আজ অনেকটা ধুমধামেই আমাদের রাষ্ট্র তার রাষ্ট্রপালিত বান্দাদের সহযোগে পহেলা বৈশাখ পালন করাতে পারল। আমরাও অনেকটা গৃহপালিত বান্দার মতোই তা স্মরণীয় বরণীয়ও করলাম। তাতে নাগরিক মধ্যবিত্তের তেমন সমস্যা হয়েছে বলে দৃশ্যত মনে হয় নি। তবে ঘটনার আড়ালেও ঘটনা থাকে, কষ্টের আড়ালেও কষ্ট থাকে।
নাগরিক শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, প্রিন্টিং ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া হুলস্থূল সহকারে বাংলা নববর্ষ পালন করলেও সনাতন হিন্দু সমাজ আজ পালন করেছে চৈত্র সংক্রান্তি। আমাদের পাশের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেই আগামীকাল পহেলা বৈশাখ পালন করা হবে।
এরই মধ্যে দুই-একটা অদ্ভুত ঘটনার মুখোমুখি হলাম আমি। আমার অতি পরিচিত একজন সরকারি কর্মজীবী আমায় জানাচ্ছেন, একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন… এই বলেই লোকটা আমার দিকে এভাবে তাকালেন যেন আমার দায়িত্ব হচ্ছে এইটুকুতেই সবটুকু বুঝে নেয়া। আমার না-বুঝাকে তাচ্ছিল্যের ভিতর ফেলে তিনি বলছেন, এই দেশের হিন্দুরা তো সরকারের আইন মানে না! আমার অতি আশ্চর্য অবয়বকে পুঁজি করে আমায় জানাচ্ছেন, সরকারের ঘোষণা আছে বুধবার ১৪ই এপ্রিল পয়লা বৈশাখ, কিন্তু এরা ভিতরে ভিতরে বিষুদবার দিন পহেলা বৈশাখ করবে, পূজা-উজা করবে আর-কি। আমি বুঝাতে চাইলাম, এরা তো পঞ্জিকা মেনে তাদের ধর্মমতে…; _আরে রাখেন আপনার পঞ্জিকা, এইসব সরকারের সাথে গাদ্দারি, এরা ইন্ডিয়ার বুদ্ধিতে নাচে, আপনারা এইসব বুঝবেন না।
আমি তাকে কিছুতেই বুঝাতে পারলাম না। আমি বাধ্য হয়ে একজন সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে তাদের এই ধরনের অবাধ্যতা বিষয়ে তাদের মতামতটা জানতে চাইলাম। তার কথা বেশ সরল-মীমাংসামুখি। তার বাপ-দাদারা গ্রামের নিয়মে যেভাবে চৈত্র-সংক্রান্তি বা পয়লা বৈশাখ যেভাবে পালন করেছেন, এরাও তা-ই করছেন। তারা তো মুরুব্বিগণের সাথে বেয়াদবি করতে পারেন না।
আসলে মহাত্মা (!) এরশাদ অনেকভাবে জাতিকে লণ্ডভণ্ড করার মানসে অনেককিছুর মতো এই কাজটিও করে গেছেন। অর্থাৎ রাষ্ট্র কর্তৃক মুসলিম আধিপত্যকে একচেটিয়া করার মানসেই এ কাজটি করা হয়েছে। ভৌগোলিক জাতীয়তাবাদীরা (এই যুগল দৃশ্যত, কার্যত, প্রবহমানত অনেকটাই একই নবীর উম্মত।) না হয় একই ধারায় তা বহাল রেখেছিল, এখন ভাষাপন্থি জাতীয়তাবাদীরাও একই কাজ কেন করছেন? কারণ এখন যেভাবে পহেলা বৈশাখ পালন করা হচ্ছে, এতে সনাতন হিন্দু সমাজকে শুধু নয়, লোকজ সমাজকেও বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে। মুক্তচিন্তার কথিত সওদাগরগণও দেখছি এ ব্যাপারে অনেকটাই চুপচাপ আছেন!
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর
কথাসাহিত্য চর্চার সঙ্গে যুক্ত। পেশায় চিকিৎসক। মানুষকে পাঠ করতে পছন্দ করি। আমি মানুষ এবং মানব-সমাজের যাবতীয় অনুষঙ্গে লিপ্ত থাকার বাসনা রাখি।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৭ comments
মোহাম্মদ মুনিম - ১৫ এপ্রিল ২০১০ (৪:৩২ পূর্বাহ্ণ)
Wikipedia তে দেখা গেল প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ পালিত হচ্ছে ১৪ই এপ্রিল, বাংলা একাডেমীর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এই ক্যালেন্ডারটি চালু করেন, ইংরেজী ক্যালেন্ডারের সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য। ক্যালেন্ডারটি চালু হয় ১৯৬৬ সালে, এরশাদের আমলের বহু আগে। হিন্দু পঞ্জিকা চলে সনাতন নিয়মে (চন্দ্র সুর্য্যের অবস্থান অনুযায়ী)। আবার হিন্দু পঞ্জিকারও রকমফের আছে। সব মিলিয়ে ব্যাপারটা একটু গোলমেলে। তবে পহেলা বৈশাখ এলেই একদিনের জন্য হলেও আমাদের মেয়েরা লাল পাড়ের শাড়ী পড়ে, হাতে মেহেদী মাখে, সেটা দেখে একদিনের জন্য হলেও মোল্লারা মন খারাপ করে থাকে, একদিনের জন্য হলেও আমরা আবার আশায় বুক বাঁধি, যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আমরা হারিয়ে ফেলেছি বহূকাল আগে, তা আবার ফিরে আসবে, বছরে শুধু একদিনের জন্য নয়, প্রতিদিনের জন্য।
kamruzzaman Jahangir - ১৫ এপ্রিল ২০১০ (৭:১৫ পূর্বাহ্ণ)
মোহাম্মদ মুনিম, আপনাকে ধন্যবাদ।
একাডেমীর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এই ক্যালেন্ডারটি চালু করেন, ইংরেজী ক্যালেন্ডারের সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য। ক্যালেন্ডারটি চালু হয় ১৯৬৬ সালে, এরশাদের আমলের বহু আগে।
আপনার উপরোক্ত তথ্যটি বাস্তবত সঠিক বলে ধরতে পারছি না। উইকিপিডিয়ারও উচিত ছিল, যাচাই-বাছাই করে তথ্য দেয়া। আসল ইতিহাস হচ্ছে, ১৯৬৩ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ড. মুহ্ম্মাদ শহীদুল্লাহ’র নেতৃত্বে অফিসিয়াল সুবিধার কারণে, খ্রীষ্টাব্দের আবহ আনার তাড়নায়, বিজ্ঞানভিত্তিক করার মানসে(!) ‘বাংলা পঞ্জিকা সংস্কার’ নামে কতিপয় সুপারিশ করেন, যেখানে ১৪ এপ্রিলকে বাংলা নববর্ষ হিসাবে গণনার কথা বলা হয়। আরও বলা হয় বৈশাখ-ভাদ্র হবে ৩১ দিনে, আশ্বিন-চৈত্র হবে ৩০ দিনে। তবে ফাল্গুন মাস অধিবৎসরের সাথে মিলিয়ে প্রতি চার বছর পরপর ৩১ দিনে হবে। স্বাধীনতার পর বাংলায় সবকিছু লেখার হুকুম জারি করলেও তা কার্যকর করা হয় নি। কিন্তু গত শতাব্দীর ৮০ দশক (১৯৮৭ সালে) অনেক চেনাজানা, প্রয়োজনীয়, লোকজ মূল্যবোধ উলটপালট হতে থাকল। ১৯৬৩ সালের কমিটির রায় তখন কার্যকর করার আদেশ জারি হল। সামরিক সমনের জীবনে বহুবিধ নিয়ম-শৃঙ্খলা যে নাড়িয়ে দিচ্ছিল, এ তারই আরেক নজির। চাঁদের হিসাব দেখে, তিথির উপর ভর করে, পঞ্জিকা দেখে স্থির হয়ে চলা বাংলা সনে একটা পরিবর্তন কার্যকর করা হল। তখন থেকেই ১৪ এপ্রিলকে বাধ্যতামূলকভাবে ‘পহেলা বৈশাখ’ বলে ফর্মান জারি করা হয়।
আবার হিন্দু পঞ্জিকারও রকমফের আছে। সব মিলিয়ে ব্যাপারটা একটু গোলমেলে।
আমার জানামতে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায় লোকনাথের পঞ্জিকাকেই সঠিক বলে ধরে নেয়। আরেকটা কথা হচ্ছে, পঞ্জিকা নিয়েও তো বাণিজ্য হয়, তবে চন্দ্র-তিথির হিসাব আর লোকবিজ্ঞানকে খাটো করে দেখার কোনো স্কোপ নেই। আমরা ‘গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে’ জাতীয় বড়ো বড়ো আওয়াজ তুলি, কিন্তু নিজেদের সুবিধার বেলায় নাগরিক আধিপত্য ঠিকই বজায় রাখি।
মাসুদ করিম - ১৫ এপ্রিল ২০১০ (৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ)
হিন্দু সমাজের একজন ‘জ্যোর্তিবিজ্ঞানী বিদ্যাসাগর’ দরকার। শহীদুল্লাহর পঞ্জিকা সংস্কারের ভিত্তি ছিল বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার পঞ্জিকা সংস্কার বিষয়ক গবেষণা। এদেশে শহীদুল্লাহর মতো ভারতে এস.পি. পান্ডে কমিটি মেঘনাদ সাহার পঞ্জিকা গবেষণাকে ভিত্তি করে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। কিন্তু সেখানে সরকারিভাবে এটা চালু হয়নি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার তামিল ও সিংহলিরা বাংলাদেশের মতো ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালন করে, সেটাও সম্ভব হয়েছে প্রচলিত পঞ্জিকা সংস্কার করে তাকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে ঐক্যসূত্রে চলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায়। এখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার এস.পি. পান্ডে কমিটির সুপারিশ মেনে নিয়ে আদেশ দিলেই ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালন শুরু হয়ে যাবে। তাই বলছিলাম তাদের একজন সমাজসংস্কারক দরকার যিনি ‘জ্যোর্তিবিজ্ঞানী’ হলে ভাল হয়। তার আগ পর্যন্ত পঞ্জিকা দিয়েই চলুক না। এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠ ও কালের কণ্ঠে প্রকাশিত অজয় রায়ের ‘চৈত্র সংক্রান্তি’ বিষয়ক লেখাটা পড়ুন এখানে</a।
kamruzzaman Jahangir - ১৫ এপ্রিল ২০১০ (১০:২৪ অপরাহ্ণ)
আপনার প্রস্তাবনা এবং যথোচিত উদ্ধৃতির জন্য ধন্যবাদ।
Pingback: মুক্তাঙ্গন | সীমানা ছাড়ায়ে | মাসুদ করিম
উত্তম সিংহ - ৬ ডিসেম্বর ২০১২ (১২:২৭ অপরাহ্ণ)
মাননীয় কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, আপনার সুন্দর একটি লিখার জন্য ধন্যবাদ। অনেকেই আপনার লিখার প্রতি উত্তরে নানান যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। তাদের উত্তরে আমার কিছু বলা জরুরি মনে করছি। বিষয়টি অত্যন্ত জটিল ও দীর্ঘ তাই সল্প পরিসরে লিখে বুঝানো আমার পক্ষে আরো জটিল। তবুও আমি চেষ্ঠা করছি।
১। বলা হয়ে থাকে বাংলা পঞ্জিকার দিন-তারিখ গননা পঞ্জিকারেরা একটি দৈবিক ধারনা থেকে করে থাকেন তাই এর হিসাব সরকারি ভাবে রাখা যায়না বলেই বাংলা একাডেমীর সংস্কার দরকারী।
– বাংলা পঞ্জিকা শুধুই তারিখ নির্ভর নয় বলে ইংরেজী তারিখের সাথে তাল মিলালেই এর প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়, চন্দ্র ও সুর্য্যের অবস্থানেরও সংস্কার আনতে হবে। আমি আমার অনেক লেখায় প্রমান দিয়েছি যে পুরাতন শাস্ত্র নির্ভর না হয়েও জুলিয়ান তারিখ দিয়ে কিভাবে বাংলা তারিখ বের করা যায়, যা আমাদের প্রচলিত পঞ্জিকার সাথে হুবহু মিলবে। যদি কেউ চর্বিত চর্বন না মনে করেন তা হলে বলছি।
উদাহরন: বাংলা পঞ্জিকা গননার ০ পয়েন্ট (সূর্য্য মেষ রাশিতে প্রবেশ করেছিল তার জুলিয়ান ডে) JD = 1938094.483733333 (594 March 19 23:36:34.3 BDT Friday), যেহেতু ২০শে মার্চ ৫৯৪ খ্রীষ্টাব্দে বাংলা ১লা বৈশাখ ১ বঙ্গাব্দ ছিল।
ক) ১৪২১ বঙ্গাব্দর শুরুর ঠিক আগের দিন ছিল ১৪২০ বঙ্গাব্দ তাকে বাংলা ১ বৎসরের মান: 365.258756481482 (সুর্য্য সিদ্ধান্ত মতে) দ্বারা গুন করুন
1420 X 365.258756481482 = 518667.4342
খ) উক্ত গুণফলকে বাংলা পঞ্জিকা গননার ০ পয়েন্ট মানের সাথে যোগ করুন
1938094.483733333 + 518667.4342 = 2456761.918 (জুলিয়ান ডে)
গ) উক্ত জুলিয়ান ডে-কে গ্রেগরিয়ান তারিখে রুপান্তর করলে দাঁড়ায় 2014 April 14 10:01:55.2 BDT Monday
যা সূর্য্যের মেষ রাশিতে প্রবেশ কালের সমান সময় হবে, তা হলে ১৫ এপ্রিল ২০১৪ খ্রীষ্টাব্দ তারিখে, ১ বৈশাখ ১৪২১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার হবে।
২। অজয় রায় মহোদয় একজন ভাল পণ্ডিত ও লেখক। আমি উনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বিনয়ের সহিত কিছু (সংস্কার বিষয়ক) অংশে দ্বিমত পোষন করব।
– আপনার পরিবারের যে বিশ্বাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন তা অত্যন্ত সুন্দর, অনুকরনীয় ও শ্রদ্ধার। যার কোন সংস্কার সম্ভব নয়।
– আপনি বলেছেন “আগামী ২০০০ বছরের মধ্যে আমরা যথাযথ ঋতু থেকে এক মাস এগিয়ে যাব।” আগামী ২০০০ বছর পরে কি হবে তার চিন্তায় আমরা এখন থেকে অস্থির হচ্ছি আর বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের অস্থির করে তুলছি ও ২টি পঞ্জিকা অনুসরনে বাধ্য করছি। বাংলা একাডেমীর পঞ্জিকা ১লা বৈশাখ পালন ব্যতিত আর কোথাও ব্যবহার হয় বলে আমার জানা নাই তবে প্রচলিত পঞ্জিকা হিন্দু সমাজে নিত্য দিন ব্যবহার করা হয়। শুধু এক দিনের জন্য এত বড় একটা ভার আমাদের বহন করতে দিলেন।
– বর্তমানে চৈত্র সংক্রান্তি বা ১লা বৈশাখ গ্রীষ্ম কালে হলেও তা ঋতু নির্ভর কোন উৎসব নয় যে তা বসন্তে বা শরতে হলে আমাদের অসুবিধায় পরতে হবে। এখন বলি বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য গ্রীস্মকাল তখন হয়ত বলব জৈষ্ঠ্য-আষাঢ়। পবিত্র ঈদুল ফিতর এবার শরতে হলে তা আগামীতে শীতে হতে পারে যা সম্পূর্ন চন্দ্র ও হিজরী পঞ্জিকা নির্ভর। ঠিক তেমনি চৈত্র সংক্রান্তি রবি ও ভারতীয় (উপমহাদেশ) গননা পদ্ধতি (নিরয়ন) নির্ভর। আর বাংলার চৈত্র সংক্রান্তি দিন নির্নয়ের সিদ্ধান্ত ভারতের অন্য অঞ্চল থেকেও একটু আলাদা। আমাদের হচ্ছে, যে দিন রাত ১২টার মধ্যে রবি ০ডিগ্রিতে (মেষ রাষিতে) আসবে সে দিন চৈত্র সংক্রান্তি আর তার পর দিন ১লা বৈশাখ। উদাহরনঃ ১৩ এপ্রিল যদি রাত ১২টার মধ্যে রবি ০ডিগ্রিতে না আসে ১৫ই এপ্রিল ১লা বৈশাখ, আর যদি আসে তা হলে ১৪ই এপ্রিল ১লা বৈশাখ হবে।
– পশ্চিমারা আয়ন সহ ব্যবহার করেন, আমরা করিনা তাই রবির ০ডিগ্রিতে আসার দিন গননায় পার্থক্য হয়ে থাকে। পশ্চিমা পদ্ধতি ব্যবহার করে আমাদের জ্যোতিষ গননা তথা কোষ্ঠী বিচার বা ভবিষ্যত গননা ইত্যাদি সঠিক হয়না। তারিখের জন্য পশ্চিমা পদ্ধতি আর জ্যোতিষ গননায় ভারতীয় পদ্ধতি এ রকম হতে পারেনা বলেই ভারত বা বাংলাদেশে সরকারী সংস্কার কোথাও গৃহিত হয়নি।
৩। জ্যোতিষ শাস্ত্র মানব কল্যানে ব্যবহার করা উচিত, ব্যবসা করে মানুষকে প্রতারিত করার জন্য নই। মানব কল্যান মুখী এই বিদ্যা কু সংস্কার নই যে তার সংস্কার প্রয়োজন।
পরিশেষে, বিনামূল্যে পঞ্জিকা বইয়ের খবর দিয়ে শেষ করছি। আমি ১-১৪১৯ সন পর্যন্ত সকল বৎসরের পঞ্জিকা (বাংলা ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষায়) মোট ২৮৩৮টি বই রচনা করেছি এবং বিনামূল্যে সবার জন্য উন্মুক্ত করেছি। যে কেউ আমার সাইট থেকে সেগুলো (http://ponjika.us/bangla) ডাউনলোড করতে পারেন। ধন্যবাদ।
মাসুদ করিম - ৫ মে ২০২১ (২:২৮ পূর্বাহ্ণ)
পূজা হল পঞ্জিকার প্রাণ, আবার পূজা এখানে ঐতিহ্যের অংশ, এটাই বাধা হয়ে গেছে পঞ্জিকা সংস্কারের। শহীদুল্লাহর পঞ্জিকা সংস্কারের ভিত্তি ছিল বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার পঞ্জিকা সংস্কার বিষয়ক গবেষণা। সেটা বাংলাদেশে কাজে লেগেছে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে পূজার ঐতিহ্য বড় ঐতিহ্য তাই সেখানে মেঘনাদ সাহার গবেষণা এবং এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে এস.পি. পান্ডে কমিটির সুপারিশ সুপারিশ হয়েই পড়ে আছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের কেউ আমাকে এপ্রসঙ্গে কিছু বললে আমি তাদেরকে মেঘনাদ সাহা পড়তে বলি। বাংলাদেশে কেউ আমাকে এপ্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে পূজা পঞ্জিকা অনুযায়ী করতে বলি মাসের বছরের হিসেবটা আমাদের বাংলা ক্যালেন্ডার অনুয়ায়ী করতে অনুরোধ করি। এতে সব সমস্যা মিটে যায়, চৈত্রসংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ ছাড়া। আমার কাছে চৈত্র সংক্রান্তি চৈত্রের শেষ দিন বছরের শেষ দিন, পহেলা বৈশাখ বৈশাখের প্রথম দিন বছরের প্রথম দিন। কিন্তু হিন্দুসমাজের কাছে এটা আবার পূজারও অংশ – আর যেহেতু পূজার অংশ তাই তাদেরকে পঞ্জিকার কথা শুনতে হয়।