিয়ে থাকে তাহলেও এক বছরে মাত্র ৭২ হাজার টন চিনি রপ্তানী হবে। তবে হ্যাঁ, যদি তারা রপ্তানীর নামে এক অনুমতি পত্র দেখিয়ে সারা দেশে ১০ লক্ষ টন চিনি মজুদ করতে পারে তাহলে তাদের পক্ষে দাম বাড়ানো সম্ভব। তবে সেটা পারা দেশ বন্ধুর জন্যে অত্যন্ত দুরহ কাজ। আর পারলেও সে দায়টা রপ্তানী নীতির চেয়ে আইন প্রয়োগের ব্যার্থতার ওপরই বর্তায়।
আইন প্রয়োগের ব্যার্থতার দায় এখন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা তার পূর্ববর্তী সরকারের নয়।
তোফায়েলের।
ওমর কায়সার - ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (৯:৫১ অপরাহ্ণ)
চিনি নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে আসলে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা। এবারে চিনির সংকটটা তৈরি করল তারাই। অবশ্য এতে সরকারও দায় এড়াতে পারে না। চিনি আমদানি হওয়ার পর বন্দর থেকে ছাড়িয়ে এনে এটি মাসের পর মাস গুদামে পরে থাকে। তারপর চলতে থাকে ডিও’র জুয়াখেলা। একটি ডিও ১০/১২ হাত বদল হয়। আর দাম বাড়তে থাকে।
ত্রিশোনকু - ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (২:২২ পূর্বাহ্ণ)
ওমর,
আপনি ঠিকই বলেছেন। আরেকটা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ের অবতারনা করেছেন-ডিওর জুয়া খেলা। গত বিএনপি সরকারের সময় আমার পরিচিত এক বিএনপি ক্যাডার ডিও ব্যাবসা করতো খাদ্য মন্ত্রনালয়ে। সে শাসনামলের প্রথম দিকে শুন্য হাতে নামে। শুধু ডিও বিক্রি করে অনান্য সম্পদ ছাড়াও মাঝারী আকারের পোষাক কারখানার মালিক হয় ৩ বছরের মাথায়।
বাজার অর্থনীতিতে মধ্যসত্ত্বভোগী ছাড়া অর্থনৈতিক কর্মকান্ড অচল। কিন্তু এই মধ্যসত্ত্বভোগীর মুনাফা যখন আকাশচুম্বী হয় তখনই ৩০ টাকার চিনি ৬৫ টাকায় কিনতে হয়। সবার ওপরে মজুতদারীর ব্যাপারটাতো আছেই।
এগুলো নিয়ন্ত্রনের জন্যেই সরকার। আর লাগাম ধরার ব্যর্থতার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।