কারও কি চোখে পড়েছে ব্রিটেনের দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট-এ গেল মে মাসের ২৪ তারিখে ছাপা হওয়া ওই সংবাদটি? প্রথম পাতায় ছাপা হয়নি বটে; তাই বলে মোটেও গুরুত্বহীন নয় ওই সংবাদ। শিরোনামেই আমরা খুঁজে পাই ওই গুরুত্বের গন্ধ : বাংলাদেশ ইজ সেফ হেভেন ফর ব্রিটিশ ইসলামিক টেরোরিস্টস। শিরোনামের খানিকটা উদ্ধৃতাংশের মধ্যে (সেফ হেভেন ফর ব্রিটিশ ইসলামিক টেরোরিস্টস) রাখলেও ইনডিপেনডেন্ট-এর তাগিদ যে ওই উদ্ধৃতাংশকেই মানুষজনের মনে স্থায়ী করে দেয়া, বাংলাদেশকে ব্রিটিশ-ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে প্রমাণের নানা ইঙ্গিত ও ধারণা তুলে ধরা, তা বলাই বাহুল্য। এরপর সংবাদটির উপশিরোনামে যে-বাক্যটি ব্যবহার করা হয়েছে, তার মর্মার্থ আরও উদ্বেগজনক,- পাকিস্তানে প্রতিরোধের মুখে পড়ায় এখন সেখানকার মৌলবাদীরা প্রশিক্ষণের জন্যে নতুন এক আস্তানা পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার মানে, এখানেও আমরা ইঙ্গিত পাই সেই নতুন আস্তানা হিসেবে বাংলাদেশের দিকে সন্দেহের তীর ছুঁড়ে দেয়ার। ব্রিটেনে বাংলাদেশের একটি হাইকমিশন আছে, আমি পরবর্তী কয়েকদিন ইনডিপেনডেন্ট খুব মনযোগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, প্রতিদিনই প্রত্যাশা করেছি হয়তো সেখানে প্রকাশিত হবে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে দেয়া প্রতিবাদবিবৃতি। কিন্তু সেরকম কিছু আমার চোখে পড়েনি। সংবাদটি প্রকাশের আগে ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি লন্ডনেই ছিলেন এবং কথা বলেছেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মিলিব্যান্ডের সঙ্গে পরদিন তিনি রওনা হয়েছেন সিরিয়ার পথে। এরকম এক সময়ে এরকম একটি সংবাদ প্রকাশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টনক নড়ার কথা ছিল। কিন্তু সংবাদটি সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও নীরব রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের কোনও পত্রিকাও সংবাদটি ট্রান্সক্রিপ্ট করেনি, কোনও কলামিস্টও এ নিয়ে কোনও কলাম লিখেছেন বলে মনে হয় না। লোকে বলে, নীরবতা সম্মতির লক্ষণ। এ ক্ষেত্রেও কি তা হলে তাই ঘটেছে?
তথ্য ও পরিস্থিতির নিরিখে অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশে বিভিন্ন মৌলবাদী ও ইসলামী জঙ্গি সংগঠন এখন খুবই সক্রিয়। জোট সরকারের আমলে একযোগে দেশটির ৫০০ স্থানে বোমা হামলার ঘটনা তারই প্রমাণ। কিন্তু পাশাপাশি এটিও সত্য যে, বাংলাদেশের জনগণের সুদীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে মৌলবাদবিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলনের। বাংলাদেশে বার বার সামরিক শাসন এসেছে, এই সামরিক শাসনের হাত ধরে এসেছে ধর্মজ রাজনীতি। সামরিক শাসন টিকে থাকতে পারেনি বটে, কিন্তু ধর্মজ রাজনীতিকে অনুপ্রবিষ্ট করে রেখে গেছে কথিত গণতান্ত্রিক রাজনীতির ভেতর। বাংলাদেশের মানুষ যেমন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে, তেমনি সংগ্রাম করে চলেছে ধর্মজ রাজনীতির বিরুদ্ধেও। শুভ-অশুভের এরকম সংগ্রাম সব দেশেই আছে। খোদ জার্মানীতেও নাৎসীবাদীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে মাঝেমধ্যেই, ব্রিটিশ রাজ্যেও সক্রিয় রয়েছে বিএনপি নামের বর্ণবাদী রাজনৈতিক দল; কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এসব দেশ নাৎসীবাদ কিংবা বর্ণবাদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু সত্যি হলো, তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতির ক্ষেত্রে বিষয়টিকে এরকম সংগ্রামময় হিসেবে দেখতে রাজী নয় সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি, তাদের প্রচারমাধ্যমগুলি। ইনডিপেনডেন্ট-এ প্রকাশিত সংবাদটিতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞের সূত্র ব্যবহার করে পত্রিকাটি আরও দাবি করেছে, বাংলাদেশে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ব্রিটেনের জন্যে হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। বলা হয়েছে, ব্রিটিশ জঙ্গি মুসলিমদের বাংলাদেশ কানেকশন ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে এবং কোনও কোনও সময় এরা তৃতীয় দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশ সফর করছে।
আমরা জানি না, এ সংবাদে কতটুকু সত্যতা আছে। এই সংবাদটি লিখেছেন সাংবাদিক রাচেল শিল্ডস,- যিনি এর আগে কোনও রাজনৈতিক সংবাদ লিখেছেন বলে চোখে পড়েনি; বরং ইনডিপেনডেন্ট-এ দেখা গেছে, তাকে বিভিন্ন সময় বিনোদনমূলক প্রতিবেদন লিখতে। তার মানে এই নয় যে, তিনি কোনও রাজনৈতিক সংবাদ লিখতে পারবেন না; কিন্তু লেখার সময় তাঁর মনে রাখা উচিত ছিল, তিনি যেমন ব্রিটেনের স্বার্থ নিয়ে উদ্বিগ্ন তেমনি বাংলাদেশেরও অনেক মানুষ আছেন ব্রিটেন ক্রমশ ইসলামী জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠছে বলে শঙ্কিত বোধ করতে পারেন। সংবাদটি লক্ষ্য করুন,- ব্রিটেন থেকে ইসলামী জঙ্গিরা তাদের প্রশিক্ষণের জন্যে যাচ্ছে বাংলাদেশে; তার মানে, ব্রিটেনই এ ধরণের জঙ্গিবাদের মূল উৎস। এইসব জঙ্গিরা জন্ম নিয়েছেন ও বড় হয়েছেন খোদ ব্রিটেনেই; তারা শিক্ষাদীক্ষাও নিচ্ছেন এই দেশটিতে, তাদের গায়েগতরে যে-চর্বি জমেছে তাও ব্রিটেন নামের দেশটির জলবায়ু ও খাদ্যদ্রব্যের কল্যাণে। তার মানে খোদ ব্রিটেনেরই এখন উচিত ভালো করে তলিয়ে দেখা, তাদের রাজনৈতিক ও শিক্ষা ব্যবস্থায় কী গলদ রয়েছে, যার কারণে এরা জঙ্গিমনস্ক হয়ে উঠছে এবং অস্ত্রবাজির প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্যে এ-দেশ ও-দেশ ছুটে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু ব্রিটেনের নীতিনির্ধারকরা নিজেদের দিকে ফিরে তাকাতে নারাজ। আর এর ফল এর মধ্যেই পেতে শুরু করেছেন তারা। জঙ্গিহামলা এখানে সশব্দে ঘটেছে, তাই অনেক আগেই তা আমাদের চোখে পড়েছে, কিন্তু চোখে পড়েনি রাজনৈতিক নেতাদের নৈতিক পতন, কেননা তা নীরবে ঘটেছে। ব্রিটিশ মন্ত্রী ও সাংসদদের যে-ফিরিস্তি বের হচ্ছে তাকে ঠিক অর্থ কেলেঙ্কারী বলা চলে না, তাকে আসলে বলা উচিত অর্থ ছ্যাঁচরামি। একযোগে এত সাংসদের এরকম অর্থ ছ্যাঁচরামি করার উদাহরণ পৃথিবীতে বিরল। এই অর্থ ছ্যাঁচরামিতে অভিযুক্তদের তালিকায় জ্যাকি স্মিথও রয়েছেন। ইনডিপেনডেন্ট-এর কল্যাণে আমরা জানতে পারছি যে, জ্যাকি স্মিথই গত বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ সফর করেছেন সন্ত্রাসবাদ দমনে দুই দেশ কীভাবে একযোগে কাজ করতে পারে তা নিয়ে আলোচনার উদ্দেশে। ইতিমধ্যে এ-সংবাদও ফাঁস হয়েছে, ২০০৫ সালে এক ব্রিটিশ-বাঙালি তরুণকে বাংলাদেশে ইন্টারোগেশন করা হয়েছে ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এবং জ্যাকি স্মিথেরও তা জানা ছিল। এই ব্রিটিশ-তরুণটিরও হয়তো কস্মিনকালে বাংলাদেশে যাওয়ার প্রয়োজন পড়তো না, যদি না লন্ডনে সাত জুলাই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা না ঘটতো। বাংলাদেশের পত্রিকা প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, তার জমজ ভাইকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং ধারণা করা হচ্ছে সে বোমা বিস্ফোরণের সময় মারা গেছে। এ হেন একটি অপকর্ম (অভিযোগ অনুযায়ী) ঘটিয়েই এই ছেলে জীবনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে যায় এবং বিয়ে করে স্কুলপড়ুয়া এক মেয়েকে। বুঝুন অবস্থা। সে সত্যিই জঙ্গি কি না, তা এখন আদালতের ব্যাপার, কিন্তু এটি তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি, ব্রিটেনে লেখাপড়া করার পরও এই তরুণের বাল্যবিয়ে করতে বাধেনি, এতই দারুণ এখানকার শিক্ষাব্যবস্থা!
এরকম একটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাকি স্মিথের ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট। তিনি চান পুলিশী নিপীড়নের এমন একটি রাষ্ট্রীয় পথ পাকাপোক্তভাবে তৈরি করতে যাতে ব্রিটিশ শাসকরা ধোপদুরস্ত ভদ্রলোক হয়ে বসে থাকবে আর তাদের হয়ে নির্যাতন করে দেবে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো! এই হলো ব্রিটিশ শাসকদের মানসিকতা! রাজনৈতিক নৈতিকতা যেখানে এরকম তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে সেখানে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগও বেশি, অদৃষ্টবাদের দিকে আকৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকিও বেশি এবং ব্রিটেনের ক্ষেত্রে সেরকমই ঘটতে শুরু করেছে। এখানে এখন একদিকে জঙ্গিবাদ অন্যদিকে বর্ণবাদ খেলা করছে। ইনডিপেনডেন্ট তার সংবাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করার জন্যে ব্রিটেনে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশি ফয়সাল মোস্তফার প্রসঙ্গও টেনে এনেছে। প্রশ্ন হলো, যে-মানুষটির জন্ম ব্রিটেনে, যে-মানুষটির শৈশব-কৈশোর, লেখাপড়া থেকে শুরু করে সব কিছুই ব্রিটেনে, যে-মানুষটি বাংলাদেশে বসবাস করেইনি বলা চলে, সে যদি জঙ্গিমনস্ক হয় তা হলে তার জন্যে কি বাংলাদেশ দায়ী নাকি ব্রিটেন দায়ী? এরকম ফয়সাল কিংবা একাধিক ফয়সাল যদি বাংলাদেশে গিয়ে জঙ্গীপ্রশিক্ষণের অপচেষ্টা চালায়, তা হলে তার জন্যে কি বাংলাদেশ দায়ী? নাকি উল্টো বাংলাদেশেরই সুযোগ রয়েছে ব্রিটেনকে দায়ী করার?
কার্যত বাংলাদেশ ব্রিটেনকে দায়ী করতে পারবে না, কেননা সে তৃতীয় বিশ্বের দেশ, কেননা দেশটি থেকে অনেক মানুষ ব্রিটেনে ইমিগ্র্যান্ট করেছে, কেননা সেখানে গণতান্ত্রিক শাসনের বদলে সামরিক শাসনই ছিল অনেক সময় জুড়ে। ব্লাক ওয়াচ গ্লোবাল সংগঠনের অ্যান্ড্রু ব্ল্যাককে উদ্ধৃত করে তাই ইনডিপেনডেন্ট লিখতে পারে যে, বাংলাদেশ নিডস টু ডেভেলপ সিস্টেমস টু ট্র্যাক ইনডিভিজুয়াল।
এখন আমাদের চিন্তা করে দেখার সময় এসেছে, বাংলাদেশকে কি এরা সত্যিই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়, নাকি চায় একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করতে? সামনাসামনি যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, বলে ব্যক্তিস্বাধীনতা ও ব্যক্তিঅধিকারের কথা, তারা যখন আবার এমন একটি ব্যবস্থা বিকাশ করার কথা বলে যা ব্যক্তিকে কারণে-অকারণে সনাক্তকরণের জন্যে পিছু ধাওয়া করে বেড়াবে, তখন প্রচ্ছদপটে গণতান্ত্রিকতার উজ্জ্বল রং যতই রাখা হোক না কেন, আসলে যে তারা একটি ফ্যাসীবাদী রাষ্টকাঠামোরই ওকালতি করে, তা বোধকরি বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে বিভিন্নভাবে তারা উৎসাহিত করছে সেই পথে এগিয়ে যেতে। সত্যিকার অর্থে, বলতে গেলে ব্রিটেনেরই এখন প্রয়োজন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনের, এমন একটি ব্যবস্থার গোড়াপত্তনের যাতে তাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও আলোবাতাসের গুণে কেউ জঙ্গিতে পরিণত না হয়। দুইশ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের মাধ্যমে ব্রিটেনের রাষ্ট্রকাঠামোয় যে পাপ জমেছে, যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, যে সর্বনাশা অত্যাচার-মনস্কতা তৈরি হয়েছে, ব্রিটেনের জঙ্গিবাদও তারই একটি নতুন প্রকরণ। তা এখন ধাওয়া করতে চলেছে বাংলাদেশকে। আর ব্রিটেনের ইনডিপেনডেন্ট এর মূল না খুঁজে জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য বানানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে। একটি জঙ্গিপ্রশিক্ষণ কেন্দ্র মুহূর্তের মধ্যেই ধ্বংস করা সম্ভব, কিন্তু একটি জঙ্গিমনস্কতা তৈরির কেন্দ্র ধ্বংস করা অত সহজ নয়; দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ব্রিটেন নামের দেশটিই হয়তো জঙ্গিমনস্কতা তৈরির কেন্দ্র হয়ে উঠছে, নইলে এ দেশটি থেকে জঙ্গিরা পৃথিবীর এ-দেশে ও-দেশে গিয়ে হানা দেবে কেন? জঙ্গিপ্রশিক্ষণের জন্যেই বা এখানকার নব্যপ্রজন্ম মরিয়া হয়ে উঠবে কেন?
যাই হোক, গত ২৪ মে বাংলাদেশ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটির ক্ষেত্রে দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট যে-দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছে, আমরা আবারও তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং আশা করি, লন্ডনের বাংলাদেশ হাই কমিশন অচিরেই এ সংবাদের প্রতিবাদ করবেন। কেননা এরকম মিশনগুলির উদ্দেশ্যই হলো বিদেশে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তোলা, বিদেশের গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ পেলে মিশনের নীরবতা কারোরই কাম্য নয়।
অবিশ্রুত
সেইসব দিন স্মরণে,- যখন কলামিস্টরা ছদ্মনামে লিখতেন; এমন নয় যে তাদের সাহসের অভাব ছিল, তারপরও তারা নামটিকে অনুক্ত রাখতেন। হতে পারে তাৎক্ষণিক ঝড়-ঝাপটার হাত থেকে বাঁচতেই তারা এরকম করতেন। আবার এ-ও হতে পারে, সাহসকেও বিনয়-ভুষণে সজ্জিত করেছিলেন তারা। আমারও খুব ইচ্ছে দেখার, নামহীন গোত্রহীন হলে মানুষ তাকে কী চোখে দেখে... কাঙালের কথা বাসী হলে কাঙালকে কি মানুষ আদৌ মনে করে!
Have your say
You must be logged in to post a comment.
১০ comments
সৈকত আচার্য - ২৭ জুন ২০০৯ (১:৪৪ অপরাহ্ণ)
বিপুল জনসমর্থন নিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পিছনে কয়েকটি মূল কারন ছিল, যেমনঃ
১। খালেদা জিয়ার পরিবার, তার মন্ত্রীসভা, এবং চারদলীয় জোটের সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী জনপ্রতিনিধিবর্গ যে দুর্নীতির মহোৎসবে মেতে উঠেছিলেন, সেই উৎসব দেশের সাধারন মানুষ অসহায়ের দৃষ্টি নিয়ে কেবল দেখেছে। করতে পারেনি কিছুই। কিন্ত ক্ষোভ সঞ্চিত হচ্ছিল, প্রতিমূহুর্তেই।
২। শায়খ রহমান-বাংলা ভাইদের দাপটে পুড়েছে ঊত্তরাঞ্চল। সরকারী মদদে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় পুলিশ প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা জংগীদের সহযোগী অফিসার-কর্মকর্তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মৌলবাদের বৃক্ষটি ডাল পালা নিয়ে বাড়তে থাকে। উত্তরাঞ্চলের আগুন সারা দেশ গ্রাস করে নিতে চায়। এ সব অস্বীকার করে খালেদা-নিজামী-মূজাহিদরা মিথ্যার বেসাতি করে বেড়ায়। তাদের এই নির্লজ্জ মিথ্যাচার বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ সাধারণ মানুষ, যারা উদয়াস্ত পরিশ্রম করে দু’বেলা খেয়ে কোন মতে বেঁচে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত তাদের ক্ষেপিয়ে তোলে।
৩। বেঁচে থাকার জন্য, যে সব দ্রব্য সামগ্রী না কিনলেই নয়, সেগুলোর দাম ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। পাশাপাশি ক্ষমতায় এবং ক্ষমতার আশেপাশে থাকা ব্যক্তিগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যদের শনৈঃ শনৈঃ উন্নতি এবং প্রাপ্তিতে মানূষের মধ্যে চরম অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা তৈরী হয়। মানুষ উপায় খুঁজতে থাকে।
দুর্নীতি, মৌলবাদ এবং জংগী তৎপরতার বিরুদ্ধে এই সরকারে সাহসী রাজনৈতিক অবস্থান মানুষের মনে আশার সঞ্চার করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই বিশেষ সময়টা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ন এবং ক্রান্তিকালীনও বটে। এই সরকার টিকে থাকবে কিনা তা নির্ভর করছে সরকারের কয়েকটি বিশেষ প্রতিশ্রুতি পালনে জনগণকে সাথে নিয়ে সে কাজ করতে পারছে কিনা তার উপর। দেশে এবং দেশের বাইরে এই কারনে চোখ কান খোলা রাখা জরুরী। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি, গণতান্ত্রিক শক্তি কখনো কখনো জংগীবাদের প্রতি নমনীয় আচরন দেখালেও এসব অপশক্তিগুলো তার প্রতিদান দিয়েছে একটি ১৪ ডিসেম্বর , একটি ১৫ আগষ্ট সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। অর্থাৎ, আমরা ক্ষমা করলেও তারা কখনোই আমাদের ক্ষমা করবে না, এটাই ধ্রুব সত্য।
বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও বৃটেনেস্থ বাংলাদেশ মিশনকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই, এ ধরনের একটি প্রতিবেদন যা কিনা এক মাসেরও বেশি আগে বৃটেনের পত্রিকায় বেরিয়েছে, তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গরিমসি করা মানে দায়িত্ব পালনে অবহেলা শুধু নয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারাবাহিকতাকে নস্যাৎ করার পশ্চিমা চক্রান্ত অনুমোদন করার শামিল।
অবিলম্বে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ হাইকমিশন এ ব্যাপারে প্রতিবাদলিপি পাঠাবেন এই দাবী করছি। একই সাথে দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার এহেন পরিকল্পিত, দায়িত্বহীন ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
অবিশ্রুত - ২৮ জুন ২০০৯ (১১:৪৬ অপরাহ্ণ)
আমার মনে হয়, কোনও কোনও মন্ত্রীর কথাবার্তার কারণে, অতীতের মতো এবারও আওয়ামী লীগের শাসনামল নিয়ে সন্দেহ দানা বেধে উঠেছে। এইসব কথাবার্তা কোন বিবেচনা বোধ থেকে বলা তা অন্তত আমার মাথায় ঢোকে না। যেমন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন টিপাইমুখ ইস্যু নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মন্তব্য করেন, ভারত আমাদের কোনও ক্ষতি করতে পারে না, তখন তা খুব সুবিবেচনাপ্রসূত মনে হয় না। প্রতিবেশী দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টির পরিচয় অন্যভাবেও দেয়া যেতে পারে। বিডিআর ইস্যুতেও অনেক তরলতার পরিচয় পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত আছে, এটা আমাদের বোঝা বা না বোঝায় কোনও কিছু আসে যায় না; এটা আওয়ামী লীগকেই প্রথম বুঝতে হবে ভাল করে।
যাই হোক, ব্রিটেনের এই মিশনের একটি সম্প্রসারিত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে বোধকরি সম্প্রতি সেখানে যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবাদ ও নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী লর্ড ওয়েস্টের সফরের মধ্যে দিয়ে। এ সম্পর্কিত সংবাদে দেখা যাচ্ছে, তিনি বাংলাদেশের পুলিশকে ছবক দিচ্ছেন।
আরও একটি সংবাদে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ মিলে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কতটুকু স্বচ্ছ? অচিরেই বোঝা যাবে।
মনজুরাউল - ২৭ জুন ২০০৯ (৮:০২ অপরাহ্ণ)
রূঢ় বাস্তবতাকে পাশ কাটানোর ধনন্তরী কৌশল এরা এমন ভাবে রপ্ত করেছে যে, দেখে বোঝারই উপায় নেই এরা পুরো ব্যাপারটাকে স্কেপ করে গেলেন! পোস্টে সহমত। পরে সময় করে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার ইচ্ছা রইল। ধন্যবাদ।
অবিশ্রুত - ২৮ জুন ২০০৯ (১১:৫৯ অপরাহ্ণ)
এরা অবশ্য বাস্তবতাকে পাশ না কাটানোর ভান করছেন। তবে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে সিদ্ধহস্ত তারা। লর্ড ওয়েস্ট যত সুন্দরভাবে সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত দিয়ে গেলেন, সীমান্ত তদারকির ব্যবস্থা পর্যন্ত যৌথ সহযোগিতার আওতায় নিয়ে আসলেন, এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও যেভাবে বিভিন্ন যৌথ ও আঞ্চলিক টাস্কফোর্স গড়ে তোলার বাণী দেয়া হচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে শক্তিশালী দেশগুলি যখন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের নামে আমাদের ওপর একটি আঞ্চলিক মোড়ল চাপিয়ে দেবেন, তখন বলার আর কিছুই থাকবে না। এরা তিলকে তাল বানাতে পারে, দেখা যাবে এরা একদিন আমাদের পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রকে পারমাণবিক অস্ত্র গবেষণাগার অভিধা দিয়ে বসে আছে! অনুপ্রবেশের যখন দরকার হয়, তখন অনেক রকম অজুহাত যাতে তৈরি করা যায়, তার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে এদের জুড়ি নেই।
ভাল কথা, এই যে পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরির চুক্তি হলো রাশিয়ার সঙ্গে, তা কতটুকু স্বচ্ছ? হাওয়ায় কিছু কিছু কথা ভাসছে। মিথ্যা হলে খুশি হব।
মাহতাব - ১ জুলাই ২০০৯ (১২:০৩ অপরাহ্ণ)
আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা একজন অথর্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রী পেয়েছি। তিনি বাংলাদেশকে “বাফার স্টেট” বললেও চুপ করে থাকেন, RAB নিরপরাধ মানুষ হত্যা করলে বলেন “এটি একটি সংস্কৃতি”, তো মাঝে মাঝে মনে হয় এটি আমাদের ডিজিটাল পররাষ্ট্র নীতি!
অবিশ্রুত - ৩ জুলাই ২০০৯ (১:৩০ অপরাহ্ণ)
পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সবসময়েই সংযত আচরণ করতে হয়। আমি জানি না, ঠিক ওই উদ্দেশ্যেই তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাননি কি না। এর মধ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনিএরকম জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করেন না ভারতীয় হাই কমিশনারের মন্তব্য সঠিক। তবে একজন হাই কমিশনারের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বা অন্য কোনও কর্মকর্তার করাটাই শ্রেয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ অবস্থানকে অবশ্য সঠিকই মনে হয়।
তবে সামগ্রিকভাবে মন্ত্রীদের বক্তব্যে ভারসাম্য নেই। যেমন দীপু মনি এ মন্তব্য করার পর সৈয়দ আশরাফুল দেখা যাচ্ছে বলে বেড়াচ্ছেন, পিনাক বাবুর মন্তব্য শিষ্টাচার বহির্ভূত হয়নি।
কে যে কখন কার সঙ্গে আঠার মতো লেপটে যাচ্ছে, কখন আবার কুকুর বেড়ালের মতো হঠাৎ লাফ দিয়ে গা থেকে পানি ঝরাচ্ছে, বলা মুশকিল!
আরমান রশিদ - ১৩ জুলাই ২০০৯ (৫:২৭ অপরাহ্ণ)
লিখাটির সাথে সহমত প্রকাশের সাথে সাথে নতুন করে একটি তিক্ত প্রশঙ্গের অবতারণা করতে চাই।
যতদুর মনে পড়ে ৯/১১ পরবর্তী আমেরিকায় সন্দেহভাজন দেশ থেকে আসা অভিবাসিদের যখন রেজিস্ট্রেশন চলছে ঠিক তখনই আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা খোদ আমেরিকার মাটিতে গিয়ে দাবি করেন যে বাংলাদেশ জঙ্গিদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। তার এই উক্তির দিন কয়েকের মধ্যেই বাংলাদেশের নাম সন্দেহভাজন জঙ্গি রাষ্ট্রের তালিকায় যোগ করা হয় এবং আমেরিকায় আবাসরত সকল বাঙ্গালিকে রেজিস্ট্রেশন প্রকৃয়ায় অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। এই প্রকৃয়ায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তিতে বেআইনীভাবে বসবাসরত বহু সর্বশান্ত বাঙ্গালিকে দেশে ফিরত পাঠানো হয়।
আমাদের বর্তমাণ প্রধান মন্ত্রী নিজেই যেখানে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন সেখানে বিদেশি সাংবাদিকেরা অপপ্রচারের সুযোগ তো পাবেই। শেখ হাসিনার এহেন উক্তির সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে আমার অনেক বন্ধু আমাকে বোঝাতে চেয়েছেন যে তার এই উক্তির কারণের তৎকালীন জোট সরকার পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মুখে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত বাংলা ভাইদের গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয়। আমার সেই সব বন্ধুরা তো তাহলে ইন্ডিপেন্ডেন্ট এর লেখাটি পড়ে খুশিই হবেন এতে যদি জঙ্গি নির্মূলে বিদেশি সহায়তা বৃদ্ধি পায়। দেশের ভাবমুর্তী ক্ষুন্ন হলে কিইবা আসে যায়।
নওরীন তামান্না - ১৩ জুলাই ২০০৯ (১০:৪৫ অপরাহ্ণ)
আরমান রশিদ,
পড়ে কিঞ্চিত ধন্দে পড়লাম। বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান হচ্ছে, কিংবা এদেশ ক্রমশ একটি জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে, এটাকে কি মন্তব্যকারী সত্যিই “অপ-প্রচার” বলে মনে করেন? কেন??
মনে পড়ে বছর কয়েক আগে শাহরিয়ার কবির এবং মুনতাসির মামুন এসেছিলেন লন্ডনে বাংলাদেশে মৌলবাদ জঙ্গীবাদের উত্থান বিষয়ে কথা বলতে। তখন আমাদের তথাকথিত “সচেতন, বিজ্ঞ এবং প্রবল আত্ম-মর্যাদাজ্ঞানসম্পন্ন” প্রবাসী এক শ্রেনীর বাঙ্গালী প্রায় প্রমাণ করে ছেড়েছিলেন যে এঁরা দেশের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করতে এসেছেন!
যে দেশের সেনাবাহিনীতে গত সাত বছরে ৩৫% রিক্রুট হয়েছে সরাসরি মাদ্রাসা এবং মৌলবাদ সম্পৃক্ত দলগুলো থেকে [সূ্ত্র: BILIA এবং হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক সমীক্ষা], যে দেশের বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি বড় অংশ গত কয়েক দশক ধরে মৌলবাদী ছাত্র সংগঠনগুলোর দখলে, যেখানে প্রশাসনকে সুপরিকল্পিতভাবে “মৌলবাদীকরণ” করা হয়েছে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক বছরে শিক্ষক নিয়োগে এবং বৃত্তিলাভের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে জামাত সমর্থিত শিক্ষক ছাত্রদের – সেখানে বাংলাদেশ যে জঙ্গীবাদের উত্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশটা কোথায় ঠিক স্পষ্ট হল না। উত্থানের এই গতি আওয়ামী লীগ সরকারও কতটুকু সফলভাবে ঠেকাতে পারবে সে বিষয়ে সংশয়ের অবকাশ আছে। কিন্তু আমরা নিজেদের দেশের ভেতর এই অবস্থাটি স্বীকার করবো কবে? আর কয়টি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল কলেজ, সশস্ত্র-বাহিনী মৌলবাদীদের দখলে গেলে, কতজন সংখ্যালঘু নির্যাতিত হলে, কত জন শাহরিয়ার কবির মুনতাসির মামুন হুমায়ুন আজাদ নির্যাতিত হলে, খুন হলে, কত জন তসলিমা নাসরিন দেশ ছাড়া হলে, কত জন বিচারক-মানবাধিকার কর্মী-বুদ্ধিজীবীর ফাঁসীর দাবীতে মিছিল হলে, কতটি ভাস্কর্য ভাঙ্গলে, কত জন জামাতী মন্ত্রী হলে, কত জন মুক্তিযোদ্ধা নিগৃহিত হলে, কত জন ফয়সাল মোস্তফা বাংলা ভাই পরিখাবেষ্টিত দূর্গ নির্মাণ করলে, দেশের আর কতটি জেলায় বোমাবাজি হলে, কতটি জনসভায়-পহেলা বৈশাখে গ্রেনেড বিস্ফোরণ হলে – আমরা স্বীকার করবো যে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটছে? নাকি আমরা অপেক্ষায় আছি দেশটি কবে পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানের মত হবে এবং তখন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বুদ্ধিজীবীরা দেশে-বিদেশে মুখ খুলবার অনুমোদন পাবেন?
দীর্ঘদিন ধরেই কোনো বিদেশী রাষ্ট্র আমাদের কি সার্টিফিকেট দিলো না দিলো তাতে আহ্লাদিত যেমন হই না, উত্তেজিতও হই না। নিজের রাষ্ট্রটি সম্বন্ধে আমরা নিজেরা কি ভাবি, এবং সে অনুযায়ী কথায় ও কাজে কি পদক্ষেপ নিই, কি ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকি – সেটাই আমার কাছে মূল বিবেচ্য বিষয়। জটিল কোন্ কূটনীতির ছক মাথায় রেখে বিদেশী রাষ্ট্রগুলো “এসব বিষয়ে” কি কথা বললো না বললো তাতে মনে হয় না আমাদের দেশের ground reality-র কিছু পরিবর্তন হয়।
কেবলমাত্র তৃতীয় বিশ্বের একজন বিরোধী দলীয় নেত্রীর (শেখ হাসিনার) মুখের কথার ভিত্তিতেই যুক্তরাষ্ট্রের মত একটি মহা পরাক্রমশালী রাষ্ট্র তার অভিবাসন নীতি পাল্টে ফেলে – এটা আমাদের জন্য যেমন তেমনি শেখ হাসিনার জন্যও সম্ভবত নতুন সংবাদ। একটি দেশের অভিবাসন নীতি কি এভাবে নির্ধারণ বা পরিবর্তন করা হয়? নাকি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব স্টেট ডিপার্টমেন্টই রয়েছে (যুক্তরাজ্যে যেমন রয়েছে ফরেন অফিস) নিজস্ব দূতাবাস থেকে এসব বিষয়ে প্রাপ্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ এবং তাদের সত্যাসত্য যাচাই করার জন্য?
মন্তব্যটি পড়ে আমার পরিচিত এক মহিলার কথা মনে পড়ে গেল (যিনি বাংলাদেশের চিহ্নিত একজন যুদ্ধাপরাধী এবং ঘাতকের সহোদরা)। তিনি অবসর সময়ে নারীমহলে ইসলামী জীবনযাপন বিষয়ে নসিহত প্রদান করে থাকেন। একদিন তাঁরই প্রাত্যহিক এসব আড্ডায় জনৈকা বিপর্যস্ত মহিলা এসেছিলেন একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে পরামর্শের জন্য। মহিলা জানতে পেরেছিলেন যে তার স্বামী তার ১২ বছর বয়সী কন্যাকে নিয়মিত ধর্ষণ করেন। জবাবে নসিহত দানকারী সেই ঘাতক-সহোদরা বিপর্যস্ত মহিলাটিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন: “আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মুসলমান নারী ধর্ষণের কথা, নির্যাতনের কথা, লজ্জার (!) কথা বাইরে প্রকাশ করে না; স্বামীকে গোপনে আদবের সঙ্গে বুঝিয়ে বলে দেখো, যদি তিনি বোঝেন”। সাথে সেই ১২ বছর বয়সী নির্যাতিত বালিকাটির প্রতি বলেছিলেন: “সহ্য কর মা, সহ্য কর; সবই আল্লাহর ইচ্ছা!”
রায়হান রশিদ - ১৩ জুলাই ২০০৯ (৮:০০ অপরাহ্ণ)
@ আরমান রশিদ # ৫
২০০২-৩ সালের শেখ হাসিনার বিবৃতিটির কথা স্পষ্ট মনে করতে পারি। এ নিয়ে সে সময় যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাঙ্গালীদের যে কিছু সাময়িক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল, তাও বেশ মনে পড়ে। আমি নিজেও ছিলাম তেমনই একটা দেশে। ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা আমারও হয়েছিল তখন, কিন্তু বিষয়টা আমি আরমান রশিদের মত করে দেখতে পারিনি কখনো। কারণ, আরমান রশিদের কাছে বিষয়টা যতটা সাদামাটা মনে হচ্ছে, ততটা বোধ করি এটা নয়। বাংলাদেশের একজন নাগরিকের বিশ্বের দরবারে জঙ্গীবাদ বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার সাথে পশ্চিমা কূটনৈতিক পর্যায়ে বাংলাদেশকে জঙ্গীবাদের ঘাঁটি হিসেবে দেখাতে চাওয়া – এই দু’য়ের মধ্যে বেশ কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে।
পশ্চিমের সংবাদ মাধ্যমে এভাবে বাংলাদেশকে চিত্রিত করার পেছনে গভীর কি উদ্দেশ্য বর্তমান, কিংবা কেন তা রাজনৈতিক অসততা – সেটা অবিশ্রুতের পোস্টেই ভালভাবে বর্ণনা করা রয়েছে। এই বিষয়টা কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা কিংবা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবর্গ কিভাবে দেখেছেন বা প্রচার করে এসেছেন অতীতে, তার থেকে বেশ অনেকটাই আলাদা, সে কথায় পরে আসছি। প্রথমেই যেটা বলতে হয় তা হল যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্র এই দেশ দুটির কোনটিরই জঙ্গীবাদের উত্থান ও বিকাশ নিয়ে বলার মত কোন মুখ মনে হয় না আছে। কারণ, ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে – কখনো সমাজতন্ত্র ঠেকানোর নামে, কখনো তেল গ্যাসের আন্তর্জাতিক পাইপ লাইন রক্ষার্থে, কখনো গণতান্ত্রিক সেকুলার ব্যবস্থাকে উৎপাটন করতে, কখনো প্রতিপক্ষ দেশের উপনিবেশ আত্মসাত করতে – এঁরাই জঙ্গীপ্রবরদের ব্যবহার করেছেন নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে। ওসামা বিন লাদেন বাংলাদেশের তৈরী না, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী। সৌদী আরবস্থিত ওসামার শক্তিশালী পরিবার যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যেরই অধিক স্বজন বলে জানি, তাঁদের মোটা অন্কের বিনিয়োগ এবং মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে মেরুদন্ডহীনতার জন্য। সুতরাং, এ বিষয়ে পশ্চিমা নীতিনির্ধারকদের কোন নৈতিক উচ্চাবস্থান তো নেই-ই বরং বর্তমানে উঁদোর পিন্ডি বুঁধোর ঘাড়ে চাপানোর পায়তারার মধ্যে রয়েছে এক ধরণের মতলববাজি। শুধু এই বক্তব্যে অবিশ্রুতের সাথে দ্বিমত নেই।
তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার বিবৃতির প্রেক্ষাপটের দিকে এবার একটু তাকানো জরুরী যেটা আরমান রশিদের মন্তব্যে উঠে আসেনি । বিএনপি-জামাতের জোট সরকার ক্ষমতায় আসার দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল সারা দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ। দেশীয় এবং বিদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার রিপোর্টেও সে সব উঠে এসেছে। এই ব্লগেরই একজন সাংবাদিক লেখকের কথা জানি যিনি ঘটনাস্থল ঘুরে এসে বিহ্বল হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছিলেন, কারণ তাঁকে সেদিন সংখ্যালঘু এক পরিবারের ১১ জন সদস্যের জীবিত পুড়িয়ে দেয়া মৃতদেহ দেখে আসতে হয়েছে। আর এসব বিষয়ে জোট সরকার কি করেছিল তখন? নীরব সমর্থন কিংবা সরব অস্বীকার। সেইসাথে বিষোদগার করছিল মানবাধিকার রিপোর্টগুলোর ওপর দেশের “উজ্জ্বল” ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য। শাহরিয়ার কবির কিংবা মুনতাসীর মামুনদের মত লেখক-কর্মীরা যে রাষ্ট্রীয় নির্যাতন যন্ত্রের শিকার হবেন অদূর ভবিষ্যতেই, তার আগাম ইঙ্গিত ছিল তাতে। এর পাশাপাশি সরকারের সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়, যেটি কিনা এনজিওদের অর্থায়ন অনুমোদনের সাথে জড়িত, তাতে বসিয়ে দেয়া হল মুজাহিদের মত চিহ্নিত একজন যুদ্ধাপরাধী জামাত নেতাকে, যাতে করে দেশের জঙ্গীবাদের উত্থানের দেখভাল করতে পারেন তিনি (এই রিপোর্টটি পড়া যেতে পারে)। এর পর শুরু হল অপারেশন ক্লিন হার্ট নামের সেই বর্বর কর্মকান্ড, যার দায়িত্বে ছিলেন আমাদের দুদকের হাসান মশহুদ মহোদয়। ক্লিন হার্ট এর নামে ৫০ (মতান্তরে ৫৫) জনকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হল, আইন করে হত্যাকারীদের বিচারমুক্তি (ইনডেমনিটি) দেয়া হল। তত দিনে এটা অন্তত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে সরকার আর যাই করুক জঙ্গীবাদের উত্থান ঠেকানো তার উদ্দেশ্য না। পরবর্তী বছরগুলোতে বাংলা ভাই এবং শায়খরা যেভাবে প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন মদদ পেয়েছে, তাতে তাই আবার প্রমাণিত হয়েছে। তত দিনে এও স্পষ্ট যে আর যাই থাকুক এসব অন্যায়ের প্রতিকার করা বিএনপি-জামাতের জোট সরকারের এজেন্ডার অন্তর্ভূক্ত নয় (বরং হয়তো উল্টোটাই সত্যি)!
দেশে এবং বিদেশে বিবেকবান সব মানুষই তখন এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল, কেবল বিরোধী দলের প্রধান নয়। আর যারা প্রতিবাদ করেছিল, তারা মনে হয় না আওয়ামী লীগের কার্ডবহনকারী সমর্থক ছিল। বরং যারা এসব অনাচার অবিচার দেখেও না দেখার ভান করে গেছেন, প্রতিবাদে সোচ্চার হননি, কেবল এসব অনাচারের প্রতিবাদটাকেই দেখলেন, বিবৃতি এবং বিবৃতিদানকারীকেই দেখলেন, তাদের উদ্দেশ্য, সংশ্লিষ্টতা এবং রাজনৈতিক সততা নিয়ে আমার মনে সব সময়ই প্রশ্ন থেকে গেছে। অনাচার হলে এবং তার প্রতিকার না হলে, বা প্রতিকারের সম্ভাবনা না দেখা গেলে তা তো ঢাক ঢোল পিটিয়েই বলতে হবে। ১৯৭১ এও কি প্রবাসী সমাজ তাই করে দেখায়নি? এমনকি বিশ্বের দরবারে ঠিক তখন এই ঢোল পেটানোটা আরেক দিক থেকেও জরুরী হয়ে পড়েছিল। কারণ, বিএনপির ছত্রছায়ায় জামাত নেতাদের ততদিনে পশ্চিমের বিভিন্ন সরকার “a moderate Muslim party” হিসেবে সার্টিফিকেট দিয়ে বেড়াচ্ছিল (দ্রষ্টব্য: বৃটেনের চ্যাথাম হাউসে নিজামী)। খোদ বৃটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এই তালিকায় রয়েছে। কারণ, তখন তাদের চোখে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার অলীক স্বপ্ন, তথাকথিত জঙ্গীবাদবিরোধী যুদ্ধে যদি কোনোভাবে এঁদেরও (জামাতের মত দলগুলোকে) ব্যবহার করা যায় সেই ফন্দি! জামাতি জঙ্গী তখন তাদের নব্য সুজন!
পশ্চিম তার নিজের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে জঙ্গীরাষ্ট্র হিসেবে দেখাতে চাইছে এখন। তাতে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের অস্তিত্ব, এর শক্ত ভিত, কিংবা উত্থানের সম্ভাবনা মিথ্যা হয়ে যায় না। পশ্চিমের মতলববাজি প্রচারণার সাথেও যেমন জুঝতে হবে আমাদের, তেমনিভাবে আয়নায় নিজেদের দিকেও তাকাতে হবে মাঝেমাঝে।
তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তো ব্যাখ্যা করলাম উপরে। এই যখন পরিস্থিতি তখন ঠিক কোন্ ধরণের মানুষের কাছে কেবল বিবৃতিটাই প্রধান হয়ে উঠেছিল সেটাও মনে হয় খতিয়ে দেখা দরকার। বিবৃতির পেছনে সত্য বা মূল বক্তব্যটা প্রাধান্য পেলো না কেন তাদের কাছে? কারণ, যে শ্রেনীটি (আমি নিজেও তার অংশ) এসব বিবৃতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বিদেশের মাটিতে, জানতে ইচ্ছে করে – দেশে যখন সত্যি সত্যিই সংখ্যালঘু নিধনের যজ্ঞ চলছিল, ক্রসফায়ার করে জাতির হৃদয় “ক্লিন” করা হচ্ছিল, জামাত জঙ্গীরা সগর্বে নিজেদের বংশ বিস্তার করে যাচ্ছিল – তখন এই ক্ষতিগ্রস্ত শ্রেনীটির ঠিক কত ভাগ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিল ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে? কিংবা পত্র পত্রিকায়, কিংবা লেখালিখিতে? অন্যায়গুলো তাদের চোখে পড়লো না, চোখে পড়লো কেবল নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী “বিবৃতিগুলো”!!! একে হয়তো “সুবিধাবাদ” বলে। আর নিজের ভিসাঘটিত সাময়িক কিছু ব্যক্তিগত অসুবিধার মূল্যেও যদি দেশের মাটিতে সংঘটিত কোন চরম অন্যায় এবং অবিচারের কিছুটা হলেও প্রচার হয় (স্থায়ী প্রতিকার নাই বা হল), সেটাও কি খুব কম পাওয়া? জানতে ইচ্ছে করে তাদের কয় জন সেদিন এভাবে দেখেছিলেন বিষয়টাকে। আমরা যত খুশী see no evil, hear no evil বলে চেঁচাই না কেন “মন্দ” কি তাতে আমাদের পিছু ছাড়বে? নাকি আমরা চুপ করে থাকলেই (পাছে বিদেশীরা মন্দ বলে!) মন্দের অবসান হবে? আমি তো মনে করি সেদিন কেবল বিরোধী দলের নেত্রীরই না, সরকারী দলের নেত্রী বেগম জিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য প্রবাসী প্রতিটি সাধারণ বাঙ্গালীর দায়িত্ব ছিল এসব বিষয়ে সরব হওয়ার, নিজেদের ক্ষুদ্র ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধে উঠে।
অবিশ্রুত - ৪ জানুয়ারি ২০১১ (৫:২৪ পূর্বাহ্ণ)
ব্রিটেনে প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা এখন বাংলাদেশের জন্যে সবচেয়ে বড় হুমকি-লন্ডনে আওয়ামী লীগের কর্মীসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে সম্প্রতি এরকম মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। খবরটিতে বলা হয়েছে :
আসলে এ বিষয়টিতে নজর দেয়া উচিত ছিল আরও আগেই। কেননা মুক্তিযুদ্ধের পর-পরই যুক্তরাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নেয় যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের অনেকে। তারা এতদিনে এখানে গড়ে তুলেছে তাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান। এখন তারা একদিকে জঙ্গি সরবরাহ করছে, অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধী বিচারের পথে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যেমন, যে আরএবি একদিন গড়ে তুলেছিল বিএনপি, এখন সেই বিএনপির নেতা সাকা চৌধুরীর পুত্রী ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী কি না আরএবি-কে প্রশিক্ষণ দেয়ার অজুহাতে ব্রিটিশ সরকারের ওপর মামলা করার ধানাইপানাই করছে- উদ্দেশ্য তার যুদ্ধাপরাধী পিতার মুক্তির ব্যাপারে যেন ব্রিটিশ সরকার ওকালতি করে! মাছের মায়ের পুত্রশোক আর কাকে বলে!