|| দর্শন : লুক্রিশাস, সিসেরো আর সেনেকা || ‘Philosophy’ শব্দটা গ্রীক; মানে অনেকটা, 'প্রজ্ঞাপ্রেম'। গ্রীকদের কাছে কথাটার অর্থ ছিল যা কিছু সত্য আর সঠিক তার জন্য সর্বোচ্চ রকমের পদ্ধতিগত অনুসন্ধান। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর দর্শন : লুক্রিশাস, সিসেরো আর সেনেকা ‘Philosophy’ শব্দটা গ্রীক; মানে অনেকটা, 'প্রজ্ঞাপ্রেম'। গ্রীকদের কাছে কথাটার অর্থ ছিল যা কিছু সত্য আর সঠিক তার জন্য সর্বোচ্চ রকমের পদ্ধতিগত অনুসন্ধান। আমাদের সবারই জানা আছে দর্শনের জগতে তারা পরম উৎকর্ষ লাভ করেছিল, আর তাদের সেরা দার্শনিকেরা, যেমন প্লেটো এবং এরিস্টটল, যা লিখে গেছেন তার অনেকটাই এমনকি আজও তার তাৎপর্য ও গুরুত্ব এতটুকু হারায়নি। রোমক দর্শন গড়ে উঠেছিল পুরোপুরি এই অসামান্য গ্রীক দার্শনিক ঐতিহ্যের ওপর ভর করে, যেখানে আমরা দেখতে পাই এই জগৎকে জানার, ব্যাখ্যা করার এবং কিভাবে জীবন যাপন করা উচিত তার দস্তুর ঠিক করার বিচিত্র প্রচেষ্টা। নতুন দার্শনিক ধ্যান-ধারণা রোমকরা বেশি কিছু প্রবর্তন করেননি, তবে তাঁরা গ্রীকদের চিন্তা-চেতনা লাতিনে স্থানান্তর করেছেন, আর তা করতে গিয়ে সেসবে অল্প-বিস্তর পরিবর্তন এনেছেন। সে যাই হোক, রোমক দার্শনিকেরা দুটো কারণে খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, তাঁরা গ্রীক দর্শনের সার কথাটি লাতিন-জানা সবার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন, যা ইউরোপীয় চিন্তার পরবর্তী ইতিহাসে খুব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। আর দ্বিতীয়ত, তৎকালীন দর্শনগত যুক্তিবিচার পদ্ধতির (philosophiical reasoning) প্রতিশব্দ তৈরি করেছিলেন তাঁরা যা অসংখ্য তাৎপর্যপূর্ণ মৌলিক চিন্তাবিদেরা ব্যবহার করেছেন এবং লাতিনে তাঁদের ধ্যান-ধারণার কথা লিপিবদ্ধ করেছেন, প্রাচীন কালের শেষাংশের অগাস্টিন এবং নানান খৃষ্টীয় আচার্য থেকে শুরু করে ১৭শ শতকে দেকার্তে এবং স্পিনোযা পর্যন্ত। লাতিনে লেখা প্রথম গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক রচনাটি পরবর্তীকালেও বেশ প্রভাবসঞ্চার করেছিল। সেটার নাম, ‘De rerum natura’, বা, ‘বস্তুর প্রকৃতি প্রসঙ্গে’, রচয়িতা লুক্রিশাস (Lucretius) যিনি ৫৫ খৃষ্ট পূর্বাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। এই রচনাটি কাব্যিক ধারা বা ঐতিহ্যেরও অন্তর্ভুক্ত, কারণ এটি একটি দীর্ঘ ষটপদী উপদেশাত্মক কবিতা; ভার্জিল তাঁর ‘ঈনীড’ মহাকাব্যেও একই মাত্রা ব্যবহার করেছিলেন। গ্রীক দার্শনিক এপিকিউরাসের (Epicurus) প্রবল অনুরাগী ছিলেন লুক্রিশাস। আজ মানুষ এপিকিউরাস বলতেই আনন্দই পরম মঙ্গল বা শুভ, এই নীতির প্রবক্তাকে বোঝে; আর তাই আনন্দপ্রেমী মানুষকে কখনো কখনো এপিকিউরীয় বলেও অভিহিত করা হয়। কিন্তু তাঁর দর্শনের এই দিকটি নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না লুক্রিশাসের। তাঁর দৃষ্টিতে এপিকিউরাস ছিলেন সেই মানুষ যাঁর তাকদ ছিল পরমাণুবাদী তত্ত্বের সাহায্যে যুক্তিসিদ্ধভাবে —…

|| কাব্য এবং কবিকুল || প্রেমের কবিতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ আর লোকজনের পছন্দের হলেও রোমক লেখকরা সেটাকে সর্বোচ্চ আসনে বসাননি, যা আসলে নির্দিষ্ট ছিল মহাকাব্যের জন্য। এবং সম্রাট অগাস্টাসের আমলেই রচিত হয়েছিল সবচেয়ে বিখ্যাত লাতিন কাব্য। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর কাব্য এবং কবিকুল লাতিন সাহিত্যের এক অসাধারণ বিকাশ ঘটে ১০০ খৃষ্ট পূর্বাব্দ থেকে ১০০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে, যেটাকে সাধারণত সে-সাহিত্যের ধ্রুপদী যুগ বলা হয়। এ-হচ্ছে সেই সময় যখন রোমক সাম্রাজ্য সবচাইতে দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে, অর্জন করছে তার সেরা সব সাফল্য। কিন্তু কি লিখেছিল রোমকরা, জানতেই চাইতে পারেন অনেকে। তার উত্তর হলো, তারা খুব মন দিয়ে গ্রীক সাহিত্যের সেরা কীর্তিগুলো অধ্যয়ন করেছিল, আর তারপর এক-ই ধরনের গ্রন্থ রচনা করেছিল। প্রথমে তারা গ্রীক রচনাগুলোর অনুবাদ-অনুকরণ আর ছায়াবলম্বন করেছিল অনেক, কিন্তু ধীরে ধীরে তারা আরো উচ্চাভিলাষী হয়ে ওঠে, এবং নিজেদের ‘মৌলিক’ রচনায় হাত দেয়, যদিও অনেক দিক থেকেই সেগুলো গ্রীকদের প্রবর্তন করা লক্ষণগণ্ডির ভেতরেই রচিত হয়েছিল। এভাবে বললে কথাটা কেমন কেমন শোনালেও লাতিন সাহিত্য কিন্তু আসলেই যথেষ্ট সফলতার পরিচয় দিয়েছিল। রোমকরা যে গ্রীকদের উদাহরণ অনুসরণ করেছিল তাতে কোনো বিতর্ক নেই; এবং তাতে করে অসাধারণ কিছু নমুনা পেয়েছিল তারা তাদের সামনে, আর তারপরে তারা চেষ্টা করেছিল লাতিন ভাষায় একইরম, চাইকি তার চাইতে ভালো কিছু সৃষ্টি করতে। এই পদ্ধতিকে তারা বলত ‘aemulátio’, যার মানে কোনো কিছু অনুকরণ বা তার চাইতে ভালো কিছু তৈরি করা। এবং অনেক ক্ষেত্রেই লাতিন রচনাগুলো তাদের নমুনার সমকক্ষতা অর্জন করেছিল, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে ছাড়িয়েও গিয়েছিল সেগুলোকে। গ্রীক আর রোমকরা যে সাহিত্য রচনা করেছিল সেরকমের সাহিত্য আজকালকার বইয়ের দোকানে দেখা যায় না। আজ যা লেখা হয় তার বেশিরভাগই উপন্যাস, অর্থাৎ গদ্যে রচিত আখ্যানমূলক লেখা। উপন্যাস কিছু রোমকরাও লিখেছিল, কিন্তু সেগুলো প্রাচীনকালে বা তার পরেও কখনো জনপ্রিয়তা লাভ করেনি। অষ্টাদশ শতকের আগে উপন্যাস তুমুলভাবে জনপ্রিয় হয়নি, এবং তখন ইংরেজি ও ফরাসির মতো আধুনিক ভাষায় তা লেখা হতে থাকে। অথচ প্রাচীনকালে সৃজনশীল বেশিরভাগ লেখাই রচিত হতো পদ্যে। সাদামাটা গদ্যে লিখিত হতো বক্তৃতা, ইতিহাস, আর বিভিন্ন ধরনের নন-ফিকশন; সেসবের কথা পরে আসবে। যা কিছু আখ্যান বা কাহিনীমূলক বা বিনোদনমূলক তা লেখা হতো পদ্যে বা কাব্যে, যেখানে টেক্সটকে কঠোরভাবে ছন্দোবদ্ধ হতে হতো; তার কিছু উদাহরণ নিচে দেয়া হলো। লেখকেরাও খুব সতর্ক তাঁদের শব্দের…

|| লাতিন হয়ে উঠলো ইউরোপের ভাষা || শহরে-নগরে লাতিনের প্রধান ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে খুব একটা সময় লাগেনি সম্ভবত। বহু স্থানেই চালু হয়েছিল স্কুল, আর সেসব স্কুলের ভাষা ছিল লাতিন, কখনো গ্রীক, কিন্তু স্থানীয় ভাষা? নৈব নৈব চ। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   লাতিন হয়ে উঠলো ইউরোপের ভাষা অগাস্টাসের শাসনামলে রোমক সাম্রাজ্যের আয়তন যা দাঁড়ায় তা চারশ বছর ধরে টিকে ছিল। রাইন নদীর পুবের আর দানিউব নদীর দক্ষিণের সমস্ত ভূভাগ, এবং ভূমধ্যসাগরের পুব ও দক্ষিণ উপকূলের সব দেশ এই সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেকারণে ভূমধ্যসাগরকে কখনো কখনো ‘mare nostrum’ বা ‘আমাদের সাগর’ বলা হতো, এবং রোমকদের হাতেই ছিল সেটার সমস্ত উপকূলের নিয়ন্ত্রণ। সাম্রাজ্যের দাপ্তরিক ভাষা ছিল লাতিন আর, পুব দিকে, গ্রীক, যে-কথা আগেই বলা হয়েছে। তারপরেও, অগাস্টাসের সময় জনসংখ্যার বেশিরভাগ-ই নিশ্চয়ই এই দুই ভাষার বাইরে অন্যান্য আরো অনেক ভাষায় কথা বলত। পুবদিকটাতে  লাতিন কখনোই জেঁকে বসতে পারেনি, তবে পশ্চিমের জনগণ ধীরে ধীরে লাতিনকেই তাদের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে নেয়। আগেই বলা হয়েছে ইতালি ছিল বহুভাষিক। এখন যা ফ্রান্স তা তখন মাত্র বিজিত হয়েছে, আর সেখনাকার বেশিরভাগ লোক কথা বলত কেল্টিক ভাষায়। স্পেন আর পর্তুগালেও ছিল কেল্টিক নানান ভাষাভাষী অনেক মানুষ, তবে সেই সঙ্গে ছিল বহু লিগুয়ারীয় (Liguarians) আর ভাস্কোন-ও (Vascones) — যারা আজকের বাস্কদের পূর্বসূরী — তাদের নিজস্ব ভাষা নিয়ে। উত্তর আফ্রিকায় — অধুনা মরক্কো আর আলজেরিয়ায় — সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সম্ভবত ‘বারবার’ (Berber) ভাষায় কথা বলত; সেই ভাষাগোষ্ঠীর নানান ভাষায় আজও সেসব দেশের এন্তার মানুষ কথা বলে। আজ যেখানে তিউনিসিয়া তার মাঝবরাবর ছিল কার্থেজ, যে-নগরীর পত্তন করেছিল সিরিয়া থেকে আসা ফিনিশীয়রা; ফলে সেখানকার অগুনতি মানুষ ফিনিশীয় ভাষায় কথা বলত। প্রাচীন হিব্রু-র সঙ্গে সম্পর্কিত এই ভাষাটি নগর পত্তনকারীরা তাদের সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল। এই সমস্ত এলাকাই রোমের শাসনাধীনে চলে আসে পরে। ইতালির অবশ্যই একটা আলাদা অবস্থান ছিল, কিন্তু বাকি সব এলাকা পেল প্রাদেশিক মর্যাদা, যার মানে, রোম থেকে নিযুক্ত এক একজন প্রশাসক সেসব প্রদেশ শাসন করতেন। স্বভাবতই, সেই প্রশাসকদের কিছু রোমক কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকত, এবং সেই সঙ্গে যা সবসময়-ই থাকত তা হলো এক বা একাধিক সেনা ছাউনি। অবশ্য নতুন কোনো প্রদেশে সব সময়ই যে লাতিনভাষী লোকজন খুব বেশি থাকত তা নয়, যদিও সাম্রাজ্যের অগ্রযাত্রা কয়েকশ শতাব্দী ধরে অব্যাহত থাকায় একটা…

|| বছর ও মাস || যতদূর মনে হয়, গোড়াতে ছিল কেবল দশটি মাস, যেগুলোকে আমরা মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখি এখন; জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারি যুক্ত হয়েছিল পরে। কেমন করে সেই দশ মাসের পদ্ধতি চালু হয়েছিল সেটা ঠিক করে বলা মুশকিল, কিন্তু এটা একেবারেই নিশ্চিত যে [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর বছর ও মাস সময় পরিমাপের এক নিজস্ব উপায় ছিল রোমকদের যা আজও কৌতূহলের উদ্রেক করে, তার কারণ আজও প্রধানত আমরা তাদের পদ্ধতিই, তাদের দেয়া মাসের নামই ব্যবহার করি। রোমে যখন রাজতন্ত্র চলছিল সেই তখনই প্রাচীনতম রোমক ক্যালেন্ডারটি প্রচলিত ছিল, এবং সম্ভবত এই ক্ষেত্রে তারা অনুপ্রেরণাটি পেয়েছিল এট্রুস্কানদের কাছ থেকে। যতদূর মনে হয়, গোড়াতে ছিল কেবল দশটি মাস, যেগুলোকে আমরা মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখি এখন; জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারি যুক্ত হয়েছিল পরে। কেমন করে সেই দশ মাসের পদ্ধতি চালু হয়েছিল সেটা ঠিক করে বলা মুশকিল, কিন্তু এটা পুরোপুরি নিশ্চিত যে আদি রোমক বছর শুরু হতো পয়লা মার্চ থেকে; ব্যাপারটা সেই চারটে মাসের নাম থেকেই বুঝে নেয়া যায় যে-মাসগুলোকে লাতিনে বলা হতো ‘mensis September’, ‘mensis October’, ‘mensis November’, ‘mensis December’। ‘Mensis’ মানে ‘মাস’, আর নামগুলোর অন্যান্য অংশ এসেছে, স্পষ্টতই, এই সংখ্যাগুলো থেকে: ‘septem’ (সাত), ‘octo’ (আট), ‘novem’ (নয়) আর ‘decem’ (দশ)। সংখ্যা থেকে যেসব নাম আসেনি সেগুলো এসেছে, প্রায়ই, রোমক ধর্ম থেকে। এখানে একটা অবাক করা বিষয় হলো, মাসের নামগুলো হচ্ছে বিশেষণ, আর সেগুলো জুড়ে দেয়া হয়েছে বিশেষ্য ‘mensis’-এর সঙ্গে। ‘Mensis Martius’ মানে অনেকটা ‘মার্সীয় মাস’ (Martian Month)। ‘Martius’ হলো যুদ্ধ দেবতা ‘Mars’-এর বিশেষণ। একইভাবে, ‘mensis Maius’ হলো দেবী ‘Maia’-র মাস, আর ‘mensis Ianuarius’ দেবতা ‘জানুস’ (Janus)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত মাস। এই দেবতাকে সাধারণত দুটি মুখবিশিষ্ট করে আঁকা বা দেখানো হয়, একটি মুখ সামনের দিকে, অন্যটি মাথার পেছনে। এই দেবতার কাজ শুরু আর শেষ নিয়ে। এবং আমরা ধরে নিতে পারি যে ‘Ianuarius’ মাস-নামটা নতুন বছরের শুরু বোঝাতেই রাখা হয়েছিল। এখানে লক্ষণীয় যে, আমরা আরো ভেবে নিতে পারি যে, জানুসের দ্বিতীয় মুখটা, যেটা মাথার পেছনে রয়েছে, সেটা তাকিয়ে আছে বিগত বছরের দিকে, অর্থাৎ যা ফেলে আসা হয়েছে, যা শেষ করে দেয়া হয়েছে তার দিকে। সেদিক থেকে, বছরের পয়লা মাসের নাম এর চাইতে ভালো আর কোনোটি হতো পারতো না। দুটো মাসের নাম সিনেটের দেয়া। যে-মাসের আদি নাম ছিল  ‘Quintilis’ (quintus, ‘পঞ্চম’…

|| নাম ও বংশ বা পরিবার || মানুষের নামকরণের রোমক পদ্ধতি আমাদের পদ্ধতির চাইতে ভিন্ন। রোমের বিশিষ্ট পরিবারের পুরুষদের নামে সবসময়ই তিনটি অংশ থাকত, যেটা আমরা ‘Marcus Porcius Cato’ বা, ‘Gaius Julius Caesar’ বা, ‘Marcus Tullius Cicero’-তে লক্ষ করব। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর নাম ও বংশ বা পরিবার মানুষের নামকরণের রোমক পদ্ধতি আমাদের পদ্ধতির চাইতে ভিন্ন। রোমের বিশিষ্ট পরিবারের পুরুষদের নামে সবসময়ই তিনটি অংশ থাকত, যেটা আমরা ‘Marcus Porcius Cato’ বা, ‘Gaius Julius Caesar’ বা, ‘Marcus Tullius Cicero’-তে লক্ষ করব। আমাদের মতোই প্রথম একটা নাম থাকত, যাকে বলা হতো ‘praenómen’ বা, ‘পারিবারিক নামের আগের নাম’ বা, ‘আদ্যনাম’ (forename), তবে এই নাম খুব বেশি ছিল না, সব মিলে কুড়িটির বেশি হবে না। কোনোরকম ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ না রেখেই নামগুলোকে ছোট করে ফেলা যেতো। ‘Marcus’ হয়ে যেতো ‘M’, ‘Quintus’ ‘Q’, ইত্যাদি। একটা অদ্ভুত ব্যাপার হলো, ‘Gaius’-এর সংক্ষিপ্তকরণ করা হতো ‘C’ দিয়ে; কারণটা অবশ্য আর কিছুই না, বর্ণমালাটা যখন শৈশবদশায় ছিল তখন ওই বর্ণটা ‘k’ আর ‘g’ এই দুই ধ্বনির জন্যই ব্যবহৃত হতো। আমরা যতটুকু জানি, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই প্রথম নামগুলোর কোনো মানে ছিল না, তবে সেগুলোর কিছু কিছুর একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়। ‘Quintus’ মানে ‘পঞ্চম’ (the fifth), ‘Sextus’ ‘ষষ্ঠ’ (the sixth), ‘Decimus’ ‘দশম’ (the tenth)। বহুসন্তান বিশিষ্ট পরিবারগুলোকে হিসেব রাখার সুবিধার জন্য নিশ্চয়ই এভাবে সংখ্যার শরণ নিতে হয়েছিল। আর, মাঝের নামটি, যেটা ‘-ius’ দিয়ে শেষ হতো, সেটাকে বলা হতো ‘nomen’, ‘নাম’ (name), বা কখনো কখনো ‘nomen gentis’, ‘পারিবারিক বা বংশ নাম’ (family name)। এটা দিয়ে নামধারী ব্যক্তিটি কোন বৃহত্তর পরিবার বা বংশের অন্তর্ভুক্ত তা বোঝাত, এবং সেটা হয়ত এক সঙ্গে অনেকেই বহন করতো। এর সঙ্গে স্কটিশ গোত্রনাম, যেমন ‘Campbell’, ‘McDonald’ এবং ‘Stewart’, ইত্যাদি ব্যবহারের বিষয়টির তুলনা করা যায়। যাই হোক, সবার শেষে বসতো ‘cognomen’ বা পদবী (surname), যা দিয়ে কারো একেবারে নিকট পরিবারকে বোঝাতো, অর্থাৎ সে-নামধারী লোকের সংখ্যা হতো অনেক কম। রোমের প্রধান কোনো পরিবারের সদস্য নয়, কিন্তু মুক্ত নাগরিক, এমন বেশিরভাগ পুরুষেরই থাকত দুটো মাত্র নাম, একটা ‘praenómen’, আরেকটা ‘nomen’, এবং তার পরিবার ও বংশ আলাদা করে বোঝানোর মতো কিছু ব্যবহার করা হতো না। বলাই বাহুল্য, সবার শেষে ছিল দাসদের স্থান, যাদের নাম ছিল কুল্লে একটি। সেটা কখনোই…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.