|| কিমিয়া, ডাকিনীবিদ্যা ও হ্যারি পটার || যদিও কেবল-ই কয়েকশ বছর আগে রসায়ন তার আধুনিক রূপে আবির্ভূত হয়েছিল, কিন্তু এটার একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বসূরী ছিল, যা উদ্ভূত হয়েছিল সেই প্রাচীনযুগে। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   কিমিয়া, ডাকিনীবিদ্যা ও হ্যারি পটার যদিও কেবল-ই কয়েকশ বছর আগে রসায়ন তার আধুনিক রূপে আবির্ভূত হয়েছিল, কিন্তু এটার একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বসূরী ছিল, যা উদ্ভূত হয়েছিল সেই প্রাচীনযুগে। প্রাচীন মিশরীয়রা ধাতুর কাজে অত্যন্ত পারদর্শী ছিল এবং গ্রীকরা কখনোই তাদের গোপন পদ্ধতির রহস্যভেদ করতে পারেনি, যদিও অনেকেই সে-চেষ্টা করেছিলেন, আর সম্ভবত তার ফলেই কিমিয়ার সুদীর্ঘ ঐতিহ্যের সৃষ্টি হয়েছিল। এর একটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অপেক্ষাকৃত কম মূল্যের বস্তু থেকে স্বর্ণ তৈরি, যা কিনা, বলাই বাহুল্য, যথেষ্ট লাভের সম্ভাবনাসম্পন্ন একটি প্রকল্প। মৌলগুলোর সঙ্গে অন্যান্য বস্তুর মৌলিক পার্থক্য সম্পর্কে মানুষের মধ্যে তখনো যেহেতু পরিষ্কার কোনো ধারণা গড়ে ওঠেনি – যেটা ঘটেছিল ১৮০০ খৃষ্টাব্দের দিকে – তাই চিন্তাটা এমন কিছু উদ্ভট ছিল না মোটেই। হেলেনিস্টিক সময়ে গ্রীকরাও বিপুল শক্তি ও সময় খরচা করেছিল বিষয়টা নিয়ে, এবং, স্বভাবত-ই তারা তাদের মোক্ষে পৌঁছুতে পারেনি, কিন্তু সে-চেষ্টা করার পথে বিভিন্ন রাসায়নিক বস্তু আর সেগুলোর মধ্যে বিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞানলাভ ঘটে তাদের। অবশ্য, এই বিষয়টি নিয়ে যাঁরা কাজ করেছিলেন তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গে অন্যান্য গ্রীক প্রাকৃতিক বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গীর প্রভেদ ছিল বেশ। তাঁরা মনে করতেন তাঁদের শিল্পটি মুসা বা খিওপ্সের ফেরাউনদের মতো দূর অতীতের প্রাচীন দেবতা বা বিখ্যাত চরিত্রদের দ্বারা অনুপ্রাণিত, এবং তাঁরা তাঁদের কাজে জ্যোতির্বিদ্যা, সাধারণ্যে প্রচলিত কুসংস্কার এবং আরো বিচিত্র সব উৎস থেকে পাওয়া ধ্যান-ধারণা অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। তার মানে, গোড়া থেকেই কিমিয়া ছিল বরং বিজ্ঞানের এক অশিষ্ট জ্ঞাতি। রোমকরা কিন্তু কিমিয়ার এই ঐতিহ্যর পেছনে ছোটেনি খুব একটা, তবে এরিস্টটলের দর্শন যেমন আরবদের মাধ্যমে ইউরোপে পৌঁছেছিল, কিমিয়া সংক্রান্ত ধারণাগুলো-ও একই পথ ধরে মধ্যযুগের ইউরোপে পৌঁছেছিল। ১২০০ খৃষ্টাব্দের দিকে কিমিয়ার ওপর লাতিনে রচিত বেশ কিছু প্রবন্ধ বের হয়, বিখ্যাত সব আরব বিশেষজ্ঞদের তত্ত্ব আর নীতি ইত্যাদি নিয়ে। সেই থেকে কিমিয়া হয়ে দাঁড়ায় ইউরোপের বুদ্ধিবৃত্তিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। টমাস একুইনাস, রজার বেকন আর আইযাক নিউটনের মতো বিশাল মাপের ব্যক্তিত্বসহ অসংখ্য বিখ্যাত মানুষ এর পেছনে সময় ব্যয় করেছেন, যদিও তাতে কাজের কাজ প্রায় কিছুই হয়নি। মূল উদ্দেশ্যটা ছিল স্বর্ণ…

|| লিনীয়াস ও লাতিন || উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণীবিদ্যায় প্রতিটি প্রজাতিরই লাতিন নাম রয়েছে। আজ আমরা ওপরের ওরকম সাদামাটা ইংরেজি টেক্সটে নামগুলো ব্যবহার করি না বললেই চলে, কিন্তু উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আর জীববিজ্ঞানীরা যে কোনো পরিস্থিতিতেই পরস্পরের সঙ্গে আলাপ বা যোগাযোগ করুন না কেন তাঁরা এই প্রজাতিগুলোর কথা বলতে গেলে সেগুলোর লাতিন নামই উল্লেখ করেন। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   লিনীয়াস ও লাতিন বনের মধ্যে ‘Anemóne nemorósa’ ভরা একটা ফাঁকা জায়গা দেখে আপনার হৃদয় উদ্বেলিত হয়ে উঠতে পারে। একটি ‘Motacilla alba’ দেখে আপনি হঠাৎ কেঁপে উঠতে পারেন, কিন্তু একেবারে আচমকা যদি আপনার সামনে একটা ‘Ursus arctos’ এসে উদয় হয়, সেক্ষেত্রে আপনার মানে মানে সরে পড়াই বোধ হয় ভালো হবে। এগুলো হচ্ছে, যথাক্রমে, বায়ু-পরাগী এক ধরনের বিশেষ ফুল, ল্যাজ নাচানে খঞ্জনা পাখি আর বাদামি ভল্লুকের লাতিন নাম। উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণীবিদ্যায় প্রতিটি প্রজাতিরই লাতিন নাম রয়েছে। আজ আমরা ওপরের ওরকম সাদামাটা ইংরেজি টেক্সটে নামগুলো ব্যবহার করি না বললেই চলে, কিন্তু উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আর জীববিজ্ঞানীরা যে কোনো পরিস্থিতিতেই পরস্পরের সঙ্গে আলাপ বা যোগাযোগ করুন না কেন তাঁরা এই প্রজাতিগুলোর কথা বলতে গেলে সেগুলোর লাতিন নামই উল্লেখ করেন। নামটাই যে কেবল লাতিন, তা নয়; প্রতিটি প্রজাতির আনুষ্ঠানিক বর্ণনাও হতে হবে লাতিনে। কেউ কোনো নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করলে তাঁকে এরকম একটা বর্ণনা লিখে প্রকাশ করতে হবে। এসব বিজ্ঞানে লাতিনের এখনো একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারিক উপযোগিতা রয়েছে। এই পরিস্থিতির ঐতিহাসিক ব্যাখ্যার সঙ্গে চিকিৎসাশাস্ত্রের ঐতিহ্যের একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে, যা আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। বহু বছর ধরে ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এবং স্বারস্বত জগতের লোকজনের মধ্যে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সেরকম গুরুত্ব পায়নি। প্রাণী ও উদ্ভিদ নিয়ে চিকিৎসকেরা গবেষণা করতেন আসলে চিকিৎসাশাস্ত্র ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে সেগুলোর সম্ভাব্য প্রয়োগের জন্য। কাজেই লাতিন ব্যবহারের ঐতিহ্য এসব বিজ্ঞানে ততোটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যতোটা সেটা চিকিৎসাশাস্ত্রে শক্তিশালী হয়েছিল। সে যাই হোক, অষ্টাদশ শতকে, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে এবং চিকিৎসাশাস্ত্র নির্ভরতা কাটিয়ে উঠে আত্মপরিচয় খুঁজে পায়। এক্ষেত্রে যাঁরা পথিকৃৎ ছিলেন তাঁদের অন্যতম হচ্ছেন কার্ল ভন লিনে (Carl von Linné) নামে সুইডেনের এক অধিবাসী, যাঁর নাম গোটা বিশ্বে সাধারণত, এবং অত্যন্ত যথার্থভাবেই, সেটার লাতিন রূপ ‘লিনীয়াস’ (Linnaeus) হিসেবে সুপরিচিত, অন্তত তাঁদের কাছে যাঁরা এই ক্ষেত্রটির ব্যাপারে আগ্রহী। লিনীয়াস ছিলেন দক্ষিণ সুইডেনের স্মালান্ড-এর এক যাজকপুত্র। বিদেশে পা বাড়াবার আগে তিনি লুন্ড এবং উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৭৩৫ খৃষ্টাব্দে তিনি হল্যান্ড যান, এবং…

|| রেনেসাঁ || প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে ইউরোপের ইতিহাসকে সাধারণত তিনটে কালপর্বের পরম্পরা হিসেবে দেখা হয়: প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ, আর আধুনিক যুগ। রেনেসাঁ নামে অভিহিত একটি বিষয় দিয়ে আধুনিক যুগের সূচনা হয়। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   রেনেসাঁ প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে ইউরোপের ইতিহাসকে সাধারণত তিনটে কালপর্বের পরম্পরা হিসেবে দেখা হয়: প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ, আর আধুনিক যুগ। রেনেসাঁ নামে অভিহিত একটি বিষয় দিয়ে আধুনিক যুগের সূচনা হয়। একথার সুস্পষ্ট মর্মার্থ হচ্ছে প্রাচীন যুগ ছিল উন্নত সভ্যতার একটি সময়, যেখানে মধ্যযুগ ছিল পতনের বা অবক্ষয়ের একটি কাল যার পরিসমাপ্তি ঘটে শেষ অব্দি রেনেসাঁ অর্থাৎ ধ্রুপদী সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের পুনর্জন্মের মাধ্যমে। এতে অবাক হবার কিছু নেই যে এই ধারণাটি আবিষ্কার এবং সেটার প্রসার ঘটিয়েছিলেন রেনেসাঁ আন্দোলনের পুরোধা প্রতিনিধিবৃন্দ, যাঁরা ছিলেন চতুর্দশ, পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতকের ইতালীয় লেখক শিল্পী এবং অন্যান্য বুদ্ধিজীবী। অবশ্যই, এই কালপর্বে ইতালির সংস্কৃতির পরিমণ্ডলে যে অসাধারণ সব সাফল্য অর্জিত হয়েছিল তাতে কোনো সন্দেহ নাই: সাহিত্যাঙ্গনে পেত্রার্ক ও বোক্কাচিও, এবং চিত্রকলার ক্ষেত্রে লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ও রাফায়েলের নাম উল্লেখ-ই বোধ হয় যথেষ্ট হবে। এই মানুষগুলো ধ্রুপদী প্রাচীনযুগ সম্পর্কে তাঁদের উল্লেখযোগ্য প্রবল আগ্রহের কারণেই এতো বিখ্যাত বা অসাধারণ বা মহৎ হয়ে উঠেছিলেন কিনা সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। এবং সে-প্রশ্নটা আমরা এখানে অনায়াসে একপাশে সরিয়ে রাখতে পারি। এ-সময়ে লাতিন কতটা ব্যবহৃত হয়েছিল সে-প্রসঙ্গে এ-কথা বলতে হয় যে রেনেসাঁ এক্ষেত্রে কোনো বাঁক ফেরানো মুহূর্তের সৃষ্টি করেনি। আমরা দেখেছি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ত্রয়োদশ শতক থেকে একেবারে বিংশ শতক পর্যন্ত সংঘটিত এই পরিবর্তনগুলো ছিল ধীর, দীর্ঘ মেয়াদী এবং লাতিনের জন্য ক্ষতিকারক। যদিও রেনেসাঁর সঙ্গে সঙ্গে যা এলো তা হচ্ছে শুদ্ধতার প্রতি একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি। প্রাচীন যুগের পর কেটে যাওয়া বহু শতাব্দীতে লাতিন শব্দ ভাণ্ডার যথেষ্টই সম্প্রসারিত হয়েছিল, এবং গড়ে উঠেছিল ভাষা ব্যবহারের নতুন স্বভাব ও শৈলী। রেনেসাঁ সময়ের অগ্রগণ্য অসংখ্য ব্যক্তিত্বই বিদ্বান মানবতাবাদী ছিলেন; ধ্রুপদী প্রাচীন যুগের সাহিত্যিক টেক্সটগুলো যে সেসবের বিষয়বস্তু ও অনুকরণযোগ্য ভাষা এই দুইয়ের কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সে-বিষয়ে নিঃসন্দেহ ছিলেন তাঁরা। কাজেই অ-ধ্রুপদী শব্দাবলী এবং অভিব্যক্তি অপসারণ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন তাঁরা; মোটের ওপর চেষ্টা করেছিলেন তাঁদের সময়ের লিখিত এবং বাচিক বা কথ্য লাতিনের মানোন্নয়ন করবার। সেটা যে একেবারে নতুন ব্যাপার ছিল তা কিন্তু নয়; আমরা…

|| বাচন ও বানান (শেষ অংশ) || ব্যঞ্জনবর্ণের ভেতর কিছু অভ্যাস চলে এসেছিল ফরাসির মাধ্যমে লাতিন শেখানোর সময়, যেমন ‘Iulius’ আর ‘Ianuarius’ শব্দ দুটোর আদ্যক্ষর ‘i’-এর উচ্চারণে আর ‘genius’ ও ‘gens’-এর ‘g’ এর উচ্চারণে [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   বাচন ও বানান (শেষ অংশ)   ব্যঞ্জনবর্ণের ভেতর কিছু অভ্যাস চলে এসেছিল ফরাসির মাধ্যমে লাতিন শেখানোর সময়, যেমন ‘Iulius’ আর ‘Ianuarius’ শব্দ দুটোর আদ্যক্ষর ‘i’-এর উচ্চারণে আর ‘genius’  ও ‘gens’-এর ‘g’ এর উচ্চারণে, সেই ধ্বনিটির সঙ্গে (যাকে টেকনিকালি এফ্রিকেট বলা হয়) যেটাকে আমরা এখোনো পাই    ‘January’ আর ‘gentle’-এ। সেই সঙ্গে ফরাসি থেকে এসেছে  [s] হিসেবে ‘c’-এর ‘মৃদু’ উচ্চারণ, ‘censeo’ আর ‘cella’ শব্দ দুটোয়। যতক্ষণ পর্যন্ত ইংরেজিতে একটি অনুরণিত (trilled) ‘r’-ধ্বনি ছিল (যে ধরনের ধ্বনি এখনো স্কটিশ ভাষায় এবং কিছু কিছু আঞ্চলিক উচ্চারণভঙ্গি বা টান —accent-এ বিদ্যমান), ততদিন একটি ব্যঞ্জনবর্ণের আগে বা কোনো শব্দের শেষে লাতিন ‘r’-এর কাছাকাছি কিছু একটা উচ্চারণ করবার ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়নি, যেমন ‘cornu’ বা ‘শিঙ’-এ, বা, ‘pater’-এ। যাই হোক, দক্ষিণী তথা প্রমিত ইংরেজি উচ্চারণে এই ধ্বনিটির বিলোপের পর ‘parcis’ (you spare) ও ‘pacis’ (of peace)-এর মতো জোড়া শব্দের মধ্যে তফাত ধরতে বা ‘cerno’ (I see) ও ‘virtus’ (virtue)-র মতো শব্দে সঠিক স্বরাঘাত সম্পন্ন স্বরবর্ণ উচ্চারণ করতে অসুবিধের মুখোমুখি হয় ইংরেজিভাষীরা। একইভাবে, শব্দের শেষে (যেমন ‘feel’ আর ‘fall’-এ), বা ব্যঞ্জনবর্ণের আগে (যেমন ‘felt’ ও ‘film’-এ) ইংরেজি ‘l’ (এল)-এর যেমন একটি ‘ডার্ক’ বৈশিষ্ট্য রয়েছে (কিছু ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের সময় জিভের পেছনদিকটা টাকরা বা তালুর দিকে উঠে আসা, যেমন ‘l’-এর বেলায়), ‘alter’ (other — অপর, অন্য) ও ‘mel’ (honey — মধু)-এর মতো শব্দের সনাতন উচ্চারণ একই রকমভাবে ভুলের দিকে এগোয়। বেশ কয়েক বছর ধরে নানান চেষ্টা চলে সংস্কার সাধনের। ষোড়শ শতকে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধ্রুপদী উচ্চারণের অভ্যাসগুলোতে ফিরে যাওয়ার পক্ষে বেশ জোরালো তদবির চলেছিল, তার পুরোধা ছিলেন মহান ওলন্দাজ ক্লাসিকাল পণ্ডিত ইরাযমাস, যিনি ১৫২৮ খৃষ্টাব্দে প্রকাশিত তাঁর সংলাপমূলক রচনা ‘De recta Latini Graecique sermonis pronuntiatione’ (‘লাতিন ও গ্রীক ভাষার সঠিক উচ্চারণ প্রসঙ্গে’) এই প্রচার চালিয়েছিলেন। অবশ্য নানান যুক্তিতে সেটির বিরোধিতা করা হয়, এবং তার মধ্যে অত্যন্ত জোরালো ছিল এটি যে তাতে করে অক্সফোর্ড ও কেম্ব্রিজে লাতিন উচ্চারণ ভিন্ন হয়ে পড়বে! প্রায় চার শতক পরে ফিরে…

|| বাচন ও বানান (প্রথম অংশ) || লাতিন যাদের মাতৃভাষা ছিল না তাদেরকে শব্দের বানান আর লেখা শেখার পাশাপাশি সেগুলো উচ্চারণ করতেও শিখতে হতো। কিন্তু সেগুলোর উচ্চারণ কেমন হওয়ার কথা সেকথা কিভাবে জানতো তারা? [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   বাচন ও বানান (প্রথম অংশ) লাতিন যাদের মাতৃভাষা ছিল না তাদেরকে শব্দের বানান আর লেখা শেখার পাশাপাশি সেগুলো উচ্চারণ করতেও শিখতে হতো। কিন্তু সেগুলোর উচ্চারণ কেমন হওয়ার কথা সেকথা কিভাবে জানতো তারা? লাতিন যেহেতু তখন আর কারোই মাতৃভাষা ছিল না ফলে অনুকরণ করা যায় এমন কেউ ছিল না। সত্যি বলতে কি, প্রাচীনকালের শেষ দিকেই এই সমস্যাটি দেখা দিয়েছিল। চতুর্থ শতকের মধ্যেই লাতিন উচ্চারণ যথেষ্ট বদলে গিয়েছিল যীশুর জন্মের সময়ের কাছাকাছি সময়ের তুলনায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ভাষা-ই বদলায়, লাতিন-ও তার ব্যতিক্রম ছিল না। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা লক্ষ করেছিলেন যে ধ্রুপদী টেক্সটগুলোতে শব্দের বানান আর সেগুলোকে তাঁরা ও তাঁদের শিক্ষার্থীরা যেভাবে উচ্চারণ করেন তার মধ্যে একটা বেশ ফারাক আছে, কাজেই দোনাতাস আর তাঁর সমসাময়িকদের মধ্যে ইতিমধ্যেই উচ্চারণের নিয়ম কানুন নিয়ে একটা বিতর্ক ছিল। সম্রাট কনস্তান্তিন যখন কনস্তান্তিনোপলকে সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিলেন তখন সমস্যাটা আরো বড় হয়ে উঠল। পূর্বাঞ্চলীয় নতুন রাজধানীতে রাজপ্রশাসন চালাবার জন্য লোক নিয়োগের জরুরি প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল, আর কাজটা চালানো হতো লাতিনে। অথচ সাম্রাজ্যের সেই অংশের মানুষজনের মাতৃভাষা ছিল গ্রীক বা অন্য কিছু, এবং তাদের লাতিন ভাষায় একটা বিশদ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন পড়ত। আর ঠিক এই কারণেই প্রিসিয়ান তাঁর ব্যাকরণ বই সম্পাদনা করেছিলেন। সেটা ছিল প্রাচীনকালের সমস্ত ব্যাকরণের মধ্যে সবচাইতে সারগর্ভ, এবং তাতে ভাষাটির উচ্চারণের ওপর অনেকখানি জায়গা খরচ করা হয়েছে। তো, মঠভিত্তিক বিদ্যালয়গুলোতে — যেগুলোর সঙ্গে সাবেক রোমক জগতের প্রায় কোনো সম্পর্ক-ই ছিল না — লাতিন একটি বিদেশী ভাষায় পরিণত হতে পরিস্থিতি আরো বেশি জটিল হয়ে পড়ল, যেমনটি ঘটেছিল আয়ারল্যান্ডে, আর পরবর্তী কালে জার্মানী ও স্ক্যান্ডিনেভিয়াতে। কোথাও কোথাও উচ্চারণ নিশ্চয়ই খুব খারাপ ছিল। সৌভাগ্যক্রমে, বেশিরভাগ লাতিন শব্দের উচ্চারণ কেমন হবে তা সেগুলোর বানান থেকে বের করা যায়। বর্ণমালাটা ঠিক এই ভাষার জন্যেই আবিষ্কৃত হয়েছিল, এবং লাতিনের বেশিরভাগ ধ্বনি প্রায় সব ইউরোপীয় ভাষাতেই পাওয়া যাবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘bona’ — good, ‘mitte’ — send, ‘lectus’ ‘bed’, এই শব্দগুলোতে অক্ষরগুলো কিভাবে উচ্চারিত হবে…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.