হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ আজ একটি ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশের, এই ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সত্যকে আইনি সত্যে পরিণত করা হলো, এই রায়ের মাধ্যমে।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সুবাদে, এই রায়ের বিষয়ে যা জানা গেছে তা হলো :
১। “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র” নামে যে প্রকাশনাটি ২০০৪ সাল থেকে বাজারে ছাড়া হয়েছিল সেটিকে হাইকোর্ট অসাংবিধানিক, অবৈধ ও বাতিল বলে ঘোষণা করেছেন।
২। যে-সব প্রকাশনাতে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম রয়েছে সে-সবের বিক্রয়, বিতরণ এবং পুনর্মুদ্রণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৩। এই রায়ে বলা হয়েছে যে, এই তথ্য বিকৃতি যারা ঘটিয়েছে, তারা এই জাতি এবং সংবিধানের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজ করেছে।
৪। হাইকোর্ট উল্লেখ করেছে যে, যারা এই তথ্য বিকৃতির জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এছাড়া,
৫। দেশের সকল স্তরের পাঠ্যক্রমে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হাইকোর্ট সরকারের প্রতি নির্দেশনা জারী করেছে।
একটি প্রশ্ন :
বিএনপি’র নিজস্ব কোনো প্রকাশনা গ্রন্থ বা তাদের সৃজিত কোনো দলিলে কি স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম আছে? আমার শতভাগ বিশ্বাস যে, তা অতি অবশ্যই থাকবে। তাহলে —
বিএনপি’র অশুভ জন্মলগ্ন কাল থেকে আজ অবধি তাদের যে-সব সাংগঠনিক প্রকাশনাগুলো জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবী করে আসছে, এই রায়ের ফলে, তাদের সেই প্রকাশনাগুলো কি অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করা যাবে?
যদি তা যায়ও, এটা কার্যকর করতে গেলে যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ঐক্যবদ্ধতা জরুরী (স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিদের), বিশেষ করে এই সময়ে, তার জন্য কার্যকর কোনো রাজনৈতিক উদ্যোগ ও কমিটমেন্ট কি লক্ষ করা যাচ্ছে?
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৫ comments
রায়হান রশিদ - ২২ জুন ২০০৯ (১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ)
হাই কোর্টের মামলাটির পটভূমি এবং ইতিবৃত্ত নিয়ে আরও কিছু তথ্য দেয়া যায় কি? কারা মামলাটি পরিচালনা করেছে, কেন করেছে, মামলাটির (এবং এর বিষয়বস্তুর) রাজনৈতিক তাৎপর্য, প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি বিষয়ে কিছু লিন্ক এবং রেফারেন্সসহ আলোচনা থাকলে আমরা আরও উপকৃত হতাম। এই রায়ের অর্জনটা ঠিক কোথায়? আর, ‘আইনী সত্য’ এবং ‘রাজনৈতিক সত্য’ এবং এর বিভাজন রেখা নিয়ে আরও কিছু আলোচনা আশা করছি, যদিও বিষয়টি অনেকটাই তত্ত্বীয় বা দার্শনিক। আরও একটি প্রশ্ন, রায়টির বিরুদ্ধে আপীল করা হয়েছে কি এখনো?
অবিশ্রুত - ২৪ জুন ২০০৯ (১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ)
এ-সংক্রান্ত সর্বশেষ কিছু সংবাদের লিংক :
১. রায়ের পর এমাজউদ্দিন আহমেদের প্রতিক্রিয়া; এতে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, বিচারপতিদের কাজ কি বিচারপতিসুলভ? অথচ দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে কত না বক্তব্য আমার জীবনে রেখেছি! তবে এমাজউদ্দিন একটি বক্তব্য দিয়েছেন যে, ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান রেডিওতে ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন।
২. এমাজউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যে বিস্মিত সাবেক মন্ত্রী রেজাউল করিমের বক্তব্য।
৩. হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির সাবেক এমপি, জনকণ্ঠের মালিক ও সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদের ভাই হামিদুল্লাহ খান-এর আপিল করার ঘোষণা। এতে তিনি বলেছেন, এ রায় জাতিকে বিভক্ত করেছে। এবং ২৬ মার্চ নাকি স্বাধীনতার ঘোষণা করার জন্যে জিয়াউর রহমান ছাড়া কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশ্য হামিদুল্লাহ খান শুনতে না পেলেও খানসেনাদের কর্মকর্তারা ঠিকই ২৬ মার্চ রাতেই শেখ মুজিবের অয়ারলেস বার্তা শুনতে পেয়েছিল। হামিদুল্লাহ খান স্বাধীনতা ঘোষণার জন্যে জিয়াউর রহমানকে ২৬ মার্চ খুঁজে পেলেও (!) এমাজউদ্দিন আহমেদের প্রতিবাদপত্রে দেখা যাচ্ছে, ঘোষণাটি ২৭ তারিখে দেয়া।
মাসুদ করিম - ২৫ জুন ২০০৯ (৯:২৭ পূর্বাহ্ণ)
এমাজউদ্দিনদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস মানে ২৫,২৬ ও ২৭ মার্চের ইতিহাস। বেচারারা এই তিনদিনের ইতিহাসও আজো সম্পূর্ণ করতে পারলেন না। জিয়া ভজনার প্রাণপুরুষ এই এমাজউদ্দিনের কাছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন সাতই নভেম্বর ১৯৭৫। এমাজউদ্দিনের উচিত এই চারদিনের প্রতিটি সেকেন্ড প্রতিটি মূহুর্ত নিয়ে একটি বই লেখা, যেন এই চারটি দিন নিয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ বাংলাদেশের মানুষের না থাকে। খালি কলাম লেখা আর ১০০ বুদ্ধিজীবি নিয়ে সংগঠন করার জন্য প্রয়াত জিয়া তাকে তার পা চাটতে দেননি।
রায়হান রশিদ - ২৫ জুন ২০০৯ (১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ)
ম্যাশ এবং এম এম আর জালাল যৌথ পোস্টে তথ্য প্রমাণসহ স্বাধীনতার ঘোষণার স্থান কাল পাত্র তুলে ধরেছেন। এখানে অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী দিনক্ষণের বিস্তারিত বর্ণনাও রয়েছে। অবশ্য পাঠ্য।
এখানে:
১) Swadhin Bangla Betar Kendro And Bangladesh’s Declaration Of Independence
এবং,
২) Swadhin Bangla Betar Kendro And Bangladesh’s Declaration Of Independence 2
মাসুদ করিম - ৩০ জুন ২০০৯ (২:৫৫ পূর্বাহ্ণ)
ইতিহাসের সত্য ও হাইকোর্টের রায়, ২৯ জুনের যুগান্তরে, হারুন হাবীবের কলাম।