ব্রাইটনে লেবার পার্টির কনফারেন্স কাঁপিয়ে গেলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক। গাজায় যুদ্ধাপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করার আবেদন করেছিলেন ব্রিটেনের কয়েক আইনজীবী। ১৬ জন প্যালেস্টাইনির পক্ষ থেকে এই আইনজীবীরা গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মামলা করে আবেদন জানিয়েছিলেন, এহুদ বারাকের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবার জন্যে। হা হতোষ্মী, ওই আবেদন নামঞ্জুর করেছে ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত [...]

ব্রাইটনে লেবার পার্টির কনফারেন্স কাঁপিয়ে গেলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক। গাজায় যুদ্ধাপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করার আবেদন করেছিলেন ব্রিটেনের কয়েক আইনজীবী। ১৬ জন প্যালেস্টাইনির পক্ষ থেকে এই আইনজীবীরা গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মামলা করে আবেদন জানিয়েছিলেন, এহুদ বারাকের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবার জন্যে। হা হতোষ্মী, ওই আবেদন নামঞ্জুর করেছে ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আমরা জানতে পারছি, বিচারক নাকি তার রায়ে বলেছেন, একটি দেশের ক্ষমতাসীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে এহুদ বারাক যোগ্যতা রাখেন যে-কোনও মামলা থেকে কূটনৈতিক অব্যাহতি পাওয়ার। আসলে বিচারকের হাতে রায়ের এ তূণ তুলে দিয়েছেন ব্রিটেনে বসবাসরত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত রন প্রোসর, ২৯ সেপ্টেম্বর যিনি খুবই তৎপর ছিলেন ব্রিটিশ ফরেন অফিসে এবং বার বার দাবি করছিলেন, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং পৃথিবীর কোথাও কোনও ক্ষমতাসীন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি কিংবা গ্রেফতার করার একটিও দৃষ্টান্ত নেই। রন প্রোসরের ব্যাখায় অথবা চাপে শেষ পর্যন্ত তুষ্ট হয়েছে ব্রিটেনের ফরেন অফিস। মামলার আবেদন নাকচ হয়ে গেছে। সদম্ভে ব্রাইটনে দু’দিন ব্যাপী লেবার পার্টির সম্মেলনে যোগদান শেষে ইসরাইলে ফিরে গেছেন তিনি। ‘লেবার ফ্রেইন্ডস অব ইসরাইলের’ একজন এই এহুদ বারাক, যার পদধূলিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং আবারও ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরাইলের প্রতি তার এবং তার দল আগের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; ইহদি লবির প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ পেয়েছে এই স্তুতিতে, এলএফআই (লেবার ফ্রেইন্ডস অব ইসরাইল) ব্রিটেনের সবচেয়ে সফল ক্যাম্পেইনিং সংগঠনগুলির অন্যতম। এখানেই শেষ নয়, ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই, চ্যালায় ধরে গামছা’, ওই ‘গামছা’ ধরেছেন ফরেইন অফিস মিনিস্টার ইভান লুইস, এই সজ্জন ব্যক্তিটি বলেছেন, ওই সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী একেবারে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে কথা বলেছেন! অথচ দিনের শুরুতেও ২৯ সেপ্টেম্বর আমাদের জানা ছিল, এহুদ বারাকের এই সফর কূটনৈতিক নয়, ডিপ্লোম্যাটিক ইম্যুনিটি নেই তার এবং তাই তিনি ব্রিটিশ আইনের আওতায় পড়বেন এই সফরকালে। কিন্তু মামলার রায় ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জানানো হয়, তার এ সফরের কূটনৈতিক পরিসর রয়েছে! ব্রিটেনে একটি আইন আছে, যে-আইনের বলে এখানে অন্য কোনও দেশের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগেও যে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার রয়েছে। গাজায় নির্বিচার গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের সাক্ষী ওই ১৬জন প্যালেস্টাইনি নাগরিকের প্রত্যাশা ছিল, এই আইনটির যথাযথ প্রয়োগ ঘটবে এবং…

গাজায় ইসরাইলিদের শিশুহত্যা ২০০৯ একজন শিশু যখন তাকিয়ে তাকিয়ে আরেকটি শিশুর মৃতদেহ দেখতে থাকে, মৃত শিশুর চোখেমুখে বিপণ্ন বিস্ময় নিয়ে বেঁচে থাকার সামান্যতম চিহ্ন খুঁজতে থাকে এবং একইসঙ্গে নিজেও অপেক্ষা করতে থাকে মৃত্যুর জন্যে, তখন এই পৃথিবীর জীবিত পরিণত মানুষ হিসেবে আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার কতটুকু অবশিষ্ট থাকে? [...]

একজন শিশু যখন তাকিয়ে তাকিয়ে আরেকটি শিশুর মৃতদেহ দেখতে থাকে, মৃত শিশুর চোখেমুখে বিপণ্ন বিস্ময় নিয়ে বেঁচে থাকার সামান্যতম চিহ্ন খুঁজতে থাকে এবং একইসঙ্গে নিজেও অপেক্ষা করতে থাকে মৃত্যুর জন্যে, তখন এই পৃথিবীর জীবিত পরিণত মানুষ হিসেবে আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার কতটুকু অবশিষ্ট থাকে? জীবন মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ বটে, কিন্তু সেই জীবনের মূল্য কি এতই বেশি যে শিশুদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু সহ্য করেও আমাদের এই জীবনকে বয়ে বেড়াতে হবে? গত দুই সপ্তাহ ধরে কেবল প্যালেস্টাইনীরা নয়, পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নিয়ে কেউ আক্ষরিকভাবে কেউ মানসিকভাবে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে। প্যালেস্টাইনে এখন যুদ্ধ নয়,- চলছে গণহত্যা এবং এই একতরফা গণহত্যা পরিচালনা করছে ইসরাইল। গত ১৫ দিনে সেখানে ৮২০ জনকে হত্যা হয়েছে, যার মধ্যে তিনশ জনই শিশু আর শ'খানেক নারী। মৃত্যুকে সেখানে সহজলভ্য করে তোলা হয়েছে, বন্ধ সেখানে খাদ্যসরবরাহ। আহত মানুষ, তাদের রক্ত ও আর্তচিৎকারে ভরে উঠেছে হাসপাতালগুলো, কিন্তু চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই। কেননা বছরের পর বছর ধরে ইসরাইল যেভাবে গাজাকে অবরোধ করে রেখেছে তাতে অনেক আগেই হাসপাতালগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে, সেখানে ওষুধের সরবরাহ ওষুধ নেই, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই, ডাক্তাররা কোনওমতে টিকে আছেন জীবন বাজি রেখে, আবার কোনও কোনও হাসপাতালে ডাক্তারও নেই। জিম্বাবুয়েতে যদি এরকম ঘটনা ঘটত, তা হলে ব্রিটেনসহ পশ্চিমা সব মিডিয়া ঝাঁপিয়ে পড়ত, আলোচনার ঝড় উঠত, বিরাট এক মানবিক সংকটকে ঠেকানোর জন্যে তৎপর হয়ে উঠতেন কথিত সভ্য বিবেকমান মানুষেরা। জিম্বাবুয়ের পরিস্থিতিকে আমরা খাটো করে দেখছি না; তারপরও বলতে হয়, প্যালেস্টাইন জিম্বাবুয়ে নয়, তাই ব্রিটেনের নীতিনির্ধারকদের তত মাথাব্যথা নেই। হ্যাঁ, কিছুটা মাথাব্যথা আছে বটে। আর আছে বলেই গত ১০ জানুয়ারি যখন ব্রিটেনের হাইড পার্কে সমবেত হয়েছিলেন প্রতিবাদীরা, প্যালেস্টাইনি পতাকার সমুদ্র হয়ে উঠেছিল স্পিকার্স কর্নার তখন সেই প্রতিবাদীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করেছিলেন ব্রিটেনের সরকার। প্রতিবাদকারীদের মিছিল যখন কেনসিংটন গার্ডেনের দিকে রওনা হয়েছিল, তখন তা যাতে ইসরাইলি দূতাবাসের ধারে কাছে যেতে না পারে, সেজন্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল ব্রিটিশ পুলিশ। তাই প্রতিবাদকারীরাও বাধ্য হয়ে হাতে তুলে নিয়েছিল মুনতাজারের জুতা, সংঘাত শুরু হয়েছিল পুলিশের সঙ্গে। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে এ ঘটনায়, কিন্তু একজন কমান্ডার গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, গ্রেফতারের সংখ্যা ৪০-এ গিয়ে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.