কে মুসলিম কে মুসলিম নয় কে হিন্দু কে হিন্দু নয় কে বৌদ্ধ কে বৌদ্ধ নয় কে খ্রিস্টান কে খ্রিস্টান নয় কে ইহুদি কে ইহুদি নয় তা জেনে আমাদের কী লাভ, আমরা তো আর ধর্মবেত্তা নই পাদ্রি আল্লামা পুরোহিত রাব্বি মহাথেরো নই আমরা এসবের কী জানি, অথচ নিজের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের কান ধরে আমরা বলতেই থাকব বলতেই থাকব টেররিস্ট মুসলিম নয় হিন্দু নয় বৌদ্ধ নয় খ্রিস্টান নয় ইহুদি নয় – সন্ত্রাসবাদীর কোনো ধর্ম নেই, এ কেমন কথা, আসলে আমরা এক পা এগোতেই চাই এ কথা বলে কিন্তু আমাদের বড় বড় নেতারা দুধর্ষ জনপ্রিয়তার তারকারা জানেনই না এ কথা বলে তারা চৌদ্দ বছর আগে যেখানে পা ফেলেছিলেন সেখানেই দাঁড়িয়ে আছেন আর এখানেই আমাদের ভয় এই না তারা এক পা আগানোর পরিবর্তে এক পা পিছিয়ে না যান!
কিন্তু আমরা জানি তারা এগিয়ে যেতেই চান, তারা সন্ত্রাসবাদের ধ্বংসই চান, কিন্তু তারা কোনোমতেই জনস্নেহের ভাজা মাছ ধর্মটাকে পাত থেকে তুলতে চান না। তাতে যা হওয়ার তাই হচ্ছে একটা অতি সহজ শব্দ তাদের চোখের সামনেই ঘুরছে ফিরছে কিন্তু তারা তা খুঁজে না পেয়ে তাদের ভুল প্রত্যয় নিয়ে বারবার ধর্মকে প্রণোদনা দিচ্ছেন ধর্মের ভেতরে ধর্মের সংঘাতকে উসকে দিচ্ছেন। এটাও তারা করছেন বাবা মা সন্তানের ভাল চেয়ে সন্তানের বারোটা বাজানোর পন্থাতেই।
হাসিনা বলছেন, সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই – যারা মসজিদে হামলা চালাচ্ছে তারা মুসলিম নয়। আমির বলছেন, হাতে কোরান নিয়ে মানুষ মারছে যারা তারা মুসলিম নয়। মোদি বলছেন, ধর্ম থেকে সন্ত্রাসবাদকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। তাহলে এরা ধরাটা খাচ্ছেন কোথায়, খাচ্ছেন তারা ধর্মটাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাচ্ছেন, কিন্তু তারা ভেবে দেখছেন না কে মুসলিম কে মুসলিম নয় কে হিন্দু কে হিন্দু নয় তার সিদ্ধান্ত দেয়ার তারা কেউ নয়, জঙ্গি মুসলিমটাকে কোনো আল্লামা বেহেস্তের পথ দেখিয়ে হাতে চাপাতি তুলে দিয়েছে, বজরঙ্গি হিন্দুটাকে কোনো স্বামী স্বর্গের পথে গোমাংসভক্ষণকারীকে নিধন করতে পাঠিয়ে দিয়েছে।
অথচ উচিত ছিল এদের – এই দুঃসময়ে ‘মানুষ’ শব্দটাকে খুঁজে পাওয়া, যেশব্দটাকে তারা প্রতিনিয়তই অসংখ্য বার উচ্চারণ করছেন উচ্চারণ করতে দেখছেন, একটি বার যদি এই শব্দটার শরণ নিতেন তারা এপ্রসঙ্গে, তাহলে নিশ্চিত তারা এক পা যেমন এগিয়ে যেতেন, নির্বিবাদে প্রতিটি ধর্মকেও তার প্রাপ্য সম্মান তারা দিতে পারতেন। বলতেন যদি, যারা মসজিদে হামলা চালাচ্ছে তারা মানুষ নয়, যারা চাপাতির কোপে ব্লগার মারছে তারা মানুষ নয়। বলতেন যদি, হাতে কোরান নিয়ে মানুষ মারছে যারা তারা মানুষ নয়। বলতেন যদি, গোমাংসভক্ষণকারীকে মারছে যারা তারা মানুষ নয়। তাতে এটাই উচ্চকিত হত মুসলিম হোক হিন্দু হোক বৌদ্ধ হোক খ্রিস্টান হোক ইহুদি হোক তাকে মানুষই হতে হবে, আর যে সন্ত্রাসবাদী সে মুসলিম হোক হিন্দু হোক বৌদ্ধ হোক খ্রিস্টান হোক ইহুদি হোক সে মানুষ নয় – কাজেই তাকে নিষ্ঠুর কাজের জন্য নির্মম পরিণতি মানতেই হবে। এভাবেই ধর্মকেও সংঘাত থেকে যেমন বাঁচানো যেত তেমনি সমাজে স্বাধীনতাকেও তার সর্বোচ্চ অবস্থানে রাখা যেত। যেত বলছি কেন, আসলে এখনো যায়, সময় ফুরিয়ে যায়নি শুধু ঠিক শব্দটির জন্য ঠিক কাজটিতে লেগে পড়ুন – সব ধর্মবোধ ঝেড়ে এক যোগে বলুন : সন্ত্রাসবাদীরা মানুষ নয়।
#হাতেকোরাননিয়েমানুষমারছেযারাতারামানুষনয় #যারামসজিদেহামলাচালাচ্ছেতারামানুষনয়
মাসুদ করিম
লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৪ comments
ব্লগারাদিত্য - ২৯ নভেম্বর ২০১৫ (৪:৩৬ অপরাহ্ণ)
সুন্দর লেখার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। তবে কেন জানি লেখার শেষাংশে এসে প্রত্যাশানুযায়ী সমাপ্তি ঘটল না।
ঠিকই আছে। কিন্তু এটাই কি শেষ কথা?
মাসুদ করিম - ৮ ডিসেম্বর ২০১৫ (১২:১৮ পূর্বাহ্ণ)
মাসুদ করিম - ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ (১০:২৩ অপরাহ্ণ)
হাসিনা আমির মোদি ওবামার লাইনে এবার পোপও।
মাসুদ করিম - ১৮ জুন ২০১৬ (৩:০৮ অপরাহ্ণ)