টিভিতে দেখলাম ডিএডি তৌহিদকে ‘গ্রেপ্তার’ করা হয়েছে। ব্যাপক ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ শেষে তাদের নিয়ে আসা হয়েছে মিডিয়ার সামনে, মুখ চেপে ধরে। দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কারন শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে ফিরে এসে এই ডিএডি তৌহিদ যে আত্মমর্যাদার সাথে মিডিয়ার সাথে সাক্ষ্যাৎকার দিয়েছিলেন, তাতে তাকে দেখে আর যাই হোক খুনের পরিকল্পনাকারী মনে হয়নি। নিতান্তই বলির পাঁঠা এরা, এ আমার বিনীত মত।
ঐ মিডিয়া ‘প্রেজেন্টেশনের’ সময় কোন কোন চ্যানেলে আরেকজন বিডিআর অফিসারকে দেখা যাচ্ছিলো বিলাপ করতে। প্রেজেন্টেশন শেষে যখন তাদের দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো হঠাৎ সেই নাম না জানা বিলাপকারী চিৎকার করে বলে উঠলো… ‘ডিএডি তৌহিদ তো আত্মসমর্পন করেছেন, তাঁকে গ্রেফতার করা যায় কিভাবে?’ মূহুর্তেই পাশে থাকা কালোপোশাকী রেব তার মুখ চেপে ধরাটা দেখে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো।
ঐ লোকগুলোর কথা ভেবে নয়, তদন্ত আর বিচারের নামে যে প্রহসন শুরু হয়েছে, এতে কতো মানুষের আহাজারি বাড়বে ভেবে। গত দিনদিন ধরে মাঠে বসে থাকা লোকগুলোর মানবেতর অবস্থা ভেবে। গাছের কান্ড ধরে অজানা আশঙ্কা নিয়ে প্রিয়জনের সাথে মোবাইলে কাঁদতে থাকা নাম না জানা সীমান্তের অতন্দ্র এক প্রহরীকে দেখে।
একই সাথে চ্যানেল পালে জলপাই প্রেমে গদগদ তেল চুপচুপে স্কিটগুলো, লাল-সবুজ আর তলোয়ার-ছাপা পতাকা পটভুমিকায় সেনাকুঞ্জ প্রেস ব্রিফিং, জবুথবু স্বৈরাচারী বুড়ো এরশাদের আলগা মাত্বরী, দুদিন পর পর চুলের ফ্যাশনের মতো মতামত বদল করা বিরোধী নেত্রী, বিচিত্র সেলুকাসের দেশে সংসদে বসে থাকা যুদ্ধাপরাধী সাকাচৌ-টার হায়েনা হাসি, ইত্যাদি ইত্যাদি, আমার মধ্যে এক ধরনের বিবমিষাও এনে দেয়।
বসে থাকি সেই মন খারাপ করা ঘিনঘিনে অনুভূতিটা পেটে ধরে।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১ comment
সৈকত আচার্য - ৬ মার্চ ২০০৯ (১:৩৯ পূর্বাহ্ণ)
@ আরিফঃ
এত বড় একটা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী তৌহিদ যে হবে না তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের প্রয়োজন নেই। তবে, আইনের ভাষায় তৌহিদকে এক্ষেত্রে “accomplice” বা দুস্কর্মের সহযোগী হিসেবে মনে করার যথেষ্ট কারন আছে। এক্ষেত্রে আপনি লক্ষ্য করুন, তৌহিদের অভিনয় বিদ্যেটা যেটা আরিফ মনে হয় মিস করে ফেলেছেন, খুবই প্রাসংগিক এবং গুরুত্বপূর্ন।
তৌহিদ যখন আলোচনায় যান, ইতিমধ্যে কিলিং মিশনের মূল কাজ সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে, অথচ তৌহিদ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এবং অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় মিডিয়া থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাইকে ঘোল খাইয়ে ছেড়ে দিল। আর আপনি তাকে বলছেন, বলির পাঁঠা! আপনার পোষ্টে তথ্যের যথেষ্ট ঘাটতি আছে বলে মনে হচ্ছে।
আপনাকে ধন্যবাদ।