|| ধার-নেয়া শব্দসকল ও নব্যশব্দরাজি || ইংরেজি এবং অন্য সব ইউরোপীয় ভাষায় লাতিন থেকে এবং লাতিন হয়ে গ্রীক থেকে আসা শব্দ বিস্তর। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   ধার-নেয়া শব্দসকল ও নব্যশব্দরাজি ইংরেজি এবং অন্য সব ইউরোপীয় ভাষায় লাতিন থেকে এবং লাতিন হয়ে গ্রীক থেকে আসা শব্দ বিস্তর। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পথ ধরে প্রবেশ করেছে সেগুলো। হয়ত ভাবছেন এসবের বেশিরভাগই মেলা আগে এসেছে, যখন অনেক বেশি মানুষ লাতিন ভাষায় কথা বলত, কিন্তু এর উল্টোটাই বরং সত্যি। গত একশো বছরে আমরা এই উৎস থেকে যত শব্দ নিয়েছি বিগত অন্যান্য সব বছরগুলোতেও তা নিইনি। আর সত্যি বলতে কি, হারটা বাড়ছে বই কমছে না। আমরা কি স্যাটেলাইট না কেবলভিত্তিক ডিজিটাল চ্যানেল চাই? এটি ২০০৪ সালের একটি প্রাসঙ্গিক বিষয়। (উল্লেখ্য, ২০০২ খৃষ্টাব্দে প্রকাশিত মূল সুইডিশ বইটির – Latin: Kulturen, historien, språket – ইংরেজি সংস্করণ বের হয়েছিল ২০০৪-এ: অনুবাদক)। বিশ বছর আগে ডিজিটাল সম্প্রচারের কোনো অস্তিত্ব ছিল না, পঞ্চাশ বছর আগে ছিল না কোনো স্যটেলাইট বা উপগ্রহ, আর, একশ বছর আগে টেলিভিশন (television) শব্দটাই ছিল না। একশ বছর আগে পুরো বিষয়টাই একেবারে ধারণাতীত বলে মনে হতো, কিন্তু যে শব্দগুলো দিয়ে আমরা সেটার কথা বলছি লাতিন-জানা যে কারো কাছে সেটা কিছুটা হলেও বোধগম্য হতো তাতে সন্দেহ নেই। ‘Digital’ এসেছে লাতিন ‘digitus’ বা ‘আঙুল’ থেকে, কালের পরিক্রমায় যেটা দ্বিতীয় একটি অর্থ – ‘digit’ (সংখ্যা) – পরিগ্রহ করেছে, এই সাক্ষ্য দিতে যে ইংরেজি ‘digit’ একটি ধার নেয়া শব্দ এবং সেটা কেবল ওই দ্বিতীয় অর্থেই ব্যবহৃত। এখানে সংযোগটা স্পষ্টতই এই যে, সংখ্যা গোনার জন্য আমরা আমাদের আঙুল ব্যবহার করি। ডিজিটাল সম্প্রচারে নিরন্তর তরঙ্গ পরিবর্তনের বদলে এক আর শূন্য সম্প্রচার করা হয়। ‘television’-এ রয়েছে লাতিন শব্দ ‘visio’ বা ‘sight’-এর শব্দমূল, যার আগে যুক্ত হয়েছে গ্রীক ‘tele’ (দূরবর্তী)। ১৯৫০-এর দশকের আগে একরকম অপরিচিতই ছিল ‘satellite’, যা কিছু কিছু গ্রহ প্রদক্ষিণ-করা উপগ্রহগুলোর ক্ষেত্রে জ্যোতির্বিদেরা আর কল্প-বিজ্ঞান কাহিনীর অদ্ভুত লেখকরাই কেবল ব্যবহার করতেন। যেহেতু মহাশূন্যে আমরা কিছু বস্তু পাঠিয়ে সেগুলোকে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করার ব্যবস্থা করতে পেরেছি, তাই শব্দটা – যা কিনা এসেছে লাতিন ‘satélles’ (সম্বন্ধপদীয় কারকে বা genitive case-এ ‘satéllitis’) বা, ‘সঙ্গী’, ‘আনুষঙ্গিক’ থেকে – একটি…

|| কিমিয়া, ডাকিনীবিদ্যা ও হ্যারি পটার || যদিও কেবল-ই কয়েকশ বছর আগে রসায়ন তার আধুনিক রূপে আবির্ভূত হয়েছিল, কিন্তু এটার একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বসূরী ছিল, যা উদ্ভূত হয়েছিল সেই প্রাচীনযুগে। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   কিমিয়া, ডাকিনীবিদ্যা ও হ্যারি পটার যদিও কেবল-ই কয়েকশ বছর আগে রসায়ন তার আধুনিক রূপে আবির্ভূত হয়েছিল, কিন্তু এটার একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বসূরী ছিল, যা উদ্ভূত হয়েছিল সেই প্রাচীনযুগে। প্রাচীন মিশরীয়রা ধাতুর কাজে অত্যন্ত পারদর্শী ছিল এবং গ্রীকরা কখনোই তাদের গোপন পদ্ধতির রহস্যভেদ করতে পারেনি, যদিও অনেকেই সে-চেষ্টা করেছিলেন, আর সম্ভবত তার ফলেই কিমিয়ার সুদীর্ঘ ঐতিহ্যের সৃষ্টি হয়েছিল। এর একটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অপেক্ষাকৃত কম মূল্যের বস্তু থেকে স্বর্ণ তৈরি, যা কিনা, বলাই বাহুল্য, যথেষ্ট লাভের সম্ভাবনাসম্পন্ন একটি প্রকল্প। মৌলগুলোর সঙ্গে অন্যান্য বস্তুর মৌলিক পার্থক্য সম্পর্কে মানুষের মধ্যে তখনো যেহেতু পরিষ্কার কোনো ধারণা গড়ে ওঠেনি – যেটা ঘটেছিল ১৮০০ খৃষ্টাব্দের দিকে – তাই চিন্তাটা এমন কিছু উদ্ভট ছিল না মোটেই। হেলেনিস্টিক সময়ে গ্রীকরাও বিপুল শক্তি ও সময় খরচা করেছিল বিষয়টা নিয়ে, এবং, স্বভাবত-ই তারা তাদের মোক্ষে পৌঁছুতে পারেনি, কিন্তু সে-চেষ্টা করার পথে বিভিন্ন রাসায়নিক বস্তু আর সেগুলোর মধ্যে বিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞানলাভ ঘটে তাদের। অবশ্য, এই বিষয়টি নিয়ে যাঁরা কাজ করেছিলেন তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গে অন্যান্য গ্রীক প্রাকৃতিক বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গীর প্রভেদ ছিল বেশ। তাঁরা মনে করতেন তাঁদের শিল্পটি মুসা বা খিওপ্সের ফেরাউনদের মতো দূর অতীতের প্রাচীন দেবতা বা বিখ্যাত চরিত্রদের দ্বারা অনুপ্রাণিত, এবং তাঁরা তাঁদের কাজে জ্যোতির্বিদ্যা, সাধারণ্যে প্রচলিত কুসংস্কার এবং আরো বিচিত্র সব উৎস থেকে পাওয়া ধ্যান-ধারণা অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। তার মানে, গোড়া থেকেই কিমিয়া ছিল বরং বিজ্ঞানের এক অশিষ্ট জ্ঞাতি। রোমকরা কিন্তু কিমিয়ার এই ঐতিহ্যর পেছনে ছোটেনি খুব একটা, তবে এরিস্টটলের দর্শন যেমন আরবদের মাধ্যমে ইউরোপে পৌঁছেছিল, কিমিয়া সংক্রান্ত ধারণাগুলো-ও একই পথ ধরে মধ্যযুগের ইউরোপে পৌঁছেছিল। ১২০০ খৃষ্টাব্দের দিকে কিমিয়ার ওপর লাতিনে রচিত বেশ কিছু প্রবন্ধ বের হয়, বিখ্যাত সব আরব বিশেষজ্ঞদের তত্ত্ব আর নীতি ইত্যাদি নিয়ে। সেই থেকে কিমিয়া হয়ে দাঁড়ায় ইউরোপের বুদ্ধিবৃত্তিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। টমাস একুইনাস, রজার বেকন আর আইযাক নিউটনের মতো বিশাল মাপের ব্যক্তিত্বসহ অসংখ্য বিখ্যাত মানুষ এর পেছনে সময় ব্যয় করেছেন, যদিও তাতে কাজের কাজ প্রায় কিছুই হয়নি। মূল উদ্দেশ্যটা ছিল স্বর্ণ…

|| পদার্থবিদ, রসায়নবিদ এবং অন্যান্যরা || মধ্যযুগের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ছিল পাটিগণিত, জ্যামিতি আর জ্যোতির্বিদ্যা, এই তিন artes libereles। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   পদার্থবিদ, রসায়নবিদ এবং অন্যান্যরা মধ্যযুগের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ছিল পাটিগণিত, জ্যামিতি আর জ্যোতির্বিদ্যা, এই তিন artes libereles। ধ্রুপদী যুগে যে-জ্ঞান অর্জিত হয়েছিল সেই জ্ঞানের একটি অংশ হস্তান্তরের বেশি আর কিছুই ছিল না এটা একটা দীর্ঘ সময় ধরে। সত্যি কথা বলতে কি, ত্রয়োদশ শতকের আগ পর্যন্ত উন্নততর গণিতশাস্ত্র ও পদার্থবিদ্যার প্রতি নতুন করে আর কোনো আগ্রহ জন্মেনি কারো, এবং সেই অর্থে প্রকৃত উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয় কেবল-ই এই সপ্তদশ শতকে। এবং সবচাইতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটে জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রে। গ্রীক এবং রোমকগণ মহাজাগতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে অনেক কিছু জানতো, এবং তাঁদের পর্যবেক্ষণলব্ধ নানান কিছুর নাম-ও দিয়েছিল। রোমানরা ‘Mercury’, ‘Venus’, ‘Mars’, ‘Jupiter’ এসব গ্রহের যে নাম দিয়েছিল ঠিক সেই নামগুলোই এখনো ব্যবহার করি আমরা, যেগুলো কিনা সব-ই রোমক দেবতাদের নাম। আধুনিককালে যে তিনটি গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে সেগুলোর নাম-ও একইভাবে অন্য তিন রোমক দেবতা ‘Uranus’, ‘Neptun’ ও ‘Pluto’-র নামে রাখা হয়েছে। প্রাচীন কালের মানুষজন নক্ষত্রগুলোকে নানান নক্ষত্রপুঞ্জের অন্তর্ভুক্ত করে সেগুলোর নামকরণ-ও করে গেছেন, এবং সেসব নামের অনেকগুলো এখনো ব্যবহার করি আমরা, যেমন ‘Leo’ (সিংহ), ‘Gemini’ (যমজ), ইত্যাদি। প্রাচীনকালে বিশ্বাস করা হতো পৃথিবী হচ্ছে মহাবিশ্বের কেন্দ্র, এবং সূর্য, চন্দ্র, এবং অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্র তার পাশে আবর্তিত হয়। সতর্ক পর্যবেক্ষণ ও যথার্থ গাণিতিক হিসেব-নিকেশের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এই সিদ্ধান্তে আসা হয় যে আসলে পৃথিবী-ই সূর্যের চারদিকে ঘোরে, এর উল্টোটা নয়। ষোড়শ শতকের গোড়ার দিকে কোপার্নিকাসের জন্ম দেয়া এই ধারণাটিকে জ্যোতির্বিদ গ্যালিলিও গ্যালিলি তথাকথিত ‘ভূকেন্দ্রিক তত্ত্বের’ বিরুদ্ধে দাঁড় করান ১৬৩২ খৃষ্টাব্দে প্রকাশিত তাঁর “Dialogue Concerning the Two Chief World Systems” বইটিতে। আমাদের জানা আছে, প্রবল উত্তেজনা ও তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল বইটি। গির্জা গ্যালিলিওকে ধর্মদ্বেষী বলে ঘোষণা করে, এবং জীবনের বাকিটা সময়কে বিজ্ঞানী মহাশয়কে গৃহবন্দী হয়েই থাকতে হয়। গির্জার কাছে গ্যালিলিও গ্যালিলি যেসব কারণে বিপজ্জনক ছিলেন তার একটির সঙ্গে কিন্তু ভাষার সম্পর্ক রয়েছে। সে-সময়কার অন্য পণ্ডিতজনেরা যা করতেন, গ্যালিলিও কিন্তু সেরকম সব সময় লাতিন ভাষায় লিখতেন না। তাঁর “Dialogue” ইতালীয় ভাষায় লেখা, আর তাছাড়া, অপেক্ষাকৃত সহজ-সরলভাবে…

|| লিনীয়াস ও লাতিন || উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণীবিদ্যায় প্রতিটি প্রজাতিরই লাতিন নাম রয়েছে। আজ আমরা ওপরের ওরকম সাদামাটা ইংরেজি টেক্সটে নামগুলো ব্যবহার করি না বললেই চলে, কিন্তু উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আর জীববিজ্ঞানীরা যে কোনো পরিস্থিতিতেই পরস্পরের সঙ্গে আলাপ বা যোগাযোগ করুন না কেন তাঁরা এই প্রজাতিগুলোর কথা বলতে গেলে সেগুলোর লাতিন নামই উল্লেখ করেন। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর   লিনীয়াস ও লাতিন বনের মধ্যে ‘Anemóne nemorósa’ ভরা একটা ফাঁকা জায়গা দেখে আপনার হৃদয় উদ্বেলিত হয়ে উঠতে পারে। একটি ‘Motacilla alba’ দেখে আপনি হঠাৎ কেঁপে উঠতে পারেন, কিন্তু একেবারে আচমকা যদি আপনার সামনে একটা ‘Ursus arctos’ এসে উদয় হয়, সেক্ষেত্রে আপনার মানে মানে সরে পড়াই বোধ হয় ভালো হবে। এগুলো হচ্ছে, যথাক্রমে, বায়ু-পরাগী এক ধরনের বিশেষ ফুল, ল্যাজ নাচানে খঞ্জনা পাখি আর বাদামি ভল্লুকের লাতিন নাম। উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণীবিদ্যায় প্রতিটি প্রজাতিরই লাতিন নাম রয়েছে। আজ আমরা ওপরের ওরকম সাদামাটা ইংরেজি টেক্সটে নামগুলো ব্যবহার করি না বললেই চলে, কিন্তু উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আর জীববিজ্ঞানীরা যে কোনো পরিস্থিতিতেই পরস্পরের সঙ্গে আলাপ বা যোগাযোগ করুন না কেন তাঁরা এই প্রজাতিগুলোর কথা বলতে গেলে সেগুলোর লাতিন নামই উল্লেখ করেন। নামটাই যে কেবল লাতিন, তা নয়; প্রতিটি প্রজাতির আনুষ্ঠানিক বর্ণনাও হতে হবে লাতিনে। কেউ কোনো নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করলে তাঁকে এরকম একটা বর্ণনা লিখে প্রকাশ করতে হবে। এসব বিজ্ঞানে লাতিনের এখনো একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারিক উপযোগিতা রয়েছে। এই পরিস্থিতির ঐতিহাসিক ব্যাখ্যার সঙ্গে চিকিৎসাশাস্ত্রের ঐতিহ্যের একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে, যা আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। বহু বছর ধরে ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এবং স্বারস্বত জগতের লোকজনের মধ্যে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সেরকম গুরুত্ব পায়নি। প্রাণী ও উদ্ভিদ নিয়ে চিকিৎসকেরা গবেষণা করতেন আসলে চিকিৎসাশাস্ত্র ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে সেগুলোর সম্ভাব্য প্রয়োগের জন্য। কাজেই লাতিন ব্যবহারের ঐতিহ্য এসব বিজ্ঞানে ততোটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যতোটা সেটা চিকিৎসাশাস্ত্রে শক্তিশালী হয়েছিল। সে যাই হোক, অষ্টাদশ শতকে, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে এবং চিকিৎসাশাস্ত্র নির্ভরতা কাটিয়ে উঠে আত্মপরিচয় খুঁজে পায়। এক্ষেত্রে যাঁরা পথিকৃৎ ছিলেন তাঁদের অন্যতম হচ্ছেন কার্ল ভন লিনে (Carl von Linné) নামে সুইডেনের এক অধিবাসী, যাঁর নাম গোটা বিশ্বে সাধারণত, এবং অত্যন্ত যথার্থভাবেই, সেটার লাতিন রূপ ‘লিনীয়াস’ (Linnaeus) হিসেবে সুপরিচিত, অন্তত তাঁদের কাছে যাঁরা এই ক্ষেত্রটির ব্যাপারে আগ্রহী। লিনীয়াস ছিলেন দক্ষিণ সুইডেনের স্মালান্ড-এর এক যাজকপুত্র। বিদেশে পা বাড়াবার আগে তিনি লুন্ড এবং উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৭৩৫ খৃষ্টাব্দে তিনি হল্যান্ড যান, এবং…

|| চিন্তকবৃন্দ || আগেই বলা হয়েছে, এবেলার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করেছেন ইউরোপীয় দর্শনের বিকাশে, আর এই ক্ষেত্রটির অগ্রগতি ভাষাজ্ঞান ও ভাষাব্যবহারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর চিন্তকবৃন্দ আগেই বলা হয়েছে, এবেলার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করেছেন ইউরোপীয় দর্শনের বিকাশে, আর এই ক্ষেত্রটির অগ্রগতি ভাষাজ্ঞান ও ভাষাব্যবহারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। সত্যি বলতে কি, দর্শন হলো – তর্কসাপেক্ষভাবে – একটি ভাষা ব্যবহারের সর্বগ্রাসীতম উপায়। গ্রীক দার্শনিকবৃন্দ আর তাঁদের ধ্যান-ধারণাই রাজত্ব এবং প্রভাব বিস্তার করে ছিল গোটা প্রাচীনকাল জুড়ে, এমনকি রোমকদের মধ্যেও। সর্বসাকুল্যে দুজন লাতিন লেখক পঠিত হতেন বিপুলভাবে – সিসেরো আর সেনেকা, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রীক চিন্তা-ভাবনার জনপ্রিয় বিষয়গুলোর কথাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নতুন করে বলেছেন তাঁরা। খৃষ্টধর্মাবলম্বী কিছু কিছু চিন্তক ছিলেন আরো স্বাধীন, আরো উদ্ভাবনকুশল, বিশেষ করে অগাস্তিন, কিন্তু এমনকি তাঁরও বহু ধ্যান-ধারণা গ্রীক দার্শনিক এবং ধর্মতাত্ত্বিকদের কাছ থেকে নেয়া। গ্রীক জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রাচীনকালের শেষ দিকে এসে বিরল থেকে বিরলতর হতে থাকে এবং ক্যাসিওদোরাসের মতো লেখকেরা ছোট ছোট লাতিন সংক্ষিপ্তসারের মাধ্যমে গ্রীক মনীষার কিয়দংশ সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। ক্যাসিওদোরাসের সমসাময়িক একজন এরিস্টটলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক রচনা আর টীকা-ভাষ্য লাতিনে অনুবাদ করেছিলেন, আর তাঁর এই অবদান অত্যন্ত মূল্যবান বলে বিবেচিত হয়েছিল শত শত বছর ধরে। ভদ্রলোকের নাম বোয়েথিয়াস – মানুষ এবং দার্শনিক দুদিক থেকেই যিনি কিনা ছিলেন অত্যন্ত আকর্ষণীয় এক ব্যক্তিত্ব। এক প্রাচীন ও বিশিষ্ট রোমক পরিবারে জন্ম হয়েছিল বোয়েথিয়াসের, এবং রাভেনা (Ravenna) থেকে শাসন করা অস্ট্রোগথিক রাজা থিওডোরিকের দরবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি করতেন তিনি, যদিও বহু বছর কর্মরত থাকার পর ভদ্রলোক রাজানুগ্রহ হারান, এবং ৫২৩ খৃষ্টাব্দে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন। পরের বছরের তাঁকে মেরে ফেলা হয়। রায়ের জন্য অপেক্ষারত থাকাকালীন তিনি চমৎকার একটি লেখা লেখেন যার নাম ‘De consolatione philosophiae’ বা ‘দর্শনের সান্ত্বনা’ (‘The Consolation of Philosophy’। নারীরূপী দর্শন তাঁর কারাপ্রকোষ্ঠে হাজির হয়ে তাঁর দুর্ভাগ্য নিয়ে আলাপ করে। তিনি তাকে বলেন কি কি উপায়ে তিনি সারাজীবন যা কিছু শুভ তার জন্য কাজ করে গেছেন এবং দুর্বলদের রক্ষা করেছেন, অথচ কিভাবে ক্ষমতাশালী ও দুষ্ট লোকজন তাঁর ক্ষতি করেছে। নারীরূপী দর্শন জবাবে তাঁকে বলে তাঁর এতো দুঃখ কষ্ট সত্ত্বেও তিনি একটি ভালো জীবন যাপন করেছেন, এবং…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.