গতকাল (২৬ অক্টোবর ২০০৮) দৈনিক ইনকিলাবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বিষয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বাধ্যতামূলক এই বিজ্ঞপ্তিটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৭(২) এর অধীন। বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের উদ্দেশ্য – বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের এবং দলটির “দাঁড়িপাল্লা” প্রতীক ব্যবহার বিষয়ে সর্বসাধারণের মতামত বা অভিযোগ থাকলে তা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ। স্ক্যান করা বিজ্ঞপ্তিটির পিডিএফ কপি এখান থেকে ডাউনলোড করুন।
এতে বলা হয়েছে:
উক্ত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বিষয়ে কাহারো কোন আপত্তি থাকিলে প্রয়োজনীয় দলিলাদিসহ উহার কারণ উল্লেখপূর্বক ২৭-১০-২০০৮ তারিখের ভেতর নিম্ন স্বাক্ষরকারীর নিকট লিখিতভাবে জানাইবার জন্য অনুরোধ করা হইল।
-স্বাক্ষরকারী-
মুহম্মদ হুমায়ুন কবির
সচিব
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।
প্রাপ্ত তথ্যমতে ইতোমধ্যেই কয়েকটি সংগঠন লিখিতভাবে তাদের অভিযোগ পেশ করেছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে। সময়াভাবে কেবল অভিযোগগুলোই সংক্ষেপে পেশ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ ও দালিলিক অন্যান্য বিষয় পরবর্তীতে পেশ করা হবে, অভিযোগগুলি বিস্তারিতভাবে বিবেচনার সময়। সমমনা সকল ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রতি আহ্বান থাকবে দ্রুত ও সংক্ষেপে নিজেদের অভিযোগ এবং মতামত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পেশ করে রাখার জন্য, যাতে অভিযোগের স্বপক্ষে বিস্তারিত তথ্যপ্রমাণ পরবর্তী পর্যায়ে পেশ করা যায়। এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে সময় খুব স্বল্প।
এই পুরো প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে এখনি যে দু’টো বিষয় উল্লেখ করে রাখা জরুরী, তা হল:
১) বিজ্ঞপ্তিটিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য সর্বসাধারণকে অত্যন্ত কম সময় দেয়া হয়েছে – মাত্র একদিন। অবস্থাদৃষ্টে, একে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি দায়সারা পদক্ষেপ ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। যদিও বিজ্ঞপ্তিটিতে দেয়া তারিখ অনুযায়ী সেটা লেখা হয়েছে ২৩ অক্টোবর, কিন্তু সরকারী লাল ফিতের গোলকধাঁধা পেরিয়ে সেটি ঠিক কবে ইনকিলাব কার্যালয়ে পৌঁছেছে, তা জানার কোন উপায় নেই। আর এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি কিভাবে মাত্র একদিনের সময়সীমা দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব তা আমাদের বোধগম্য নয়, তাও একটি দৈনিকের ভেতরের দিকের পাতায়। এ থেকে পুরো ব্যপারটি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং নিষ্ঠাকে প্রশ্ন করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে বলে মনে করি। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। সময়াভাবে এখনি ঠিক নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হচ্ছেনা ইনকিলাব ছাড়াও অন্য কোন পত্রিকায় নির্বাচন কমিশনের এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ছাপানো হয়েছে কিনা। যদি ছাপানো হয়ে থাকে, তবে তা প্রকাশের তারিখ এবং স্ক্যান করা কপি যদি পাঠকদের কেউ এখানে মন্তব্যাকারে তুলে দেন, তাহলে সবাই উপকৃত হব।
২) অত্যন্ত স্বল্প নোটিশের বিষয়টি ছাড়াও আরেকটি কারণে এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের দক্ষতা এবং প্রফেশনালিজমকে প্রশ্নের সম্মূখীন করে। তা হল – একদিকে সর্বসাধারণকে সময় দেয়া হয়েছে মাত্র একদিন, অন্যদিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিটিতে অভিযোগ উত্থাপনের জন্য যোগাযোগের কোন কার্যকর ঠিকানাই উল্লেখ করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে জনৈক সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ পেশ করতে হবে, যাঁর ঠিকানা হল “মুহম্মদ হুমায়ুন কবির, সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়”। বাংলাদেশের ডাক বিভাগের ‘দক্ষতা’র বিবেচনায় এটি একটি অবান্তর এবং অসম্ভব দাবী, যা দেশের সব প্রান্তের এবং বিদেশে নিবাসী বাংলাদেশীদের কোনভাবেই রক্ষা করা সম্ভব না। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে একটি ফ্যাক্স নাম্বার কিংবা একটি ইমেইল এড্রেস কি দেয়া যেতো না? আর নির্বাচন কমিশনের ঠিকানাটাও একটু বিস্তারিতভাবে লিখলে কি ক্ষতি হোতো?
বিষয়টি বিচারের ভার পাঠকের। সম্ভব হলে আপনারা অভিযোগ পাঠাবেন। আর না হলে অন্তত এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবেন অনুগ্রহ করে, সবার প্রতি বিনীত অনুরোধ থাকলো।
যুগপৎ প্রকাশ: আমারব্লগ, প্রথম আলো ব্লগ, সচলায়তন
রায়হান রশিদ
জন্ম চট্টগ্রাম শহরে। পড়াশোনা চট্টগ্রাম, নটিংহ্যাম, এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমান আবাস যুক্তরাজ্য। ১৯৭১ সালে সংঘটিত অপরাধসমূহের বিচার প্রক্রিয়াকে সহায়তা প্রদান, এবং ১৯৭১ এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের দাবীতে সক্রিয় নেটওয়ার্ক 'ইনটারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম' (ICSF) এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১০ comments
সৈকত আচার্য - ২৭ অক্টোবর ২০০৮ (১:৩৮ অপরাহ্ণ)
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জামাতকে পূনর্বাসিত করেছেন যারা, তাদের তালিকায় এই নির্বাচন কমিশন এবং তার বর্তমান তিন (সাহসী!) কমিশনারের নাম লিখা হয়ে যাবে। এই চক্রান্তের নিন্দা জানাই।
অলকেশ - ২৮ অক্টোবর ২০০৮ (১:২০ পূর্বাহ্ণ)
রায়হান রশিদের এই পোষ্টটি সচলায়তনের প্রথম পেজে না দেখতে পেয়ে ক্রমান্বয়ে বাকী পেজগুলোতেও খূঁজলাম। কিন্ত কোথাও দেখতে না পেয়ে এই মন্তব্যটি লিখতে বসলাম। অন্যান্য ব্লগগুলোতে এবং ব্যক্তিগত বন্ধু মহলেও এই লেখাটি আজকে ফরওয়ার্ড করেছি সারাদিন। এটা করেছি লেখাটির গুরুত্ব বিবেচনায়। একটা চটজলদি সিদ্ধান্ত নিয়ে এই দরকারী পোষ্টটি তৈরী করা হয়েছে, বোঝা যায়।
সচলায়তন কর্তৃপক্ষ তাদের রুলের কারনে সাধারনতঃ সেখানে প্রকাশিত কোন পোষ্ট একটা নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাপাতে বারণ করেন অন্য কোথাও, কোন ব্লগে। এটা জানি। তবে এই পোষ্টের গুরুত্ব বিবেচনায় তারা অন্যান্য ব্লগের সাথে এটা এক সাথে ছাপানোর সিদ্ধান্ত নেয়াতে খুশী হয়েছিলাম। মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সচলায়তনের কমিটমেণ্টের প্রতি অনেকের মতই আমিও শ্রদ্ধাশীল।
এই পোষ্টটি কারো ব্যক্তিগত মত প্রচারের জন্য এমনটি কেউ নিশ্চয়ই মনে হয় ভাবেননি। তা ভাবার কোন অবকাশও নেই। যদিও সচলাতনের এক মন্তব্যকারীর (যূথচারী) মন্তব্যে সেধরনের ইঙ্গিত ছিল বলে মনে হয়েছে আমার। উপরে লেখকের মন্তব্য থেকে জানা গেল, পোস্টটি যে অন্যান্য ব্লগেও ছাপানো হবে তা আগেই সচল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল। কিন্ত একটা বিষয় বুঝতে পারা যাচ্ছে না যে, একটা ব্লগ থেকে সুনিদ্দির্ষ্টভাবে বুঝিয়ে বলার পরও এই লেখাটি ছাপিয়ে আবার সেটা তুলে নেয়া হল কেন? যদি তুলেই নেয়া হয় এ বিষয়ে কি কোন ব্যাখ্যা বা নোটিফাই করা হয়েছিল? যতদূর বুঝি এটি একটি আন্তঃসাংগঠনিক বিষয়। নাকি আমি কোথাও ভুল করছি?
মুক্তাঙ্গন - ২৯ অক্টোবর ২০০৮ (১:২৭ পূর্বাহ্ণ)
“মুক্তাঙ্গন” সমমনা ব্লগগুলোর নিয়মনীতির এবং সেসবের সুচিন্তিত প্রয়োগের ব্যপারে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের নীতিতে বিশ্বাসী। সিদ্ধান্তগ্রহণের ধরণ ও প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা বা দ্বিমত থাকতেই পারে এবং থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে বৃহত্তর নৈতিক এবং রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় সে সব ভিন্নতা যেন অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক বা সংঘাতে রূপ না নেয় সে বিষয়েও সবার যত্নশীল হওয়া জরুরী। প্রগতিশীল ফোরাম হিসেবে এই নীতিতে মুক্তাঙ্গন বিশ্বাস করে; সেইসাথে এ-ও কামনা করে যে এখানকার ব্লগার-মডারেটর নির্বিশেষে সকলে সে নীতির অংশীদার হবে।
প্রসঙ্গ: ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে আরও কয়েকটি ব্লগ প্লাটফর্মের পাশাপাশি পোস্টটি সচলায়তনে-ও পাঠানো হয়েছিল। সেখানে অনুসৃত ক্রসপোস্টিং সংক্রান্ত বিধি স্মরণে রেখেই সেটি ছাপানো বা না ছাপানোর সিদ্ধান্ত সচল মডারেটরদের সুবিবেচনার (discretion) ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে অলকেশ মিত্র’র মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে সচলায়তন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একটি ব্যাখ্যা (মন্তব্য#১৪) দেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে, যা বিষয়টির সমাপ্তি আনয়নের উদ্দেশ্যে এখানেও উদ্ধৃত করা হল:
আশা করি এসব কিছুকে পেছনে ফেলে এখনকার আলোচনা পোস্টের বিষয়বস্তুতে কেন্দ্রীভূত হবে। ধন্যবাদ।
ইমতিয়ার - ২৮ অক্টোবর ২০০৮ (১১:১৩ পূর্বাহ্ণ)
অন্য কোনও রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কি এরকম বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে? আর দেয়া হয়ে থাকলে সে-ক্ষেত্রে সময়ের ব্যবধান কতটুকু রাখা হয়েছিল? – এরকম প্রশ্নগুলির উত্তর আমার ঠিকঠাক জানা নেই। কিন্তু তারপরও বিষয়টি খুবই জরুরি দুটি বিবেচনায়। প্রথমত: যারা নিপাট গণতান্ত্রিক ধারণায় বিশ্বাস করেন, তারা কেউই শুধু জামাত কেন, যে-কোনও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকারই গ্রহনযোগ্য মনে করবেন না। দ্বিতীয়ত: যারা নিপাট গণতান্ত্রিক ধারণা নিয়ে অত মাথা ঘামানোর প্রয়োজন বোধ করেন না, তাদেরও একটি বড় অংশ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসবোধ থেকে জামাতের নিবন্ধন মেনে নিতে পারবেন না।
এ দুটি ব্যাপার জানা আছে বলেই বোধকরি নির্বাচন কমিশন নিজেদের ধোয়া তুলসী পাতা হিসেবে প্রতিপন্ন করার জন্যে এ-রকম একটি পথ বেছে নিয়েছেন, যাতে সাপও মরে লাঠিও বাঁচে। মানে আমার-আপনার ইচ্ছার সলিলসমাধীও যাতে ঘটে আবার জামাতে ইসলামীও নিবন্ধন পেয়ে যায়। আমার মনে হয়, জামাতকে নিয়ে সরকার যা করছে, তা আসলে বিতর্ক সৃষ্টি করার মধ্যে দিয়ে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্যেই করছে। তবে তাদের নিয়ে এমন কিছু বিতর্ক আছে, যা বেশিদিন চলতে দেয়া মঙ্গলজনক নয়,- সেটিও তাদের মাথায় আছে।
আর আপনি আমি যত বিরোধিতাই করি না কেন কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমর্থকরাও জামাতের যত বিরোধিতাই করুক না কেন, জামাতকে শেষ পর্যন্ত নিবন্ধন করতে দিতেই হবে (তবে চমক তৈরির জন্যে এমনও হতে পারে যে নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন সংগঠনের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিবন্ধন না দিয়ে জামাত নেতাদের আদালতে পাঠিয়ে আদালতের রায়ের মাধ্যমে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করবে)। কেননা জামায়াতে ইসলামীই এখন বাংলাদেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের একমাত্র রিজার্ভ রাজনৈতিক শক্তি। ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে একমাত্র জামাতেরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের কাছে প্রবেশাধিকার রয়েছে।
রায়হান রশিদ খুব সঙ্গত সব অভিযোগ তুলেছেন; কিন্তু এরকম অভিযোগ যে উঠবে বোধকরি নির্বাচন কমিশনেরও তা মাথায় আছে! ধন্যবাদ রায়হানকে সময়োপযোগী এ বিষয়টি তুলে ধরায়।
রায়হান রশিদ - ২৮ অক্টোবর ২০০৮ (১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ)
@ ইমতিয়ার
খুবই সংগত প্রশ্ন। উত্তরটা জানা নেই। স্ক্যান করা নোটিশটির নিচের দিকে এমন আরেকটি বিজ্ঞপ্তির রেশ দেখা যাচ্ছে; বুঝতে পারছিনা সেটা কোন্ দলের প্রসঙ্গে। যে বন্ধুটি পিডিএফ ফাইলটি পাঠিয়েছে, তাকে জিজ্ঞেস করে জানার চেষ্টা করবো। আর কারও জানা থাকলে বলবেন প্লীজ।
বাকী সমস্ত প্রধান দলের ক্ষেত্রে অভিযোগ উত্থাপনের জন্য কতদিন সময় দেয়া হয়েছে, সে সব তথ্য জোগাড় করে একটা তুলনামূলক আলোচনাও করা যেতে পারে। বিতর্কিত এই আইনটি নিয়ে অনেক কিছুই বলবার আছে। তবুও নিতান্ত সাধারণ অর্থেও আইনের শাসনের কথা যদি বলি, জনগণের আকাঙ্খা হল – আইন যেমনই হোক তার প্রয়োগ হবে in letter and spirit । তাই, যেনতেন বা দায়সারাভাবে আইন রক্ষার চেষ্টা জনগণের সাথে একধরণের ভাঁওতাবাজী তো বটেই। আগেও দেখেছি – সরকারী আমলারা প্রায়ই এই কাজটি অনেক চালাকির সাথে করার চেষ্টা করেন, সম্ভবত জনগণের বুদ্ধিমত্তাকে খাটো করে দেখেন বলেই। কিংবা সম্ভবত একথা ভুলে যান যে আসলে তারা জনগণের ভৃত্য, প্রভু নন। ঔপনিবেশিক শাসনের এঁদো ভুতগুলোকে তাদের ঘাড় থেকে ধরে ধরে নামাতে হবে এবং দেশ থেকে ভাগাতে হবে চিরতরে।
তবে একটা কথা না বলে পারছিনা। অন্যান্য দলের ক্ষেত্রে নোটিশ যেমনই হয়ে থাকুক – অন্তত জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেত্রে এ ধরণের ‘নোটিশের প্রহসন’ অপরাধের পর্যায়ে পড়ে বলে আমি মনে করি। কারণ, আর কোন রাজনৈতিক দলের তো বাংলাদেশের উন্মেষ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সংস্কৃতি, সংবিধান এসব কিছুর সাথে এতখানি বিরোধ নেই, যতখানি জামায়াতের রয়েছে।
অলকেশ - ২৮ অক্টোবর ২০০৮ (৫:১৪ অপরাহ্ণ)
নিউ এজ পত্রিকা খবর দিচ্ছে যে, এ পর্যন্ত ৬ টি সংগঠন জামাতে ইসলামীর রেজিষ্ট্রেশনের বিরোধীতা করে আপত্তি দিয়েছে নির্বাচন কমিশনে। নিউজ আইটেমটা দেখুন।
সায়মা সুলতানা - ২৮ অক্টোবর ২০০৮ (৭:৪৫ অপরাহ্ণ)
সাংবিধানিকভাবেই জামাতে ইসলামী নিবন্ধন পেতে পারে না। ভোরের কাগজের এই লিংকটি দেখুন।
অবিশ্রুত - ১ নভেম্বর ২০০৮ (১০:০৩ অপরাহ্ণ)
নিবন্ধন নিয়ে আপত্তির শুনানীতে যায়নি জামাত। এখন সে ভূত দেখছে, 70-এর নির্বাচনের ভূত…
যদি সত্যিই সত্তরের নির্বাচন হয়, তা হলে একাত্তর আসে
একাত্তর এলে যুদ্ধে যেতে হয়।
প্রস্তুতি কি আছে সেরকম আর এক যুদ্ধের জন্যে আমাদের সকলের?
রায়হান রশিদ - ৩ নভেম্বর ২০০৮ (১:৪১ অপরাহ্ণ)
আপডেট
প্রচলিত আইনকে সমুন্নত রাখার ‘অভূতপূর্ব’ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো নির্বাচন কমিশন। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধনের বিষয়টিই দেখা যাক। এক নজরে ঘটনাক্রম:
এখানে যে বিষয়গুলো উত্থাপন জরুরী, তা হল:
(ক)
জনপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের আওতায় রাজনৈতিক দল নিবন্ধন সংক্রান্ত বিধি ৭(২) কি তবে অর্থহীন? স্রেফ কথার কথা? লোক দেখানো? অভিযোগ পেশ করারই যেহেতু সুযোগ রাখা হয়েছিল, সেহেতু সে অভিযোগের নিষ্পত্তি ছাড়া কিভাবে নিবন্ধন চূড়ান্ত করা সম্ভব হল?
(খ)
সর্বসাধারণের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করার পর সে অভিযোগের তোয়াক্কা না করে, সেসবরে নিষ্পত্তি না করে, কোন্ ক্ষমতাবলে সিদ্ধান্তগ্রহণ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন?
(গ)
শুনানীতে জামায়াতের অনুপস্থিতির ফলে নির্বাচন কমিশনের যা করার ছিল, তা হল: (i) জামায়াতকে জবাব দেয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় অনুমোদন; (ii) অথবা, জামায়াতের অতিরিক্ত সময়ের আবেদন নাকচ; (iii) শুনানীর জন্য নতুন তারিখ ধার্য করা;
(iv) অথবা, অভিযোগকারী সংগঠনগুলোর বক্তব্য শুনে জামায়াতের বিরুদ্ধে একপেশে (ex parte) সিদ্ধান্তগ্রহণ; (iv) অথবা, অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন/হয়রানীজনক বলে নাকচ করে দেয়া। আইনী প্রক্রিয়ার কথা বললে, এর বাইরে মনে হয়না নির্বাচন কমিশনের আর কিছু করার ক্ষমতা ছিল। এর পরও নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলো, শুনানীতে অনুপস্থিত জামায়াতেরই পক্ষে।
(ঘ)
বিচারকার্যের দক্ষতা ও দ্রুততার কথা আমরা প্রতিনিয়তই আলোচনা করি। কিন্তু কোন ধরণের শুনানী ছাড়া, এমনকি শুনানীর দিন অভিযুক্তের অনুপস্থিতির পরও তারই পক্ষে সিদ্ধান্তগ্রহণের অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আমাদের নির্বাচন কমিশন!
(ঙ)
নির্বাচন কমিশন সময়াভাব এবং পরবর্তীতে রীট ইত্যাদির আশংকার কথা উল্লেখ করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বলেছেন, এসব শুনানীর সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তীতে যদি আদালতে মামলা হয় তবে সেক্ষেত্রে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। প্রথমত, নির্বাচন কমিশনের এই যুক্তির কোন ভিত্তি নেই। কারণ, এ ধরণের জনগুরুত্বসম্পন্ন মামলার নিষ্পত্তিতে সুপ্রীম কোর্টে fast tracking আগেও হয়েছে, এবং এখানেও তা হতে পারতো। দ্বিতীয়ত, আইন (অভিযোগ উত্থাপনের সুযোগ দিয়ে) প্রণয়নের সময়ই এই বিষয়গুলো মনে রাখা উচিত ছিল। এমন আইন করার মানে কি, যা সরকার নিজেই মানতে অক্ষম? কেউ তো সরকারকে এই অদ্ভুত আইনটি প্রণয়নের জন্য দিব্যি দিয়েছিল বলে মনে পড়ছেনা!
(চ)
মেধাহীনতা আর যোগ্যতাহীনতার অভিযোগ আমরা প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক সরকারগুলোর ক্ষেত্রে করে থাকি। অরাজনৈতিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর তার আমলের নির্বাচন কমিশন সেক্ষেত্রে পারফরমেন্স এর ঝলক দেখাতে পারলো কি?
সৈকত আচার্য - ৩ নভেম্বর ২০০৮ (৯:০২ অপরাহ্ণ)
হ্যাঁ, তারপর ২ নভেম্বরের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা চারিদিকে প্রচার হয়ে গেলে, ইসি গতকাল জামাতকে একা ডেকে পাঠায় ইসি কার্যায়ে উপস্থিত থাকার জন্য। যথারীতি তারা আসেন, চা বিস্কুট খান এবং নিবন্ধন সমাপ্ত করে প্রস্থান করেন। কোন শুনানীর প্রয়োজন বোধ করেনি এই কমিশন। আজকের ভোরের কাগজে প্রকাশিত এই রিপোর্টটি দেখুন।