সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখি না বহুদিন হলো। পারিবারিক আয়োজনের ভিতর দিয়েই তা দেখতে হলো। তার মানে শহুরে মধ্যবিত্তকে টিভি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এতে কিছুটা হলেও বোঝা যায়। এটি প্রায় দুই ঘণ্টা সময়ের এক আয়োজন। এতে পরিচালক মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী তার ভাই-বেরাদর সহযোগে একধরনের ফুর্তির আয়োজন করতে পেরেছেন। এতে অন্তত পাঁচ ধরনের বাণিজ্যিক জোশ আমদানি করতে পেরেছেন। সেগুলি একে একে জানানোর চেষ্টা করব।
১. যৌনতা : যৌনতার এমন সর্বব্যাপী ব্যবহার খুব কম ছবিতেই দেখা গেছে। একাকী এক মেয়ে এই সমাজে চলা খুবই ডিফিকাল্ট। নষ্টভ্রষ্ট সমাজ তাকে বেঁচে থাকার এতটুকু সাহস শক্তি তৎপরতা দিতে পারে না। তা এ ছবিটিতে আছে। কিন্তু এটিকে পুঁজি করে পুঁজি বানানোর এমন ধান্ধা সত্যি বিরল।
২. কমপিউটারাইজ্ড লাইফ : ইন্টারনেটে এখন যে ফেসবুক, ব্লগ, ইমেইল, টিভি-কার্ডের সম্মিলিত ব্যবহারের আয়োজন লক্ষ করা যায়, এমনই হুলস্থূল এক লম্ফঝম্ফ দেখা যায়। আমরা আশির দশকে শুনতাম, অঞ্জু ঘোষ সিনেমায় থাকবে, আর সে জলে নামবে না, তা তো হয় না। সেই রূপ ফারুকী ফিল্ম করবে তাতে সেলফোন থাকবে না, তা কী করে হয়?
৩. সতীত্ব প্রকল্প : যত যাই হোক, সতী নারীর পতি মরে না! এই হচ্ছে সনাতন চিন্তাভাবনার আধুনিক রূপায়ন। পরকীয়া আছে-আছে করেও নাই। আর এমন হাস্যকর সতীপনা, বাবা কেন চাকর ধরনের বাণিজ্যিক ছবিতেও হয়ত এতো দেখা যায় না।
৪. পার্টনার বাণিজ্য : এর রেডিও পার্টনার রেডিও ফুর্তি; আর এটিকে অত্যন্ত নির্লজ্জের সাথে চালাকি করে ফিল্মটিতে সরাসরি দেখানো হলো। তপু নামের গায়কটির সরাসরি উল্লেখ থাকলেও তিশা আর মোশাররফকে যথাক্রমে রুবা আর মুন্না চরিত্রেই অভিনয় করে যেতে হয়।
৫. চরিত-বিধান : কোনো একটা চরিত্রেরই কোনো বিকাশ নেই। এমনকি কেন্দ্রীয় মেয়ে চরিত্রটিও শেষতক পরিচালকের হাতের পুতুল হয়ে থাকে। আবার তাদের সুখে-শান্তিতে বসবাস করানোর জন্য স্বামী-স্ত্রী-বন্ধুকে একেবারে কক্সবাজার পাঠিয়ে দেয়া হয়। কক্সবাজার পাঠানো মানেই যেন ভালোবাসার বিদ্যানিকেতনে ভর্তি করিয়ে দেয়া। বালখিল্যতা কারে কয়!
চট্টগ্রামের আলমাস সিনেমা হলে খেয়াল করলাম, এর দর্শক মূলত কলেজ-ভার্সিটির ছেলে-মেয়ে। এরা যে ছবিটি দেখে কতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে! কর্পোরেট পুঁজির কী যে দাপট এখানে! এই ধরনের ছবির চেয়ে কথিত বাণিজ্যিক ছবি অনেক ভালো, কারণ এ সম্পর্কে আমরা জানি, আগে থেকেই সতর্ক থাকি। কিন্তু চ্যানেল আই-এর মতো মুক্তবুদ্ধির বাহকরা যেখানে এই কর্মের সারথী সেখানে এই শহুরে-ছটফটে-অস্থির মধ্যবিত্তের আর উপায় কী! ফারুকী-গংরা এই সমাজের ভিতর থেকে পচন না ধরিয়ে ছাড়বে না।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর
কথাসাহিত্য চর্চার সঙ্গে যুক্ত। পেশায় চিকিৎসক। মানুষকে পাঠ করতে পছন্দ করি। আমি মানুষ এবং মানব-সমাজের যাবতীয় অনুষঙ্গে লিপ্ত থাকার বাসনা রাখি।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৪৩ comments
ডোবারব্যাং - ২৭ ডিসেম্বর ২০০৯ (১০:১৪ পূর্বাহ্ণ)
৮০’র দশকের বায়ুসেবী মধ্যবিত্ত্যের নাট্যকার ছিলেন হুমায়ুন আহমেদ…সেই স্টাইলের মধ্যবিত্ত এখন নেই…তাই সেই মধ্যবিত্তের নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদও এখন প্রয়াত…আজকের দিনের খাটাস মধ্যবিত্তের প্রেমযৌনতাআলগাস্মার্টনেসের রুপদাতা ফারুকী…ফিলসফিক্যালি ফারুকী আর হুমায়ুন আহমেদ একই গুয়ের এপিঠ-ওপিঠ…স্লাইট যে ফারাক, সেটা হলো, হুমায়ুন আহমেদ অপ্রাসঙ্গিক হতে খানিকটা সময় লেগেছে…আর ফারুকী টাইপের জিনিসগুলো গুয়ের নর্দমায় ভেসে যেতে সময় লাগবে আরো কম…
(অফটপিকঃ আপনি কি বেশ কয়েকবছর আগে শহীদুল জহিরের সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন? যদি নিয়ে থাকেন, তাহলে সেটা কি পুনঃপ্রকাশ করে আমাদের মত পাঠককূলকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করে বাধিত করবেন?)
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ২৭ ডিসেম্বর ২০০৯ (৫:২৫ অপরাহ্ণ)
আপনার চমৎকার কার্যকর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আসলে এই ফারুকী গংসমূহ খুবই ধারাবাহিকভাবে শহুরে ডি-জুস মার্কা মধ্যবিত্ত নিয়ে দারুন খেলায় মেতেছে। এই দর্শকই মূলত তার ভোক্তা। ছবির নামকরণটিই খেয়াল করুন, কতশত ছেলে-মেয়ের একধরনের কালচারকেই তা রিপ্রেজেন্ট করছে। ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার‘ এমন একটা কালচারকে নির্ণয় করতে চায়, যা হাল আমলের ছেলে-পেলেরা ধারণ করতে উদগ্রীব।
আপনি ব্যাচেলর ছবিতেও একই ধাঁচের বিষয় খেয়াল করবেন। ওইখানে সাথীকে (অপু করিম) ফাহিম (ফেরদৌস) প্রক্সি লাভার করতে চাচ্ছে। আর ব্যাচেলর-এ তো সেলফোন নিয়ে রীতিমত উৎসব শুরু হয়ে যায়। আমরা হয়ত অচিরেই সেলফোনের কোনো একটা কোম্পানিকেই পার্টনার হিসেবে নিয়ে সমানে ওই কোম্পানির নাম্বার বা খোদ কোম্পানিকেই দেদারসে হাইলাইট করতে থাকবে!
প্রসঙ্গ অফটপিক : হ্যাঁ, কথার দ্বিতীয় সংখ্যার জন্য শহীদুল জহিরের একটা সাক্ষাৎকার আমি নিয়েছিলাম। এটা পরবর্তী সময়ে থিয়েটারওয়ালা ও লোক নামের ছোটকাগজে রিপ্রিন্টও করেছিল। এটি artsbdnews24.com-এর সাক্ষাৎকার অংশ এবং ওইটার আর্কাইভের এপ্রিল ২০০৮’ এর অংশেও আপনি পাবেন।
ডোবারব্যাং - ২৭ ডিসেম্বর ২০০৯ (৬:৪৯ অপরাহ্ণ)
আপনাকে ধন্যবাদ…
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ২৭ ডিসেম্বর ২০০৯ (৭:১৪ অপরাহ্ণ)
আপনাকেও ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ৩১ ডিসেম্বর ২০০৯ (১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ)
এখানে খানিক সংশোধন-আকারেই বলতে হয়, তিশা আর মোশাররফ ফিল্মে ট্রাডিশনাল স্মামী-স্ত্রী ছিল না; যদিও ডকুমেন্ট ব্যতীত সবকিছু কাপলের মতোই ছিল। এতে প্রচলিত রুচিভাঙার সাহসিকতা ফারুকীর নিশ্চয়ই আছে।
Shihab Jahir - ২৮ জানুয়ারি ২০১০ (৪:৪৮ অপরাহ্ণ)
Oh my god!!! I feel amused to find this blog….reading the writings and comments I am really wondering if you people have any idea or know anything about cinema or criticism…the disease you are suffering from is “Identity Crisis”..apnera nijera janen na asole apnara ki chan…confused and ignorant..Aziz market er pocha mal jare koy r ki…are humayun ahmed r farooki jodi hoy gu tahole apnera to gu er poka hoar joggotao rakhen na…atlamir ekta shima thaka dorkar….humayun ahmed er bodnam kori tahole lokey amake vabbe birat kichu…vai..vondami bad den…next generation er khoti koirren na…
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ২৮ জানুয়ারি ২০১০ (৭:৩৭ অপরাহ্ণ)
এই কি আলোচনার ভাষা??? মুক্তাঙ্গনে কী শুরু হলো!!! ডোবারব্যাঙকে উপরোক্ত মন্তব্যের জবাব দিতে অনুরোধ করছি।
বিনয়ভূষণ ধর - ২৮ জানুয়ারি ২০১০ (৮:২২ অপরাহ্ণ)
আমরা খুব…খুব খুশি হতাম যদি আপনি পুরো ব্যাপারটা বাংলায় আমাদেরকে লিখে বোঝাতে পারতেন…আপনি কি দয়া করে বাংলায় কিভাবে লিখে তা একটু শিখবেন!!!…
বিনয়ভূষণ ধর - ২৮ জানুয়ারি ২০১০ (৮:২৫ অপরাহ্ণ)
@ডোবারব্যাং!!!
আপনার কি মনে হয়না যে এধরনের পরিবেশে আপনার ভাষা আরও সংযত হওয়া উচিত???
ডোবারব্যাং - ২৯ জানুয়ারি ২০১০ (৬:০১ অপরাহ্ণ)
আংড়েজি হরফে লেখা কমেন্ট পড়িনি/পড়িনা…শ্রদ্ধেয় বিনয়ভূষণ ধর ও শ্রদ্ধেয় কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর গত বছরের করা কমেন্টে এই বছর এসে বিব্রত বোধ করেছেন। কমেন্টটা তাঁদেরকে অস্বস্তিতে ফেলবে জানলে হয়ত করতাম না। আমি তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি কমেন্টটা মুছে ফেলার অপশন খুজে পেলাম না। আপনারা মুছে দিলে কৃতজ্ঞ হব (অথবা ইতর শ্রেণীর নিকরা কিভাবে অশ্লীল/অভব্য ভাষা ব্যবহার করে তার নমুনা হিসেবে রেখেও দিতে পারেন)।
ছৃষ্টিকর্তা আমাদের মঙ্গল করুণ।
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ২৯ জানুয়ারি ২০১০ (১০:৫৪ অপরাহ্ণ)
ডোবারব্যাং,
সরি, আপনি বোধ হয় আমার মন্তব্যটি সেভাবে খেয়াল করেননি। আমার মন্তব্যটি হচ্ছে ১.২.১; তার মানে ওইটি ১.২ এর মন্তব্য অর্থাৎ Shihab Jahir-এর মন্তব্যে আমি অবাক হয়েছি । এবং আপনাকে এধরনের কথাবার্তার জবাব দিতে অনুরোধ করেছি। কারণ ওই মানব আপনাকে এড্রেস করেছে। আর আমি তো আপনাকে আপনার কথার উপর অলরেডি মন্তব্য করেইছিলাম (১.১, আপনি আবার তার জবাব দিয়েছিলেন ১.১.১. আমিও প্রত্যুত্তোর করছিলাম ১.১.১.১)।
আপনাকে শুভেচ্ছা।
Shihab Jahir - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ)
ব্যাপারটা আর কিছুই না…সিনেমা নিয়ে কিছুই না জানার পরেও সিনেমা নিয়ে আলোচনা করার প্রয়াস যখন নিচ্ছেন তখন এইরকম ২-১টা কথা নাহয় শুনলেন…আর হুমায়ুন আহমেদ কে গু বলাটা যদি অভব্য না হয় তাহলে আমার মুখের ভাষা তো মধু…আপনাদের আসলে যে পাত্রে খাওয়ার অভ্যাস, সেখানেই বিসঠা (I mean গু) দেয়ার অভ্যাস তো তাই হয়তো বুঝতে পারছেন না…culturally আমরা কতটা পিছিয়ে আছি তা এই ব্লগে না ঢুকলে কেউ জানবেই না…
অলৌকিক হাসান - ২৮ ডিসেম্বর ২০০৯ (১:১৮ পূর্বাহ্ণ)
ডোবারব্যঙের কমেন্টে ঝাজা।
আমি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলাম হুমায়ুন আহমেদের ১৫টি নাটক আমাকে এনে দিলে আমি সম্পাদনা করে একটি নাটক বানাব যার ঘটনাপ্রবাহ থেকে শুরু করে কাহিনি সবকিছুই একটি পূর্ণাঙ্গ নাটকের মতোই মনে হবে। ফারুকীর নাটকের (মূলত ভাইবেরাদার, ফারুকী বছরে ১/২টি নাটক বানান) ক্ষেত্রেও একই চ্যালেঞ্জ রইল।
ফারুকী ভাই বেরাদার নামক একটি শ্রেণি তৈরি করেছেন যারা তাদের গুরুর (ফারুকী) মেধা (!) কে অনুসরণ না করে অনুকরণ করছে। তাই তাদের সবগুলো নাটক দেখতে শুনতে একই রকম। ভাই বেরাদারদের নাটক দেখে সবাই বলে ফারুকীর নাটক দেখেছি। এমনই তাদের কপাল!! গুরুর নামকে ছাপিয়ে উঠতে পারছে না।
থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার ছবিটি এখনও দেখিনি। তাই মন্তব্য করতে পারছি না। তবে ব্লগে বিভিন্ন জায়গায় রিভিউ পড়ে অতি সুখ্যাদু কিছু মনে হচ্ছে না। যৌনতার সুড়সুড়ি পাব ভালোই এবং তপু কিংবা মুন্না হিসেবে নিজেকে কল্পনা করে অন্যরকম মজাও পাওয়া যাবে।
ফারুকীরে আমি মেধাবী মনে করি। তবে সিনেমায় তিনি ফ্লপ (আসলেই কি, টাকা পয়সা উঠে আসছে, স্টুডেন্ট সহ বিশাল দশর্কশ্রেণি আছে, আপনের আমার ভালো না লাগলেই বা কী)। প্রথম ইটিভিতে বানিয়েছিলেন ‘চোর চোর’ এরপর ‘ব্যাচেলর’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সবশেষে ‘ থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’। ইংরেজি নামের বাংলা ছবি বানিয়ে তিনি যে কী করতে চাচ্ছেন আল্লাহই মালুম।
তবে ব্যবসা ভালোই বুঝেছেন। এদের ব্যবসায়িক কারণে এসব আবেগকেও পুঁজি করা যাচ্ছে।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ২৮ ডিসেম্বর ২০০৯ (৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ)
অলৌকিক হাসান-এর মন্তব্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ- তা থেকে অনেককিছুই জানা গেল। আসলে ফারুকী গংয়ের একটা কালচার কিন্তু তৈরি হয়ে গেছেই। ঢাকাইয়া আরবান সোস্যাইটির ভাষা, সেলফোন, ভাই-বেরাদর, হাইজাম্পিং চলাচল, সবকিছুকেই নিজেদের করায়ত্ত্ব ভাবার আজগুবি মানসিকতা তাদের ভোক্তাদের একেবারে চরমভাবে নষ্ট করে ছাড়ছে। তিনি স্পার্টাকাস ৭১-এর পজেটিভ নান্দনিকতার কথা বললেন, এমন দেশটি কোথাও খুজেঁ পাবে নাকো তুমির প্রসঙ্গ এল। আমিও থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার-এর কিছু চমৎকার দিকের কথা উল্লেখ করতে পারি- যেমন, এখানে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার ভয়াবহ চিত্র আছে, নারীদের প্রতি ভয়ংকর আপত্তিজনক বাস্তবতা, বিশেষত বয়স্ক-পুরুষগণ কত জঘন্যভাবে যে একাকী এক নারীকে মানসিক-শারীরিকভাবে নিপীড়নের ক্ষেত্র তৈরি করতে চায়! ফিল্মটির শুরুর দিকেই পুলিশের হাতে নানাধরনের নিপীড়নে নিহত সীমা চৌধুরীকে ছায়াময় বাস্তবতায় দেখানো হয়। তিশা কেন থানায় যেতে চায়, সেখানে তো মানুষের, বিশেষত, মেয়েমানুষের নিরাপত্তা প্রদানের বদলে তাকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। তিশার তিনধরনের বয়সের (শিশু/কিশোরী/যুবতী) তিন মেয়েমানুষ তিশার পরিবর্তনের ইঙ্গিতসমূহ চমৎকার সাঙ্কেতিকতায় প্রকাশ করে। কিছু অবাস্তব বিষয় তো আছেই। এই যেমন, এই শহরে তিশার বন্ধু খ্যাত-গায়ক ( সেও খ্যাত, তবে ওই ডি-জুস মার্কা পোলাপানের কাছেই) তপুর কথা তার আগে মনেই পড়ে না। স্বামীগৃহ/বিপিতাগৃহ/ভগ্নিগৃহ থেকে ও নিষ্ঠুরভাবে বিতাড়িত হচ্ছে। রাতে-বিরাতে রাস্তায় একাকি ঘুরছে। কোথাও থাকার জায়গা পাচ্ছে না। পুরুষদের জঘন্য মানসিকতা যখন বাণিজ্যিকভাবে ১০০% দেখানো সমাপ্ত হলো, যখন সে একটা চাকরিও যোগাড় করতে পারল, তখনই তপু-চরিত্ বন্ধনে দর্শক-শ্রোতা আবদ্ধ হতে থাকেন! তাও এমনি এমনি আমরা পাই না, তিশার কিশোরী-চরিত্রটি তপুর হেভ্যি ফ্যান। সেই তপু যে তিশার একসময়ের হেভ্যি-বন্ধু তাই প্রমাণ করতে তপুকাহিনীর শুরু। তিশা তার এত-এত ঝড়-ঝাপ্টায় তপুকে স্মরণ করে না। দর্শককে আচ্ছামতো পুরুষের বদমাইশি-লুচ্চামি দেখানো সাঙ্গ করে অতঃপর তপুকাহিনীতে আমরা প্রবেশের অনুমতি পাই। গাঁজাখুরি কাণ্ডকীর্তি আর কাকে বলে!
ক্যামেরার আলাদা ভাষা, শট মাধুর্য, সিনেমার আলাদা প্রকাশভঙ্গি আমি অন্তত পাইনি। টিভিতে প্রচারিত ফারুকী গং-এর সিরিয়াল বা একক নাটক থেকে এটা কেন আলাদা? জেলখানা, বন, পুরান ঢাকার কিছু চমৎকার ক্লোজ শট নেয়ার জন্য? কী জানি, কোনো ফিল্ম স্পেশালিস্ট ভালো বলতে পারবেন।
Shihab Jahir - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৬:৫১ অপরাহ্ণ)
বাহ!!! এইতো ভাল আর গঠনমূলক কিছ কথা শুনলাম…তবে ভাই, এইসব ফালতু রিভিউ পড়ে বিভ্রান্ত না হয়ে আপনি বরং সিনেমাটা দেখেন। আবার ভাববেন না আমি ফারুকি গ্রুপের কেউ…আমি সিনেমা দেখতে ভালবাসি আর তাই ভাল সিনেমাকে অযথা খারাপ বললে গায়ে লাগে..আপনি যদি সিনেমা হলে গিয়ে পয়সা উসুল টাইপ লোক না হন তাহলে ছবিটা ভাল না লাগার তেমন কোন কারন নাই।
তানবীরা - ২৯ ডিসেম্বর ২০০৯ (৩:০৪ পূর্বাহ্ণ)
প্রত্যেকে একটা ঘরানা যাকে বলে ষ্টাইল বানিয়ে নিয়েছেন। হুমায়ূন আহমেদের কাহিনী থেকে পাত্র পাত্রী সব সেট। প্রত্যেক নাটকের কাহিনী থেকে বাবা – মা, চাকর সব এক লোক।
ফারুকী আর আনিসুল হকের অবস্থাও প্রায় একই।
জনপ্রিয় হওয়া এক জিনিস আর ধরে রাখা আলাদা।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ২৯ ডিসেম্বর ২০০৯ (৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ)
একদম সত্যি কথা। আসলে এরা দর্শক বা পাঠককে একবার কব্জা করে ফেললে, বাণিজ্যের লোভেই আর ছাড়তে চান না। তাতে কিন্তু সেই পাঠকসকলের মেন্টালসেটাপও সঙ্কুচিত হতে থাকে। কারণ সেই দর্শক বা পাঠক এর বাইরে আর চিন্তা করতে চান না। আমার তো ধারণা, মারজুক রাসেলকে নিয়ে ফারুকী দারুন টেনশনে ছিলেন। একজন কবিকে তপুর স্থলে কাস্টকরণে বড়ো ঝামেলা হয়ত ছিল, তার মাধ্যমে রেডিও ফুর্তিকে প্রদর্শন করা তো অত মজার হয় না। আবার এখনকার ছেলেপেলেদের কাছে গায়ক তপু ওরফে রাশেদ উদ্দীন আহাম্মেদ-এর চাহিদা তো তৈরি হচ্ছেই। ফারুকীসমূহের বেবাক কাজই বাজারকে কেন্দ্র করে হচ্ছে।
স্পার্টাকাস ৭১ আর এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমির হুজুর ছেলেটির নান্দনিক প্রদর্মনের মাধ্যেমে ওরা আসলে সাংস্কৃতিক বাজারখান মজবুত করতে তৎপর ছিল।
শিক্ষানবিস - ৩০ ডিসেম্বর ২০০৯ (১০:১৫ অপরাহ্ণ)
ভেবেছিলাম সিনেমাটা ভালো হবে। ফিল্ম ফেস্টিভাল একটাতে বেশ প্রশংসাও পেয়েছিল। ভ্যারাইটি-র রিভিউটাও ওভারঅল খারাপ ছিল না। আপনার লেখা পড়ে দেখি অন্য অবস্থা। আমি অবশ্য এখনও দেখি নি। আশা কমে গেল অনেক।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ৩০ ডিসেম্বর ২০০৯ (১১:৪৪ অপরাহ্ণ)
মুশকিল হচ্ছে, এই দেখা শুধু হলে গিয়ে দেখার ভিতর সীমাবদ্ধ থাকলে তো ভালোই হতো! চ্যানেল আই তো তাদের ভয়াবহ পুঁজির দাপটে একেবারে ড্রয়িং রুম থেকে আমাদের মগজে তা গেঁথে দেয়া শুরু হয়েছে। নাম্বার ওয়ান একটা ভিজুয়াল মিডিয়া যখন বেনিয়াবৃত্তিতে নামে তখন তার বিস্তৃতি শহুরে মধ্যবিত্তের মগজে-মগজে ঘুরপাক খায়। তাকে ঠেকানো অত সোজা নয়; কারণ তাদের পোষ্য বিশাল বু্দ্ধিজীবী গোষ্ঠী তাদের সাথে আছে।
রায়হান রশিদ - ৩০ ডিসেম্বর ২০০৯ (১০:৫৬ অপরাহ্ণ)
বছর কয়েক আগে আহমেদ মুনির এর একটা রিভিউ পড়েছিলাম। মারজুক রাসেল এর কোন এক কবিতার বই নিয়ে ছিল সেটি। এই রিভিউটি কারও সংগ্রহে থাকলে দয়া করে তুলে দেবেন? আহমেদ মুনির এর একটা বাক্য এখনো কানে বাজে: “দেশে এখন স্রেফ দুই শ্রেনীর মানুষ, যারা ‘ব্যাচেলর’ দেখেছেন আর যারা ‘ব্যাচেলর’ দেখেননি”।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীরকে অনেক ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য।
অঞ্জন সরকার জিমি - ৩০ ডিসেম্বর ২০০৯ (১১:৪৮ অপরাহ্ণ)
ইদানীং দেখা যাচ্ছে কোনো চলচ্চিত্র বা টিভি নাটক নির্মাণের পরপরই বিভিন্ন ব্লগে মোস্তফা সেরায়ার ফারুকী এবং তার ভাই-বেরাদরদের সবাই বেধরক ধোলাই দিচ্ছেন। এটা দর্শক করতেই পারেন। কিন্তু সবাই কি খেয়াল করে দেখেছেন এসব নাটকের বেশিরভাগ চিত্রনাট্য আনিসুল হক নামের এক লোকের লেখা যিনি কিছু সাহিত্যকর্মও রচনা করেছেন বটে, এবং একটি পত্রিকার উপসম্পাদকও। তার এই নিম্নরুচির অখাদ্য চিত্রনাট্য সম্পর্কে কাউকে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায় না। এই লোকটি যে না জেনে এসব চিত্রনাট্য লেখেন তা কিন্তু না, তাঁর বেশকিছু রচনা ও চিত্রনাট্য দর্শকদের মন ছুয়েঁ গেছে বলেই জানি। তবুও কেন তিনি এমন লেখেন? শুধুই অর্থ রোজগারের জন্য?
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ৩১ ডিসেম্বর ২০০৯ (১২:১৮ পূর্বাহ্ণ)
জিমি তোমাকে ভালোবাসা।
হ্যাঁ, এর সাথে শুধু আনিসুল হক বা মোস্তফা সারয়ার ফারুকি নন, আমাদের আরেকজন উল্লেখযোগ্য লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের নামও এর সাথে জড়িত। কারণ এ ফিল্মটি নির্মাণ করা হয়েছে তারই উপন্যাস তিন পর্বের জীবন অনুসারে। এ ক্ষেত্রে এও বলে রাখতে হয়, এটি আমার পড়া হয়নি। একজন স্ক্রিপ্টরাইটার আর ডিরেক্টর মিলে উপন্যাসটিকে কদ্দূর ব্যবহার করেছেন, তা নীরিক্ষার ব্যাপার নিশ্চয়ই। এসব কাজের সাথে অবশ্যই বাণিজ্য জড়িত।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ২ জানুয়ারি ২০১০ (৫:২৮ অপরাহ্ণ)
এখন আরও কিছু কথা বলার ইচ্ছে হচ্ছে। ৩১শে ডিসেম্বরের রাতে চ্যানেল আইয়ের পক্ষ থেকে স্বল্পমাত্রার এক তৃতীয় মাত্রার আয়োজন করা হয়। ফরিদুর রেজা সাগরের পৌরোহিত্যে এতে অতিথি হিসাবে থাকেন ছবিটির পরিচালক মোস্তফা সারয়ার ফারুকী এবং কবি ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরিফ। নতুন সময়ের রাত একটায় সাগর সাহেব ছবিটির সাফল্যে বেশ তৃপ্ত হয়ে কথা বলছিলেন। ফারুকী জানান, তিনি বরাবরই নতুন কিছু করতে চান। এই ছবিতে অনেক পরিপক্ব তিনি। ব্যাচেলর আর মেইড ইন বাংলাদেশ-এর দুর্বলতা বা সীমাবদ্ধতা এই ছবিতে অতিক্রম করতে পেরেছেন। একপর্যায়ে তিনি জানান, তার বন্ধু সাজ্জাদ শরিফের ছবিটি দেখার অভিজ্ঞতা জানার আগ্রহে তার ভয়ও ছিল। এটা সত্য যে, সাজ্জাদ শরিফ একধরনের নৈতিকতা আর দৃঢ়তার ভিতর তার মতামত প্রকাশ করে যাচ্ছেন। তবে এও আমাদের স্মরণে রাখতে হয় তিনি গাণ্ডিব সাহিত্যগোষ্ঠীর সেই দৃঢ়তা তো এখানে দেখাতে পারবেন না। ওই বাস্তবতাই বা কোথায়? এখানে তিনি একটি পক্ষও বটে, কারণ তার পরিচয় তো শুধু কবি বলে দেখানো হয়নি, তিনি তো প্রথম আলোর একজন সাংবাদিকও। এখানেই বোধ করি ফারুকীর ভয়টা আরও পাকাপোক্ত হয়ে আছে! সাজ্জাদ শরিফ ঠিকই বলেছেন, এখানে ফারুকী বন্ধুত্বের প্রচলিত ট্যাবু ভাঙতে পেরেছেন। এটি পপুলার কালচারের একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। এটি তারুণ্যের উপর কদ্দূর কী ধরনের প্রভাব রাখবে তা ভবিষ্যৎই বলতে পারবে। তবে তিনি এও জানালেন, ছবিটি দর্শকগ্রহণযোগ্যতা পাবে কিনা, এব্যাপারে ফারুকী বেশ অস্থিরতায় থাকে। ফারুকী জানালেন, এটি তরুণদের ভিতর বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তিনি ভবিষ্যতেও তার পছন্দসই টেকনিক মোতাবেক নতুন ধরনের ছবি নির্মাণ করবেন। তবে এটাও সত্যি, একটি ছবিকে বিনির্মাণ করেন কিন্তু দর্শকরাই। এত ভেজালে-ভরপুর একটা ছবি দেখছেন অত দর্শক দেখছেন কেন? এটা এই সময়ের দর্শকদের, বিশেষত, স্বপ্নকল্পববর্জিত তরুণ সমাজের উন্মাতাল অসারতাকেই বহন করছে। এখনকার শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এত দায়িত্বহীন উৎসবমুখরতায় পরিপূর্ণ, ডেডিকেশনের একফোঁটা দায়ভার যাদের নেই, তাদের পথরেখাকেই নির্দেশ করতে পারছে! একসময় এরাই প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের সাথে ত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে চাইত, এরাই এখন পাঠকফোরাম, বন্ধুসভা, স্বজন-সমাবেশ, হেনতেন করছে। এভাবেই এদের কেউ কেউ ডি-জুস মার্কা বিদঘুটে-আরবান-কালচারকে রিপ্রেজেন্ট করতে চাচ্ছে, আবার শিল্প-সংস্কৃতির ধারক হওয়ার আন্ধানেশায় প্রতিষ্ঠানের পেছনে পাগলের মতোই ছুটছে। এরা যে কোথায় গিয়ে থামবে!
মনিরুল মনির - ২৬ জানুয়ারি ২০১০ (৩:৩৩ পূর্বাহ্ণ)
হা হা হা!
কেন রে ভাই ’সাহিত্যকর্ম’ কও। কবিতা লেখো, নিজেরে অপমান করো।
faisal - ১ জানুয়ারি ২০১০ (১২:৪০ পূর্বাহ্ণ)
http://www.facebook.com/home.php#/topic.php?topic=10949&post=52451&uid=136513165306#post52451
ইসহাক মাহমুদ - ২৭ জানুয়ারি ২০১০ (৭:১৪ অপরাহ্ণ)
ভাই, আজিজ মার্কেটের কোথায় বসেন ?
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ২৭ জানুয়ারি ২০১০ (১০:০০ অপরাহ্ণ)
হাহাহা, ভাই, আপনি কেন ভাবছেন যে আমি আজিজ মার্কেটেই বসি? ওইটা কি ফিল্ম আলোচনা প্রস্তুতকারক মার্কেট নাকি?
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৩:৩৮ অপরাহ্ণ)
Shihab Jahir ,
ঠিক আছে, সিনেমা সম্পর্কে কিছুই না জেনেই না হয় মন্তব্য করে ফেললাম; আপনি একটু দেখিয়ে দিন, কিভাবে কিছু্ই না জেনে মন্তব্য করেছি। আর কিছুই না জেনে মন্তব্য করেছি, এটা আপনি জানলেন কি করে? সিনেমা হলে গিয়ে একটা ফিল্ম দেখলাম, আর বলছেন কিছুই না জেনেই সিনেমার ব্যাপারে কথা বলেছি। ’কিছুই না জেনে’ এইটুকু শব্দের কি মানে তা জানেন তো? আর ফিল্ম সম্পর্কে যে কোনো মন্তব্য করতে গেলেই এই বিষয়ে একেবারে স্পেশালিস্ট হতেই হবে, তা কোন্ কিতাবে লেখা আছে?
মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার পূর্বে জেনে নিন মানুষ হওয়ার সহজ শর্তসমূহ!
Shihab Jahir - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৭:৩২ অপরাহ্ণ)
জনাব জাহাঙ্গির,
সিনেমা করে যদি বানিজ্য নাই হয় তাহলে পরের সিনেমাটা বানাবেন কি আকাশ থেকে?
আপনি বলেছেন “এরকম যৌনতা খুব কম ছবিতে দেখা যায়”। আমার কথা হল, আপনি বাইরের দুনিয়ার সিনেমা তো দেখেন নাই, ভাল বাংলা সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতাও মনে হয় কম…আপনাদের কথা হল সিনেমাতে যৌনতা আনলেই আপনাদের সুড়সুড়ি লাগে…ভাল…ইরানি সিনেমা দেখেন…সুরসুরি লাগবেনা…
“কম্পুটারাইজড লাইফ”…কম্পুটারাইজড লাইফ দেখাইলে সমস্যাটা কি সেটা বলেন নাই…সেলফোন দেখলে কোথায় সুড়সুড়ি লাগে বললে ভাল হয়…
“সতিপনা”…সিনেমাতে কিন্তু আমরা তিশাকেও কামনায় তাড়িত হতে দেখি…কয়টা বাংলা সিনেমাতে আপনি এই সাহস দেখেছেন??
পাটনার বানিজ্য নিয়ে যা বললেন তাতে মনে হল এই সিনেমার উপর ব্যাক্তিগত আক্রোশ আছে। নাহলে এত ফালতু জিনিশ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন কেন?
হ্যা, শেষের যে কথাটা বলেছেন তার মধ্যে কিছুটা যুক্তি আছে। শেষটা আসলেই ফালতু হয়েছে…ত্রুফোর সিনেমার গন্ধ পাওয়া যায়, যার কোন মানেই নাই…
আসল কথা হল যখন সমালচনা লিখবেন তখন খেয়াল রাখবেন যেন আপনার লেখাটা সিনেমা নিয়েই থাকে…ভাড়াটে লেখার মত মনে না হয় আর যারা সিনেমাটা এখনও দেখেনি তাদের মজাটা যেন নষ্ট না হয়…
আপনি রীতিমত ব্লগ খুলে সমালোচনা করছেন আর বলছেন সিনেমা নিয়ে কিছু না জেনেও কথা বলা যায়…এইটা কেমন কথা…দেশ বিদেশের ভাল ভাল ছবি দেখেন…it will broaden your horizon…কুয়ার ব্যাং হয়ে থাকলে কিভাবে হবে বলেন????
আপনার ব্যক্তিগত প্রিয় ছবিটার নাম জানতে ইচ্ছা করছে…জানালে বাধিত হব…
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৮:৫০ অপরাহ্ণ)
আপনি এখানে যেভাবে যুক্তি দিয়ে কথা বললেন (যদিও এখানে অবহেলার মনোভাবও আছে), তবু কথা চালিয়ে যাওয়া যায়। আপনি কিন্তু নিজেই বলেছিলেন কিছুই না জেনেই নাকি সিনেমা নিয়ে আমি লিখছি।
আর আমার প্রিয় ছবির নাম জেনে কী হবে! আপনি তো ধরেই নিয়েছেন, ছবি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নাই, এত নিচে যাকে জায়গা নিচ্ছেন, তাহলে আমার প্রিয় ছবির নাম জানতে চাওয়া মানে তাতে আমাকে আরেকবার অপমান করার চেষ্টা করে যাওয়া ছাড়া আর-কী।
আমি কিন্তু হলে গিয়ে ছবিটা দেখেই মন্তব্য করেছি। আমার সাথে পরিবারের লোকজন ছিলেন, যাদের ভিতর কিশোর বয়সের ছেলে-মেয়েও ছিল। আমরা এই ছেলেপেলেদের সাথে বসে কী যে অস্বস্তিতে পড়েছিলাম, তা শুধু আমরাই জানি। আমি যে কথাগুলো লিখেছি, তা আমার মানসিক অবস্থান থেকেই লিখেছি।
আর ছবি দেখে টাকা উসুলের কথা কী বললেন তা ঠিক বুঝতে পারছিনা না; টাকা দিয়ে হলে ঢুকলে বিনিময়ের একটা শর্ত তো তাতে তৈরি হয়েই যায়। নাকি?
রাফিন সাজ্জাদ - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৪:০৮ অপরাহ্ণ)
কথায় বলে অল্প বিদ্যা ভয়ংকর, আবার আমরা এও জানি অশিক্ষা অভিশাপ সরূপ।
স্বঘোষিত কথাসাহিতি্ক আবার পেশায় চিকিৎসক জনাব কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর আমাদেরকে দেখিয়ে দিলেন কিভাবে একজন মানুষ একি সাথে ভয়ংকর আবার অভিশপ্ত হয়।
যেকোন একটা বিষয়ে মন্তব্য করতে হলে বিষয়টি সম্পরকে কিছু হলেও জানতে হয়। আর যদি সমালোচনা করতে হ্য় তাহলেতো বিষয়টি সম্পরকে ভালোমতন জ্ঞ্যান থাকতেই হয়। স্বঘোষিত কথাসাহিতি্ক আবার পেশায় চিকিৎসক জনাব কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর একটি ছিনেমা সম্পরকে যা লিখলেন তা পরে প্রথমেই মনে হল “বেকুবটায় কয়কি?“। একজন মানুষ মানসিকভাবে কতটা অথর্ব না হলে ছিনেমার সমালোচনা এইভাবে করে। জিনিষটাকে সমালোচনা না বলে অথর্ব লেখন বলা যায়। আমি নিশ্চিত উনি ওনার এই অথর্ব লেখন লেখার পর আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে বিজ্ঞ আঁতেল ভাবা শুরু করেছিলেন। আরে ভাই আঁতেল হওয়া আতো সোজা না।
এখানে বলা দরকার জনৈক সিহাব ভাই স্বঘোষিত কথাসাহিতি্ক আবার পেশায় চিকিৎসক জনাব কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীরের একটা অসুখের কথা বলে গেছেন তা হলো “Identity Crisis”। তো ডাক্তার সাহেব অতিস্বত্তর মানসিক ডাক্তার দেখান। আর ইসহাক ভাইকে বলছি উনি (স্বঘোষিত কথাসাহিতি্ক আবার পেশায় চিকিৎসক জনাব কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর) আজিজ মার্কেটে যেতে পারবেন কিন্তু মুখ খোলামাত্র অর্ধচন্দ্র প্রাপ্ত হবেন।
স্বঘোষিত কথাসাহিতি্ক আবার পেশায় চিকিৎসক জনাব কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর দয়াকরে রেগে যাবেন না, ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলেই বুঝবেন আমি কিন্তু আপনার উপকার করছি। এখন আপাতত কিছু শব্দ দিচ্ছি ইন্টারনেটে খুঁজে বের করে দৈনিক এক ঘণ্টা করে পরবেন। শব্দগুলো হল film, art film, noncommercial film, film direction, art direction, plot, screenplay or script, story line, niche market, cliché, auteur films……ইত্যাদি ইত্যাদি। ভুলে যাবেন না দৈনিক এক ঘণ্টা করে পরবেন। এক মাস পর আরও কিছু শব্দ দিব।
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৫:৪০ অপরাহ্ণ)
এইভাবে আক্রমণ করলে তো কথা বলার কোনো স্কোপই থাকে না। সরি, আপনারা যা খুশি গালমন্দ করুন। এভাবে আলোচনা চালানো যায় না।
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৮:৫৫ অপরাহ্ণ)
পুনশ্চ : আমি কিন্তু কোথাও বলিনি যে আমি কথাসাহিত্যিক। আমি বলেছি, আমি ‘কথাসাহিত্য চর্চার সঙ্গে যুক্ত।’ এতে কি নিজেকে কথাসাহিত্যিক বলা হলো। আর কথাসাহিত্যচর্চা আর চিকিৎসাপেশার সাথে ফিল্ম নিয়ে কথা বলার কোনো বিরোধ আছে বলে তো আমার জানা নাই।
Shihab Jahir - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (১১:২৫ অপরাহ্ণ)
আপনি তো পরিবার পরিজন নিয়ে সিনেমাটা উপভোগই করতে পারেন নি দেখা যাচ্ছে…আহারে…আর দুনিয়ার তামাম ভাল ছবিই আপনি পরিবার নিয়ে দেখতে পারবেন না…রোমান পোলান্সকির ছবি আপনি কিভাবে দেখবেন তাহলে?? নাকি সেটাও আপনার কাছে অশ্লিল মনে হবে??
রাফিন সাজ্জাদ - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (৪:২৪ অপরাহ্ণ)
একটি ছোট ভুল হয়েছে,,
“একজন মানুষ মানসিকভাবে কতটা অথর্ব না হলে ছিনেমার সমালোচনা এইভাবে করে।”
কথাটা আসলে হবে,
“একজন মানুষ মানসিকভাবে কতটা অথর্ব হলে ছিনেমার সমালোচনা এইভাবে করে।”
রাফিন সাজ্জাদ - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (১০:৫৫ অপরাহ্ণ)
ছোটবেলায় পরেছিলাম যে কাব্য চর্চা করে সে হয় কবি, যে লেখালেখি করে সে হয় লেখক। আপনিতো দাদা স্বঘোষিতভাবে “কথাসাহিত্য চর্চার সঙ্গে যুক্ত”, তো দয়াকরে বলবেন আপনি কবি নাকি খেলোয়ার???
চিকিৎসক বলেইতো অবাকটা হলাম, কারণ আমার জানামতে তাঁরা অনেক জ্ঞ্যান রাখেন।
যাই হোক আপনার বাড়ির পড়া(home work) শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনার সাথে কোন কথা নেই নেই নেই।
এইবার আমি একটা প্রাণীর কাহিনী বলবো। প্রাণীটির নাম ব্যাঙ(Frogs are amphibians in the order Anura (meaning “tail-less”, from Greek an-, without + oura, tail), formerly referred to as Salientia (Latin salere (salio), “to jump”). Most frogs are characterized by long hind legs, a short body, webbed digits (fingers or toes), protruding eyes and the absence of a tail. Frogs are widely known as exceptional jumpers, and many of the anatomical characteristics of frogs, particularly their long, powerful legs, are adaptations to improve jumping performance.)।
এদের ভিতর একটা অদ্ভূত প্রজাতি হলো কূয়োর ব্যাঙ। অনেক সময় তারা নিজেদের কূয়োটাকে মনে করে বিশাল এক ডোবা। তেমনি এক কূয়োর ব্যাঙ হলো ডোবারব্যাং। যদিও তার কূয়োটি আজ পরিত্যক্ত। ওখানে মানুষ এখন পায়খানা করে। গুয়ের সাথে তার সেইরকম মাখামাখি। জীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান সে তার নিজের গু ঘেটে পেয়ে থাকে।
মাঝেমাঝে এই সমস্ত গুয়ের ব্যাঙ তার কূয়োয় মানুষের ছায়া দেখে ওটাকেও নিজের মত গুয়ের ব্যাঙ মনে করে অর্থহীন ঘ্যাঙ ঘ্যাঙ করতে থাকে। এই সমস্ত গুয়ের ব্যাঙের জন্য আমার মায়া হয়।
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (১১:১০ অপরাহ্ণ)
আপনি প্রাণীজ, অপ্রাণীজ, বনজ আবর্জনা নিয়ে গবেষণা করতেই থাকুন। সৃষ্টিকর্তা আপনার মেধা আর মননকে ক্ষুরধার করুক, তা না হলে মানুষকে আক্রমণ করবেন কিভাবে?
Shihab Jahir - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (১১:২৮ অপরাহ্ণ)
তাহলে এটাই বুঝলেন তো যে মানুষকে মেধা আর মনন দিয়েই আক্রমন করতে হয়…ফালতু আতলামি আর গালভরা বুলি নয়…
রাফিন সাজ্জাদ - ৩০ জানুয়ারি ২০১০ (১১:৩৫ অপরাহ্ণ)
কথাসাহিত্যিক ভাই দোয়া রাখবেন। দেখবেন আপনাদের নিয়ে গবেষনা একদিন ঠিকই সফল হবে।
আর Shihab Jahir এর প্রতি আমার অনেক রাগ। আপনি উলবনে মুক্তা না ঝরালেও পারতেন।
মুক্তাঙ্গন - ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (১:৩৬ পূর্বাহ্ণ)
মুক্তাঙ্গন ব্যক্তিগত আক্রমণ প্রবণতা চর্চার জায়গা নয়। সম্প্রতি কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীরের ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ শীর্ষক লেখাটির প্রতিক্রিয়া হিসেবে যে-মন্তব্যগুলো এসেছে, তার কয়েকটি মডারেশনের অনুপস্থিতির কারণেই প্রকাশিত হতে পেরেছে। মুক্তাঙ্গন কর্তৃপক্ষ এ জাতীয় মন্তব্য মুছে দেয়ার অধিকার সংরক্ষণ করেন।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত কাহিনিচিত্রটির যে-সমালোচনা কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর উপস্থাপন করেছেন, তার পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য এসেছে; ব্লগে সেটাই স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত। কিন্তু প্রসঙ্গ-বহির্ভূতভাবে অহেতুক বাগবিস্তার, কলহপ্রবণতা ইত্যাদি আলোচনার পথকে সুগম করে না — এক্ষেত্রেও করেনি।
ব্লগে প্রকাশিত যে-কোনো পোস্টের বক্তব্যের দায়ভাগ লেখকের নিজের। আলোচ্য লেখাটিতেও লেখকের নিজস্ব শিল্পবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। মুক্তাঙ্গন ব্লগকে কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর ইতিপূর্বে ‘শুচিবায়ুগ্রস্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, অনুযোগ করেছেন প্রমিত ভাষার প্রতি এই ব্লগের পক্ষপাত নিয়ে। সৌজন্যসম্মত আলোচনার পরিবেশ বজায় রাখতে ব্লগ কর্তৃপক্ষের নিরুপায় হস্তক্ষেপকে কখনো কখনো তাঁর মনে হয়েছে ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’র পক্ষে হানিকর।
এই পোস্টের সর্বপ্রথম প্রতিক্রিয়াটিকে পোস্টলেখকের মনে হয়েছে ‘চমৎকার কার্যকর মন্তব্য’। সেই মন্তব্যের সূত্র ধরে আলোচনা কালক্রমে অবান্তর কলহের রূপ নিয়েছে। (মন্তব্যের ঘরে সংযুক্ত ফেসবুকের লিংকটিতে ভাবনার খোরাক থাকলেও তা আলোচনায় আসেনি।) আমরা যেন ভুলে না যাই — একদেশদর্শিতা নির্মোহ মূল্যায়নের পথে সবচেয়ে বড়ো অন্তরায়। অন্যের নাম, পরিচয়, পেশা, পাঠপরিধি ইত্যাদি নিয়ে ব্যঙ্গোক্তি পালটা-সমালোচনা হিসেবে গ্রাহ্য হতে পারে না।
আলোচনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ)
মুক্তাঙ্গনকে ধন্যবাদ।
এই ব্লগের শুচিবায়ুগ্রস্ততা, মান ভাষার প্রতি বাড়তি হস্তক্ষেপ ( আপনারা খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই, আমিও গদ্যে খামোকা উপভাষা ব্যবহার করতে রাজি নয়, শিল্প ডিমান্ড করলেই তা করতে চাই।), পোস্টলেখকের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমার স্বাধীন মতামত আমি প্রকাশ করেছি। পৃথিবীর সমস্ত সৃজনশীল লেখাই এক যৌথপ্রক্রিয়া, তবে লেখখকেই এর দায়ভার নিতে হয়।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে, স্বাধীন মতামত মানেই তো যা-তা বলা নয়। যারফলে কোনো একটা মন্তব্যের ব্যাপারে রাইটারস-গ্রুপ এর কাছে আমার মনোভাবকে প্রকাশও করেছিলাম। কিন্তু একজনও সাড়া দেয়নি। রাইটারদের এই বিষয়টাও আমার কাছে খুবই অবাক লেগেছিল। ব্লগ-কালচার যৌথকর্মপ্রয়াসকে আরও বেশি সাপোর্ট করে, যার জন্যই এভাবে আমার কথাকে শেয়ার করতে চেয়েছিলাম। আমার ধারণা হতে থাকে, ব্লগেও লেখকের একাকীত্ব একাই বহন করতে হয়। কবি আবুল হাসান তার কষ্টার্জিত ক্ষোভ থেকেই হয়ত বলেছিলেন, মানুষ তার চিবুকের কাছেও একা।
যাই হোক, মুক্তাঙ্গনের রাইটারস-গ্রুপ, আপনারা আমাকে ক্ষমা করবেন, বেশ কিছুদিন ধরে বয়ে বেড়ানো যন্ত্রণার কথা না বলে পারলাম না। মুক্তাঙ্গনের প্রতি ভালোবাসা রইলো আমার প্রতি কিঞ্চিৎ ঝালময় ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্য হাহাহা।
শামসেত তাবরেজী - ৩ এপ্রিল ২০১০ (৫:৫১ অপরাহ্ণ)
একটি ফিল্মের আপত্তির অনেক বিষয়ই থাকতে পারে। কিন্তু ফিল্মের আলোচনা তার ভাষার বৈশিষ্ঠের দিক থেকে করা দরকার। ফিল্মে সমাজের বিষয়টি ব্যক্তিগত পছন্দ না, ডিসকোর্স হিশাবে দেখা উচিত।
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর - ৩ এপ্রিল ২০১০ (১০:৩৯ অপরাহ্ণ)
আমিও তাই করার চেষ্টা করেছি। তবে একজন দর্শক হিসাবে আমার সত্তার প্রতিধ্বনিকে আমি বাদই বা দিই কি করে?