মিথেন হাইড্রেট, শব্দটি অনেকের কাছেই অপরিচিত, কিন্তু একেই ভবিষ্যত পৃথিবীর জ্বালানী চাহিদা মেটানোর এক অনন্য ঝর্ণাধারা ভাবা হচ্ছে। মিথেন হাইড্রেট মুলত বরফের স্ফটিকের মত, তবে এর বিশেষত্ব হলো এতে হাইড্রোজেন আর কার্বনের অনুর মাঝে আটকা রয়েছে একটি মিথেন অনু। মিথেন হাইড্রেটের অবস্থান সাধারণত সমূদ্র তলদেশের ৫০০ মিটার বা তার অধিক গভীরে। বরফের স্তরের মত এই আকরটি কোথাও বেশ বিশুদ্ধ আবার কোথাও বালি অথবা কাদা মিশ্রিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এখনো যদিও মিথেন হাইড্রেট থেকে বানিজ্যিক ভিত্তিতে মিথেন বা জ্বালানী গ্যাস উৎপাদনের টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন সম্ভব হয়নি, তবে তা মোটেই সুদূর পরাহত নয়।
পুরো বিশ্বের খনিজ তেল এবং গ্যাস যেখানে আগামী ৩০ বছরে ফুরিয়ে যাবার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত মিথেন হাইড্রেটের মজুদ সারা পৃথিবীর জ্বালনীর চাহিদা মেটাবে অন্তত ৩৫০ বছরের, কেউ কেউ এই সময়টাকে আরো বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৩৫০০ বছর পর্যন্ত বলছেন । অন্য ভাবে বলা যায়, সারা বিশ্বে এপর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের মোট পরিমাণ যেখানে প্রায় ৫০০০ টি.সি.এফ সেখানে মিথেন হাইড্রেটের পরিমান হচ্ছে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন টি.সি.এফ । তাহলে ভেবে দেখুন জ্বালানির উৎস হিসেবে এর অমিত সম্ভাবনার কথা । তবে, আশার সংগে সংগে আশংকার কথাও কম নয়, অনেক বিশেষজ্ঞ এর মধ্যেই বলছেন যদি মিথেন হাইড্রেট ব্যাপকভাবে বানিজ্যিক ভিত্তিতে উত্তোলন করা শুরু হয়, তবে পৃথিবীর জলবায়ু বর্তমানে যে নাজুক অবস্থার সম্মূখীন তা দ্রুত আরো নাজুকতার দিকে ধাবিত হবে ।
পৃথিবী জুড়ে আবিস্কৃত মিথেন হাইড্রেটের অবস্থান:
এ সম্বন্ধে নিচের লিঙ্কগুলো দেখুন-
১। মিথেন হাইড্রেট এবং জাপান
২। ইউএস জিওলোজিক্যাল সার্ভে ফ্যাক্টশীট