|| লিনীয়াস ও লাতিন || উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণীবিদ্যায় প্রতিটি প্রজাতিরই লাতিন নাম রয়েছে। আজ আমরা ওপরের ওরকম সাদামাটা ইংরেজি টেক্সটে নামগুলো ব্যবহার করি না বললেই চলে, কিন্তু উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আর জীববিজ্ঞানীরা যে কোনো পরিস্থিতিতেই পরস্পরের সঙ্গে আলাপ বা যোগাযোগ করুন না কেন তাঁরা এই প্রজাতিগুলোর কথা বলতে গেলে সেগুলোর লাতিন নামই উল্লেখ করেন। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   লিনীয়াস ও লাতিন বনের মধ্যে ‘Anemóne nemorósa’ ভরা একটা ফাঁকা জায়গা দেখে আপনার হৃদয় উদ্বেলিত হয়ে উঠতে পারে। একটি ‘Motacilla alba’ দেখে আপনি হঠাৎ কেঁপে উঠতে পারেন, কিন্তু একেবারে আচমকা যদি আপনার সামনে একটা ‘Ursus arctos’ এসে উদয় হয়, সেক্ষেত্রে আপনার মানে মানে সরে পড়াই বোধ হয় ভালো হবে। এগুলো হচ্ছে, যথাক্রমে, বায়ু-পরাগী এক ধরনের বিশেষ ফুল, ল্যাজ নাচানে খঞ্জনা পাখি আর বাদামি ভল্লুকের লাতিন নাম। উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণীবিদ্যায় প্রতিটি প্রজাতিরই লাতিন নাম রয়েছে। আজ আমরা ওপরের ওরকম সাদামাটা ইংরেজি টেক্সটে নামগুলো ব্যবহার করি না বললেই চলে, কিন্তু উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আর জীববিজ্ঞানীরা যে কোনো পরিস্থিতিতেই পরস্পরের সঙ্গে আলাপ বা যোগাযোগ করুন না কেন তাঁরা এই প্রজাতিগুলোর কথা বলতে গেলে সেগুলোর লাতিন নামই উল্লেখ করেন। নামটাই যে কেবল লাতিন, তা নয়; প্রতিটি প্রজাতির আনুষ্ঠানিক বর্ণনাও হতে হবে লাতিনে। কেউ কোনো নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করলে তাঁকে এরকম একটা বর্ণনা লিখে প্রকাশ করতে হবে। এসব বিজ্ঞানে লাতিনের এখনো একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারিক উপযোগিতা রয়েছে। এই পরিস্থিতির ঐতিহাসিক ব্যাখ্যার সঙ্গে চিকিৎসাশাস্ত্রের ঐতিহ্যের একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে, যা আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। বহু বছর ধরে ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এবং স্বারস্বত জগতের লোকজনের মধ্যে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সেরকম গুরুত্ব পায়নি। প্রাণী ও উদ্ভিদ নিয়ে চিকিৎসকেরা গবেষণা করতেন আসলে চিকিৎসাশাস্ত্র ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে সেগুলোর সম্ভাব্য প্রয়োগের জন্য। কাজেই লাতিন ব্যবহারের ঐতিহ্য এসব বিজ্ঞানে ততোটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যতোটা সেটা চিকিৎসাশাস্ত্রে শক্তিশালী হয়েছিল। সে যাই হোক, অষ্টাদশ শতকে, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে এবং চিকিৎসাশাস্ত্র নির্ভরতা কাটিয়ে উঠে আত্মপরিচয় খুঁজে পায়। এক্ষেত্রে যাঁরা পথিকৃৎ ছিলেন তাঁদের অন্যতম হচ্ছেন কার্ল ভন লিনে (Carl von Linné) নামে সুইডেনের এক অধিবাসী, যাঁর নাম গোটা বিশ্বে সাধারণত, এবং অত্যন্ত যথার্থভাবেই, সেটার লাতিন রূপ ‘লিনীয়াস’ (Linnaeus) হিসেবে সুপরিচিত, অন্তত তাঁদের কাছে যাঁরা এই ক্ষেত্রটির ব্যাপারে আগ্রহী। লিনীয়াস ছিলেন দক্ষিণ সুইডেনের স্মালান্ড-এর এক যাজকপুত্র। বিদেশে পা বাড়াবার আগে তিনি লুন্ড এবং উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৭৩৫ খৃষ্টাব্দে তিনি হল্যান্ড যান, এবং…

|| চিকিৎসকবৃন্দ ও তাঁদের ভাষা || বিশেষ করে চিকিৎসকেরা যে গোঁয়ারের মতো লাতিনেই আটকে রইলেন এতোদিন, তার একটা সরল ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা আছে। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   চিকিৎসকবৃন্দ ও তাঁদের ভাষা আজ অব্দি কতবার আপনাকে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে এ-কথা শুনতে হয়েছে যে, ‘ও কিছু না, সামান্য ভাইরাস। দু’চারদিনের মধ্যে না সারলে একবার এসে দেখিয়ে যাবেন আমাকে’, অথবা, কপাল মন্দ হলে চিকিৎসক হয়ত বলেছেন: ‘আপনার এপেন্ডিসাইটিয হয়েছে, খুব দ্রুত অপারেশন করা দরকার।’ অথবা আপনার চিকিৎসক হয়ত কোনো ধরনের নিউরালজিয়া-র নিদান দিয়েছেন, এবং এনালজেসিকের শরণ নিতে বলেছেন? এসব কথায় এবং এরকম শত শত মন্তব্যে – যা কিনা প্রতিদিন হাসপাতালে এবং শল্যচিকিৎসায় শোনা যায় – ধ্রুপদী ভাষাগুলো থেকে নেয়া হাজারো শব্দ নিহিত রয়েছে। ‘Virus’ এসেছে লাতিন থেকে, যেখানে সেটির মানে কোনো প্রাণী যেমন সাপ বা কাঁকড়াবিছের বিষ, বা কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদের নিঃসরণ যার ভেতর কোনো জাদুর বা ভেষজ গুণ রয়েছে বলে মনে করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, প্লিনি বলছেন নেকড়ের শরীর থেকে একটি ‘virus amatorium’ বা ‘প্রেমসুধা’ নিঃসরিত হয়। ‘Appendix’-এর মানে স্রেফ ‘appendage’ বা ‘বাড়তি জিনিস’ বা ‘উপাঙ্গ’, এবং সেটা ক্রিয়া ‘appendo’ বা ‘ঝুলে থাকা’-র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হলেও চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে এখন সেটা বিশেষ করে সেই মূল্যহীন অঙ্গটিকে বোঝায় যেটায় মাঝে মাঝে প্রদাহ হতে পারে, যেটা প্রবল যন্ত্রণার সৃষ্টি করতে পারে শরীরে এবং শল্যচিকিৎসার সাহায্যে সেটাকে অপসারণ করতে হতে পারে। ‘Neuralgia’, যার মানে ‘nerve pain’ বা, স্নায়ুর যন্ত্রণা, সেটা এসেছে গ্রীক দুই শব্দ ‘neuron’ বা ‘স্নায়ু’ এবং ‘algia’ মানে ‘যন্ত্রণা’ থেকে। আর, গ্রীক ভাষায় উপসর্গ a-/an- নেতিবাচক অর্থ বহন করে, যেমন ‘amoral’; কাজেই একটি ‘analgesic’ তাই যা যন্ত্রণা দূর করে। আসলে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রায় সমস্ত সমস্ত শব্দই এসেছে লাতিন বা গ্রীক থেকে। অবশ্য বিজ্ঞানের আরো অনেক পরিসরের ক্ষেত্রেও কথাটা সত্যি হলেও আমরা দেখবো যে চিকিৎসাশাস্ত্রের বিষয়টা বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে, কারণ সেখানে অগুনতি অপরিবর্তিত লাতিন শব্দ রয়েছে, যেমন ‘appendix’ ও ‘virus’। এই কিছুদিন আগেও ‘deménetia senilis’ বা ‘বার্ধক্যজনিত স্মৃতিভ্রংশ’ জাতীয় কথা ব্যবহার ক’রে রোগের নিদান লাতিনে লেখা খুব-ই সাধারণ একটি ব্যাপার ছিল চিকিৎসকদের জন্য। লাতিনে ‘senilis’ হচ্ছে স্রেফ বার্ধক্যর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি বিশেষণ, যা কিনা ইতিবাচক বা…

|| গ্রন্থাবলী ও লিপিকরবৃন্দ (শেষার্ধ) || তারপরেও, প্রায় এক সহস্রাব্দ ধরে, প্রাচীন যুগের সংস্কৃতি প্রচার করার দায়িত্ব প্রায় নিরঙ্কুশভাবে ছিল বিভিন্ন মঠগুলোর স্ক্রিপ্টোরিয়াম বা লেখার ঘরগুলোর ওপর। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   গ্রন্থাবলী ও লিপিকরবৃন্দ (শেষার্ধ) তারপরেও, প্রায় এক সহস্রাব্দ ধরে, প্রাচীন যুগের সংস্কৃতি প্রচার করার দায়িত্ব প্রায় নিরঙ্কুশভাবে ছিল বিভিন্ন মঠগুলোর স্ক্রিপ্টোরিয়াম বা লেখার ঘরগুলোর ওপর। সেখানে যেসব পাণ্ডুলিপি তৈরি হতো সেগুলো সহজপাঠ্য ছিল না সবসময়। সমস্যাটা যে হাতের লেখারই ছিল সাধারণত তা নয়, যদিও অবশ্যই লিপিকর, কাল, এবং স্থানভেদে লিখন শৈলীর তফাত হতো প্রায়ই। হস্তরেখা পরীক্ষা করে একটি পাণ্ডুলিপি তৈরির স্থান ও কাল সম্পর্কে মূল্যবান সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিদ্যাটিকে বলা হয় ‘paleography’; লাতিন টেক্সট নিয়ে যাঁরা ঐকান্তিকভাবে কাজ করেন তাঁদের প্রত্যেকের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এমনকি যখন সেগুলো লিপিকরের নিজস্ব ধরন বা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, তখনো বেশিরভাগ হস্তরেখাশৈলী যথেষ্ট পরিষ্কার ও সুসামঞ্জস্যপূর্ণ; কাজেই কেউ একবার হরফগুলোর আকৃতি-প্রকৃতি চিনে ফেলতে পারলে কোনো নির্দিষ্ট টেক্সটের অক্ষরগুলো বুঝতে পারা কঠিন কোনো বিষয় নয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, সমস্যার এখানেই শেষ নয়। একটা বড়সড় অসুবিধার জায়গা হচ্ছে — বিশেষ করে এ-কাজে যারা নতুন তাদের জন্য — শব্দ সংক্ষেপগুলো। চর্মপট মহার্ঘ হওয়ায়, যতটুকু জায়গা পাওয়া যেতো তার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করাটা জরুরি ছিল। তাছাড়া, লিপিকরেরা প্রয়োজনাতিরিক্ত কোনো অক্ষর লেখার ব্যাপার তেমন উৎসাহী ছিলেন না, কাজেই শব্দসংক্ষেপের বেশ কিছু উপায় ছিল তাদের। তার মধ্যে সবচাইতে প্রচলিত ছিল একটা হরফের ওপর একটা রেখা টেনে দেয়া, যে রেখাটা সেই হরফের পর একটা ‘m’ বোঝাত; কাজেই ‘uerbum’ না লিখে ‘uerbū’ লিখতেন তাঁরা। এই একটা ব্যাপার হয়ত কঠিন কিছু না। কিন্তু মুশকিল হলো দুর্ভাগ্যক্রমে রেখাটা অন্য কয়েকটা জিনিস-ও বোঝাতে পারতো, যেমন, ‘r’ রয়েছে এমন কোনো সিলেবল-এর লোপ। কাজেই ‘uerbum’ -এর স্থলে আপনি 'ūbū' লিখতে পারতেন, যা অনভিজ্ঞ পাঠককে একটু মুশকিলে ফেলে দেয়। আর এটা তো কেবল শুরু; এছাড়াও ছিল আর কয়েক ডযন শব্দসংক্ষেপ, এবং সেগুলো ব্যবহারের হাজারটা উপায়। আরেকটা সমস্যা যতি বা বিরামচিহ্ন। অনেক পাণ্ডুলিপিতেই বিরামচিহ্নের কোনো বালাই নেই বললেই চলে, বা যখন তাদের দেখা মেলে তখন সেগুলো আমরা আজ যেসব ব্যবহার করি তার মতো নয়, এবং ওসব ব্যবহারের রীতিনীতিগুলো আমাদেরগুলোর চাইতে একেবারেই ভিন্ন রকম। পাঠককে…

|| বিদ্যালয়ে লাতিন (প্রথম অংশ) || আমরা দেখেছি, রোমক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ভালো করে কথা বলতে শেখানো, যাতে করে তারা আইনজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ হতে পারে। গির্জা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করল তখন তার অন্য অগ্রাধিকার ছিল। ফলে, আশ্রমিক বিদ্যালয়গুলো ছিল রোম সাম্রাজ্যের বিদ্যালয়গুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   বিদ্যালয়ে লাতিন (প্রথম অংশ) আমরা দেখেছি, রোমক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ভালো করে কথা বলতে শেখানো, যাতে করে তারা আইনজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদ হতে পারে। গির্জা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করল তখন তার অন্য অগ্রাধিকার ছিল। ফলে, আশ্রমিক বিদ্যালয়গুলো ছিল রোম সাম্রাজ্যের বিদ্যালয়গুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন। নতুন শিক্ষাব্যবস্থা তৈরির দায়িত্ব যাঁদের ওপর ছিল তাঁদের একজন ছিলেন ক্যাসিওদোরাস। ষষ্ঠ শতকে ইতালিতে বাস করতেন তিনি, জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় উচ্চ পদস্থ সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেসময় অস্ট্রগথরা ইতালি শাসন করত এবং দক্ষিণ ইতালির একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য ক্যাসিওদোরাস অস্ত্রগথিক রাজদরবারে জীবিকার ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন। অনেক কিছুর মধ্যে সরকারী নিবন্ধকের কার্যালয়ে বা চ্যান্সেলরিতে দায়িত্বও ছিল তাঁর ওপর। দুর্বোধ্য ও লোক দেখানো জাঁকালো লাতিনে বেশ কিছু চিঠিপত্র লিখেছিলেন তিনি। ষাট বছর বয়েসে রাজদরবার থেকে বিদায় নেন তিনি, এবং পারিবারিক ভূসম্পত্তিতে তিনি যে আশ্রম প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন সেখানে এসে ঠাঁই নেন। সেখানে, এক খৃষ্টীয় জীবন যাপনে ব্রতী হন, এবং বেশ কয়েক দশক ধরে লেখেন বেশ কিছু খৃষ্ট ধর্ম বিষয়ক রচনা। নব্বইয়ের-ও বেশি বছর বয়েসে মারা যান তিনি। তো, সেসব রচনার একটি হলো শিক্ষার্থী সন্ন্যাসীদের সাহায্য করার জন্য একটা হ্যান্ডবুক। পরবর্তী বেশ কয়েক শতাব্দী ধরে শিক্ষা কোন পথে এগোবে তার একটা পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যায় এই বইটা থেকে। হ্যান্ডবুকটা দুটো অংশে বিভক্ত; প্রথম অংশের পুরোটাই ব্যয় করা হয়েছে বাইবেল কিভাবে পড়তে হবে আর খৃষ্টীয় ফাদারদের রচনাকর্ম, এই নিয়ে। বিদ্যালয়গুলো সেই ধারা বজায় রাখল। প্রধান উদ্দেশ্য ছিল একটি খৃষ্টীয় শিক্ষা প্রদান করা, আর সেই শিক্ষার প্রাণকেন্দ্রে ছিল লাতিন ভাষায় বাইবেল পাঠ করতে পারার প্রয়োজনীয়তা। মধ্যযুগের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই একটি সাধারণ পদ্ধতি ছিল ‘Book of Psalms’-এর প্রথম স্তোত্রটির মাধ্যমে বাইবেলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয়ের সূত্রপাত করা: Beatus vir, qui non ábiit in consilio impiorum et in via peccatorum non stetit et in cáthedra derisorum non sedit. নিচে দেয়া হলো ইংরেজি বাইবেলের অনুমোদিত ‘কিং জেমস’ সংস্করণের খুবই আক্ষরিক অনুবাদ। Blessed is the man…

|| ধর্মপ্রচারকবৃন্দ, লাতিন ও বিদেশী ভাষাসমূহ || খৃষ্টধর্ম প্রচার করার জন্য প্যাট্রিশাস নামের এক সন্ন্যাসী ৪৩২ খৃষ্টাব্দে ফ্রান্সের Lérins মঠ থেকে আয়ারল্যান্ড যাত্রা করেন। যতোটা আশা করা গিয়েছিল তার চাইতে অনেক বেশি সাফল্য অর্জন করেন তিনি [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর ধর্মপ্রচারকবৃন্দ, লাতিন ও বিদেশী ভাষাসমূহ খৃষ্টধর্ম প্রচার করার জন্য প্যাট্রিশাস নামের এক সন্ন্যাসী ৪৩২ খৃষ্টাব্দে ফ্রান্সের Lérins মঠ থেকে আয়ারল্যান্ড যাত্রা করেন। যতোটা আশা করা গিয়েছিল তার চাইতে অনেক বেশি সাফল্য অর্জন করেন তিনি, এবং এখনো তাঁকে সেইন্ট প্যাট্রিক নামে আয়ারল্যান্ডের রক্ষাকর্তা সন্ত হিসেবে স্মরণ করা হয়। অসংখ্য যে সমস্ত ধর্ম্প্রচারক লাতিন ভাষী নয় এমন মানুষজনের মাঝে ঈশ্বরের বাণী প্রচারের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন তিনি। আয়ারল্যান্ড কখনোই রোমক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল না, এবং সেখানের মানুষ আইরিশ নামের একটি কেল্টিক ভাষায় কথা বলত। প্যাট্রিক সে ভাষাটি রপ্ত করেন, এবং স্পষ্টতই তাঁর আরাধ্য কাজে সেটি ব্যবহার করেন, যদিও গির্জার  সঙ্গে সম্পৃক্ত লোকজন পড়া ও লেখার জন্য লাতিন ভাষাই ব্যবহার করতেন বলে বোধ হয়। প্যাট্রিকের মিশন শুরু হওয়ার পরপরই নিশ্চয়ই আইরিশ ভাষা রোমান হরফে লিখিত হতে শুরু করে, কিন্তু একেবারে গোড়ার দিককার যেসব টেক্সট আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে সেখানে কিন্তু খৃষ্টীয় কোনো বিষয়বস্তু পাওয়া যায়নি। আয়ারল্যান্ডে আশ্রমিক ব্যবস্থা অত্যন্ত সাফল্য লাভ করেছিল, ফলে, খৃষ্টানদের অনেকেই সন্ন্যাসী হিসেবে জীবন কাটিয়ে গেছেন। আশ্রম বা মঠগুলো নিশ্চয়ই বিদ্যালয় হিসেবে যথেষ্ট কার্যকর ছিল, কারণ পরবর্তী শতকগুলোতে সেখানে লাতিনের দক্ষতার বিষয়ে খুবই উচ্চ পর্যায়ের মান রক্ষা করা হয়েছিল, যদিও  ইউরোপের বাকি অংশে তখন বিদ্যাচর্চা হয়ে উঠছিল বিরল থেকে বিরলতর। আইরিশ জনগণকে অবশ্যই লাতিন শিখতে হয়েছিল একেবারেই বিদেশী একটি ভাষা হিসেবে, এবং সম্ভবত আশ্রমিক বিদ্যালয়গুলোতেই তারা লাতিন ভাষাটি একই সঙ্গে লিখতে, পড়তে ও বলতে শিখেছিল। তাদের জন্য সেটি ছিল আগাগোড়াই ধ্রুপদী লাতিন। অন্যদিকে, ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের লোকজন ভাবতো তারা লাতিনে কথা বলছে, কিন্তু তাদের কথ্য ভাষা লিখিত লাতিন থেকে এতোটাই ভিন্ন ছিল যে এমনকি কিছুদিন বিদ্যালয়ে পাঠ নেবার পরেও  ধ্রুপদী ঢঙে লাতিন লিখতে খুবই কষ্ট হতো তাদের। শত শত বছর ধরে ধ্রুপদী লাতিনে অন্য যে-কারো চাইতে বেশি দক্ষতার পরিচয় দিয়ে এসেছিলেন আইরিশ সন্ন্যাসীরা; এটি এমন একটি ঘটনা যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হবে পরে। ক্রমে সন্ন্যাসীরা নিজেরাও হয়ে ওঠেন…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.